#আবার_প্রেম_হোক
#নুসরাত_জাহান_মিম
৬৯.
রামিমের বাহুডোরে আবদ্ধ উশ্মি।বুকের কাছে পিঠ ঠেকিয়ে কোমড় জড়িয়ে ছাদের গ্রিলের পাশ ঘেষে দাঁড়িয়ে আছে দুজনে।হিমেল হাওয়ায় উশ্মির কাধ অব্দি চুলগুলো উড়ে বেড়াচ্ছে ক্ষণে ক্ষণেই।তাতে নাক ডুবিয়ে চুলের ঘ্রাণ নিচ্ছে রামিম।একটু পরপরই কেপে কেপে উঠছে উশ্মি।চুল হতে মুখ সরিয়ে সেভাবে দাড়িয়েই তার গাল বরাবর নিজ গাল মিলিয়ে উশ্মির গালে লেগে থাকা হলুদসমূহ নিজ গালে স্পর্শ করায় রামিম।অতঃপর মোহাবিষ্ট কন্ঠে বলে,
“এতবার প্রেমে পড়েও বারবার তোমার প্রেমে পড়া থেকে ক্লান্ত হইনা উশি”
সামান্য কম্পিত হয়ে ঘনঘন শ্বাস ফেলে উশ্মি বলে,
“পাঁচ-ছয় দিনই তো কেবল,একটু অপেক্ষা করো”
উশ্মির গালে আলতোভাবে ঠোট ছুইয়ে তার ঘাড়ে থুতনী রেখে কোমড় আরেকটু জোরে চে!পে ধরে কাছে টেনে এনে রামিম বলে,
“আরতো সহ্য হচ্ছেনা মেয়ে!”
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
হঠাৎ কোনো পুরুষালি কন্ঠ শুনে পেছন ঘুরে তাকাতেই শাড়ির কুচির সাথে পা বেঝে পড়ে যেতে নিলেই হাত ধরে টেনে রুবাকে দাড় করায় চৈত্র।অতঃপর সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বুকে থুতু দেয়ার ভঙ্গিমায় রুবা বলে,
“এভাবে কেউ ডাকে হঠাৎ?এখনই তো পড়ে যেতাম।আমার কোমড় ভাঙা কি আপনার মূল লক্ষ্য হয়ে দাড়িয়েছে নাকি?”
রুবার অহেতুক কথা শুনে মনে মনে বেশ বিরক্ত হয় চৈত্র।তবে মুখে কিছুই বলেনা।চৈত্রকে চুপ থাকতে দেখে রুবা বলে,
“কী হলো?এখন চুপ করে আছেন কেনো?কী জন্য ডেকেছেন বলুন?”
“জ্বি আসলে চাঁদকে খুঁজে পাচ্ছিলাম না।আপনার সাথেই নাকি ছিলো?”
“হ্যা ছিলোতো আমাদেরই সাথে।তারপর কোথায় যেনো গেলো…..”
রুবার কথার মাঝেই চৈত্র বলে,
“আচ্ছা যেখানেই যাক ধরুন এগুলো”
বলেই হাতে থাকা মিষ্টির বাক্সগুলো রুবার দিকে এগিয়ে দেয় চৈত্র।ব্যাগ ভর্তি এতগুলো বাক্স দেখে কপাল কুচকে রুবা বলে,
“এগুলো দিয়ে আমি কী করবো?”
“কী করবেন জানিনা তবে রাখুন”
কপাল আরও খানিকটা কুচকে রুবা বলে,
“আমি এগুলো নিয়ে করবোই টা কী?”
“আপনি প্রণয়ের বোন না?তো আপনারই তো নেয়ার কথা”
কিছুক্ষণ এদিক ওদিক চেয়ে কিছু একটা ভাবতে ভাবতে প্যাকেটগুলোর দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে রুবা বলে,
“আচ্ছা দিন”
অতঃপর চৈত্রের হাত থেকে মিষ্টির বাক্সগুলো নিয়ে তার মামি পুষ্পিতা জামানের কাছে গিয়ে সেগুলো দিতে দিতে রুবা বলে,
“মামি ধরো এগুলো”
রুবার হাতে এতগুলো বাক্স দেখে পুষ্পিতা জামান বলেন,
“কিসের এগুলো?”
রুবা বাক্সগুলো তার মামির হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলে,
“মি.চৈত্র এনেছেন।কাউকে না পেয়ে আমার হাতেই ধরিয়ে দিলেন”
“চৈত্র এসেছে?আর বেয়াই-বেয়াইন আসেন নি?”
