এলোকেশী_কন্যা২__ #written_by_Nurzahan_akter_Allo #part_11 🍁🍁

0
1034

#এলোকেশী_কন্যা২__
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_11
🍁🍁

রোদঃ যে চুলোয় ইচ্ছে হয় যাও!আই ডোন্ট কেয়ার।
বাট মাথায় হিজাব,ওড়না আর কামিজের হাত হবে ফুল হাতা,এই তিনটা যদি একটাও একদিন ওদিক হয় আর আমার চোখে যদি পড়ে তখনই তোমাকে মেরে পুঁতে দিবো।আর তখনই বুঝবে রোদ মেহবুব আসলে কি??আর এই কথা মাথায় ঢুকিয়ে নাও….


রোদ কথাটা বলে বেসিনে হাতটা ধুয়ে হনহন করতে করতে ওর রুমে চলে গেল!আলো রোদের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে সবকিছু গোজগাছ করে আলোর ওর রুমে গিয়ে মেঘের পাশে শুয়ে পড়লো…….!!!

পরেরদিন সকালে_______
আলো প্রতিদিনের মত আজকেও নামাজ পড়ে তারপর খালি পায়ে কিছুক্ষণ বাগানে হাটাহাটি করে!তারপর রান্নাঘরে এসে সকালের নাস্তা বানিয়ে নেয়!তারপর মেঘকে ঘুম থেকে টেনে তুলে আর জোর করে ফ্রেশ হতে পাঠিয়ে দেয়!মেঘ আসছে না দেখে আলো মেঘের রুমে গিয়ে দেখে মেঘ দেওয়ালে হেলান ঘুমাচ্ছে! আলো মুচকি হেসে মেঘকে নিয়ে ওয়াশরুমে যায় তারপর ব্রাশ করিয়ে মুখ ধুয়ে দেয়!মেঘ ওর আঙ্গুল দেখিয়ে আলোকে বোঝায় ও হিসি করবে!আলো মুচকি হেসে নিচে মেঘের রুমে চলে যায়।


আলো মেঘের ক্লাস রুটিন অনুযায়ী সব বই ব্যাগে ঢুকিয়ে দেয়!তারপর মেঘকে স্কুলের জন্য রেডি করিয়ে খাইয়ে দেয়!রোদের আম্মু প্রতিদিন এসব করতো এখন উনি আরামে বসে বসে শুধু দেখছে!মেঘে স্কুলের যাওয়ার জন্য পা বাড়াতে আলো মেঘকে থামায় আর মেঘের কপালে আদর দিয়ে দেয়।মেঘও আলোকে রিটার্ন আদর দেয় তারপর মেঘ স্কুলে চলে যায়।


আজকে রোদদের বাসায় শিউলি(কাজের বুয়ার) আসার কথা!উনি গ্রামে বেড়াতে গিয়েছিলো।রোদের আব্বু ব্রেক ফাস্ট করে মেঘের সাথেই বেরিয়ে গেছে!রোদের আম্মু আর আলো ব্রেক ফাস্ট সেরে নেয়।আলো একবার ভাবলো গোসল টা সেরে তারপর রেডি হবে কিন্তু আবার ভাবলো এখন যদি গোসল করে তাহলে চুল শুকাবে না আর ভেজা চুল থেকে পানি পড়ে জামা ভিজে যাবে!তখন আরো বিশ্রী দেখাবে!আলো এজন্য গোসল না করে হাতমুখ ধুয়ে নিলো তারপর কলেজে যাওয়ার রেডি হয়ে নিলো!


