তুমি_হৃদয়ে_লুকানো_প্রেম #তাহিরাহ্_ইরাজ #পর্ব_১৯

0
708

#তুমি_হৃদয়ে_লুকানো_প্রেম
#তাহিরাহ্_ইরাজ
#পর্ব_১৯

” আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি আগামী শুক্রবার তূর্ণ আর দুয়া’র রিসিপশন পার্টি হবে। ”

হঠাৎ এমন বৃহৎ সিদ্ধান্ত! পরিবারের সদস্যরা নিজাম সাহেবের কথায় কিছুটা অবাক হলো বটে।

” আব্বু সত্যিই পার্টি হবে! ” উৎফুল্ল কণ্ঠে শুধালো তৃষা।

” হাঁ। শুক্রবার রিসিপশন হবে। সেই অনুযায়ী তোমরা প্রিপারেশন নেয়া শুরু করো। শপিং করা লাগলে করে ফেলো। আমি পার্টি অর্গানাইজারের সঙ্গে কথা বলছি। ”

পুত্র ও পুত্রবধূর দিকে তাকিয়ে নিজাম সাহেব বললেন,

” তূর্ণ। দুয়া। তোমরা প্রিপারেশন নিতে থাকো। একান্ত পরিচিত কাদেরকে ইনভাইট করতে হবে লিস্ট করে নাজমুলকে দিয়ো‌। ও ইনভিটিশেন পাঠিয়ে দেবে। ”

তূর্ণ বাবার সিদ্ধান্তে প্রসন্ন হলো।

” থ্যাংকস আব্বু। আশা করি এবার সকলের মুখ বন্ধ হবে। ”

” হুঁ। ” মুচকি হেসে সম্মতি জানালেন নিজাম সাহেব।

নিশি ফিসফিস করে ডান পাশে দাঁড়িয়ে থাকা তৃষাকে প্রশ্ন করলো,

” তূর্ণ ভাইয়া কি বললো রে? ঠিক বুঝলাম না। কাদের মুখ বন্ধ করার কথা বলছে? ”

তৃষাও ফিসফিসিয়ে জবাব দিলো,

” আরে ওই যে কূচুটি মার্কা কিছু আত্মীয়-স্বজন আছে না? সারা বছর খবর নেই। সিজনাল উদয় হয়। তাদের কথাই বলছে।‌ তারা হুট করে কিভাবে যেন ভাইয়ার বিয়ের খবর পেয়েছে। এখন দিন নাই রাত নাই ফোন করে চলেছে। কেউ কেউ তো বাজে কথাও বলছে। ভাইয়া, দুয়া’র চরিত্র অবধি চলে গেছে। ”

নিশি নাকমুখ কুঁচকে বললো,

” ইয়াক! এসব হচ্ছে আজকাল? ”

তৃষা মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো। তাসলিমা পাশাপাশি দাঁড়িয়ে থাকা তূর্ণ এবং দুয়া’র পানে তাকিয়ে বললেন,

” তূর্ণ তুমি শপিং করা শুরু করে দাও। দরকার পড়লে বন্ধুদের সাথে নিয়ে যাও। আর দুয়া? তুমি আমাদের সাথে যাবো। আগামীকাল তো ক্লাস নেই তাই না? ”

দুয়া না সূচক মাথা নাড়ল।

” ঠিক আছে। কাল আমরা শপিং যাচ্ছি। রেডি থেকো। ”

দুয়া তূর্ণ’র পানে তাকালো। চোখাচোখি হলো দু’জনার। অর্ধাঙ্গ চোখের ইশারায় অনুমতি প্রদান করলো। দুয়া মিষ্টি হেসে শাশুড়ি মা’কে বললো,

” ঠিক আছে। ”

