#মিশে_আছো_মুগ্ধতায়
#লেখনীঃআরভি_আহিয়াদ_তিহু
#পর্বঃ36
পিটপিট করে চোখ খুলে নিজেকে একটা চেয়ারের সাথে বাধা অবস্থায় আবিষ্কার করলো মেঘ। ওর চোখের সামনে ভেষে উঠলো কিছুক্ষন আগের মুহূর্তে ঘটে যাওয়া দৃশ্য। মেঘ নিজের রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে ড্রেস চেইঞ্জ করে কড়িডোর দিয়ে নিচের দিকে যাচ্ছিলো। A.k. এর রুমের দরজা খোলা থাকায় হঠাৎ করে মেঘের দৃষ্টি A.k. আর লিয়ানার দিকে পড়ে। ওরা দুজন কিছু একটা নিয়ে ধস্তাধস্তি করছে দেখে মেঘ কৌতূহল বশতো এগিয়ে এসে A.k. এর রুমের সামনে দাড়ায়। আর সেই মুহূর্তে লিয়ানা টান দিয়ে A.k. এর মুখ থেকে মাস্কটা খুলে ফেলে। আর মাস্ক পড়া ব্যাক্তির চেহারা দেখে মেঘ পুরো হতোবম্ভ হয়ে যায়। সেই মুহূর্তে কিছুক্ষনের জন্যে মেঘ স্তব্দ হয়ে গিয়েছিলো। ওর চারপাশে কি হচ্ছে সেদিকে ওর বিন্দুমাত্রও খেয়াল ছিলো না। মেঘের যখন হুশ আসলো তখন ‘ও’ দেখতে পেলো লিয়ানার রক্তাক্ত, নিস্তেজ শরীর’টা ফ্লোরে পড়ে আছে। আর পুরো ফ্লোর রক্তে লাল বর্ন ধারন করেছে। চারপাশে এতো রক্ত দেখে মেঘ নিজেও আর সোজা হয়ে দাড়িয়ে থাকতে পারলো না। সেন্সলেস হয়ে ঠাস করে ফ্লোরে পড়ে গেলো।
মেঘ স্টাচু হয়ে চেয়ারের উপর বসে আছে। ওর দৃষ্টি ফ্লোরের দিকে নিবদ্ধ। ওর চোখ থেকে টুপটাপ করে গাল গড়িয়ে পানি পড়ছে। আপাততো ‘ও’ কোথায় আছে, কিভাবে আছে সেদিকে ওর একটুও খেয়াল নেই। এই মুহূর্তে ‘ও’ অন্য হিসেব মিলাতে ব্যাস্ত। মেঘ হুট করে নিজের চোখ জোড়া বন্ধ করে বিরবির করে নিজেকে নিজেই প্রশ্ন করলো
“A.k. নামের মানে কী আ-আহান খ-খান? নাকি আমি যা দেখেছি সব কিছু আমার চোখের ভুল ছিলো?”
মেঘের নিজেকে নিজের করা প্রশ্নের প্রতি উওরে সামনে থেকে কেউ জবাব দিয়ে বলে উঠলো
“উহুম, তুমি যা দেখেছো সেসব একদমই তোমার চোখের ভুল ছিলো না। A.k. এবং আহান খান একজন ব্যাক্তিই।”
সামনের ব্যাক্তিটির কথা শুনে মেঘ ঝট করে চোখ খুলে সামনে তাকালো। সামনে তাকিয়ে ওর চোখ জোড়া সামনে দাড়িয়ে থাকা ব্যাক্তিটার উপর আটকে গেলো। মেঘের থেকে কিছুটা দূরে আহান দাড়িয়ে আছে। আহানের পড়নে এখনো সেই মেহেন্দির অনুষ্ঠানে পড়া ড্রেস। মেঘ পলকহীন দৃষ্টিতে আহানের দিকে তাকিয়ে আছে ঠিকই। কিন্তু ওর চোখ থেকে অনবরত পানি পড়ছে। আহান হালকা হেসে মেঘের কাছে এগিয়ে এসে একটা চেয়ার টেনে ওর সামনে বসে পড়লো। তারপর কিঞ্চিৎ ভ্রু কুচকে মেঘকে উদ্দ্যেশ্য করে বললো
“কি হলো এভাবে কান্নাকাটি করে নাকের পানি, চোখের পানি এক করে ফেলেছো কেনো? আমি তো এখন পযর্ন্ত তোমাকে কিছুই বলিনি।”
মেঘ অসহায় দৃষ্টিতে আহানের দিকে তাকিয়ে কান্নারতো কন্ঠে বললো
“তুমি এতোদিন কোথায় ছিলে আহান? জানো, তুমি সেদিন আমাকে রেখে চলে যাওয়ার পর আমার সাথে কী হয়েছিলো? কয়েকটা ছেলে আমাকে….”
