তুমি_হৃদয়ে_লুকানো_প্রেম #তাহিরাহ্_ইরাজ #পর্ব_৩০

0
647

#তুমি_হৃদয়ে_লুকানো_প্রেম
#তাহিরাহ্_ইরাজ
#পর্ব_৩০

তাসলিমা কিছুক্ষণ চুপ রইলেন। অতঃপর মৌনতা ভেঙে বললেন,

” হাঁ। এটা সত্যি যে তোকে আমি অনেক আগে থেকেই পুত্রবধূ হিসেবে ভেবে রেখেছিলাম। তাই সাজ্জাদ ভাইয়ের কাছে প্রস্তাব দিয়েছিলাম। আর উনি? রাজি হয়েছিলেন। ”

বেশ অবাক হলো দুয়া! ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে রইল শাশুড়ি মায়ের দিকে। আনমনে প্রশ্ন করে বসলো,

” হঠাৎ আমাকে পুত্রবধূ হিসেবে চাইলে কেন? ”

” আমার ছেলেটার জন্য। ও যে তুই বিহীন অন্য কাউকে সঙ্গিনী হিসেবে চায় না দুয়া। শুধু তোকে চায়। ”

হতবিহ্বল হলো দুয়া! আস্তে ধীরে মামণির কোল ত্যাগ করে উঠে বসলো। মুখোমুখি দু’জনে।

” ত্ তুমি এসব কি বলছো মামণি? ”

তাসলিমা ওর মাথায় স্নেহের হাত বুলিয়ে দিলেন। মমতাময়ী স্বরে বললেন,

” কিছু বলবো। মন দিয়ে শুনবি কেমন? আশা করি তোর প্রশ্নের উত্তর কিছুটা হলেও পেয়ে যাবি। বাকিটা নাহয় আমার দুষ্টু ছেলেই বলবে। ”

দুয়া মায়াবী চোখে তাকিয়ে। সবটা শুনতে উদগ্রীব। তাসলিমা তপ্ত শ্বাস ফেলে বলতে লাগলেন,

” তুই তো জানিস ই মা। আমি তূর্ণ’র বিয়ের জন্য কতটা আগ্রহী ছিলাম। সব মায়ের মতো আমিও চাইতাম আমার ছেলেটা বিয়ে করে সংসারী হোক। ওর একটা লাল টুকটুকে বউ হোক। এজন্য কম পাত্রী তো দেখলাম না। তুইও তো সাথে যেতিস। দেখেছিস তো সবটা। তূর্ণ কেমন করে সামান্য থেকে সামান্য খুঁত দেখিয়ে প্রতিটা পাত্রী রিজেক্ট করে দিতো। ”

দুয়া মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালো।

” ছেলেটা আমার ওমন বাচ্চামো করতো কারণ ওর হৃদয়ে যে অন্য কারোর বাস। ”

অন্য কারোর বাস! তিনটে মাত্র শব্দ। ছ্যাত করে উঠলো মেয়েটির কোমল হৃদয়। ছু*রিকাঘাতে ক্ষ*তবিক্ষত হলো হৃৎপিণ্ড! উত্তপ্ত হয়ে উঠলো কর্ণ গহ্বর। অজান্তেই নোনাজলে পূর্ণ হলো মায়াবী লোচন।

” আমি ওকে কত করে বলতাম বিয়ে করে নে। করে নে। কিন্তু ওর একটাই কথা। ”
____

” আমার সোনা বাবু। বিয়ে করবে না? মায়ের জন্য লাল টুকটুকে বউ আনবে না? ”

না বোধক মাথা নাড়ালো তূর্ণ। তাসলিমা দমে গেলেন। প্রশ্ন করলেন,

” কেন? ”

” আমি তো বাবু। তোমার সোনা বাবু। বাবুরা কি বিয়ে করে? ”

বাচ্চা ফেস করে জবাব দিলো তূর্ণ। ক্ষে পে গেলেন তাসলিমা। ছেলের উরুতে চাপড় মে রে বললেন,

” দুষ্টু ছেলে! মায়ের কথায় মাকেই নাস্তানাবুদ? ”

