আবার_প্রেম_হোক #নুসরাত_জাহান_মিম ৭৮.

0
775

#আবার_প্রেম_হোক
#নুসরাত_জাহান_মিম

৭৮.
আজ দুই রাত পুরো একদিন পর জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে চাঁদ।মুখ তার মলিন,শুকনো।ভেতরে কোনো অনুভূতিরা সাড়া দেয়না।ঠোটজোড়াও নড়েনা,দৃষ্টি তার স্থির হয় দূর রাস্তার পানে।হেলদুলহীন এক মানবীরূপে কেবলই যে যেভাবে নিয়ে যাচ্ছে যেখানে নিচ্ছে সেভাবেই সে হেটে চলেছে।আকস্মিক সাংবাদিকদের প্রশ্নের সম্মুখীন হতেই হকচকিয়ে উঠে চাঁদ।অতঃপর করুন চাহনী তাদের পানে নিক্ষেপ করতেই হরেক রকমের প্রশ্ন কানে আসে তার।একজন মহিলা সাংবাদিকের প্রশ্ন,

“তো মিস চাঁদ?নাকি বলবো মিসেস চাঁদ রুহায়ের প্রণয়?আপনাদের যে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো তারপর বিয়ে তা লুকিয়েছেন কেনো?”

আরেকজনের প্রশ্ন,

“আপনারা দু’জনই কিন্তু মেডিকেল এডমিশন টেস্টের প্রথম হওয়া দুই অসাধারণ ব্যক্তি।বিয়ে যখন করেছেনই জানান নি কেনো?”

“কেনোই বা আপনার স্বামী সার্জন রুহায়ের প্রণয় আপনার নামে মামলা করলো?এখন নাকি শোনা যাচ্ছে সবটাই মিসআন্ডারস্ট্যান্ডিং?”

“গাড়ি নাকি আগে থেকেই ব্রেকফেইল ছিলো?”

“তবে কে করলো এটা?কেনোই করলো?আপনাদের মাঝে কীসের ঝগড়া?আপনাদের নিয়ে নানান ধরণের গুঞ্জনই কানে আসে তবে সত্যি কোনটা মিসেস চাঁদ?”

“আপনাদের মধ্যকার সম্পর্ক কি ভালো নয়?”

“আপনিই বা কেনো হঠাৎ ঢাকা মেডিকেল থেকে টিসি নিয়ে চলে গেলেন?সকলের স্বপ্ন থাকে ঢামেক।আপনারও নিশ্চয়ই ছিলো?”

“তবে কি ধরে নেবো আপনাদের মাঝের সমস্যার কারণেই আপনি ঢাকা ছেড়েছিলেন?”

এরকম বিভিন্ন ধরণের প্রশ্নে চাঁদের মস্তিষ্কে চাপ পড়ে এবং সে দুই হাতে তার কান চেপে ধরে ভাইকে বলে,

“ভাই আমায় এখান থেকে প্লিজ নিয়ে চল।দূরে কোথাও নিয়ে চল”

হঠাৎ করেই চৈত্রের হৃদয় ছলাৎ করে উঠে।মনে পড়ে সে রাতের কথা।অতঃপর দাঁতে দাঁত চেপে বোনের হাত ধরে কোনোমতে সকলের সাহায্যের সহিত বোনকে নিয়ে একটা ট্যাক্সিতে উঠে সে।একে একে উঠে সকলেই।অতঃপর গাড়ি ছুটে চলে তার আপন গতিতে পেছনে হাজারো প্রশ্নকে উপেক্ষায় ফেলে রেখে।
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
উশ্মি চাঁদ আর প্রণয়ের ডিভো!র্স পেপার নিয়ে হাজির হয় চৌধুরী বাড়িতে।এসে বেশ তেজী গলায় ‘প্রণয় ভাইয়া,প্রণয় ভাইয়া’ বলে ডাকার পরেও যখন প্রণয়কে দেখতে পায়না তখনই সে ছুটে চলে উজানের রুমের দিকে।অতঃপর উজানকে বেশ অন্যমনস্ক হয়ে জানালার পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ভাইয়ের পেছনে গিয়ে তার কাধে হাত রাখতেই ঈষৎ কাপে উজান।কেপে উঠতেই পিছু ঘুরে উশ্মিকে দেখে আকস্মিক নিচু হয়ে বোনকে জড়িয়ে ধরে ঘনঘন শ্বাস নেয় সে।উজানের আচানক করা কান্ডে বেশ অবাক হয় উশ্মি।তবে কিছু বলেনা।সেভাবেই ভাইকে জড়িয়ে বলে,

“কী হয়েছে ভাই আমার?মন খারাপ তোর?”

