মিশে আছো মুগ্ধতায় – পর্ব ৩২

0
1063

#মিশে_আছো_মুগ্ধতায়
#লেখনীঃআরভি_আহিয়াদ_তিহু
#পর্বঃ32

রাত 9:00

মেঘ নিজের রুম থেকে বের হয়ে ফোন টিপতে টিপতে নিচে নামছিলো। তখনই শুনতে পেলো ড্রইংরুমের সোফায় বসে অভির মামি অভির মাকে উদ্দ‍্যেশ‍্য করে বলছে

“ছেলেকে বিয়ে দেওয়ার জন‍্যে আর কোনো মেয়ে পেলে না সাথি? শেষ পযর্ন্ত কিনা ওই বিদেশি সাদা চুল ওয়ালা মেয়েটার সাথে নিজের ছেলের বিয়ে ঠিক করলে? দেশে কি মেয়ের অভাব পড়েছিলো?”

অভির মামির সাথে তাল মিলিয়ে অভির ছোট খালা বললো

“হ‍্যা আপা, ভাবি তো ঠিকই বলেছে। দেশে এতো মেয়ে থাকতে ওই বিদেশি মেয়েটাকে কেনো ছেলের বউ করার জন‍্যে রাজি হলে বলো তো? ওই মেয়ে ছোট বেলা থেকে বিদেশে বড় হয়েছে, এখন ওই মেয়ের স্বভাব চরিএ কেমন না কেমন তার ঠিক নেই! তার উপর ওর ফ‍্যামিলি কেমন আমরা সেটাও জানি না।”

অভির খালার কথা শেষ হতেই সাথি রহমান কাঠ কাঠ কন্ঠে বললেন

“এতোকিছু দেখার তো আমার কোনো প্রয়োজন নেই। আমার ছেলে যেহেতু ওই মেয়েকে পছন্দ করেছে, তাহলে ওই মেয়ে হান্ড্রেড পার্সেন আমার ছেলের বউ হওয়ার যোগ‍্যতা রাখে। আমি আমার ছেলেকে চিনি। সে কখনো ভুল মানুষকে নিজের লাইফ পার্টনার হিসেবে চুজ করবে না।”

সাথি রহমানের কথা শুনে অভির মামি মুখ বাকিয়ে বললো

“ছেলের উপর এমন অন্ধ বিশ্বাস করার জন‍্যে তোমাকে একদিন পস্তাতে হবে সাথি। আরেহ অভি এখনো ছোট। ওর মাথায় ভালো, খারাপ যাছাই করার মতো বুদ্ধি আছে নাকি? ঝোকের বশে একটা ভুলভাল কাজ করে ফেলবে। যার জন‍্যে সারা জিবন তোমাকে আর শিহাব ভাইকে সেই ভুলের মাশুল দিতে হবে। তারথেকে ভালো সময় থাকতে থাকতে এই বিয়েটা ভেঙে দাও। আমরা অভির জন‍্যে আরো ভালো মেয়ে খুজবো।”

মেঘ এতোক্ষন সিড়ি দিয়ে নামতে নামতে প্রত‍্যেকের কথা গুলো বেশ ভালো ভাবেই শুনতে পেলো। ‘ও’ নিচে এসে দেখলো ড্রইংরুমের এক পাশের দেয়ালের সাথে হেলান দিয়ে মিড়া রহমান মুখ কালো করে দাড়িয়ে আছেন। মেঘ এগিয়ে গিয়ে সোফার সামনে রাখা টি-টেবিলের উপর থেকে এক গ্লাস পানি হাতে নিয়ে সোফার উপর বসে পড়লো। তারপর গ্লাস থেকে এক ঢোক পানি খেয়ে মিড়া রহমানকে উদ্দ‍্যেশ‍্য করে জোড় গলায় বলে উঠলো

“মাম্মাম, বিয়ে উপলক্ষ্যে যারা এসেছে তারা সবাই আমাদের গেস্ট তাইনা?”

