স্বপ্নতরী ১

0
800

নীরার মনটা আজ একটুও ভালো নেই।সকালে ঘুম ভাঙার পর সে বুঝতে পারলো স্বপ্নটা জঘন্য ছিল।সে দেখেছে- বিশাল এক সুইমিং পুলে সে 15ফুট উঁচু থেকে জাম্প দিয়েছে।স্টার্টিংটা অসম্ভব সুন্দর ছিল,আনন্দে তাঁর চোখের পাতা কাঁপছিল।কিন্তু পানিতে নামার শেষ মুহূর্তে সুইমিং পুল পানিশূণ্য হয়ে গেল! ঠিক যেমন টম এন্ড জেরিতে হয়।নীরা আতঙ্কের চোটে চোখ খুলে ফেললো।
স্বপ্নের প্রভাবে এমনিতেই মুড অফ ছিল,তার উপর ক্লাসে রাজীব স্যার দাঁড় করিয়ে পড়া জিজ্ঞাসা করলো।নীরা কখনোই মুখে পড়া বলতে পারেনা,নার্ভাসনেসে তাঁর সব এলোমেলো হয়ে যায়।এসএসসির ভাইবাতে তাঁকে যখন সবচেয়ে সহজ নিউটনের থার্ড ল’ বলতে বলা হয়েছিল।সে যেন ভুলেই গিয়েছিল নিউটন নামের কেউ এই পৃথিবীতে ছিল!
শুধুমাত্র এই কারণে সে দারুণ মেধাবী হওয়া সত্ত্বেও ইন্টারে গ্রুপ চেইঞ্জ করে।
ক্লাস থেকে বেরিয়ে ক্যাফেটেরিয়ায় বসে কিছুক্ষণ আঁকিবুকি করা তাঁর রোজকার রুটিন।আজও তার ব্যতিক্রম হলোনা,নীরার ফ্রেন্ড পুজা আর রিমি কফি খেতে খেতে আড্ডা দিচ্ছে।ঐদিকে নীরার একটুও ভ্রুক্ষেপ নেই,সে আপনমনে কিসব এঁকে যাচ্ছে।
রিমি বললো, ফিজিক্স ডিপার্টমেন্টের টপার আলিফ এর খবর শুনেছিস?
পুজা–আবার কি খবর বের হলো?সে তো দুইদিন পরপর অন এয়ারে চলে আসে।
–এবার তো সাংঘাতিক ঘটনা ঘটিয়েছে।ফ্রেশার মেয়ে একটা গিয়ে সবার সামনে তাঁকে প্রপোজ করেছে।সেই অপরাধে মেয়েটাকে দিয়ে ক্যান্টিন পরিষ্কার করিয়েছে।বেচারি লজ্জায় কেঁদেকেটে কি এক অবস্থা।
–এখানে বেচারির কি আছে?এমন পাকনামী করতে গেছিল কেন?নতুন ভার্সিটিতে উঠলেই পিঠে পাখা গজায়! একদম ঠিক করেছে আলিফ।
–তুই বেশি নিষ্ঠুর।ওর কি দোষ এমন ছেলে দেখলে পছন্দ হবেনা তো কি?দেখে বোঝার উপায় আছে এমন ইনোসেন্ট চেহারার পেছনে রাগী দৈত্য লুকিয়ে থাকে?
নীরা ঠান্ডা কফি এক চুমুকে শেষ করে বললো,তোদের কি আর কোনো কাজ নাই?সারাক্ষণ পরের সমালোচনা নিয়ে বসে থাকিস।এদিকে পরীক্ষা যে দরজায় টোকা দিচ্ছে সেই খবর আছে?আমার তো কিছুই ভালো লাগছেনা।পড়াশোনা আর ভাল্লাগেনা,,,
পুজা হেসে বললো,বিয়ে করে ফেল।বরের সাথে ঘুরবি,সংসার সামলাবি ,বাচ্চা হবে। আমরা ফুল- চকোলেট নিয়ে তোদের দেখতে যাবো।দারুণ মজা হবে কি বলিস?
রিমি–তুই আর মানুষ পাইলিনা।নীরা করবে বিয়ে?অসম্ভব।
নীরা– অসম্ভব ক্যান?আমি বিয়া করতে পারিনা??আমারে তোর কি মনে হয়??
রিমি– শোন দোস্ত বিয়ে করতে কনফিডেন্ট লাগে।সংসার সামলানো অনেক বড় চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার।তোর এই নড়বড়ে কনফিডেন্স দিয়ে এটা হবেনা।
পুজা– আরেহ এখন এমন মনে হচ্ছে।সাপোর্টিং বর পেলে তুড়ি বাজিয়ে এসব সামলে উঠবে দেখিস।দোস্ত দেখব নাকি তোর জন্য ছেলে?কত্তদিন বিয়ের দাওয়াত খাইনা,রাজী হয়ে যা।
নীরা– পড়াশোনা ভাল্লাগেনা কইছি তোরা টাইনা বিয়ে অবধি নিয়ে গেলি।ধুররর থাক তোরা আমি যাই।
রিমি চিন্তিত গলায় বললো,ওর কি হবে বলতো।সবকিছুতে ভাল্লাগেনা ভাল্লাগেনা।ওর অসুখের নামই ভাল্লাগেনা।
নীরা খিটখিট করতে করতে জুতা উল্টে পড়তে পড়তে বেঁচে গেল,ব্যাগের চেইন জোরে লাগাতে গিয়ে ভেঙে গেল।ছাতা খুলে দাঁড়াতেই অসাবধানতাবশত একজনের চুল পেঁচিয়ে গেল।সবমিলিয়ে জঘন্য অবস্থা।নীরার মনে হলো আজকের দিনটাই খারাপ,বের হওয়াই উচিত হয়নি আজকে।