উজান জবাব দেয়না।বেশ কিছুক্ষণ বোনকে জড়িয়ে রেখে নাক টেনে ডান হাত দ্বারা চোখ মুছে নিজেকে বেশ স্বাভাবিক উপস্থিত করার জন্য তৎপর হয়ে উঠে।কিয়ৎক্ষণ বাদে উশ্মিকে ছেড়ে বেশ সহজ-সরল হাসি দিয়ে সে বলে,

“আরেহ আমার কথা বাদ দে।চাঁদ ভাবি ঠিক আছে তো?ভালোয় ভালোয় ভাবিকে ভাবির বাসায় পৌঁছেছিস?পথে কোনো ঝামেলা হয়নিতো?”

“ভাবি ঠিক আছে।তুই বল তোর হঠাৎ কী হয়েছে?”

উজান অন্যদিকে চেয়ে বলে,

“হ্যা?আমার আবার কী হবে?আ’ম ফাইন।অলরাইট”

ভাইয়ের দৃষ্টি খেয়াল করে ভাইয়ের হাত ধরে তাকে তার বিছানায় বসিয়ে নিজেও তার পাশে বসে তার থুতনি ধরে নিজের দিকে ঘুরিয়ে উশ্মি বলে,

“বিয়ে হয়ে গেছে বলে পর হয়ে গেছি তা কিন্তু নয় উজানভাটা।বল কী হয়েছে?কী নিয়ে দুঃখ পেয়েছিস?”

উশ্মির প্রশ্নেও উজান কিছু বলেনা।চুপ হয়ে থাকে বলে ফের উশ্মি বলে,

“ক’দিন বাদে পড়াশুনা শেষ হবে মানে এই নয় তুই খুব বড় হয়ে গেছিস বা আমার বড় তুই।এবার বল কী হয়েছে?কী নিয়ে ডিপ্রেসড তুই?বোন তার সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করবো”

“তুইতো চাঁদ ভাবিকেই ছাড়াতে পারলিনা।আমায় কী সমাধান দিবি?তুই না ব্যারিস্টারি করেছিস?ইংল্যান্ড থেকে পড়ে লাভটা কী হলো তোর?”

ভাইয়ের প্রশ্নে কপাল কুচকে উশ্মি বলে,

“কোনো কিছু করার আগেইতো শুনি বাচ্চার মা-বাবা নাকি নিজের ভুল স্বীকার করে চাঁদকে ছাড়িয়েছেন।আর বাচ্চার মা নাকি নিজেও অ্যাডভোকেট সো আমি আর কীই বা করবো?”

“হ্যা তুই আর কীই বা করবি?আর তোর কি মনে হয় চাঁদ ভাবিকে এমনি এমনি ছেড়ে দিয়েছে ওরা?”

“মানে?”

“অতো মানে টানে বোঝাতে পারবোনা।এখানে কেনো এসেছিস তা বল”

“তার আগে আমায় বল তোর কী হয়েছে?”

“ভালো লাগছেনা কিন্তু আপু।মেজাজ বিগড়াস না”

“কী হয়েছে?”

এবার বেশ উচ্চস্বরে উজান বলে,

“আরেএ সব মেয়েই ছলনাময়ী।একচুয়ালি ছেলেরাও।কোনো রিলেশনই টিকেনা।প্রেম ট্রেমই আসলে করা উচিত না”

কপাল বেশ কুঞ্চিত করে উশ্মি বলে,

“হয়েছে কী?এসব বলছিস কেনো?”

“কিছুই হয়নি।নিজের কাজ সেড়ে যাতো বোন!”

“মেয়েদের ছলনাময়ী বললি কেনো তুই?কে তোর সাথে ছলনা করেছে?”

“ছলনা করেনি কিন্তু করতে কতক্ষণ?আফটার অল আমার নিজের বোনই তো…..”

বলতে গিয়েও থেমে যায় উজান।আর উশ্মি বিস্ফোরিত নয়নে ভাইয়ের পানে চেয়ে বলে,

“তুই?”

“কী আমি?মিথ্যা তো বলিনি।আর ঐদিকে প্রণয় ভাই?কী না করলো।এবং কেনো করলো?আমার ভাইতো এমন নয়।আমি মানছি ভাই যা যা করেছে ঠিক করেনি।কিন্তু ভাবিরও কি এতে দোষ নেই?শুধু শুধুতো কেউ কারো পিছে লাগেনা তাইনা?অথবা বলতে পারিস তালি একহাতে কোনোদিনই বাজেনা।হয় দু’জনে সমান দোষী নয়তো কারো বেশি দোষ কারো বা কম।আমরা শুধু প্রণয় ভাইয়ের সাইড টাই দেখছি।চাঁদভাবি কী করেছে কী করেনি তা কিন্তু জানিনা।আর চাচ্চু কি করলো?ভাইকে বাড়ি থেকে বের করে দিলো?আই মিন হোয়াই?আমি মানছি ভাই ভুল করেছে বাট করেছে টা কেনো এটাতো ভাইকে কেউ জিজ্ঞেস করলোনা।ভাবিই বা কেনো কাউকে কিছু বলেনা?ভাবির কি উচিত না ভাইয়ের সাথে সব ক্লিয়ার করা?”