দাঁত কেলিয়ে হাসলো তূর্ণ। এবার প্রসঙ্গ বদলে ফেললেন তাসলিমা।

” তুই কি সত্যিই কখনো বিয়ে করবি না? ”

” আপাতত না। ”

তাসলিমা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। হঠাৎ উনি ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করলেন। আকস্মিক বো*মা ফা*টালেন কক্ষে।

” দুয়াকেও না? ”

তূর্ণ অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছিল। সহসা কর্ণ কুহরে পৌঁছালো মায়ের সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত প্রশ্ন। অবাক চাহনিতে মায়ের দিকে তাকালো।

” কি বাবুসোনা? দুয়াকেও বিয়ে করবে না? রিজেক্ট করবে? ”

বিস্ময়ে অভিভূত তূর্ণ কিছু বলতে চাইছে। খুব করে মায়ের প্রশ্নের উত্তর দিতে চাইছে। কিন্তু অবরুদ্ধ কণ্ঠনালী। শব্দমালা বের হচ্ছেই না। বরং আঁটকে পড়েছে পুরোদমে। বারকয়েক শুকনো ঢোক গিললো মানুষটি। তাসলিমা ছেলের অবস্থা আন্দাজ করতে পারলেন। খুশির আভা ছড়িয়ে পড়লো ওনার মুখশ্রীতে। মনে মনে ভাবলেন উনি ভুল নয়। একদম সঠিক। তূর্ণ’র হৃদয়ে বাস দুয়া’র। তাই তো এত ছলাকলা! তাসলিমা মুচকি হেসে ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন।

” আমি সাজ্জাদ ভাইয়ের সাথে কথা বলছি। ওনার পুতুল মেয়েকে চাইবো। আমার এই বাবু সোনার জন্য। ”

খুশিতে ভরে উঠল তনুমন। তূর্ণ কিচ্ছুটি বলতে পারলো না। নীরবে আঁকড়ে ধরলো মা’কে। বিপরীতে তাসলিমাও আলিঙ্গনে আবদ্ধ করে নিলেন ছেলেকে। টের পেলেন ওনার কাঁধে তপ্ত জলের অস্তিত্ব। মায়ের অধর কোণ প্রসারিত হলো। আলতো করে ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলেন। স্নেহাতুর স্বরে বলে উঠলেন,

” আমার আব্বা। ”
_____

পুরনো কথা মনে পড়ায় অন্যমনস্ক হয়ে পড়লেন তাসলিমা। চোখে পানি অধর কোণে হাসি।

” সেদিন আমার ছেলেটা আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছিল! আমি ভাবতেও পারিনি তূর্ণর হৃদয়ে তুই এতটা গাঢ় ভাবে ঠাঁই করে নিয়েছিস। আমি এমনই এক মা কখনো অনুধাবন করতেই পারিনি আমার ছেলেটার হৃদয়ে তোকে নিয়ে লুকানো অনুভূতি আছে। যখন জানতে পারলাম তখন ইতিমধ্যে অনেকটাই দেরী হয়ে। তাই তো আমি আর দেরি করলাম না। দ্রুত সাজ্জাদ ভাইয়ের কাছে তোর হাত চাইলাম। প্রস্তাব বিবেচনা করে উনিও রাজি হয়ে গেলেন। আমাদের ভাবনা ছিল তুই তৃতীয় বর্ষে উঠলে কিংবা অনার্স শেষ হওয়ার আগে আগে বিয়েটা হবে। তোর পড়াশোনায় যাতে কোনোরূপ ব্যাঘাত না ঘটে। কিন্তু তার আগেই তো… ”

দীর্ঘশ্বাস ফেলে তাসলিমা তাকালেন দুয়া’র পানে। মেয়েটার চোখেমুখে এখনো বিস্ময়ের ছাপ। নেত্র গড়িয়ে পড়ছে বিন্দু বিন্দু অশ্রু। উনি মুচকি হেসে মেয়েটাকে বুকে টেনে নিলেন। ললাটে চুমু এঁকে মিহি স্বরে বললেন,

” আমার তূর্ণ’র পুতুল বউ। ”

নেত্রপল্লব বদ্ধ হলো মেয়েটির। চোখেমুখে ফুটে উঠলো তৃপ্তির আভা। র’ক্তিম হলো কপোলদ্বয়। কানে ভেসে আসছে ‘ তূর্ণর পুতুল বউ ‘ বাক্যটি। আহা! সে কি সুমধুর সম্বোধন! হৃদয়ে গেঁথে গেল বুঝি!

