#বৃষ্টির_রাতে
#রূবাইবা_মেহউইশ
(৩৮)
সম্পূর্ণ সাদা শাড়িতে হালকা ল্যাভেন্ডার রঙের আভা আর দোপাট্টার রঙটা সম্পূর্ণ ল্যাভেন্ডার। দু হাতের একটাতে স্বর্ণের চূড় অন্যটাতে এক গাছি হালকা বেগুনি রঙা চুড়ি। গলায়, কানে আর কপালে স্বর্ণের গহনা। আকদ উপলক্ষেই কিছু গহনা এহসানের মা আলাদা করে দিয়েছেন বিয়ের উদ্দেশ্যে কিছু আলাদা করে রেখেছেন। এসবের ভেতর এহসান আবার কখন যেন লুকিয়ে একজোড়া পায়েলও রেখে দিয়েছিলো টের পায়নি কেউ। সেগুলোও পরানো হয়েছে আয়নাকে আর সাজ বলতে এহসানের মায়ের কথা রাখতে পার্লারে না নিয়ে ঘরেই সাজিয়েছে। মাইশা সাজের বেলায় অপটু তাই আয়নার দুই বান্ধবী সাজাবে ভাবছিলো কিন্তু সুযোগ বুঝে সুপ্রভা সকালেই এসে হাজির হয়েছিলো আয়নাদের বাড়ি। বাহানা হিসেবে অবশ্য সে এহসানকে ফাঁসিয়েছে। এহসানের নাম করে কিছু তাজা ফুলের গাজরা মালা আর কলি গোলাপ ঢালি সাজিয়ে নিয়ে এসেছে। এহসানদের বাড়িতে শুধু রেজিস্ট্রি হওয়ার কথা হলেও আজই সকালে আবার এহসানের মা আয়নার বাবাকে ফোন করে ধর্মীয় রীতিতেও বিয়ে পড়ানোর আরজি রাখলেন। সত্যি বলতে তাসিনের বাবা যেদিন রেজিস্ট্রির কথা ঠিক হলো সেদিনই বলেছিলেন, “আমার এমন আদ্দেক( অর্ধেক) বিয়াশাদী পছন্দ না কিন্তু পোলার বাড়ি থাইকা না চাইলে যাইচ্চা ( যেচে) নিজেরা কওয়া ভাল্লাগে না।”
সময়টা মাসের মাঝামাঝি হওয়ায় তাসিনের পক্ষে বাড়িতে আসা সম্ভব নয়। সে সকালেই একবার ফোন করে কথা বলেছিলো ফুপুর সাথে। তার ফুপু এখন আর একটুও কষ্ট পাচ্ছে না তাসিনের সাথে আয়নার বিয়ে দিতে না পারায়। শুনে ভালো লাগলো তাসিনের। মনের ভেতর একটা ভার, একটা অপরাধবোধ কাজ করতো তার আয়নাকে গ্রহণ করতে না পারায়। এটাতো সত্যি সে চেষ্টা করেছিলো কারণ এতে তাদের দু পরিবার তার আপন মানুষগুলোই খুশি হতো। দিনের অর্ধেকটা পেরিয়ে গেছে সুপ্রভার আয়নাদের বাড়িতে আর এত সময়ের মাঝে তাসিন দু’বার ফোন করলেও সুপ্রভা একবারও কথা বলতে পারেনি। প্রথমবার কল রিসিভ করে কানে তুলেছিলো ঠিক সে সময়েই আয়নার মা এসে কথা বলছিলেন তার সাথে৷ আর পরেরবার আয়নার পাশে বসা ছিলো সে তখন মাইশা আর আয়নার দুই বান্ধবীও ছিলো পাশে। বিয়ে পড়ানো হবে সন্ধ্যায় আর তাই বরপক্ষ আসবে সন্ধ্যায়ই। সুপ্রভা ভেবেছিলো সকালে এসে শুধু কনে দেখেই সে চলে যাবে টিয়ার বাড়িতে৷ কিন্তু কিছুতেই ছাড়লো না কেউ তাকে৷ শত হোক বরের পক্ষের আত্মীয় বলে কথা। বরের আপন ফুপাতো বোন সে জোর করে হলেও বিশেষ আপ্যায়ন করতে হয় বলেই দুপুরে আয়নাদের বাড়িতে খেতে হলো। কিন্তু সন্ধ্যার প্রোগ্রামের জন্য সে ব্যাগে করে পোশাকও এনেছে কিন্তু এখানে সে তৈরি হতে চায় না। টিয়ার কাছেই গিয়ে তৈরি হয়ে বসে রইলো সুপ্রভা। দু বান্ধবীতে গল্প হলো অনেক আর সে ফাঁকেই টিয়াকে বলে দিলো তার তাসিনের প্রতি ভালোলাগা আর ভালোবাসার কথাটা। দিনটা শুক্রবার হওয়ায় মুরাদের ছুটি ছিলো। সে বিকেলে একটু বেরিয়েছিলো বন্ধুদের সাথে দেখা করতে আর যখন সে বাড়ি ফিরলো তখন শুনতে পেলো তার শোবার ঘরে তার স্ত্রী আর তার বান্ধবীর কথোপকথন।
“তোর কি মনে হয় তাসিন ভাই এখনও সিঙ্গেল?”
