Story – Every Thing Is Fair In Love And War Writer – Nirjara Neera . Part – 29.

0
686

Story – Every Thing Is Fair In Love And War
Writer – Nirjara Neera
. Part – 29…………………..

জলসার কাছাকাছি এসেও মায়া জলসায় প্রবেশ করল না।। কেমন যেন অস্থিরতা কাজ করছে তার মধ্যে।। বুকের মধ্যে যেন হাতুরি পেটা হচ্ছে।। চোখের সামনে শুধু ভাসছে কিছুক্ষন আগে দেখা সারি সারি অস্ত্রের বহর।। আর তার সৈন্যরা প্রয়োজনীয় অস্ত্র সংকটে ভুগছে।।
মায়া কিছুক্ষন ওখানে দাড়িয়ে পায়চারী করতে লাগল।। দু হাতের আঙ্গুল গুলো এক সাথে চেপে ধরল।।
রাণী মায়ার আবার হঠাৎ এরুপ পায়চারী করতে দেখে লিয়া খানিকটা ভড়কে গেল।। সে বুঝতে পারছেনা হঠাৎ কি হল।। এত চিন্তা হুট করে কোথ থেকে চলে এলো??
লিয়া এক কোনে দাড়িয়ে মায়ার এদিক সেদিক পায়চারী চোখ বড় বড় করে দেখছিলেন।। এদিকে জলসা শুরু হয়ে গেছে।। লিয়ার খুব ইচ্ছা জলসা দেখার, উপভোগ করার।। অথচ রাণী মায়ার কারনে পারছেনা।। তাদের দেরী হয়ে যাচ্ছে।। তাই রানী মায়া কে তাগাদা দেয়ার উদ্দেশ্যে বললেন
.
—– রা-রাণী মায়া??
.
মায়া কোনো জবাব দিল না।। হয়ত সে শোনেনি।। লিয়া আবারো ডাকলো
.
—- রানী মায়া!!
.
—- হুম??
.
হুট করে দাড়িয়ে মায়া লিয়ার দিকে তাকিয়ে জবাব দিল।।
.
—- রাণী মায়া জলসা শুরু হয়ে গেছে।।
.
—- হহ!! ওহ!! ঠিক আছে।। তবে এক্ষুনি কক্ষে যেতে হবে।। আমার কাজ আছে।। আরেকটু পরে আসব জলসায়!!
.
—- রানী মায়া কিন্তু”””””
.
লিয়ার কথা শেষ হবার আগেই মায়া আবার এগুতে শুরু করল।। লিয়া খানিকটা দমে গেল।। হা করে তাকিয়ে থাকল মায়ার যাওয়ার দিকে।। কিছুই বুঝতে পারছেনা সে।। আবার মায়া কে দ্রুত পদে যেতে দেখে লিয়া দৌড়ে মায়ার পিছু পিছু যেতে লাগল।। মায়া কক্ষে এসে লিয়া কে বাইরে পাহারায় দাড় করিয়ে ভিতরে প্রবেশ করল।। অতপর দ্রুত হাতে তার সেই শুভাকাংখী কে পত্র লিখল।। তারপর সেটা আস্তে করে বুকের জামায় লুকিয়ে ফেলল।। তারপর বেড়িয়ে আসল।। মায়া বেড়িয়ে আসতেই লিয়া খানিকটা অস্থিরতার সাথে বলল
.
—- রাণী মা-মায়া!!
.
মায়া লিয়ার দিকে না তাকিয়েই বলল
.
—- কি হয়েছে??
.
—- দ্রুত চলুন!! নিশ্চয় সম্রাট চলে এসেছে!!
.
—- তো??
.
—- উনার দেরী করা পছন্দ না।।
.
—- সেটা আমি দেখবো লিয়া।। তুমি দুশ্চিন্তা কেন করছো??
.
—- রাণী মা”””””
.
—- এখন চল।। আরো কাজ আছে।। না হলে আরো দেরী হয়ে যাবে।।
.
এই বলে মায়া এগুতে লাগল।। আর হতভম্ব লিয়া পিছু পিছু।। মায়া জলসায় না গিয়ে সরাসরি চলে গেলেন দাসী কক্ষে।। লিয়া কে বাইরে দাড় করিয়ে মায়া ভিতরে প্রবেশ করলেন।। সেখানে গিয়ে খোজ করলেন তার গোপন পত্র বাহিকা দাসী অম্বিকার।। জলসার কারনে দাসী কক্ষ প্রায় শূন্য ছিল।। তাই দাসী প্রধান আরবাগীরও থাকার কথা না।। আর এটা মায়ার জন্য সুবিধা হল।। অম্বিকা কে এক পাশে এনে পত্র টা হাতে দিল।। আর কানে কানে বলে দিল এক্ষুনি পৌছে দেয়ার জন্য।। অম্বিকা মাথা নুইয়ে সম্মতি জানিয়ে দ্রুত চলে গেল ওখান থেকে।। তারপর মায়া বেড়িয়ে আসল।। এবার গন্তব্য জলসা।। রাণী কে বেরুতে দেখে ছটফট করতে থাকা লিয়ার জানে কিছুটা পানি এলো।।
.
