প্রেমমানিশা – পর্ব ২৬

0
317

#প্রেমমানিশা(২৬)

বসার ঘরে বিস্তর আলোচনা চলছে। ফারহান আর সানাহ্ বিয়ে নিয়েই সব আলোচনা। সকলে মিলে আলোচনা করলেও এই আলোচনার নিরব শ্রোতা দর্শক হিসেবে সানাহ্, ফারহান আর অতসী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ওরা তিনজন খুবই মনযোগ দিয়ে বড়দের আলোচনা শুনছে। বিয়ে সানাহ্ আর ফারহানের হলেও বিয়ের সব কাজের দায়ভার যেন মিসেস আশা আর মিসেস কায়নাতই নিয়েছেন। দুজনে ঘণ্টার পর ঘন্টা শুধু এটাই আলোচনা করছেন গয়নাগাটি, সানার বিয়ের লেহেঙ্গা এসব নিয়ে।

অতসী মনমরা হয়ে বসে আছে আর ফারহান সানাহ্ নীরবে ইশারায় ইশারায় প্রেম নিবেদন করে চলেছে। হঠাৎ সানার কানে ওর মায়ের বলার একটা কথা যেতেই সানার মস্তিষ্ক সজাগ হয়ে উঠলো। এতক্ষণ ফারহানের দিকে মনযোগ দিয়ে রেখেছিল বলে পূর্বের আলোচনা কিছুই কানে ঢুকেনি। মনে হলো জননীদের এখনই থামানো দরকার নাহলে ওর বিয়ে অথচ কোনোকিছুই ওর ইচ্ছা মতো হবে না।

সানাহ্ কিছু বলতে যাচ্ছিল কিন্তু ফারহান ইশারায় ওকে থামতে বলল। ফারহানের ইশারায় সানাহ্ আর কিছু বললো না তবে এবার ফারহান বললো ‘ আঙ্কেল আমি জানিনা আপনারা আমার কথা কিভাবে নিবেন কিন্তু আমি কথাগুলো বলতে বাধ্য। কাল পরশু সানাহ্ আর আমার বিয়ে। দুই দিন পর আমরা স্বামী স্ত্রী হতে যাচ্ছি তাই এই কথাগুলো ক্লিয়ার না করলে আমাদের ভবিষ্যৎ জীবনে এটার প্রভাব পড়বে।

আমি শুনেছি আপনারা বলছিলেন যে বিয়ের অনুষ্ঠান আপনারা ধুমধাম করে করবেন। আমি তাতে কোনো দোষ দেখছিনা কারণ সানাহ্ আপনাদের বড় মেয়ে। কিন্তু একটা প্রবলেম আছে। এত লোকজনকে নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠানে সানাহ্ আদৌ খুশি তো ?

আমি যতটুকু জানি ও হলো নিঃসঙ্গতা প্রিয় মানুষ। তাই এতজন মানুষ নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠানগুলো ওর পছন্দ হওয়ার কথা না। আমি নিজেও চাইবো না এতজন মানুষের মধ্যে এতগুলো অনুষ্ঠান করতে। তার থেকে বিয়ের অনুষ্ঠানগুলো বাদ দেওয়া যায়। আপনাদের একান্তই ইচ্ছা থাকলে বিয়ের বৌভাত করতে পারেন।

আবার সানার গয়না নিয়েও আপনারা আলোচনা করছিলেন যে আপনারা সানাহ্কে ভরি ভরি গয়না দিবেন আর আমার কিছু দেওয়ার প্রয়োজন নেই। আমি কি জানতে পারি কেন আমি কিছু দিবো না ? সানার সঙ্গে বিয়ে হচ্ছে তাই সে আমার থেকে সবকিছু পাওয়ার দাবিদার। আমি যদি দিতে অক্ষম হতাম তাহলে একটা কথা ছিল। কিন্তু আমার সামর্থ্য অনুযায়ী সানাহ্কে গয়না দেওয়া আমার জন্য কঠিন কোনো ব্যাপার না। হ্যাঁ হয়তো আপনাদের মতো লাক্সারিয়াস গয়না দিতে পারবো না কিন্তু দিতে তো
পারবো আর আই থিঙ্ক সানাহ্ তাতেই খুশি। ব্যাস আপনার এগুলোই বলার ছিল। এখন আপনারা যদি রাজি থাকেন তাহলে তো ভালই নাহলে কিইবা আর করবো। ‘ কথাগুলো বলেই ফারহান সানার দিকে দৃষ্টি দিলো। সানাহ্ ফারহানের দিকে নির্নিমেষে তাকিয়ে আছে। গভীর সেই দৃষ্টি। যেন দৃষ্টিতে ডুবে আছে সানার প্রতি এক রাশ ভালোবাসা।

