প্রেমের পাঁচফোড়ন💖
#সিজন_২
#পর্ব_৩০
#Writer_Afnan_Lara
🌸
সাইমন ভিড়ের মাঝে আহানাকে আর শান্তকে খুঁজতেছে,রাগে তার মাথা ফেটে যাচ্ছে
শান্ত একটা খালি মদের বোতল হাতে নিয়ে হনহনিয়ে এসে সাইমনের সামনে দাঁড়ালো
মাথায় ফাটালে মরে যাবে পরে জেলের ভেজাল বইতে হবে
তাই শান্ত সাইমনের হাতেই ফাটালো এই হাত দিয়ে সে আহানাকে কষ্ট দিয়েছিলো
সাইমন চিৎকার করে নিচে বসে গেছে সাথেসাথে
একটা আহাজারি লেগে যাওয়ায় গান অফ হয়ে গেছে ততক্ষণে
লালা নীল বাতি বন্ধ হয়ে সাদা বাতি জ্বলে উঠেছে,সবাই অবাক হয়ে শান্তর মুখের দিকে তাকিয়ে আছে,ওর চোখ মুখ দিয়ে যেন আগুন ঝরছে
শান্ত দাঁতে দাঁত চেপে সাইমনের রক্তাক্ত হাতটা পা দিয়ে মাড়িয়ে ধরে বললো”আহানা আমার!শুধু আমার!তাকে ছোঁয়ার অধিকার আমি ছাড়া আর কারোর নেই,হাত কেটে রেখে দিব কেউ ওকে ছোঁয়ার চেষ্টা করলে,গট ইট??”
.
নওশাদ এগিয়ে এসে বললো”কি হয়েছে শান্ত?এনিথিং রং?
.
শান্ত কিছু বলছে না,সাইমনের হাতে আরেকটা চাপ দিয়ে তারপর চলে যেতে নিতেই সাইমন বলে উঠলো “দাঁড়ান মিঃশান্ত”
.
শান্ত থেমে গিয়ে সাইমনের দিকে তাকালো,সাইমন তার পকেট থেকে রুমাল নিয়ে হাতে বাঁধতে বাঁধতে বললো”আপনি তো সেই শান্ত না?? যে “শান্তি গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের” মালিক?”
একজন বলে উঠলো “হুম”
সাইমন দাঁত কেলিয়ে বললো”তা আপনার জন্য কি মেয়ের অভাব পড়েছে নাকি?আপনার ভক্ত/ফলোয়ার তো কম না,ডেইলি শতে শতে মেয়েরা আপনাকে নিয়ে ক্রাশ পোস্ট করে,আপনার গানে কত মেয়ে মুগ্ধ আর সেই আপনি কিনা বেছে বেছে বস্তির একটা মেয়ের জন্য এত নিচে নামছেন??আহানার ব্যাকগ্রাউন্ড সম্পর্কে কিছু জানেন?তার বাড়িতে গেছেন কখনও?ওর তো বাপই নেই”
.
শান্ত টেবিল থেকে কাঁচের গ্লাস নিয়ে সাইমনের মাথায় ছুড়লো এবার,চিৎকার করে বললো”তোর মাথায় ফাটানো উচিত ছিলো সবার আগে তা করতে দেরি করায় এখন তোর মুখ দিয়ে এত চিপ কত বের হলো!
আহানা আমার রিলেটিভ হয়,আর আমার রিলেটিভদের স্টেটাস আমাকে বুঝাতে হবে না! তারা এমনিতেই হাই লেভেলের,তোর থেকেও!
আহানার বাবা আর আমার বাবা একসাথে কার এক্সিডেন্টে মারা গেছেন,আমাকে বুঝাতে হবে না আহানার বাবা আছে কি নাই
আহানাকে এই টুকুন থেকে আমি চিনি,ওর চরিত্র নিয়ে আমাকে কারোর সার্টিফিকেট দিতে হবে না
ও হাসলেও সেই হাসির কারণ আমার জানা থাকে,ওর এ টু জেট সবটা আমি জানি,ওর ব্যাপারে কেউ একটা কথাও বলবে না,মাথা কেটে হাতে ধরিয়ে দিব তাহলে
.
