ধূসর প্রেমের অনুভূতি – পর্ব ৪৮

0
372

#ধূসর_প্রেমের_অনুভূতি
#ফারহানা_ছবি
#পর্ব_৪৮
.
.
ফারহা এতো সহজে তনুর মৃত্যু দিবে না৷ তীলে তীলে মারবে তনুকে আর তাই আদিলকে কড়া নির্দেশ দিয়েছে যেন তনুর কোন ক্ষতি না হয় যে ভাবে হোক ওকে বাচাঁতে ৷ প্রয়োজন পড়লে হসপিটালাইজড্ করতে৷ ”

আদিল প্রত্ত্যুতরে কিছু বললো না বরং কল ডিসকানেক্ট করে ফারহার নির্দেশ মতো কাজ করতে লাগলো৷

ফারহা হঠাৎ গাড়ি চৌধুরী ম্যানশনের দিকে না নিয়ে অন্য দিকে যেতে লাগলো৷ ফারিহা অবাক হয়ে বলতে লাগলো,” আপু এটা তো চৌধুরী ম্যানশনের যাওয়ার রাস্তা না৷”

” হ্যাঁ, এটাতো সেম রাস্তা না৷”

ফারহা কারো কোন কথা কানে না নিয়ে ফুল স্পিডে গাড়ি চালিয়ে একটা বাংলোর সামনে গাড়ি থামায়৷ ফারহা তার রিভালবারে সাইলেনসার লাগিয়ে নিয়ে ফারহা সূর্যকে ইশারা করে গাড়ি থেকে বের হতে বলে৷ ফারহা সূর্য দুজনে রিভালবার নিয়ে ফারহার পেছন পেছন বাংলোর ভেতরে ঢুকতে চাপা কান্নার আওয়াজ শুনতে পেলো তার সাথে অনেক গুলোর পুরুষের গলার আওয়াজ কানে আসে৷ ফারহা ফারিহা সূর্য দরজার আড়ালে দাড়িয়ে দেখতে লাগলো৷

একটা বাচ্চা মেয়ে, মেয়েটার বয়স পনেরোর কাছাকাছি ৷ মেয়েটার কাপড় দেখে বুঝতে কারোর বাকি নেই মেয়েটিকে রেপ করেছে৷ ফারহা ছেলে গুলোর পজিশন দেখে হুট করে ভেতরে ঢুকে ছেলে গুলোর দিকে রিভালবার তাক করে৷ ছেলে গুলো হচকিয়ে ওঠে ফারহাকে দেখে;

” হ্যালো ইউসুফ ৷”

ফারহার শীতল গলায় ইউসুফ নিজের নামটা শুনে ভয়ে হাত পা কাপঁতে লাগলো৷ আরু তার সামনে দাড়িয়ে আছে৷ শুধু আরু নয় মারু আর সূর্য কে দেখে ছেলে গুলোর চোখ মুখ ইতিমধ্যে শুকিয়ে গেছে৷ ইউসুফ পারে না পালিয়ে যেতে কিন্তু তা এখন আর সম্ভব নয়৷ ফারহা মেয়েটার দিকে তাকিয়ে বলল,” তুমি আমাকে ফোন করেছিলে?”

মেয়েটি মাথা নেরে সম্মতি জানায়৷ ইউসুফ মেয়েটার দিকে অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করতে ফারহা ইউসুফের মুখে পাঞ্চ মারে, ছিটকে পরে ইউসুফ৷ ইউসুফের সাঙ্গ পাঙ্গ ছেলে গুলো ফারহাকে চিনতে না পেরে আঘাত করার জন্য উদ্ধত হলে ফারহা ওখানে ছেলে গুলোকে শুট করে দেয়৷ তা দেখে ইউসুফ আরো ভয় পেয়ে গুটিয়ে নিলো নিজেকে; ফারহা সূর্যকে ইশারা করতে সূর্য ইউসুফ মারতে লাগলো৷ এদিকে ফারহা মেয়েটার কাছে গিয়ে মেয়েটার মাথায় হাত রেখে বলে,” তোমার নাম কি?”

” মা,,মাইশা৷”

” মাইশা তোমার বাড়ি কোথায়? বাবা মায়ের নাম কি?”

