🍁আরহাম🍁#The_innocent_boy #Writer-ফারহানা আক্তার রুপকথা পর্ব(৩)+(৪)

🍁আরহাম🍁#The_innocent_boy

#Writer-ফারহানা আক্তার রুপকথা
পর্ব(৩)+(৪)
________

জিনিয়া আজ ক্লাসে একটা নতুন মেয়ের সাথে বসে আছে তার পাশে আর কোন জায়গা নেই। ক্লাসে ঢুকে এমনটা দেখেই মৃত্তির মেজাজ খারাপ হয়ে গেছে। তাই জিনিয়ার সামনে এসেই তার ঝুঁটি করা চুল গুলো টেনে নিয়ে যাওয়া ধরলো। জিনিয়াও ব্যাথায় চিল্লাতে চিল্লাতে মৃত্তির টেনে নিয়ে যাওয়ার পথেই এগুচ্ছে। আসলে মৃত্তি ক্লাস সিক্স থেকে জিনিয়ার সাথে আছে। আর এতো গুলো বছরে দুজনের বন্ধুত্ব এমন হয়েছে যে কেউ কাউকে ছাড়া একটা দিনও থাকতে পারে না। আগে বাড়ি পাশাপাশি ছিলো তাই দিনরাত পুরো সময় সাথে থাকতো। কিন্তু কলেজে ওঠার পর জিনিয়াদের নিজেদের ফ্ল্যাট কিনে মৃত্তিদের বাড়ি থেকে একটু দূরে। তাই এখন রাত রাতে দেখা হয় না।

-‘ তোর সাহস কেমনে হয় আমারে ছাড়া অন্য কাউ’র পাশে বসার আজ তোর একদিন কি আমার একদিন’ বলেই ক্লাসের বাইরে নিয়ে যাচ্ছিলো ঠিক তখনি সামনে প্রিন্সিপাল চোখে পড়ে সাথে সেই ছেলেটাও। মৃত্তি এবার ভয়ে জিনিয়ার চুল ছেড়ে সোজা হয়ে দাড়িয়ে যায় আর মনে মনে ভাবে ‘এই পোলা আমার নামে বিচার দিলো না তো আবার প্রিন্সিপাল এর কাছে’!ভাবতেই দু একটা ঢোক গিলে। আর জিনিয়া ও ছাড়া পেয়ে সোজা,দাড়িয়ে প্রিন্সিপালকে সালাম দেয়।

– ‘তোমরা এখন বাইরে বের হচ্ছো এখন তো তোমাদের ক্লাস টাইম না!’ (প্রিন্সিপাল)

– ‘জ্বে স্যার ‘ বলতেই জিনিয়া মৃত্তি কে হালকা করে চিমটি কাটে।

চিমটি খেয়ে হুঁশ আসে সে কিভাবে কথা বলছিলো তাই আবার বলে ‘জ্বি স্যার আমরা ক্লাসেই যাচ্ছিলাম’। সামনের ছেলেটা মৃত্তির কথা শুনে ভ্রু কুঁচকায় যার মানে এই, ক্লাস থেকে বের হতে দেখছে তাদের।

প্রিন্সিপাল আবারও বলে ‘গার্লস গো টো ইউর ক্লাস রুম রাইট নাউ’। সাথে সাথেই দৌড় লাগায় মৃত্তি আর জিনিয়া।ক্লাসে গিয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে ব্যাগ রাখে মৃত্তিকা আর জিনিয়ার ব্যাগও নিয়ে নিজের পাশে রাখে।

‘কি জন্য তোর চুল টানছি কইতে হইবো’? (মৃত্তি)

