তোমার নেশায় আসক্ত – পর্ব ২৮

0
466

#তোমার_নেশায়_আসক্ত
#part:28
#Suraiya_Aayat

আরিশ আর রাইসা দুজনকে একসঙ্গে গাড়ি থেকে নামতে দেখে আরূর খুব কষ্ট হলো , এত কিছুর পরেও এগুলো ঠিক আর মেনে নেওয়া যায় না ৷ সব সময় এগুলো প্রতিনিয়ত ওর চোখের সামনে ঘটেই চলেছে, বারবারই মুখ বুজে সহ্য করে যাচ্ছে আরু, তাছাড়া আরিশের যদি রাইসার সঙ্গে যাওয়ার ইচ্ছাই হতো তাহলে ও যখন দুপুরে অফিসে গেল ওকে একবার বলতে পারতো , এই জিনিসটাই বড্ড বেশি কষ্ট পেয়েছে আরু ৷

দৃশ্যটা চোখে যেন আর সইতে না পেরে রুমের ভিতরে চলে আসলো আরূ, এসে বই নিয়ে পড়তে বসে গেল৷ যদিও বা ইচ্ছা করে বসেনি আরিশের উপর রাগ দেখিয়েই বসেছে ৷ পড়াশোনাটা আজকাল আর ঠিক হয়ে উঠছে না সেই কারণে সমস্ত কিছু গোল্লায় গেছে , কি করবে ও , ওর মাথায় শুধু আরিশের কথায় ঘোরে পড়তে বসলে , বইয়ের মধ্যে যেন আরিশের মুখ ফুটে ওঠে বারবার ৷

বইটা ধরে আছে আর ক্রমাগত চোখের জলের ফোঁটাগুলো টপটপ করে বইয়ের পৃষ্ঠা তে পড়ে পাতাটাকে ভিজিয়ে দিচ্ছে বারবার , বইয়ের মোটা মোটা অক্ষর গুলোও চোখে ঝাপসা দেখছে এখন , চোখটা বড়ই অবাধ্য , ওর কথা শুনতে চায় না….

বাড়ির সিঁড়ি দিয়ে উঠছে আর আরিশ ভাবছে যে রুমে গিয়ে আরুশিকে সব সত্যি কথা বলবে যে ওর আসতে কেন এত দেরি হলো, আর রাইসাই বা ওর সঙ্গে কি করছিল ৷ (আরিশ লক্ষ্য করেছিল যে আরুশি ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে ওর জন্য অপেক্ষা করছে আর ওদের দুজনকে একসঙ্গে দেখেছে ৷)

সারাদিন রাইসাকে আরু বাড়িতে দেখেনি আর এমনিতেও রাইসাকে নিয়ে ওর কোনো মাথাব্যথা নেই তাই আর ব্যাপারটাকে নিয়ে ভেবে দেখেনি ৷

পায়ের আওয়াজ শুনে আরু সঙ্গে সঙ্গে চোখের জলটা মুছে নিয়ে বইটাকে মুখের সামনে ধরল আড়াল করে যাতে আরিশ ওর মুখ দেখতে না পায় , ও চায়না নিজের চোখের জলটা আরিশকে দেখাতে ৷ এখন ভাবছে যে যখন নিজের ভালবাসাটাকেই প্রকাশ করতে ও ব্যর্থ তাহলে চোখের জলটাও ওর না দেখানোই ভালো ৷

আরিশ রুমে ঢুকে দেখল আর একটু অবাক ও হলো কারণ আরু বইটা পুরো মুখের সামনে নিয়ে পড়ছে যাতে ওর মুখটা ঢেকে গেছে আর দেখা যাচ্ছেনা ঠিকঠাক ৷

আবেগটাকে কাটিয়ে নিয়ে ধীরে ধীরে আরুর কাছে যেতে গিয়েও গেল না আরিশ ,,,,

ভাবলো যে ফ্রেশ হয়ে এসে তারপর আরুশিকে সবটা জানাবে আর এখন যেহেতু আরু বই পড়ছে তাই ওকে ডিস্টার্ব করা ঠিক হবে না ৷

আরিশ একটা শার্ট আর একটা প্যান্ট নিয়ে ওয়াশ রুমে ঢুকে গেল , শাওয়ার নেবে ও এখন ৷ আজকে রাইসা ওকে যা জ্বালিয়েছে তাতে মাথা পুরা হ্যাং করে আছে ওর ৷ আরুর সাথে কথা বলার জন্য একটা ফ্রেশ মাইন্ড এর প্রয়োজন ওর ৷

আরিশ ওয়াশরুমে চলে যেতেই আরুশি বইটা মুখের সামনে থেকে নামল তারপরে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো….