ফারহান যতটা আশা করেছিল সকলে ততটা শকিং রিয়াকশন দেয়নি বরং অনেকটা স্বাভাবিক ভাবেই ফারহানের প্রস্তাব মেনে নিয়েছে। আবার মিসেস কায়নাত আর মিস্টার কবির ফারহানের সিদ্ধান্তে বেশ অনেকটা খুশি হয়ে ফারহানের অনেক প্রশংসাও করেছেন। সেই সঙ্গে বিয়ের আগেই সানার মন বুঝতে পারার কথা বলে এক রাশ লজ্জা তো আছেই। ফারহান সবটাই নতমুখে মেনে নিয়েছে।

অবশেষে দুপুরের খাওয়া দাওয়া শেষে মিসেস আশা আর ফারহান নিজেদের নীড়ে ফিরে গেলেন। যাওয়ার আগে সানাহ্ আর ফারহানের বিয়ের দিনও ঠিক করে গেছেন। পূর্বে নির্ধারিত দিনের এক সপ্তাহ আগেই আকদের দিন ঠিক হয়েছে। এক সপ্তাহ আগে ঠিক করার পিছনে অবশ্য যুতসই কারণ আছে। বিয়ের পরপরই সানার ইয়ার ফাইনাল আর বিয়ের চক্করে কিছুদিন তো তার পড়াই হবে না।। তাই যাতে পরীক্ষার সময় পড়ার সুযোগ হয় এই জন্যই এই ব্যবস্থা।
বিয়ের দিনক্ষণ হিসেবে পহেলা বসন্তের দিন ঠিক হয়েছে। মিসেস আশার বিশ্বাস পহেলা বসন্তের শুভ রং সানাহ্ আর ফারহানের বিবাহিত জীবনেও শুভেচ্ছা বয়ে আনবে। বসন্তের রঙে রাঙিয়ে দিবে সানাহ্ আর ফারহানের পরবর্তী জীবন।

আকদের পরপরই মেয়ে উঠিয়ে নেওয়ার নিয়ম থাকলেও এই ব্যাপারে মিসেস আশা নিজেকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করেছেন। যেহেতু সানার বিয়ের পরপরই ইয়ার ফাইনাল তাই এখনই সানাহ্কে উনি পুত্রবধূ রুপে বাড়িতে তুলে সানার পড়ালেখার উপর থেকে মনযোগ সরাতে চাচ্ছেন না। এক্ষেত্রে সানাহ্ তার পরীক্ষা বাপের বাড়ি থেকেই দিবে এবং পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর সানাহ্কে উনি যোগ্য পুত্রবধূ রুপে পূর্ণাঙ্গ সম্মান দিয়ে নিজ হাতে বরণ করে বাড়িতে তুলবেন। এর মধ্যে নাহয় ফারহান ফাঁকে ফাঁকে এসে সানার সঙ্গে দেখা করে যাবে।

ব্যাপারটা সকলেই লাইটলি নিয়েছে। একদিক দিয়ে ভালই হয়েছে। বিয়ের পরপরই সানাহ্ সাংসারিক ব্যাপারে জড়িয়ে গেলে সানার পড়ালেখার ব্যাপারটা হ্যাম্পার হওয়ার পসিবিলিটিজ থেকে যেত তাই মিসেস আশার সিদ্ধান্ত বেশ পছন্দ হয়েছে সবার। ফারহান, সানাহ্ নিজেদের কথা ভেবে মিসেস আশার সিদ্ধান্ত সসম্মানে মেনে নিয়েছে।

