ধূসর প্রেমের অনুভূতি – পর্ব ২৮

0
273

#ধূসর_প্রেমের_অনুভূতি
#ফারহানা_ছবি
#পর্ব_২৮
.
.
তনুর প্লান মতো ফারহার মম ড্যাড আর রোজা এবং তার মাকে নিয়ে যাওয়া হলো সেখানে যেখানে ফারিহাকে লুকিয়ে রেখেছিলো ফারহা৷ ওখানে ওদের থাকার ব্যবস্থা করে দিয়ে মেঘ ফারহা আদিল রাফি তনু বেড়িয়ে পড়লো৷

অন্য দিকে কিং ফায়ার হ্যারি আর তাদের লোকেরা লিওকে এয়ারপোর্ট থেকে রিসিভ করে সরাসরি খান মন্জিলে চলে যায়৷

(৫২)

“আপু তোরা কোথায়? ” উত্তিজিত হয়ে বললো ফারিহা৷

” কেন কি হয়েছে ফারিহা? তোর গলা এমন শুনাচ্ছে কেন? এভরিথিং ইজ ওকে?”

” না আপু কিচ্ছু ঠিক নেই৷ কিং ফায়ার হ্যারি লিও তারা প্রত্যেকে খান মন্জিলে প্রবেশ করেছে৷”

” ওয়াট!”

” ইয়েস আপু৷ ওরা খান মন্জিলে প্রবেশ করলে সব শেষ হয়ে যাবে৷ মম ড্যাড ওখানে আছে৷ ওদের কে ট্রাম কার্ড করে তোদের উপর এট্যাক করবে ওই কিং ফায়ার ৷ ”

” কিন্তু ওরা খান মন্জিলে কেন? তারমানে কি!” ফারহা ফোন নামিয়ে মেঘকে বলে,” মেঘ গাড়ি ইউটার্ন নেও আমাদের এখুনি খান মন্জিলে ফিরতে হবে৷ ”

” কেন?”

” কিং ফায়ার হ্যারি লিও সবাই খান মন্জিলে প্রবেশ করেছে৷ ”

মেঘ দেরি না করে গাড়ি ইউটার্ন নেয়৷ রাফি আদিল তনু মেঘের গাড়ি ফলো করে তারাও ব্যাক করে৷ আদিল বুঝতে পারছে না তারা কেন আবার ব্যাক করছে?

মেঘ খান মন্জিল থেকে কিছুটা দুরে গাড়ি থামায়৷ তনু আদিল রাফি গাড়ি থেকে নেমে মেঘ ফারহার কাছে এসে প্রশ্ন করে৷

” ফারু আবার এখানে ফিরে এলে কেন? আমাদের তো কিং ফায়ারের ডেরায় যাওয়ার কথা ছিলো৷”

” হ্যাঁ ওখানে যাওয়ার কথা ছিলো কিন্তু এখন আর তার কোন প্রয়োজন নেই৷”

” বাট হুয়াই দি?”

” ভিতরে চল সবটা জানতে পারবি৷”

মেঘ ফারহা তনু আদিল রাফি সকলে এক সাথে খান মন্জিলে প্রবেশ করে দেখে প্রায় পনেরো জন সিকিউরিটি গার্ড পরে আছে৷ গার্ডদের চেক করে পাল্স না পেয়ে বুঝতে পারে মেঘ এরা কেউ বেঁচে নেই৷ রাগে পুরো শরীর জ্বলছে ফারহার৷ ফারহা রিভালবার লোড দিয়ে বাড়ির মেইন দরজায় প্রবেশ করে দেখে কিং ফায়ার সিঙ্গেল সোফায় পায়ের উপর পা তুলে বসে সিগারেট ফুকছে আর দু’পাশে লিও আর হ্যারি দাড়িয়ে আছে৷

কিং ফায়ার ফারহাকে দেখে চমৎকার একটা হাসি দিয়ে বলে,” সারপ্রাইজ আরুপাখি৷ আমাদের দেখে নিশ্চয়ই তুমি প্রচন্ড খুশি তাই না?”

