#মেঘবতী_কন্যা পর্ব২৮
#সুমাইয়া আক্তার মিম
_
ঘুটঘুটে অন্ধকার।চারিদিকে বইছে শীতল ঝড়ো হাওয়া। মিনিটখানেকের মাঝে প্রকৃতিকে এলোমেলো করে ঝড় বইতে শুরু করলো, যা পরিণতি নিয়েছে বিশাল আকারে। বাতাসের তিব্র ঝাপটায় গাছপালা গুলোকে দুমরে মুচড়ে শেষ করে দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা। বাতাসের সাথে চারিদিকে ঘোলাটে পরিবেশ, আকাশের তিব্র বজ্রপাত সব মিলিয়ে ধরনীর বুকে জেনো ধ্বংসের নেমে এসেছে।বেশ কিছুক্ষণ বাদে ঝড় কিছুটা কমে আসে,শুরু হয় মুষলধারে বৃষ্টি।সে কী বৃষ্টি!কোনো থামাথামির জু নেই।একধারে বৃষ্টি হয়েই যাচ্ছে।সময় রাত আটটা নাগাদ…..ঝড়ের তিব্র গতি আর একধারে বৃষ্টির প্রভাবে চারিদিক নিস্তব্ধ আর নিস্তেজ।থেমে থেমে ঝড়ো হাওয়া বইছে আর তাঁর সাথে পাল্লা দিয়ে গাছ-পালা গুলো এদিক সেদিক হেলেদুলে ওঠছে। বৃষ্টির পানিতে ভিজিয়ে দিচ্ছে চারিপাশ। গ্ৰাম বাংলায় বলা যায়,শীতের রাতে এমন বৃষ্টি দিগুন শীত নামানোর পূর্বাভাস। নিউ ইয়র্ক শহরের রাস্তাগুলো এতোক্ষণে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে, তেমন কোনো কোলাহল আর লোকজনের যাতায়াত নেই। হাইওয়ের মাঝে কিছুক্ষণ পরপর গাড়ি সু সু করে নিজ গন্তব্যে ছুটে চলছে।বেশ বড়সড় ঝড় বইছে চারিপাশে তাই যাদের ঝড় সম্পর্কে পূর্ব ধারণা ছিলো তাঁরা এতোক্ষণে নিজ গন্তব্যে পৌঁছে গিয়েছে কিন্তু আটকে পরেছে সেসব মানুষজন যারা এই ঝড় সম্পর্কে পূর্ব ধারণা ছিলো না।এই ঝড়ে বাহিরে বের হওয়া মানে নির্ঘাত মৃত্যু।তাই যারা নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেনি কোথাও না কোথাও আশ্রয় নিয়ে নিজেদের প্রটেক্ট করে চলছে।
.
অন্ধকার রুমে শুধু কয়েকটি ছোট ছোট মোমবাতি জ্বালিয়ে রাখা হয়েছে। রুমের জানলা খুলে দিলে এক দমকা হাওয়া রুমের ভেতরে সবকিছু তছনছ করে দিবে।বেশ পুরানো আমলের বাড়িটি জুরে শুধু কয়েকটি পুরাতন আলিশান ঘড় রয়েছে।আজ সকালে এখানে নিজের দলবল নিয়ে পরিচয় লুকিয়ে ওঠেছে ছায়ান।বারিশ জেনে গিয়েছে তাঁর সম্পর্কে তাই বারিশের লোকজন থেকে বাঁচতে এখন থেকে সে ছদ্মবেশের আশ্রয় নিয়েছে।সে খুব দুরন্ত ব্যক্তি কিছুতেই বারিশ খানের সংস্পর্শে আসবে না তাইতো প্রতিমুহূর্তে বারিশের ধরাছোঁয়ার বাহিরে থাকার জন্য জায়গা বদলাতে থাকবে।রূপকে নিজের করে পাওয়ার পর রূপকে সঙ্গে নিয়ে এই দেশ ছেড়ে নিজ দেশে ফিরে যাবে সেই কুটিল পরিকল্পনা তাঁর। বাহিরে এখনো খুব জোড়েসরে ঝড় বইছে।প্রকৃতিকে তছনছ করে দিবে এমন ঝড়ো হাওয়া বইছে চারিপাশে।