#স্পর্শানুভূতি
#writer_Nurzahan_Akter_Allo
#part_46
🍁🍁
মিষ্টু গিয়ে বেডে বসতেই রাসেল মিষ্টুর কাছে গিয়ে চোখ লাল করে তাকায়!আর ঠাস্ করে থাপ্পড় মেরে দেয়….মিষ্টু অবাক চোখে রাসেলের দিকে তাকিয়ে থাকে।রাসেল হুট করে এমন কেন করলো মিষ্টু বুঝতে পারছে না।
–
রাসেল খুব রেগে আছে সেটা ওকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে! রাসেল লাথি দিয়ে ওর সামনে থাকা সেন্টার টেবিল টা ভেঙ্গে ফেললো!তার ওর গায়ের জ্যাকেট টা নিয়ে হন হন করতে করতে বাসায় থেকে বের হয়ে গেল।মিষ্টু রাসেল এত বার করে ডাকলো তাও রাসেল কোন কথা শুনলো না। বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়লো! মিষ্টু মেঝেতে বসে কাদতে শুরু করলো।হঠাৎ রাসেল এমন করলো কেন মিষ্টুও বুঝতে পারছে না?
–
ওদিকে রাসেলের ফুল স্পিডে বাইক চালাচ্ছে! আর চোখের পানি মুছছে কারন ও যে ওর কলিজার গায়ে হাত তুলেছে শুধু ওই জানোয়ারটার জন্য! হুমম রাসেলকে আবিদ ফোন করে বলছে যে মিষ্টুকে ইউজ করা হয়ে গেলে মিষ্টুকে ছেড়ে দিতে!আর যদি রাসেল চাই তো মিষ্টুকে এক রাতের জন্য হলেও আবিদের চাই মিষ্টুর রেট কতো সেটাও জানতে চেয়েছে।
–
রাসেল ১০ মিঃ পৌঁছে যায় আবিদের বলা ঠিকানায় কারন রাসেল বলেছিলো যে রাসেল মিষ্টুকে আবিদের হাতে তুলে দিতে চাই।বাট আবিদ যেন এই কথা কাউকে না জানায়।রাসেল বাইকে রেখে আবিদের সামনে যায় আর ওকে উরাধুরা মারতে থাকে,আবিদকে রাসেল ওর শরীরে সর্ব শক্তি দিয়ে ঘুষি মারে আর আবিদ মুখ আর নাকি দিয়ে গলগল করে রক্ত বের হতে থাকে!রাসেল রাগের চোটে কথা বলতে পারছে না….রাসেল আবিদকে মারার পর রাসেল একটা সময় বলতে থাকে….
–
রাসেলঃকুওার বাচ্চা, তোর এত বড় সাহস তুই আমার মিষ্টুর রেট জানতে চেয়েছিস!তোরে আর আজ আমি ছাড়বো না!একদিন তোরে কিছু বলি নি বাট আজকে তুই লিমিট ক্রস করছিস! তোর মত জানোয়ারের বেঁচে থাকার অধিকার নেই,তুই জানোয়ার ছিলি আর জানোয়ারই থাকবি তোকে আমি আর বাঁচিয়ে রাখবো না।তুই আবার আমার কলিজায় হাত দিয়েছিস তোর এত সাহস কি হলো? (চিৎকার করে আবিদের বুকে লাথি দিয়ে)
–
রাসেল ওর পিস্তল বের করে, ওর শার্টের পেছনে লুকানো ছিলো এটা!আর আবিদকে পরপর তিনটা গুলি করে। আবিদ মুখ থুবড়ে মাটিতে পড়ে যায়। আর রাসেল চিৎকার করে বলতে থাকে…
রাসেরঃযে আমার মিষ্টুকে নিয়ে বাজে কথা বলবে,তাকেই আমিই শেষ করে দিবো।এতদিন আমি অনেক সহ্য করেছি কিন্তু এখন মিষ্টু আমার বাঁচার অবলম্বন! ওর দিকে যে আঙ্গুল তুলে কথা বলবে আমি তার হাতটাই রাখবো না।আমি রাসেল যতটা ভালো ঠিক খারাপের দিক থেকে ততটাই খারাপ হতে পারি শুধু আমার মিষ্টুর জন্য …(চিৎকার করে)
–
রাসেল বাইক নিয়ে একটা নদীর পাড়ে যায় আর পিস্তল টা ফেলে দেয় আর বাসার দিকে যায়!বাট রাসেল অমনোযোগী হয়ে বাইক চালাতে গিয়ে একটা ট্রাকে সাথে ধাক্কা খায় আর বাইক থেকে ছিটকে পড়ে!ট্রাক ড্রাইভার টা ব্রেক কষে নেয় বলে বেশি কোন ক্ষতি হয় নি বাট রাসেল পিচঢালা রাস্তায় পড়ছে তাই ওর কপাল কেটে গেছে আর হাত আর পা ছিলে গেছে।আশ-পাশের মানুষ ওকে হসপিটালে নিতে চাইলে রাসেল যায় না হসপিটালে। কারন মিষ্টু যে ওর জন্য ওয়েট করছে….
