দেশলাই – ৭ম পর্ব
( সতর্কতা: দুইটি পর্বে অতিরিক্ত ১৮+ থাকবে। আপনারা আগেই ভাবুন এখনকার উঠতি বয়সের প্রেম কত লুতুপুতু হয়। তাছাড়া রাফসানের সঙ্গে ইন্তিশার শারীরিক সম্পর্ক। “ইন্তিশা” বাস্তব একটি চরিত্র অবলম্বনে ছদ্মনামে লেখা হচ্ছে। আপনারা অবশ্যই জানেন গল্প/উপন্যাস থেকে বাস্তবে এইসব প্রেমিক-প্রেমিকার ফোনালাপ বেশি অশ্লীল হয়। বাস্তবতা হজম করার ক্ষমতা না থাকলে পর্বগুলো এড়িয়ে যান )
দিলশাদ সাহস করে পুলিশকে ট্রেনের টিকেট দেখিয়ে লোকাল লোকদের মতো বলল, ‘সাব আমরা মুম্বাই দাদরের ট্রেন মিস করেছি। এখন কি করতে হবে?’
পুলিশ তাদের দিকে বিশেষভাবে না তাকিয়েই টিকেটে চোখ বুলিয়ে বলল, ‘ওই প্লাটফর্মে গিয়ে বসে থাকো। ট্রেন এলেই লাইনে দাঁড়াবে।’
শেষ পর্যন্ত তারা ট্রেন পেল। হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেনে মুম্বাই দাদর যেতে আটচল্লিশ ঘন্টার বেশি লাগে। ট্রেন জার্নির অবস্থাও করুণ। তারা তৃতীয় শ্রেণির ট্রেনে উঠেছে। চারদিকে মানুষে গিজগিজ করছে। যাত্রীরা ঘাদাঘাদি করে বসা৷ শরীর নাড়ানো যাচ্ছে না। প্রস্রাব করতে যেতে হলেও যুদ্ধ করে যেতে হয়। কারণ হাঁটার পথেও যাত্রী বসা, দাঁড়ানো। রাতদিন জেগে থাকতে হচ্ছে। হিজরারাও যন্ত্রণা করছে৷ একেক স্টেশনে একেক দল উঠে। চুল ধরে টানে। গালে হাত দেয়। কোলে বসে যায়। টাকা না দিলে অযথাই কাপড় তুলে গোপনাঙ্গ দেখায়। চানাচুর, বিমল, বাদাম, চা ওয়ালারা সুরে সুরে চেঁচায়।
একদিন যেতেই পেছনে ব্যথা ধরে গেল। বারংবার তাদের মনে হচ্ছে চামড়া বুঝি ছিলে গেল। অথচ ইন্ডিয়ার মানুষদের খুব বেশি বিরক্ত মনে হচ্ছে না। যদিও এই ট্রেনে বেশিরভাগ শ্রমিক শ্রেণির মানুষ। তাদের এমনিতেই ধৈর্য বেশি। তবে ভারতের সৌন্দর্য রাফসানকে মুগ্ধ করছে। ট্রেনের জানালার বাইরে চোখ রাখলেই আখের বাগান, নারিকেল বাগান, উঁচু পাথরের পাহাড়, সবুজ ঘাসে ঘেরা মাটির পাহাড়, মাঝে মাঝে পাহাড়ের ভেতর দিয়ে ট্রেনের রাস্তা। এতো বড় দেশ যে কোনো রাজ্যে শীত আবার কোনো রাজ্যে গরম। এগুলো উপভোগ করছে। মাঝে মাঝে চোখের সামনে ভেসে বেড়াচ্ছে ইন্তিশার স্মৃতি। তখন জানালার বাইরে পাহাড়ের চূড়ায় তাকালে যেন ইন্তিশার নগ্ন দেহ আবছা ভেসে উঠে। সিনেমার নায়িকাদের মতো পাহাড়ের পর পাহাড়ে নেচে বেড়াচ্ছে সে। ইন্তিশাকে ভীষণ মনে পড়লে তার এমনই হয়, স্পষ্ট চোখের সামনে সবকিছু দেখতে পায়। ওর শরীরের কড়া গন্ধ নাকে আসে। ওই দেহের সমস্ত অলিগলি যে তার নখদর্পনে। দীর্ঘদিন ওর সঙ্গে যে তার মানসিক, শারীরিক সম্পর্ক ছিল। জীবনের প্রথম প্রেম। ওর খুব মধ্যখানে ডুব দিয়ে যে ওই পাড়ায় পেয়েছিল তার স্বর্গসুখের ঠিকানা। চোখ বুঁজলে স্পষ্ট দেখে সেই সুখের দিনগুলি। প্রথম যেদিন ইন্তিশার সঙ্গে সন্ধ্যায় দেখা করে গাড়িতে এসে উঠে। তখনই ইন্তিশা মেসেজ দেয়, ‘তোমার ঠোঁট অনেক অনেক মায়াবী রাফসান। ছাড়তে ইচ্ছা করছিল না৷ কিন্তু কেউ এসে পড়ার ভয়ে তাড়াতাড়ি যেতে দিতে হলো।’
