#বৈধ_দৃষ্টি
#পর্বঃ১২+১৩
#ফাতেমা_জান্নাত
—“আমাকে মিথ্যে কেন বলে ছিলে মা?কেন বলে ছিলে সাইফ ভাইয়া কে রাফিয়া ভাবি খু’ন করেছে”?
আচমকা জিসান এর মুখে এহেন কথা শুনে চমকে যায় মনিরা।ভয়ে মনিরা এর বুক কাঁপতে থাকে।ভয় টা অন্য কিছু নিয়ে নয়।ভয় টা হচ্ছে তার ছেলে যে সত্য টা যেনে গেছে।এই সত্য জেনে যদি তার ছেলে তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে?মনিরা যখন নিজ এর ভাবনার জগতে মগ্ন জিসান তখন তার মা এর দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি তে তাকিয়ে আছে।জিসান তার মা কে নিরব থাকতে দেখে আবার বলে উঠে,
—কি হলো বলো মা।কেন মিথ্যে বলে অন্যের সংসার ভাঙ্গতে চেয়ে ছিলে?
জিসান এর কথায় মনিরা এবার বেশ পুষে উঠে ছিলো। চোখ মুখ কুঁচকে ফেলে চেঁচিয়ে বলে উঠে,
—“”বেশ করেছি।রাফিয়া মেয়ে টা কে কোনো কালে- ই আমার পছন্দ ছিলো না।রাফিয়ার কারণে সাইফ তোর বড় বোন জেরিন কে বিয়ে করে নি।ওকে আমি কত করে বলে ছিলাম জেরিন ওকে পছন্দ করে।জেরিন কে বিয়ে করতে।আর ও কি করেছে?ওই কালো মেয়ে টা কে বিয়ে করে নিয়েছে।ওই মেয়ের জন্য সাইফ একবার শিয়ান কে থা’প্পড় পর্যন্ত মে’রে ছিলো। কিছু ভুলে যায় নি আমি।রাফিয়ার জন্য এত কিছু হওয়ার পর দেখলাম তুই রাফিয়া কে অধিক বেশি সম্মান দিচ্ছিস। অথচ নিজ এর ভাই বোন এর দিক টা ভাবিস নি।দেখিস নি।এসব দেখে রা’গ যেন আমার আরো মাথা ছাড়া দিয়ে উঠ ছিলো। এর মধ্যে -ই হঠাৎ করে সাইফ মা’রা যায়।সাইফ মা’রা যাওয়ার পর দিন -ই তুই সিঙ্গাপুর থেকে ফোন করে ছিলে আমাকে।আমি জানি তুই আর সাফওয়ান এক সাথে থাকিস সিঙ্গাপুর এ।তাই তোর কাছে নিজ এর মন গড়া বানিয়ে বানিয়ে এত কিছু বলে ছিলাম। রাফিয়া কে সাইফ এর খু’নি বানিয়ে বলে ছিলাম তোর কাছে।আমি ভেবে ছিলাম তুই সাফওয়ান কে সব কিছু বলবি। আর সাফওয়ান রাফিয়া কে সত্যি সত্যি সাইফ এর খু’নি ভেবে বাসা থেকে বের করে দিবে।কিন্তু আমার ভাবনা কে তুই পুরো জলে ডুবিয়ে দিয়ে ছিলে।তুই সাফওয়ান কে কিছু- ই বলিস নি।সাফওয়ান ও রাফিয়া কে বাড়ি থেকে বের করে নি।উলটো তিন মাস পরে বাড়িতে এসে কয়েক মাস পরে- ই ওই কালো রাফিয়া মেয়ে টা কে বিয়ে করে নেয়।এই সাফওয়ান কে ও আমি কত বলেছি তোর বোন শিরিন কে বিয়ে করতে। কিন্তু বিপরীত তত বার- ই সাফওয়ান আমাকে মুখ এর উপর কথা শুনিয়ে দিয়েছে।সাইফ সাফওয়ান এর মতো কড়া কড়া কথা না শুনালে ও ও উঠানোর মাথায় যা বলতো তা অপমান এর চাইতে কম কিছু না।আর ওর বউ টা কে ও কিছু বলা যেতো সাথে সাথে উত্তর দিতো কথার।ওরা তিন জন আমাকে কম অপমান করে নি।আর করেছে তো ওই রাফিয়া মেয়ে টার জন্য।তাই ওকে বাড়ি থেকে বের করার জন্য সাইফ এর মৃ’ত্যুর সাথে ওকে ফাঁ’সানোর প্ল্যান করে ছিলাম। কিন্তু সব কিছু তে ঘেটে ঘ হয়ে গিয়েছে।””