নিস্তব্ধতায় আচ্ছাদিত রজনী। হেডবোর্ডে হেলান দিয়ে বসে দুয়া। নিমীলিত তার আঁখি পল্লব। ভাবনায় মশগুল হৃদয়। মস্তিষ্কে এখনো ভাসমান মামণির কথাগুলো। ওর কোমল হৃদয়ে ওই কথোপকথন যে কতটা প্রভাব ফেলেছে সে বোঝাতে ব্যর্থ। বারবার নেত্র পর্দায় হাজির হচ্ছে দুষ্টু লোকটি। অধরে তার বক্র হাসির রেখা। চক্ষু দিয়েই যেন ছুঁয়ে যাচ্ছে তনুমন। লাজে রাঙা মেয়েটির ভাবনায় হঠাৎ ছেদ পড়লো। এক প্রকার আঁতকে উঠলো মেয়েটি। চক্ষু মেলে তাকাতেই দেখা মিললো কাঙ্ক্ষিত মানুষটির। ক্লান্ত শ্রান্ত মানুষটি ঠাঁই নিয়েছে ওর কোলে। শক্তপোক্ত বলিষ্ঠ দু হাতে আবদ্ধ কটিদেশ। মুখ গুঁজে রাখা উদরের কোমল আবরণে। মেয়েটির রন্ধ্রে রন্ধ্রে তরঙ্গ বয়ে গেল। কিছু বলতে উদ্যত হতেই শোনা গেল পুরুষালি মিনতি মাখা ভরাট স্বর,

” খুব যন্ত্রণা হচ্ছে মাইরা। একটু হাত বুলিয়ে দেবে? ”

এমন মিনতি মাখা স্বর মেয়েটির হৃদয় অবধি ছুঁয়ে গেল। মন্ত্রমুগ্ধের ন্যায় হাতটি বাড়িয়ে দিলো। লালচে মসৃণ চুলের ভাঁজে গলিয়ে দিলো চিকন আঙ্গুলগুলো। আলতো করে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো। চুলের ফাঁকে ফাঁকে মাথার তালু স্পর্শ করছিল আঙ্গুল। আরাম পেয়ে মানুষটি আরেকটু ঘনিষ্ট হলো‌। উদরের কেন্দ্রস্থলে মুখ লুকিয়ে চক্ষু মুদিত করলো। শিউরে উঠলো মেয়েটির কায়া। হাতটি থেমে গেল ক্ষণিকের জন্য। পরক্ষণেই চালনা করতে লাগলো আঙ্গুল। মানুষটি যে তার একান্ত আপনজন। তার সমস্ত সুখদুঃখ হাসি কান্নায় সে-ও যে সম ভাগীদার। দু’জনে তো একে অপরের পরিপূরক। একের প্রয়োজনে এগিয়ে আসবে অন্যজন। সে থেমে গেলে চলবে কি করে? মানুষটি যে মানসিক স্বস্তির জন্য ওরই সান্নিধ্য আশা করছে। সে কি করে ফিরিয়ে দেবে? এ যে তার জন্য অসম্ভব, অকল্পনীয়! খানিক বাদে দুয়া অনুভব করতে পারলো ঘন শ্বাস প্রশ্বাস। আরাম পেয়ে মানুষটি ঘুমিয়ে পড়েছে। মুচকি হাসলো দুয়া। চুলে হাত বুলাতে বুলাতে মাথাটা একটুখানি ঝুঁকিয়ে নিলো। অধর ঠেকালো অর্ধাঙ্গের কর্ণ কুহরে। ফিসফিসিয়ে শুধালো,

” সত্যিই কি তোমার হৃদয়ে লুকানো প্রেম আমি? ”