নীরার পুরো নাম ফাহমিদা হক নীরা।তিন ভাইয়ের একমাত্র বোন,সকলের অতি আদরের রাজকন্যা।ছোট থেকেই অল্পতে নার্ভাস হয়ে যাওয়া তাঁর সাধারণ বৈশিষ্ট্য।জীবন নিয়ে প্রচুর সিরিয়াস অথচ কোনো লক্ষ্যই নেই তাঁর।সে এখন অবধি ঠিক করতে পারেনি কি করবে।রোজ তাঁর ঘুম ভাঙে স্বপ্ন দেখে।স্বপ্নের উপর নির্ভর করে তাঁর মুড ভালো বা খারাপ হয়।নীরার মা নূরনাহার মেয়ের এমন কনফিউজিং এটিটিউডে মহাবিরক্ত।সে তাঁকে কতোদিকে ট্রাই করিয়েছে।নাচ গান আর্ট থেকে শুরু করে ক্যারাটে,ব্যাডমিন্টন ,ক্রিকেট কোনোটাই বাদ রাখেন নি।কিন্তু কোথাও সে ভালো কিছু করার উদ্দীপনা দেখায়নি।তাই এক প্রকার হাল ছেড়ে দিয়েছেন তিনি।নীরার বাবা সায়মন সাহেব অবশ্য এদিকে ঠিক উল্টো।তাঁর বিশ্বাস একদিন নীরা মিরাকেল ঘটিয়ে বসবে।এমন কিছু করবে যাতে সবাই চমকে যাবে।
নীরা বাসায় ফিরে দাদীর রুমে গিয়ে বসলো।তাঁর দাদী জাহানারা বেগম নাতনির গোমড়া মুখ দেখে বললেন,আমার বুবুনের কি হইছে?আইজকাও পানির স্বপন দেখছত?
নীরা ঘাড় নাড়িয়ে সম্মতি জানালো।
জাহানারা বেগম আদুরে গলায় বললো,খারাপ খোয়াব আসে শয়তানের পক্ষ থেইকা।যখন দেখবি উইঠা মাত্র বাম দিকে তিনবার থুতু দিবি।কতবার কইছি তোরে রাইতে দোআ কালাম পড়ি শুবি।শুনোছ ই না আমার কথা।
নীরা দাদীর গলা জড়িয়ে বললো,মনে থাকেনা তো।তুমি মনে করাই দিও রাতে।
জাহানারা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,তোরে মনে করাই দিয়াও লাভ নাই।ঠিকই কানে তার দুইটা ঢুকাইয়া ঘুমাবি।
_______

আলিফ বসে আছে তাঁর বাবার অফিসে।একটু আগেই তিনি তাঁকে ফোন করে আসতে বলেছেন।আলিফের বাবা তৌকির আহমেদ নামকরা বিজনেসম্যান।ফ্যামিলি মেম্বারদের সাথে রেগুলার দেখা করার সুযোগ হয়না তাঁর।দুই ছেলের মধ্যে আলিফ ছোট।বড় ছেলে কানাডায় বিজনেস সামলাচ্ছে।আলিফকেও তিনি এই লাইনে আনতে চেয়েছিলেন কিন্ত আলিফের মা আলেয়া ছেলেকে বাপ ভাইয়ের মতো বিজিম্যান বানাতে চাননি।
তৌকির সাহেব মিটিং শেষ করে কানে ফোন রেখে কথা বলতে বলতে কেবিনে প্রবেশ করলেন।কথা শেষ করে আলিফকে বললেন,ক্যাম্পাসে কি করেছ?
আলিফ পেপার ওয়েট ঘোরাতে ঘোরাতে বললো,ক্যাম্পাসের খবর রাখো নাকি আজকাল?
–তুমি জানো মেয়েটা কে ছিল?
–যেই হোক আমার কি!
–তোমার কিছু না?
— নাহ!
–তাহলে আর কি! এই বিষয়ে কথা বলে লাভ নেই।তুমি আসতে পারো ।
–এতোক্ষণ বসিয়ে রেখে আমার টাইম ওয়েস্ট করেছ।ক্ষতিপূরণ দাও
তৌকির সাহেব ড্রয়ার থেকে কিটক্যাটের প্যাকেট বের করে বললেন,জানতাম এটা বলবে তাই আগেই আনিয়ে রেখেছি।
আলিফ হেসে বললো,স্মার্ট!