ইন্তিশার প্রতিটি কথা রাফসানের শরীরের সমস্ত লোমকূপ পর্যন্ত নাড়িয়ে তুলে। কোনো মেয়ে এভাবে অকপটে কথা বলতে পারে ধারণাতেই ছিল না৷ তার কাছে যে খারাপ লাগে, তা না। বরং ইন্তিশার প্রতি আগ্রহ আরও হাজারগুন বাড়িয়ে দেয়। এই যে ওর সঙ্গে চুমু, জড়াজড়ি করে বিদায় নিয়ে বাসে এখন আরেকজনের পাশে বসে আছে। তবুও ইন্তিশার মেসেজ আর খানিক আগের উষ্ণতায় তার শরীরের আরেকটি স্বাধীন অঙ্গ নিজের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে। স্থানচ্যুত ঘটছে। পুরুষ মানুষ কি অসহায় সেই স্বাধীন অঙ্গটির কাছে। মানুষ যখন কোনো কিছুতে হাত দিতে চাইবে না হাত নিজ থেকে সেদিকে যায় না। মানুষ যদি কথা বলতে না চায়, মুখ থেকে কথা বেরুবে না। মানুষ যদি চায় সে আর হাঁটবে না, পা নিজ থেকে হাঁটতে শুরু করবে না। কিন্তু পুরুষের শরীরে কেবল একটি অঙ্গ নিজের নিয়ন্ত্রণে নেই। সেই অঙ্গ নিজের মতো স্বাধীন। একটি নগ্ন নারী দেহ যদি নিজ থেকে সামনে এসে দাঁড়ায়। পুরুষ নিজের সেই স্বাধীন অঙ্গকে হাত, পা, মুখের মতো আঁটকে রাখতে পারে না। অঙ্গটি নিজেই ফণা তোলা সাপের মতন গর্জে উঠবে। সে স্বাধীন। কাউকে ভয় পায় না। মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে নিজের ইচ্ছার জানান দেওয়ার সাহস তার আছে৷ সে বেপরোয়া।
রাফসানও ব্যতিক্রম নয়।
ইন্তিশাকে জড়িয়ে ধরে ঠোঁটে চুমু খেয়ে আসার পর থেকে রাফসান বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছে। বাজারের চারপাশে মানুষ। তবুও বারংবার ফণা তুলছে স্বাধীন বেপরোয়া অঙ্গটি। সে যেন বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে। অথচ রাফসানের কাছে বারংবার মনে হচ্ছিল এই মুহূর্তে পৃথিবীর সকল মানুষ তার দিকে তাকিয়ে আছে। কি লজ্জা! কি লজ্জা! কোনোভাবে হেঁটে এসে বাসে বসে। এখন ইন্তিশার মেসেজটি আবার তাকে উস্কে দিয়েছে।
রাফসান মুচকি হেঁসে রিপ্লাই দেয়, ‘তুমি এতো নরম কেন?’
– ‘কি নরম?’
– ‘তুলতুলে গাল, নরম গরম শরীর।’
– ‘কিন্তু তুমি তো শরীরের কোথাও হাত দাওনি।’
রাফসান আর পারছে না। ইচ্ছে করছে আবার ফিরে যেতে ইন্তিশার কাছে।
– ‘আমি ভেবেছি তুমি হাত দিলে রাগ করবে।’
– ‘একা একা এতো ভাবো কেন বলো তো? প্রথম দিন থেকেই তো আমি বলেছিলাম ন্যাকামো পছন্দ করি না। আমার সবকিছু তো তোমারই।’
রাফসান মোবাইল পাশে রেখে দুই হাত আঁজলা করে মুখ ঘষে, চুল টানে৷ কেমন অস্থিরতা, অশান্তি। মোবাইল হাতে নিয়ে মেসেজ দিলো,
– ‘ইন্তিশা জান, সোনা ময়না পাখি। আমি আর পারছি না বউসোনা। আর পারছি না৷ কবে আর আমাদের দেখা হবে?’