তিমিরাবৃত রজনী। কক্ষজুড়ে পায়চারি করে চলেছে তূর্ণ। একবার টাফটেড বেঞ্চে বসছে তো আরেকবার সিঙ্গেল সোফায়। স্বস্তি মিলছে না হৃদয়ে। সমস্ত অস্বস্তির মূলে ওই অবাধ্য মাইরা। কত বড় সাহস তার? প্রিয়তম স্বামীকে না জানিয়ে হুটহাট সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। জানানোর প্রয়োজন বোধ অবধি করছে না! হাউ ডেয়ার শি! এমনটা চলতে থাকলে তো সুখময় সংসার লাটে উঠবে! চরম অবাধ্য হয়ে উঠবে সে নারী। উঁহু। এ তো হতে পারে না। এর একটা যথাযথ বিহিত করা দরকার। নইলে সাড়ে সর্বনাশ হবে। হুম। ঠোঁট গোলাকার করে তপ্ত শ্বাস ফেললো তূর্ণ। গিয়ে বসলো বিছানায়। হেডবোর্ডে হেলান দিয়ে দেহ এলিয়ে দিলো। বেড সাইড টেবিলের ওপর রাখা মোবাইলটি নিলো হাতে। কন্টাক্ট লিস্টে গিয়ে ফটাফট কাঙ্ক্ষিত নম্বর বের করলো। কল আইকন ক্লিক করে ফোন করলো সেই একান্ত মানুষের পানে। কল বেজে চলেছে। বাজতে বাজতে কেটেও গেল! কত্ত বড় দুঃসাহস! একে তো..! দ্বিতীয়বার কেটে গিয়ে তৃতীয়বার কল রিসিভ হলো।

” হ্যালো! আসসালামু আলাইকুম। ”

খ্যাক করে উঠলো তূর্ণ। গমগমে স্বরে সালামের জবাব দিয়ে বললো,

” ওয়া আলাইকুমুস সালাম। পৃথিবীতে আছেন নাকি মঙ্গলে? কল রিসিভ করতে এতক্ষণ লাগে? ”

ধমকে উঠলো তূর্ণ। ওপাশে থাকা মানবী ভ্যাবাচ্যাকা খেলো। কান হতে মোবাইল সরিয়ে দেখলো কলার আইডি সঠিক ই। মানে আদ্রিয়ান আয়মান তূর্ণ ই কল করেছে। দুয়া কানে ফোন ঠেকিয়ে সুমিষ্ট স্বরে বললো,

” রাগ করেছো? ”

” একদম নয়। যে রাগ ভাঙানোর জন্য জনগণ নেই সে রাগ আসবে কি করে? নি|র্দয় মহিলা কোথাকার। ”

” আমি মহিলা! বিশ বছরের ছোট্ট একটা পুতুল কন্যাকে তুমি মহিলা বলতে পারলে? ”

দুয়া’র সে কি হৃদয় নিংড়ানো প্রশ্ন! তূর্ণ কাঠিন্য মিশ্রিত স্বরে বললো,

” অফকোর্স পারলাম? তোর মতো মহিলার মাথায় গোবর ছাড়া আছেটা কি? স্বামীর মন পর্যন্ত জুগিয়ে চলতে পারিস না। ”

পুরুষালি কণ্ঠটি একটু অভিমান মিশ্রিত লাগলো কি? অবুঝ দুয়া প্রশ্ন করেই বসলো,

” আমি আবার কি করলাম? ”

” এই জন্য। এই জন্য পোলাপাইন বিয়ে করতে নেই। কিচ্ছু বোঝে না। বোঝেনা সে বোঝেনা। ”

দুয়া অবাক কণ্ঠে বললো,

” রাতদুপুরে তোমার অরিজিৎ সিংয়ের ‘ বোঝেনা সে বোঝেনা ‘ মনে পড়ছে? তুমি এসব কি বলছো? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না। ”

ওপাশ থেকে চরমভাবে ধমকে উঠলো।

” চুপ কর গাঁধী। স্বামীর মন বোঝে না। আবার ড্যাং ড্যাং করে বিয়ে করে নিয়েছে! বে”দ্দপ! ”

এতগুলো ধমক শুনে মেয়েটা কষ্ট পেল। কিন্তু কষ্টগুলো এক পাশে জমা রেখে সে ভাবনায় লিপ্ত হলো। আসলে হয়েছে টা কি? স্বামী মহাশয় রাতদুপুরে কল করে খ্যাক খ্যাক করছে কেন? সমস্যা কোথায়? উম্! ভাবতে না ভাবতেই সমাধান হাজির। ইয়েস এটাই বোধহয়। দুয়া এবার মেকি হেসে অতি সুমধুর কণ্ঠে শুধালো,

” আমি না বলে বাসায় এসেছি বলে রাগ করেছো? ”