–
রাসেল বাইক তুলে দেখে বাইকের কোন ক্ষতি হয় নি তাই খোঁড়াতে খোঁড়াতে বাইকের কাছে আসে আর বাইক স্টাট দেয় আর বাসার দিকে যায়।মিষ্টু মেঝেতে বসে বসে কাঁদছে সেই তখন থেকে!রাসেলকে বার বার ফোন দিচ্ছে বাট রাসেল ফোন বাসাতেই রেখে গেছে।মিষ্টু মেঝেই বসে হাটুর মাঝে মুখ গুজে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে!মিষ্টু হুঠাৎ কারো কথা শুনে চোখ তুলে তাকিয়ে দেখে রাসেল হাটুর গেড়ে ওর সামনে বসে আছে আর কপাল থেকে রক্ত পড়ছে।মিষ্টু উঠে…
–
রাসেলঃস স সরি! সোনা বউ আর এমন হবে না.. (দুই কান ধরে)
মিষ্টুঃকি হয়েছে তোমার?তোমার কপালে এত রক্ত কেন?এমন কি করে হলো?কিভাবে এত ব্যাথা পেলে তুমি?(এবার শব্দ করে কেঁদে বলে)
রাসেলঃআমি ঠিক আছি তো! আমার কিছু হয় নি।তুমি এত উতলা হচ্ছো কেন?
–
রাসেল উঠে ফাস্ট এইডের বক্স আনে আর মিষ্টু সামনে বসে।রাসেল মিষ্টু পা টা ওর দিকে টেনে নেয় আর মিষ্টুর দিকে একবার তাকায় একবার পায়ের দিকে তাকায়। রাসেল হুট করে মিষ্টুর মাথার পেছনে হাত রাখে আর মিষ্টুর ঠোঁটের মাঝে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দেয় আর মিষ্টুর পায়ে কাঁচ ধরে এক টান দেয়!আর মিষ্টুর চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে!রাসেল ছলছল চোখে মিষ্টুর দিকে তাকায় আর বলে…
-.
রাসেলঃমার খেলে কেন জানো?কারন কাঁচে পা কেটে গেছে সেটা আমার থেকে লুকিয়ে রাখার জন্য!আমি দেখবো বলে আমি থেকে লুকিয়ে নিচিছলে।তোমার রক্ত দেখে আমার মাথা ঠিক ছিলো না!আর আবি,,,,,
মিষ্টুঃআবি কি বলো? (ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেদে)
রাসেলঃকিছু না!আমার থেকে কিছু লুকাতে যেও না মিষ্টু পারবে না। (মিষ্টুর পা ব্যান্ডেজ করে দিতে দিতে)
–
মিষ্টু রাসেল শার্টের বোতাম খোলে আর দেখে পিঠে থেকে রক্ত বের হচ্ছে। মিষ্টু কাঁদছে আর রাসেলের ক্ষত তে স্যাভলন লাগাচ্ছে! রাসেল মিষ্টুকে কাঁদতে নিষেধ করছে বাট কথা শুনছে না!মিষ্টু রাসেলের কপালটা ব্যান্ডেজটা করে দিলো আর বাকি জায়গা গুলো পরিষ্কার করে স্যাভলন লাগিয়ে দিলো।মিষ্টু রাসেলকে ধরে বেডে বসতে বললো!রাসেল বেডে বসলো আর মিষ্টু বেডের উপর থেকে ফুলের পাপড়ি গুলো সরিয়ে ফেললো।রাসেল শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে মিষ্টুকে….