‘ আপাই খেতে চল… মা খেতে ডেকেছে ‘

আচমকা অতসীর ডাকে সানার চিন্তায় ছেদ পড়ল। সানাহ্ ব্যস্ত ছিল ওর আর ফারহানের বিয়ের পরবর্তী জীবনের ভবিষ্যৎ ভাবনা নিয়ে। তবে অতসীর ডাকে আর সেই দিকে মাথা ঘামালো না। নিঃশব্দেই অতসীর কথায় সায় দিয়ে রাতের খাবার খাওয়ার জন্য পা বাড়ালো।

—-

‘ আমি জানি তুমি আমাকে ইচ্ছা করে ইগনোর করছো মিস ইন্ডিয়া। আমি এই কদিনে তোমাকে যতগুলো চিরকুট দিয়েছি সেই সব যে তোমার হাতে গেছে সেটা আমাকে সন্ধ্যা জানিয়েছে। কিন্তু আমি এটা বুঝতে পারছিনা তুমি কেন আমাকে এড়িয়ে চলছ। কথা ছিলো তুমি আমার সঙ্গে দেখা করবে কিন্তু তুমি তোমার নামের মতোই মিস ইন্ডিয়া। মিস ইন্ডিয়ার মতো আমার সামনে ধরা দাওনি। প্লিজ আমার সঙ্গে দেখা করো মিস ইন্ডিয়া। আমি ফর দা লাস্ট টাইম তোমার সঙ্গে কথা বলতে চাই। প্লিজ…. ডু ইট ফর মি। প্লিজ ফর গড সেক আমার সঙ্গে দেখা করো নাহলে আমি নিজে তোমাকে খুজে বের করবো। তুমি কি চাও আমি তোমাকে খুজে বের করি ? ‘ হাতে থাকা কালো রঙের চিরকুটে শুভ্র রঙে রাঙা লেখাগুলো দেখে নিজের অজান্তেই অতসীর চোখের কোল বেয়ে গড়িয়ে পড়ল এক ফোঁটা অশ্রু।

অশ্রু যখন কাগজের কোলে আপন মহিমায় শিলায় পরিণত হতে ব্যস্ত অতসী তখন নিজেকে শক্ত করে চিরকুটটা জিন্সের পকেটে রেখে নিজের ব্যাগ থেকে এক টুকরো হলুদ কাগজ বের করে তার পিঠে লিখলো ‘ Ok, meet me at seven in the evening at Dhanmondi lake’s cafe after one week ‘ । চিরকুটটা লিখেই সন্ধ্যার হাতে ধরিয়ে দিল অতসী। সন্ধ্যা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে অতসীর দিকে। সে অতসীর চোখের অশ্রুর মানে বুঝতে অপারগ তবে এটা বুঝলো তার অতসদি ভালো নেই। একেবারেই ভালো নেই। তবুও কিছু বললো না। চুপচাপ চিরকুট হাতে চলে গেলো।

জরুরী এক হিসাব নিয়ে বসেছে লিজা। কিছুতেই হিসাব মিলাতে পারছে না সে। বারবার যেন হিসাবে গরমিল লেগে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে এই উল্টাপাল্টা হিসাবের জেরে লিজার গরম মাথাটাই না ব্লাস্ট হয়ে যায়। নাহ এখন এই হিসাব রেখে এক কাপ গরম ধোঁয়া ওঠা চা খাওয়া উচিত। তাহলে যদি মাথাটা এক ঠান্ডা হয়। কী অদ্ভুত কথা তাইনা ? গরম খেলে মাথা ঠান্ডা হবে। এটাই তো পার্থিব পৃথিবীর অপার্থিব চাওয়া।

ফোন করে বলতেই লিজাকে এক কাপ ধোঁয়া ওঠা চা দিয়ে গেলো পিয়ন। লিজা সেই চা নিয়ে কেবিনের জানালার ধারে এক রাশ মুগ্ধতা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এক সিপ এক সিপ করে চা খাচ্ছে আর বাহিরের মনোরম পরিবেশ দেখছে। হঠাৎ কেবিনের দরজায় কারোর করাঘাত শুনে লিজার ভাবনায় ছেদ ঘটলো। হাতে থাকা খালি চায়ের কাপটা ডেস্কে রেখে নিজের জায়গায় গিয়ে বসলো। আবার নিজের কাজে মনযোগ দিয়ে দ্রুত গলায় বললো ‘ কাম ইন প্লিজ ‘

