#তিমিরে_ফোটা_গোলাপ
পর্ব–৪৬
Writer তানিয়া শেখ
লোকাকীর্ণ পুরো হলঘর। মিউজিক বক্সে বাজছে ক্রিসমাস সং। বয়োজ্যেষ্ঠ কয়েকজন পুরুষ ও নারী ডাইনিং এ বসে ওয়াইনে চুমুক দিতে দিতে গল্প জুড়েছে। ছোটো ছোটো বাচ্চারা ছুটছে এদিক ওদিক।আগত যুবকেরা যুবতীদের দৃষ্টি আকর্ষণে ব্যস্ত। কেউ কেউ ইতোমধ্যে পরিচয় পর্ব সেরে হাসি ঠাট্টায় মেতেছে। হাতে হাত ধরে ঘনিষ্ঠ হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদেরই অনেকে। নিকোলাসের সাথে মিশে দাঁড়িয়েছে ভিক্টোরিজা। পরিচয়ের পর থেকে ঘনিষ্ঠ হওয়ার আভাস দিয়ে যাচ্ছে নিকোলাসকে৷ অন্য সময় হলে ভিক্টোরিজার এই আভাসকে উপেক্ষা করত না, কিন্তু এখন ওর সকল আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু কেবল ইসাবেলা। এত মানুষের ভিড়ে হলঘরের এককোণে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকা ইসাবেলাতের ওপরই দৃষ্টি স্থির। ভিক্টোরিজার সকল কথা অবহেলিত নিকোলাসের কাছে। ও বোধহয় ভালো করে একবার মেয়েটির দিকে ফিরেও দেখেনি। দেখলেও বা কী? প্রেমিকের নজরে প্রেমিকা ছাড়া পৃথিবীর সকল কিছু তুচ্ছ।
“নিকোলাস?”
ভিক্টোরিজার ডাকে ইসাবেলার ওপর থেকে দৃষ্টি সরিয়ে বিরক্ত হয়ে তাকাল নিচে। নিকোলাসের বুকের পাঁজরের কাছে থুতনি ভর করে ঠোঁট ফুলিয়ে আছে ভিক্টোরিজা। নেশায় ঠিকমতো চোখ মেলে তাকাতে পারছে না।
“যাবে?”
“কোথায়?” ভুরু কুঁচকে বলল নিকোলাস। তারপর আবার তাকায় ইসাবেলার দিকে। ইসাবেলা সেই যে একবার চেয়েছিল, এরপর আর সরাসরি তাকাচ্ছে না। তবে ওর চোরা দৃষ্টি নিকোলাস ঠিক ধরে ফেলেছে কয়েকবার। মনে মনে হেসেছে।
“আমার রুমে।” বলল ভিক্টোরিজা।
“তোমার রুমে? কেন?” ওর এই বোকামো প্রশ্নে ভিক্টোরিজা বার কয়েক দ্রুত চোখের পলক ফেলল। একটি যুবতী কেন একজন যুবককে রুমে যাওয়ার প্রস্তাব দেয় নিকোলাসের কি জানা নেই? সে কি এতই অনভিজ্ঞ? ভিক্টোরিজা জানে না নিকোলাস অনভিজ্ঞ নয়, একজনেতে আত্মবিস্মৃত। খানিক আশাহত হয় নিকোলাসের প্রশ্নে। একটু সরে দাঁড়িয়ে নিকোলাসের আপাদমস্তক দেখল। নিকোলাস শুধায়,
“কী দেখছ?”
“তোমাকে। তুমি কি বোকা?”
“মানে?”
“আমি বলেছি আমার রুমে চলো। তুমি জবাবে হ্যাঁ বা না বলতে পারতে। যদিও না শব্দটা আমি কখনো শুনিনি৷ অথচ, বললে কী? কেন!”
“ওহ!”
