#স্পর্শানুভূতি
#writer_Nurzahan_Akter_Allo
#part_52
🍁🍁
রাসেলঃ মুহিত তোরটা তুই সামলা!আর আমরা টা আমি নিয়ে গেলাম।বাই (মুহিতের দিকে তাকিয়ে! মিষ্টুকে কোলে নিয়ে)
–
রাসেল মিষ্টুকে এনে ড্রয়িং রুমে নামিয়ে দিলো!আর রাসেল জয়কে ধরে মারতে শুরু করলো।তারপর জয়ের বামে (পেছন সাইডে) একটা লাথি দিয়ে বললো…
রাসেলঃ শালা তোর লজ্জা করে না!আমার বন্ধু টাকে এভাবে লজ্জায় ফেলতে…
জয়ঃ আহহহ্! মা গো আমার ইয়ে শেষ। আস্তে লাথি দে শালা দাগ হয়ে যাবে তো! পরে আবার আমার বউ আমাকে সন্দেহ করবে…
আয়ানঃ হা হা হা হা
মিষ্টুঃ কতবার বললাম কাশবে না কাশবে না।তাও কাশতে শুরু করলে। (জয়কে উদেশ্য করে)
জয়ঃ কাশি আর ইয়ে কখনো আটকে রাখা যায় না পাগলি… (বিশ্ব জয় করা হাসি দিয়ে)
মিষ্টুঃ আজকে তোমার জন্য ধরা পড়ে গেলাম।সব তোমার জন্য! (জয়ের চুল ধরে টেনে)
–
তারপর রাসেল মিষ্টুকে ধরে না হলে আজকে জয়কে পুরো টাকলা করে দিবে।রাসেল মিষ্টুকে ধরে রুমে নিয়ে যায় আর আয়ান রা তিনজন একটা রুমে শুয়ে পড়ে।রাসেল মিষ্টুকে শুইয়ে দিয়ে নিজেরও শুয়ে পড়ে!মিষ্টু তখন রাসেল বুকে ঘাপটি মেরে শুয়ে থাকে!রাসেল মিষ্টুর কপালে আদর দেয়।মিষ্টু রাসেলের দিকে তাকিয়ে বলে…
মিষ্টুঃঅনেক দিন গান শুনা হয় না তোমার থেকে।এখন আমার জন্য তোমার মনে কেমন ফিলিংস সেই মুড অনুযায়ী দুইটা গান শোনাও….
রাসেলঃ হা হা হা তাই নাকি….দুইটা মুড কাজ করছে আমার এখন। তোমার চোখের দিকে তাকালে একটা মুড আর ঠোটের দিকে তাকালে আরেকটা মুড…. আর গানের কয়েকটা লাইন শুনাচ্ছি….
মিষ্টুঃ শুনি…
চোখের দিকে তাকালে…এই গানটি মনে হয়!
দেখলে তোকে অবাক চোখে
কোন সে মায়া আমার ডাকে!!!
সারাট্ ক্ষণ মনও চাটোন তোর ভাবনা।
মানের পাড়ায় ডাকাডাকি!
তোরই ছবি আঁকাআকি
একসাথে চল না দুজন হারায়…
হ্যা তুই হ্যা তুই এই জীবনেরই মানে
তোকে নিয়ে কতো সপ্ন এ রিদয়ে বুনে…..
–
আর ঠোঁটে দিকে তাকালে…. এই গানটি মনে হয়!
ফুল দিও কলি দিও
কাটা দিও না
আস্তে আস্তে চুম্মা দিও
কামড় দিও না………………. (দুষ্ট হেসে)
মিষ্টুঃ অসভ্য… (রাসেলের বুকে কিল বসিয়ে)
তারপর দুজনেই দুষ্টুমি করতে করতে ঘুমিয়ে পড়ে….
–
মিতু আর মুহিত রাসেল আর মিষ্টু নিজ নিজ সংসার নিয়ে বিজি।ওরা অনেক ভালো আছে। মিষ্টু এখন সুস্থ বাট খাওয়া দাওয়াত নিয়ম মাফিক করতে হয়।আর এভাবে দেখতে দেখতে কেটে যায় আরো দুই টা বছর!মুহিত আর মিতু বেবি নিতে চাচ্ছে বাট মিতু কনসিভ করছে না তাই মিতু আর মুহিত হসপিটালে যায় চিকিৎসার জন্য। মিতু মিষ্টুকে নিয়ে যেতে চাচ্ছিলো বাট মিষ্টু জানে এখানে হাজবেন্ড -ওয়াইফ এর অনেক তথ্য ডাক্তার জানতে চাই!মিষ্টু যদি যেত তাহলে মুহিত আনইজি ফিল করতো….