মেঘের কথার মধ্যে আহান ওকে থামিয়ে দিয়ে বিরক্তির স্বরে বলে উঠলো
“তোমার সাথে সেদিন কি হয়েছিলো সেসব জেনে আমার কোনো লাভ নেই মেঘ। আর আমার এসবে কোনো ইন্টারেস্টও নেই। আমি তোমার বাবার থেকে রিভেঞ্জ নিতে চেয়েছিলাম। তাই তোমাকে বিয়ে করে আমি আমার রিভেঞ্জ নিয়েছি। আর তারপর আমার গার্লফ্রেন্ড কে নিয়ে আমি থাইল্যান্ড চলে গেছি। ভেবেছিলাম আর কখনো এই দেশে ফিরবো না। কিন্তু আমার টাকা-পয়সা, বিজনেস, সম্পত্তি এইগুলো তো আর আমি অন্যদের ভোগ করতে দিতে পারিনা, তাইনা? সেইজন্যে নিজের জিনিস নিজেকে বুঝে নিতে আমাকে আবার এখানে ফিরে আসতেই হলো।”
আহানের কথা শুনে মেঘ বিষ্ফোরিত দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকালো। মেঘ কখনো ভাবতেও পারেনি আহানের মুখ ওকে এসব কথা শুনতে হবে। দুই বছর আগে মেঘের ফোনে যখন আহানের দেওয়া লাস্ট মেসেজ গুলো এসেছিলো তখন মেঘ ক্ষনিকের জন্যে ভেঙে পড়েছিলো ঠিকই। কিন্তু ‘ও’ সব সময় মনে মনে এটা বিশ্বাস করতো যে আহান এই মেসেজ নিজের ইচ্ছেতে দেয়নি। কারো কথায় বাধ্য হয়ে দিয়েছে। মেঘ ভেবেছিলো আহান একদিন ফিরে এসে ওকে সব সত্যিটা ক্লিয়ার করে বলে ওকে আবার আপন করে নিবে। কিন্তু আহানের মুখ থেকে এসব কথা শোনার পর মেঘের সব আশা-ভরসা ভেঙে চুড়ে তছনছ হয়ে গেছে। মেঘকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে আহান ভ্রু নাচিয়ে বললো
“হোয়াট? এভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছো কেনো মেঘ? তোমার তো এতো শকড হওয়ার কথা না। আমি তো তোমাকে সেদিনই মেসেজ দিয়ে সবটা জানিয়ে দিয়েছিলাম।”
মেঘ আহানের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ম্লানো হাসলো। তারপর ভাঙা ভাঙা কন্ঠে বললো
“তখন ফোনের মেসেজ গুলো দেখে বিশ্বাস করতে পারিনি যে তুমি আমাকে এই কথা গুলো বলতে পারো। আমি ভেবে ছিলাম তুমি হয়তো কারোর কথায় বাধ্য হয়ে আমাকে ওই মেসেজ গুলো করেছিলে। কিন্তু আজকে তোমার মুখ থেকে সবটা শুনলাম তো, তাই একটু শকড হয়ে গেছি আরকি। তবে যাই হোক আজকে আমার দুই বছরের সমস্ত অপেক্ষার অবশান ঘটলো।”
মেঘ কথাটা বলার সাথে সাথে আহান হো হো করে হেসে দিলো। মেঘ শুধু নির্জীব হয়ে আহানের হাসি মুখটার দিকে তাকিয়ে রইলো। আহান কোনো মতে নিজের হাসি থামিয়ে বললো
“হোয়াট ইজ দিস মেঘ? আমি যেই কথাগুলো মেসেজে স্পষ্ট ভাবে তোমাকে জানিয়ে দিয়েছি সেই কথাগুলো তুমি আমার মুখ থেকে শোনার জন্যে দুই বছর ধরে ওয়েট করেছো? লাইক সিরিয়াসলি? তারমানে আমি যদি এখনো ফিরে না আসতাম, তাহলে তুমি এখনো আমার জন্যে অপেক্ষা করতে?”