হ্যারি ফারহার দিকে তীক্ষ্ণ চাহনি দিয়ে কিং ফায়ারকে বলে,” কিং ফায়ার আরু ইজ নট হ্যাপি কজ ওর ফেস টা দেখুন কেমন ফাটা বেলুনের মতো চুপশে আছে ইসস ৷”

আরু হ্যারির দিকে তাকিয়ে ঠোঁটের কোনে ক্রুর হাসি নিয়ে কিং ফায়ারের দিকে এগিয়ে যেতে নিলে কিং ফায়ারের লোকজন সাথে লিও হ্যারি খানিকটা ভিতু হয়ে রিভালবার তাক করে ফারহার দিকে; ফারহা লিও আর হ্যারির ভিতু ফেস দেখে বাঁকা হেসে বলল,” এই সাহস নিয়ে আরুকে খতম করতে সুদূর আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে এসেছো লাইক সিরিয়াসলি! আর ইউ হ্যারি আমাকে দেখে কি খুব বোকা মনে হয় হাহ্? কিং ফায়ারকে বোকা বানাতে পেরেছো বলে আমাকেও বোকা বানাতে পারবে এটা কেন ভাবলে? ”

ফারহার কথা শুনে কিং ফায়ার খানিকটা চমকে ওঠে বলে,” মানে! কে কাকে বোকা বানিয়েছে আরু? ”

ফারহা কিং ফায়ারের কথা শুনে খানিকটা হাসলো৷ ফারহাকে হাসতে দেখে কিং ফায়ার রেগে বলে,” আরু তোমার সাহস দেখে আমি সত্যি অবাক৷ মৃত্যুদূত যখন তোমার সামনে বসে তখনও তুমি মাথা নিচু করে জীবন ভিক্ষা না চেয়ে স্টুপিডের মতো হেসে যাচ্ছো? তোমার হয়তো বেঁচে থাকার ইচ্ছেটাই নেই তাই তো?”

ফারহা কিং ফায়ারের দিকে এগোতে এগোতে বললো,” কার বেঁচে থাকার ইচ্ছে আছে আর কার নেই সেটা না হয় আমি পরে বলছি৷ কিন্তু তার আগে এটা বলো এই সাঙ্গ পাঙ্গ নিয়ে এখানে কেন এসেছো?”

” কিং ফায়ার কিছু বলার আগে লিও বলে উঠলো,” তোমাকে আজ তোমার বাড়িতে পুতে ফেলতে জানেমন৷ প্রথমে তোমাকে শেষ করবো তারপর মারুকে আর তারপর তোমার হোল ফ্যামিলিকে শেষ করবো আমি নিজের হাতে৷”

লিওয়ের কথা শুনে ফারহা উচ্চস্বরে হাসতে লাগলো৷ ফারহার হাসি দেখে যে কেউ বলবে ফারহা হয় তো ভয়ংকর মজার কোন কথা শুনে এভাবে হাসছে৷

কিং ফায়ার প্রচন্ড রেগে উপরে শূন্যে ফায়ারিং করে ৷ সাথে সাথে বড় ঝাড়বাতির আলো নিভে যায়৷ ড্রইংরুম অন্ধকার হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে ফারহার হাসির আওয়াজ ও বন্ধ হয়ে যায়৷ লিও হ্যারি কিং ফায়ার তিন জনই সত্যি সত্যি ভেতরে ভেতরে প্রচন্ড ভয় পাচ্ছে ৷ আরু (ফারহা) যে তাদের এতো সহজে ছেড়ে দিবে না সেটা সে ভালো করেই জানে৷ সবাই যার যার ফোনের ফ্লাশ জ্বালায় ৷ হ্যারি লিও ফারহাকে সামনে না দেখে আরো ঘাবড়ে যায়৷ হঠাৎ করে কিং ফায়ারের লোকদের হাতে ফোনের ফ্লাশ বন্ধ হতে লাগলো৷ কয়েক মিনিটে তিনটি ফোনের ফ্লাশ ব্যতিত সব গুলো নিভে গেল৷ তখনি ড্রইংরুমে বাকি লাইট গুলো জ্বলে উঠলো৷

কিং ফায়ার লিও হ্যারি প্রত্যেকে চমকে ওঠে এটা দেখে তারা তিন জন ব্যাতিত ড্রইংরুমে আর কেউ নেই৷

” কিং ফায়ার আরু আর বাকি লোকজন কোথায়?”

কিং ফায়ার তখনি দাঁতে দাঁত চেপে রেগে চিৎকার করে বললো,” আরুউউউউউ”

” কিং ফায়ার আরু আমাদের ধোকা দিয়ে পালিয়েছে৷ এখন কি করবো কিং ফায়ার?”