সাইমন মাথায় হাত বুলিয়ে জোরে জোরে হেসে দিলো তারপর বললো”তোমাদের তো বিয়ে হইনি তাই না??আহানা কি করে তোমার হয় সেটাও আমি দেখবো!!কালকেই সে আমার হয়ে যাবে,ইউ জাস্ট ওয়েট এন্ড সি!আহানাকে বিয়ে না করলেও ওকে সবার আগে আমিই টাচ করবো,আমার কথা নোট করে রাখো মিঃ শান্ত!তখন তোমার কিছু করার থাকবে না,তখন ওকে বিয়ে করতেও তোমার ঘৃনা হবে!”
.
শান্ত কণার দিকে তাকালো এবার তারপর গলার স্বরটা হালকা করে নওশাদ আর রিয়াজ সূর্যর দিকে তাকিয়ে বললো”রুপাকে নিয়ে মইনুদ্দিন আঙ্কেলের বাসায় আসো তোমরা ১ঘন্টার ভিতরে
সাথে করে ফুলের মালা আর মিষ্টি ও নিয়ে আসবে,রুপাকে বলবে সাথে করে আহানার আইডিকার্ড নতুবা জন্মনিবন্ধন অথবা এসএসসির সার্টিফিকেটটা নিয়ে আসতে,পাসপোর্ট সাইজের ছবিও ম্যানেজ করতে বলবা এই এক ঘন্টার ভিতরে,ওকে?
কথাটা বলে শান্ত বেরিয়ে পড়লো
আহানা কারের ফ্রন্ট সিটে পা তুলে গুটিশুটি দিয়ে বসে আছে শান্তর জ্যাকেটটা মুঠো করে ধরে
চোখ তার সামনের দিকে,অন্য কোথাও তাকাচ্ছে না সে
শান্ত এসে কারের দরজা খুলে বসে কার স্টার্ট করলো
আহানা পা নিচে নামাতে যেতেই শান্ত বললো”যেভাবে কমপোর্ট ফিল করো সেভাবে বসো”
.
আহানা পা আর নিচে নামালো না,চুপ করে শান্তর মুখের দিকে চেয়ে আছে সে
শান্ত স্পিড বাড়িয়ে কার চালাচ্ছে,রাত ৮টা বাজে তখন
চারিদিকে বাতি আর বাতি, নিরিবিলি রোড দিয়ে তারা যাচ্ছে,ঢাকার বাইরে,জ্যাম তেমন একটা নেই,২/৩মিনিট অস্থায়ী জ্যাম লাগে মাঝে মাঝে
আহানার মুখ দিয়ে কথা আসতেছে না,কি দিয়ে শুরু করবে ভাবতে পারছে না সে
শেষে মুখ ফুটে বললো”আমি এখানে আসতে চাইনি,নওমি আপু অনেক করে বললো,তারপর এখানে এসে আমি আপনাকে অনেক খুঁজেছি কিন্তু পেলাম না,তারপর এই লোকটা এসে গেলো ততক্ষণে
আমি বুঝি না সবাই কেন মেয়েদের সাথে জোরজবরদস্তি করতে চায়
শান্ত আহানার এই কথাটায় আহানার দিকে তাকালো তারপর আবারও রোডের দিকে চোখ রেখে বললো”তবে আজ আমি তোমার সাথে জোরজবরদস্তি করবো”
.
আহানার মুখটা এমনিতেও ছোট হয়ে ছিলো শান্তর এমন কথায় সে নড়ে শান্তর দিকে তাকিয়ে আছে এখন
.
শান্ত একটা বাড়ির সামনে এসে কার থামিয়ে জানালা দিয়ে মাথা বের করে বললো”রফিক!আমি শান্ত”
.
রফিক হচ্ছে এই বাড়ির দারোয়ান,সে শান্তকে দেখে গেট খুলে দিলো
আহানার মনে হচ্ছে কিছু একটা হতে চলেছে যেটা হওয়া উচিত না,কিন্তু সে বুঝতেছে না ঠিক কি হতে যাচ্ছে
শান্ত কারটা বাড়ির সামনে থামিয়ে কার থেকে নেমে ঘুরে এসে দরজা খুলে আহানার হাত ধরে ওকেও বের করে আনলো
.
আআআআপনি কি করবেন এএএএখন?
.
শান্ত কিছু না বলে আহানাকে নিয়ে বাড়িটার ভিতরে চলে আসলো,একজন বয়স্ক লোক সোফায় বসে কাগজপত্র নিয়ে লেখালেখি করতেছেন
শান্তকে দেখতে পেয়ে মুচকি হেসে বললেন”আরে শান্ত যে,এ সময়ে কি মনে করে?”
.