জিনিয়া চুপ…

– ‘কি হইলো কথা ক,কি জন্যে টানছি কইবি নাকি আবার ধরমো চুল’? কথাটা বলতেই জিনিয়া ভয়ে বলতে শুরু করলো ‘হ্যা আমি নতুন মেয়েটার সাথে বসছি তাই মেরেছিস। আর এও জানি তুই আমার ওপর রেগে আছিস কারণ আমি কাল রাশেদ এর সাথে ডেটে গিয়েছিলাম তাই” গড়গড় করে বলে গেল জিনিয়া সব কথা। যেন সে মৃত্তিকার কতো বাধ্য একজন ছাত্রী। আর মৃত্তিকা তার টিচার। মৃত্তি আবারও কিছু বলতে নিলো তখনই দেখলো প্রিন্সিপাল আর সেই ছেলেটা তাদের ক্লাসে ঢুকছে। সবাই স্যারকে সালাম দিলো শুধু মৃত্তি ভ্রু কুঁচকে ছেলেটার দিকে তাকিয়ে রইলো। জিনিয়া ব্যপারটা লক্ষ করে তার হাতে হালকা একটা চিমটি কাটলো,, আর তখনি শুরু হলো মৃত্তির ইন্টারন্যাশনাল বকা ‘কোন ফকিন্নির নাতনিরে আমারে চিমটি মারলি শেওরা গাছের পেত্নী তোর জীবনেও বিয়া হ….’.আর কিছু বলার আগেই জিনিয়া মৃত্তির মুখ চেপে ধরলো বলল ‘বইন চুপ তোর অভিশাপ তোর কাছেই রেখে দে’।

প্রিন্সিপাল সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলছেন আজ নতুন ম্যাথ টিচার জয়েন করেছে। সবাইকে আগেই বলা হয়েছে তাদের নতুন টিচার এই ভার্সিটিরই একজন প্রাক্তন ছাত্র। সবাই টিচার সম্পর্কে শুনেছে আগেই যে টিচার খুবই ইনোসেন্ট আর মেধাবী ছাত্র ছিলো তবে কারো ধারণা নেই সে টিচার কে! নতুনরা তো একেবারেই ধারণা করতে পারছিলো না পরে অবশ্য প্রিন্সিপালের পাশে দাঁড়ানো ছেলেটাকে দেখে শিওর হয়ে গেছে এটাই নিউ টিচার। আর শিওর হতেই মৃত্তির হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে। আসার সময়ই তো কত কিছু বলল সে টিচার কে এবার যদি তার প্রতিশোধ নেয়? ‘ওহ নো, এই ব্যাটা যদি আমারে শাস্তিও দেয় মৃত্যু তাইলে আমি কি করমু বইন’। মৃত্তির কথায় জিনিয়ার মাথা ঘুরে যাওয়ার উপক্রম।

– কি বলে এই মেয়ে! ‘এই মৃত্তি কি হয়েছ তোর!’ কিছু না বলেই আবারও ছেলেটার দিকে তাকালো আর ছেলেটাও তাকালো তাদের দিকে।
‘তোমরা দুজন কি ক্লাসে বসে গল্প করছো?’ জিনিয়া আমতা আমতা করে বলল, ‘স্যার মোরা থুক্কু আমরা গল্প করি না স্যার শুধু আপনার কথা শুনতাছি।’

‘ওকে স্টপ এবার ক্লাস শুরু করার আগে সবার সাথে একটু পরিচিত হওয়া যাক।’ প্রিন্সিপাল ক্লাস থেকে চলে গেলে ছেলেটা স্টুডেন্টদের সাথে পরিচিত হয়ে নেয়।

‘হ্যালো গাইস’ আজ থেকে তোমাদের ম্যাথ আমি করাবো।আমি হলাম “আরহাম আহমেদ ” তোমাদের নিউ ম্যাথ টিচার। আজই নতুন জয়েন করেছি,, আর প্রিন্সিপালের কাছে তো শুনলেই আমিও এক সময় এখানকারই স্টুডেন্ট ছিলাম ।’ তারপর স্টুডেন্টদের কাছে তাদের পরিচয় জানতে চাইলো। সবাই একে একে পরিচিত হয়ে নিলো, বাকি ছিলো শুধু মৃত্তিকা। মৃত্তি এখনও অবাক ‘এই হ্যাবলা ছেলেটা টিচার কি করে হতে পারে!’