আরু কাঁদতে কাঁদতে বলল: জানি আমাকে আর ভালোবাসেন না উনি ,সেই জন্যই তো আমাকে উপেক্ষা করে ওয়াশ রুমে চলে গেলেন কোন কিছু বলার প্রয়োজনও বোধ করলেন না , যদি আমাকে আগের মতো আর ভালোবাসতেন তাহলে আমার মান অভিমান গুলো বোঝার চেষ্টা করতেন , একবারও হয়তো বলতেন যে আরূপাখি সরি আমার ভুল হয়ে গেছে আর কখনো হবে না….
থাকবো না আমি আর এখানে বলে বইটা পাশে ধপ করে রেখে দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেল ৷ যাওয়ার আগে দরজাটায় এত জোরে ধাক্কা মারল যে ওয়াশরুমেও থেকেও আরিশের কানে শব্দটা পৌছৈ গেছে….

আরিশ মনে মনে : এবার আমি সবকিছু একটু বেশি বেশিই করে ফেলছি ,তবে আর না ৷ওকে কষ্ট দিয়ে আমি নিজেই তার থেকে বেশী কষ্ট পাচ্ছি ৷

রাত প্রায় 10:30 ,,,,,,,

আরুশি ওর রুম থেকে বেরিয়ে হনহন করে
নিজের রুম থেকে বের হতেই যখন সানার রুমের দিকে যাচ্ছিল তখনই রাইসার রুমটা পার করে আসতে গিয়ে রাইসার রুম থেকে হাসির আওয়াজ ওর কানে আস্তেই দাঁড়িয়ে গেলো সেখানেই , তারপর উঁকি মেরে দেখতে লাগল যে ব্যাপারটা কি ৷

রেনু খান : তুই আর আরিশ আজকে খুব ইনজয় করেছিস বল ?

রাইসা: ভিষন ! আরিশ এতটা ভালোবাসতে পারে তা আমার কল্পনাতেও ছিল না ৷

বাদ বাকিটুকু রাইসা কি বলল তার আরু আর কানে নিল না কারণ যেটুকু শুনেছে তাতেই ও আলাদা একটা ভাবনা ভেবে ফেলেছে….

বেশি দেরি না করে আরু তাড়াতাড়ি করে সানার রুমের দিকে গেল ৷

সানার রুমে গিয়ে বিছানার উপর বসে পড়ল ,সানা তখন আরাভের সঙ্গে কথা বলছিল .আর হঠাৎ আরুশি আচমকা এভাবে যেতেই ও ভয় পেয়ে গেল৷

সানা (ফোনে) :আমি আপনাকে একটু পরে ফোন করছি ৷

আরাভ :ওকে ৷

সানা : কি হয়েছে তোর এত রেগে আছিস কেন?

আরুশী : কিছু হয়নি আমার , আমি আজকে রাত্রে তোর কাছে ঘুমাবো, তুই কি আমাকে ঘুমাতে নিবি? না নিলে বল আমি গেস্টরুমে চলে যাচ্ছি ৷

সানা থতমত খেয়ে : কেন ভাইয়ার সাথে কি কোনো সমস্যা হয়েছে তোর?

আরু একটু রাগী চোখে তাকাতেই সানা ভয়ে ভয়ে বলল :
আরে তুই ঘুমাবি সেটা কোন ব্যাপার না , আমি আসলে জানতে চাইছি যে ভাইয়া কি তোকে কিছু বলেছে?

আরূ:বুঝতে পেরেছি তোর কোন ইচ্ছা নেই আমাকে এখানে ঘুমাতে নেওয়ার, আচ্ছা আমি এক্ষুনি চলে যাচ্ছি বলে আরূ উঠতে গেলে সানা ওর হাত ধরে আবার বসিয়ে দিল…

সানা : আরে রাগ করছিস কেন , আমি সেই মাইন্ডে বলিনি ৷ তোর যতদিন ইচ্ছা হয় তুই আমার রুমে থাক৷

আরূ সানার দিকে আবার তাকিয়ে বলল: যতদিন ইচ্ছা ততদিন নয় , আমি শুধু আজকের দিন টা থাকবো তারপর কালকে আমি চলে যাব ৷

সানা অবাক হয়ে :কোথায় যাবি তুই?

