মেঘের_আড়ালে_রোদের_লুকোচুরি ❤️ 🌈💙🎨😏❤️🥳🐦💐🍫🏩💒 ইভা রহমান Part-57

0
898

😏 #মেঘের_আড়ালে_রোদের_লুকোচুরি ❤️
🌈💙🎨😏❤️🥳🐦💐🍫🏩💒

ইভা রহমান
Part-57

হিয়া রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দেবার পর থেকে হিয়ার আর তেমন কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যায় না,,সময় পেরুবার সাথে সাথে এক অজানা ভয় এসে ঘিরে ধরতে থাকে উজানকে,,হিয়া আবার নিজের কোনো ক্ষতি করে দিবে না তো,,কথা টা মাথাতে আসতেই উজান এক ছুটে দৌড়ে এসে এ ঘরের দরজায় বারবার ধাক্কা দিয়ে হিয়া হিয়া বলে ডাকতে শুরু করে,উজানের মনের ভয় টা এসে ছুঁয়ে যায় সন্ধি আর বাসবির মনেও,,প্রায় পাঁচ মিনিট যাবাৎ উজান দরজা ধাক্কিয়ে যাচ্ছে কিন্তু দরজা খোলা তো দূরের কথা হিয়া উজানের প্রশ্নের প্রতিউওরে কিছু বলছেও না এমন,,একটা পর্যায় উজান আর নিজেকে আঁটকে রাখতে পারে না,,গায়ের সর্বশক্তি এক করে দরজাটা দু তিন বার বারি মারতেই সেটা ভেঙে আসে,,উজান হালকা পড়ে যেতে গিয়েও নিজেকে সামলে নেয়,,উজান রুমে আসলে দেখতে পারে হিয়া বিছানার এক কানিতে মাথা ঠেকে জানালা দিয়ে আসা সেই চিকন দাগের রোদের আলোটার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,,উজান দূত পায়ে হিয়ার কাছে এসে একটানে হিয়াকে নিজের বুকে নিয়ে এসে ফেলে,, ওদেরকে ওভাবে দেখে সন্ধি আর বাসবি রুমে ঢুকতে গিয়েও ভাঙ্গা দরজাটা হালকা করে ঠেলে দিয়ে পাশের রুমে গিয়ে বসে যায়,,

উজানঃ কি হয়েছে তোমার,এরকম কেউ করো,আমি তখন ধরে ডাকছিলাম না,,দরজা খুলছিলে না কেনো?___তোমাকে আমায় ক্ষমা করতে হবে না কিন্তু তুমি আমাকে কথা দেও তুমি নিজের কোনো ক্ষতি করবা না,,,,তুমি যা শাস্তি দেবা আমি মাথা পেতে নেবো,, যা ইচ্ছে হয় সব শাস্তি দেও আমায় কিন্তু নিজের ক্ষতি করে না,,

উজান নিজের বুক থেকে হিয়ার মাথা টা তুলে ধরে,,নিজের দুহাতে হিয়ার চোখ দিয়ে অঝোরে পড়তে থাকা পানিটা মুছে দেয়,,হিয়ার বিক্ষিপ্ত চুল গুলো কানের ভাঁজে গুঁজে দিয়ে উজান হিয়ার দু গালে তার হাত দুটো রাখে,,

হিয়াঃ আমাকে একটা কথা দিবেন আপনি!

উজানঃ হিয়া (অস্ফুটে) বলো কি কথা,,আমার সাধ্যের মধ্যে থাকলে তুমি যা চাইবে আমি সেটা যেখান থেকে পারবো এনে দেবার চেষ্টা করবো,,কি চাও,,কি কথা দিতে হবে বলো?

হিয়াঃ আজকের এ-ই কথা গুলো কখনো যেনো শ্রাবণ না জানতে পারে!_____আমি জানি আপনি শ্রাবণের কাছে কি,,শ্রাবণ কখনো আপনাকে অন্য কিছু ভাবতে গিয়েও হাজার বার ভাববে,,,কিন্তু আমি চাই না শ্রাবণের মনে কখনো এক মুহুর্তের জন্য এটা মনে আসে যে তার অতীতে কিছু হারিয়ে যাবার পেছনে আপনি ছিলেন…

উজানঃ আমি তো জেনেশুনে ছিলাম না হিয়া!

হিয়াঃ আমি জানি,এতে আপনার কোনো দোষ নেই,,আমি এটাও জানি ওটা একটা এ্যাক্সিডেন্ট ছিলো,,আপনার মা বা বাবা ইচ্ছে করে কাজ টা করে নি,,কিন্তু শ্রাবণ তো ছোট মানুষ ওর মনে কিছু এসেও থাকলে সেটা আমি বা আপনি কিন্তু হাজার চাইলেও ভুলিয়ে দিতে পারবো না,,তাই আমি চাই আজকের পর থেকে এ-ই কথা গুলো এখানেই দাফন হ’য়ে যাক,,এ-ই চার দেওয়ালের বাহিরে কথা গুলো যেনো আর কারো কাছে গিয়ে না পৌঁছায়,আর কারো কাছে না,,

উজানঃ হিয়া আমি,,তুমি আমাকে ক্ষমা করেছো তো আগে সেটা বলো?