– ‘পরে বলবো। বাসায় যাও, ফ্রেশ হয়ে কল দিয়ো। উম্মাহ বাবু। আমাকেও মায়া দাও।’
– ‘এত্তগুলা উম্মাহ বউটা আমার।’
ইন্তিশা চ্যাট থেকে বিদায় নেয়।
রাফসান নিজেকে শান্ত করতে ইয়ারফোন কানে গুঁজে। চোখবুঁজে গান শুনতে শুনতে রাত দশটার দিকে সিলেট মেসে ফিরে আসে৷ গোসল খাওয়া-দাওয়া শেষে বিছানায় গা হেলিয়ে দিতেই রুমমেট এসে বলল,
– ‘দোস্ত চল মাজারে যাব।’
– ‘কোন মাজারে?’
– ‘শাহজালাল।’
– ‘রাতে আবার কেন যাবি?’
– ‘রাতে হাঁটাহাঁটির একটা মজা আছে না? তুই শালা বের হতেই চাস না। আগের রুমমেট থাকতে রাতে আমরা হেঁটে হেঁটে রেলস্টেশনে গিয়ে চা খেতাম। শীতের রাতে হাঁটতে অন্য রকম মজা আছে৷’
– ‘না রে ভাই আমি যাব না৷ ভাল্লাগছে না।’
সাদ বাজে ঈঙ্গিত করে বলল,
– ‘তোমার ভাল্লাগবে কীভাবে? মাইগোর লগে ফোনে কথা বলে এগুলো করা ছাড়া তোমার কিচ্ছু ভালো লাগবে না।’
– ‘দেখ সাদ, এসব আজেবাজে কথা আমাকে বলবি না। মাইয়াগো লগে কথা বলি মানে কি? আমি প্রেমিকার সঙ্গে কথা বলি। তোর মতো গ্রামের বন্ধুদের এনে দলবেঁধে পতিতালয়ে যাই না৷’
– ‘রাফসান তুই এই কথাটা আরেকদিনও বলেছিস৷ অযথা এগুলো বললে মেজাজ খারাপ হয়। আমি যাইনি। গ্রামে থাকতে ওদের সাথে একটু চলাফেরা ছিল৷ এখন ওরা পড়ালেখাই করে না। একজন বিদেশ থেকে এসেছে। বাকীরা কেউ দোকান দিয়েছে, কেউ কৃষি জমি করছে। কেউ বেকার। বিদেশি বন্ধুর সাথে ওরা এক সাথে এসেছে। এখানকার লাইনঘাট কেউ ভালো জানে না। শহরে আছি বিধায় আমার কাছে এলো, তাই গলিটা শুধু তাদের দেখিয়ে দিয়ে চলে এসেছি।’
– ‘হ্যাঁ, তুমি পীর আউলিয়া লেভেলের মানুষ। শুধু জায়গা দেখিয়ে চলে এসেছিলে।’
– ‘ধুর বাল৷ এসব আলাপ রাখ তো, এখন যাবে কি-না বল৷ চা-টা খেয়ে আসি।’
– ‘চা-সিগারেট-পান বিল তুই দিবি৷ তাইলে যাব।’
– ‘শালা ফকির৷ চা-পানের বিল আমি দেবো তুই শুধু সিগারেট বিল দিবি৷ চল যাই।’
– ‘না যাবো না, তুই চলে যা।’
– ‘আচ্ছা আয়৷ আমিই দেবো।’
রাফসানের যেতে ইচ্ছে করছিল না। ইন্তিশাকে ফোন দিতে চাচ্ছিল৷ তবুও সাদের জন্য আসতে হলো। বাইরে শীত পড়েছে। চারদিকে টমটমে আবছা বাতির আলো জ্বলছে। মাজার গলির ভ্রাম্যমান চাওয়ালাকে সাদ বলল,
– ‘বাতের ভাই দু’কাপ চা দাও।’
গরম ধোঁয়া ওঠা চায়ে চুমুক দেয় তারা। চা পর্ব শেষে পান সিগারেট নিয়ে সাদ বলল,
– ‘মামা কাল দেবো টাকা।’
– ‘ভাই আগের টাকাটাও রইছে।’
– ‘আরে ভাই তুমি এতো কথা বলো কেন? সব এক সাথেই দিয়ে দেবো।’
বাতের আর কিছু বললো না৷ তারা সিগারেট টেনে হাঁটছে।
– ‘তুই শালা ছ্যাচড়া। বাকী খাস কেন?’