মেঘের কথা শুনে সবাই ওর দিকে ভ্রু কুচকে তাকালো। মিড়া রহমান কিছু না বুঝেই হ‍্যা সূচক মাথা নাড়লো। মিড়া রহমানকে হ‍্যা সূচক মাথা নাড়তে দেখে মেঘ গম্ভীর কন্ঠে বললো

“তাহলে গেস্ট’রা যেনো গেস্টদের মতোই থাকে। যদি কারো মুখে আমি এই বিয়েটা ভেঙে দেওয়ার কথা শুনেছি, তাহলে একেকটাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বাসা থেকে বের করে দিবো।”

মেঘের কথা শুনে মিড়া রহমান আর সাথি রহমান চমকে উঠে মেঘের মুখের দিকে তাকালেন। বাকিরা সবাই বসা থেকে দাড়িয়ে মেঘের দিকে অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো। মেঘ একটা ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে আবারো পানির গ্লাসে একটা চুমুক দিয়ে বললো

“আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে কোনো লাভ নেই। আমি আপনাদের এমন রাক্ষসী মার্কা চেহারা দেখে কখনোই নিজের ডিসিশন চেইঞ্জ করবো না। তাই বলছি এখানে থাকতে হলে ভদ্র ভাবে থাকবেন। নাহলে যে যার মতো নিজেদের রাস্তা মাপবেন।”

মেঘের কথা শুনে অভির মামি কর্কশ কন্ঠে বলে উঠলো

“সাথি, কে এই বেয়াদব মেয়েটা? ওর সাহস হলো কিভাবে আমাদেরকে এভাবে অপমান করার? ‘ও’ কি জানেনা, আমরা কারা?”

মেঘ মুখ বাকিয়ে হালকা হেসে বললো

“আমার সাহস টা বরাবরই একটু বেশি আন্টি জ্বী। আর আমি এটাও ভালো করে জানি যে আপনারা কারা। আপনাদের চেহারা গুলো এতো সহজে ভুলবো কিভাবে বলুন তো? আগে আমাদের বাসায় বেড়াতে এসে আমাকে দিয়ে কতো কাজ করাতেন সেটা ভুলে গেছেন? আপনারা ভুলে গেলেও আমি কিন্তু কিছুই ভুলিনি। পুরনো সব কথা আমার বেশ ভালো করেই মনে আছে।”

মেঘের কথা শুনে অভির খালা আর মামি একে অপরের মুখ চাওয়া চাওয়ি করছে। মেঘ কি বলছে ওনাদের মাথায় কিছুই ঢুকছে না। সাথি রহমান লজ্জায় মাথা নিচু করে রেখেছেন। আজম রহমান মেঘকে রেখে বিদেশে চলে যাওয়ার পর আবীরের মায়ের মতো অভির খালা আর মামিও মেঘকে দিয়ে অনেক কাজ করাতো। ওনারা বছরের প্রায় অর্ধেক সময় অভিদের বাসাতেই থাকতেন। আর বাসায় কাজের লোক থাকা সর্তেও ওনাদের টুকিটাকি যতো কাজ আছে সব মেঘকে দিয়ে করাতেন। সাথি রহমান চেয়েও ওনাদের কিছু বলতে পারতেন না। কারন উনি চাইতেন না, ওনার কোনো কথায় ওনার বোন বা ভাবি অপমানিত হোক। তবে উনি যথা সম্ভব নিজের সাধ‍্য মতো সবার আড়ালে মেঘকে আগলে রাখার চেষ্টা করতেন।

অভির খালা আর মামিকে এভাবে মুখ চাওয়া চাওয়ি করতে দেখে মেঘ আবারও বলে উঠলো

“আরেহ এখনো বুঝতে পারছেন না, আমি কে? আচ্ছা আপনাদের কম ঘিলু আর মোটা মাথা ওয়ালা ব্রেনে এতো চাপ দিতে হবে না। আমি নিজেই বলছি যে আমি কে! আপনাদের মনে আছে অভি ভাইয়াদের বাসায় বেড়াতে আসলে আপনারা একটা বাচ্চা মেয়েকে দিয়ে ফুল টাইম মেইডের কাজ করাতেন? আমি হচ্ছি সেই বাচ্চা মেয়েটা।”