হিয়াঃ ভূল যদি করতেন তাহলে তো ক্ষমার প্রশ্ন আসতো,,আপনি তো আমায় ভালোবেসে ছিলেন আজো বাসেন,,তাই ক্ষমার প্রশ্নই বা এখন আসছে কিসের জন্য??

উজান হিয়াকে কি বলবে, কি উওর দিবে,কি প্রশ্ন করবে সব ভাষা হারিয়ে ফেলে,,কথা গুলো গলার কাছে দলা পাকতে শুরু করে তার,,এই মুহুর্তে দু’জনের চোখের পানি নাকের পানি এক হ’য়ে যা তা অবস্থা হ’য়ে যাচ্ছে সেদিকে কারো হুঁশ নেই,,উজান হিয়ার মাথা টা নিজের বুকের ঠিক মধ্যে খানে রেখে নিজের সব শক্তি দিয়ে চেপে ধরে নেয়,,উজানের হৃৎপিণ্ডের জোড়ালো শব্দ কানে বাজতে থাকে হিয়ার,,হিয়া নিজের সর্বস্ব দিয়ে উজানকে তার দু হাতে আঁকড়ে ধরে,,

উজানঃ I am sorry হিয়া,,I am sorry,,খুব কষ্ট হচ্ছিলো তোমাকে আর শ্রাবণকে ছাড়া থাকতে খুব খুব,,মনে হচ্ছিলো আমার গলা কেউ চেপে ধরে রাখছে,,আমি রাতে ঘুমোতে পারতাম না চোখ বন্ধ করলেই তুমি আর শ্রাবণ

হিয়াঃ আর না উজান,,আমি আর কাঁদতে চাই না,,আমি ক্লান্ত,,কাঁদতে কাঁদতে আমার চোখ দুটো ব্যাথা হয়ে গেছে,আমি আর কাঁদতে পারবো না উজান,আর না,

উজানঃ আর কখনো তোমাকে আমি কাঁদতে দেবো না,,তোমাকে ছুঁইয়ে কথা দিচ্ছি আর কখনো আমি তোমাকে কষ্ট পেতে দেবো না,,কখনো না,,

উজান কিছুক্ষণ হিয়াকে ওভাবে জড়িয়ে ধরে রাখে,,হিয়াও আজ এতোদিন বাদে উজানের বুকের উষ্ণতা পেয়ে আরো গুটিশুটি হয়ে উজানকে চিপে ধরে,,

হিয়াঃ আমাকে ক্ষমা করে দিও মা,,আমার মন আমাকে যা করতে আদেশ করলো আমি তাই করলাম,,উজানের বাবা-মা যেমন পরোক্ষ ভাবে এ-ই ঘটনার সাথে জড়িত ছিলো ঠিক তেমনি উজানের বাবা কিন্তু সেদিন শ্রাবণকে ঔ মুহুর্তে রক্ত দিয়ে আমাদের বাচ্চাটকে বাঁচিয়ে ছিলেন,আমাকে আর শ্রাবণকে তার রক্ত দিয়ে ঋণি বানিয়ে দিয়েছিলেন উনি,,মা আমি আর কাঁদতে পারবো না,,আমার কাঁদতে খুব কষ্ট হয় এখন,,মা তুমি বাবাকে বুঝিয়ে বলো তার হিয়া তাদের সাথে কোনো অন্যায় করে নি,,তোমরা আমাকে ক্ষমা করে দিও!!

উজানঃ কি ভাবছো হিয়া?

উজানের প্রশ্নে হিয়া উজানের বুক থেকে মুখ তুলে স্নিগ্ধ চোখে উজানের চোখের দিকে চায়,

হিয়াঃ কিছু না,,আপনাকে না একটা জিনিস জানানো হয় নি আমার,,

উজানঃ জানানো হয় নি!কি জিনিস?

হিয়াঃ এক মিনিট!

হিয়া এক দৌড়ে রুমের ওয়াশরুমে গিয়ে ওর পরশুরাতে করা প্রেগন্যান্সি টেস্টের স্টিপ টা নিয়ে এসে উজানের হাতে ধরিয়ে দেয়,,উজান প্রথমে অবাক হলেও পরে ভেজা চোখ গুলো ফ্লোড করা শার্টের হাতা দিয়ে ভালো করে মুছে দেখতে থাকে এটা আসলে কি,,ঘটনা বুঝে আসতেই উজান একটা খুশির ধাক্কা খায় বুকে,,মানে সে আর হিয়া আর কিছুদিন পর,,!!

উজানঃ এটা কি হিয়া!এটা সত্যি যে,

হিয়াঃ হুম আপনি যাবার কিছুদিন থেকেই আমার প্রেগন্যান্সির সিম্পটম গুলো দেখা যাচ্ছিলো,,তাই সেদিন গুনগুনকে পড়িয়ে বাড়ি ফেরবার সময় আমি এটা কিনে নিয়ে এসে ঔ রাতে,,আর কাল ডক্টররা,,

উজানঃ এটা সত্যি হিয়া,,সত্যি সত্যি আমরা!