“মনে হবে কেন আমি শতভাগ শিওর সিঙ্গেল আর সিঙ্গেল বলছি কেন লোকটা বদ আমাকে পছন্দ করে কিন্তু মুখে বলে না।”
রিমন গলা খাকাড়ি দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েও দিলো না।লুকিয়ে কারো কথা শোনা মন্দ কথা কিন্তু সেই কথা যদি হয় জানে জিগার দোস্ত সম্পর্কে তখন সব জায়েজ। মুরাদের মনে হলো এত সুন্দর মুহূর্তটা বন্ধুর অগোচরে কেন থাকবে!
মুরাদ দ্রুত ভিডিওকল করে ফোনের কল ভলিউম জিরো করে নিলো। তাসিন ভিডিও কল বলেই একটু অবাক হয় তবে যথা সময়েই রিসিভ করে। হ্যান্ড ফ্রী লাগানো তাই আরো একটু সুবিধা হয় তাসিনের। সে অফিসের বাইরে এসেছে তখন সবে। কল রিসিভ করে স্ক্রীণে তাকাতেই ভড়কালো তাসিন। ক্যামেরায় অর্ধেকটা অন্ধকারাচ্ছন্ন তার ফাঁকে প্রিয় একটি মুখের একপাশ দৃশ্যমান। সে আবারও একাউন্ট চেক করলো না এটা মুরাদেরই নম্বর তাহলে সুপ্রভাকে কেন দেখছে! বার কয়েক হ্যালো হ্যালো করলো তসসিন কিন্তু কোন জবাব এলো না তবে একটু মনঢ়োগ দিতেই শুনতে পেল সুপ্রভার কথা, “এহহহ নিজে থেকে সে প্রপোজ না করলে আমি আমার অনুভূতির খোলাসা কখনোই করবো না।”
কথাটা কর্ণগোচর হতেই শিউরে ওঠে তাসিন। সুপ্রভা কি তার কথা বলছে! সে পথ চলতে চলতে ধ্যান হারিয়ে ফেলল মুহূর্তেই। মন চলে গেল দূর গ্রাম নয়াগঞ্জে মুরাদের ঘরটিতে। সুপ্রভার কথা শুনেই টিয়া আবারও বলেছিলো, “তাসিন ভাই যদি কখনোই না জানায় তোকে মনের কথা! তুই নিজেই বললি আয়না নাকি উনাকে ভালোবাসে আর উনি তাকে ভালোবাসে না বলেই যত্রতত্র করে এহসান ভাইয়ের সন্ধান পেয়ে আয়নাকে গছিয়ে দিচ্ছে সেদিকে। তোকেও যদি না ভালোবাসে!”