ছায়ান নরম তুলতুলে বিছানার উপর শুয়ে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে হাতে থাকা রূপের বড় একটি ছবির দিকে।তার চারিপাশে সম্পূর্ণ বিছানায় এলোমেলো ভাবে ছড়িয়ে রয়েছে রূপের বেশ অনেকগুলো ছবি। কিন্তু দুর্ভাগ্য বশত মাত্র তিনটি ছবিকে সে অনেক গুলো কপি করে অসংখ্য বানিয়ে রেখেছে।এই ছবিগুলো সে বারিশের পাশে থাকা রূপের কাপল পিক থেকে আলাদা করে ইডেট করে বের করেছে। ড্রাগস নিয়ে মাতাল হয়ে রূপের ছবিতে চিলের মতো চোখ দিয়ে বিশ্রীভাবে তাকিয়ে তাকিয়ে গিলে খাচ্ছে। বারবার নিজের হাতের স্পর্শে ছুঁইয়ে দিচ্ছে রূপের চোখ,মুখ, ঠোঁট আর বিরবির করে এলোমেলো ভাবনায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে।রূপকে কাছ থেকে পাওয়ার জন্য তাঁর নিকৃষ্ট মনে লালসার বিচ বিচরণ করছে। পাগলের মতো বিশ্রীভাবে ছুঁয়ে দিচ্ছে। রূপের ছবিটি নিজের মুখ বরাবর আনিয়ে যখন চুমু খেতে যাবে তখনি বারান্দার দরজা বেদ করে এক দমকা হাওয়া রুমের সবকিছু লন্ডবন্ড করে দিলো।ছোট ছোট মোমবাতি গুলো কখনি বুঁজে গিয়েছে হঠাৎ সজোরে কিছু পড়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে যাওয়ার আওয়াজে ছায়ানের সম্পূর্ণ নেশা কেটে
যায়। লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম।বিছানা থেকে চট করে উঠে এদিক সেদিক তাকাতে লাগলো কিন্তু অন্ধকারে কিছুই দেখা যাচ্ছে না সে শুধুমাত্র বাহিরের ঝংকার দেওয়া বজ্রপাতের আলো বারান্দার দরজা ভেদ করে রুমে প্রবেশ করলে খানিকটা আলো হয়ে আবার মিলিয়ে যায়। বাহিরের ঝড়ো হাওয়া রুমে প্রবেশ করাতে রুমের সবকিছু এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। বিছানায় পড়ে থাকা রূপের ছবি গুলো উড়ে এদিকে সেদিক ছড়িয়ে পড়েছে।ছায়ান রেগে চিৎকার করে তাঁর সঙ্গীদের ডাকতে শুরু করলো।গার্ডরা তক্ষুনি রুমে ছুটে এসে প্রথমে বারান্দার দরজা আটকিয়ে রুমের মোমবাতি গুলো পুনরায় জ্বালিয়ে দিলো।ছায়ান দাঁত কিরমির করে মাটিতে পড়ে থাকা রূপের ছবি গুলো তুলতে লাগলো, বেশ বিরক্ত সে। নেশা পুরোপুরি কেটে গিয়েছে তাই পুনরায় আবার নেশা করতে হবে। হঠাৎ চোখ গেলো সামনের দেওয়ালে তাঁর ঝুলন্ত ছবিটি আর নেই। মাটিতে সজোরে পড়ে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গিয়েছে।ছায়ান রেগে পাগলের মতো ব্যবহার শুরু করেএমন দৃশ্য দেখে। তাঁর নিজের, সবচেয়ে প্রিয় ছবিটি ভেঙে গুঁড়িয়ে গিয়েছে সেটা তাঁর সহ্য হচ্ছে না। চিৎকার করে গার্ডদের ধমকাতে লাগলো।সকলে এমন দৃশ্য দেখে বেশ ভয় পেলো।ছায়ান নিজের ছবিটি হাতে নিয়ে ভালো করে দেখতে লাগলো, সম্পূর্ণ ছবিটি ভেঙে গিয়েছে।এটা ছায়ানের সবচেয়ে প্রিয় একটি ছবি।গতবার অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় আর্টিস দিয়ে খুব সুন্দর কারুকার্যে মাঝে ছবিটি আর্ট করিয়েছে। নিজের ছবিটি এমন ভেঙে গুঁড়িয়ে যাওয়া, নিজের ধ্বংসের আগাম দৃশ্য দেখতে পাচ্ছে সে। একটি কাঁচ ভাঙ্গা উঠিয়ে একজন গার্ডের গলায় চেপে ধরে হিসহিসিয়ে বললো,