আলেয়া আইসব্যাগ মাথায় করে বসে আছেন।তাঁর ছেলের কর্মকাণ্ডে তিনি রীতিমতো হাইপার হয়ে যান।দুইদিন পরপর এতো নিউজ আসে তাও মানা গিয়েছিল।এবার কিনা এমপির মেয়েকে দিয়ে ক্যান্টিন ক্লিন করালো!ও কি জেনে বুঝে এসব করে নাকি না জেনেই তা তাঁর বুঝে আসেনা।আলিফের বাবাকে তিনিই ফোন করে জানিয়েছেন।কে জানে ছেলেকে বোঝাতে পারবে কিনা কিছু।যেমন ছেলে হয়েছে তাঁর! বড়টার বেলা এতো টেনশন ছিল না।এই ছেলের জন্য যতো জ্বালা তাঁর।
কেয়ার টেকার মনির এসে বললো,মেডাম আপনি এতো হাইপার হবেন না,আপনার বিপি হাই হবে।প্লিজ শান্ত হোন।
আলেয়ার ইচ্ছে করলো মনিরকে কষিয়ে এক চড় দিতে।হাইপার হবেনা তো কি হবে! এমন ফাজিল ছেলে থাকলে কেউ শান্ত থাকতে পারে??
অবশ্য সবাই জানে আলিফ আসলেই সব ঠান্ডা হয়ে যাবে।সেই অবধি ম্যানেজ করাটাই যতো মুশকিল।
আলিফ বাসায় ফিরে শাওয়ার নিলো।
মনির হন্তদন্ত হয়ে দরজায় নক করে বললো,ছোট সাহেব ম্যাডামের কাছে যাবেন একটু?
আলিফ হেসে বললো,ভালো আছেন?আচ্ছা মনির আপনার বিপি লো নাকি হাই?
মনির চিন্তিত ভঙ্গিতে আলিফের দিকে তাকিয়ে রইলো।এ ছেলের মতিগতি তাঁর বুঝে আসেনা।মায়ের খবর না নিয়ে সে তাঁর বিপির খবর নিচ্ছে!!

সুলতানা রাবার ক্লথ বিছিয়ে আলেয়ার মাথায় পানি দিচ্ছে।আলিফ তাঁর রুমে ঢুকে বললো,মা তোমাকে কতবার বলেছি মেডিটেশন করো।অল্পতে এতো হাইপার হওয়া মোটেও ভালো লক্ষণ না।এই বয়সেই বুড়িয়ে যাচ্ছ টেনশন করে করে।এখনো ছেলেদের বিয়ে করানো বাকি নাতিনাতনির সঙ্গে খেলা করা বাকি এখনই এমন নেতিয়ে পড়লে চলবে?
আলেয়া চোখ গরম করে বললো,আমি বুড়িয়ে যাচ্ছি?তুই দেখেছিস আমাকে?তোর বাবার সঙ্গে কোথাও গেলে কেউ বিশ্বাস করতে চায়না আমি তাঁর ওয়াইফ।আর তুই কি না,,,
সুলতানা আপনি এসব সরান ।এমন পানি ঢেলে ঢেলে কোনদিন যে নিউমোনিয়া বাঁধিয়ে ফেলেন সেই চিন্তায় আছি।