আরু: আমি এ বাড়ি থেকে চলে যাবো , কেউ আমাকে ভালবাসে না , কেউ না , উনিও না , ৷(বলে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করে দিল…)

সানা আরুকে কাঁদতে দেখে ও নিজেও ইমোশনাল হয়ে গেল , তারপর আরূকে জড়িয়ে ধরে বলল : তুই কোথাও যাবিনা , আমার সাথেই থাকবি এরুমে , ভাইয়া যখন তোর সঙ্গে এরকম ব্যবহার করেছে ওর কাছে তো যাওয়ার দরকার নেই ৷

সানা যদিওবা জানে যে আরূ অভিমানের থেকেই সমস্ত কথাগুলো বলছে ৷ আরিশ আরূকে কতটা ভালবাসে সেটা সকলেরই জানা কারোরই অজানা নয় ,শুধু আরূ ভালোবাসাটা বুঝলেও মানতে চায় না৷

সানা আরূর মাথায় হাত বুলিয়ে বলতে শুরু করল: তুই ঘুমিয়ে পড় আমি আছি এখানে ৷

আরূ তাড়াতাড়ি বিছানা থেকে নেমে দরজা বন্ধ করে দিল ৷
আরূ এসে শুয়ে পড়ল বিছানায় ৷

আরু: উনাকে একদম ঢুকতে দিবি না আর আমি জানি যদিও বা আমার থাকা বা না থাকাই ওনার কোন যায় আসে না তাই উনি আসবে না , আর যদিও বা আসে তাহলে একদম ঢুকতে দিবি না , আমি ওনার কাছে আর যাব না ৷

সানা মনে মনে : আচ্ছা মুশকিল হল এদেরকে নিয়ে, ভাইয়া ওকে নিয়ে যাবে সেটা আমিও খুব ভাল করেই জানি, আর ও নিজেও জানে ৷ ওকে নিয়ে গেলে আরু সকালে আমাকে শেষ করে দেবে ৷

সানা : আচ্ছা ৷

লাইট অফ করে দুজনেই শুয়ে পড়ল ৷আরাভকে সানার আর ফোন করা হলো না ,আর এদিকে আরাভ বারবার ওকে ফোন করেই যাচ্ছে, সানা বারবার ফোনটা কেটে দিচ্ছে , না পেরে আরাভকে একটা মেসেজ করল :
আমি খুব সমস্যায় আছি আরূকে নিয়ে , আজকে আর কথা হবে না , বাই ৷

অপর দিক থেকে আরাভ মেসেজের রিপ্লাই দিলো কান্নার ইমোজি দিয়ে, যা দেখে সানা হেসে ফেলল ৷

ফোনটা রেখে দিয়ে আরূকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে পড়ল৷
কয়েক মিনিটের মধ্যে সানা ঘুমিয়ে পড়লেও আরুর চোখে ঘুম নেই , মনটা বারবার আনচান আনচান করছে, আরিশকে ছাড়া যে থাকতে পারে না…..

আরিশ কোন রকমে তাড়াতাড়ি করে সাওয়ার নিয়ে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এলো, চুলগুলো থেকে এখনও টপটপ করে পানি গড়িয়ে পড়ছে , ভালো করে মাথাটা মোছা হয়নি , রুমে এসে দেখল আরূ নেই , ও যা ভয় পেয়েছিল তাইই হল ৷ এখন যে মেয়েটাকে মানাতে গিয়ে ওকে বেশ ভালই খাটতে হবে তা ও বুঝতে পারছে , তবুও কিছু করার নেই , আরূকে ছাড়া ঘুম আসে না ওর , তছাড়া আরুকে ছাড়া থাকা ওর পক্ষে সম্ভব নয় ৷

তাড়াতাড়ি করে অগোছালো হয়ে সানার রুমে গেল আরিশ ৷ ও খুব ভালোভাবেই জানে যে আরূ সানার রুমে যাবে তাই অন্য কোথাও আর না গিয়ে সানার রুমেই গেল ৷

সানার রুমে গিয়ে দরজায় নক করতেই সানার ঘুম ভেঙে গেল , আরূও ঘুমিয়ে পড়েছে আরিশের কথা ভাবতে ভাবতে ৷

সানা বিছানা থেকে নেমে বলল: এসেছে এদের দুজনকে নিয়ে আমার জ্বালা , কখন কি করে বোঝা দায় ৷

সানা দরজাটা খুলতেই আরিশ ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলেই সানা আটকে দিল ওকে ৷

সানা : ভাইয়া যেখান থেকে এসেছিস সেখানেই ফিরে যা না হলে এত রাতে তোর বউ আবার দাঙ্গা-হাঙ্গামা করবে আর আমি সেটা এখন চাইনা ৷ একেই তোর জন্য আমার কাচা ঘুমটা ভেঙে গেছে ৷