“কেন অগোছালো কথা বলছিস টিয়া? এখন কি তোর আমাকে ভয় না দেখালেই চলছে না! আমি সত্যিই রে ভীষণ ভালোবেসে ফেলেছি তাকে। কবে, কখন আর কেমন করে জানি না শুধু বলতে পারি তার চোখের তারায় লুকানো এক হাসি থাকে। সেই হাসি চোখে পড়তেই আমার দম বন্ধ হয়ে আসে। তার কথার পিঠে কথা বলতে গেলেই আমার ভেতর থেকে এক ভিন্ন উচ্ছাস আনন্দের লহরি বইয়ে দেয়। আর তার দুষ্টুমির ছলে আমাকে ‘তু*ফান’ বলে সম্মোধন করাটাও আমায় বিমোহিত করে। কি এক ভালোলাগায় আমি ম*রে যাই প্রতিটাক্ষণ৷ প্রায়ই যখন মিথ্যে কোন বাহানায় এসে আমার হলের সামনে এসে দাঁড়ায় আমি করিডোরে দাঁড়িয়ে দেখি অফিস ফেরতা ক্লান্ত মানুষটা কি যেন খুঁজতে থাকে আমাদের হলের দোতলার বারান্দায়। তখন বুকের ভেতর বসন্তের হাওয়া দাপিয়ে বেড়ায় ছোট্ট টুনটুনির চন্চলতার মতন। আমি আনন্দে ভেসে যাই।”
তাসিন চুপচাপ শুনতে শুনতে বিভোর হয়ে কখন যে রাস্তার কিনারা থেকে মাঝখানে চলে এসেছে তার খেয়াল নেই। কোম্পানির নিজস্ব পথেই ছিলো সে তখনও। এ পথে ফ্যাক্টরির বিশাল বিশাল ট্রাক আর কর্গো ছাড়া দুয়েকটা রিকশারও যাতায়াত আছে। তাসিনের অন্যমনস্কতায় হঠাৎই সে এক রিকশার সামনে এসে পড়লো। রিকশার চাকা ডাব পায়ের ওপর উঠে গেছে , হাত থেকে ফোন ছিটকে পড়েছে তৎক্ষনাৎ। রিকশাওয়ালা চেঁচিয়ে তাকে সরতে বলার পরও বিপদ ঘটেই গেল। এতে রিকশাওয়ালার কোন দোষ নেই রিকশায় বসা যাত্রী তাই খিস্তি দিয়ে উঠলো তাকে। পায়ে কালো সু পরা তবুও আঘাতটা মোটামুটি লেগে গেছে। অফিস ছুটির পরের সময় হওয়ায় পরিচিত আরো কয়েকজন ছিলেন আশপাশে সবাই হৈ হৈ করতে করতে এগিয়ে এলেন। দুজন মিলে তাসিনকে কোম্পানির ক্লিনিকেই নিয়ে গেলেন আরেকটা রিকশা ডেকে। তাসিনের গাড়ি সে বাড়ি থেকে আসার সময় নিয়ে আসলেও অফিসে কখনো গাড়ি নিয়ে আসেনি। তাদের এপার্টমেন্ট গ্যারেজেই পড়ে থাকে গাড়িটা শুধু মাঝেমধ্যে সন্ধ্যার পর ককনো সখনো নিয়ে বেরিয়েছিলো সুপ্রভার সাথে ঘোরার জন্য৷ কিন্তু এই মুহুর্তে তার মনে হলো এই যে সে গাড়ি নিয়ে বের হয়না এটাই মঙ্গলজনক।
সন্ধ্যার পরপরই বিয়ে পড়ানো হলো আয়নার। ঘরোয়া অনুষ্ঠানে মানুষ বলতে তাসিন বাদ দিয়ে পুরো পরিবার, এহসানের চাচাতো বড় দুই ভাই, ভাবী আর সুপ্রভার মা, বাবা, মীরা সুপ্রভা৷ এহসানের বাবা নেই বলে সুপ্রভার বাবাই মুরুব্বি হিসেবে আছেন। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হতেই এহসানকে আয়নার ঘরে নিয়ে যাওয়া হলো। মাইশা আর সুপ্রভার উৎসাহে আয়না দেখা আর মিষ্টিমুখ পর্ব করা হলো খুব হৈ চৈ এর মধ্যেই। পুরোটা সময় আয়না থম মেরে বসে ছিল একরকম মূর্তির মত। রাত নয়টার পরপরই বাড়ি ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিলে তাসিনের মা আর সুপ্রভার মা দুজনেই বললেন, বিয়ের প্রথম রাত ছেলে মেয়ে দুটোকে আলাদা রাখার দরকার নেই। এমনিতেও আয়নাকে তারা ছয় কি সাত মাস পর বাড়ি নিবে তার আগে আর এহসান আসবে বলে মনে হয় না। কিন্তু প্রথম রাতটা তারা একসাথেই কাটাক।” ছেলের ফুপু আর মেয়ের মামী দুজনেই বড় আর সম্মানীয় মানুষ তাই মিনতিও আর অমত করেননি। বরং তিনি নিজেও চাচ্ছিলেন জামাই আজ এখানেই থাকুক। এহসান যেন এমন কিছুই চাইছিলো সেও ফুপু একবার বলতেই থেকে গেল। বাকিরা চলে গেল রাত দশটার মধ্যেই। সুপ্রভা যাওয়ার আগে একবার আয়নার সাথে দেখা করতে তার রুমে প্রবেশ করেছিল। এহসান তখন আয়নার রুমেই একটা চেয়ারে বসা। সুপ্রভা মুচকি হেসে এহসানকে বলল, “এটা কি করলে ভাইয়া এইটুকুনি একটা পুতুলকে বিয়ে করলে এখন আমি তাকে ভাবী ডাকবো কি করে বলোতো!”