হিয়া মুখে এক বালতি হাসি টেনে হুম বলতেই উজান কি করবে না করবে দিশা খুঁজে না পেয়ে ঘপ করে হিয়াকে কোলে তুলে নিয়ে ঘুরতে শুরু করে,,

উজানঃ এ-ই মুহুর্তে দাঁড়িয়ে এরকম একটা surprised gift আমি ভাবতেই পারিনি হিয়া,I am so happy হিয়া I am so so so happy,,

হিয়াঃ হয়েছে হয়েছে নামান এখন কোল থেকে,,বাবু টা কষ্ট পাবে তো,,উজানন,,

উজান হিয়াকে কোল থেকে নামিয়ে বুকের সবটা দিয়ে হিয়াকে নিজের বুকে আগলে নেয়,,

উজানঃ এ-ই এতো কিছুর মাঝে এ-ই কথাটা আমার মন টাকে কতো টা ভরিয়ে দিয়েছে আমি তোমাকে সেটা বলে বুঝাতে পারবো না হিয়া,,মেঘলা আকাশে হঠাৎ কখনো রামধনু উঠলে যেরকম আনন্দ লাগে এ-ই মুহুর্তে ঠিক সেই আনন্দ টা-ই হচ্ছে আমার জানো,,

হিয়াঃ হুম জানি তো,,আমার কি কম খুশি লাগছে,,

উজান এক এক করে হিয়ার পুরো মুখে চুমু আঁকতে থাকে,,দু’জনের এই প্রেমের উষ্ণতার মাঝে সন্ধি খুক খুক করে কেশে দিয়ে রুমে ঢুকে,,উজান হিয়াকে বুক থেকে ছাড়িয়ে দিয়ে চোখ দুটো শার্টের হাতা দিয়ে আরো ভালো করে মুছে নেয়,,

সন্ধিঃ আমরা ওদিকে টেনশনে শেষ হয়ে যাচ্ছি আর এদিকে এদের দু’জনকে দেখো,,তা আমি কি হবো আন্টি ফুফু না খালা?কোনটা?

সন্ধির কথায় উজান হিয়া দু’জনে লজ্জা পেয়ে যায়,বাসবি এসে হিয়ার সামনে দাঁড়িয়ে কি দিয়ে কথা শুরু করবে বুঝতে পারে না,হিয়াই সব নিরবতা কাটিয়ে সব সংকোচ বোধ দূর করে বাসবিকে নিজের বুকে আগলে ধরে,,বাসবিও হিয়ার মাথায় হাত রেখে এবার অঝোরে কেঁদে দিয়ে হিয়ার থেকে বারবার ক্ষমা চাইতে শুরু করে,,
!
!

হিয়া সবকিছুকে সেদিন ঔ চার দেওয়ালের মাঝে পুঁতে রেখে জীবনটাকে আরো একটা সুযোগ দিতে সবাইকে ক্ষমা করে দেয়,সে যে কিছুতেই আর কাঁদতে পারবে না,তার ইদানীং কাঁদতে কষ্ট হয়,খুবই কষ্ট,তার তো এখন উজানকে ছাড়া বাঁচতে কষ্ট হয়,,মনে হয় বেঁচে থেকেও কিসের একটা অভাববোধ তাকে তাড়া করতে থাকে,,এ গল্পে তো উজান হিয়ার মেঘলা আকাশের রামধনু ছিলো,,এ-ই রামধনু টা ছাড়া যে শুধু হিয়া না শ্রাবণো বেরঙীন হয়ে একটা সময় হয়তো বিলীন হয়ে যেতো,,

আজ এক সপ্তাহ পরঃ

এ-ই এক সপ্তাহ বাসবি আর সন্ধি হিয়া আর উজানের সাথে উজানের বাড়িতেই ছিলো,,তাই এদের থাকাকালীন উজান হিয়ার সাথে ঠিক করে কথাটা বলে উঠতে পারে নি,,আজ সকালের ফ্লাইটে উজান ওর মা’কে রংপুরের জন্য এ্যায়রপোর্টে পৌঁছে দিয়ে বাড়ি আসে আজ রাত ক্লাস নেই,,আর সন্ধিকে বাসে তুলে দিয়ে হিয়া যায় ওর ক্লাসে,,উজান চেয়েছিলো হিয়াকে নিজে গিয়ে নিয়ে আসতে কিন্তু হিয়া বলে থাক আপাতত প্রথম কয়েকটা মাস সে একাই ম্যানেজ করতে পারবে,,

ব্যাগ ভর্তি বই নিয়ে বাড়ি ফিরে হিয়া,,উজান হিয়াকে এক গ্লাস পানি ধরিয়ে দিয়ে হিয়ার আনা বই গুলো নাড়াচাড়া করতে থাকে,,এদিকে হিয়া তখন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ওর হাতের চুড়ি গুলো খুলো চুল গুলো খোঁপা করতে রাবার ব্যান্ড খুঁজ ছিলো,,

উজানঃ বাহ বা ম্যাডাম আজ বিসিএসের বই নিয়ে আসছে দেখছি,,আমার জানা মতে তো ম্যাডামের বিসিএসের প্রতি আগ্রহ ছিলো না,,তাহলে?