রোদের আম্মু রোদ কে ডেকে তুলছে কারন রোদের দায়িত্ব পড়ছে আলোকে কলেজে নিয়ে যাওয়ার জন্য। রোদ ফ্রেশ হয়ে আসে!রোদের আম্মু রোদকে ব্রেক ফাস্ট করতে বললে রোদ বলে সে কিছু খাবে না।আলো রেডি হয়ে নিচে নামতে নামতে দেখে রোদ সোফায় বসে আছে!আর রোদের বসা দেখে আলো হা করে তাকিয়ে আছে!রোদ ওর পায়ের উপর পা তুলে সাহেবী স্টলে বসে ফোন টিপছে।


আলো রোদের আম্মুর কাছে গেল কারন রোদের আম্মুর যাওয়ার কথা আজকে আলোর সাথে। রোদের আম্মুর বুদ্ধি করে রোদ কে পাঠাচ্ছে আলোর সাথে!রোদের আম্মু রোদের দিকে তাকিয়ে বললো…

রোদের আম্মুঃ রোদ আলো রেডি হয়ে গেছে!যাও ওকে কলেজে রেখে এসে!সাবধানে যাবে…!!

রোদঃ উফফ এসব প্যারা আমার আর ভালো লাগে না। (বিরক্তের সুরে)


রোদের কথা শুনে আলো দাঁতে দাঁত চেপে শুনলো।রোদ একবার আলোর মাথা থেকে পা পর্যন্ত তাকালো। তারপর বাইরে হাটা দিলো।রোদের আম্মু আলোকে রোদের সাথেই যেতে বললো।রোদ ওর বাইক নিয়ে আসলো!আলো কি করবো বুঝতে পারছে না! এই খাটাশের সাথে যাওয়া থেকে না যাওয়াই বেটার কিন্তু কি করবে এখন।রোদ আলোর দিকে তাকিয়ে বললো…!!


রোদঃ বাইকে বসার জন্য এখন কি তোমাকে আলাদা করে চিঠি পাঠাতে হবে (দাঁতে দাঁত চেপে)

আলোঃআ আম আমি এর আগে কারো বাইকে বসি নি তাই একটু ভ ভ ভয় লাগছে।

রোদঃ ওহহ!তাহলে তুমি এখানেই দাড়িয়ে থাকো কেমন। তোমার জন্য রাজপুত্র তার পক্ষীরাজ ঘোড়া আনবে! তখন তুমি কলেজে যেও।তুমি ছোট্ট খুকিমুনি বলে কথা! বাইকে উঠতে তো ভয় পাবেই….

আলোঃ….

রোদঃ তুমি তাহলে থাকো!আমি গেলাম….
(আমাকে ধাক্কা দেওয়া তাই না!আলোমনি তুমি একবার শুধু বাইকে উঠো তারপর তোমাকে আমি বোঝাবো মজা।খুব সাহস তাই না রোদ মেহবুব কে ধাক্কা দিয়েছে।মনে মনে)


রোদ বাইক টান দিলো!তখন আলো রোদকে থামতে বলে বাইকে উঠে বসে।আলো রোদের থেকে দুরুত্ব রেখেই বসেছে!রোদ যদিও আলোকে বলছে রোদের কাঁধে হাত রাখার জন্য কিন্তু আলো রাখে না।রোদ দুষ্টু হেসে বাইক স্টাট দেয়!তারপর স্পীড বাড়িয়ে দেয়! আলো ভয়ে রোদের কাঁধে হাত রাখে।রোদ তখন দুষ্ট হাসে… তারপর ইচ্ছে করেই জোরে একটা ব্রেক মারে আর আলো হুমড়ি খেয়ে রোদের উপর পড়ে।রোদ তখন আলো বলে উঠলো…

রোদঃ তুমি তো আসলেই অসভ্য একটা মেয়ে।এর ধাক্কা খাওয়া জন্য সামনাসামনি পড়তে আর আজকে আমার উপরে…! ছিঃ!ছিঃ!