মেঘের কথা শুনে অভির খালা আর মামি চোখ বড় বড় করে মেঘের দিকে তাকিয়ে রইলো। ওনারা এখানে সন্ধার দিকে এসেছেন। তাই ওনাদের সাথে মেঘের একবারও দেখা হয়নি। কারন মেঘ, সাড়িকা, সাঈফা নিজেদের কাজ শেষ করে রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলো। যদিও ওদের আজকে শপিংয়ে যাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু কাজ করতে করতে তিনজন এতোটাই ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলো যে শপিং করতে যাওয়ার ইচ্ছেটাই ওদের মরে গেছে। তাছাড়া কালকে সকালেই দিশা আর ওর ফ‍্যামিলির লোকেরা এই ফার্ম হাউজে আসবে। তাই মেঘ মনে মনে ঠিক করে রেখেছে যে দিশাকে নিয়েই ওরা বিয়ের শপিংটা করবে।

অভির খালা আর মামিকে চোখ বড় বড় করে এভাবে নিজের দিকে তাকাতে দেখে মেঘ বাকা হেসে বললো

“এতোটা শকড হবেন না আন্টিরা। আপনাদের বয়স হয়েছে তো। এই বয়সে অতিরিক্ত শকড হয়ে যদি আপনাদের ব্লাড প্রেশার বেড়ে যায়। তাহলে তো সময়ের আগেই আপনাদের উপরে যাওয়ার টিকিট কেটে যাবে। তখন না হবে আপনাদের বিয়ে খাওয়া, আর না হবে আপনাদের চুগলি করা। সো বি কেয়ারফুল!”

কথাটা বলে মেঘ ওর হাতে থাকা গ্লাসটা টেবিলের উপর রেখে বসা থেকে দাড়িয়ে ধুপ-ধাপ করে পা ফেলে উপরে চলে গেলো। আর মেঘের যাওয়ার দিকে অভির খালা এবং মামি হা করে তাকিয়ে রইলো। আজম রহমান এবং মিড়া রহমানের মধ‍্যে যে সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে গেছে সেটা ওনারা আগেই জানতেন। কিন্তু মেঘ যে এতোটা চেইঞ্জ হয়ে গেছে সেটা ওনারা কখনো ধারনাও করতে পারেন নি।

যেই মেঘকে একসাথে কয়েকটা থাপ্পর দিলেও ওর মুখ থেকে কোনো কথা বের হতো না। সেই মেঘ কিনা আজকে এতোগুলো লোকের মধ‍্যে দাড়িয়ে ওনাদের হুমকি দিয়ে গেলো। কথাটা ভাবতেই ওনাদের মাথার মধ‍্যে কেমন ভনভন করে ঘুড়িয়ে উঠছে। মাএ এই কয় বছরে মেঘ ভেজা বিড়াল থেকে বাঘিনি কিভাবে হয়ে গেলো, ওনারা সেটাই বুঝতে পারছেন না?
_________________________
রাত 12:30

বাসার অলমোস্ট সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে। শুধু মেঘ, সাড়িকা, সাঈফা সোফার উপর বসে বসে কালকে কোথা থেকে কী কী শপিং করবে, সেটার প্লানিং করছে। ঘুমে তিনজনের চোখই একদম লাল হয়ে গেছে। কিন্তু আপাততো ওদের ঘুমালে চলবে না। কারন আজকে রাতের মধ‍্যে সবকিছু ডিসাইড করতে না পারলে কালকে ওরা ভালোভাবে শপিংটা করতে পারবে না। এতো অল্প সময়ের মধ‍্যে এতোগুলো জিনিস পএ কেনাকাটা করতে গিয়ে সব এলোমেলো করে ফেলবে। তাই ওরা আগে থেকেই সব প্লানিং করে রাখছে।