কথা গুলো বলে -ই থামে মনিরা।জিসান তার মা এর দিকে তাকিয়ে আছে।সে বিশ্বাস করতে পাচ্ছে তার সামনে বসে থাকা মহিলা টা তার জন্মদাত্রী মাতা।তার মা যে এত টা নিচু স্বভাব এর সে এটা বিশ্বাস – ই করতে পারছে না।হিংসা মানুষ কে কত টা নিচে নামাতে পারে সেটা হয়তো জিসান তার মা কে না দেখলে বুঝতে কিংবা জানতে পারতো না।
জিসান এর চোখ জ্বলে উঠে তার মা এর এসব নিচু কাজ এর কথা শুনে। তবু ও নিজে কে ধাতস্থ করে মনিরা এর উদ্দেশ্যে বলে উঠে,
—এত টা নিচু কাজ তুমি কি ভাবে করতে পারলে?এত টা হিংসা কেন তোমার রাফিয়া ভাবি কে নিয়ে?
—ওর কারণে আমি জেরির কে কাঁদতে দেখেছি।ওর কারণে সাইফ জেরিন কে বিয়ে করেনি। ওর কারণে সাইফ শিয়ান কে মে’রে ছে।আর এসব কিছু দেখে জেনে ও আমি একজন মা হয়ে চুপ করে থাকবো? এত তা ভালো আমি নই।
—কষ্ট হলে ও বলতে বাধ্য হচ্ছি যে সত্যি -ই তুমি একটু খানি ও ভালো না।তুমি যেন কি বল ছিলে?সাইফ ভাইয়া শিয়ান ভাইয়া কে মে’রে ছে?সেখানে মা’রার ও যথেষ্ট কারণ আছে।তুমি তা জানো।একজন স্বামীর কাছে যদি তার স্ত্রী কে নিয়ে কেউ বাজে কথা বলে সেখানে যে কোনো স্বামীর – ই রা’গ উঠা টা অস্বাভাবিক না।সাইফ ভাইয়া তো শুধু থা’প্পড় মে’রে ছিলো শিয়ান ভাইয়া কে।উচিত ছিলো তো মে’রে ফেলার নয়তো শিয়ান ভাইয়া এর চোখ দুটো -ই উপড়ে ফেলার।যাতে কারো বউ এর দিকে বাজে নজরে না তাকাতে পারে।আর তুমি একজন মা হয়ে ছেলের এর বাজে কাজ টা প্রশ্রয় দিচ্ছো? জবাব নেই তোমার।আর সাইফ ভাইয়া সব সময় জেরিন আপু কে ছোট বোন এর নজরে দেখেছে।আর সেখানে কিনা তুমি এসব ভাবছো?জেরিন আপু আর শিরিন যে ভাবে বেপর্দা ভাবে চলে এতে সাইফ ভাইয়া আর সাফওয়ান অন্তত কোনো দিন তাদের বিয়ে করতে রাজি হতো না।সেটা তোমাকে আগে অ তারা বলে ছিলো। এবং কি তারা এটা অ তোমাকে বলেছে তারা দুই জনে- ই শিরিন আর জেরিন আপু কে নিজে দের বোন এর মতো মনে করে তাই বিয়ে করা সম্ভব না।আর তুমি তাদের এই “না” করা তে ক্ষোভ জমিয়ে রেখে রাফিয়া ভাবির উপর একটা মিথ্যে এলিগেশন দিলে?সাইফ ভাইয়ার মৃ’ত্যুর সাথে জড়ালে?মৃ’ত্যু কেউ মিথ্যে বলে মা?তোমার বুক কাঁপেনি কারো মৃ’ত্যু নিয়ে এত বড় মিথ্যে বলতে?