“ওহ?” ভিক্টোরিজার গলায় ক্ষোভ ঝরে। কোনো পুরুষের এমন অবজ্ঞায় অভ্যস্ত নয় ও। আত্মাভিমানে লাগে। নেশার কারণে ঠিকমতো ভাবার অবস্থাতেও নেই। পায়ের আঙুলে ভর করে একহাতে নিকোলাসের গলা জড়িয়ে ধরে, অন্যহাতে নিকোলাসের থুতনি চেপে ধরে বলল,
“তুমি কী আমাকে উপেক্ষা করছ?”
নিকোলাসের ভুরু কুঞ্চণ মিলিয়ে গেল। ভিক্টোরিজার দিকে এতক্ষণে মনোযোগী দৃষ্টি দিলো। ওর ওই সম্মোহনী চোখে মুহূর্তে হারিয়ে গেল ভিক্টোরিজা। ঠোঁটে চুমু দেবে বলে ঝুঁকে আসতে নিকোলাস মুখ সরিয়ে কানের কাছে এনে চাপা গলায় বলল,
“এখানে নয়। চলো তোমার রুমে যাই।”
ভিক্টোরিজা খিলখিল করে হেসে ওর গালে চুমু দিয়ে বলল,
“চলো।”
একহাতে ওর কোমড় জড়িয়ে ঘুরে দাঁড়ায় নিকোলাস। কাঁধের ওপর দিয়ে ইসাবেলা দিকে ফিরে তাকাল আরেকবার। বিভ্রান্ত মুখে চেয়ে আছে ইসাবেলা। নিকোলাস মুচকি হেসে ভিড়ের মধ্যে হারিয়ে গেল ভিক্টোরিজাকে নিয়ে।
“মিসের হুঁশ জ্ঞান সব গেছে ওই সুদর্শন যুবককে দেখে। রুমে তো গেল, কিন্তু এরপরে কী হবে সেটাই আমি ভাবছি!”
জুজানি কথাটা বলেই হাতের প্লেট থেকে পটেটো পেষ্টির কিছুটা মুখে পুরে নিলো। খাবার সামনে থাকলে আর কিছু খেয়ালে থাকে না ওর। ইসাবেলা কিছু বলল না বলে মুখ তুলল। বেশ উদ্বিগ্ন দেখাচ্ছে ইসাবেলাকে। জুজানি বলল,
“কী হয়েছে?”
“অ্যানি, আমি রুমে গেলাম।”
জুজানিকে এবার আর বাধা দেওয়ার সুযোগ না দিয়ে হলঘরের কোণার সংকীর্ণ রাস্তা ধরে রুমের দিকে গেল৷ এতক্ষণ এই জুজানির কারণে যেতে পারেনি। কিছুতেই যেতে দিচ্ছিল না। নিকোলাসকে এখানে আশা করেনি ও। ওর হাসিতে কিছুক্ষণ যেন ঘোরের মধ্যে পড়েছিল। পরক্ষণেই কী এক কারণে কঠিন হলো মুখ। আতঙ্কিত হয় ভেতরে ভেতরে। ভিক্টোরিজার সাথে নিকোলাসের ওমন ঘনিষ্ঠ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকাতে ঈর্ষা জাগে৷ ওদের দিকে তাকাবে না তাকাবে করেও ব্যর্থ হয়। জুজানিকে কত বলল, চলে যাবে, মেয়েটা ছাড়লই না। ইসাবেলার মনের দুরবস্থা ওই মেয়েটা কী বুঝবে আর? নিকোলাসের দৃষ্টির দাবদাহে ও তো আর পুড়ছে না। এদিকে আরেকটা