ওপাশে নীরবতা! নীরবতা সম্মতির লক্ষণ ভেবে দুয়া আরো মধুর কণ্ঠে সুরে সুরে বললো,

” লক্ষ্মী সোনা রাগ করে না। লা লা লা। ”

বজ্রকণ্ঠে এক ধমক! হাত ফসকে মোবাইল পড়তে গিয়েও পড়লো না। কোনোমতে ক্যাচ ধরতে সক্ষম হলো মেয়েটা। তবে কর্ণ যুগল? নষ্ট হলো বুঝি। এখনো তব্দ খেয়ে আছে। দুয়া কাঁদো কাঁদো মুখ করে ডান কানে কনিষ্ঠ আঙুল ঢুকিয়ে দিলো। গুঁতোগুতি করে বুঝতে পারলো কান বেচারা বেঁচে আছে। টপকে যায়নি। স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়ল দুয়া। পুনরায় কানে ফোন ঠেকিয়ে অভিযোগের সুরে বললো,

” তুমি কি গো হাঁ? এভাবে কেউ বকে? আমার অবিচ্ছেদ্য অংশ কানটা তো আরেকটু হলেই ইন্না লিল্লাহ হতো! ”

তূর্ণ বেচারা ফেঁসে গেছে ভালোমতোই। বউটা এত মিষ্টি করে কথা বলছে সে তো পারছে না মিষ্টি ভেবে টুপ করে গিলে নিতে! আহা! এত মিষ্টিমধুর স্বরে কেউ বরের সাথে কথা বলে? সামনাসামনি থাকলে নাহয় কাজে দিতো। বউটা তো এখন বাপের বাড়ি। কত দূরে! অত দূরে বসে মিষ্টি মিষ্টি আলাপ করলে তার ফায়দা টা কোথায় হুঁ? সে তো এখানে তেঁতো মুখে বসে। অন্যায় এ। ভারী অন্যায়। তূর্ণ দাঁতে দাঁত চেপে বললো,

” বাপের বাড়ি বসে মধুমাখা বাক্য ছাড়ছিস? সাহস থাকলে আমার সামনে আয়। বুঝিয়ে দেবো মধুর বাক্যের অ্যাকশন-রিয়েকশন কি! ”

দুয়া আমতা আমতা করে বললো,

” রাগ করো না।‌ আ আমি কাল ই চলে আসবো তো। ডিরেক্ট রিসিপশনে দেখা হচ্ছে ইনশাআল্লাহ্। ”

” অসম্ভব। কাল সূর্য ওঠার আগেভাগেই আমার বউকে আমি বাড়ি চাই। নইলে..! ”

” ইহ্! বললেই হলো? অত সকাল সকাল আমি আসতে পারবো না। এমন ভাব করছো তুমি মস্ত বড় বউ পা’গলা। বউ ছাড়া রাতে ঘুম আসবে না। ”

ওপাশ হতে তৎক্ষণাৎ জবাব,

” অফকোর্স আসবে না। বউ হলো বিবাহিত পুরুষের পার্সোনাল কোলবালিশ। তাকে ছাড়া ঘুম হয় নাকি? ”

দুয়া লাজুক হেসে ভেংচি কাটলো।

” ঢং। ”

তূর্ণ বক্র হেসে বললো,

” বাড়ি আসেন মিসেস। রঙঢঙ কত প্রকার ও কি কি হাতেকলমে বুঝিয়ে দেবো। ”

লাজে রাঙা মেয়েটি মোবাইল হাতে শুয়ে পড়লো। মোলায়েম স্বরে শুধালো,

” রাগ কমেছে তোমার? ”

” উম্! বোধহয় কমেছে। বউ এত আদুরে গলায় তোতাপাখির মতো বলতে থাকলে রাগ করে থাকা যায়? ”

লাজুক হাসলো দুয়া। তূর্ণ মুচকি হেসে বালিশে মাথা রেখে শুয়ে পড়লো। বাম হাতটি মাথার তলে। দু পা সোজাসুজি করে রাখা। স্বল্প দূরত্বে অবস্থিত দু বাড়ির দু কক্ষে দুষ্টু-মিষ্টি ফোনালাপে মগ্ন কপোত-কপোতী। অনেকটা সময় জুড়ে কথা হলো। এক পর্যায়ে পুরুষালি কণ্ঠে শোনা গেল এক আদেশ বাক্য,