শান্ত আহানাকে টেনে নিয়ে সোফায় বসিয়ে দিলো জোর করে তারপর বললো”আঙ্কেল আমি এরে এখন এই মূহুর্তে কাগজে কলমে বিয়ে করতে চাই,আপনি সব বন্দবস্ত করুন”
.
আহানা চোখ বড় করে শান্তর দিকে তাকালো তারপর সোফা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বললো”আপনি এসব কি বলতেছেন?”
.
আঙ্কেল আমার হাতে সময় নেই জলদি করুন
.
কিন্তু শান্ত কিছুই তো বুঝতেছি না,এসব কি বলছো?এ সময়ে বিয়ে??আর কাগজে কলমে বিয়ে করতে হলে তো তোমার আর ওর আইডিকার্ড/জন্মনিবন্ধন কপি এসব লাগবে,বললেই তো আমি জলদি করতে পারবো না
.
আমার সব কিছু পকেটে আছে আর আহানার কাগজপত্র রুপা নিয়ে আসতেছে ওর মায়ের কাছ থেকে
.
আপনি আমার দিকে তাকান,এসব কি বলতেছেন আপনি?বিয়ে মানে?
হঠাৎ করে এসব কি শুরু করছেন আপনি?আমি আপনাকে বিয়ে করবো না কিছুতেই,আপনি আমার সাথে এ বিষয় নিয়ে কিছুতেই জোর করতে পারেন না,আমি এখনই মাকে ফোন করতেছি
আহানা তার সাইড ব্যাগ থেকে ফোন নিতে যেতেই শান্ত ছোঁ মেরে ফোনটা নিয়ে নিলো ওর থেকে
স্বাভাবিক ভাবেই বললো “উনি আমার সম্পর্কে আঙ্কেল হয়,উনার সামনে সিনক্রিয়েট করবা না,চুপচাপ সোফায় বসে থাকো
.
কিন্তু শান্ত,তোমার মা?উনি কি জানেন এসব?
.
জানে না,তবে জানবে,আজ এখন এ মূহুর্তে আমার এসব করা জরুরি,আপনি কাইন্ডলি সব তৈরি করুন,নিন আমার কাগজপত্র, আর আহানার গুলা কয়েক মিনিটেই এসে যাবে
.
আমরা হাজির!!!
.
শান্ত পিছনে তাকিয়ে দেখলো নওশাদ,রিয়াজ, সূর্য আর রুপা দাঁড়িয়ে আছে, রুপার হাতে একটা কাগজের ফাইল আর নওশাদের হাতে মিষ্টির প্যাকেট,সূর্যের হাতে ফুলের মালা দুটি
আহানা রুপার দিকে চেয়ে চোখ রাঙিয়ে বললো”রুপা তুইও!!”
রুপা আহানার কথার উত্তর না দিয়ে শান্তর দিকে তাকিয়ে বললো”ভাইয়া আমি ওর আম্মুকে বলছি ওর অফিসের কাজে কাগজপত্র গুলা লাগবে,উনি আর সন্দেহ করেননি”
.
গুড জব!
.
শান্ত এগিয়ে এসে সূর্যর হাত থেকে ফুলের মালা গুলো নিয়ে আহানার গলায় একটা পরিয়ে দিলো
আহানা মালা টা খুলে শান্তর মুখের উপর ছুঁড়ে মারলো তারপর হনহনিয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে চলে গেলো সে
.
শান্ত হাত দিয়ে তার মাথার চুলগুলো টানতে টানতে মালাগুলো সোফার উপর রেখে বললো”আমি ওরে নিয়ে আসতেছি,আঙ্কেল আপনি কাগজপত্র রেডি করেন যেন আসার পর জাস্ট সইতেই বিয়ে হয়ে যায়
কথা শেষ করে শান্ত বেরিয়ে গেলো বাসা থেকে
আহানা একা একা অন্ধকার একটা পথের কিনারা দিয়ে হেঁটে চলেছে,কোনদিকে যাচ্ছে সে জানে না তবে এখানে আর থাকা যাবে না এটাই ঘুরতেছে তার মাথায়,দৌড়ের চোটে জুতাটা ফেলে এসেছে সে,খালি পায়ে হাঁটতে সমস্যা হচ্ছে কিন্তু না এভাবে দূর্বল হলে চলবে না
শান্তকে বিশ্বাস নেই যদি সত্যি সত্যি বিয়েটা সেরে ফেলে?