হিয়াঃ আগ্রহ ছিলো না কিন্তু এখন আছে,,আপনাকে আমি ক্ষমা করেছি মানে এ-ই নয় যে সেদিন আপনি আমার সাথে কি ব্যবহার করেছিলেন আমি সব ভূলে গেছি,,সেদিন আপনি আমার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন,,বলেছিলেন আমার না-কি কোনো যোগ্যতা নেই উজান শাহরিয়ার এর ওয়াইফ হবার,,মনে পড়ে সে সব কথা?

উজানঃ আমি কিন্তু সেদিন একটা কথাও মন থেকে বলিনি হিয়া!

হিয়াঃ মন থেকে বলেন আর পরিস্থিতির চাপে পড়ে,,কথা গুলো আপনার মুখ দিয়েই বেড়িয়েছিলো তো,,,,আপনি সেদিন আমাকে আপনার কথা দিয়ে খুব আঘাত দিয়েছিলেন খুব খুব খুব,শুধু আমি সেই কষ্ট টুকু কাউকে বুঝতে দেই নি,,একজন স্ত্রীর কাছে নিজের স্বামীর থেকে এসব কথা শোনাটা যে কতোটা যন্ত্রণাদায়ক সে আপনি কখনো বুঝবেন না,,এর জন্য আমি আপনাকে কখনো ক্ষমা করবো না,,

উজান এসে হিয়াকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে হিয়ার কাঁধে মুখ রাখে,,

উজানঃ Sorry!

হিয়াঃ আপনার এসব সরি আপনি মিক্সারে গুলিয়ে জুস বানিয়ে খান,,আপনার এসব সরিতে আমার কষ্টটা কখনো লাঘব হবে না,,আপনি জানেন আপনার প্রত্যেকটা কথা আমার মনে কাটার মতো বিধে ছিলো তাই আমি ঠিক করেছি আমি বিসিএস দেবো,,পাই পাই না পাই,,আপনার থেকে বড় পোস্টে জব করবো,,যাতে কখনো আপনি আমাকে বলতে না পারেন আমার কোনো যোগ্যতা নেই,হু

উজানঃ ঠিক আছে রে বাবা,,কতো ইগো না তোমার হিয়া,,আমি তো বলছি আমি একটা কথাও মন থেকে বলিনি,,আমি তো জানি আমার হিয়া কতোটা পারফেক্ট আমার জন্য,,

হিয়াঃ এখন আমাকে বাগিয়ে না লাভ নেই,,আমার মন এ-তো সহজে গলে গিয়ে সব ভুলে যাবে না,,আপনার থেকে এক পয়সা বেশি হলেও আমি সেটা রোজগার করে দেখাবো আপনাকে,,এ-ই আমি বলে রাখলাম,,আপনি আমার আত্মসম্মানে আঘাত দিছেন কম কথা!

উজানঃ ইসস রাগে গাল গুলো পুরো লাল হ’য়ে টমেটোর মতো হ’য়ে যাচ্ছে তো দেখি,,আচ্ছা ঠিক আছে,,তুমি জব করলে আমি আমার কাজ টা ছেড়ে দিয়ে সারাদিন বাড়িতে বসে শ্রাবণ আর আমাদের বাচ্চার দেখাশুনা করবো আর তুমি বসে বসে আমাকে খাওয়াবে,,,আর বলবে স্ত্রীর টাকাতে খান লজ্জা করে না আপনার,,তখন হিসাব কাটাকুটি হ’য়ে যাবে,,ডিল?

হিয়াঃ যান তো,,ওলয়েজ ফাজলামো,,আমার ক্ষুধা লাগছে খুব,যান গিয়ে ভাত বসিয়ে দিয়ে আসুন,,কুইক

উজানঃ আমার মেয়ে টাকে শুধু আসতে দেও না,, তারপর তোমার এসব অর্ডার আমি কচু শুনবো,,

হিয়াঃ সরি টু ছে আমাদের ছেলে হবে আর সেটা ঠিক আপনার মতোই হবে,,

উজানঃ দিবাস্বপ্ন দেখা বাদ দিন মিসেস শাহরিয়ার,,আমাদের মেয়ে হবে আর আমি তার নামো ঠিক করে রাখছি,,

হিয়াঃ কি!!

উজান হিয়াকে ঘুরিয়ে ওর বুকে এনে জড়িয়ে ধরে,,

উজানঃ কি না হুম,,

হিয়াঃ কি নাম শুনি?

উজানঃ কি নাম?___কি নাম কি নাম কি নাম?

হিয়াঃ আহা বলুন তো?

উজানঃ বলছি,,আমাদের মেয়ের নাম হবে হিয়ান,, হিয়া উজানের হিয়ান,,সুন্দর না?

হিয়াঃ হিয়া+উজান=হিয়ান,,একদমই সুন্দর নাআআ,,,,,,,,,অনেক অনেক অনেক সুন্দর!!

উজানঃ জানি তো আমাদের চিহ্ন আমাদের হিয়ান,,

হিয়াঃ হুমম কিন্তু ছেলে হলে তার কি নাম রাখবেন সেটা ঠিক করেন নি?