– ‘আরে এক সাথেই দিয়ে দেবো। আর তোর এতো দরদ থাকলে তুই দিয়ে দে। পরে ব্যাক দেবো৷ ব্যস।’
– ‘হায় হায়। আমারে ভোদাই মনে হয় তোর?’
দু’জন মাজারের আশেপাশে খানিক্ষণ হাঁটার পর রাফসান বলল, ‘মামা চল বাসায় যাই।’
– ‘হুর বাল, মেসে কি বউ রেখে আসিস? যাওয়ার জন্য পাগল কেন বলতো? চল মাজারের পেছনের গেইট দিয়ে বাইর হয়ে চৌহাট্টার দিকে ফিরে যাবো ‘
না পারতে রাফসান রাজি হয়। সাদের রাতে হাঁটাহাটির অভ্যাস আছে সে জানে।
মেসে ফিরতে ফিরতে তাদের বারোটা বেজে গেল। রাফসান চাদর মুড়িয়ে ছাদের চিলেকোঠায় মোবাইল আর কয়েল নিয়ে চলে যায়। কয়েল জ্বালিয়ে ইটে বসে ফোন দেয় ইন্তিশাকে। ওপাশ থেকে মিষ্টি কণ্ঠে ফিসফিস করে বলল, ‘হ্যালো, কি করছো?’
– ‘উফ, মনে হচ্ছে আমার পাশে শুয়ে কানের কাছে ফিসফিস করে কথা বলছো আর তোমার উষ্ণ শ্বাস যেন আমার কানে আঁচড়ে পড়ছে৷’
– ‘আমি কম্বলের নিচে মোবাইল নিয়ে ফিসফিস করে কথা বলি তো, তাই এমন লাগে।’
– ‘ভাল্লাগে আমার।’
– ‘কিন্তু বালিশের পাশে থাকলে তো কানের কাছে শুধু ফিসফিস করবো না।’
– ‘কি করবে?’
– ‘বলবো না। তুমি বলো পাশে থাকলে কী করবে?’
– ‘কিছু না, ঘুমিয়ে যাব।’
– ‘এই বলবে না? তাইলে ফোন রাখছি।’
রাফসান বলতে শুরু করলো কাছে পেলে কি কি করবে। রসালাপ চলছেই তো চলছে। দু’জন উত্তেজনার চরম পর্যায়ে।
ইন্তিশা সবকিছু শুনে আবেগী সুরে বলল, – ‘ইশ, তোমার এগুলোর অনেক শখ তাই না? তোমার এখন একটা বউ থাকার দরকার। কিন্তু চাইলেই তো বিয়ে করতে পারবে না, মাত্র ইন্টারে পড়ো।’
– ‘আমি তো তোমাকেই বিয়ে করবো।’
– ‘কিন্তু সেই বিয়ে আর আমাকে কাছে পাওয়ার তো অনেক দেরি। তুমি তো পারবে না থাকতে। আমারও ভালো লাগবে না তুমি দূর থেকে এভাবে কষ্ট পাও।’
– ‘কি আর করার ইন্তিশা।’
ইন্তিশা ফিক করে হেঁসে বলল,
– ‘একটা কিছু তো করতেই হবে। বিয়ে হচ্ছে না বলে আমার বরটা আমাকে ছাড়া কতভাবে চাহিদা মেটাবে৷ তা তো হতে দিতে পারি না।’
– ‘এই আমি কীভাবে শখ মেটাবো?’
– ‘ছেলেদের এগুলো আমি জানি স্যার। তাই চাই না আমি থাকতে তুমি মাস্টারবেশন করো।’
রাফসান হাসতে হাসতে বলল,
– ‘তুমি এতোকিছু জানো?’
ফিক করে হেঁসে বলল,
– ‘আরও জানি। ছেলেদের স্বপ্নদোষও হয়। আচ্ছা তোমার কি এগুলো হয়?’
– ‘কিছুদিন পর পরই হয়। আচ্ছা তোমাদের..।’
‘এই থামো থামো’ ইন্তিশা থামিয়ে দিয়ে বলল, ‘আমাকে জিজ্ঞেস করবে না ওগুলো।’
– ‘কোনগুলো?’
– ‘চুপ দুষ্টু। আগে বলো স্বপ্নে কি দেখো তোমরা। তারপর কি হয়?’