আরিস :কোনো দাঙ্গা-হাঙ্গামা হবে না , আমাকে যেতে দে আমি ওকে নিয়েই চলে যাব ৷

সানা : সেটা হচ্ছে না , বউয়ের সাথে ঝামেলা করে তাকে কষ্ট দিয়ে এখন এসেছেন উনি মাখন লাগাতে৷ তাড়াতাড়ি নিজের রুমে যা আমার ঘুম পেয়েছে ৷

আরিশ :তুই ওর হয়ে কথা বলছিস?আচ্ছা বেশ, তবে এটা তো জানিস যে ও কতটা অবুঝ , কিছু বুঝতে চায়না বোঝালেও ৷ আর ও যা দেখেবে সবসময় যে সটাই সত্যি তা কিন্তু নয় ৷

সানা মনে মনে ভাবলো যে হয়তো কোন মিস আন্ডারস্ট্যান্ডিং এর জন্য আরূ এরকম করছে তাই ভাবলো আরিশকে একটা সুযোগ দেওয়া উচিত ৷

সানা: তোর বউকে নিয়ে যা, আর হ্যাঁ নেক্সট বার যদি শুনেছি ওকে বকা ঝকা বা আর অন্য কিছু বলেছিস তাহলে তোর খবর আছে ৷

আরিশ রুমে ঢুকে আরুশির দিকে এক পলক তাকালো ৷কাঁদতে কাঁদতে চোখের নোনা জল গুলোও এতক্ষণে শুকিয়ে গেছে তার চিহ্ন স্পষ্ট ৷

আলতো করে আরুশিকে কোলে তুলে নিল তারপর সানার রুম থেকে বেরিয়ে নিজের রুমের দিকে হাঁটা দিল ৷

হঠাৎ ঘুমের মধ্যে আরূ অনুভব করলো যে ও যেন হাওয়ায় ভাসছে ৷ তাহলেও কি কোন পরীদের রাজ্যে চলে এসেছে ? কেউ কি ওকে তুলে নিয়ে গেছে ? এরকম ভাবনা ভাবতেই হঠাৎ আস্তে করে চোখ খুলতেই পিটপিট করে তাকিয়ে দেখল যে ও আরিশ ওকে কলে তুলে নিয়ে যাচ্ছে ৷ আরিশকে একপলক দেখেই আরু চোখটা বন্ধ করে নিল….

আরিশ ওকে ঘরে নিয়ে গিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিল তারপর ফোনটা হাতে নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেল৷

আরু হালকা করে চোখ পিটপিট করে দেখলো আর মনে মনে বলল : আমাকে এখানে ঢং করে এনে এখন রাইসার কাছে গেছে প্রেমালাপ করতে , আসুক ঘরে আমাকে কিছু জিজ্ঞাসা করুক আমি উত্তর দেবো না, সব সময় আমার ধৈর্যের পরীক্ষা নেওয়া তাইনা!

আরিশ কলটা সেরেই রুমে ঢুকলো, কলটা অনেক আগেই এসেছিল তবে আরুশিকে আনার ব্যস্ততায় আর ধরতে পারেনি তাই এখন কল টা অ্যাটেন্ড করল ৷
রুমে এসে আরুশির কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে বলল:
আমি জানি আরুপাখি তুমি জেগে আছো তাই এসব ঘুমের নাটকটা বন্ধ করো ৷ এখন আমি যা বলছি তাই শুনবে তুমি ৷ সবসময় না জেনে শুনে তুমি রাগ করো এটা তো ঠিক না , আমি তোমাকে সব বলতাম কিন্তু তোমার সাথে কথা বলার জন্য একটা ফ্রেশ মাইন্ড এর প্রয়োজন ছিল তাই আর কিছু বলিনি…

আরোশী তাও কোন কথা বলছে না ,আগের মতোই চুপ করে শুয়ে আছে ৷

আরিশ : আরুপাখি কথা বল, চুপ করে আছো কেন?