উজানঃ আমি যখন জানি মেয়ে হবে তখন ছেলের নাম ঠিক করে আমি কি করতাম,,

হিয়া কপট রাগে উজানের বুকে একটা কিল মারে আর হঠাৎই উজান ওর বুকে হাত দিয়ে কিরকম একটা চিৎকার করে উঠে,,

হিয়াঃ কি হয়েছে লাগলো,,দেখি__খুব ব্যাথা লাগছে কি, আমি তো আস্তে মারলাম,,দেখি

উজানঃ না ঠিক আছি আমি,,কিছু হয়নি,,আরে হিয়া আমি ঠিক আছি পাখি

হিয়াঃ না আপনি কেমন জানি একটা করলেন,,দেখি আমাকে দেখতে দিন,,দিন বলছি,আরে

উজান হিয়ার জোরাজুরির সাথে পারে না,,হিয়া জোড় করে উজানের শার্ট খুলে উজানের বুকে কি হয়েছে সেটা দেখতে চেষ্টা করে,,উজান এতো বলছে কিছু হয়নি কিছু হয়নি তার পরো হিয়া শুনতে চায় না,,এদিকে শার্ট নিয়ে টানাটানির এক পর্যায়ে হিয়া উজানের শার্ট টা খুলে দিতেই হিয়ার চোখ আঁটকে যায় উজানের বুকের বা দিকটার কাছে,,হিয়া থমকে দাঁড়িয়ে যায়,,কি এটা উজানের বুকে,,হিয়া হাত বাড়িয়ে উজানের বুকের ঔ ক্ষত টার মধ্যে হাত রাখতেই কেঁপে ওঠে,,উজানের বুকের ঔ জায়গাটাতে স্পষ্ট করে ইংলিশ অক্ষরে লেখা আছে হিয়া,,দেখেই বুঝা যাচ্ছে এগুলো সিগারেট দিয়ে করা,,হিয়ার চোখ দিয়ে হিয়ার অজান্তেই কখন যে চোখ দিয়ে পানি পড়তে শুরু করে হিয়ার সে খেয়াল নেই,,হিয়া অবাক দৃষ্টিতে উজানের চোখের দিকে তাকিয়ে উঠে উজানকে চোখের ভাষায় প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয় এগুলো কি!উজান হিয়ার চোখের পানি টা মুছে দিয়ে হিয়াকে ওর বুকের ডান দিকে নিয়ে হিয়ার মাথাটা একদম চিপে ধরে,,

উজানঃ কষ্ট হচ্ছিলো এ-ই পিচ্চি টাকে ছাড়া থাকতে,খুব কষ্ট হচ্ছিলো,তোমাকে সেদিন ঔ কথা গুলো বলাতে তুমি যতোটা না কষ্ট পাইছো তার চাইতে হাজার হাজার গুন বেশি কষ্ট আমি পাইছি,মনে হচ্ছিলো বুক টা ছিঁড়ে দু টুকরো করে মন টা তোমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলি সেগুলো একটাও আমার মনের কথা ছিলো না,,আমি তোমার চোখে ছোট হতেই এ-ই কথা গুলো সেদিন

হিয়ার মুখ আপাতত বন্ধ হয়ে আছে,কি করে কথা বলতে হয় যেনো সে জানে না,,হিয়া ওর একটা হাত তুলে উজানের বুকের ঔ নামের জায়গা টায় আলতো করে ওর হাত টা রাখে,,

উজানঃ খুব ভালোবাসি হিয়া তোমায়,খুব,বারবার ঔ মুখে বলে ভালোবাসি জিনিস টা আমি জাহির করতে পারি না কিন্তু আমার মন জানে তুমি আর শ্রাবণ আমার জন্য ঠিক কতোটা কি গুরুত্ব রাখো,,কতো টা!!

!
!
!
!

একটা ঝড় সামলে নিয়ে;

উজানের যত্ন শ্রাবণের ভালোবাসা আর প্রায় প্রায় উজানের মা বোনরা এসে হিয়াকে দেখেশুনে রাখা,,নিয়মিত সন্ধি সহ বাকি সবার ফোনে খোঁজ নেওয়া সব মিলিয়ে জীবনটা আবার নতুন গতিতে চলতে শুরু করে,,হিয়ার মনে এখন শুধু একটাই দোয়া আর কোনো ঝড় আর কোনো বিপদ যেনো তাদেরকে এ-ই মুহুর্তে ছুঁয়ে না যায়,এ-ই মুহুর্তে না আর কোনো ঝড় যেনো আর কখনোই তাদের জীবনে না আসে, অনেক সহ্য করেছে তারা,ঝড়ের পরে প্রকৃতি শান্ত হয়ে যেই খড়কুটো গুলো পড়ে থাকে সেটা নিয়ে এতোদিন অনেক বেঁচে থাকতে চেষ্টা করেছে কিন্তু এরপর আর ঝড় আসলে সেটাও করার শক্তি হিয়ার মাঝে এখন নেই,,

!
!

