#স্পর্শানুভূতি
#writer_Nurzahan_Akter_Allo
#part_41
🍁🍁
মিষ্টুঃযেখানেই যাও সাবধানে যাবে।আর দেখা হচ্ছে সন্ধ্যায়… (মিষ্টি হেসে)
রাসেলঃহুমমম (তুমিও সাবধানে থেকো কেমন।চোখ টিপ দিয়ে)
মিষ্টুঃতুমি আসলেই একটা….
রাসেলঃহুম হুম বলো! বলো!আমি কি? (দুষ্টু হেসে)
মিষ্টুঃতুমি আসলেই একটা জীবানু (কথা বলে দৌড় চলে যায়)
রাসেলঃহা হা হা! পাগলি একটা…
–
তারপর মুহিত দুইদিনের মধ্যে যতটুকু আয়োজন করছে সেটাকে কম বলা যাবে না কারন একটা মাএ বোনের বিযে বলে মুহিত কোন কিছুর কম রাখে নি!ওদের কাছের রিলেটিভ গুলো অলরেডি চলে এসেছে!মিষ্টু বাসায় ঢুকে দেখে মিতু,রাত্রি,নিরব, বকুল সবাই গল্পে মেতে আছে!মিষ্টুও গিয়ে ওদের সাথে এড হলো। মুহিত, জয়,আয়ান,শুভ্র, এরা সবাই কাজে খুব বিজি! এক জনের একেকটা কাজের দায়িত্বে আছে আর সেগুলোই ওরা মন দিয়ে করছে!বাইরে ডেকোরেটরের লোক গুলো ওরা বাড়ি সাজানোর কাজে লেগে পড়ছে!রাত্রি আম্মু আর মিষ্টু আম্মু উনারা উনাদের কাজে তদারকির করতে খুব বিজি….
–
ওদিকে রাসেল কালকে মুহিতের বিয়ের যত ড্রেস কিনতে দিসে বাট গায়ে হলুদের ড্রেস কিনতে দেয় নি!রাসেল ১ ঘন্টার ঘুরে ঘুরে মিষ্টুর জন্য একটা কমলা শাড়ি চুজ করলো!রাসেল চোখ বন্ধ ভাবলো তারপর মুচকি হেসে এই শাড়িটাই চুজ করলো! কমলা রংয়ের জামদানির সাথে ওর জন্য মেচিং পান্জাবী নিলো!রাসেল কি মনে করে মিষ্টুর জন্য, গোলাপি, নীল,কালো, কালারের বেশ কয়েকটা শাড়ি নিলো।মুহিত সহ বন্ধুদের জন্য পান্জাবী নিলো আর রাত্রি আম্মু,মিষ্টুর আম্মু জন্যও শাড়ি নিলো।তারপর গয়নার দোকানে গিয়ে কয়েক ধরনের সোনার চুড়ি,নেকলেস,দুল নিলো নিজে পছন্দ করে!তবে একটা জিনিসের দিকে তাকিয়ে ওর চোখ আটকে গেল,, আর মনে মনে ঠিক করলো এটাই বিয়ের রাতে মিষ্টুকে উপহার দিবে….
–
রাসেল মুহিতকে ফোন দিয়ে বললো ওদের ড্রাইভার টাকে পাঠিয়ে দিতে শপিংমলের সামনে।কারন এত গুলো জিনিস নিয়ে যাওয়া সম্ভব না! ১০ মিঃ ড্রাইভার আসতেই রাসেল সব শপিংব্যাগ গুলো গাড়ি তুলে দেয়!তারপর ড্রাইভার চলে যায়!তারপর রাসেল ফুলের দোকান থেকে ফুল অর্ডার করে দুপুরে খেয়ে বাসায় চলে যায়।মুহিত এসব কিছু দেখে রাসেলকে বকা দিলো কারন মুহিতের ভাষায় এগুলো দরকার ছিলো না!মুহিত ড্রাইভারকে বললো সব মিষ্টুর রুমে রেখে আসতে….