মায়া যখন জলসায় পৌছালো তখন জলসা প্রায় মাঝামাঝি অবস্থায়।। তবে বার্বান সম্রাট এখনো প্রবেশ করেনি।। মায়া কে দেরীতে প্রবেশ করতে দেখে সবাই কানা ঘুষো করতে লাগল।। মায়া পাত্তা দিলনা।। নির্দিষ্ট স্থানে গিয়ে বসে গেল।। তারপর চারদিকে তাকালো।।
জলসার জন্য কক্ষ টাকে খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।। চারদিকে মহলের গণ মান্য ব্যক্তি বর্গরা নিজস্ব আসনে আয়েস করে বসেছেন।। সবাই তাদের সহধর্মিণী, কন্যা বা অন্যান্য আত্মীয় নিয়ে এসেছেন।। তাদের সামনে বিভিন্ন সুস্বাদু খাদ্য আর সুরা ও পানীয় রাখা।। যন্ত্র বাদক রা অতি মিষ্টি সুরে সুর বাজাচ্ছেন।। গায়করা তাদের মিষ্টি গলায় গেয়ে যাচ্ছেন।। আর সেই মিষ্টি সুরের লহরী তে কিছু চিকন কোমড়ের মেয়ে সাপের মত আকা বাকা হয়ে তাদের নৃত্য প্রদর্শন করছে।। মায়া নৃত্যরত রমণী দের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকালো।। এদের বার্বান রমনী বলে মনে হচ্ছে না।। হয়ত বিভিন্ন দেশ থেকে আনয়ন করা দাসী হবে।। এত আকর্ষনীয় রমণী মহলে আছে তার মানে এটাও হতে পারে বার্বান সম্রাটের ও নারী আসক্তি আছে।।
এত কিছু ভাবতে ভাবতে সেই মাদঙ্গের সুরের ন্যায় অদ্ভুদ সুর টা বাজতে লাগল।। পুরো জলসায় পিন পতন নিরব হয়ে গেল।। নৃত্যরত রমণী গুলো কোথায় যেন গায়েব হয়ে গেল।। এবং থম থমে পরিবেশে জলসায় প্রবেশ করল বার্বান সম্রাট।। বার্বান সম্রাট প্রবেশ করতেই চারদিকে গাম্ভীর্য্য তা ছেয়ে গেল।। সৌম্য ভাবলেশ হীন চেহেরা চেহেরার সৌম্য রুপ।। প্রশস্ত বুক।। এক হাতে মুকুট টা ধরা।। কপালের সামনের কিছুটা এলোমেলো চুল কপাল কে ঘিরে আছে।। মায়া হা হরে তাকিয়ে থাকলো।। অলোক কোন দিকে না তাকিয়ে দ্রুত তার আসনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।। তারপর তার নির্দিষ্ট আসনে উপবিষ্ট হয়ে চারদিকে তাকালো।। যেন কিছু খুজছে।। মায়া দিকে চোখ পড়তেই মায়া চোখ সরিয়ে নিল।। সেটা দেখে অলোকের ঠোটের কোনে মুচকি হাসি ফুটে উঠল।। মায়া আবারো তাকালো অলোকের দিকে।। তারপর নিজের আসন ছেড়ে উঠে দাড়ালো।।
এরপর সরাসরি অলোকের দিকে এগুলো।। অলোকের কাছাকাছি আসতেই অলোক মায়ার দিকে তাকালো।। মায়া কে লাল রংয়ের পোশাকে খুবই নজর কাড়া লাগছে।। কেন যে ভরা জলসায় এই পোশাক টা পড়ে এলো?? জলসায় সমস্ত পুরুষের চোখ মায়া কে চিবিয়ে খাচ্ছে।। বেকুব সম্রাজ্ঞী!!!