হিয়ার প্রেগন্যান্সির এখন পাঁচ কি সাড়ে পাঁচ মাস চলছে,,অন্তঃসত্ত্বার চিহ্ন গুলো হিয়ার শরীরে এখন স্পষ্ট,,হিয়াও কি রকম একটা মোটাসোটা হ’য়ে গুলুমুলু দেখতে হয়েছে,,অনেক কিউট,আর তার কিউটনেসের অভার ডোজের সাথে সাথে বাড়ছে উজান আর শ্রাবণের পাগলামির অভার ডোজের পরিমাণ,,তারা যে খুশিতে কি থেকে কি করছে, কি করবে কারোই কোনো হুঁশ নেই!এদের নিত্যদিনের এ-ই পাগলামি গুলো হিয়াকে জ্বালিয়ে শেষ করে পুরো,,

হিয়াঃ আহ শ্রাবণ কি হচ্ছে,,কতো চুমু খাও পেটে আমার,একটু আগে তো বাবুকে আদর করে গেলে,,তাও হয় না

শ্রাবণ ওর ছোট ছোট হাত দুটো দিয়ে হিয়ার পেট বুলে দিয়ে আবার চুমু খায়,,শ্রাবণের সাথে কিছুক্ষণ বাদে যোগ দেয় উজান নিজেও,,এদের সবসময়ের এ-ই একই কাজে হিয়া বিরক্ত হেনস্ত নাজেহাল,,

হিয়াঃ শ্রাবণ,,আমি রাগ হচ্ছি কিন্তু,,

শ্রাবণঃ আর একটু বুবু,আর একটু

হিয়াঃ বাবু কষ্ট পাবে তো,,উজানন আপনি তো ওফ যান,,আমার বাবুটার লাগবে না,,

উজানঃ আরে আমরা তো আদর করছি লাগবে কিসের জন্য শুনি,,

হিয়াঃ ধ্যাত,,এ-ই দেখি ছাড়ো এখন,,শ্রাবণ বাবু ঘুমাচ্ছে এরকম করলে কিন্তু কান্না করে দিবে,,

শ্রাবণঃ বাবু টা কবে আসবে আর ভাইয়া,আমি কবে বাবু টার সাথে খেলবো,আমার যে আর ভালোই লাগচে না,বাবু সোনা বাবু আয় না বাহিরে,আমার মিষ্টি বাবু

হিয়াঃ তোমরা এরকম করলে বাবুকে আর আমি বেরই করবো না পেট থেকে এ-ই বলে রাখলাম,দেখি যাও বই নিয়ে এসে আমার পাশে পড়তে বসো,,,,,কি হলো যা-ও (চোখ রাঙিয়ে)

হিয়ার চোখ রাঙানো দেখে শ্রাবণ ফুট করে দৌড়ে ওর বই আনতে ওর রুমে যায়,,শ্রাবণ আসতেই উজান হিয়ার শাড়ির আঁচল টা সরিয়ে আরো পাঁচ ছয়টা চুমু এঁকে দিয়ে হিয়ার কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে দেয়,,

উজানঃ আজকে কিন্তু চেক আপের ডেট আছে বিকালে,আমি জলদি জলদি ফিরে আসবো তুমি রেডি থেকো,,

হিয়াঃ হুম থাকবো,,এখন কি যাবেন আপনি ভার্সিটি,,যান নাআআআআ

উজান তাও যাচ্ছে না দেখে হিয়া উঠে টানতে টানতে উজানকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়,,উজান তো নিরুপায় তাকে তো আবার ভার্সিটি না গেলেই নয় আজ,,,হুম

দেখতে দেখতে হিয়ার প্রেগন্যান্সির প্রায় সাত মাস হয়ে আসলো,সচরাচর প্রেগন্যান্সির এই সময় গুলোতে মেয়েদের যেই সমস্যা গুলো ক্রিয়েট হয় তার খুব একটা হিয়ার মাঝে দেখা যায় নি,,না কোনো মুড সুইং না অরুচি না খুব একটা বমি বমি ভাব,,বলা চলে হিয়া তার অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় বাড়ির কাউকে তেমন খুব একটা জ্বালায়নি,,উল্টে শ্রাবণ আর উজান বারবার এসে হিয়াকে বিরক্ত করে গেছে,একটু পর পর এসে তাদের ঔ হিয়ার পেটে চুমু খাওয়া চাই চাই,,এরা দুজন যে কি পায় হিয়ার ঔ পেট টা নিয়ে বারবার নাড়াচাড়া করে উপর মাবূদ ই ভালো জানেন,,সব ঠিক থাকলেও শেষের এই দেড়টা মাস হিয়ার মাঝে দেখা যায় ব্যাপক মুড সুইং,,অল্পতে বিরক্ত লাগা,কিছু খাওয়াতে অরুচি একদম যেনো হিয়ার শিরায় শিরায় ভর করে ফেলে,এ-ই বলছে খাবে তো ঔ বলছে খাবে না,এ-ই বলছে বাহিরে হাঁটতে যাবে তো ওমনি সে শুইয়ে পড়ছে,,শেষের দিকের এ-ই ঘন ঘন মুড চেঞ্জে হিয়া নিজেও নিজের উপর যেনো এতো এতো বিরক্ত,,

রাত তখন ২টোর কাছাকাছি,,হিয়াকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে ছিলো উজান,কিন্তু হিয়ার চোখের আশেপাশে আনাচে-কানাচে কোথাও নেই এক ফোঁটা ঘুমের ছিটেফোঁটা,,রাগে দুঃখে হিয়ার মেজাজ এখন পুরো বিগড়ে,,এতোই রাগ পাচ্ছে যে হিয়া ওর গায়ে রাখা উজানের হাত টা দুম করে নিচে সরিয়ে দেয়,এ-ই হাতের ভার টাও যেনো খুবই অসহ্য লাগছে তার,,হাত টা নামিয়ে দিতে উজানের ঘুম ভেঙে আসে,,উজান চোখ টা খুলে হিয়ার দিকে এগিয়ে আসে হিয়ার কিছু লাগবে কি না সেটা জানার জন্য,,

উজানঃ কি হলো?