একে বিয়ে করলে আমার জীবনটা পুরো নদীর পানিতে ডুববে
আহানা পিছনে একবার তাকিয়ে আবার সামনে তাকাতেই এক ধাক্কা খেলো সামনে দাঁড়িয়ে থাকা শান্তর সাথে
আহানা কিছুটা ভয় পেয়ে পিছিয়ে গিয়ে বললো”আমি বললাম না এই বিয়ে করবো না আমি,আপনি কেন জোর করতেছেন আমাকে,আর আপনি তো বলেছিলেন আমাকে কখনও বিয়ে করবেন না,তাহলে আজ এসব কেন?”
.
শান্ত চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে আহানার দিকে চেয়ে,হাত দুটো তার পকেটের ভিতর
আহানা কপাল কুঁচকে যখন দেখলো শান্তর কোনো উত্তর নেই তখন সে পাশ কেটে চলে যেতে নিতেই শান্ত ওকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে ফেললো শক্ত করে,ওর গলার কাছে মুখ নিয়ে বললো”প্লিস আহানা!”
.
আহানার সম্পূর্ণ শরীর কাঁপতেছে,এভাবে শান্ত ওকে ধরবে সে ভাবতেই পারেনি,কাঁপা কাঁপা গলায় বললো”ছেড়ে দিন,আমি বিয়ে করবো না আপনাকে”
.
শান্ত ছেড়ে দিলো আহানাকে,আহানা কাঁদতে কাঁদতে রোডের উপর বসে পড়েছে,মাথায় হাত দিয়ে বললো”বিয়েটা কোনো ছেলেখেলা নয় যে আপনি বললেন আর হয়ে গেলো,আমার কত স্বপ্ন এই বিয়ে নিয়ে,আমি চাই না এই বিয়ে,আমাকে জোর করবেন না”
.
শান্ত আহানার হাত ধরে ওকে টেনে রোড থেকে তুলে দাঁড় করালো
তারপর কাছে টেনে বললো”আমি চাই না এরপর কোনো পুরুষ তোমাকে ছোঁয়ার চেষ্টা করুক,আমি চাই না তুমি আর অন্য কারোর দ্বারা কষ্ট পাও!আমি শুধু চাই তুমি আমার স্ত্রীরর অধিকারে আমার চোখের সামনে থাকো,আহানা আমি তোমাকে ভালোবাসি না
কি আছে তোমার মধ্যে যে আমি তোমাকে লাভ করবো?
তোমাকে আমি বিয়ে করতে চাই জাস্ট তোমার দায়িত্ব নেওয়ার জন্য,আজ যদি তোমার কিছু হয়ে যেতো মা আমাকে জীবনেও ক্ষমা করতেন না,কারণ সেই পার্টিতে আমিও উপস্থিত ছিলাম
রতনের বেলায় মা আমার সাথে রাগ করে ছিলেন
এরপরে যদি তোমার কিছু হয় তাহলে মা আর আমার দিকে ফিরেও তাকাবেন না,আমার জীবনে মা আর নিতু ছাড়া কেউ নেই,ওরাই আমার সব,আর ওরা যখন তোমাকে আমার সাথে দেখতে প্রিপার করে তো ফাইন!বিয়েই শেষ পরিণতি হওয়া উচিত
.
এক মিনিট!আপনার আর আপনার পরিবারের খুশির জন্য আমি কেন এই বিয়েতে রাজি হবো?আমার কি কোনো ইচ্ছা নাই??বিয়েটাতে মত দেওয়ার রাইট আমারও আছে
.
না নেই!আমার মা বলেছে তুমি আমার ওয়াইফ হবে তো হবে
আর তোমার দায়িত্ব নেওয়ার জন্য হলেও তোমাকে বিয়ে করতে হবে আমায় আর আমি সেটাই করবো,এখন থেকে সবসময় তুমি আমার চোখের সামনে থাকবে,কেউ তোমাকে একটা টোকাও দিতে পারবে না
.
আমি এই বিয়ে করবো না,আমি আপনাকে পছন্দ করি না
বিয়ে তো দূরের কথা,আমি আন্টিকে বুঝিয়ে বলে দিব তাই বলে আজ আমি আপনাকে বিয়ে করতে পারবো না,হাত ছাড়ুন আমার
আমি বাসায় ফিরে যাবো
.
শান্তর কাছে আর কোনো উপায় নেই,নিজেকে শক্ত করে সে আহানাকে একটা কঠিন কথা বলার জন্য মুখ খুললো
.
আহানা তুমি কি চাও আমি এখন তোমার সাথে ঠিক সেই কাজ করি যেটা রতন আর সাইমন করতে চেয়েছিলো?