ভয়ের বীজ মনে দানা বাঁধল। নিকোলাস যখন এসেছে তখন ওর সঙ্গীরাও এখানে আছে। ইসাবেলা হলঘরে নজর বুলিয়েও পেল না তেমন কাওকে। তবুও ভয়টা গেল না। মাতভেইকে বাঁচানোর পণ করেছে। তাছাড়া ওর ওপর যে পিশাচেরা খেপে আছে তা বেশ ভালোভাবেই জানে৷ ইভারলি আর গ্যাব্রিয়েল্লার মৃত্যুর শোধ নিতেও আসতে পারে নিকোলাস। হাজার হোক, সহচরী বলে কথা। এই বাক্য তিক্ত করে তোলে জিহবাকে। নিকোলাসকে ও ঠিক বিশ্বাস করে উঠতে পারছে না। ইসাবেলাকে পছন্দ করে কিন্তু ভালো তো বাসে না। ইভারলি আর গ্যাব্রিয়েল্লা নিকোলাসের বেশি আপন ছিল। ওদের মৃত্যুর কারণ যে তাঁকে নিশ্চয়ই এমনি এমনি ছেড়ে দেবে না? এমন হাজারো প্রশ্নে জর্জরিত হয় ইসাবেলা।
ইসাবেলা, মাতভেই এবং মাদাম একই রুমে থাকেন। একদম শেষ কোণার এই রুমটাতেই থাকতে দিয়েছে বেনাস। পরে আরো দুটো রুম আছে। সেগুলো ভাঁড়ার ঘর। দিন রাতে ওদিকটা অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকে।
রুমের দরজাটা ভিজানো ছিল। রুমের এককোনে একটা রেডির তেলের টিমটিমে আলো জ্বলছে। ইসাবেলা ঢুকতেই প্রথমে মাতভেইকে দেখল। হলঘরের গানের আওয়াজ এ ঘরে বেশ পাওয়া যাচ্ছে। তা স্বতেও কী গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ও। প্রায় রাতে ওর ঘুম হয় না। দুঃস্বপ্ন দেখে জেগে ওঠে। দুঃস্বপ্ন বড়ো খারাপ ব্যাপার!
ইসাবেলা নিঃশব্দে দরজাটা এঁটে দিলো। সেই থলেটা খুঁজতে লাগল খাটের নিচে। ওর মনে আছে এখানেই রেখেছিল থলেটা। মাদাম ফ্লোরে পাতা বিছানায় শুয়েছিলেন। শব্দ পেয়ে চোখ মেললেন। ইসাবেলাকে খাটের তলায় দেখে প্রশ্ন করলেন,
“কী খুঁজছ?”
“থলেটা।”
মাদামের মুখটা আর্ত হয়ে ওঠে সাথে সাথে। উঠে বসেন তড়াক করে।
“থ-থলে! ওই থলে দিয়ে কী হবে?”
মায়ের গলার স্বরে মাতভেই ঘুমের মধ্যে সামান্য কাঁপল। ঘুম ভাঙেনি বলে স্বস্তি পেলেন মাদাম। একবার ঘুম ভাঙলে মাতভেই সারারাতে আর ঘুমাতে পারে না। মাদাম আদলৌনা ছেলের ঘুমন্ত মুখ দেখে চুপ করে রইলেন। আস্তে আস্তে উঠে ইসাবেলার হাত টেনে রুমের একপাশে এনে বললেন,
“ওই থলে কেন খুঁজছ তুমি?”