“সে তো জানিনা মামি”
বাক্সগুলো রুবার হাত থেকে নিয়ে পুষ্পিতা জামান বলেন,
“আচ্ছা যা তুই”
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
খাওয়ার টেবিলে বসে সবেমাত্রই প্রথম লোকমা তুলেছিলো ফায়ান,এমতাবস্থায় হঠাৎ করেই পাশ হতে তার কানে ভেসে আসে এক গম্ভীর পুরুষালি কন্ঠস্বর,
“কে আপনি?”
হঠাৎ অপরিচিত কারো অদ্ভুত প্রশ্ন শুনে কপাল সামান্য কুঞ্চিত হয়ে আসে ফায়ানের।সে হাতে তুলে নেওয়া লোকমা টুকু প্লেটে রাখতে নিলেই ফের শুনতে পায়,
“রাখবেন না ওটা।মুখে তুলেছেন খেয়ে নিন,তারপর কথা বলুন”
লোকটার কথা শুনে ফায়ান লোকমাটুকু চটজলদি মুখে পুড়ে খেতে খেতে বলে,
“আপনার কথা ঠিক বুঝলাম না?”
“না আমি জিজ্ঞেস করলাম যে কোন পক্ষ থেকে আপনি?শুনলাম চাঁদের বন্ধু হন নাকি!”
ফায়ান লোকটার পানে চেয়েই বলে,
“জ্বি আমি চাঁদেরই বন্ধু।সে হিসেবে মেয়েপক্ষই ধরতে পারেন।তবে আপনাকে ঠিক চিনলাম না?”
লোকটা সৌজন্যের হাসি হেসে খাবার মাখতে মাখতে বলে,
“আমি রায়হান,প্রণয়ের ফুপাতো ভাই”
“ওহ আচ্ছা আচ্ছা।জ্বি ভাইয়া বলুন?”
“আপনি কি ম্যারিড?”
একের পর এক অদ্ভুত প্রশ্ন শুনে বিস্ময়ে কপাল সামান্য কুচকে আবার তা শিথিল করে খানিক হেসে ফায়ান বলে,
“না ভাইয়া এখনও পর্যন্ত না।হঠাৎ এ কথা?”
“না এমনি আরকি”
“আপনি ম্যারিড কিনা?”
“নাহ”
“আচ্ছা”
“কিছু মনে না করলে আরেকটা প্রশ্ন করবো?”
ফায়ান খেতে খেতেই বলে,
“জ্বি অবশ্যই”
“গার্লফ্রেন্ড আছে আপনার?”
এবারে বেশ অবাক হয় ফায়ান।তবে তা প্রকাশ না করে স্বাভাবিক কন্ঠেই বলে,
“না”
বলেই আবারও খাওয়ায় মনোনিবেশ করে।আর রায়হানও তার প্লেটের খাবারটুকু কোনোরকমে শেষ করেই উঠে পড়তে নিলে ফায়ান বলে,
“সে কি ভাইয়া?খাবেন না আপনি?”
“খাওয়াতো শেষই ভাই।তাছাড়া বোনের বিয়েতে কি আর অতো খাওয়া দাওয়া করা যায়?কাজ ছিলো একটু,আসছি আমি”
“ওহ আচ্ছা আচ্ছা।জ্বি অবশ্যই”
রায়হান উঠে যেতে নিলেই সেখানে হাজির হয় শিফা।ফায়ানের পাশের চেয়ার টানতে গেলেই বাঁধ সেধে গম্ভীর কন্ঠে রায়হান বলে,
“এখানে কী করছিস?”
স্বাভাবিকভাবেই শিফা বলে,
“খেতে এসেছি”
“তো অন্য কোথাও বস!”
কপাল কুচকে শিফা বলে,
“এখানে বসলে কী হবে?”
“এখানেরতো খাওয়া শেষই দেখছিস না আমি উঠে গেছি?”
তখনই ফায়ান শিফার দিকে ঘুরে বলে,
“আমার পাশে বসো শিফা।আর ভাইয়া আপনিতো কিছু না খেয়েই উঠে গেলেন।সবেইতো খাওয়া শুরু হলো এখনও শেষ হয়নি।তুমি আসো বসো”
বলেই শিফার কব্জি ধরে তাকে নিজের পাশে বসিয়ে প্লেটে খাবার বেড়ে দিতে লাগে ফায়ান।আর চোখের ইশারায় শিফাকে কিছু জিজ্ঞেস করতেই শিফাও চোখে চোখে ফায়ানের সাথে কথোপকথন করে।হঠাৎ ই শিফা ফায়ানের হাত ধরে তাকে থামিয়ে দিয়ে বলে,
“আরেএ ফায়ান করছেন কী?এত খাবার দিচ্ছেন কেন?আমি অতো খেতে পারিনা”
“খেতে পারোনা বলেইতো এত শুকনা।খেয়ে খেয়ে মোটা হও নাহয় বিয়ের পরে হাজবেন্ডের পাশে দাড়ালে তোমাকেতো দেখাই যাবেনা!”
