আপনিময়_তুমি💓[ A unbearable Crazy love] #Season: 02 #Written_By_Åriyâñà_Jâbiñ_Mêhèr[Mêhèr] #Part: 12…

0
522

#আপনিময়_তুমি💓[ A unbearable Crazy love]
#Season: 02
#Written_By_Åriyâñà_Jâbiñ_Mêhèr[Mêhèr]
#Part: 12…

আনহা আর অন্তি ভার্সিটির গেটের দিকেই আসছে। যেই না ভার্সিটির গেটের ভিতর ঢুকবে ঠিক সে মুহূর্তে প্রচন্ড বেগে একটা গাড়ি ওদের পাশ কাটিয়ে গেটে ঢোকে। আনহা দ্রুত সরে যাওয়াতে ওর লাগে না। অন্তি বেশ চটে যায়। বলে, ‘এই হইছে এক জ্বালা পুরো ভার্সিটিরে নিজের বাপের সম্পত্তি পাইয়া লইছে। মন চায়।’

অন্তি এগিয়ে যেতেই আনহা থামিয়ে দেয়। বলে, ‘কী সব বলছিস? ছাড় তো। আমার না শিক্ষা হয়ে গেছে ঝামেলায় পড়ে। বিশ্বাস কর—বাপের জন্মে আর ঝামেলায় পড়তে যাব না।’

তখননি খেয়াল করে ইহানের দিকে। ইহান একটি গোলাপ ফুল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কিছুটা ভ্রু কুঁচকায় আনহা। মনে মনে বলে, ‘এ আবার প্রপোজ টোপোজ করব নাকি কাউরে?’

তখনি জিহাম আসে। অন্তিকে ধাক্কা দিয়ে আনহাকে বলে, ‘আনহা অয়ন না আজকে প্রপোজ করবে।’

‘কাকে?’

‘এই তুই এখানে কেন?’ বলল অন্তি।

‘বেশি ভাব দেখাস না অন্তি। ভুলে যাস না আমি তোর ব্যাচ ম্যাট ছিলাম। ফেল করার কারণে তোর জুনিয়র হয়েছি তাই।’

‘লজ্জা করে না কথাটা বলতে। ফেল করেছিস আবার বড় মুখ করে বলছিস!’

‘এই ফেল করছি এতে লজ্জার কী আছে? তোর মতো ছেলেদের সাথে ঘুরে ঘুরে ছ্যাক তো দেই নাই।’

‘একদম ফালতু কথা বলবি না জিহাম।’

‘সত্যি কথা ফালতুই হয়। আর দেখ তোর সাথে কথা বলতে আসি নাই। আনহার সাথে এসেছি তাই চুপ কর।’

‘আনহা তুমি না একটু সাবধানে থাকবা। আজকে কী হবে আমি না নিজেও জানিনা। তাই বলছি…’

‘জিহাম…’ ডাকল ইহান।

‘আসছি আনহা।’ বলেই দ্রুত চলে গেল জিহাম।

আনহা জিহামের কথা কিছুই বুঝল না। আনহা আর অন্তি হেঁটে মাঠের কাছে গেল। হঠাৎই খেয়াল করল ইহান ফুল নিয়ে ওর দিকে এগিয়ে আসছে। ব্যাপারটা ইমাজিন করতেই আঁতকে উঠে আনহা। এই ছেলে ওকে আবার প্রপোজ করবে নাকি রে বাবা! তাহলে তো মান-ইজ্জত সব প্লাস্টিক। তাহলে এখন কী করার?

ইহান বাঁকা হেসে আনহার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ওর হাতের ফুল দেখে আনহার চুপসে গেছে বেশ টের পাচ্ছে ইহান। হঠাৎই ইহানের চোখে চোখ পড়ল আনহার। ইহান ওকে চোখ টিপ দিল। আনহা বড় বড় চোখ করে থেমে গেল। অন্তির ওর মূর্তি অবতার দেখে ভ্রু কুঁচকে বলল, ‘কিরে তোর আবার কী হলো?’

‘এখনো হয়নি এবার বোধহয় হয়ে যাবে। আমার মান-ইজ্জত সব শেষ।’

‘কেন রে বিয়ের আগেই কারও সাথে কান্ড-টান্ড করেছিস নাকি!’

‘তুই ঠিক কী বলতে চাচ্ছিস?’

‘মানে তুই কী প্রেগন্যান্ট নাকি?’ সন্দিহান কণ্ঠে জানতে চাইল অন্তি।

আনহা রেগে বলল, ‘ওই সালি মান-ইজ্জত শেষ কী শুধু বিনা মেঘে বজ্র পাতেই হয়?’