“ভাবী ডাকতে না পারলে নাম পুতুল বলে ডাকিস।”
“ইশ, সত্যিই নিজের বউকে পুতুল ভেবে বসেছো নাকি আমি তো ভাবছি নাম ধরেই ডাকবো।”
সুপ্রভার কথাটা শেষ হতেই আয়না মুখের ওপর বলে বসলো, “সম্পর্কে তো আপনিই বড় হবেন নাম ধরে বললেইবা কি!”
আয়নার কথাটায় কিছুটা ব্যঙ্গাত্বক সুর ছিলো যা উপস্থিত দুজনের কারোই বুঝতে সমস্যা হয়নি। তবে কথার ইঙ্গিতটা তাদের ঠিক বোধগম্য হয়নি। সুপ্রভার মনে হলো মেয়েটা তাকে কোন কারণে অপছন্দ করছে আর এহসান বিচক্ষণ সে যেন আয়নার কথায় কোন রহস্য খুঁজে পেল। সুপ্রভা আর কোন কথা না বলে, “শুভ বাসররাত ভাইয়া, ভাবী” বলে বেরিয়ে গেল।
হাবীব চাচা হুইল চেয়ারে করে দোতলা থেকে লিফটে গ্রাউন্ড ফ্লোরে নিয়ে এলেন তাসিনকে। হাসপাতালের সামনে রিকশা ডেকে রিকশাওয়ালার সাহায্যে তাকে রিকশায় বসিয়ে নিজেও বসলেন। ইট পাথরে ঢাকা এই শহরে আপন বলতে রক্তের কেউ নেই তবে সবসময়কার মতোই এই মানুষটা আপন হয়ে পাশে রইলেন। তাসিনের রুমে ফিরতে দেরি দেখেই তিনি কল করেছিলেন আর তখন তাসিনকে নিয়ে আসা ব্যক্তিদের একজন ফোন তুলে দূর্ঘটনার কথা জানাতেই তিনি হন্তদন্ত হয়ে ছুটে আসেন হাসপাতালে৷ তারপর থেকে টানা দেড় ঘন্টা পাশে থেকে তাসিনের অবস্থা জেনে তাকে নিয়ে ফিরছেন। এর মাঝে অবশ্য হাবীব চাচা বার কয়েক তাসিনকে জোর করলো তার বাড়িতে খবর দিতে কিন্তু সে রাজী হলো না। সামান্য ফ্র্যাকচার আর কিছুটা ছিলে গেছে পায়ের ওপর অংশে। আপাতত প্লাস্টার করে দিতে চেয়েও ডক্টর করেননি৷ এক্সরেতে দেখেছেন হাড়ে চির নেই কোথাও তাই সাবধান থেকে নিয়মিত ঔষধ খেলে সেরে ওঠতে সময় লাগবে না। রুমে এনে তাসিনকে বিছানায় দিয়ে হাবীব চাচা বেরিয়ে গেলেন৷ আধঘন্টার মধ্যেই আবার কিছু শুকনো খাবার এনে রাখলেন তার সামনে। জোর করেই কয়েকটা বিস্কিট আর এক কাপ কফি খাইয়ে ঔষধ দিলেন৷ তাসিনও ঔষধ খেয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করলো একসময় ঘুমিয়েও পড়লো।