বলেই হাসতে লাগে ফায়ান।শিফাও কিঞ্চিৎ লজ্জা পাওয়ার ভঙ্গিমায় খাবার মাখতে মাখতে বলে,
“কী যে বলেন না আপনি!”
শিফা আর ফায়ানের এতটা সহজ কথার ধরণে বেশ অবাক হয় রায়হান।তবে কিছু না বলে খানিকক্ষণ তাদের পানে চেয়ে থেকে চলে আসে সেখান থেকে।আর ফায়ান খেতে খেতেই শিফাকে বলে,
“তা প্রণয় ভাইয়ার ফুপাতো ভাইকে পছন্দ করো তুমি?”
শিফা খানিকটা লজ্জা পেয়ে দৃষ্টি নত করে।তা দেখে ফায়ান বলে,
“তোমার সাথে তাকে বেশ মানাবে”
কথাখানা শুনে লজ্জায় আড়ষ্ট হয়ে শিফা কেবলই প্লেটের খাবারে আঙুল দিয়ে আঁকিবুঁকি করতে থাকে।শিফাকে চুপ দেখে খাবার খেতে খেতেই ফের ফায়ান বলে,
“জানো সে কিসব বলছিলো?”
এবার শিফা ফায়ানের পানে চেয়ে উৎসুক গলায় বলে,
“কী?”
ফায়ান হাসতে হাসতেই জবাব দেয়,
“আমি কে?ম্যারিড কিনা!গার্লফ্রেন্ড আছে কিনা?অদ্ভুত অদ্ভুত প্রশ্ন যত”
“আমার ব্যাপারে কিছু বলেছে?”
“না”
ফায়ানের জবাব শুনে লম্বা শ্বাস ফেলে প্লেটের খাবার মেখে মুখে তুলে নেয় শিফা।আর ফায়ান বলে,
“তবে যেভাবে প্রশ্ন করছিলো আমার তো মনে হলো তোমার সাথে আমায় দেখে বিষয়টা হজম করতে পারেনি আর তখনও দেখলেনা কীভাবে তাকিয়ে গেলো?”
“আপনার কী মনে হয়?”
“আমারতো লাগছে তুমি খুব শীঘ্রই তোমার ভালোবাসা পেতে চলেছো”
শিফা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে,
“ভালোবাসা পাওয়া কি এতই সহজ?আর এতবছরেও যাকে পাইনি,আমার দিকে ফিরেও যে তাকায়নি সে হঠাৎ করেই ভালোবেসে ফেলবে আমায়?”
“ভালোবাসা কখন,কোথায়,কবে এবং কীভাবে যে হয়ে যায়!সে খবর আমরা কেউই রাখিনা অথবা জানিনা।ভালোবাসা ব্যস হয়ে যায়।সেটা হোক আজ অথবা কাল অথবা কয়েক যুগ পরেই!ভালোবাসা কিন্তু কোনো কাল মুহুর্ত বিবেচনা করে হয়না।ভালোবাসা এমনই অদ্ভুত!”
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
চাঁদের চোখজোড়ায় নিজ আঁখিদ্বয় নিবদ্ধ করে কয়েক মুহুর্ত নির্নিমেষ তাকিয়ে থেকে প্রণয় শুধায়,
“প্রণয়ের দৃষ্টি আজন্ম তাতেই বিদ্যমান ছিলো সে কি তার খোঁজ রাখেনা?”
প্রণয়ের এই সম্মোহনী দৃষ্টি কখনোই উপেক্ষা করতে পারেনি চাঁদ,না আজ পারছে।নিজ প্রিয় মানবের প্রিয় বিড়ালাক্ষীজোড়ায় অপলক তাকিয়ে থেকেই নিজ অজান্তে প্রণয়ের কথার প্রেক্ষিতে সে বলে উঠে,
“অথচ তার দৃষ্টি গহীনে লুকানো সেই বেদনাসমূহ কেনো পড়তে পারলোনা?”
হঠাৎ করেই সেখানে মির বলতে বলতে আসছিলো,
“চাঁদ?তোমাকে আসলে চৈ…….”