” আমি তোকে ছাড়বো না আরু ৷ জানে শেষ করবো তোকে যাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াচ৷”

__________

(৫২)

” ফারু এখন আমরা কি করবো? কিং ফায়ার তো এখন আরো বেশি ক্ষেপে আছে৷”

” থাকুক না আই রেইলি ডোন্ট কেয়ার তনু৷ কিন্তু ওরা হঠাৎ খান মন্জিলে কেন এলো? আর মম ড্যাড রোজা তার মা ওরা ঠিক আছে তো?”

” আছে ফারুপাখি ৷”

মেঘের কথা শুনে তনু কেমন দৃষ্টিতে মেঘের দিকে তাকিয়ে বলল,” জিজু আন্টি আঙ্কেল আর বাকিরা কোথায় আছে? খান মন্জিলে নিশ্চয়ই?”

মেঘ তনুর দিকে তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো,” ওনারা যেখানে আছে সেইফ আছে৷ ওনাদের নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না৷”

মেঘের কথাটা যেন তনুর পছন্দ হলো না৷ কেমন যেন রাগি রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে মেঘের দিকে, ফারহা মেঘের কথা শুনে বলে উঠলো,” মানে কি মেঘ? মম ড্যাড আন্টি রোজা ওদের কোথায় রেখেছো তুমি?”

” যেখানেই রাখি না কেন তারা সেইফ আছে৷ আমি দেখছি পুলিশ ফোর্স কতো দুর পৌছালো৷ ”

মেঘ ফারহা আদিল রাফি তনু বাড়ির পেছনের দিকে দাড়িয়ে আছে৷ এদিকে আদিলের ফোন বার বার বেজে ওঠে৷ আর আদিল বিরক্ত হয়ে কল ডিসকানেক্ট করে দেয়৷ রাফি সে তো প্রথমবার রিভালবার হাত দিয়ে ধরে উল্টে পাল্টে দেখছে৷ ফারহা মোটামুটি রাফির এই বোকা বোকা কাজ দেখে বিরক্ত৷

মেঘ কিছুক্ষণ ফোনে কথা বলে এসে ফারহাকে বলে,” ফারুপাখি আমাদের এখুনি এই বাড়ি থেকে দুরে যেতে হবে৷”

” কিন্তু কেন?”

” এই বাড়ির চারদিকে বোম সেট করা আছে ৷ যেটা আর মাত্র চার মিনিট পর ব্লাস্ট হবে৷”

মেঘের কথা শুনে ফারহা সত্যি হতবিহ্বল স্তব্দ হয়ে গেল৷ আদিল রাফি চমকে তাকালো মেঘের দিকে৷ তনু নির্বিকার হয়ে তাকিয়ে আছে ফারহার দিকে৷ তখনি ফারহার ফোনে একটা মেসেজ আসে৷ ফারহা মেসেজ টা দেখে বলে,” মেঘ তনু আদিল রাফি দ্রুত এখান থেকে চলো ৷”

এক মিনিট লেট না করে প্রত্যেকে দৌড়ে খান মন্জিল থেকে অনেকটা দুরে চলে এলো৷ চার মিনিটের মাথায় খান মন্জিলে ব্লাস্ট হয়৷ চারিদিক কালো ধোয়ায় ছেয়ে আছে৷ দম নিতেও কষ্ট হচ্ছে প্রত্যেকের; মেঘ পুলিশকে ফোন করে সবটা জানিয়ে দেয়৷ কিছুক্ষণ পর কিং ফায়ারের গাড়ি গুলো চলে যেতে দেখে মেঘ ফারহা বুঝতে পারলো কিং ফায়ার হ্যারি লিও এখনো বেঁচে আছে৷ তবে তারা থাকা কালিন বাড়িতে বোম সেট কিং ফায়ার কখনো করবে না৷ তাহলে কে কাজ টা করলো? এই প্রশ্নটাই ফারহার মনে খচখচ করছে৷

খান মন্জিলে দ্বিতীয় অংশে গিয়ে পৌছাতে দেখে ওই বাড়িটার সামনে কিং ফায়ার এর গাড়ি৷ ফারহা সবাইকে ভিতরে যেতে বাধা দিয়ে নিজে একাই ভিতরে ঢুকে গেল৷ আর এদিকে মেঘ তনু আর আদিল রাফিকে চোখে চোখে রাখছে৷ তনুর চোখে মুখে মেঘ কোন চিন্তা ছাপ দেখতে পাচ্ছে না শুরু থেকে, যেন সবটাই তনুর আগে থেকে জানা তাই তার কোন রিয়েকশন নেই৷