জবাব এলো না। গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন মানুষ জবাব দেবে কি করে? জবাব মিললো না। তবুও তুষ্ট মেয়েটি। আলতো করে স্বামীর চুলের ভাঁজে চুমু এঁকে দিলো। চোখেমুখে ফুটে উঠলো লজ্জালু আভা।

আদিত্যর কিরণে উজ্জ্বল বসুধা। লিভিং রুমে উপস্থিত পরিবারের সদস্যরা। সকালের চা নাস্তা সেরে নিচ্ছে। নিজাম সাহেব চায়ের কাপে চুমুক বসালেন। ছেলের মনোযোগ আকর্ষণ করতে ডেকে উঠলেন,

” তূর্ণ? ”

কফির মগে সিপ বসিয়ে তূর্ণ তাকালো বাবার দিকে। হাতে তার ম্যাগাজিন।

” বলো আব্বু। ”

” বিয়ের কতদিন হলো তোমাদের বাবা? ”

অনাকাঙ্ক্ষিত প্রশ্নে তূর্ণ দুয়া সহ সবাই একটু অবাক হলো বটে। তূর্ণ বিস্মিত কণ্ঠে বললো,

” মানে? ”

” মানে মানে ছাড়ো। বলো যে বিয়ের কতদিন হয়েছে? ”

” এই কিছুদিন আগে ছয়মাস হলো। ”

নিজাম সাহেব মাথা নাড়লেন।

” হুম। ছয় মাস। তা বিয়ের পর বউকে নিয়ে এখন অবধি কোথাও গেছো? ”

তূর্ণ যারপরানাই অবাক হচ্ছে বাবার প্রশ্নের ধরন দেখে। তৃষা ফট করে বলে বসলো,

” আব্বু ওরা কোথাও যায়নি এখন অবধি। শুধু খালামণির বাসায় মাঝেমধ্যে গেছে। ”

নিজাম সাহেব অসন্তোষ প্রকাশ করলেন।

” সে-ই তো। মাস্টার মশাই। রষকষহীন। নতুন নতুন বিয়ের পর কি কি করণীয় কিছু জানে কি? ”

খুকখুক করে কাশতে লাগলো তূর্ণ। হাতে থাকা ম্যাগাজিন পড়ে গেল কোলে। পাশে বসে থাকা দুয়া বিস্ময় কাটিয়ে স্বামীর পিঠে হাত বুলাতে লাগলো। আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হলো তূর্ণ। নিজাম সাহেব চোখ কুঁচকে বিড়বিড় করে উঠলেন,

” অপদার্থ। ”

তূর্ণ কোনোমতে নিজেকে সামলিয়ে বললো,

” আমি রষকষহীন? ”

” তা নয়তো কি? বিয়ের ছয়মাস পাড় হয়ে গেছে। ক’দিন পর বছর হয়ে যাবে। ছেলে আমার এখন অবধি হানিমুনের ‘ হ ‘ অবধি গেল না। ”

এবার কাশতে লাগলো দুয়া। তূর্ণ ওর পিঠে হাত বুলাতে বুলাতে বাবার উদ্দেশ্যে বললো,

” তুমি কি আমাদের ইনডাইরেক্টলি হানিমুন যেতে বলছো? ”

আনোয়ারা বেগম এবং নাজমুল সাহেব অপ্রস্তুত হয়ে পড়লেন। তাসলিমা তো গরম চোখে স্বামী সন্তানের দিকে তাকিয়ে।

” ইনডিরেক্টলি না বাছা। ডিরেক্টলি বলছি। এখনো ইনডাইরেক্টলি বললে বছর পেরিয়ে যাবে। তোমার হানিমুন আর যাওয়া লাগবে না। ”

তূর্ণ দুয়ার পিঠ হতে হাত সরিয়ে নিলো। তাসলিমা স্বামীকে কড়া কণ্ঠে বললেন,

” তোমরা থামবে? সবার সামনে এসব কি বলছো? ”

” আম্মু আমাদের বলতে দাও। আমরা কি ব্যাংক ডা*কাতির প্লান করছি যে চুপিচুপি বলতে হবে? ”

বাবার দিকে তাকিয়ে,

” হাঁ আব্বু তুমি বলো। সকাল সকাল কি চাইছো তুমি? ”

” তোমাদের হানিমুন পাঠাতে চাইছি। ”