–
রাসেল বাসায় গিয়ে মিষ্টুকে মেসেজ করলো…
এই যে আমার সোনাবউ!আমি যেই শাড়ি টা পাঠালাম ওইটাই পড়বে কেমন আর আমি দুচোখ ভরে তোমাকে দেখবো!আর একদম মেকাব করবে না কারন ওই সব আটা ময়দাতে আমি তোমাকে দেখতে চাই না।ধুরর! সময়ই যেন কাটছে না আমার! কিছু ভালো লাগছে না.. আই মিস ইউ সোনাবউ। আর শোন আমি দুপুরে খেয়েছি খাবার পাঠাতে হবে না! তুমি খেয়ে নিও কেমন! উমমমা…
–
রাসেল সাওয়ার নিলো তারপর বিছানায় শুয়ে শুয়ে লেপটেপ নিয়ে কিছু সময় কাজ করলো আর কাজ শেষ করে ঘুমিয়ে নিলো।
বিকাল পাঁচটার দিকে রাসেলের ফ্ল্যাটে আয়ানরা এসে হাজির তারপর সবাই জমপেশ আড্ডা দিলো!ওরা এই প্রথম রাসেলের বাসায় আসলো শুভ্র তোরা বলেই দিলো ওর বাসাটা অনেক সুন্দর করে সাজানো… রাসেল মুচকি হাসলো আর সবার জন্য কফি করে আনলো।মিষ্টু কে ঘিরে বসে আড্ডায় মশগুল সবাই!মিষ্টুর ইচ্ছে না থাকার শর্তেও ওকে গিলতে হচ্ছে এত এত উপদেশ! রাত্রি মিষ্টুকে বললো পার্লারের মেয়েরা কখন আসবে! মিষ্টু বললো ওর পার্লারে সাজবে না কারন ওরা হাজিবাজি ঘষাঘসিতেই মুখের বারোটা বাজিয়ে দেয়।
–
সন্ধ্যা মিষ্টুদের বাড়িটা লোকজনে গমগম করছে! তবে মিষ্টু শুধু মেইন গেটের দিকে তাকাচ্ছে রাসেল আসছে কি না দেখার জন্য!নিরব মিষ্টুর ফোন টা সেই যে উধাও হয়ে এখনো নিরবেকে খুজে পাওয়া যায় নি।মিতু আর রাত্রিকে মিষ্টুকে সাজাতে বসে। ৮ টার দিকে আয়ানরা সহ রাসেল মিষ্টুদের বাসায় আসে শুধু একটা জিন্স আর কালো শার্ট পড়ে!রাসেল মিষ্টুদের বাসায় ঢুকলো আশ পাশে তাকিয়ে চোখ বুলালো বাট ওর জানপাখিটাকে কোথায় পেলো না।আয়ান রাসেলকে একটা রুমে নিয়ে গেল!আর রেডি হয়ে নিতে বললো….
–
রাসেল সহ সবাই রেডি হয়ে নিলো!রাসেল ফর্সা আর কমলা রংটা আরো ফুটিয়ে তুলছে!হেয়ার কাট,দাড়িতেই নিউ কাট দিছে হাতে ওয়াচ,চুল গুলো স্পাইক করা!এক কথায় নজর কাড়া লুক…মুহিত রাসেলের রুমে এসে রাসেলকে দেখে জড়িয়ে ধরে!বোনের বিয়ে বলে কথা দম ফেলার মত ওর সময় নেই!রাসেলের জোর করে মুহিতকে রেডি হতে পাঠালো।মুহিত রেডি হয়ে আসতেই রাসেল একটা শপিং ব্যাগ নিয়ে বললো এটা মিষ্টুকে দিতে….।
–
মুহিত মুচকি হেসে ব্যাগ না ধরে রাসেলের হাত ধরে মিষ্টুর রুমে ঢুকিয়ে দিলো!আর বাকিদের একটু বের হতো বলো,,মুহিতের এমন কাজে রাসেল আর মিষ্টু দুজনেই লজ্জা পায়।মুহিত ওদের দিকে তাকিয়ে বলে.