তারপর পরিচয় এর জন্য মৃত্তিকে ইশারা করলো আরহাম। কিন্তু সে তো এখনও নিজের ভাবনায় বিভোর। দু’একবার ডাকলো এই মেয়ে তোমার পরিচয়টা?’

আরহাম বিরক্ত হয়ে জিনিয়াকে ইশারা করে মৃত্তির হুঁশ ফেরানোর জন্য,, জিনিয়া অনেক জোরে একটা চিমটি কাটে আর সাথে সাথেই মৃত্তি চিল্লিয়ে তার স্পেশাল বকা শুরু করে। আরহাম এবার অবাকের শেষ পর্যায়ে কি বলে এই মেয়ে তবুও আরহাম তো আরহামই আস্তে করে বলে ‘এটা ক্লাসরুম এখানে বাজে ভাষায় কথা বলবে না নয়তো আমার ক্লাসে তুমি থাকবে না।’

আজ ছুটির পর বাড়ি যাবার জন্য বের হলে জিনিয়া কে ডাকে ” জীন চল আমি তোরে ড্রপ কইরা দেই আজ ”

“তুই গাড়ি এনেছিস!” (জিনিয়া)

“হ,আনছি সেই জন্যই তো নতুন স্যারের লগে ভেজাল হইছে মানে গাড়ি ঠুকছি আর বেচারার হেডলাইট জাহান্নামে চলে গেছে”। মুখটা পাংশুটে করে বলল কথাটা আর জিনিয়ার চোখ বেড়িয়ে আসার উপক্রম।

–“মানে তুই আরহাম স্যারের গাড়ির লাইট ভেঙেছিস আর স্যার দেখেনি কিছু বলেনি তোকে?” (জিনিয়া)

“ধুরহ, দেখবো না কেন দেখছেও আমি চিল্লাইছিও কিন্তু ব্যাটা ক্যাবলা মনে হয় আমারে ডরাইছে হে হে” বলেই হাসতে লাগলো মৃত্তি। তখনই পাশ দিয়ে আরহাম যাচ্ছিলো তার গাড়ির সামনে। মৃত্তির মুখের হাসি মুখেই লেগে রইলো ওভাবে শুধু জিনিয়া ভয়ে ভয়ে তাকালো আরহামের দিকে কিন্তু না আরহামকে তো মোটেও রাগি লাগছে না।আর তার গাড়িও একদম ঠিক মনে হচ্ছে তাই জিনি আবার মৃত্তি কে বলল “কিরে মৃত্যু তুই না লাইট ভেঙেছিস কোথায় স্যারের গাড়ি তো একদম ঠিক।

কথাটা শুনতেই মৃত্তির চোখ গেল আরহামের গাড়ির দিকে “” আসলেই তো এই ব্যাটার গাড়ি ঠিক হইলো কেমনে জীন এগুলা তো ভাঙা ছি… বলার আগেই আরহাম তাদের একদম কাছে ঘেঁষে গাড়ি নিয়ে চলে গেল মনে হচ্ছিলো এখনি বুঝি পিষে ফেলবে তাদের।

“হুহ, ব্যাটার সাহস দেখছোস জীন আমাগো ওপর দিয়া গাড়ি নিতে চায় আমি এর বদলা যদি না নিছি তাইলে আমার নাম ও মৃত্যু থুক্কু মৃত্তি না।”

“উফ, মৃত্যু কি শুরু করলি আর ওইটা ব্যাটা ব্যাটা না বলে স্যার বল। ওনি আমাদের স্যার সম্মান দিয়ে কথা বল।”

“এ্যাহহহ স্যার” ভেঙচি কেটে বলল মৃত্তি।

তারপর দুজন গাড়িতে উঠলো তবে এবার বেশ ভালো করেই চালালো গাড়ি মৃত্তিকা। জিনিয়া কে নামিয়ে দিয়ে নিজের বাড়ি আসলো।

মিরহাদ ড্রয়িংরুমে বসে টিভি দেখছিলো বোনকে দেখে বলল, “কিরে বুড়ি আজ এতো দেরি হলো কেন তোর?”