নিজাম সাহেবের সরল স্বীকারোক্তি। তৎক্ষণাৎ আপত্তি জানালো তূর্ণ।

” সম্ভব নয়। ভার্সিটিতে ক্লাস আছে। ”

তৃষা ফোঁড়ন কেটে বললো,

” আগামী সপ্তাহ থেকে বন্ধ আছে তো। দুই সপ্তাহ। ”

নিজাম সাহেব গদগদ কন্ঠে বললেন,

” সেটাই কাজে লাগাও। আমি টিকেট বুক করে ফেলেছি। আগামী সপ্তাহে ফ্লাইট। গুছগাছ শুরু করে দাও। এক সপ্তাহ ঘুরেফিরে তারপর ফিরবে। এর আগে নয়। ”

দুয়া অবাক চাহনিতে তাকিয়ে একটাই প্রশ্ন করলো,

” কোথায় যাবো বাবা? ”

নিশি উৎফুল্ল হয়ে শুধালো,

” হাঁ চাচু বলো না। ভাইয়া দুয়া ওরা কোথায় যাবে? ”

নিজাম সাহেব ভাব নিয়ে বললেন,

” ওয়েলকাম টু সুইজারল্যান্ড। ”

চরম আশ্চর্যান্বিত হলো সকলে! তৃষা খুশিতে আত্মহারা হলো।

” ওয়াও! সুইজারল্যান্ড! অসাম আব্বু। একদম ফাটাফাটি জায়গা চুজ করেছো। ইশ্! ওদের হানিমুন না হলে আমিও সাথে যেতাম। আহা রে! ”

সবার মাঝে টেকা দায় হয়ে পড়লো দুয়া’র। লাজুক মেয়েটি তড়িঘড়ি করে সেথা হতে প্রস্থান করলো। সেদিকে তাকিয়ে নিশি হেসে উঠলো।

” দুয়া ভাবি লজ্জা পেয়েছে। ”

তাসলিমা বললেন,

” পাবে না? ও কি শ্বশুর-জামাইয়ের মতো নির্লজ্জ? ”

নিজাম সাহেব অবাক হয়ে বললেন,

” আমি নির্লজ্জ? ”

” নাহলে কি? এখানে মা আছে। তোমার ভাই আছে। সবার সামনে কিভাবে….! ইশ্। ”

তূর্ণ দাঁত কেলিয়ে হাসলো। কফির মগে শেষ সিপ বসিয়ে উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে বললো,

” আব্বু কিন্তু সত্যিই নির্লজ্জ আম্মু। আমরা দুই ভাইবোন তার সর্বোত্তম উদাহরণ। ”

তাসলিমা হতবিহ্বল! নিজাম সাহেব দাঁত কেলিয়ে হাসলেন। ছেলের দিকে তাকাতেই উনি অবাক! তূর্ণ চোখ টিপে দিলো বাবাকে। ঠোঁট নাড়িয়ে নিঃশব্দে বললো,

” থ্যাংক ইউ। ”

প্রস্থান করলো তূর্ণ। নিজাম সাহেব বিড়বিড় করতে লাগলেন,

” বদ ছেলে! হানিমুন যাবে না বলে ভাব নিচ্ছিল। অথচ তলে তলে ঠিকই মনে লাড্ডু ফুটেছে। বাপকে আবার চুপিচুপি থ্যাংকস জানাচ্ছে! ”

” কি রে পুতলা? হানিমুন যাওয়ার খুশিতে মনে লাড্ডু ফুটেছে? এখনই ‘লেটস্ নাচো’ শুরু করে দিয়েছিস? ”

চলবে.

[ আসসালামু আলাইকুম পাঠকবৃন্দ। কেমন লাগলো চমক? তূর্ণয়া’র সঙ্গে আমরাও যাচ্ছি সুইজারল্যান্ড। সকলে ব্যাগপ্যাক গুছিয়ে রেডি থাকুন। ইনশাআল্লাহ্ আগামী পর্ব হতে সুইজারল্যান্ড ট্রিপ শুরু হতে চলেছে। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। ধন্যবাদ সবাইকে পাশে থাকার জন্য। ]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here