উশ্মি বেশ রেগে যায় এসব কথায়।সেও উচ্চস্বরে বলে,

“জাস্ট শাট আপ উজান।যা জানিস না তা নিয়ে একদমই কথা বলতে আসবিনা”

“ওহ তুইতো জেনে সব উল্টায় ফেলছিস তাইনা?অবশ্য কার সাথে কীই বা বলছি আমি।যে নিজেই একজনের জন্য আরেকজনকে…..”

“উজান!”

উশ্মির চেচানোতে উজান যেনো আরও ক্ষেপে গেলো।সে বললো,

“কী উজান হ্যা কী উজান?উচিত টা বললেই গায়ে লাগে কেনো সবার?একচুয়ালি সব মেয়েই এক।তারা কেবলই ধো*কা দিতে জানে।নিশ্চয়ই ভাবিও ভাইকে….”

উজানকে মাঝপথে আটকে দিয়ে উশ্মি বলে,

“যা জানিস না তা নিয়ে মোটেও বলবিনা উজান!”

“আমিও তো তাই বলছি যা জানিস না তা নিয়ে বলিস না।আমি জানিনা ভাবির সম্পর্কে তুই কী জানিস বা কী জানিস না।তবে তোর হাতে যে ডি!ভোর্স পেপার সেটা আমি জানি।এবং তোরা সকলে যে তাদের ডি!ভোর্স করাতে চাচ্ছিস তাও জানি।কিন্তু একবারও কি মাথায় আসলোনা আমাদের প্রণয় ভাইয়ার সাইড টাও দেখা উচিত?তার ভাগের সমস্যাটুকুও জানা উচিত?কিন্তু না তা তোরা করবিনা!তোরা ব্যাস একটা জিনিসই জানিস সেটা হচ্ছে মেয়েদের সিমপ্যাথি দেওয়া।কেন রে ভাই ছেলেরা কাদেনা বলে কি তাদের মন নেই?তারা কি ব্যথা পায়না?আমি নিজে প্রণয় ভাইয়াকে রাস্তায় রাস্তায় ভাবির জন্য ঘুরতে দেখেছি।চাচ্চুর কাছে অপমানিত হতে দেখেছি।আর সবচাইতে বড় কথা হলো সে যদি ভাবির ক্ষ*তিই চাইতো তবে নিজে গাড়ির মধ্যে থাকতোনা অথবা ভাবিকে প্রোটেক্ট করতে গিয়ে গাড়ির সকল কাচ নিজের শরীরে বিঁধতে দিতোনা।এখনো লোকটা হয়তো বউকে কীভাবে মানানো যায় সেই চিন্তায়ই তৎপর।কোথায় আছে তাও জানিনা”

“তুই কেবল প্রণয় ভাইয়ার টাই ভাবছিস।ভাবির টা ভাবছিস না”

“কে বলেছে ভাবছিনা?আমিতো জানিনা তাদের মাঝে কী হয়েছে।তবে দুজনেরই উচিত দুজনের পক্ষে বিপক্ষে কথা বলা।একে অপরকে সবটা জানানো।যেহেতু দুজনেই ইগোয়েস্টিক।কেউই কাউকে দেখতে পারেনা,তাদের এ জীবনে সমাধান হবেনা।আর তার জন্য সাফার করতে হচ্ছে আমায়”

“মানে?তোর কী হয়েছে?কেনো তোকে সাফার কর‍তে হচ্ছে?”

“একচুয়ালি ভাইয়ের জন্য না তোর জন্যও।তোর জন্যই হচ্ছে সব।তুই সবকিছুর মূল”

কপাল কুচকে উশ্মি বলে,

“কী হয়েছে বলবিতো?”