‘আমার অস্তিত্ব ভেঙ্গে গুড়িয়ে যাচ্ছে আর ইউ ‘ফুল’ দেখে মজা নেওয়া হচ্ছে। এক্ষুনি ছবিটি রিপিয়ার করিয়ে আনবে। আমার এটা ঠিক আগের মতো চাই। আমার ধ্বংসের চিন্তা যে করে তাঁর ধ্বংসের কারণ আমি হবো। সবকিছু শেষ করে ধ্বংস স্তুপ বানিয়ে দিবো।’
নিজের মতো করে পাগলের মতো প্রলাপ করছে।গার্ড ভয়ে মাথা নাড়িয়ে ছবিটি নিয়ে রুম ত্যাগ করেন। ছায়ান রূপের ছবিটি হাতে নিয়ে মি.রিপনের কথা ভাবতে শুরু করেন,এটা কোনো মেয়ে নয় সয়ং জলজ্যান্ত মৃত্যুর ফাঁস যা তিলে তিলে আপনাকে শেষ করে দিবে বস। কথাটা মনে পড়তে ছায়ান উচ্চ স্বরে হেসে উঠলো। পাগলের মতো বিরবির করে বলে উঠলো,
‘তুমি আমার তৃপ্তি বেবিডল, ধ্বংস নয়। তোমাকে নিজের আলিঙ্গন করা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সফলতা। খুব শীঘ্রই তোমাকে নিজের করে খুব দূরে নিয়ে যাবো,দ্যা বারিশ খানের থেকে খুব দূরে।প্রেয়সী বিনা ধুঁকে ধুঁকে মরবে দ্যা বারিশ খান। আহ্ কি শান্তি!এই প্রশান্তির জন্য খুব শীঘ্রই তোমাকে আমার হতে হবে বেবিডল আর কোনো অপেক্ষা নয়। শুধু শুভক্ষণের অপেক্ষা। তারপর…তারপর সবকিছু শেষ।’
বলে নিজের মতো হাসতে লাগলো সে।
_
“শহর জুড়ে বৃষ্টি নামুক,
তুমি খুঁজে নিও ঠাঁই।
প্রতিটি বৃষ্টির কোনায় লেখা থাকুক,
আমি তোমাকে চাই।”
বৃষ্টি নিয়ে রোমান্টিক মুহূর্তের কথা লিখেছেন হাজারো কবি।প্রতিটি কথা ছুঁয়ে গিয়েছে হাজারো প্রেমিক অপ্রেমিকের মনে। এমনি একটি বৃষ্টি মুখর পরিবেশ উপভোগ করছে বারিশ আর রূপ।বারিশের মুখে অদ্ভুত সুন্দর হাঁসি আর তাঁর জন্য দুই লাইন বলা ছোট্ট কবিতাটি মনে অন্যরকম শিহরণ খেলে যায়। রুমের বড় থাইয়ের পাশের ডিভাইনের উপর বসে আছে বারিশ আর তাঁর কুলে বসে বুকে মাথা রেখে বৃষ্টি বিলাস করছে রূপ। অন্ধকার রুম। এতোক্ষণ জলন্ত সব লাইট অফ করে এখানে এসে পর্দা ঠেলে দুজনে এক সাথে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করছে। লেখিকা সুমাইয়া আক্তার মিম। বাহিরে অন্ধকার, থেকে থেকে বিদ্যুৎ চমকানো সব মিলিয়ে অসাধারণ মুহূর্ত। থাইয়ে এসে পরা বৃষ্টির ছোট বিন্দু গুলো চুঁইয়ে চুঁইয়ে পড়ছে, হঠাৎ দমকা হাওয়া সেগুলোকে ছড়িয়ে দিচ্ছে। সেই দৃশ্য চেয়ে চেয়ে দেখছে রূপ।বারিশ রূপের আর তাঁর শরীরে জড়িয়ে রাখা লাল চাদরটা আরেকটু গভীর ভাবে জড়িয়ে নিলো। রূপের কানে আলতো করে ঠোঁট চেপে ছেড়ে দিলো। কেঁপে উঠলো রূপ। সেদিকে তাকিয়ে মৃদু হাসে বারিশ। কন্ঠে মাধুর্য এনে বলে উঠলো,