মেঘ ঠোটের কোনে হাসি রেখেই বললো
“হ্যা, হয়তো।”
আহান কপাল কুচকে বললো
“ওহ শাটআপ মেঘ। তুমি যথেষ্ট ম্যাচিউর একটা মেয়ে। তোমাকে কাছ থেকে অন্তত আমি এই ধরনের স্টুপিড মার্কা কথাবার্তা আশা করি না। আরেহ পিছনে যা হয়েছে সবকিছু ভুলে গিয়ে মুভ অন করো। আমাকে দেখো, আমি এতোদিন লিয়ানাকে নিয়ে কতো সুন্দর ভাবে নিজের লাইফটাকে ইনজয় করেছি। আর তুমি?”
লিয়ানার নাম শুনতেই মেঘের কপালে কিছুটা ভাজ পড়লো। ‘ও’ আহানের দিকে তীক্ষ্ম দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বললো
“লিয়ানাকে নিয়ে যদি এতোই শান্তিতে ছিলেন তাহলে ওকে মারলেন কেনো?”
আহান স্বাভাবিক কন্ঠেই বললো
“কিছুদিন ধরে মেয়েটা অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করছিলো। আমার কোনো কথাই শুনছিলো না। তাই ওর উপরে যাওয়ার টিকিট কেটে দিলাম।”
মেঘ হতোবিহ্বল দৃষ্টিতে আহানের দিকে তাকিয়ে বললো
“শুধুমাত্র আপনার কথা শুনছিলো না বলে আপনি একটা মানুষকে এভাবে জানে মেরে দিলেন? আপনার মধ্যে কি মনুষ্যত্ব বলে কিছু নেই? আপনি কি পুরোপুরি একদম জানোয়ারে পরিনত হয়ে গেছেন নাকি?”
মেঘের কথা শুনে আহান মেঘের দিকে তীক্ষ্ম চোখে তাকালো। তারপর দাতে দাত চেপে বললো
“মুখ সামলে কথা বলো মেঘ। নাহলে তোমার অবস্থাও লিয়ানার মতো করতে আমার এক মিনিটও সময় লাগবে না।”
মেঘ ঝাড়ি মেরে বললো
“হুমকি দিচ্ছেন আমাকে? আপনার কি মনে হয়, আমি আপনার এসব কথা শুনে ভয়ে মরে যাবো? ফর ইউর কাইন্ড ইনফরমেশন মিঃ আহান খান আমি আপনাকে একটুও ভয় পাই না।”
আহান বাকা হেসে মেঘের দিকে একটু ঝুকে ওর মুখের উপর এলোমেলো হয়ে পড়ে থাকা চুলগুলো ওর কানের পিছনে খুজে দিতে দিতে বললো
“ভয় পাও না ঠিক আছে। কিন্তু ভয় পেতে কতোক্ষন।”
মেঘ মাথায় ঝাড়া দিয়ে আহানের হাতটা সরিয়ে ফেললো। তারপর চিল্লিয়ে বললো
“ডোন্ট টাচ মি মিঃ আহান খান। আপনার ওই নোংরা হাত দিয়ে আমাকে ভুলেও স্পর্শ করার চেস্টা করবেন না। আমি আপনাকে হেট করি।”
মেঘের কথাটা আহানের কানে আসতেই ‘ও’ নির্বিকার ভাবে কিছুক্ষন মেঘের দিকে তাকিয়ে রইলো। তারপর বসা থেকে দাড়িয়ে মেঘের হাত-পায়ের বাধন খুলতে খুলতে বললো
“তুমি হেট করলেও আমার কিছু যায় আসে না। আর লাভ করলেও আমার কিছু যায় আসে না। শুধু একটা কথা সব সময় মাথায় রেখো। আজকে তুমি যা দেখেছো বা যা শুনেছো তারথেকে একটা কথাও যদি কাউকে বলেছো তাহলে তোমাকেও সোজা লিয়ানার কাছে পার্সেল করে দিবো।”
কথাটা বলতে বলতে আহান মেঘের হাত-পায়ের বাধন খুলে ফেললো। ছাড়া পেয়ে মেঘ বসা থেকে উঠে দাড়িয়ে পড়লো। তারপর আহানের মুখোমুখি দাড়িয়ে কড়া গলায় বললো
“আপনার এসব সস্তার হুমকি নিজের পকেটে রাখুন। আমি এক্ষুনি গিয়ে সবাইকে সবটা বলে দিবো। ওদেরও তো জানা উচিৎ, ওরা সব সময় যাকে এতোটা ভালোবেসেছে সে এখন কতোটা নিচে নেমে গেছে।”
কথাটা বলে মেঘ রুমের দরজার দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্যে পা বাড়াতেই আহান মেঘের হাত চেপে ধরলো। তারপর ওর হাত ধরে টেনে ওকে নিজের সামনে এনে দাড় করিয়ে দিয়ে বললো
“কোথায় যাচ্ছো? আর কাকেই বা বলতে যাচ্ছো? তুমি কি জানো যে এই মুহূর্তে তুমি কোথায় দাড়িয়ে আছো?”