“দেখ বোন মন মেজাজ সত্যিই খারাপ।তুই যাতো আমার সামনে থেকে,ভাল্লাগছেনা”

“যাবোনা বল”

ঘনঘন শ্বাস নিয়ে উজান বলে,

“গার্লফ্রেন্ড প্যারা দিচ্ছে!প্যারা বুঝিস?বিয়ে করার প্যারা।তার নাকি বিয়ে ঠিক করে ফেলছে।আমি নাকি স্টিল কু!লা!ঙ্গার।তার উপর দিয়ে এতকিছু হচ্ছে।আমার ভালো লাগছেনা বিশ্বাস কর!তোকে,রামিম ভাই,রায়হান ভাই,প্রণয় ভাই,চাঁদ ভাবি আর ইয়ানাকে এখন প্রচন্ড বিরক্ত লাগছে।তোদের একেকজনের কাহিনী আর মজা লাগছেনা আমার।তোরা পেয়েছিস টা কী?কাউকে ভালোভাবে বাঁচতে দিবিনা নাকি?প্রেমের প্রতি তোরা এতটা বিতৃষ্ণা কারো মাঝে কী করে সৃষ্টি করাতে পারিস বুঝিনা আমি!তোদের সকলকে দেখলে যে কারোরই প্রেম করাতো দূর বিয়ের দিকেও যেতে ইচ্ছে করবেনা।চাঁদ ভাবি আর ভাইয়ের বিয়ের কতগুলো মাস হয়েছে।প্রায় একবছর হয়ে যাবে।এতদিন কত মাখো মাখো প্রেম দেখিয়েছে আর এখন?কী করছে এসব?তুইও সবকিছুতে সায় দিচ্ছিস।এমনকি পেপারসও বানিয়ে এনেছিস।এই যাতো তুই!তোকে একটুর জন্যও দেখতে ইচ্ছা করছেনা আমার।প্লিজ গো!”
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
বেশ ক্লান্ত ভঙ্গিতে মিরের বাসার সামনে হাজির হয়েছে প্রণয়।অতঃপর ভেতরে গিয়ে কলিংবেল চাপতেই মির নিজে এসেই দরজা খুলে প্রণয়কে দেখে কপাল কুচকে নেয়।কিয়ৎক্ষণ তার পানে তাকিয়ে থেকে তাকে পর্যবেক্ষণ করতে লাগে সে।ফর্সা মুখে মলিনতার ছাপ।গালভর্তি হালকা হালকা দাড়ি।দুই চোখের নিচেই কালচে দাগ পড়ে গেছে।ঠোট দু’টো শুকিয়ে ফেটে চৌচির!চুলগুলো এলোমেলো ধূলোবালি পড়া।গায়ের শার্টেও ময়লার ছড়াছড়ি।বেশ ক্লান্ত ভঙ্গিতেই প্রণয় বসে পড়ে মিরের বাসার দরজার সামনে।অতঃপর ঘাড় ঝুলে পড়ে ফ্লোরের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে।সেভাবে থেকেই সে বলে,

“দোস্ত!আমায় তোর বাড়িতে কয়েকদিনের জন্য থাকতে দিবি প্লিজ?বাবা আমায়…..”

প্রণয়ের কথা সম্পূর্ণের পূর্বেই মির বলে,

“সবই জানি আমি।তবে তোর জন্য আমার বাড়িতে কোনো জায়গা নেই।একজন অ!পরাধীর জন্য কারো বাড়িতেই কোনো জায়গা থাকতে পারেনা।সো আমার বাড়িতেও নেই।ইউ মে গো নাও”

বেশ অসহায় ভঙ্গিতে ঘাড় তুলে বন্ধুর পানে তাকাতেই পাশে করুনভাবে মিরের পাশেই মিরাকে নিজের দিকে তাকাতে দেখে কিছু বলতে নিলে মিরাও বেশ গম্ভীরভাবে বলে,

“সরি বাট আমার কিছুই করার নেই।মিরের উপরে আমি কিছুই বলতে পারবোনা।ও আমার ভাই।তাছাড়া তোকে আমি কখনোই বলিনি বিনা অপরাধে কাউকে শাস্তি দে।তুই তাই করেছিস।যদি তুই তার করা অপরাধের জন্য শাস্তি দিতি তাও মানা যেতো বাট!আই আম সরি রে!কান্ট ডু এনিথিং ফর ইউ”

মিরার পানে চেয়ে থেকে বেশ হতাশ ভঙ্গিতে প্রণয় বলে,

“অন্তত এক গ্লাস পানিতো খাওয়াবি প্লিজ?”

প্রণয়ের বলতে দেরি অথচ মিরার কর্মে তৎপর হতে দেরি হলোনা।সে বেশ ক্ষীপ্র গতিতেই ছুটে চললো বন্ধুর জন্য পানি আনতে।অতঃপর প্রণয়ের দিকে তা এগিয়ে দিতেই সেকেন্ড তিনেকের মাঝেই সে তা সম্পন্ন করলো।এবং পানি পান করে উঠতে নিলেই শুনতে পেলো মিরের গম্ভীর কন্ঠস্বর,

“যেভাবে এখানে ঠাই পাস নি,কোথাও পাবিনা আর।তাই নিজের এবং অন্যের সময় অপচয় করে দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াস না”

To be continued…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here