আলিফ টাওয়েল দিয়ে মায়ের চুল মুছতে মুছতে বলল,শোনো মা মানুষের মাঝে শিষ্টাচার বা সামাজিক মূল্যবোধ থাকা খুব জরুরি।এখন সে গরীব হোক বা ধনী।একটা মানুষের সবচেয়ে দামী বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এই চারিত্রিক গুণাবলি।তুমি এমপির মেয়ে শুনেই টেনশনে মরে যাচ্ছ,এখানে টেনশন তোমার না ঐ মেয়ের মা বাবার হওয়ার কথা।
–কেউ পছন্দ করলে কি বলার অধিকার রাখেনা?তোরা এখনকার ছেলেমেয়েরা তো খুব মডার্ন।মনের কথা বলে দিতেই কম্ফোর্ট ফিল করিস।তবে এমন অপমান করলি কেন?
–ভালোবেসে এলে তো ফিরিয়ে দিতাম না।এসেছে লোক দেখাতে,একটা মানুষের কনফিডেন্ট লেভেল কোন লেভেলে গেলে এমন ভরা মজলিশে এসে প্রপোজ করে ?ও ভেবেছে ওর বাপের নাম দিয়ে ক্যাম্পাসে চড়ে খাবে।আমি যদি ওকে পানিশ না করতাম তবে ফ্রেশাররা সিনিয়রদের রেসপেক্ট করতো না,ভয় তো বহুদূর।আর মজার ব্যাপার কি জানো ও বাজি ধরে প্র্যাঙ্ক করতে এসেছিল।বেচারি নিজের জালে নিজেই ফেঁসেছে।
–ওর বাবা রিয়েক্ট করবেনা? পলিটিক্যাল মানুষদের এমনিতেই ভাল্লাগেনা,,,
–করলেও কি।আমি ভয় পাই না কি?
–তুই এসব থেকে দূরে থাকতে পারিস না বাবা?
–আমি কিন্তু আজ পর্যন্ত এসবে যাইনি মা সমস্যারাই হেঁটে হেঁটে আমার কাছে আসে।হাহাহা

আলেয়া ছেলের ভুবনভোলানো হাসির দিকে চেয়ে ফিসফিসিয়ে বললো,আল্লাহুম্মা বারিকলাহু,আমার নজরও না লাগুক।
________

বালতির পানিতে মুখ ডুবিয়ে বসে আছে নীরা।সে চেষ্টা করছে নিঃশ্বাস আটকে রাখার ক্ষমতা অর্জন করতে।কেন এই প্রচেষ্টা সে নিজেও জানেনা।
গোসলে গেলে তাঁর এমন সব আজগুবি এক্সপেরিমেন্টে অনেক সময় কেটে যায়।যতক্ষণ না কেউ এসে দরজায় নক করবে সে ওয়াশরুম থেকে বের হবার প্রয়োজনবোধ করবেনা।
জাহানারা বেগম নাতনির এহেন কান্ডে খুব ভীত থাকেন।তাঁর ধারণা বাথরুমের জ্বীন তাঁর নাতনিকে ভুলিয়ে রাখে।তাই তিনি তাঁর নাতিকে দিয়ে বাথরুমে প্রবেশ করার দোআ লিখিয়ে দরজায় লাগিয়ে রেখেছেন।নীরা যদি ভুলক্রমেও পড়ে ঢুকে খারাপ জ্বীন থেকে হেফাজতে থাকবে।
গোসলে ঢুকলেই তিনি নীরার রুমে বসে থাকেন।একটু পরপর দরজা ধাক্কা দিয়ে জিজ্ঞাসা করেন নীরার হলো কিনা।নীরা চুপ থেকে দাদীর টেনশন বাড়ায়।এই কাজ করতে তাঁর ভীষণ মজা লাগে।

ফোন হাতে সেদিনের ভিডিও ক্লিপ দেখছে আলিফ।ভিডিও ক্লিপগুলো দেখেই বোঝা যায় প্রি প্ল্যানড ইনসিডেন্ট।ক্যান্টিনের সবাই যে যার মতো ঢুকছে খাচ্ছে বের হচ্ছে।আলিফ হঠাৎ খেয়াল করলো যখন নাতাশা এন্ট্রি নিলো সবাই ওদের দিকে ফোকাস থাকলেও একটা মেয়ে পুরোটা সময় অন্য ধ্যানে ছিল।দক্ষিণ কর্ণারে বসে খাতায় আঁকিবুকি করা মেয়েটা কে জানার জন্য যেন কিছুটা অস্থিরতা কাজ করলো।পুরো ক্যাম্পাস যেখানে অধীর আগ্রহে সেসব দেখছে এই মেয়েটা কিনা একদম লাপাত্তা!
পজ করে স্ক্রিনশর্ট নিলো আলিফ।আগে কখনো তাঁকে দেখেছে কিনা মনে পড়েনা তাঁর।অবশ্য রোজ কত শত মেয়ে আসে যায় কয়টাকে মনে রাখবে!
তাঁর ফ্রেন্ড মুকিম কে ফোন করে বললো,ছবি পাঠাচ্ছি একটা ,মেয়েটার ডিটেইলস জানা Asap..

আলিফ বুঝে পায়না হঠাৎ এই মেয়ের খোঁজ নিতে ইচ্ছে করছে কেন?সে পাত্তা দেয় নি বলে?
এটা কি তাঁর আত্মঅহঙ্কারে আঘাত করেছে নাকি এমনিই???

চলবে,,,,

#স্বপ্নতরী

♡আরশিয়া জান্নাত

(এই গল্পটার কয়েক পর্ব আগে দেওয়া হয়েছিল কিন্তু আর কন্টিনিউ করিনি। এবার ইনশাআল্লাহ চলবে। হ্যাপি রিডিং)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here