–
মিষ্টু এখনো হেঁচকি তুলে তুলে কাঁদছে!রাসেল ওরে মেরেছে বলে কাঁদছে না বরং রাসেল এভাবে আঘাত পেয়েছে বলে কাঁদছে। মিষ্টু টাওয়াল ভিজিয়ে আনে আর রাসেলের কাছে এসে বেডে বসে আর রাসেলের শরীর মুছে দেয়!কারন ওর শরীর ধুলাবালি লেগে আছে। মিষ্টু কোন কথা বলছে না রাসেলের দিকেও তাকাচ্ছে না শুধু কাঁদছে।আর কাঁদতে কাঁদতে নাকটা টমেটোর মত লাল করে ফেলছে! রাসেল মিষ্টুকে ওর দিকে ঘুরিয়ে বসালো তারপর রাসেল ওর দুই কানে হাত দিয়ে সরি বলছে!মিষ্টু এবার কাঁদছে আর বলছে…
–
মিষ্টুঃকতবার বলি সাবধানে যাবে আর সাবধানে আসবে তাও একটা কথা শোনো না।দেখো এখন কতটা ব্যাথা পেলে। একটা কথাও শোনো না তুমি…(হেঁচকি তুলে)
রাসেলঃআমার কিছু হয় নি তো, আমি এখন একদম ঠিক আছি!আর তুমি কত ভালবেসে যত্ন করে মলম লাগিয়ে দিলে আর ব্যাথা করছে না তো।প্লিজ সোনা আর কাঁদে না…সোনাবউ(মিষ্টুর চোখ মুছে দিয়ে)
(ভাইরাস চিরতরে শেষ করে দিয়ে এলাম!কারন এই আবিদ নামক ভাইরাসের জন্য আমরা ভালো থাকতে পারতাম না।আজকে এই পবিএ একটা রাতে আমাদের চোখের ঝড়ালো ওই জানোয়ারটা।এবার থেকে যে তোমার দিকে আঙ্গুল তুলে কথা বলবে আমি তাকেই শেষ করে দিবো। এখন সবাই আমাকে সাইকো বলে তো হ্যা আমি তাই…..মনে মনে)
–
রাসেল মিষ্টুকে জড়িয়ে ধরে নিজের বুকের সাথে খুব শক্ত করে!তারপর মুখে দুষ্টু হাসি এনে বলে…
রাসেলঃআমাদের আজকে কিসের রাত যেন??উমমম মনে পড়ছে না তুমি কি জানো আজকে কিসের রাত?
মিষ্টুঃ…
রাসেলঃওহহ হ্যা আজকে তো আমাদের বাসর রাত তাই না!এত সুন্দর করে ফ্ল্যাট টা সাজালাম এত এত ফুল দিয়ে বেড রুম সাজালাম এভাবে তো রাতটা নষ্ট করা যায় না তাই না….(দুষ্টু হেসে)
মিষ্টুঃএত ব্যাথা পেয়েও তোমার দুষ্টুমি কমেনি তাই না।
রাসেলঃ একমাএ বউ! তাও আবার দুইবার বিয়ে করা!বউয়ের সাথে দুষ্টৃমি করবো না তো কার সাথে করবো বলো।ওহ হ্যা তোমাকে একটা জিনিস দেওয়ার আছে ওয়েট…
মিষ্টুঃআমাকে বলো আমি এনে দিচ্ছি! তোমাকে উঠতে হবে না।
–
রাসেল খোঁড়াতে খোঁড়াতে আলমারি খুলে একটা বক্স আনলো তারপর মিষ্টুকে দাড় করিয়ে আর কাছে আনলো আর একটা চেনের মত কোমর বন্ধনী মিষ্টুকে পরিয়ে দিলো!বাট সবাই তো কাপড়ের উপরেই কোমর বন্ধনী পড়ে বাট রাসেল মিষ্টুর খালি পেটে পড়িয়ে দিয়েছে..