আহানের কথা শুনে মেঘ প্রশ্নবোধক চাহনিতে ওর দিকে তাকালো। আহান মুখ বাকিয়ে হেসে বললো
–“তুমি এখন আমার বাংলোতে দাড়িয়ে আছো। যেখানে আজ অবদি আমি আর আমার লোকরা ছাড়া কেউ ভিতরে ঢুকতে পারেনি। আর আমার অনুমতি ছাড়া কেউ বের হতেও পারেনি। সো আমি যদি না চাই তাহলে তুমি এখান থেকে কোথাও যেতে পারবে না।”
মেঘ ঝাড়া মেরে নিজের হাতটা আহানের থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বললো
–“আমাকে আটকে রাখার সাধ্য আপনার নেই। আমি তো এখান থেকে বের হবোই। দেখবো আমাকে কে আটকায়।”
–“ওকে চেষ্টা করে দেখতে পারো।”
মেঘ আর কোনো কথা না বলে হনহন করে রুমটা থেকে বেড়িয়ে গেলো। তারপর সিড়ি বেয়ে নিচে নেমে এসে মেইন দরজার লক খুললো। দরজা খুলে বাইরে তাকাতেই মেঘ দেখলো বাড়িটার চারোপাশে কালো পোশাক পড়া গার্ডরা দাড়িয়ে আছে। মেঘ কারো কোনো তোয়াক্কা না করে বাসা থেকে বের হয়ে সামনের দিকে হাটা দিলো। কিন্তু দু-কদম যেতেই কোথা থেকে দুটো কুকুর দৌড়ে এসে মেঘের সামনে ঘেউঘেউ করে উঠলো। মেঘ ভয় পেয়ে মাম্মাম বলে জোড়ে একটা চিৎকার দিয়ে এক দৌড়ে আবারও বাসার ভিতরে এসে ঠাস করে দরজাটা লক করে দিলো। এদিকে আহান সিড়ির কাছে দাড়িয়ে দাড়িয়ে মেঘের কান্ড দেখে হেসে কুটিকুটি হচ্ছে। মেঘ বুকে হাত দিয়ে জোড়ে জোড়ে নিশ্বাস নিচ্ছে। আহান হাসতে হাসতে বলে উঠলো
“কি হলো ম্যাডাম দুটো কুকুর দেখেই সব সাহস ফুশশশ হয়ে গেলো? এইটুকু সাহস নিয়ে আপনি এতোক্ষন আমাকে এ্যাটিটিউট দেখাচ্ছিলেন?”