কথা গুলো বলে- ই তপ্ত নিশ্বাস ছাড়ে জিসান। চোখে তার পানি চিক চিক করছে।তার বিশ্বাস করতে যেন কষ্ট হচ্ছে তার মা এত সব কিছুর পিছনে আছে।জিসান মনিরা এর সামনে থেকে উঠে যায়।কিছু দূর যাওয়ার পর আবার ফিরে এসে বলে,
—তোমাকে আমি কখনো ক্ষমা করতে পারবো না মা,অন্তত যত দিন না তুমি সঠিক পথে আসছো তত দিন পর্যন্ত তুমি আমার কাছে একজন মিথ্যে বাদী মা হয়ে থাকবে।
বলেই জিসান আর এক মুহূর্ত সেখানে না দাঁড়িয়ে থেকে বেরিয়ে আসে।বের হয়ে- ই ফোন বের করে সাফওয়ান কে ফোন দেয়।আর সাফওয়ান কে ফোন করে এতক্ষণে বলা সব কিছু বলে।
–
যেই দিন আয়ান সাফওয়ান কে রাফিয়া সাইফ এর খু’নি কথা গুলো বলে ছিলো। সেই দিন রাতে সাফওয়ান বাসায় গিয়ে তো রাফিয়ার সাথে রাগা রাগি করে বাসা থেকে বের হয়ে আসে।বের হওয়ার আগে সাবিনার রুমে যায়।সাবিনার থেকে ইনিয়ে বিনিয়ে কথা বলে সাইফ এর রিপোর্ট প্রেসক্রিপশন এর ফাইল টা ডাক্তার মাফুজ এর কাছে যাওয়ার জন্য রওনা হয়।যাওয়ার পথে- ই জিসান কে ফোন করে আয়ান এর বলা কথা গুলো পুনরায় জিজ্ঞেস করে।
সাফওয়ান জিসান কে কথা গুলো জিজ্ঞেস করতে- ই জিসান বলে কথা গুলো তাকে সাইফ এর মৃ’ত্যুর পর এর দিন মনিরা তাকে ফোন করে বলেছে।মনিরা জিসান কে কথা গুলো বলেছে জানতে- ই সাফওয়ান জিসান কে বলে,”ফুফু কে এখনি পুনরায় সামনে বসিয়ে সব কিছু জিজ্ঞেস কর।আমার কেন যেন মনে হচ্ছে উনি সত্যি বলছেন না”।সাফওয়ান এর এই কথা শুনার পর জিসান নিজ এর মা এর ঘর এর দিকে পা বাড়ায় সব কিছু জিজ্ঞেস করতে। আর সাফওয়ান যায় ডাক্তার মাফুজ এর কাছে।যেহেতু তখনো সাফওয়ান জানে না কে দোষী। তাই মনে সন্দেহ রেখে- ই ডাক্তার মাফুজ কে কথা গুলো বলে।ডাক্তার মাফুজ এর সাথে কথা বলে হসপিটাল থেকে বের হয়ে সাফওয়ান যখন ড্রাইভ করে বাসায় যাচ্ছিলো। ঠিক তখন -ই জিসান ফোন দেয় সাফওয়ান কে।আর সাফওয়ান ফোন রিসিভ করে কানে ধরতে -ই জিসান সাফওয়ান কে বলে,”সাফওয়ান এর ধারণা -ই সত্যি। মনিরা সাইফ এর মৃ’ত্যুর সাথে রাফিয়া কে জড়িয়ে খু’নি বানিয়ে ছে।মিথ্যে বলে ছিলো জিসান কে।আর চেয়ে ছিলো রাফিয়া কে সাফওয়ান এর বাড়ি থেকে বের করতে।”
আর জিসান এর মুখ থেকে এসব কথা শুনার পর সাফওয়ান এর রন্ধ্রে রন্ধ্রে যেন অনুশোচনা এসে ভর করে।বাইরে কিছুক্ষণ থেকে রাত একটা ত্রিশ মিনিটে বাসায় পৌছে।
–