” এটা আমার বাড়ি ৷ আর ওই লোকটা আমার মা বাবাকে মেরে ফেলেছে৷” বলে কাঁদতে লাগলো৷

মাইশার কথা শুনে ফারহা ফারিহা স্তব্ধ স্তম্ভিত ৷

রাগে পুরো শরীর হির হির করতে লাগলো ফারহার৷ ফারিহার সেম৷ ফারহা প্রচন্ড রেগে সূর্যকে বলে,” ভাই এই জানোয়ারটার শরীরে অনেক খুদা আজ আমি ওর সব খুদা মেটাবো৷ তার ব্যবস্থা করো৷”

ফারহার কথা হতে দেরি ব্যবস্থা হতে দেরি নেই ৷ ইউসুফকে একটা রুমে নিয়ে গিয়ে বেডের সাথে হাত পা বেঁধে ফেলে সূর্য৷ ইউসুফ আকুতি মিনুতি করতে ফারিহা রকেটের স্পিডে গিয়ে ধাড়ালো ছোট্ট ছুরি দিয়ে ইউসুফের জিব্বাহ্ কেটে ফেলে৷ ফারিহা সেই ধাড়ালো ছুরিটা ইউসুফের বুকে গেঁথে দিতে গেলে সূর্য ফারিহাকে বাধা দেয়৷

” না মারু ফারহা তখন কি বলেছিলো মনে নেই?”

” আছে আর তাই এই জানোয়ারটা আমার হাত থেকে বেঁচে গেল নাহলে আজ ওর কলিজা ছিড়ে বের করে আনতাম৷”

ফারহার কথা শেষ হতে সে রুমে ফারহা আর মাইশা ঢুকলো৷ ফারহা মাইশাকে ফ্রেস করিয়ে কাপড় চেন্জ করিয়ে দিয়ে নিজের সাথে রুমে নিয়ে আসে কারণ ফারহা চায় মেয়ে নিজের চোখের সামনে দেখুক ধর্ষণ করার শাস্তি কি রুপ হওয়া উচিত৷

ফারহা সূর্যকে বলে মাইশার বাবা মায়ের লাশ দুটো কবর দেওয়ার ব্যবস্থা করতে৷ সূর্য সে মোতাবেক কাজে লেগে পড়ে৷

(৮৫)

ফারহার ঠোঁটের কোনে লেগে আছে তৃপ্তির হাসি৷ কিছুক্ষণ আগে ইউসুফের পুরো বডির পার্ট পার্ট করে কেটেছে ফারহা৷ তারপর ইউসুফের মেইনপার্টে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিলে দেয়৷ দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে লাগলো তার সাথে সাথে ইউসুফের প্রাণ পাখিটা উড়ে চলে গেল৷ মাইশা অল্প বয়স বিধায় সবটা দেখতে পারলো না৷ ছুটে রুম থেকে বেড়িয়ে গেল৷ সূর্য মাইশার বাবা মায়ের কবরটা বাংলোর পেছনে দিয়েছে৷ সেটা জানাতে রুমে এসে মাইশাকে ছুটে বেড়িয়ে যেতে দেখে দ্রুত রুমে এসে আগুন দেখতে পেয়ে নেভানোর চেষ্টা করে৷ কার এই আগুন না নেভালে পুরো বাংলোতে আগুন ছড়িয়ে পড়বে৷ সূর্য আগুন নেভাতে নিলে ফারহা বারণ করে ৷ বাড়তে লাগলো আগুনের ফুলকি ৷ ফারহা মাইশার প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে মাইশাকে নিয়ে বেড়িয়ে আসে বাংলো থেকে সাথে সাথে পুরো বাড়িতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে৷ মাইশা বাইরে এসে রাস্তায় হাটু মুড়ে কাঁদতে লাগলো৷

ফারহা মাইশাকে তুলে বুকের জড়িয়ে ধরে বলতে লাগলো,” কেঁদো না মাইশা ৷”

” এখন আর আমার কেউ রইল না আপু৷ আমি এতিম হয়ে গেলাম৷”

” চিৎকার করে কাঁদতে লাগলো মাইশা৷ এতোটুকু মেয়ের আত্নচিৎকার ফারহা ফারিহা সূর্যের বুকে গিয়ে বিদছে৷ ফারহা নিজের চোখের পানি মুছে মাইশাকে গাড়িতে বসিয়ে পানি খাইয়ে দিয়ে বলে,” আচ্ছা মাইশা তুমি আমাকে ফোন করলে কি করে? জানলে কি করে এটা আমার নাম্বার?”

” আ,, আমি আমি চুরি করে ওই লোকটার ফোন নিয়ে কাকে কল করবো বুঝছিলাম না৷ তখন ফোনে সেভ করা বস নামটা সেভ করা দেখে আমি ওটাতে কল করেছিলাম৷ কারণ তার আগে ওরা নিজেদের মাঝে বলাবলি করছিলো যে তাদের বস মেয়েদের অনেক সন্মান করে৷ তাদের সাথে বাজে বিহেব করা বস একদমি পছন্দ করে না৷ ”

ফারহা মাইশাকে নিয়ে গাড়ি স্টাট দেয়৷ সূর্য ফারিহা পেছনের সিটে বসে আছে৷ কিছুক্ষণের মধ্যে মাইশাকে নিয়ে চৌধুরী ম্যানশনে৷

ফারহা ফারিহা সূর্য মাইশা চৌধুরী ম্যানশনে প্রবেশ করতে দেখে ড্রইং রুমে আইরিন আর মেহরীন চিন্তিত মুখ নিয়ে বসে আছে৷ ফারহাকে দেখতে পেয়ে তারা যেন স্বস্থির শ্বাস ফেলে ফারহার কাছে ছুটে এসে বলতে লাগলো,” ফারহা মামুনি তুমি এতো সময় কোথায় ছিলে? জানো এদিকে কতো কিছু ঘটে গেছে?”