লিজার বরাবর সামনে অতসী বসে আছে। অতসীর মুখের দিকে তাকাতে পারছে না লিজা। কাদতে কাদতে যেন অতসীর চোখ মুখ বসে গেছে। অতসীর এই অনবরত কান্নার কারণ জানা নেই লিজার। তবে সে কারণ জিজ্ঞেস করেছে কিন্তু ক্রন্দনরত অতসী কিছুতেই সেই প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে না। বারবার শুধু কেঁদেই চলেছে। অতসীকে এভাবে কাদতে আগে কখনও দেখেনি লিজা। তবে কান্নার কারণ না জানলে তো লিজা কিছু করতে পারবে না। এক পর্যায় লিজা রাগী গলায় বললো ‘ কি হয়েছে তুমি কি আমাকে কিছু বলবে অতসী ? যদি কান্নাই করার থাকে তাহলে তুমি এই রুম থেকে বের হয়ে যেতে পারো। আমার কেবিনে কান্নাকাটি এলাউ না। নেক্সট টাইম সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে দিবো যেন দ্বিতীয়বার কেউ কাদতে না আসে। ‘

এবার মনে হয় লিজার কথা কিছুটা কাজে দিয়েছে। অতসী তার ফ্যাসফ্যাস করা কান্না বন্ধ করেছে। মুখ চেপে জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে। এতক্ষণ কান্না করার কারণে নিশ্বাস নিতেও যেন কষ্ট হচ্ছে। অতসী কোনোমতে ওর মুখ চেপে বড় বড় নিশ্বাস নিল। তারপর নিজেকে শান্ত করলো। এবার নিজেকে শান্ত করে ধীর স্থীর গলায় বললো ‘ আমি তোমাকে আমার ফ্রেন্ড মানি লিজা তাই ফর দা লাস্ট টাইম তোমার কাছে একটা সাহায্য চাইছি। তুমি কি আমাকে সাহায্য করবে লিজা ? আই রিয়েলি নিড ইউর হেল্প…ফর দা লাস্ট টাইম ‘ ।

লিজা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে অতসীর দিকে।আজকের মতো বিদ্ধস্ত অবস্থায় অতসীকে সে আগে কখনও দেখেনি। এমন কি কখনও মনেও হয়নি এরকম ভাবে অতসীকে দেখতে হবে। অতসীর এরকম অবস্থায় পিছনে কারণ কি ? অতসীকে জিজ্ঞেস পড়ার পরও তো সে কিছু বলেনি। তাহলে কি ব্যাপারটি প্রেম ঘটিত কিছু ?

কাদতে কাদতে অতসীর চোখ মুখ ফুলে লাল হয়ে উঠেছে। বিভৎস দেখাচ্ছে তাকে। যেই অতসীর দিকে লোকে একবার তাকাল ফের একবার তাকালে বাধ্য হতো সেই অতসীকে আজ দেখলে লোকে দেখতেই চাইবে না। কোথায় গেলো অতসীর রূপ লাবণ্য ? সব কি ধুয়ে মুছে গেছে প্রণয়ের বিরহে ? কেন অতসী নিজেকে প্রণয়ের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রাখতে চাইছে ? কেউ জানেনা এই প্রশ্নের উত্তর..

‘ Ok, meet me at seven in the evening at Rabindra Sarobar’s cafe after one week ‘

লেখাটা আনমনে বারবার পড়ছে প্রণয় তবুও যেন তার বিশ্বাস হতে চাইছে না যে ওর মিস ইন্ডিয়া ওর সঙ্গে দেখা করতে রাজি হয়েছে। বারবার মনে একটাই প্রশ্ন আসছে মিস ইন্ডিয়া এত তাড়াতাড়ি রাজি কি করে হয়ে গেলো ? যেখানে মিস ইন্ডিয়া ওকে তিন চারদিন এমনিতেই ইগনোর করেছে সেখানে একটা হুমকির ভয়ে রাজি হয়ে গেল ? ব্যাপারটা কি অস্বাভাবিক না ? আর রাজিই যদি হয়ে থাকে তাহলে সেটা এক সপ্তাহ পরে কেন ? আজকে কেন নয় ?