মুহিতঃ এত লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই!তোরা হাজবেন্ড -ওয়াইফ। আর আমার বন্ধু হিসেবে একটা দায়িত্ব আছে তাই না। হা হা হা
–
মুহিত কথাটা বলে বাইরে থেকে দরজা লক করে দিয়ে চলে যায়!রাসেল ভেতর থেকে লক করে কারন আয়ানদের বিশ্বাস নেই দুম করে ঢুকে যেতে পারে।মিষ্টু হালকা সাজে সেজেছে বাট শাড়ির আঁচল মাথায় দেওয়ার আগেই রাসেল রুমে ঢুকছে!মিষ্টু মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে…
–
রাসেল মিষ্টু কাছে গিয়ে দুই হাত দিয়ে ওর মুখটা তুলে কপালে আদর দেয়!রাসেল বুঝতে পারছে যে মিষ্টু কাঁপছে! রাসেল মিষ্টুকে কিছু বলে না কারন রাসেলের নিজেরই বুকের ভেতর হাই স্পিডে হার্ট দৌড়াচেছ….রাসেল মিষ্টুকে জড়িয়ে ধরে বুকের সাথে খুব শক্ত করে।তারপর মিষ্টুকে বসিয়ে শপিং ব্যাগ থেকে কাঁচা ফুলের গয়না বের করে শুধু গোলাপ দিয়ে বানানো! মাথায়, গলায়,হাতে,কোমরেও ফুল দিয়ে বিছাও বানানো। আর গয়না গুলো রাসেল সযত্নে মিষ্টুকে পড়িয়ে দেয়!তারপর রাসেল দুচোখ ভরে তাকিয়ে থাকে মিষ্টুর দিকে..
–
রাসেল আর মিষ্টু রুম থেকে বের হয় একসাথে!ওরা বের হতেই মুহিতের আম্মু ওদের দেখে দুজনেই নখকেটে দেয় যাতে কারো নজর না লাগে!মুহিতের আম্মু ওদের মন ভরে দোয়া করে! তারপর সবাই গায়ে হলুদের স্টেজের দিকে যায়!মিষ্টু শাড়ি পড়ে হাটতে পারছে! মিষ্টু সিড়িতে দুইবার পড়তে গেলে রাসেল ধরে ফেলে বাট সিড়ি থেকে নিচে নেমে হাটছিলো তখন মিষ্টু রাসেলকে বলে….
–
মিষ্টুঃতোমাকে শাড়ি কিনতে কে বলছে?আমাকে কোনদিন শাড়ি পড়তে দেখছো?(দাঁতে দাঁত চেপে)
রাসেলঃগায়ে হলুদে তো সব মেয়ে শাড়িই পড়ে আমার জানা মতে…
মিষ্টুঃসবাই পড়লে আমাকে পড়তে হবে নাকি?আমি জন্ম সালোয়ারকামিজ অযথা লং স্কাট কিনতে কি হতো?
রাসেলঃএগুলো পড়ে তুমি গায়ের হলুদের সময় পড়তে (অবাক হয়ে তাকি)
মিষ্টুঃকেন তাতে কি হয়েছে?আমি হাঁটতে পারছি না বা*।মন তো চাচ্ছো তোমাকে!!(দাঁতে দাঁত চেপে)
রাসেলঃআমাকে কি?পুরো কথাটা বলে নিজের মনের রাগটা কমাও… (চোখ বড় করে তাকিয়ে)
মিষ্টুঃমন তো চাচ্ছে! এখন এই শাড়িটাই তোমাকে পড়িয়ে গায়ে হলুদের স্টেজে বসিয়ে দেয়!আর এই শাড়ি পড়লে বুঝতে শাড়ি সামলানো কতটা কঠিন কাজ!প্রতিটা ছেলে কে একবার করে শাড়ি পড়ানো উচিত!তাহলে তোমরা শাড়ির প্যারা বুঝতে আর শাড়ি পড়ার কথা মুখেও আনতে না….যওসব ঢং। (মুখ ভেংচি দিয়ে)
চলবে..