উজ্জ্বল অর্ধচাঁদ আকাশে আর তাতেই শুভ্র আলো ঠিকরে পড়ছে ধরণীর বুকে৷ দক্ষিণের জানালাটা খোলা থাকায় ঘরময় শুভ্র নরম আলোর খেলা বসেছে। কাঠের চেয়ারে চেরী রংয়ের পাঞ্জাবী পরে বসে আছে লম্বা চওড়া স্বাস্থ্যের মানুষটা৷ ঘরের বাতি বন্ধ থাকায় তার মুখটা ঠিকঠাক দেখতে পাচ্ছে না আয়না তবে সে চেষ্টা করছে এহসানের মুখভঙ্গি দেখার। ভয় হচ্ছে খুব ভেতরে ভেতরে তার কাঁপন ধরছে। লোকটার চোখ চতুর শেয়ালের মত তীক্ষ্ণ তাকালেই মনে হয় তার ভেতরের গোপন কথাগুলো সব পড়ে নেবে। এহসান বসা থেকে হুট করেই দাঁড়িয়ে গেল। আয়না বসে ছিলো খাটে একটু আগেই মাইশাকে দিয়ে রাতের খাবার ঘরে পাঠিয়েছিলো মা আর মামী। আয়না খাবে না বলেছে কিন্তু লেকটা সে কথায় পাত্তা না দিয়ে তার সামনে নিজেই প্লেট দিয়ে পোলাও, মাংস, সালাদ সব তুলে দিয়েছিলো। মাইশাকেও জোর করে বসিয়েছিলো খেতে। কেমন যেন স্কুলের গণিত স্যারের মত তীক্ষ্ণ নজরে চেয়ে থেকে তাদের দুজনকে খাওয়ার আদেশ দিলো। বিয়ের দশ মিনিট আগ পর্যন্তও আয়নার মনে ছিলো বিশাল প্ল্যান। বিয়েটাকে তার মনে হয়েছিলো একটা ড্রামা পার্ট যেখানে সে ড্রামার খল নায়িকার মত সুপ্রভাকে সারাজীবনের মত আলাদা করে দিবে তাসিনের জীবন থেকে। তারপরই এই লম্বুসম্বু লোকটাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে ছেড়ে দিবে বিয়ের বাঁধন থেকে তারপর….. ভোজভাজির মত পাল্টে দিবে নিজের জীবনের চিত্র। হায়! কিশোরী, অল্পবয়স্ক মস্তিষ্ক জীবনটাকে যতোটা সহজ ভেবে বসেছিলো জীবনটা আদৌও তা নয় টের পেয়ে গেল আয়না দশ মিনিটের মাঝেই। তার আবেগ এখন ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে চার দেয়ালের কোণায় কোণায়।
সুপ্রভা বাড়ি ফিরে ভেবেছিলো রুমে ঢুকেই একবার তাসিনকে ফোন করবে। কিন্তু ফিরতেই দেখা গেল বসার ঘরে বড়সড় আলোচনা সভা বসেছে। মেজদার বিয়ের ডেট ফিক্সড করতে যাবে কাল। এবং নিজেরাি আগে থেকে একটা সময় ঠিক করে নিবে বলে আলোচনা চলছে। সুপ্রভার মন বলছিলো আলোচনায় তার থাকা না থাকা সমান তাই সে পা বাড়ায় ওপরতলার দিকে। তখনি কানে এলো মায়ের কণ্ঠ, “কোথায় যাচ্ছো বসো এখানে। তোমার সাথে জরুরি কথা আছে।”
সুপ্রভা একবার আমতা আমতা করে বলল, “আমার খুব ঘুম পাচ্ছে মা।”
” নিজের বিয়ের চেয়ে ঘুম জরুরি নয়৷ চুপচাপ বোসো কথা শেষ হলে ঘুমাতে যাবে।”
চলবে