ইসাবেলা মাদামের ভীত মুখ দেখে ভাবুক হলো। মা ছেলে ওই ঘটনার পরে একেবারে মুষড়ে পড়েছিল। মাদাম আদলৌনা এখনো একা একা কাঁদেন সেই দুঃসময় স্মরণ করে। আপন গৃহের মায়া, পরগৃহের আশ্রিত জীবন তাঁকে যন্ত্রণা দেয়। ইসাবেলা সেই যন্ত্রণা আর বাড়াতে চাইল না। হাসার চেষ্টা করে বলল,
“এমনিতেই।”
মাদামের ওর কথা বিশ্বাস হলো না।
“সত্যি করে বলো।”
“সত্যি বলছি মাদাম আদলৌনা। আসলে হঠাৎ থলেটার কথা মনে পড়ে গেল। থলেটা কোথায় রেখেছি ভুলে গিয়েছিলাম। বলা তো যায় না কখন কী ঘটে! তাই সাবধানতার জন্য ওটা কাছে কাছে রাখতে চাচ্ছি। দরকারের সময় যেন সহজে পেতে পারি।”
মাদামের দৃষ্টি এবং জবাব এড়িয়ে ও আবার থলেটা খুঁজতে লাগল। থলেটা খাটের তলার বেশ ভেতরের ছিল। শরীরের অর্ধেক ঢুকিয়ে বের করে নিয়ে এলো থলেটা। ইসাবেলার পরনে ছিল ভৃত্যাদের পোশাক। বেনেসের স্ত্রীর আদেশ এটাই পড়তে হবে। ফ্রকের ওপরের সাদা এপ্রোনে খাটের তলায় জমা ময়লা লাগল। মাথা ঢাকার বিশেষ কাপড়টাও খাটের নিচের তক্তার সাথের লোহাতে লেগে ছিঁড়ে যায়। এসবে অবশ্য গুরুত্ব দিলো না ইসাবেলা। মাদাম আদলৌনার প্রশ্নাতীত চাহনি লক্ষ্য করে হাসার চেষ্টা করল। মনের ভয়টাকে মাদামের সামনে প্রকাশ করবে না। বলবে না নিকোলাসের কথা। থলেটা একপাশের চেয়ারের ওপর রাখল।
“এটা এখানে থাক। আমি গিয়ে জুজানিকে দেখে আসি।”
মাদাম পুরোপুরি চিন্তা মুক্ত না হলেও মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালেন। বসলেন বিছানয়।
“মাদাম, আপনি শুয়ে পড়ুন। মিসের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে রুমে ফিরব। একটু দেরি হবে।”
মাদাম শুয়ে পড়েন। ইসাবেলা দরজার কাছে গিয়ে থেমে যায়। এপ্রোনের পকেটে হাত দিয়ে রসুন কয়টা দেখে নিলো। গলার রোজারির ক্রুশটা মুষ্টি বদ্ধ করে লম্বা শ্বাস নেয়।
ইসাবেলা ওদের থাকার রুমের দরজায় যতটা সম্ভব রসুন ঘষল। তারপর গেল বাড়ির পেছনের বাগানে। যাওয়ার পূর্বে রান্নাঘর থেকে একটা মোমবাতি আর ছাতা নেয়। হলঘরের বড়ো দেওয়াল ঘড়িতে তখন বাজে রাত আটটা। অতিথিদের অনেকে বিদায় নিয়েছে। বাকিরাও যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইসাবেলা সবার চোখের আড়ালে বাগানে এসে পৌঁছায়। বাগানের একদিকে সুন্দর বসার স্থান করা। বেতের চেয়ার, টেবিল তার ওপরে পাকা ছাউনি ছাতার আকৃতির। এদিকটা দিনের বেলা যতটা না মনোরম, রাতে ততটাই ভুতূরে। নিজেদের জানালার পথে পা বাড়ায় ইসাবেলা। ওদিকটাতে ঝোপঝাড় বেশি। মাঝেমাঝে দাঁড়িয়ে থাকা পীচ বৃক্ষগুলোকে বরফের আস্তরণের কারণে দানবাকৃতি দেখায় এই নিশিতে। ইসাবেলাকে সাবধানে পা ফেলতে হচ্ছে বরফের ওপর। কাঁপছে হাতের মোমটা। জানালার কাছাকাছি আসতে মোমটা নিরাপদ দুরত্বে রাখল। এখানে আলো দেখলে মাদাম টের পেয়ে যেতে পারেন। মৃদু তুষার বৃষ্টি আর হাওয়ার কারণে মোমের ওপর ছাতা রেখেছে। সন্তপর্ণে জানালার একপাশে দাঁড়ায়। অনেকক্ষণ হাঁটার কারণে হাঁপ ধরে গেছে। একটু জিরিয়ে নিলো। খেয়াল হলো এই তুষারপাতে জানালায় বরফের আস্তরণ পড়েছে। তাতে রসুন ঘষা নিতান্তই বোকামির কাজ। হঠাৎ আকাশের মেঘ কেটে যায়। আকাশে রাজত্ব তখন পূর্ণ চাঁদের। মোমের আলোর এখন আর দরকার নেই। তবুও আলোটা নিভালো না। রসুন পকেট থেকে বের করতে গিয়ে হাত ফসকে নিচে পড়ে গেল। সাদা জিনিস সাদা বরফে মিশে গেল যেন। ভালো করে খুঁজতেই পেয়ে গেল। ওই তো খানিক দূরে পড়ে আছে। ওদিকে পা বাড়াতে আচমকা দমকা হাওয়া বইতে শুরু করে। সাথে তুষার বৃষ্টি। মুহূর্তে সামনেটা ঝাপসা হয়ে যায়। আবহাওয়া এই হঠাৎ পরিবর্তন ভালো লক্ষণ না। তাড়াতাড়ি দেওয়াল ঘেঁষে দাঁড়ায় ইসাবেলা। বুক দুরুদুরু করছে। ছাতা আর মোমের চিহ্ন পর্যন্ত নেই সেখানে। আগের ইসাবেলা হলে হয়তো ভয়ে জীবন বাঁচাতে দৌড়ে পালাত, কিন্তু এই ইসাবেলা পালায় না। পকেট হাতড়ায়, হতাশ হয়।
“রসুন খুঁজছ?”