ফারহা ভিতরে ঢুকে দেখে ফারহার মম ড্যাড আর রোজা এবং তার মাকে চেয়ারে বেধে রাখা হয়েছে৷ হ্যারি এবং লিওর ঠোঁটের কোনে ক্রুর হাসি ৷ কিং ফায়ার ফারহার চারদিকে হাটতে হাটতে ফারহার চুলের মুঠি ধরে মুখের সামনে এনে দাঁতে দাঁত চেপে বলে,” কি ভেবেছিলে আরুপাখি আমাদের বোম ব্লাস্ট করে আমাকে মারার প্লান করবে আর আমি সেটা জানবো না? জানো আরুপাখি আমি এখানে হ্যারি লিও আর মারুর থেকে সব চেয়ে ট্রাস্ট আমি তোমাকে করতাম৷ কিন্তু তুমি সেই আমার ট্রাস্ট শেষ করে দিলে৷ বাট ডোন্ট ওয়ারি আমি তোমাকে খুব কঠিন মৃত্যু দিবো না৷ আই প্রমিস ইউ আরুপাখি ৷ কিন্তু তোমাকে যে মরতেই হবে৷ ”

রোহিনী আর চুপ থাকতে পারলো না তার ছেলের এমন ভয়ংকর রুপ দেখে, ” আগুন তুই কতোটা নিচে নামতে পারিস তার ধারনা হয়তো নেই আমার কিন্তু আজ যেটা করতে যাচ্ছিস তার পরিনাম কতোটা ভয়ংকর হবে তার বিন্দুমাত্র ধারণা তোর নেই৷ তাই বলছি নিজের ভালো চাইলে আরু মাকে ছেড়ে দে৷ আরু তোর থেকে হাজার হাজার গুন ভালো ৷ তোর মতো নিকৃষ্ট নয়৷ ”

হ্যারি কিং ফায়ার এর মা রোহিনীকে চিনে না বিধায় হ্যারি রোহিনীকে থামাবার জন্য রোহিনীর গালে চর বসিয়ে দেয় ৷ আগুন অর্থাৎ কিং ফায়ার প্রচন্ড রেগে হ্যারি হাতে শুট করে দিয়ে বলে ,” হাউ ডেয়ার ইউ হ্যারি? তোর সাহস কি করে হয় আমার মায়ের গায় হাত তোলার?”

কিং ফায়ারের মুখে মা ডাকটা শুনে হ্যারি লিও দু’জনে হতভম্ব ৷

কিং ফায়ার হ্যারির যে হাতে একবার শুট করেছে ওই হাতে আবারও শুট করে দিয়ে বলে,” আই উইল কিল ইউ হ্যারি৷”

হ্যারি কিং ফায়ারের পা ধরে বলে,” কিং ফায়ার আমাকে ক্ষমা করুন৷ মি সত্যি জানতাম না উনি আপনার মা৷ আমি সত্যি এই বিষয়ে অবগত ছিলাম না৷ ”

কিং ফায়ার আর হ্যারির কথা বলার মাঝে লিও তাদের শান্ত করার চেষ্টা করছিলো৷ সে সুযোগে ফারহা তার মম ড্যাড রোজা এবং তার মায়ের হাতে পায়ের বাধন খুলে দিয়ে পেছনের দরজা দিয়ে বের করে দেয়৷ ততোক্ষণে লিও কিং ফায়ার তারা ফারহাকে দেখতে না পেয়ে সামনে তাকিয়ে দেখে ফারহা মম ড্যাড বা তার মা বোন কেউ নেই৷

কিং ফায়ার রেগে ফারহার দিকে রিভালবার তাক করে শুট করতে নিলে তখনি কেউ অন্য সাইড থেকে কিং ফায়ারের হাতে শুট করে দেয়৷ কিং ফায়ারের হাত থেকে রিভালবার পরে যায়৷ ফারহা হ্যারি লিও কিং ফায়ার তাকিয়ে দেখে ফারিহা রিভালবার হাতে দাড়িয়ে আছে৷ ফারিহার দুপাশে মেঘ অর্নিল তনু আদিল রাফি ৷

এতোজনকে দেখে হ্যারি লিও হকচকিয়ে গেল৷ তবে কিং ফায়ারের রাগের কোন পরিবর্তন ঘটলো না বরং রাগ আরো দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেল৷ কিং ফায়ার ফারিহার দিকে তাকিয়ে বলে,” ওয়াট আ সারপ্রাইজ মারু বেইব৷ আমার ডেরা থেকে এভাবে পালিয়ে আসবে এটা আমি সত্যি ভাবতে পারেনি৷ ”