চাকরি সূত্রে জিসান সিঙ্গাপুর থাকে চার বছর।সাফওয়ান যখন চাকরির কারণে সিঙ্গাপুর যায় তখন জিসান এর বাসায় গিয়ে উঠে।আর সেই টা জেনে- ই মনিরা জিসান এর কাছে রাফিয়া কে মিথ্যে বলে।ভেবেছে সিঙ্গাপুর থেকে তো আর জিসান সত্যি জানতে পারবে না।সাফওয়ান বাড়ি আসার তিন মাস পরে- ই জিসান বাড়ি আসে।তত দিনে সাফওয়ান রাফিয়া কে বিয়ে করে নিয়েছে। সিঙ্গাপুর থাকা কালীন সাফওয়ান কে অনেক বার তার মা এর বলা কথা গুলা বলতে চেয়ে ছিলো। কিন্তু সাফওয়ান কে আপসেট দেখে আর বলেনি।নিজে ও ভুলে গিয়ে ছিলো পরে কথা গুলো। বাড়ি তে এসে যখন জানতে পারলো সাফওয়ান রাফিয়া কে বিয়ে করেছে।তখন ও জিসান একবার বলতে চেয়ে আর বলে নি।কি দরকার অতীত বলে অন্যের সংসার নষ্ট করার।কেউ যদি পরিবর্তন হয়ে যায় তাহলে তার সামনে তার অতীত না নিয়ে আসা টা ই ভালো। তাই আর জিসান কথা গুলো বলে নি সাফওয়ান কে।
বলা বাহুল্য জিসান নিজে ও তার মা এর কথা গুলো মন থেকে পুরো পুরি ভাবে বিশ্বাস করতে পারেনি। তবু ও মৃ’ত্যু নিয়ে তো আর কেউ মিথ্যে বলবে না এই টা ভেবে- ই জিসান না চাইতে ও তার মা এর কথা গুলো বিশ্বাস করে নিয়ে ছিলো। একবার চেয়ে ছিলো তার মামা মামি কে জিজ্ঞেস করতে কথা গুলো। কিন্তু আবার সাইফ এর মৃ’ত্যুর কথা মনে করিয়ে দিয়ে সবার মন এর কষ্ট টা কে আবার জাগিয়ে তোলা এই ভেবে আর কাউ কে জিজ্ঞেস করে নি জিসান। নিজ এর মধ্যে – ই রেখে ছিলো।পরে তো আয়ান ফোন দেয়ায় আর শুধু আয়ান কে বলেছে সব কিছু।কিন্তু এটা তো আর তখন জানতো না তার মা মিথ্যে বলেছে তাকে।
আর এই সব কিছু যখন জিসান সাফওয়ান কে বলে ছিলো সাফওয়ান কি বলবে যেন নিজে ও বুঝতে পারছে।কিছু মিথ্যে কথার উপর ভিত্তি করে সত্যতা যাচাই না করে।শ’য়তান এর প্ররোচনায় পড়ে সে রাফিয়া কে কত না কথা শুনিয়েছে। এই জন্য অনুশোচনা যেন সাফওয়ান কে খুঁড়ে খুঁড়ে খাচ্ছে। তাই তো সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাসায় গিয়ে রাফিয়া এর থেকে ক্ষমা চেয়ে নিবে।
🌸🌸
রাফিয়া বসে কুরআন তেলাওয়াত করছে।ফজর নামাজ পড়ে- ই রাফিয়া বসেছে কুরান তেলাওয়াত করতে।সাফওয়ান মসজিদে গেছে সাথে আমজাদ সাহেব ও গেছে ফজর এর সালাত আদায় করতে।বাইরে প্রাকৃতি তে নিবু নিবু আলো ছড়িয়ে ছে।পাখি রা বের হয়েছে তাদের নীড় থেকে। কিচিরমিচির আওয়াজ তুলছে পাখি রা।নিজে দের ভাষায় চলছে কথোপকথন তাদের। আর এই রকম পাখি দের কিচির মিচির আওয়াজ সাথে কুরান তেলাওয়াত এর সুর।যেন এক অন্য রকম মন মাতানো স্নিগ্ধ মনোরম দৃশ্য।যেই দৃশ্য টা রুম এর দরজায় দাঁড়িয়ে চেয়ে থাকে উপভোগ করছে সাফওয়ান। দুই কি তিন মিনিট হবে সে এসেছে মসজিদ থেকে।