– ‘কতকিছু দেখি। ওইদিন দেখলাম তোমার সঙ্গে বিয়ে হয়ে গেছে। আমরা বাসর ঘরে আছি। এগুলো দেখতে দেখতে হয়ে গেল।’
– ‘হা-হা-হা সত্যিই এগুলো দেখছো? ইশ, তোমার ওগুলোর অনেক শখ মনে হচ্ছে৷ কিন্তু বিয়ে তো অনেক দেরিতে হবে।’
– ‘হ্যাঁ।’
– ‘তুমি এইসব শখ কতভাবে মেটাবে। ভাবতেই আমার হিংসা হচ্ছে।’
– ‘আমাদের আর কবে দেখা হবে তা তো বললে না?’
– ‘আমার তো এখনই কাছে পেতে ইচ্ছে করছে রাফসান। উড়ে চলে আসো প্লিজ।’
– ‘মজা করো না তো। বলো না কোনদিন আসবো।’
– ‘মজা করছি না। সত্যিই ইচ্ছা করছে।’
– ‘আমারও ভীষণ ইচ্ছে করছে।’
– ‘তুমি সত্যিই যদি এখন আসতে পারতে আমি আলগোছে দরজা খুলে ভেতরে নিয়ে নিতাম।’
– ‘তোমার পাশে কেউ থাকে না। তুমি কি একা?’
– ‘আমার ছোট বোন আছে৷ ও মরার মতো ঘুমায়। রুমের বাতি বন্ধ থাকলে আর আমরা কথা না বললে কেউ বুঝবেই না।’
– ‘ওয়াও, এটা সম্ভব?’
– ‘তোমার জন্য তো সম্ভব করতেই হবে। সবেমাত্র ইন্টারে পড়ো। তবুও বুঝা যাচ্ছে তোমার অনেক ইচ্ছা আমাকে কাছে পাওয়ার। এদিকে আমাদের বিয়ে হতে কত বছর যাবে ঠিক নাই। তুমি নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পেরে কতকিছু করবে। শুধু কি মাস্টারবেশন। পতিতায় যদি চলে যাও? এর থেকে বাবা আমার কাছেই আসো। বিয়ে তো একদিন হবেই। তুমি কাল রাতে চলে আসবে নীলগঞ্জ বাজারে। হাঁটাহাঁটি করে সময় কাটাবে। আমাদের তো মেসেজে যোগাযোগ হবেই। যখন সবাই ঘুমিয়ে যাবে আমি বলবো আসতে। তুমি চুপচাপ আমাদের বাড়ির বাম দিকে এসে আম গাছের নিচে দাঁড়াবে। তারপর আমি বের হয়ে তোমাকে রুমে নিয়ে আসবো।’
রাফসানের চোখটা পানিতে ভরে গেল। ধরে আসা গলায় বলল,
– ‘শিওর? তুমি আমার জন্য এতো ভাবো ইন্তিশা? তুমি এতো ভালো কেন বলো তো? একটা মেয়ে এতো ভালো হবে কেন?’
– ‘এতো ইমোশনাল হইও না তো রাফসান। তোমার জন্য আমি ভাববো না তো কে ভাববে? আমি থাকতে তোমার স্বপ্নদোষ হোক চাই না৷ তুমি না পারতে মাস্টারবেশন করো আমি চাই না। যাইহোক, আসার সময় মনে করে নিয়ে আসবে।’
– ‘কি নিয়ে আসবো?’
– ‘বুঝো না? বিয়ের আগে বাচ্চা না হওয়ার জন্য কি লাগে?’
রাফসান খানিক হেঁসে বলল,
– ‘আচ্ছা আনবো। কিন্তু ফার্মেসিতে গেলেই তো লজ্জা করবে।’
– ‘তুমি শহর থেকেই কিনবে। সুতরাং এগুলো কেউ খেয়ালই করবে না।’
– ‘আচ্ছা। কিন্তু আমার তো বিশ্বাস হচ্ছে না। তাছাড়া তুমি এগুলো শিখলে কীভাবে?’
– ‘সুলতানা সহ সবার বিএফের সঙ্গে তাদের যা যা হয় সব কাহিনী শুনে শুনে আমি শিখছি৷ আর ভার্সিটির বান্ধবীরা তো আছেই।’
– ‘বাব্বাহ, ভালো।’
– ‘আচ্ছা রাখি এখন উম্মাহ। কাল তুমি আসছো ঠিকাছে?’
– ‘হ্যাঁ।’
ওপাশ থেকে কল কেটে যায়। রাফসান চিলেকোঠা থেকে নিচে নামে।
চলবে….