ফারিহা রিভালবার হাতে কিং ফায়ারের দিকে এগিয়ে গিয়ে , রিভালবার দিয়ে কিং ফায়ারের মুখে গলায় স্লাইট করে বলতে লাগলো,” একটা ইন্টারেস্টিং কথা জানো কিং ফায়ার? আমাকে তোর ওই নরক থেকে কে উদ্ধার করেছে? উমম গেস ওয়াট! পারলে না তো? আমি বলছি তোমার এই আরুপাখি ৷ ”

কিং ফায়ার চমকে উঠলো ফারিহার কথা শুনে৷

” আ,,আরু!”

” ইয়েস আরু৷” ফারহা লিওর কাছে গিয়ে লিওয়ের হাত মুচরে দিয়ে বলে উঠলো,” কেমন আছো লিও? সে সময় তোমার ভালো মন্দ জ্বিজ্ঞাসা করতে পারি নি তার জন্য সরি ৷ বাট এখন আমি তোমার খাতির যত্নের আমি কোন ট্রুটি করবো না আই সোয়্যার ৷”

” আ,,আরু লিভ মাই হ্যান্ড৷ আই উইল কিল ইউ , ইউ ব্লাডি বি…” বাকিটা বলার পূর্বে রাফি আর আদিল দুই ভাই চরাও হলো লিও এর সামনে,

” দি এটাকে এখন আমার হাতে ছেড়ে দে৷ দেখ এই বিদেশী হনুমানের কি অবস্তা করি৷”

ফারহা রাফির কথা শুনে হেসে দিয়ে বলে,” নে ছেড়ে দিলাম৷ এবার তোদের দায়িত্ব ওকে সাইজ করার৷ ”

হ্যারি ধীরে ধীরে পালাতে নিলে মেঘ হ্যারির গুলি লাগা হাতটা চেপে ধরে৷

” কোথায় পালানো হচ্ছে মিস্টার হ্যারি? এখনো তো অনেক কিছু আপনার সাথে করা বাকি আছে৷ তা আপনি কোথায় যাচ্ছেন?”

হ্যারি শুকনো ঢোক গিলে মেঘের পেছনে কারো দিকে তাকিয়ে মেঘকে বলতে লাগলো,” মরতে না চাইলে আমার হাত ছেড়ে দে৷”

হ্যারির কথা শুনে মেঘের প্রচন্ড রাগ হলো৷ শান্ত চোখে হ্যারির দিকে তাকিয়ে হ্যারির হাত ছেড়ে দিতে হ্যারির ঠোঁটের কোনে জয়ের হাসি ফুটে উঠতে মেঘ স্বজোড়ে হ্যারির নাক বরাবর ঘুশি মারে৷ মেঘ যে এমন কিছু করবে তার ধারনা ছিলো না হ্যারির৷ ব্যালেন্স রাখতে না পেরে ছিটকে পরে হ্যারি৷ মেঘ একের পর এক আঘাত করে হ্যারিকে, এদিকে ফারহা ফারিহা দুজনে কিং ফায়ারকে একের পর এক আঘাত করে যাচ্ছে ৷ অর্নিল যোগ দেয় মেঘের সাথে আর তনু সে ফোনে অন্য কারোর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ৷ বেশ কিছুক্ষণ পর আদিল রাফি ফারহা ফারিহা মেঘ আর অর্নিল হ্যারি লিও আর কিং ফায়ারকে আদমরা করে ফেলার পর পর পুলিশ তার ফোর্স নিয়ে চলে আসে৷ তিন টেরোরিস্ট জ্ঞান হারিয়ে পরে আছে৷ পুলিশ তাদের এরেস্ট করে থানায় নিয়ে যায়৷ হসপিটালে নেওয়ার মতো কোন রিক্স তারা নিবে না৷ যা চিকিৎসা করার থানায় বসে করা হবে৷ কড়া সিকিউরিটির সাথে তিন টেরোরিস্টকে নিয়ে যাওয়ার পর পর ফারহার মম ড্যাড রোজা এবং তার মা পেছনের দরজা দিয়ে বের হয়ে আসে৷

ফারহা ফারিহা ফায়েজ খান আর আইরিন খান কে জড়িয়ে ধরে বলে,” মম ড্যাড তোমরা ঠিক আছো? ”

” আমরা ঠিক আছি ফারহা৷ তোমরা ঠিক আছো তো? কারোর কোন ক্ষতি করেনি তো ওই টেরোরিস্ট কিং ফায়ার আর তার দল?”