সেটা ভালো হবে নাকি বিয়ের পরেরটা ভালো হবে?লিগালি?
.
আহানা বিস্মিত হয়ে শান্তর মুখের দিকে তাকিয়ে আছে,পিছোতে পিছোতে কিছুদূর চলে গেছে সে
তারপর ডানে বামে সব পাশে তাকালো,দুপাশে ঝোপঝাড়,মাঝ দিয়ে ফাঁকা একটা রোড
কত শত পোকার গায়ে কাঁটা লাগানো শব্দ হচ্ছে
.
আহানা কাঁদতে কাঁদতে বললো”আপনার আর ওদের মধ্যে কেনো তফাৎ নেই শান্ত!,আপনি আমার দূর্বলতার সুযোগ নিচ্ছেন
.
শান্ত কথাটা না শুনার ভান ধরে দাঁড়িয়ে আছে আরেকদিকে ফিরে
.
আহানা দুহাত দিয়ে মুখটা মুছে আর ১মূহুর্তও দেরি না করে ছুটলো সামনের দিকে
.
উফ!এই মেয়েটাকে নিয়ে আমি পারি না!
.
আহানা দৌড়াচ্ছে তো দৌড়াচ্ছেই,থামাথামি নেই
.
আহানা দাঁড়াও!অন্ধকারে বিপদ হতে পারে এভাবে দৌড়াইও না প্লিস!
.
আহানা শান্তর কথায় কোনো পাত্তায় দিচ্ছে না,সে যতদূর পারছে দৌড়ে যাচ্ছে,অনেকদূর চলে গেছে সে,আজ শান্তকেও খুব খারাপ মনে হচ্ছে,মোট কথা ওর থেকে বাঁচার জন্যই দৌড়াচ্ছে সে
একটু থেমে পিছনে তাকিয়ে দেখলো দূরে শান্তকে দেখা যায়,সেও আসতেছে তেড়ে
আহানার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে,পা চলছে না আর,তাও দৌড়ানোর জন্য পা বাড়াতেই নিচে থাকা কয়েকটা কঙ্করের সাথে হোচট খেয়ে নিচে পড়ে গেলো সে
.
শান্ত এবার থেমে গেছে আহানাকে পড়তে দেখে,তারপর কপাল কুঁচকে বললো”এটাই দরকার ছিল,এতে যদি একটু সুবুদ্ধি হয় আর কি”
.
আহানা পা ধরে চোখ মুখ খিঁচে বসে আছে,শান্ত ততক্ষণে কাছেও চলে এসেছে
.
একদম কাছে আসবেন না আপনি!আমি আপনাকে বিয়ে করবো না কিছুতেই
.
শান্ত নিচু হয়ে আহানাকে কোলে তুলে নিয়ে হাঁটা ধরলো বিপরীত দিকে
আহানা হাত দিয়ে শান্তর মুখ গলা বুক সবকিছুতে কিল ঘুষি দিয়ে যাচ্ছে
শান্তর চুল টানতে টানতে শুধু একটা কথায় বলতেছে সে আর সেটা হলো”বিয়ে করবো না”
শান্ত রোডের দিকে তাকিয়ে নরমালি হেঁটে চলেছে
আহানা একসময় ক্লান্ত হয়ে হাত পা নাড়ানো বন্ধ করে দিলো
তার আর বুঝতে বাকি নেই যে শান্ত ওকে আজ বিয়ে করেই ছাড়বে
শান্ত আহানাকে নিয়ে মইনুদ্দিন আঙ্কেলের বাসায় এসে ওকে সোফায় বসিয়ে দিয়ে রুপাকে বললো ফার্স্ট এইড বক্স আনতে
তারপর আহানার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে তুলো দিয়ে আহানার পায়ের রক্ত মুছতে মুছতে বললো”আমি আজ তোমাকে বিয়ে না করলে সাইমন তোমাকে শান্তিতে থাকতে দিবে না কিছুতেই,সে মানুষভর্তি পার্টিতে দাঁড়িয়ে আমাকে চ্যালেঞ্জ করেছে সে তোমাকে হাসিল করবে যেকোনো কিছুর বদলেই হোক,আর আমি তোমাকে নিয়ে চান্স নিব না
.
আহানা দাঁতে দাঁত চেপে শান্তর গালে চড় মেরে দিলো একটা
তারপর চিৎকার করে বললো”আমার পা ছাড়ুন বলতেছি”
চলবে♥