আলোঃ……..
(ফাঁকা রাস্তায় ব্রেক কষে এখন আমার দোষ দিচ্ছে। এই ছেলে আসলেই অসভ্য! এত পরিমানের অসভ্য যে, কোন সংখ্যা দেওয়ার মত সংখ্যা এখনো জন্ম হয় নি।মনে মনে)


আলো রোদকে মনে মনে ভয়ংকর কিছু গালি দিয়ে চুপ করে থাকলো!রোদ তো মজা নিচ্ছে আলোকে কথা শুনিয়ে।আলো রোদকে জিজ্ঞেস করলো আলো রোদকে ধরে বসতে পারবে না কি না!রোদ বেশি কিছু বললো না শুধু হুমম বললো।আলো রোদের কাঁধে এক হাত আর রোদের বামপাশে নাভির কাছের শার্ট খামচে ধরলো!রোদ কিছু বললো না বাট রোদ শয়তানি করে আবার ব্রেক মারলো! আর আলো শক্ত করে রোদের পেট খামছে ধরলো।রোদের ব্যাথা লাগছে তাও কিছু বলতে পারছে না!আর আলো ইচ্ছা করেই খামছে ধরছে…!! রোদ ব্যাথা সহ্য করলেও
রোদের কাতুকুতু বেশি তাই রোদ কাতুকুতু সহ্য করতে পারে না।তাই রোদ তারাতারি আলোর হাত সরিয়ে দিলো…!!আলো মনে মনে বলছে..!!

আলোঃ হাত সরিয়ে দিলি কেন? এখন কেমন লাগে খাটাশ পোলা একটা। (মনে মনে)

রোদঃ আমাকে খামচানোর এত ইচ্ছা সেটা মুখে বললেই হয়! রাক্ষসী একটা….!!!!

আলোঃকলেজে যেতে আর কতটুকু সময় লাগবে।(বিরক্ত হয়ে)


রোদের ঠোঁটের কোনে দুষ্ট হাসি! রোদ বাইক স্পীড বারিয়ে দিলো আলো রোদ বার বার রোদকে থামতে বলছে কিন্তু রোদ থামছে না।আলো ভয়ে পেয়ে রোদের পিঠে মাথা রেখে রোদকে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। রোদ বাইকের গ্লাসে আলোর ভীতু মুখটা দেখে মুচকি মুচকি হাসে!আলোর কলেজ যেতে ২০মিঃ লাগার কথা সেখানে রোদ উল্টো রাস্তায় দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ৪০মিনিটে কলেজে এনেছে!কলেজের গেটে রোদ বাইক থামায়! আলো বাইক থেকে নেমে চলে যেতে নিবে তখন রোদ আলোকে উদ্দেশ্য করে বলে…


রোদঃ এই মেয়ে তোমাকে আমি যেতে বলছি??

আলোঃ না (মাথা নিচু করে)

রোদঃ তাহলে চলে যাচ্ছো কেন??পা খুব লম্বা হয়েছে তাই না।পা ভেঙ্গে হাত ধরিয়ে দিবো তখন বুঝবে…!!

আলোঃ আচ্ছা আপনি আমাকে শুধু শুধু বকা দেন কেন?আমি কি করছি??

রোদঃ না তোমাকে বকা দিবো না কোলে বসিয়ে আদর
করবো।

আলোঃ…

রোদঃ কলেজে এসেছেন ভালো কথা!মন দিয়ে পড়াশোনাটাই যেন হয়!মন টা যদি একদিক ওদিক যাই তো খবর আছে!ছেলেদের থেকে দুরে থাকবেন যদি উল্টো পাল্টা কিছু শুনি তো! একটা রিকশা ওয়ালাকে ধরে এনে বিয়ে দিয়ে দিবো।
আমার কথা বুঝলে নাকি আবার বলবো..!!

আলোঃহুমম বুঝেছি!!

রোদঃ বুঝলে ভালো আর না বুঝলে আরো ভালো।এই শোনো আর একটা কথা তুমি পড়ে যাবে,আছাড় খাবে, ব্যাথা পেলে পাবে! বাট হিজাব আর ওড়না যাতে এদিক ওদিক না হয় এটা খেয়াল রাখবে। আর হিজাব আর ওড়না এদিক ওদিক হয় তো! কি করবো সেটা কাজেই বুঝিয়ে দিবো!আর কালকে রাতে কি বলছি মনে আছে তো??

আলোঃ জি…!!
রোদঃ ওকে! এখন যাও..!!

To be continue…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here