অতঃপর চাঁদ আর প্রণয়ের দিকে পিঠ করে দাঁড়িয়ে দ্রুত বলে,
“ওহ সো সরি!অ্যান্ড আগেইন সরি ফর ডিস্টার্বিং,একচুয়ালি চৈত্র ভাই তোমায় খুঁজছিলো চাঁদ”
মিরকে আকস্মিক সেখানে দেখে ভড়কে গিয়ে প্রণয়কে নিজের থেকে দূরে সরিয়ে চাঁদ বলে,
“ভাই এসেছে?আর আম্মু আব্বু আসেনি ভাইয়া?”
সেভাবে দাড়িয়ে থেকেই মির বলে,
“আংকেল আন্টিকেতো দেখিনি।তুমি বরং চৈত্র ভাইয়ের কাছেই জিজ্ঞেস করো।স্টেজের পাশেই আছে।রুবার সাথে কথা বলছিলো আই গেস”
“আচ্ছা চলো”
“কাজ শেষ তোমাদের?”
মিরের প্রশ্নে কপাল সামান্য কুঞ্চিত করে গম্ভীরভাবে প্রণয় বলে,
“এত নাটক করার প্রয়োজন নেই।এরকম এক ভাব ধরেছে যেনো জীবনে কখনো কোনো কাপল দেখেনি”
এবার প্রণয় আর চাঁদের পানে চেয়ে মির বলে,
“কাপল দেখেছি তবে রসকসহীন,নিরামিষ দুই অদ্ভুত প্রাণীকে একসাথে এত কাছে প্রথম দেখেছি তাই আরকি একটু আজব লেগেছে!”
দুই বন্ধুর কথার মাঝখানে থাকাকে সায় দিলোনা চাঁদ।অহেতুক তাকেই বিড়ম্বনা আর লজ্জায় পড়তে হবে,যার দরুন সে দ্রুত জায়গা প্রস্থান করলো।
চৈত্রের পাশে আকস্মিক চাঁদ এসে দাঁড়িয়ে কিছু বলতে গেলেই শুনতে পায় ভাইয়ের বিরক্তিকর কন্ঠস্বর,
“দেখুন মিস রুবা আমি আপনার বেয়াই হলেও যথেষ্ট বড় অহেতুক বারবার মশকরা করতে আসবেন না”
কপাল খানিকটা কুচকে ভাইকে কিছু বলার পূর্বেই তার পাশে এসে রুবা দাঁড়িয়ে বললো,
“দেখলে ভাবি দেখলে?তোমার ভাই কীভাবে আমার পেছনে পড়েছে?”
রুবার কথা শুনে পিছু ঘুরে চাঁদকে দেখে চৈত্র বলে,
“কোথায় ছিলি?”
চাঁদ জবাব দেয়,
“এইতো ভাই ছিলাম একটু আশেপাশেই।কখন এসেছো?আর আম্মু আব্বু?”
চৈত্রের জবাবের পূর্বে রুবা কথার মাঝখানে বলে উঠে,
“তোমাদের ভাইবোনদের আলাপ পরে করবে।আগে আমার বিচার বিহিত করোতো ভাবি”
চাঁদ সামান্য হেসে বলে,
“হ্যা অবশ্যই।বলো?কী বিচার করতে হবে?কী নালিশ জমিয়েছো আমার ভাইয়ের নামে?”
“শোনোনি একটু আগে কী বললো?”
“হ্যা শুনেছিতো।কিন্তু কেনো বললো?”
এবার চুপ করে যায় রুবা।তা দেখে চৈত্র বলে,
“এবার বলুন?বলছেন না কেনো?নাকি আমি বলবো?”
“এই না না থাক।আমি বরং যাই ভাবি।আমার কোনো বিচারও লাগবেনা বিহিতও করতে হবেনা।থাকো তোমরা।আর হ্যা খবরদার ঐ কথা যদি কাউকে বলেছেন তো!”
শেষের কথাটা চোখ রাঙিয়ে চৈত্রের নাক বরাবর তর্জনী নিয়ে শাসানোর ভঙ্গিমায় বলেই সেখান থেকে কেটে পড়ে রুবা।রুবার যাওয়ার পানে তাকিয়ে হেসে দেয় চাঁদ।বেশ গম্ভীরভাবে কপাল কুচকে তাকিয়ে থাকে চৈত্রও।অতঃপর শরীর হেলিয়ে দুলিয়ে নাচতে নাচতেই রুবাকে যেতে দেখে গম্ভীরভাবেই ঠোট অল্প বিস্তর এক পাশ করে সামান্য হাসে সে।ফলস্বরূপ কন্ঠনালি বারকয়েক কেপে উঠে তার।যা স্পষ্ট নজরে আসে চাঁদের।সে কেবলই তাকিয়ে থাকে ভাইয়ের নজরপানে।
.