‘মানে?’

‘মানে বিয়ে ছাড়া মা হইলেই হয়। মাঝে মাঝে অন্য কারণেও হয়।’

‘কী কারণ?’

তবে তখনি ইহান আনহা আর অন্তির সামনে এসে দাঁড়ায়। এটা দেখে আনহার গলা শুকিয়ে আসে। অন্তি ভ্রু কুঁচকায়। গোলাপটা আনহার দিকে এগিয়ে দিতেই আনহা চোখ বন্ধ করে নেয়। পরক্ষণেই প্রচন্ড ধাক্কাতে চোখ খোলে। দেখে সামনে ইহান নেই। পিছনে তাকিয়ে দেখে ইহান অন্যদিকে যাচ্ছে। কিন্তু কোথায়? তখনি খেয়াল করল গাড়ি থেকে একটা মেয়ে নামল। মেয়েটার পরনে সাদা টি-শার্ট আর হলুদ রঙের একটা স্কার্ট। গলায় একটা ওড়না ঝুলানো চুল গুলো ছাড়া। দেখে কোনো দিক থেকে হিরোইনের থেকে কম না। বেশ মিষ্টি চেহারা। মেয়েটা সানগ্লাসটা খুলে একটা নোটবুক নিয়ে গাড়ির দরজা আটকে সামনে এগোতেই ইহান ওর পথ আটকায়। এতে কিছুটা ইতস্তত হয় মেয়েটি। পরক্ষণেই নিজেকে স্বাভাবিক করে বলে, ‘আমাকে কী এই ফুলটা দিতে এসেছ?’

‘হুমম।’ জবাব দিল ইহান।

মেয়েটি কিছুটা ভাব নিয়ে বলল, ‘বেশ তো দেয়।’ হাত বাড়িয়ে দিল ইহানের দিকে।

তা দেখে ইহান তাচ্ছিল্যভরে হাসল। কিছুটা অবাক হলো মেয়েটি। জিজ্ঞেস করল, ‘হাসছ যে?’

‘এই কারণেই হাসছি তোমাকে এমনি এমনি আমি ফুলটা দেব না। কত ছেলেই তো তোমাকে ফুল দেয়। আর তুমি সেই ফুল পা দিয়ে মুচড়ে দেও। তবুও তারা তোমার পিছু ছাড়ে না। কিন্তু আমি কিছুটা আলাদা। তোমাকে আমি ভালোবাসি। কিন্তু নিজের ইগোতে হার্ট আমি হতে দেব না। তাই তুমি যদি আমাকে আই লাভ ইউ বলো তাহলেই ফুলটা তোমাকে দেব।’

বেশ অবাক হয় মেয়েটি। সাথে ওখানে দাঁড়িয়ে থাকা সবাই। এটা আবার কেমন প্রপোজ? আনহা নিজেও চোখ উল্টে বিষয়টা দেখছে। দেখে বোঝা যাচ্ছে ব্যাপারটায় মেয়েটা কিছুটা অপমানিত হয়েছে।

‘দেখো রাইসা। তুমি যদি আমাকে ভালোবাস তাহলে আমি ভুলটা তোমাকে দেব। কিন্তু যদি না বাস তাহলে শুধু শুধু দেওয়ার মানে নেই তাই না। এতে ফুলটাকে অপমান করা হবে।’

‘তাহলে ফুলটা এনেছে কেন?’ কাঠ কণ্ঠে বলল রাইসা।

‘ভালোবাসা তো দু’জনের পক্ষ থেকে হয়। কী আসে যায় কে বলল? তাই বলছি, ইন্টারেস্ট থাকলে ফুলটা নেও। আর না থাকলে আগেভাগে জানিয়ে দেও। টাইম লস করার মতো টাইম আমার কাছে নাই।’

‘তুমি কি প্রপোজ করছ? নাকি কন্ডিশন দিচ্ছ?’

‘যেটা তোমার জন্য কম্ফোর্টেবল সেটাই মনে করো।’

‘যদি হ্যাঁ বলি তো?’

‘তাহলে তোমাকে নিয়ে এখান থেকে চলে যাব।’

‘আর যদি না বলি?’

হাসল ইহান। একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল, ‘তাহলে আর কী যে মনে তোমাকে রেখেছিলাম, আরমান আলিফের অপরাধী গান গেয়ে ভুলিয়ে দেব।’

এ-কথায় ঠোঁট টিপে হাসল রাইসা। আবার বলল, ‘তোমার কী মনে হয়? আমি হ্যাঁ বলব নাকি না?’

‘আমার জানা মতে হ্যাঁই বলবে।’

অবাক হলো রাইসা। অস্ফুটস্বরে জিজ্ঞেস করল, ‘কেন?’