মায়া অলোকের দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে হাসি দিলে অলোকের মন ভালো হয়ে গেল।। সে মায়ার দিকে হাত বাড়িয়ে দিল।। মায়া সাদরে অলোকের হাতে হাত রাখল।। অলোক মায়ার হাত ধরে তাকে পাশে বসিয়ে তার হাতের উল্টা পিঠে একটা চুমু খেল।। তারপর ইশারা করল জলসার আয়োজন শুরু করার।। উপস্থিত সবাই একটু ভ্যাবাচাকা খেল মায়া আর অলোকের মাঝে হাসি খুশি সম্পর্ক দেখে।। তারা হয়ত মনে করেছিল তাদের সম্রাট আর রাণী মায়ার মধ্যে এখনো দূরত্ব বিরাজ করছে।।
.
জলসা দীর্ঘক্ষণ ধরে চলল।। প্রায় রাতের অগ্রভাগ শেষ না হওয়া পর্যন্ত।। নৃত্য আর গানে জলসা জমে উঠল।। পুরোটা সময় অলোক মায়ার হাত শক্ত করে ধরেছিল।। জলসার শেষের দিকে অলোক উঠে দাড়ালো।। উঠে দাড়াতেই সবকিছু তে একটা নিরবতা নেমে এলো।। সম্রাটের সাথে সবাই দাড়িয়ে গেল।। এরপর একজন সৈন্যর কানে অলোক কিছু একটা বলতেই সৈন্যটা দ্রুত চলে গেল।। সবাই উস খুস করছে সম্রাট এখন কি করতে যাচ্ছে।। সৈন্যটি চলে এলো কিছুক্ষন পরেই।। সেই সাথে পিছন পিছন কয়েকজন দাসী ডালা হাতে এগিয়ে এলো।। এরপর অলোক মায়ার হাত ধরে একটু সামনে টেনে নিয়ে এনে বলতে লাগল
.
—- আজ মহলের সবার সামনে আমার সম্রাজ্ঞী কে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দিতে চায়।।
.
এই বলে সামনে ডালা হতে ঝলমলে কাপড়টা সরিয়ে ফেলল।। মুহুর্তে কক্ষ টা একটা আলোক রশ্নিতে ভরে গেল।। সবাই হা করে তাকিয়ে থাকল আলোক রশ্নিটার দিকে।। যেরকম পোকারা আলোতে আকর্ষিত হয় ঠিক সেভাবে তাকাতে লাগল।। সবাই দেখলো লাল রংয়ের হীরকের মুকুট।। নীলা, মুক্তা, জহরত সহ আরো বিভিন্ন দামী পাথরের তৈরি মুকুট।। মুকুট টা হাতে নিয়ে অলোক সবার দিকে তাকালো।। ইতোমধ্যে সবাই মুকুট টা চিনে ফেলেছে।। এটা সম্রাজ্ঞীর মুকুট।। যেটা শুধু মাত্র বার্বান সম্রাটের সম্রাজ্ঞীর মাথায় শোভা পাবে।। রাণী ইরাভ কিছুটা ক্রুদ্ধ হল।। সে বার্বান রাণী হয়েও মুকুট টা পেল না।। অথচ ঈরানভা থেকে আগত কন্যা যেন তার কাছ থেকে মুকুট টা ছিনিয়ে নিচ্ছে।।
অলোক মুকুট টা নিয়ে ধীরে ধীরে মায়ার মাথায় বসিয়ে দিল।। মায়া এখনো হা করে তাকিয়ে দেখছে।। সে কিছুই বুঝতে পারছেনা।। তারপর দ্বিতীয় ডালা টা উন্মোচন করতেই মায়া দেখল একটা খঞ্জর।। কিন্তু ভালো করে তাকিয়েই সে চিনতে পারলো।। এটা তো তারই খঞ্জর।। যেটা অলোক তার কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছিল।। খুশি হয়ে গেল মায়া খঞ্জর দেখে।। অলোক খঞ্জরটা ও মায়ার হাতে তুলে দিল।। মায়ার মিষ্টি হাসিতে পুরো জলসা ঝলমল করতে লাগলো।। মুকুটের সৌন্দর্যে যেন মায়ার সৌন্দর্য্য কয়েক গুন বেড়ে গেছে।। অলোক নজর ফেরাতে পারছিল না।। তারপরও বহু কষ্টে নজর ফিরিয়ে সবার দিকে তাকিয়ে বলল
.
—– মায়া আমার সম্রাজ্ঞী!! মুকুট ধারী সম্রাজ্ঞী।। আজ থেকে তাকে অন্দর মহলের প্রধান করা হল।।
.
(চলবে)
.
আমি একটা টেইলারিং সেন্টারে দর্জি কাজ শিখছি।। হোম ওয়ার্কে কাপড় সেলাই করতেই সময় চলে যাচ্ছে।। ক্ষমা করবেন দেরি হওয়ার জন্য।।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here