” আমাকে না জানিয়ে ওই বাড়ি যাওয়া! শাস্তিস্বরূপ আজ রাত আমার তরে। ফোনালাপে কাটবে সারারাত।”

তমসায় আচ্ছাদিত রজনী। জমকালো আয়োজন কনভেনশন সেন্টার জুড়ে। লাইট পিঙ্ক বৃহদাকার আকর্ষণীয় সোফা। সোফার পেছনে অর্ধ বৃত্তাকার ফুলেল আয়োজন। লাল ও গোলাপী রঙা গোলাপ ফুলে মোড়ানো অর্ধ বৃত্তটি। সোফার দুই পার্শ্বে বিশালাকার ফুলের ব্যুকে। রঙবেরঙের কৃত্রিম আলোয় উজ্জ্বল চারিপাশ। অতিথিদের আগমনে মুখরিত পরিবেশ। তূর্ণ ও বন্ধুমহল এক পাশে দাঁড়িয়ে আলাপচারিতায় লিপ্ত। রাজীব দাঁত কেলিয়ে হাসলো,

” কি মাম্মাহ্? বিয়া করবা না করবা না। শেষমেষ খালাতো বোন যখন বউ? ”

সশব্দে হেসে উঠলো বন্ধুরা। তূর্ণ মুখ কুঁচকে বললো,

” ফালতু ট্যাগ লাগানো বন্ধ কর। ও জন্মের সময় শুধু আমার খালাতো বোন ছিল। বড় হতে হতে হবু বউ হয়ে গেছে। ”

দানিশ মিথ্যা মিথ্যা হাততালি দিয়ে উঠলো।

” বাহ্! চমৎকার! তুমি তো মিয়া খাঁটি লু*চ্চা। পিচ্চি বুইনটারে লইয়া এসব ভাবো! ছ্যা ছ্যা ছ্যা। খালাতো ভাই নামক ক*লঙ্ক তুমি। ”

” কারেকশন। আমি কখনো ওকে আমার বোন হিসেবে পরিচয় দিছি? দিইনি তো। তাহলে এত কিসের ক্যাচাল? খামোখা দুর্গন্ধ ছড়াস না তো। ”

হাত নাড়িয়ে দুর্গন্ধ সরানোর ভান করলো সে। মনিকা হেসে বললো,

” বন্ধু দুর্গন্ধ তো একটু ছড়াবেই। আফটার অল খালাতো বোন যখন বউ। হা হা হা। ”

সবাই মিলে হেসে উঠলো। নিশাদ বন্ধুর পিঠ চাপড়ে বললো,

” শা* বিয়া কইরা ফেললি অথচ বন্ধুদের জানানোর প্রয়োজন বোধ করলি না? সোজা রিসিপশনের দাওয়াত? ”

দিবা বললো,

” তা-ও কপাল। ও যে আমাদের কোলে ভাতিজা ভাতিজি তুলে দিয়ে বিয়ের খবর দেয়নি তা ই তো বহুত বড় কথা। নইলে ও যে একপিস! ও আল্লাহ্! ”

দিবা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। মনিকা সম্মতি পোষণ করে বললো,

” এটা আস্ত এক খা টা শ। বউটারে জ্বালিয়ে না মা”রে আবার। ”

টগর কিছু বলবার পূর্বেই রাজীব দুষ্টু হেসে বললো,

” জ্বালিয়ে মা”রবে কেন? আদর সোহাগে মা”রবে। আফটার অল আটাশ বছরের জমানো সংযম! একসঙ্গে ফাটবে কিনা! ”

তূর্ণ ভাবলেশহীন ভাবে বললো,

” কারেক্ট বলেছিস। বহু বছরের অপেক্ষার অবসান হলো। বউও আমার বড় হয়ে গেছে। এখন শুধু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই সুসংবাদ পাবি। আর আমাদের স্পেস দিয়ে ভাতিজা ভাতিজি নিয়ে ঘুরতে যাবি। ”

মনিকা ভেংচি কেটে বললো,

” ইহ্! শখ কত! ”