–
ওদিকে মিষ্টু আর রাসেল দুজনে খেতে বসে!মিষ্টু রাসেলের দিকে তাকিয়ে বলে..
মিষ্টুঃ রাসেল একটা কথা জানার ছিলো??
রাসেলঃ বলেন ম্যম!
মিষ্টুঃ আমার তো এত বড় অপারেশন হলো!আচ্ছা আমি কি কোনদিন কনসিভ করতে পারবো।আমি কি আম্মু ডাক শুনতে পাবো।
রাসেলঃ ইনশাআল্লাহ! একদিন সব হবে…
মিষ্টুঃ আমার না খুব ডাউট হয় জানো!
রাসেলঃ আরে বোকা তোমার খাদ্য নালিতে সমস্যা হয়েছিলো জরায়ু তে তো না।তাহলে তুমি অযথা টেনশন করছো কেন??
মিষ্টুঃ আচ্ছা আমরা একবার ডাক্তারের কাছে গেলে কেমন হয়। প্লিজ..
রাসেলঃ ওকে আমরা কালকে যাবো কেমন।এখন খাও..
মিষ্টুঃ আমার যদি বাচ্চা না হয় আমাকে এভাবে ভালবাসবে তো তাড়িয়ে দিবে না তো..
রাসেলঃ কেন বাচ্চা ছাড়া কি জীবন চলে না?নাকি বাচ্চা ছাড়া মানুষ বাঁচে না।এগুলো তোমার বা আমার হাতে নাই যে চাইলেই পাবো।সব আল্লাহ ভরসা… আর যদি না হয় তো না হবে এত আমার কোন আফসোস নাই।আমি তোমাকে চাই, তোমাকে চাই,আর তোমাকেই চাই। আমরা দুজন মিলেই না হয় দুজন দুজনেরই পাশে থেকেই কাটিয়ে দিবো সারাজীবন…
–
মিতু বাসায় এসে কান্না করতে থাকে!কারন কনসিভ না করার পেছনে আসল সমস্যা হচ্ছে মিতুর।বাচ্চার জন্মানোর থলিটাই মিতুর নাই! যার কারনে মিতু কোনদিন কনসিভ করতে পারবে না।মিতু কান্না করতে করতে মুহিতের সামনে যায় আর বলে…
মিতুঃ প্লিজ মুহিত তুমি আমাকে ছেড়ে দাও!আমি তোমাকে বাবা হওয়ার সুখ দিতে পারলাম না।তুমি আমাকে ছেড়ে দিয়ে আবার বিয়ে করো….আমি চাই না আমার জন্য তোমার বাবা ডাক না শুনতে পাওয়ার আফসোস করতে হয়..
মুহিতঃ তাই! একটা বাচ্চার জন্য আমার এই মিষ্টি বউটাকে আমি ছেড়ে দিবো কেন?মিতু, রাসেল আর মিষ্টুকে দেখছো! মিষ্টুরও যে বাচ্চা হবে এটাতেও আমরা সিওর না কারন এত বড় অপারেশন হওয়ার পর অনেক মেয়ে কনসিভ করে না। তারপরেও রাসেল মিষ্টুকে কত টা ভালবাসে,ভালবেসে আগলে রাখে, রাসেলের প্রাণ এখন মিষ্টু। এমন তো আমার বোনের সাথেও হতে পারতো বা পারে তাই না….তাহলে আমি কিভাবে এই কারনে তোমাকে ছাড়তে পারি বলো।মিষ্টু যেমন আমার বোন তুমিও তো কারো বোন তাই মিষ্টুকে দিয়েই আমি সমান বিচার করলাম।তোমাকে ছেড়ে দিলে তোমার বাবা মায়ের চোখের পানিতে আমার বোনের আর আমার জীবন সুখকর হবে না।আর বাচ্চা তো আমার এ্যাড্রপও নিতে পারি। এসব আর বলবে না কেমন। আর আমার সমস্যাও তো হতে পারতো তাই না!আমার সমস্যা হলে আমাকে ফেলে চলে যেতে..(মিতুর দুই গালে হাত রেখে)
মিতুঃ আমি কোনদিনও না তোমাকে ছাড়া যাবো না।আর না যেতে পারতাম।
–