আরুশির থেকে তাও কোন রেসপন্স নেই ৷

আরিশ: তুমি যদি এবার কিছু না বলো তাহলে আমি কিন্তু আবার তোমার উপর টর্চার শুরু করব , তখন কিন্তু আমাকে কিছু বলতে পারবে না ৷

আরুশির থেকে নো রেসপন্স ৷

আরিশ এবার না পেরে আরুশিকে ভালোবাসতে শুরু করলেই হঠাৎ করে আরুশি কেঁদে উঠলো ৷
হঠাৎ করে আরূকে কাদতে দেখে আরিশ ঘাবড়ে গেল,,,,,

আরিশ আরুর থেকে সরে এসে : আই এম রিয়েলি সরি আরূপাখি, আমি এরকমটা করতে চাইনি ৷

আরুশি আরিশের জামার কলার ধরে নিজের কাছে টেনে এনে কাদতে কাদতে :
আমাকে তো এখন আর ভালো লাগেনা তাইনা , সব ভালোবাসা তো রাইসার জন্য ৷ রাইসার সাথে মজা করে এসে এখন আমার কাছে এসেছেন ? আমি কি বুঝিনা !

আরিশ বুঝতে পারলা আরুশির অভিমানের কারণ, তাই আরূশির কপালে ভালোবাসার পরশ একে আরুকে চুপ করিয়ে দিল ৷

আরিশ: কে বলল আমি তোমাকে ভালোবাসি না, নিজের থেকেও বড্ড বেশি ভালোবাসি তোমাকে, সারা জীবন বেসে যাব ৷ তুমি তো আমাকে কিছু বলার সুযোগই দিলে না , তবে তুমি যেমন আমাকে কোন সুযোগ দিলে না আমিও দেবো না তোমাকে ৷

আরুশিও আরিশের কথায় চুপ হয়ে গেল একদম ৷ আরিশ মেতে উঠল আরূশির ভালোবাসায় ৷

আজকে আরিশ, আরু , সানা তিনজন মিলে কলেজের উদ্দেশ্যে বেরিয়েছে ৷ আরু আর সানার নরমাল ক্লাস হবে তবে আরিশকে প্রিন্সিপাল স্যার ডৈকেছেন ৷ কালকে ওদের রেজাল্ট আর তা নিয়ে সকলের মাঝেই চিন্তা ৷ আরিশ নিজেও যে খুব একটা চিন্তাই নেই তেমনটা নয় , নিজের উপর বিশ্বাস থাকলেও তবুও কেমন একটা ভয় ভয় লাগছে ওর , যতই হোক ফাইনাল এক্সাম বলে কথা ৷

হঠাৎ প্রিন্সিপাল স্যার কেন ডাকলেন সেটাই বুঝতে পারছে না….

তবে সারাদিন আরুর সঙ্গে সময় কাটাতে পারবে এটা ভেবেই খুশি ৷ রাইসা নামক প্যারার থেকে মুক্তি পেল আজকে ৷

সারা রাস্তায় ওরা গল্প করতে-করতেই এসেছে..

আজকে সানা আর আরাভের ঘুরতে যাওয়ার কথা আছে , তাই সানা কয়েকটা ক্লাস করেই বেরিয়ে যাবে কিন্তু আরুকে তো একা থাকতে হবে এই কথাটা ভেবেই ওর মন খারাপ লাগছে খুব….

সানা কি নিয়ে তিথি একটু আলাদা ভাবে কথা বলার জন্য ডেকে নিয়ে গেল , আরু কে অপেক্ষা করতে বলেছে ওর জন্য , তারপর এসে একসঙ্গে তিনজন মিলে ক্লাসে যাবে…

আরিশ দাঁড়িয়ে রয়েছে আরুর পাশে ৷

আরিশ: আমার আরুপাখির কি মুড অফ?

আরোশী বাচ্চাদের মত করে মাথা নাড়িয়ে বলল: নাহ ৷
আমার বউটার মুডটা যে অফ সেটা বেশ ভালই বুঝতে পারছি, আমাকে কি বলা যায় না যে কারণটা কি?

আরু: সানা আরাভ ভাইয়ার সঙ্গে ঘুরতে চলে যাবে তখন আমি একা একা বসে থাকব ৷

আরিশ হা হা করে হেসে উঠল : তো এই ব্যাপার!

আরুশি : আপনি হাসছেন ৷

আরিশ আরুর গাল টেনে দিয়ে: হমমম আমি হাসছি, আচ্ছা এবার তুমি এখন তুই ক্লাসে যাও, প্রিন্সিপালের সঙ্গে কথা বলে আমি আসছি ৷

আরু: হমম ৷

আরিশ: কলেজ ছুটির পর আমি তোমাকে নিতে আসবো তাই একা একা যাবে না , যদি যাও তো খবর আছে ৷

আরিস তারপর কিছু ভেবে মুচকি মুচকি হাসতে হাসতে প্রিন্সিপালের রুমের দিকে গেল ৷

চলবে,,,,, ,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here