‘রূপ জান, আমার না খুব আদর আদর পাচ্ছে। ইচ্ছে করছে তোমার রসগোল্লার মত রসালো গাল দুটো কামড়িয়ে খেয়ে ফেলি।’
বারিশের কথায় নাক কুচকালো রূপ। মুখে বিরক্তি ঢেলে গম্ভীর কণ্ঠে বলে উঠলো,
‘একদম দুষ্টুমি করবেন না মি.খান। তাহলে এই বৃষ্টির রাতে আপনাকে দিয়ে শিউলি ফুল পাড়িয়ে আনবো।তা আবার বাগানের সবচেয়ে উঁচু গাছ থেকে।’
রূপের কথায় হাসলো বারিশ। মুখটাকে দুঃখি দুঃখি করে বলে উঠলো,
‘পাষান পরীজান। একটুও মায়া নেই।’
হাসলো রূপ।নিচু স্বরে বলে উঠলো,
‘উহুম। আমি আপনার মতো এতো নির্লজ্জ নই।’
বারিশ রূপের মুখটা নিজের দিকে টেনে ঠোঁটে ঠোঁট বসিয়ে দিলো। বেশ কিছু সময় বাঁধে ছেড়ে বললো,
‘এর থেকে হাজার গুণ নির্লজ্জ হতে পারি শুধু তোমার জন্য। কিন্তু আমার নির্লজ্জের ভার বহন করা তোমার মতো চুনোপুঁটির কাম্য নয়।’
রেগে উঠলো রূপ।বারিশের বুকে কিল ঘুষি মেরে বলে উঠলো,
‘আপনি সত্যি নির্লজ্জ। আজকে মেরেই ফেলবো আপনাকে। অসভ্য ছেলে মানুষ।’
ঘর কাঁপিয়ে হেসে উঠলো বারিশ। রূপের হাত দুটো শক্ত করে চেপে ধরে নিজের বুকের মাঝে ঠেকালো। চমৎকার হেসে নাকে নাক ঘষে বলে উঠলো,
‘তোমার জন্য এমন নির্লজ্জ হয়ে হাজার বার মরতেও রাজি মাই লাভ।’
হাসলো রূপ। মিষ্টি মিষ্টি কথার জালে ফাঁসানো কেউ এই মি.এরোগেন্ট থেকে শিখে নেওয়া উচিত। এমন বৃষ্টি ভেজা রাতে হাজারো দুষ্টু মিষ্টি খুনসুটিতে মেতে উঠলো দুজন।রাত গভীর হচ্ছে সাথে চারিদিকের হিম শীতল হাওয়া বাড়ছে।ঝড়ের গতি কমে এসেছে।আকাশ জুড়ে শুধু ঝিরিঝিরি বৃষ্টির বিচরণ। এমন একটি রাতে অলস ভাবনাগুলো ঘুম ঘুম চোখে অনুভব।রূপ বারিশের সাথে গল্প করতে করতে অনেকক্ষণ আগেই বারিশের বুকে নেতিয়ে ঝাপটে ধরে ঘুমিয়ে পরেছে।সেই তখন থেকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে বারিশ তাঁর পরীজানের মুখের দিকে। রূপের কপালে চুমু খেয়ে সযত্নে কুলে তুলে বিছানার দিকে অগ্রসর হলো।নরম তুলতুলে বিছানায় খুব সাবধানতার সঙ্গে রূপকে শুইয়ে দিয়ে নিজেও রূপের পাশে শুয়ে পড়লো রূপকে বুকে জড়িয়ে। রূপের দিকে দৃষ্টি রেখে মৃদু হেসে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঘুমের দেশে তলিয়ে গেলো।
মাঝরাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে গেলো বারিশের। বুকের মাঝে গরম কিছু অনুভব হচ্ছে। চমকে তাকালো বুকের সাথে লেপ্টে গভীর নিদ্রায় মগ্ন তাঁর প্রেয়সীর দিকে। উদ্বিগ্ন হয়ে আলতো হাতে রূপের কপাল ছুঁয়ে দিতে বুঝতে পারলো আবারো জ্বর এসেছে।লাইট জ্বালিয়ে পাশের টেবিল থেকে জ্বর মাপার যন্ত্রটি নিয়ে জ্বর মাপিয়ে দেখলো তেমন বেশি জ্বর নয়, কিন্তু যেকেনো সময় শরীর কাঁপিয়ে ভীষণ জ্বর উঠতে পারে!বারিশ খুব চিন্তিত হলো। সন্ধ্যায় ঔষধ খাওয়ানোর পরেও কেনো জ্বর আসবে?ডাক্তার কী ঠিক ঔষধ দেয়নি! কথাটি ভাবতেই মিনিটে রেগে উঠলো বারিশ। মোবাইল বের করে কল করতে যাবে তখনি মনে পরলো, গতকাল তো এই ঔষধ কাজ হয়েছে এবং ডাক্তার জানিয়েছেন দুই দিন ঠিকমতো কনটিনিউ করলে শরীর একদম সুস্থ হয়ে যাবে। বেস্ট ডাক্তার মিসেস লিনাকে দেখিয়েছে তাহলে ভুল হওয়া সম্ভবনা কম।কিছু একটা ভেবে বেশ বিরক্ত হলো বারিশ।এই মেয়ে নিশ্চয়ই তখন ঔষধ সেবন না করে ফেলে দিয়েছিলো। প্রতিবারের মতো আজো তাকে ঔষধ খাইয়ে বারিশ মুখ চেপে ধরে রেখেছিলো।রূপ চোখ মুখ কুঁচকে এমন একটি ভাব নিলো যে সে ঔষধ খেয়ে নিয়েছে। কিন্তু সত্যি বলতে সে মুখের কোণে ঔষধ রেখে দিয়েছিল আর সুযোগ বুঝে তা ফেলে দিয়েছে।এই মেয়ের ঔষধ খেতে কী সমস্যা বারিশ বুঝতে পারে না?বারিশ পুনরায় ঔষধ নিয়ে রূপকে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে মুখে ঔষধ পুরিয়ে পানি দিয়ে মুখ চেপে ধরলো। ঘুমের মাঝেও রূপ চোখ মুখ খিচে বিরক্তি প্রকাশ করলো।বারিশের হাত ছাড়িয়ে ঔষধ ফেলে দিতে চাইছে।বারিশ শক্ত হাতে মুখ চেপে রাখলো যতোখন না ঔষধ গিলেছে ঠিক ততোক্ষণ।কী বজ্জাত মেয়ে? ঘুমের মাঝেও ফাঁকিবাজি করার ধান্দা। ঔষধ খাওয়া শেষ হলে বারিশ মুখ থেকে হাত সরিয়ে আনে।হাত সরাতে ঘুমের ঘোরে রূপ ঠোঁট উল্টিয়ে বলে উঠলো,
‘পঁচা কোলবালিশ।’
হাসলো বারিশ। রূপের গালে হাত রেখে নাকে নাক ঘসতে লাগলো। আলতো ভাবে রূপের ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ছুঁইয়ে দিলো।
রূপ এইবার ঘুমন্ত অবস্থায় চোখ মুখ খিচে নিলো।আধো আধো চোখ খুলে বারিশের দিকে তাকিয়ে নাক ফুলিয়ে বললো,
‘এক চিমটি লজ্জা করুন মি.খান। সবসময় শুধু চুমাচুমি করা। আপনি বড্ড বেশি নির্লজ্জ মি.খান। খুব খুব….খুব বেশি।’
কথাটা বলে পুনরায় ঘুমের দেশে তলিয়ে গেলো রূপ।বারিশ বুঝতে পারলো ঘুমের ঘোরে এসব বকছে।বারিশ নিঃশব্দে হাসলো। রূপের কপালে অধর ছুঁইয়ে বুকের সাথে চেপে ধরলো ।তাঁর বুকের প্রশান্তি, সুখে থাকার একমাত্র মূল্যবান ঠিকানা তাঁর রূপজান, তাঁর প্রাণভোমরা, তাঁর অস্তিত্ব।
#চলবে,,,❣️
[লেখিকা-সুমাইয়া আক্তার মিম✵]
❌ গল্প কপি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ❌
সবাই গল্প পড়ে গল্প সম্পর্কে দুই লাইন গঠন মূলক মন্তব্য করবেন আশা করছি।