রাসেল আর মিষ্টু হসপিটাল যায় আর ডাক্তার সাথে কথা বলে।ডাক্তার ওদের বেবি নিতে বলছে আর কোন সমস্যা হবে না ইনশাআল্লাহ! মিষ্টু এসে মিতুকে বকাবকি করে গেছে যাতে এসব নিয়ে কান্নাকাটি না করে!মিষ্টু যাওয়ার সময় ওর আম্মু হাত ধরে বলে গেছে..মিতুকে সাপোর্ট করতে সব সময়।শাশুড়ি না আম্মু হয়ে উঠতে… যাতে শাশুড়ি হয়ে বাচ্চা না হওয়া নিয়ে মিতুকে খোঁচা মেরে কথা না বলে আর না কাউকে বলতে দেয়।মিষ্টুর আম্মু যদিও খুব ভালো মনের তার পরেও মেয়ে হিসেবে বলছে…
–
প্রায় ৪ মাস পর মিষ্টু কনসিভ করে!আর রাসেলের তো আনন্দের শেষ নাই।রাসেল আরো বেশি করে কেয়ার করে এখন মিষ্টুকে!তবে যেদিন থেকে মিষ্টু জানতে পারছে যে ও কনসিভ করছে! সেদিন থেকেই মিষ্টু মুহিত আর রাসেলের ছবি নিয়ে বসে থাকতো সারাদিন।নামাজে বসে বলতো যাতে ওর বাচ্চা মুহিত বা রাসেলের মত হোক।রাসেল কিছু বলতো না শুধু হাসতো,,,দিন দিন মিষ্টুর তো রাসেলের প্রতি এক প্রকার অত্যাচার শুরে করে…রাত ২ টা বাজে আর রাসেলকে ঘুম থেকে টেনে তুলে বলছে…
–
মিষ্টুঃ একমাএ তোমার জন্য আমার এই অবস্থা! ও মা গো কোমর কি ব্যাথা করছে?শরীর ম্যাজ ম্যাজ করছে!কেমন জানি লাগছে আমার। আজকে মন চাচ্ছে তোমাকে গর্ভবতী করে দিতে…তাহলে বুঝতে কেমন মজা।কত কষ্ট এই সহ্য করতে হয় এই সময় ।প্রতিটা ছেলে কে একবার করে বাচ্চা প্রসব করানো উচিত। ভ্য ভ্য ভ্য (কেঁদে কেঁদে)
রাসেলঃআমার জীবনে আর কি কি শোনা বাকি আছে তাই ভাবছি??আর এজন্য সেদিন বলছিলাম এখন বাচ্চার প্যারা না নিতে একথাও তো শুনো না। মাথা মোটা একটা…এখন কার কষ্ট হচ্ছে শুনি..
মিষ্টুঃ ওই খাটাশ বর!তোর সাহস কি করে হলো আমার বাচ্চাকে প্যারা বলার।তারাতারি এদিকে আয়…
রাসেলঃ আদর দিবা নাকি!থাক এখন আদর নিবো না (দুষ্টু হেসে)
মিষ্টুঃ তারাতারি আসবি নাকি আমি উঠবো…
–
রাসেল মিষ্টুর দিকে এগিয়ে যেতেই মিষ্টু রাসেলের চুল ধরে টানা শুরু করলো।বেচারা রাসেল……🤣
–
মিষ্টুর এখন নয় মাস চলছে! এখন ওর নড়াচড়া করতে খুব কষ্ট হয়। আজকে মিষ্টু হসপিটালে এডমিট হয়েছে সিজার করার জন্য।সবাই এই সময় কাঁদতে কাঁদতে ওটিতে যায় আর মিষ্টু যাচ্ছে হাসতে হাসতে।রাসেলের টেনশনে মুখটা শুকিয়ে গেছে! সবার সামনেই মিষ্টু রাসেলের দিকে তাকিয়ে বলছে…
মিষ্টুঃ এমন ভাব করছো মনে হচ্ছে তোমারই বাচ্চা হবে।এত টেনশন করা কি আছে শুনি???
বিয়ের দিনের মত সবাই হাসতে শুরু করলো।আর বেচারা রাসেল করুন চোখে মিষ্টুর দিকে তাকিয়ে আছে।ডাক্তার এসে মিষ্টুকে বললো ওটি তে আসতে।মিষ্টু ডাক্তারের দিকে তাকিয়ে বললো…
মিষ্টুঃ হুমমম! তারাতারি চলুন তো আর দুম করে আমার পেট থেকে বাচ্চাটা থেকে বের করে দেন….
চলবে…
(কালকেই সমাপ্ত করবো গল্পটা….so wait for last part)