আর এসে- ই রাফিয়া কে কুরান তেলাওয়াত করতে দেখে দরজার সামনে- ই থমকে দাঁড়ায় সাফওয়ান। উপভোগ করে তার স্ত্রী এর সুরেলা কণ্ঠ এর কুরান তেলাওয়াত।সাফওয়ান রাফিয়া এর দিকে মুগ্ধ দৃষ্টি তে চেয়ে থেকে।হঠাৎ করে মনে পড়ে যায় গত কাল রাতে রাফিয়া এর সাথে করা খারাপ ব্যবহার এর কথা।অনুশোচনা এসে ভীড় জমায় আবার তার মাঝে।তাই তপ্ত নিশ্বাস ত্যাগ করে রুম এর মধ্যে ঢুকে।রাফিয়া সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে কুরান তেলাওয়াত করছে।হঠাৎ এক জায়গায় এসে কুরান তেলাওয়াত এ রাফিয়া আটকে যায়।উচ্চারণ সঠিক হচ্ছে না।তাই রাফিয়া চুপ করে যায়।এমন সময় পাশ থেকে সাফওয়ান রাফিয়া যেখানে আটকে যায় সেখান থেকে তেলাওয়াত করে উঠে কুরান। রাফিয়া শব্দ উৎস খুঁজে সেই দিকে তাকাতে- ই দেখে সাফওয়ান কুরান তেলাওয়াত করতে করতে রাফিয়া এর দিকে এগিয়ে আসছে।ঠোঁট কোলে মৃদু হাসির রেখা।সাফওয়ান এসে রাফিয়া এর জায় নামাজ এর পাশে আর একটা জায় নামাজ বিছিয়ে নেয়।রাফিয়া এর পাশে বসে রাফিয়া এর কাঁধে মাথা রেখে রাফিয়া এর হাত থেকে কুরান মাজিদ নিয়ে নিজে তেলাওয়াত করতে থাকে।রাফিয়া চুপ করে সাফওয়ান এর কণ্ঠে কুরান তেলাওয়াত শুনছে।
সাফওয়ান কুরান তেলাওয়াত করা শেষ করে কুরান মাজিদ এক পাশে রেখে রাফিয়া এর কোলে মাথা রাখে।হঠাৎ করে কোলে সাফওয়ান মাথা রাখা তে রাফিয়া হক চকিয়ে যায়।হত বিহম্বল চেহারা নিয়ে তাকিয়ে থাকে সাফওয়ান এর দিকে।সাফওয়ান রাফিয়া এর সেই দৃষ্টি তে একবার তাকিয়ে চোখ ফিরিয়ে নেয়।এক পাশ হয়ে শুয়ে পড়ে।রাফিয়া এর পেট জড়িয়ে ধরে রাফিয়া এর পেটে মুখ গুঁজে শুয়ে থাকে।হঠাৎ সাফওয়ান এর এহেন কাজে চমকে যায় রাফিয়া। মৃদু শিহরণ বয়ে যায় তার অঙ্গে। কম্পিত হয় রন্ধ্রে রন্ধ্রে।তবু ও নিজে কে স্বাভাবিক রাখার প্রয়াস চালায় রাফিয়া।
হঠাৎ সাফওয়ান এর শরীর মৃদু কম্পন হতে দেখে- ই রাফিয়া অবাক হয়।হক চকিয়ে যায়।ফুঁপানো কান্নার আওয়াজ পায় রাফিয়া। তবে কি সাফওয়ান কাঁদছে?কিন্তু সাফওয়ান হঠাৎ এভাবে কাঁদছে কেন?বুঝে আসছে না রাফিয়ার? সাফওয়ান এর কি শরীর খারাপ বা মাথা ব্য’থা করছে?সে জন্য- ই কাঁদছে সাফওয়ান? এসব -ই ভেবে চলছে রাফিয়া।
রাফিয়া এর ভাবনার মাঝে- ই সাফওয়ান ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্না করে বলে উঠে,
—আমি যদি আমার অর্ধাঙ্গিনী এর কাছে আমার ভুল এর জন্য ক্ষমা চাই।তিনি কি আমাকে ক্ষমা করবে?