” নো ড্যাড ওরা আমাদের কোন ক্ষতি করতে পারেনি৷ আন্টি রোজা তোমরা ঠিক আছো তো?”

রোহিনী চোখের পানি মুছে ফারহার দুগালে হাত রেখে বলে,” আমরা ঠিক আছি মা৷ আজ তোমার জন্য আমরা চারটে মানুষ বেঁচে গেলাম৷”

” আন্টি আমি এটা বুঝতে পারছি না৷ কিং ফায়ার তো আপনার ছেলে তাহলে আপনাকে এবং রোজাকে কেন মারতে চাইলো?”

ফারহার প্রশ্ন শুনে রোহিনী থতমত খেয়ে গেল৷ রোহিনী বেগম কিছুটা তোতলাতে তোতলাতে বলতে লাগলো,” আ,,আসলে আ,,আগুন আ,,আমার স,,, ” বাকিটা বলার আগে তনু বলে উঠলো,” ফারু আমরা কি এখানে দাড়িয়ে থাকবো?”

” না৷ বাড়িতে চলো সবাই৷”

” কিন্তু দি বাড়ি তো পুড়ে গেছে৷ আমরা এখন যাবো কোথায়?”

ফারহা রাফির চুল টেনে দিয়ে বলে,” গর্ধব আমাদের বাড়ি কি শহরে শুধু একটা? বার তেরটা বাড়ি যার সে ভাববে কোথায় থাকবে ইডিয়ট ৷ আমরা উওরার ডুপ্লেক্স বাড়িটায় যাবো৷ ”

” ওকে চলো৷ ”

” না ফারুপাখি তোমরা এখন চৌধুরী ম্যানশনে যাবে৷ মম ড্যাড রোজা এবং আন্টির এখন একা একা থাকাটা ঠিক হবে না৷ ”

” মানে! কেন কি হয়েছে?”

” কিং ফায়ার হ্যারি আর লিও কে থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশদের উপর এট্যাক হয় ৷ আর অজ্ঞান অবস্থায় কিং ফায়ার হ্যারি লিওকে তুলে নিয়ে যায় কেউ৷ ”

ফারহা মেঘের দিকে কটমট করে তাকিয়ে বলে,” এই তোমার পুলিশের ক্ষমতা মেঘ? তিনটা মানুষ কে আটকে রাখতে পারলে না? ”

ফারহাকে রাগতে দেখে তনু ফারিহা এগিয়ে এসে বলে, ” ফারু রাগ করিস না৷ জানিস তো এ দেশের পুলিশ গুলো কতোটা দূর্বল! ”

” আপু মেঘে জিজুর উপর রাগ করিস না৷ দেখবি সব ঠিক হয়ে যাবে৷”

ফারহা এক ঝলক তনুর মুখের দিকে তাকিয়ে ফারিহাকে বলে,” কি ঠিক হবে আর কি ঠিক হবে না সেটা সময় বলবে ফারিহা৷ তবে ফারিহা এবার যে ঝড় আসতে চলেছে তার সূচনা এখান থেকে শুরু হলো৷ ”

” মানে ফারু তুই কি বলতে চাইছিস? কিসের ঝড়ের কথা বলছিস?”

তনুর কথার প্রত্ত্যুতরে কিছু না বলে ফারহা মুচকি হেসে ফরিহার হাত ধরে ওকে নিয়ে বের হয়ে যায় বাড়ি থেকে৷ তনু ফারিহার যাওয়ার দিকে অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে তনুও ফারহার পিছু পিছু বেরিয়ে গেল৷

(৫৩)

“ডক্টর মিস্টার ইমরান দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে তো?”

” নো মিস জেসিকা মিস্টার ইমরান সহ তার দুই বন্ধুর সুস্থ হয়ে উঠতে বেশ কিছুদিন সময় লাগবে৷ ”

ডক্টরের কথা শুনে জেসিকা বেশ চিন্তিত হয়ে পড়লো৷ কিং ফায়ার হ্যারি লিও যদি দ্রুত সুস্থ হয়ে না ওঠে তাহলে এই বড় খেলাটায় তাদের হার নিশ্চিত৷
.
.
.
#চলবে……….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here