‘কারণ তোমার এখনি মনে হচ্ছে, আমি একটু আলাদা। আমাকে ছাড়লে তোমার ক্ষতি।’

‘এটা কেন মনে হলো তোমার?’

‘ সিমপাল। এটা না হলে এতক্ষণ তুমি আমার সাথে ফাও পেচাল পারতে না। তোমাকে আমি চিনি। কোনো ছেলের সাথে এমনি এমনি টাইমপাসের কথা তুমি বলবা না।’

‘তোমাকে হ্যাঁ বলার আর কোনো কারণ…’

‘না বলবে না এটা জানি। কারণ না বললে তোমাকে গাইতে হবে, মুঝে ছোড় কার যো তুম জায়ো গে বাড়া পাছতায়োগে।’

এবার আর না হেসে পারল না রাইসা। হো হো করে হেসে দিল।

এবার আর না হেসে পারল না রাইসা। হো হো করে হেসে দিল। বলল, ‘আসলেই তুমি আলাদা। কিন্তু আমার টাইম প্রয়োজন।’

রাইসার এ-কথায় কিছুটা বিরক্ত হলো ইহান। আলসেমি ঝেড়ে বলল, ‘মেয়েদের সব দিতে হয় কিন্তু টাইম না। কারণ তারা এটা মেইনটেইন করতে পারে না।’

‘মানে?’

‘গোছল আর মেকাপে যাদের সারাদিন শেষ হয়। তাদের সময় দেওয়াটা বোকামো। আগে হ্যাঁ বলো। তারপর না হয় ভেবে দেখো। গার্লফ্রেন্ড বানাতে।চাচ্ছি। বিয়ের জন্য প্রপোজ করছি না, যে ডিভোর্সের ভয় পাবা।’

‘ওকে ফুলটা দেও।’

ইহান হেসে রাইসার দিকে ফুলটা এগিয়ে দিল। এটা দেখে জিহামের মুখ দেখে ললিপপ পড়ে গেল। আনহা-অন্তি সবাই ইহানের প্রপোজ করার স্ট্যাইল দেখে হা। জিহাম দাঁত কিড়মিড়িয়ে বলল, ‘সালা, এইভাবেও কেউ প্রপোজ করে। প্রপোজ করল নাকি থ্রাড ডিগ্রির ভয় দেখিয়ে রাজি করল আল্লাহ মাবুদ জানে।’

তখনি ইহান বাইকে করে রাইসাকে নিয়ে চলে গেল। যাওয়ার আগে জিহামকে কিছু একটা ইশারা করল। জিহাম মোবাইলটা চেক করে ভাবান্বিত হয়ে পড়ল। ছেলেটা কী চাইছে কিছুই বুঝল না। ও আনহার কাছে গিয়ে বলল, ‘খালাম্মা চলো তোমাকে নিয়ে সিনেমা দেখতে যাব।’

‘ওই তোর সাথে আনহা সিনেমায় যাবে কেন?’ বলল অন্তি।

‘তুই যাবি?’

‘আমার ঠ্যাকা পড়ছে।’

‘তাইলে চুপ থাক। আর আনহা চলো আমার সাথে। অয়ন বলছে ওখানে গেলে তোমাকে তোমার লকেট দিয়ে দেবে।’

‘কিসের লকেট?’ অন্তি জিজ্ঞেস করল আনহাকে।

আনহা টপিক পাল্টে বলল, ‘আসলে… তুই ক্লাসে যা। আজ আমি সিনেমা দেখতে যাব।’

‘মানে একথা তুই বলছিস?’

‘হুম।’

‘ঠিক আছে তাহলে আমিও যাব।’

‘এই তোকে কে নেবে রে?’ বলল জিহাম।

‘দেখ জিহাম…’

‘চুপ করবে তোমরা। আর অন্তি তোর না এখন ক্লাস। যা ক্লাসে যা। আমি যাব বলে তোকেও যেতে হবে।’

আনহার একথায় কিছুটা রেগে গেল অন্তি। গাল ফুলিয়ে নিজের কাজে চলল।

জিহাম বলল, ‘আমি বাইক নিয়ে আসছি। তোমাকে আজ সিনেমা দেখাব।’

‘সিনেমা দেখব তো ভালো কথা। কিন্তু এই ছেলে আমাকে কোন ধরনের সিনেমা দেখাবে সেটাই হচ্ছে আসল কথা?’ বলেই মাথা চুলকায় আনহা।

.
.
.
.
.
.
.
.
.
[বাকিটা পরের পর্ব গুলোতে জানবেন ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here