সাফওয়ান এর কথায় রাফিয়া অবাক হয়ে বলে উঠে,
—মানে?কিসের জন্য?
—গত কাল রাতে আমি আমার জীবন সঙ্গী কে ভুল বুঝে অনেক গুলো কথা শুনিয়ে ছি।এতে তিনি মনে কষ্ট পেয়েছে আমি জানি।তাই আমি আমার ভুল এর জন্য ক্ষমা চাইছি।তিনি কি আমাকে ক্ষমা করবে?
রাফিয়া কিছুক্ষণ সাফওয়ান এর দিকে তাকিয়ে থাকে নিশ্চুপ হয়ে।কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না।তবু ও নিজে কে ধাতস্থ করে সাফওয়ান এর উদ্দেশ্যে বলে উঠে,
—জি আপনার অর্ধাঙ্গিনী তার স্বামী কে ক্ষমা করে দিয়েছে।আর যেখানে স্বামী নিজ এর ভুল বুঝে ক্ষমা চেয়েছে। অনুশোচনা জেগেছে তার মাঝে তার ভুল এর জন্য।তাহলে সেই ক্ষেত্রে আপনার অর্ধাঙ্গিনী কি তার স্বামী র উপর রাগ করে ক্ষমা না করে থাকতে পারে বলুন।
বলে- ই রাফিয়া স্মিত হাসে।রাফিয়া এর সাথে সাফওয়ান ও স্মিত হাসে রাফিয়া এর সাথে।সাফওয়ান রাফিয়ার হাসি মুখ এর দিকে তাকিয়ে আছে।আর আনমনে -ই মনে মনে বলে উঠে,
—প্রিয়তমা স্ত্রী আপনি যত- ই হাসুন না কেন আমি জানি আপনি আমার উপর রে’গে নেই এবং ক্ষমা ও করে দিয়েছেন। কিন্তু অভিমান টা ঠিক- ই জমে আছে আড়ালে। ইনশাল্লাহ এই অভিমান আমি- ই সরাবো।
বলেই সাফওয়ান রাফিয়া এর হাত এর উলটো পিঠে ঠোঁট এর ছোঁয়া দেয়।মুচকি হেসে তাকায় রাফিয়ার দিকে।সাফওয়ান এর হাসি এর বিপরীতে রাফিয়া ও মুচকি হাসি উপহার দেয় রাফিয়া কে।এই হাসি এর পিছনে লুকায়িত অভিমান টা যে সাফওয়ান ঠিক- ই বুঝতে পাচ্ছে।আর যাই হোক ভুল করে হলে ও খু’নি র অপবাদ টা দেওয়া ও যে মন এর কোণে অভিমান এর দাগ কাটে।ঠিক তেমনি রাগ মুছে গেলে ও অভিমান এর দাগ কে’টে গেছে রাফিয়া এর মনে।তাই তো নিশ্চুপ হয়ে তাকিয়ে আছে সাফওয়ান এর মুখ এর দিকে।দুই জন এর দৃষ্টি একে অপরের উপর নিবদ্ধ।
চলবে ইনশাল্লাহ
ভুল হলে ধরিয়ে দিবেন। শুধরিয়ে নিবো ইনশাল্লাহ। রিচেক করা হয়নি আজ।কষ্ট করে বুঝে নিবেন। আসসালামু আলাইকুম।
আশা করি আজ কের পর্বে সবাই সব কিছু ক্লিয়ার ভাবে বুঝতে পেরেছেন।তার পর ও যদি কেউ বুঝতে না পারেন বা আমার বলা তে ভুল থাকে তাহলে আমাকে ভুল টা ধরিয়ে দিবেন।