নাহ্ আর ভাবতে পারছে না প্রণয়। এই ব্যাপারে যত ভাববে মাথার ভোতা যন্ত্রণাটা ততই বাড়বে। এখন কিছুতেই সে আর এই ব্যাপারে ভাববে না। কিন্তু ভাবতে না চাইলেই কি মন পোষ মানে ? মন তো শুধু তার নিজ ইচ্ছায় চলে। মন বলছে তার মিস ইন্ডিয়া কিছু একটা লুকচ্ছে তার কাছ থেকে ? কিন্তু জিনিসটা কি সেটাই জানা নেই প্রণয়ের।

দুই দিন পর….

ক্লান্ত, উদাসীন আর উদ্ভ্রান্ত টলমলে পায়ে সিড়ি দিয়ে নেমে আসছে সানাহ্। গাঁয়ে এখনও কাল রাতের সেই ফুল হাতা নাইট ড্রেস জড়ানো। চোখগুলো রক্তিম ও টলমলে। কপালের রগ জানান দিচ্ছে আবারও সেই সর্বনাশা জ্বরের প্রকোপে পড়েছে সানাহ্। কাল রাতটা সানার নিদারুণ কষ্টে কেটেছে। আবারও দুশ্চিন্তা আর ডিপ্রেশন ঘর করেছে মনে। নতুন করে বাসা বেধেছে বিয়ে আর ফাইনাল পরীক্ষা নিয়ে চিন্তা।

কাল সারারাত চিন্তায় চিন্তায় এক মুহুর্ত চোঁখ দুটো মেলাতে পারেনি সানাহ্। সানার এই দুশ্চিন্তার শুরু যবে থেকে ওর আর ফারহানের বিয়ের তারিখ ঠিক হয়েছে। বারবার শুধু একই কথা মাথায় ঘুরছে সে পারবে তো সংসার পড়াশুনা সামলে শাশুড়ির মন যুগিয়ে চলতে। সংসারের মত সমরঙ্গণে যেকোনো বীর যোদ্ধাও ভয়ে তার মুখ লুকায়। সেখানে সানাহ্ তো নেহাৎই নস্যি। ছোটো ছোটো ব্যাপারে আত্ম বিশ্বাস হারা হওয়া তার জন্যই স্বাভাবিক বটে।

ক্লান্ত উদ্ভ্রান্ত সানাহ্ দুই দিন ধরেই শান্তির ঘুম বিসর্জন দিয়েছে। এই দুই দিনে আজ যাও বা ভোরের দিকে কয়েক ঘণ্টার জন্য ঘুমিয়েছিল সেটাও এখন উড়ে গেলো। এখন বাজে সকাল আটটা আর এই সময়েই দীর্ঘ দুই ঘণ্টার ঘুম তার পথযাত্রার ইতি টানল।

সানাহ্ ক্লান্ত হলেও তার এখনও কব্জি ডুবিয়ে খাওয়ার শক্তি উধাও হয়নি। সারারাত জেগে থাকায় খিদে এমন লেগেছে যে মনে হচ্ছে খিদের জেরে সানার পক্ষে আট-দশটা ব্রেড টোস্ট খাওয়া মোটেই কঠিন কিছু হবে না। সানাহ্ যখন উদাস ভঙ্গিতে টোস্টেড ব্রেডের গাঁয়ে বাটার লাগাতে ব্যস্ত ঘর্মাক্ত মিসেস কায়নাত তখন এক ঝলক দেখা দিয়ে গেলেন সানাহ্কে যেন মেয়ে তার ডেরাতেই ফিরেছে তার নিশ্চয়তা নিচ্ছেন।মিসেস কায়নাতকে দুই-একবার ঢু মারতে দেখেও সানাহ্ কিছুই বললো না। খিদের তাপে তার এখন কোনদিকেই চোখ দেওয়ার জো নেই। নিজের খুদা মিটানই তার এখন মূল উদ্দেশ্য….

~ চলবে ইনশাআল্লাহ্….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here