হিয়াঃ কিছু না,আপনি ঘুমোচ্ছিলেন না ঘুমোন,,

উজানঃ পানি খাবে?

হিয়াঃ না,, সারাদিন তো খাওয়ার উপরই থাকি,খাচ্ছি ঘুমোচ্ছি,ঘুমোচ্ছি খাচ্ছি,,

উজানঃ আরে তুমি এভাবে কেনো কথা বলছো?

হিয়াঃ আমার কথা বলতেই ভালো লাগছে না,আপনি ঘুমোচ্ছিলে না ঘুমোন তো,,

উজানঃ (চোখ টা হালকা কচলে নিয়ে) হুম বুঝতে পেরেছি কি হয়েছে!,এসময় এটা হওয়া খুবই ন্যাচারাল

হিয়াঃ ন্যাচরাল!

হিয়ার মেজাজ এমনিতে খিটখিটে হয়ে আছে তার উপর উজান বলছে এরকম হওয়াটা নাকি ন্যাচারাল,হিয়া কপট রাগ দেখিয়ে উঠে বসে,,হিয়ার সাথে উজানো উঠে হিয়ার পাশে বসে হিয়ার দু কাঁধে দুটো হাত রেখে হিয়াকে শান্ত করতে চেষ্টা করে,,

হিয়াঃ কি হয়েছে হ্যা,কোনটা ন্যাচারাল!

উজানঃ এ-ই যে এখন যেটা তোমার হচ্ছে,মুড সুইং,,আচ্ছা তুমি আমাকে এখন বলো কি করলে তোমার ভালো লাগবে,আমি ভাবছিলাম ঘরটা যদি একটু অন্যভাবে সাজিয়ে দেই,মানে বেবি পোস্টার কালারফুল টয়েস ইউ নো

হিয়াঃ আপনি একজন টিচার মানুষ হয়ে এসব কি করে বলছেন,আপনার মনে হয় এসব করলে আমার ভালো লাগবে,,

উজানঃ তুমি এতো এক্সাইটেড কেনো হয়ে যাচ্ছো হিয়া,,দেখো এসব ঝগড়াঝাঁটি রাগারাগি কিন্তু আমাদের বাচ্চা কে ইমপেক্ট করবে,,

হিয়াঃ আমার না কিছু ভালো লাগছে না,শরীর খারাপ লাগছে,পেটে ব্যাথা করছে,কিছু খেলে আমার বমি পায় শুতে গেলে আমার ঘুম আসে না,তার উপর আপনি বকবক করছেন,বকবক করে করে আমাকে আরো ইরিটেট করছেন

উজানঃ আচ্ছা আচ্ছা হিয়া হিয়া,,কাম ডাউন কাম ডাউন,এটা সত্যি,এটা সত্যি যে আমি বললেও তোমার কী কষ্ট হচ্ছে সেটা পুরোপুরি বুঝে উঠতে পারবো না,আমার পক্ষে সম্ভব নয়,,কিন্তু আমি চাই তুমি খুশি থাকো,আর তুমি যা চাও সেটা না বললে তো আমি

হিয়াঃ হুমম ফ্রিজারে কি আইসক্রিম হবে?

হিয়া জিহ্ব দিয়ে ওর ঠোঁট টা কামড়ে নিয়ে উজানের থেকে এ-ই হঠাৎ মুমেন্টে আইসক্রিম খাবার বায়না করলে উজান পুরো থ বনে যায়,,একটু আগে যে মেয়ে বলছিলো তার কিছু খেলে বমি পায় এখন সে খাবে আইসক্রিম!

উজানঃ আইস—ক্রিম!!আইসক্রিম তো বোধ হয় নেই,,

হিয়াঃ চকলেট,প্রেস্টি,কেক কিছু একটা আছে?

উজানঃ আমি,, আমি কাল এনে দিচ্ছি,,

হিয়াঃ আমার খিদে পেয়েছে এখন,খেতে ইচ্ছে করছে এখন,,আপনি আনবেন কালকে,এ-ই শুনুন নেক্সট টাইম হতে না আপনি একদম আমাকে জিজ্ঞেস করবেন না,আমার কি চাই,কি পেলে আমি খুশি হবো,

উজানঃ(একটু ভেবে নিয়ে)আচ্ছা ঠিক আছে চলো,

হিয়াঃ হু কোথায়?