ওদের হাসিঠাট্টা ভঙ্গ হলো এক লহমায়। তূর্ণ’র দৃষ্টি নিবদ্ধ হলো এন্ট্রেন্সে। হাসিখুশি মুখখানা পরিবর্তিত হলো মুগ্ধতায়! তার পানে অগ্রসর হচ্ছে মায়াময়ী মাইরা! মাশাআল্লাহ্! সে কি রূপের বহর! চক্ষু ফেরানো দায়। মাইরা’র পড়নে ওয়াইন কালার জর্জেট কুর্তি লেহেঙ্গা। আকর্ষণীয় কারুকার্য খচিত লেহেঙ্গার দোপাট্টায় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র হীরার ন্যায় পাথর। পাড়ে সোনালী সুতোর ভারী কাজ‌। দোপাট্টাটির অন্তরালে ম্যাচিং হিজাব। হিজাবের উপরিভাগে শোভা পাচ্ছে আকর্ষণীয় কারুকার্য খচিত দোপাট্টাটি। দোপাট্টার একাংশ কাঁধ ছড়িয়ে নেমে এসেছে। আবৃত করে রেখেছে দেহের উপরিভাগ। সিঁথি বরাবর গোল্ড প্লেটেড ব্রাইডাল গোলাকার টিকলি। মুখশ্রীতে কৃত্রিম প্রসাধনীর ছোঁয়া। দু হাতে একজোড়া গোল্ড প্লেটেড বালা। কোমল দু হাতে অঙ্কিত মেহেদী। হাতের উল্টো পিঠে কুন্দন রিং। বাঁ হাতে ছোট্ট পার্স। সাজ সম্পন্ন। তাতেই অবর্ণনীয় মোহনীয় লাগছে! বিমোহিত নয়নে তাকিয়ে রইলো তূর্ণ। ভুলে গেল জাগতিক সকল ভাবনা।

দুয়া’র দু পাশে দাঁড়িয়ে তানজিনা এবং নিশি। দু’জনে ওর দু বাহু স্পর্শ করে পরম যতনে আগলে নিয়ে আসছে। দুয়া আলতো করে মায়াবী দু চোখ তুলে তাকালো। দৃষ্টিগোচর হলো অর্ধাঙ্গের অবয়ব। ডাস্টি রোজ কালার ব্লেজার স্যুট পড়নে তার। ব্লেজারের অন্তরালে ওয়েস্ট কোট। নিম্নে শুভ্র রঙা শার্ট। গলায় টাই বন্ধনী। বাঁ হাতে ব্র্যান্ডেড রিস্ট ওয়াচ। লালচে চুলগুলো জেল দিয়ে সেট করা। পায়ে ম্যাচিং শু। অতীব সুদর্শন লাগছে! অবাধ্য নয়ন জোড়া বারংবার চলে যাচ্ছে তার পানে। ইশ্! কি লজ্জা!

তূর্ণ’র বাঁ হাতে সফট ড্রিংকস এর গ্লাস। ডান হাত গলিয়ে রাখা প্যান্টের পকেটে। আকর্ষণীয় ভঙ্গিমায় দাঁড়িয়ে মানুষটি। যার পানে চুম্বকের ন্যায় আকর্ষিত হয়ে চলেছে মেয়েটির কোমল হৃদয়। বক্ষপিঞ্জরের অন্তরালে লুকায়িত হৃদযন্ত্রটি দ্রুতবেগে স্পন্দিত হচ্ছে। সে স্পন্দন অন্য কারোর কর্ণ কুহরে পৌঁছালো বুঝি! লাজে রাঙা মেয়েটি দৃষ্টি নত করে নিলো। তাকে নিয়ে তূর্ণ’র পাশে দাঁড় করালো তানজিনা। তূর্ণ এখনো অপলক চাহনিতে তাকিয়ে। দৃষ্টি ঘুরে বেড়াচ্ছে মেয়েটির মায়াময় মুখ জুড়ে। তা অনুধাবন করে মেয়েটি লজ্জায় আরো জড়োসড়ো হলো। তূর্ণ’র কর্ণ কুহরে বন্ধু টগর ফিসফিসিয়ে বললো,

” দোস্ত কন্ট্রোল ইয়্যরসেল্ফ। সবাই দেখছে কিন্তু। হায় কি প্রেম! ”

স্মিত হেসে তার মাইরা হতে দৃষ্টি সরিয়ে নিলো তূর্ণ। টগরের পানে তাকাতেই টগর চোখ টিপে দিলো।

চলবে.

[ কেমন লাগলো তূর্ণয়া’ময় পর্বটি? ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here