“আর কইস না ভাইয়া খুব বিজি দিন ছিলো আজকা”কথাটা বলার সময় তার ভাব খানা এমন যেন সে পুরো দুনিয়া উদ্ধার করে এসেছে। তাই ধপাস করেই সোফায় বসে নিজে থেকেই বলা শুরু করলো ভাইয়া জানোছ আজকা নতুন এক “চিটার “আইছে। মৃত্তির এ কথা শুনে তার ভাই টিভি থেকে চোখ ঘুরিয়ে তার দিকে তাকালো,, তার মাও মিরহাদের জন্য কফি নিয়ে আসছিলেন মৃত্তির কথা শুনে তিনিও অবাক হলেন। এবার মা আর ভাই দুজনই একসাথে বলে উঠলেন ” চিটাররর””

“আরে ধুর চিটার না টিচার আইছে আমাগো ম্যাথ ক্লাস নিবো ব্যাটার লগে ভার্সিটি যাওয়ার আগেই ভেজাল লাগছে আমার।” (মৃত্তি)

এবার আর তেমন ভাবান্তর হলো না তার মা ভাইয়ের কারণ,তারা জানে এই মেয়ে এমন কিছু করতেই পারে।

তবে মিরহাদ একটু মজা নিতে চাইলো তাই বলল, “আচ্ছা এবার পুরো কাহিনী বলতো কি কি করেছিস?”

“এ্যা আমি কি করমু ব্যাটা নিজেই গাড়ি ঠিক মত চালাইতে পারে না” বলে সকালের ঘটে যাওয়া গাড়ির ধাক্কা,, জিনিয়া কে চুল টেনে নিয়ে যাওয়ার সময় তাদের সামনে পড়া তার ক্লাসে পরিচয় না বলা সব খুলে বলল। প্রথমে মিরহাদ হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খেলেও পরে হুঁশ এলো “পুরোনো ছাত্র টিচার মানে কোন ব্যাচের ছাত্র ছিলো!”

কৌতুহল বশত মিরহাদ মৃত্তিকে জিজ্ঞেস করলো “তোদের টিচারের নাম কিরে আর কোন বর্ষে বিদায়ী ছিলো রে?”

মৃত্তি একটু কপাল কুঁচকে ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে বলল বর্ষ তো জানি না তবে ব্যাটা হ্যাবলাকান্তের নাম “আরহাম আহমেদ ”

চলবে

🍁আরহাম🍁 #The_innocent_boy

#Writer-ফারহানা আক্তার রুপকথা
পর্ব (৪)
________

“ভাইয়া তুই কি চিনোস আমাগো ওই হ্যাবলা চিটার রে মানে টিচার রে”? মৃত্তি তার ভাইয়ের হাত ঝাঁকিয়ে ঝাঁকিয়ে বলছে কথা গুলো।

“জানি না তবে আমার ফ্রেন্ড মানে আমি, রোহান,আরহাম তিনজন বেস্ট ফ্রেন্ড ছিলাম কিন্তু সেই আরহাম তো রাগ করে আমার সাথে সব সম্পর্ক শেষ করে গেছে ভার্সিটির শেষ দিনই।” (মন খারাপ করে)

“ওহ তাইলে এই ব্যাটা হেই ব্যাটাই নাকি আর তুই জানিস ব্যাটা থাকে কই?” (মৃত্তি)

মৃত্তির কথায় মিরহাদ একটু খুশি হয়ে তাকালো,, “কোথায় থাকে তুই চিনিস আরহামের বাড়ি?”