ফারহা তার হাতে থাকা রিচওয়াচে তাকিয়ে টাইম দেখে বুঝতে পারলো সে অনেকটা দেরি করে ফেলেছে৷ এখন প্রায় দুপুর তিনটে বাজে, ফারহা তার মায়ের দিকে তাকিয়ে বললো,” আমি জানি মম এখানে কি হয়েছে৷ তুমি এখন আমার কথা শুনো এই হচ্ছে মাইশা৷ আমার ছোট বোন বলতে পারো৷ ও কিছুদিন এখানে থাকবে৷ পনেরো দিন পর ও দেশের বাইরে পড়তে চলে যাবে তাই কিছুদিন আমাদের সাথে আনন্দ মজা করে থাকতে এসেছে৷”

ফারহার কথা শুনে মেহরীমা আইরিন মাইয়ার চোখ মুখ ফোলা দেখে বলল,” ফারহা মামুনী মেয়েটার চোখ মুখ এভাবে ফুলে আছে কেন? মনে হচ্ছে খুব কেঁদেছে মেয়েটা?”

” মামুনী আজ একটা এক্সিডেন্টে ওর মা বাবা দুজনে মারা গেছে৷ ”

কথাটা শোনা মাত্র মেহরীমা আইরিন মাইশার দিকে তাকিয়ে আর কিছু বলতে পারলো না৷ মাইশাকে জড়িয়ে ধরে বলতে লাগলো,” মাইশা একদম কাঁদবে না৷ তোমার মা বাবা নেই তাতে কি হয়েছে আমি আমরা তো আছি৷ একদম কান্না করবে না৷ ভাবি দেখো মেয়েটার চোখ মুখ একদম শুকিয়ে গেছে আগে ওকে কিছু খেতে দেও৷ ”

আইরিন ছুটে গিয়ে মাইশার জন্য খাবার নিয়ে এসে নিজের হতে মাইশাকে খাইয়ে দিতে লাগলো৷ ফারহা ফারিহা সূর্য এমন দৃশ্য দেখে মুচকি হেসে উপরে নিজের রুমে চলে গেল৷ সূর্যকে গেস্ট রুমে পাঠিয়ে দিয়ে ফারহা নিজের রুমে এসে দেখে মেঘ রুমের কোথাও নেই৷ মেঘকে দেখতে না পেয়ে ফারহা ভাবে মেঘ হয়তো তার অফিসে তাই ফারহা ফ্রেস হয়ে চেন্জ করে রুমে এসে ব্যালকনিতে গিয়ে দাড়াতে চমকে ওঠে মেঘকে দেখে৷

” মেঘ তুমি এখানে?”

মেঘ ফারহার দিকে তাকিয়ে গম্ভির গলায় বলে উঠলো,” কেন আমাকে এখানে দেখে তুমি স্পেক্ট করো নি বুঝি?”

মেঘের কথার ধরন দেখে ফারহা বুঝতে পারলো মেঘ রেগে তার উপর , ফারহা মেঘের গা ঘেষে দাড়িয়ে বলে উঠলো,” স্যরি মেঘরাজ৷ ভাবিনি এতোটা দেরি হয়ে যাবে৷ ”

মেঘ এবার স্থির দৃষ্টি ফারহার উপর নিক্ষেপ করে শীতল গলায় বলে উঠলো,” ফারুপাখি তুমি আগে কি ছিলে? সেটা আমি জানতে চাই না কিন্তু এখন তুমি আমার স্ত্রী ৷ আমি একজন আইনের লোক আমি চাইবো না আমার স্ত্রী কোন বেআইনী কাজে লিপ্ত থাকুক৷ তুমি টেরোরিস্ট ছিলে কিন্তু নেই ৷ এখন শুধু তোমার একটাই পরিচয় তুমি মিসেস ফারহা চৌধুরী৷ ওয়াইফ অফ মেঘ চৌধুরী৷ আমি চাই না তুমি আর ওই পথে পা বাড়াও৷ আর রিভালবার হাতে তুলে নেও৷”