মিড়া রহমান ড্রাইনিং টেবিলের চেয়ারের উপর বসে মেয়ের কান্ড দেখছেন আর মুচকি মুচকি হাসছেন। উনি এখনো ভাবতেই পারেন না যে ওনার সেই ছোট্ট মেয়েটা এখন এতোটা বড় হয়ে গেছে। নিজের দ্বায়িত্ব নিজে নিতে শিখে গেছে। মেঘের কথা বলার স্টাইল, হাত নাড়ানোর স্টাইল, বিরক্তির সময় কপাল কুচকে ফেলা সবকিছুই মিড়া রহমানকে ভিষন অবাক করে। কারন মেঘের অধিকাংশ দিকই একদম ওর বাবার মতো হয়েছে। ইনফ‍্যাক্ট মাঝেমাঝে মেঘের গম্ভীর হয়ে কথা বলার স্টাইল দেখলে মিড়া রহমানের মনে হয় ওনার সামনে মেঘ নয়, আজম রহমান নিজেই দাড়িয়ে আছেন। কথা গুলো ভাবতে ভাবতে মিড়া রহমান ফিক করে হেসে দিলেন। এর মধ‍্যেই হঠাৎ করে বাসার কলিংবেল বেজে উঠলো। এতো রাতে কলিংবেল বেজে ওঠায় মেঘ, সাড়িকা, সাঈফা তিনজনই অবাক হয়ে দরজার দিকে তাকালো। মিড়া রহমান বসা থেকে দাড়িয়ে দ্রুত গিয়ে দরজা খুলে দিলেন। মেঘ, সাড়িকা, সাঈফা তিনজনই বসা থেকে দাড়িয়ে দরজার দিকে এগিয়ে গেলো। কিন্তু এগিয়ে গিয়ে যা দেখতে পেলো সেটা দেখার জন‍্যে মেঘ মোটেও প্রস্তুত ছিলো না। কারন দরজার সামনে লাগেজ হাতে A.k. দাড়িয়ে আছে। সাথে ওর তিনজন গার্ড এবং ওর অ‍্যাসিটেন্টও আছে। মেঘ অবাক কন্ঠে বললো

“মিঃ A.k. আপনি এতো রাতে এখানে কি করছেন?”

মেঘের প্রশ্ন শুনে A.k. মিড়া রহমানের দিকে তাকালো। মিড়া রহমান চোখ পাকিয়ে মেঘের দিকে তাকালেন। তারপর A.k. কে উদ্দ‍্যেশ‍্য করে বললেন

“মেঘের কথায় কিছু মনে করো না বাবা। আসলে গেস্টদের ইনভাইট দেওয়ার ব‍্যাপারটা তো আমরা বড়’রা দেখছি। তাই বিয়েতে কাকে কাকে ইনভাইট করা হয়েছে সেই বিষয়ে ‘ও’ কিছুই জানে না। তোমরা ভিতরে এসো।”

কথাটা বলে মিড়া রহমান দরজা থেকে সরে এক সাইডে গিয়ে দাড়ালেন। আর A.k. ওর লোকদের নিয়ে বাসার ভিতরে প্রবেশ করলো। মেঘ ভ্রু কুচকে মিড়া রহমানের দিকে তাকিয়ে আছে। ‘ও’ এটাই বুঝতে পারছে না যে A.k. আর ওর লোকদের এই বিয়েতে কে ইনভাইট করেছে। মেঘের ভাবনার মধ‍্যেই A.k. মিড়া রহমানের সামনে এসে হালকা হেসে বললো

“টেনশন করবেন না আন্টি। আমি বাচ্চাদের কথায় কখনো কিছু মনে করি না।”

A.k. এর কথা শুনে মিড়া রহমান ফিক করে হেসে দিলো। আর মেঘ চোখ ছোট ছোট করে A.k. এর দিকে তাকালো। হাসি থামিয়ে মিড়া রহমান দুইজন সাভেন্টের নাম ধরে ডাক দিলেন। ওনারা কিচেন থেকে বের হয়ে মিড়া রহমানের সামনে এসে দাড়াতেই, মিড়া রহমান ওনাদেরকে গেষ্টদের উপরের রুমে নিয়ে যাওয়ার কথা বললেন। তারপর A.k. এর দিকে তাকিয়ে নরম কন্ঠে বললেন

“বাবা তোমরা উপরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নেও। আমি তোমাদের খাবারটা উপরে পাঠিয়ে দিচ্ছি।”

মিড়া রহমানের কথায় A.k. সম্মতি জানিয়ে লাগেজ হাতে নিয়ে সার্ভেন্টদের সাথে উপরে চলে গেলো। ওরা যেতেই মেঘ মৃদ‍্যু চেচিয়ে মিড়া রহমানকে উদ্দ‍্যেশ‍্য করে বললো