“উহুম,অত্ত সোজা না এমনি এমনি বলবো না শর্ত আছে জানতে হইলে।”

“কি শর্ত আমি রাজী তুই শুধু বল আরহাম কোথায় থাকে।” ভাইয়ের অধিক আগ্রহ দেখে মৃত্তি বুঝতে পারলো নিশ্চিত কোন বড়সড় ব্যপার তাই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভাই কে দিয়ে শপিং করানোর ফন্দি আঁটছে।

“আচ্ছা বল কি শর্ত মুখটা মলিন করে বলল মিরহাদ” কারণ, জানে তার বোন শর্ত শুধু শপিং আর ফুঁচকা খাওয়ারই বায়না করে তা আবার শুধু নিজের জন্য না পুরো ফ্রেন্ড সার্কেলের জন্য । তাতে অবশ্য মিরহাদের ই লাভ বেশি এই সুযোগে জিনিয়াকে দেখতে পারে।

“আচ্ছা ভাইয়া প্রমিস করছিস তো তুই আমার শর্ত পুরন করবি তো?”

“হা মেরি মা তেরি ইচ্ছা পূরন হবে এবার বল।”

মৃত্তি এবার মিরহাদকে টেনে ওপরে নিজের রুমে নিয়ে যেতে লাগলো। তারপর বারান্দায় দাঁড়িয়ে সামনের বিল্ডিংয়ের সেই রুমটা দেখালো যেটায় সে একটা ছেলেকে দেখেছিলো। আসলে মৃত্তি নিজেও শিওর না এটাই আরহামের ফ্ল্যাট কিনা তবে আন্দাজ করেছে। আর এই মুহুর্তে তার ধান্দা যে করেই হোক সে শপিং এ যাবে তাই আপাতত ভাইকে একটু ধোঁকা দিলো। তবে মনে মনে ঠিক করে নিয়েছে কাল যে করেই হোক আরহামের এড্রেস যোগাড় করবে।

কিছুক্ষণ পর,

“ভাইয়া আগে গাড়ি জিনিয়ার বাড়ির সামনে থামাবি”।

মিরহাদও খুশি খুশি গাড়ি থামালো ,, মৃত্তি জিনিয়াকে এক প্রকার টেনে নিয়ে আসলো। মিরহাদ হাসিমাখা মুখেই তাকিয়ে আছে জিনিয়ার দিকে কিন্তু জিনিয়া এক বারের জন্যও তাকায়নি শুধু চুপচাপ গাড়িতে ওঠে বসেছে। মিরহাদের একটু খারাপ লাগলো মুখটাও মলিন হয়ে গেল। মৃত্তি আজকের ব্যপারটাও লক্ষ করলো আর ওই দিন কলে কথা বলার পরও লক্ষ করেছিলো। মিরহাদ কেমন রেগে গিয়েছিলো। আজকাল তার ভাইকে সন্দেহ হয় কেমন জানি জিনিয়া রিলেটেড কোন কিছুতেই স্বাভাবিক লাগে না তাকে।

ড্রাইভিং এর ফাঁকে ফাঁকে মিরহাদ জিনিয়ার দিকে তাকাচ্ছে লুকিং মিররে এটাও চোখ এড়ায়নি মৃত্তির। সে মনে মনে হিসাব কষে নিয়েছে ভাইয়ের মনের খাতার কিন্তু তাতে শুধু হতাশা দেখতে পাচ্ছে।

শপিং মলে পৌঁছে মৃত্তি প্রচুর বকবক করেছে আর সাথে ভাইয়ের কার্ড খালি করে নিজের জন্য আর জিনিয়ার জন্য শপিং করেছে কিন্তু জিনিয়া বিভিন্ন উছিলায় সব ফিরিয়ে দিয়েছে। মৃত্তি হাঁটতে হাঁটতে দ্বিতীয় তলা থেকে তৃতীয় তলায় চলে গেছে তার হুঁশ ই নেই। পিছন থেকে মিরহাদ হঠাৎ করেই জিনিয়াকে হ্যাঁচকা টেনে একটু সাইডে নিয়ে দাঁড় করালো। এহেন ঘটনায় জিনিয়া প্রথমে একটু ভয় পায় পরে বুঝতে পেরে রাগী চোখে তাকায় মিরহাদের দিকে। কিন্তু পরক্ষনেই রাগ ভয়ে পরিণত হয় কারণ মিরহাদও রেগে আছে তার দিকে তাকিয়ে।