মেঘ রাগি দৃষ্টিতে আহানের দিকে তাকিয়ে বললো
“দেখুন বেশি বাড়াবাড়ি করবেন না। আপনার গার্ডদের বলুন কুকুর দুটোকে ওখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যেতে। নাহলে কিন্তু খুব খারাপ হয়ে যাবে।”
আহান মুখ বাকিয়ে বললো
“বলবো না। দেখি তুমি আমার কি করতে পারো।”
মেঘ এবার বিরক্তি ভরা কন্ঠে বললো
“আহান প্লিজ আমাকে যেতে দিন। আমার এখানে একদমই ভালো লাগছে না। আমি বাসায় যাবো।”
আহান ডোন্ট কেয়ার একটা ভাব নিয়ে এগিয়ে এসে সোফার উপর বসে পড়লো। তারপর বললো
“আমি কি তোমার হাত-পা বেধে রেখেছি নাকি? দরজা তো খোলাই আছে সাহস থাকলে চলে যাও।”
মেঘ রাগে ফুশতে ফুশতে এসে আহানের উল্টোদিকের সোফার উপরে মুখ গোমড়া করে বসে রইলো। আহান কিছুক্ষন মেঘের পা থেকে মাথা অবদি পর্যবেক্ষণ করে শান্ত গলায় বললো
“দেখো, এখন তোমার এখান থেকে যাওয়ার একটাই পথ। সেটা হলো তুমি আমার সব শর্তগুলো মেনে নেও তাহলে আমি নিজে তোমাকে ওখানে নিয়ে যাবো। আর নাহলে যতোদিন পযর্ন্ত না আমি আমার লক্ষ্যে পৌছাচ্ছি ততোদিন পযর্ন্ত তোমাকে এখানেই থাকতে হবে।”
আহানের কথা শুনে মেঘ গম্ভীর মুখে কিছু একটা ভাবতে লাগলো। আহান আবারও বললো
“একবার ভেবে দেখো মেঘ আমার শর্তটা তুমি যদি মেনে না নাও, তাহলে তুমি এখান থেকে কোথাও যেতে পারবে না।তোমাকে অর্নিষ্টকালের জন্যে এখানেই আটকে থাকতে হবে। আর ওইদিকে তোমার ফ্যামিলির লোকজন তোমাকে খুজে না পেয়ে পাগল হয়ে যাবে। আবার এমনও হতে পারে যে তোমার বাবা তোমাকে খুজে না পেয়ে হার্ট অ্যাটাক করে সোজা উপরে চলে গেলো। তারথেকে ভালো তুমি আমার শর্ত গুলো মেনে নিজের ফ্যামিলির কাছে ফিরে যাও। আর আমি আমার কাজ গুলো করে চুপচাপ নিজের গন্তব্যে চলে যাই।”
মেঘ কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বললো
“ওকে আমি আপনার সব শর্ত মানতে রাজি আছি। কিন্তু আপনাকেও আমার একটা শর্ত মানতে হবে।”
আহান সরু চোখে মেঘের দিকে তাকিয়ে বললো
“কি শর্ত?”
মেঘ বসা থেকে দাড়িয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে বললো
–“আপনি নিজের টাকা-পয়সা, সম্পত্তি নিয়ে সারা জিবনের জন্যে আমাদের লাইফ থেকে দূরে চলে যাবেন। ভবিষ্যতে কখনো আর আমাদের কারো সাথে যোগাযোগ করার চেস্টা করবেন না। কারন আমি চাই না, আপনার মতো নোংরা মানষিকতার মানুষের কোনো ছায়া আমাদের কারোর লাইফে পড়ুক। আর হ্যা, যাওয়ার আগে ডিবোর্স পেপারটায় সাইন করে যাবেন। আপনার মতো চিটারের জন্যে মেঘের লাইফে আর কোনো জায়গা নেই। আজকে থেকে আপনার আর আমার পথ সম্পূর্ন আলাদা।”
মেঘের কথা শুনে আহান কিছু বললো না। শুধু মলিন একটু হাসি দিয়ে উপরে যাওয়ার জন্যে পা বাড়ালো।
পিছন থেকে মেঘ কঠিন স্বরে বলে উঠলো
–“আই রিয়েলি হেট ইউ আহান। আমি আমার লাইফের সবচেয়ে বড় ভুল করেছি আপনার মতো কুকুরের চেয়েও অধম একটা মানুষকে ভালোবেসে। আপনি যদি কখনো মরেও যান না? তাও আমি কখনো আপনার মুখ দেখবো না। আই যাষ্ট হেট ইউ।”
মেঘের কথা গুলো আহান স্পষ্ট শুনতে পেলো। কিন্তু কিছুই বললো না, পিছনে ঘুড়ে একবার তাকালোও না। সামনের দিকে তাকিয়ে হনহন করে সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে গেলো।
#চলবে……..