“হোয়াট দ‍্যা হেল মাম্মাম! মিঃ A.k. কে এই বিয়েতে ইনভাইট করার লজিকটা তো আমি কিছুতেই বুঝতে পারছি না? ওনার সাথে আমাদের সেদিনই আলাপ হলো। এরমধ‍্যে উনি আমাদের এতোটাও ক্লোজ হয়ে যায়নি যে ওনাকে বিয়েতে দাওয়ার দিয়ে খাওয়াতে হবে।”

মিড়া রহমান কিচেনের দিকে যেতে যেতে বললেন

“ক্লোজ হয়ে যায়নি সেইজন‍্যেই তো ওনাকে এই বিয়েতে ইনভাইট করে ওনার সাথে আমাদের বন্ডিংটা আরো ক্লোজ করতে চাইছি। ওনার সাথে আমাদের বন্ডিং যতোটা ক্লোজ হবে, ততোটা সুষ্ঠুভাবে আমাদের এই প্রজেক্ট টা সম্পূর্ন হবে।”

কথাটা বলে মিড়া রহমান কিচেনে ঢুকে ট্রেতে করে খাবার সাজাতে লাগলেন। মেঘ বিরক্তির স্বরে বললো

“যএসব আজব লজিক। তোমাদের মাথায় এতো ইউনিক চিন্তা ভাবনা কোথা থেকে আসে আমি তো সেটাই বুঝতে পারি না। আরেহ ভাই আমরা যদি সতোতার সাথে কাজটা করি। তাহলে এমনিতেই প্রজেক্ট টা সুষ্ঠুভাবে হবে। এরজন‍্যে ওনাকে বিয়েতে দাওয়াত দিয়ে গিলানোর কি প্রয়োজন?”

“তোমাকে এসব নিয়ে মাথা ঘামাতে হবে না মেঘ। তুমি গিয়ে নিজের কাজ করো।”

কথাটা বলে মিড়া রহমান একটা খাবারের ট্রে উঠিয়ে মেঘের হাতে ধরিয়ে দিলো। মেঘ মুখ ফুলিয়ে মিড়া রহমানের দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে ট্রে হাতে কিচেন থেকে বেড় হয়ে গেলো। মেঘ বের হতেই আরো দুজন সার্ভেন্ট দুটো ট্রে হাতে নিয়ে মেঘের পিছন পিছন গেলো।
_________________________

মেঘ উপরে এসে প্রথমে A.k. এর অ‍্যাসিটেন্টের রুমে খাবার সার্ভ করে দিলো। তারপর ওনার গার্ডদের রুমে এসে খাবার সার্ভ করলো। কিন্তু খাবার সার্ভ করার সময় মেঘ লক্ষ করলো যে ওরা সবাই মাথা নিচু করে ফ্লোরের দিকে নিজেদের দৃষ্টি নিবদ্ধ করে রেখেছে। ভুলেও একটাবার ওরা মেঘের দিকে তাকায় নি। ব‍্যাপারটা মেঘের বেশ অদ্ভুত লাগলো। কিন্তু এটা নিয়ে ‘ও’ তেমন একটা মাথা ঘামালো না।

মেঘ লাষ্ট খাবারের ট্রে টা হাতে নিয়ে A.k. এর রুমের সামনে এসে দাড়ালো। তারপর সার্ভেন্টদেরকে নিচে গিয়ে মিড়া রহমানের কাজে হেল্প করার জন‍্যে বললো। ওরা মেঘের কথা শুনে নিচে চলে গেলো। ওরা চলে যেতেই মেঘ বাকা একটা হাসি দিয়ে ট্রে তে থাকা খাবার প্লেট টার দিকে তাকালো। একবার ভাবলো খাবার গুলোর মধ‍্যে থুথু দিয়ে দিবে, কিন্তু আবার পরক্ষনেই ভাবলো খাবারের সাথে উল্টাপাল্টা কিছু করলে গুনাহ হবে। তাই মেঘ খাবারে থুথু দেওয়ার চিন্তা মাথা থেকে বের করে দরজায় হালকা নক করে রুমের ভিতরে ঢুকলো। কিন্তু রুমের ঢুকেই মেঘের চোখ জোড়া রসগোল্লার মতো বড় বড় হয়ে গেলো। ‘ও’ শকড হয়ে একদম স্টাচু হয়ে ওখানেই হা করে দাড়িয়ে রইলো।

#চলবে..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here