“কককি হল এএএমন ককককরে টটটেনে আনলেন ককেন?” কাঁপা কাঁপা গলায় বলল জিনিয়া।

“ইগনোর করছো কেন আমায়?” (মিরহাদ)

“আআআমি ককখন ইগনোর ককরলাম আপনাকে?” অন্যদিকে তাকিয়ে। (জিনিয়া)

মিরহাদ এবার জিনিয়ার চিবুক টেনে নিজের দিকে মুখ ঘুরায় জিনিয়ার তার পর বলে, “তাহলে আমার দিকে তাকাচ্ছো না কেন একবারও!”

এবার একটু রাগ মিশ্রিত কন্ঠে বলে জিনিয়া “কেন তাকাবো,কে আপনি??”

“কে আমি তাই না?” বলেই জিনিয়ার হাত ধরতে যাবে ঠিক তখনি মৃত্তি চলে আসে আর মিরহাদ জিনিয়ার থেকে দূরে সরে যায়।

“কি চলে এইহানে!” ভ্রু নাচিয়ে বলল মৃত্তি।

“কিছুই না,তুই কোথায় চলে গিয়েছিস তোকেই খুঁজছিলাম” জিনিয়া বলল। সেও তোকে খুঁজে পাচ্ছে না। জিনিয়াও মিরহাদের কথায় মাথা নাড়িয়ে “হ্যা” বলল।

“তাইলে আমি যে তোগো দুইজনরেই খুইজ্জা পাইলাম না তোরা একলগে কেন?”(মৃত্তি)

এবার মিরহাদ একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেল মৃত্তির কথায় জিনিয়াও। মিরহাদ জিনিয়াকে অস্বস্তিতে ফেলতে চায় না তাই মৃত্তি কে তাড়া দিতে লাগলো বলল “তোর হলো শপিং নিচে আয় জলদি আমি গাড়ি বের করছি পার্কিং থেকে” বলেই সোজা চলে গেল। মৃত্তি জিনিয়াকে বলল চল আইসক্রিম খাই বলেই রেস্টুরেন্ট এর দিকে পা বাড়ায় আর তখনি নিচের ফ্লোরে একটা শপে বড় একটা মিকি মাউস ডল চোখে পরে। তার তো পাগল হয়ে যাবার অবস্থা যে করেই হোক এটা সে নেবে তাই জিনিয়া কে হাতের সব গুলো শপিং ধরিয়ে বলল “জানু তুই ভাইয়ার লগে গিয়া আইসক্রিম কিন আমি এহনই আইতেছি” বলেই ভোঁ দৌড় লাগালো। জিনিয়া হতভম্ব হয়ে তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে,, আর ভাবছে সে এই পাগলিটার জন্য আজ মিরহাদের সামনে পড়ে গেছে নয়তো কখনও তার সামনে আসতো না।

মৃত্তি এক প্রকার দৌড়েই নিচের তলায় এসেছে কিন্তু আসতেই কারো সাথে খুব জোরেই ধাক্কা খেল।

আআআআআআআআ……… মৃত্তি চোখ বন্ধ করেই চিৎকার দিলো এখনও থামার নাম নেই হঠাৎ করেই তার মনে হলো কেউ তার মুখ চেপে ধরে আছে। তাই এক চোখ বন্ধ রেখে অপরটি হালকা খুলল আর বুঝতে পারলো সে নিচে পরেনি কেউ ধরে ফেলেছে পরার আগেই।
তবে যে ধরেছে তাকে ভালো করে দেখার জন্য এবার দুটো চোখই খুলল।

বাহ্ কি সুন্দর চোখ দুটো,চুল গুলো,, হালকা গোলাপি ঠোঁট…উহুম গালের ডান পাশে ওই গর্তটা কি যেন বলে এটাকে ওহ মনে পড়ছে টোল

চলবে