.
.
.
.
.
.
.
রিদির পাশে বসে ছিলো উজান।রিদিকে মোবাইলে মনোযোগী দেখে তার মাথায় গাট্টা মে!রে সে বলে,
“সারাক্ষণ মোবাইল টিপতে টিপতেতো চোখ দুটো অকালে খুইয়ে চশমা নেয়া লাগবে তোর!”
কপাল সামান্য কুচকে রিদি বলে,
“আমার মা হতে যেওনা তো ভাইয়া!”
“হায়হায় তোর মা হবো কেন?আমিতো এখন তোর বেয়াই হই বেয়াই”
বলেই পাঞ্জাবির কলার উঁচিয়ে দেখায় উজান।তা দেখে রিদি বলে,
“হ্যা তো এখন নিশ্চয়ই আমায় নাচতে বলবেনা তুমি?দেখি যাওতো মশকরা করতে এসোনা”
“বেয়াইনের সাথে মশকরা করবোনা তো কার সাথে করবো হা?”
বলেই দুই ভ্রু নাচিয়ে রিদির দিকে তাকায় উজান।আর রিদি বিরক্তির সুরে বলে,
“দেখো ভাইয়া এমনিতেই আমার ভালো লাগছেনা”
“কেন কোনো সিনিয়র ভাইয়া ছ্যাকা দিয়েছে?কিন্তু তুইতো এখনও মেডিকেল যাওয়া শুরুই করিস নি”
“আমি কিন্তু ভাবির কাছে বিচার দেবো ভাইয়া”
“হ্যা তো দে না মানা করেছে কে?তোর একার ভাবি হয় নাকি?আমারও ভাবি লাগে”
“আমি চাঁদ ভাবির কথা বলিনি।তোমারটার কথা বলেছি”
কপাল মাত্রাতিরিক্ত কুচকে উজান বলে,
“আ..আমারটার মানে?কী বলিস?”
“তোমারটার মানে তোমারটার।মানে তোমার গার্লফ্রেন্ডের কথা বলছি আমি”
থতমত খেয়ে উজান বলে,
“আমার কোনো গার্লফ্রেন্ড নেই।ফালতু বকিস কেন?”
“তুমি কি ভেবেছো আমি কিছুই জানিনা?উশ্মি ভাবি আমায় সব বলেছে।ভাবির পরপরই যে তুমি বিয়ে করতে এক পায়ে রাজি তাও জানি।করতে পারছিলেনা ভাবির জন্য।আর রায়হান ভাইয়ার জন্যও যে এখন করতে পারবেনা তাও জানি।তোমার প্ল্যানিং সবই জানি আমি”
“এতো দেখছি ঘরের শত্রু বিভীষণ!বোন আমার কাউকে বলিস না এসব প্লিজ!”
কোনা চোখে উজানের পানে চেয়ে রিদি বলে,
“একটা হেল্প করতে হবে তাহলে”
বেশ অবাক হয়ে উজান বলে,
“শেষমেশ তুইও পাকনা হয়ে গেলি?”
“হ্যা অবশ্যই।বাংলাদেশের টপ মেডিকেলের স্টুডেন্ট হতে যাচ্ছি আর অল্প একটু পাকনাও হবোনা তা কি করে হয়?”
“হয়েছে হয়েছে।বল কী করতে হবে?”
“দু’টো কাজ করে দিতে হবে”
“সিক্রেট লুকাবি একটা কাজ করবো দুইটা?মগের মুল্লুক পেয়েছিস?”
“ঠিক আছে তাহলে আমি গিয়ে সবার সামনে মাইকিং করছি!কিন্তু সর্বপ্রথম শোনাবো রায়হান ভাইয়াকে”
বলেই চলে যেতে নিলে রিদির দুই হাত ধরে আটকে উজান বলে,
“না না সোনা বোন আমার!এমন করিস না প্লিজ।তুই একটা কেন দশটা কাজ বললেও আমি করে দেবো।তুই শুধু বলেই দেখ না!”
উজানের অসহায় মুখের দিকে চেয়ে বেশ উচ্চস্বরেই হেসে দেয় রিদি।হাসতে হাসতেই দুজনে আলাপ আলোচনা করতে থাকে।আর দূর হতে তাদের পর্যবেক্ষণ করে একজোড়া রক্তিম চোখ।
To be continued…..