ফারহা ঠান্ডা মাথায় মেঘের কথা গুলো শুনে বলে উঠলো,” মেঘরাজ আমি লাস্ট বার রিভালবার হাতে নিতে চাই৷ তারপর আমি আমার অতিতটাকে দুঃস্বপ্ন ভেবে ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করবো আই প্রমিস৷”

” ওকে তোমার কথাই রইল৷ তবে লাস্ট বার তুমি হাতে রিভালবার তুলে নিবে৷”

কথাটা বলে মেঘ গটগট করে হেটে রুম থেকে বেড়িয়ে গেল৷ কিছুক্ষণ পর ফিরে এলো তবে হাতে খাবারের সমেত৷ ফারহা অবাক হয়ে মেঘের দিকে তাকিয়ে রইল৷ মেঘ ফারহার তাকানো দেখে নিজের হাত ফারহাকে খাইয়ে দিয়ে বলতে লাগলো,” এতো অবাক হওয়ার কিছু নেই ফারপাখি ৷ ভুল করলে আমি আমার ফারুপাখিকে শাসন করবো আবার আমি ভালোবাসবো৷ ”

ফারহা মুচকি হেসে এঠো মুখে মেঘের ঠোঁটে চুমু দিলো৷ তা দেখে মেঘ দুষ্টুমি ভরা চাহনিতে তাকিয়ে বলে উঠলো,” বুঝতে পেরেছি আমার ফারুপাখির ভালোবাসার খুদা লেগেছে৷ পেটের খুদা মিটিয়ে না হয় এই জনাব তার প্রেয়শীর ভালোবাসার খুদা মিটিয়ে দিবো৷ একটু অপেক্ষা করো জান৷ ”

ফারহা মেঘের পিঠে ধুরুম করে একটা কিল মেরে বলল,” মেঘরাজ তুমি কিন্তু দিনকে দিন প্রচন্ড নির্লজ্জ হয়ে যাচ্ছো৷ মুখে লাগাম টানো৷”

” প্রত্যেকটা স্বামীর উচিত বউয়ের কাছে নির্লজ্জ হওয়া৷ কারণ এটা প্রত্যেকটা স্বামীর বিবাহগত অধিকার৷”

” এই প্রথম তোমার মুখে শুনলাম বরদের বিবাহগত অধিকার ৷”

” ধীরে ধীরে আরো অনেক কিছু শুনবে জান৷ এখন ঝটপট খেয়ে নেও তারপর না হয় আমরা টি টুয়েন্টি ম্যাচ খেলবো৷”

ফারহা পারে না মেঘের নির্লজ্জ মুখটা সেলাই করে দিতে৷ লজ্জায় ফারহার গাল দুটো লাল হয়ে আছে৷ মেঘের ইচ্ছে করছে টুপ করে ফারহার গাল দুটো কামড়ে খেয়ে ফেলতে৷ একদম ফারহাকে একদম চেরি ফলের মতো দেখাচ্ছে ৷ আজ যেন ফারহাকে মেঘ লজ্জা দিয়েই শেষ করে ফেলবে৷

(৮৬)

অর্নিল ফারিহাকে রুমে ফেরার পর থেকে বুকে জড়িয়ে ধরে আছে ৷ সেই সকালে খেয়ে ছিলো আর তারপর থেকে না খেয়ে আছে৷ সে দিকে মশাইয়ের খবর আছে? ফারিহা পারছে না ধুরুম ধুরুম কয়েকটা কিল পিঠে বসিয়ে দিতে৷ কারণ হাত হতো অর্নিল আটকে রেখেছে৷ ফারিহা এবার চরম বিরক্ত হয়ে বলল,” অর্নিল এভাবে আর কতোক্ষণ জড়িয়ে ধরে থাকবে? আমার প্রচন্ড খিদে পেয়েছে৷ ”

খিদে পেয়েছে কথাটা শুনে অর্নিল ফারিহাকে তৎক্ষনাৎ ছেড়ে দিয়ে বলল,” আইএম স্যরি জান আমার একদম খেয়াল ছিলো না তুমি দুপুরে খাওনি৷ আমি এখুনি তোমার জন্য খাবার নিয়ে আসছি৷” অর্নিলের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ফারিহা দীর্ঘশ্বাস ফেলে মনে মনে বলতে লাগলো,” এক জিজু যে কিনা আপুর মুখ ফুটে বলার আগে বুঝে যায় তার কি প্রয়োজন৷ আর এক তুমি না বলে দিলে তুমি কিছুই বুঝতে পারো না৷ ”

____

মেঘের দুষ্টুমি থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে মাইশাকে দেখার জন্য গেস্ট রুমের দিকে পা বাড়াতে ফারহা শুনতে পায়…….
.
.
.
#চলবে………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here