উজানঃ চলো আইসক্রিম খেতে,,

হিয়াঃ এ-ই মাঝরাতে,,

উজানঃ হ্যা চলো উঠো,,

উজান হিয়াকে নিয়ে তার মা শ্রাবণ সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে গাড়ি নিয়ে বাহিরে আসে,কিন্তু এ-ই মাঝরাতে সে এখন কোথায় আইসক্রিম খুঁজবে উপর মাবূদ ই ভালো জানেন,একটা দোকান যদি খোলা থাকে,উজানের বাইকের গায়ে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে হিয়া,আর উজান এপাশ ওপাশ দেখে খুঁজছে আইসক্রিমের দোকান,কিন্তু আপসোস এদিকের দোকান গুলোও সব বন্ধ,,এমনিতে মাঝরাত তার উপর এই রাতের অন্ধকার আর হিয়ার এই অবস্থায় কোনো ভাবে হিয়াকে নিয়ে বাহিরে থাকা একদম ঠিক বলে মনে হচ্ছে না উজানের,কিন্তু হিয়াকে আইসক্রিম না খাওয়ালেও তো নয় এই সাত আট মাসে প্রথম হিয়া নিজে থেকে কিছু খাবার জন্য বায়না করলো তার কাছে!!

হিয়াঃ শুধু শুধু আমাকে নিয়ে এ-ই মাঝরাতে আপনি বের হলেন,আছে কোনো দোকান খুলা এখন,হুদাই আমাকে নিয়ে আসলো

উজানঃ তুমি এরকম রেগে যাচ্ছো কেনো হিয়া,আমি ভাবলাম একটা দোকান যদি খোলা পাই তাই জন্য,

হিয়াঃ হয়েছে না দেখা,মন ভরে গেছে,,,,আমাকে নিয়ে এক্ষুনি বাড়ি চলুন, মা যদি জানতে পারে এ-ই অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় আপনি এ-ই মাঝরাতে আমাকে নিয়ে বেড়িয়েছেন আপনাকে তো খুন করবে করবে আপনার পাশাপাশি আমাকেও বকুনি দিয়ে শেষ করে ছাড়বে,,

উজান নিরুপায় হয়ে হিয়াকে নিয়ে বাড়িতে ফিরে আসে,,আইসক্রিম না খাবার দুঃখ এখন আর হিয়া রাখে কোথায়,,সব রাগ গিয়ে ফেটে পড়ে তার উজানের উপর,,হিয়ার চোখে নেই এক ফোঁটা ঘুম,,হিয়া ব্যালকুনিতে এসে দাঁড়িয়ে যায়,,না আজকে আর ঘুম হবে না তার,,

এদিকে হিয়া আজ এতোদিন বাদে নিজে উজানের কাছে কিছু চেয়েছে উজান কি তা না দিয়ে থাকতে পারে,,উজান আলতো পায়ে রান্নাঘরে আসে দুধপাউডার চিনি মধু বাদাম যা যা লাগে আইসক্রিম বানাতে সব আস্তে আস্তে করে তাক থেকে নামায়,,আর ফ্রিজ থেকে আইসক্রিম বানার বাটি গুলো নিয়ে এসে বানিয়ে ফেলে উজানের স্পেশাল হাতের স্পেশাল আইসক্রিম,,ড্রিপ ফ্রিজে পাওয়ার বাড়িয়ে দিয়ে আধা ঘন্টার মধ্যেই তৈরি হয়ে আসে সেই আইসক্রিম,,উজান ওগুলো নিয়ে একটা বাটিতে খুব সুন্দর করে ডেকোরেশন করে নেয়,,উজান যতোটা খারাপ হবে ভেবেছিলো আইসক্রিম গুলো ঠিক ততোটাই টেস্টি হয়েছে খেতে,,

উজান ব্যালকুনিতে এসে হিয়ার পেছনে দাঁড়িয়ে যায়,আলতো করে হিয়ার ঘাড় থেকে চুল সরিয়ে দিয়ে হিয়ার খোলা পিঠে একটা চুমু আঁকে,,

উজানঃ পিচ্চি টাকি খুব রেগে আছে আমার উপর আইসক্রিম খাওয়াতে পারি নি বলে

হিয়াঃ হুম খুব রেগে আছে খুব খুব,,

উজানঃ হুমম,,তো ম্যাডামের এই রাগ টা কমিয়ে দিলে ম্যাডাম আমাকে কি দেবে শুনি,,

হিয়াঃ আগে কমিয়ে তো দেখান,,দেখলেনই তো বাহিরে গিয়ে সব দোকান বন্ধ,আর এ-ই মাঝ রাতে ফুড পান্ডাও আপনাকে আইসক্রিম বাড়ি বয়ে এসে দিয়ে যাবে না হু,,

উজান আর কিছু না বলে ওর হাতে ধরে থাকা বাটি টা হিয়ার সামনে ধরতেই হিয়া চোখ বড় করে তাকিয়ে উঠে,,আইসক্রিম!!হিয়া টপ করে এপাশে ফিরে খুশিতে উজানের পুরো মুখে চুমু এঁকে দিতে থাকে,,

উজানঃ আস্তে হিয়া পড়ে যাবে তো,,

হিয়াঃ এটা আপনি বানিয়েছেন!!আপনি এ-ই রাতে আমার জন্য___Thank you ujaan thank you thank you thank youuuuuu,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here