প্রকৃতি নিমিষেই শান্ত রূপ নিলো। ইসাবেলা মোটেও চমকায় না কণ্ঠস্বরটি শুনে। বরং কঠিন হয়ে ওঠে মুখ। জ্বলন্ত চোখে চাইল নিকোলাসের দিকে। নিরাপদ দুরত্বে দেওয়ালে একপাশ হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে নিকোলাস। ঠোঁটের পাশ দিয়ে তখনো ভিক্টোরিজার তাজা রক্তের কিছুটা লেগে আছে। ইসাবেলার ক্রোধিত দৃষ্টি অনুসরণ করে ঠোঁটের কোনাতে আঙুল ঘষে রক্তটা তুলে সেই আঙুল মুখে পুরে নিলো।
“মেরে ফেললেন ওকেও?”
“কেন? কষ্ট পেলে?” ইসাবেলার বড়ো ইচ্ছে করল নিকোলাসের ঠোঁটের পৈশাচিক হাসিটা চিরতরে মুছে ফেলতে।
“পিশাচ আবার মানুষের কষ্ট নিয়ে ভাবতে শুরু করল কবে থেকে!”
নিকোলাসের হাসি ম্লান হয়ে গেল, কিন্তু তা একেবারে হারাল না।
“মানুষের না, তোমার কষ্ট নিয়ে এই পিশাচ আজকাল ভাবে।”
ইসাবেলা ঢোক গিলল। ওর চোখের পলক পড়ল না। নিকোলাসের এই কথার ভাবে কোনো রসিকতার রেশ নেই। দৃষ্টিতে সেই তাপ! ইসাবেলা কিছুক্ষণ যেন খেই হারিয়ে ফেলল। নিকোলাসের খুব ইচ্ছে করল নিকটে গিয়ে ওর মুখটা আঁজলা ভরে তুলে ওর শ্বাস-প্রশ্বাসের উঞ্চতার আবেশে আবেশিত হতে। এগোতে গিয়ে থেমে যায় ওর গলার রোজারি দেখে। গম্ভীর গলায় আঙুল ইসাবেলার গলার দিকে তুলে বলল,
“ওটা খুলে ফেলো। কথা আছে তোমার সাথে।”
“না, যা বলার ওখানে দাঁড়িয়েই বলুন।”
“না? আমাকে তোমার বিশ্বাস নেই?”
“না।”
নিকোলাসের মুখটা বিমর্ষ হয়ে ওঠে। সেটা আজ আর ঢাকার ছল করে না। দেখুক ইসাবেলা, দেখুক ওর এই ‘না’ কতটা আঘাত করেছে নিকোলাসকে। এই দেখানোকে যদি দুর্বলতা বলে, তাহলে ও দুর্বল। এই মানবীর প্রতি নিকোলাস দুর্বল।
চলবে,,,