–
রাসেলঃএটা লুজও করা যাবে টাইটও করা যাবে!আর এটা সব সময় পরে থাকবে, আমি যেন না দেখি যে এটা খুলছো!খুললে কিন্তু আমি খুব বকা দিবো তোমাকে!আর এই কোমর বন্ধনীর টার লকটা R এটা সব সময় নাভি বরাবর থাকবে কেমন! কারন এখানে আমার জুনিয়র আসবে খুব তারাতারি…হা হা হা (পেটে একটা আদর দিয়ে)
–
রাসেল আদর দেওয়ার সাথে মিষ্টু ছিটকে দুই পা পিছিয়ে যায়।মিষ্টু কিছু বলছে না শুধু মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে!রাসেল মুচকি হেসে মিষ্টুর কাছে যায় আর কোলে তুলে বেডে শুইয়ে দেয়! রাসেল মিষ্টুর উপরে হালকা ভর দিয়ে মিষ্টুর দিকে তাকিয়ে আছে।মিষ্টু আজকে রাসেলের চোখে অন্য রকম একটা নেশার চাহনি দেখতে পাচ্ছে! মিষ্টু লজ্জা পেয়ে দুইহাত দিয়ে ওর মুখ ঢেকে ফেলে।
–
রাসেল মুচকি হেসে মিষ্টুর দুইহাত ওর দুইহাতের আঙ্গুলের মাঝে রাখে। তারপর মিষ্টু গলায় মুখ ডুবায় তার কপালে, গালে,ঠোঁটে ঠোঁট রাখতে যাবে তার আগেই মিষ্টু রাসেলকে মাথা নাড়িয়ে না বোঝায়…রাসেল মিষ্টুর চোখে দিকে তাকিয়ে বলে।
রাসেলঃ প্লিজ মিষ্টু আজকে আর বাঁধা দিও না!এতদিন তো এই দিনটার জন্য আমি ওয়েট করছিলাম! তোমাকে কাছে পেয়েও তোমার থেকে আমি দুরে সরে থাকছি।বিয়ের তিন মাস হতে চললো আমি এতদিন এই শুভ দিনটার জন্য ওয়েট করছি আমি আর এই রাতটাকে নষ্ট করতে চাই না।আর আমি নিজেকে কনট্রোল করতে চাই না আর পারবোও না আর কনট্রোল করতে…..প্লিজ! মিষ্টু
–
মিষ্টু আর কিছু বলে নি হয়তো রাসেল মিষ্টুর চোখের ভাষা বুঝে নিয়েছি।আজকে আর কোন বাঁধা না, আজকে ওদের পবিএ ভালবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হোক।আজকে দুজন দু’জনকে ভালবেসে একে অপরের আপন করে নিক।
তারপর……তারপর……তারপর…..
(এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন?পারুম না বলতে… 😜🙈)
–
(আপনারা এমন ক্যারে!ওরা যা ইচ্ছা করুন, আপনারা এমন ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছেন কেন?আপনারা আসলেই দুষ্টু!ওদের কে আর ডিসটাব করবেন না তো! ওরা এখন খুব বিজি…..😜😜)
–
পরেদিন সকালে…
রাসেলের আগে ঘুম ভাঙ্গে ! ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে ১০ঃ৩৫ বাজে!রাসেল খেয়াল করে দেখে মিষ্টু ওকে জড়িয়ে ধরে আছে আর মিষ্টুর একটা পা রাসেলের পেটের উপর।রাসেল মিষ্টু পা টা নামিয়ে দেয় আর! রাসেল খেয়াল করে দেখে মিষ্টু থ্রী কোয়াটার পরে আছে তার মানে মিষ্টু রাতে আবার উঠে আবার সাওয়ার নিয়েছিলো।,,,,রাসেল মিষ্টুর কপালে আদর দিয়ে।
–
রাসেলঃএই মিষ্টু পাখি ওঠো না!
মিষ্টুঃউমমম!আর একটু ঘুমাবো..রাতে ঘুম ঠিক মত হয়নি…
রাসেলঃঅনেক বেলা হয়ে গেছে তো।এবার তো উঠতে হবে..
মিষ্টুঃআমি তো সকালে উঠে সাওয়ার নিছি নামাজও পড়ছি তাই আর একটু পরে উঠবো….পারবো না এখন উঠতে।
রাসেলঃহুমম বুঝলাম!বাট এখন তো তোমার হাতের নখ কাটতে হবে !সো তারাতারি উঠো…
মিষ্টুঃকেন? নখ কাটবো কেন?(ঘুম ঘুম কন্ঠে)
রাসেলঃকারণ কালকে রাতে আমার পিঠের অবস্থা খারাপ করে ফেলছো। এত বড় বড় নখ থাকলে আমি শেষ….. হা হা হা (মিষ্টুকে জড়িয়ে ধরে)
মিষ্টুঃঅসভ্য একটা..
চলবে….
(এবার খুশি তো তোমরা….)