মেডিকেল_ক্যাম্প Part:29

0
272

29-FF#:মেডিকেল_ক্যাম্প

Part:29

হিয়া উজানের ওপর ভরসা করে পাবলো আর বুলির ব্যাপার টা মেনে নেয়।এদিকে দিন গড়াতে গড়াতে হিয়ায় থার্ড ইয়ায় এর পরীক্ষাও অনেকটা এগিয়ে আসে।হিয়ার প্রিপারেশন এবার অনেক টা ভালো।উজান আর এবার ওকে কোনো ছাড় দেয়নি ভালোবাসার ফাঁকেফাঁকে পড়াশুনো টাও চালিয়ে নিয়েছে………..

আজ ক্লাস ওফ ছিলো।বিকেলে হিয়া ওর রুমে ছাদঁ থেকে তুলে আনা কাপড় গুলো গুছাতে ছিলো এমন সময় হঠাৎ উজান কিছু না বলে হিয়াদের বাসায় আসে………………

বুলি:উজান দা তুমি!এসো ভিতরে এসো..তুমি আসবে দিদি তো কিছু বললো না…

উজান:আসলে তোমার দিদি ও জানে না যে আমি আসবো….

বুলি:ওহ আচ্ছা তুমি বসো….

বিকাশবাবু:বুলি কে রে মা?উজান বাবা তুমি…দাড়িয়ে আছো কেনো বসো না…এই বুলি যাহ গিয়ে চা নাস্তা কিছু আয়োজন কর জলদি…

উজান:নাহ নাহ বুলি ওসবের দরকার নেই।বাবা আমি আসলে হিয়াকে নিতে এসেছি….

বিকাশবাবু:কোথাও বের হবে তোমরা?

উজান:হ্যা মানে ঔ একটা কাজ আছে..

বিকাশবাবু:ঠিক আছে…হিয়া ওর রুমেই আছে তুমি যাও গিয়ে ওর সাথে কথা বলো….

উজান:হুম…..

উজান এসে হিয়াকে পেছন থেকে জরিয়ে ধরে।উজানের আচমকা জরিয়ে ধরাতে হিয়া হঠাৎ ভয় পেয়ে যায়………………………

হিয়া:ওহ আপনি!এভাবে কেউ ভয় পাইয়ে দেয়..

উজান:আমি দেই😊

হিয়া:তা হঠাৎ কি মনে করে আমার কথা মনে পড়লো,,,,কাজ টাজ ফেলে রেখে বাড়িতে আসতে হলো?

উজান:কেনো আমি কি আসি না?

হিয়া:আসেন…তবে কালকে রাতে যে ভাব দেখালেন মনে হলো সব কিছুর দায় যেনো আমার একার….(কাপড় গোছাতে গোছাতে)

উজান:আচ্ছা ওসব বাদ দিন।আপনি এখন ফ্রি আছেন কি না বলুন।আমি আপনাকে নিয়ে একটু বাহিরে বের হবো?

হিয়া:আমাকে নিয়ে আবার কোথায় বের হবেন…

……..উজান হিয়াকে আরো শক্ত করে ধরে ওর মুখ টা হিয়ায় কানের কাছে আরো আগায় নিয়ে আসে……..

উজান:গেলেই দেখতে পারবেন..

হিয়া:কি করছেন কি গেট খোলা কেউ আসবে..

উজান:আপনি যাবেন কিনা বলুন?

হিয়া:নাহ…আমার অনেক পড়া আছে সময় নেই আমার….

উজান:হিয়া প্লিজ কালকে কি বলেছি না বলছি আপনি এখনো ওটা নিয়ে পড়ে আছেন…..

হিয়া:আআআআ

উজান:কি হলো..

হিয়া:এই আপনাকে বলেছি না আমার কাছে আসলে এসব দাড়ি টাড়ি কেটে ছেটে আসবেন।কি রকম ঘুতো দিলো ইসস!!!!

উজান:ওতো সময় আছে নাকি আমার।আমি বাহিরে গিয়ে বাবার সাথে কিছু কথা বলছি আপনি তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে বের হোন…..

হিয়া:পারবো না আমার রেডি হতে সময় লাগবে…

উজান:খালি ন্যাকা এমনি দিন ৫ ১০মিনিটে হয়ে যায় আজ টাইম লাগবে!15minutes এর মধ্যে রেডি হয়ে আসুন…….

………হিয়া রেডি হয়ে এলে উজান ওকে একটা বড়ো দামি শমিংমলে নিয়ে যায়…..

হিয়া:এই আমরা এখানে কেনো আসলাম?

উজান:আমি তো কখনো আপনাকে সেভাবে কোনোদিন কোনো কিছু গিফট করি নাই হিয়া।তাই আজ ভাবলাম আপনাকে কিছু একটা কিনে দেই।আর নেক্সট উইক থেকে আপনার পরীক্ষা শুরু হলে আর সময় পাবো না তাই…..

হিয়া:বাহ বাহ কালকের ডোস টা দেখি ভালো কাজ দিয়েছে😎

উজান:কিছু বললেন?

হিয়া:কই না তো….

উজান:চলুন

হিয়া:না আমি এখানে যাবো না

উজান:কেনো?

হিয়া:দেখুন এটা তো অনেক দামি একটা মল…অনেক এক্সপেনসিভ সব জিনিস এখানে।
আমি চাই না আপনি অহেতুক আমার জন্য কোনো কিছু কিনে টাকা পয়সা নষ্ট করুন..

উজান:আপনাকে কেউ বলেছে টাকার কথা চিন্তা করতে।টাকা গেলে আমার যাবে😡

হিয়া:আপনার যাওয়া মানে কি আমার যাওয়া না…আর আপনি কষ্ট করে টাকা গুলো রোজগার করেন…আমার কিছু প্রয়োজন হলে আমি চেয়ে নেবো আপনার কাছ থেকে প্রমিস..

উজান:আমি এতো কথা শুনতে চাই না।আমি আপনাকে কিছু কিনে দিবো আর এখান থেকেই দিবো….

হিয়া:আপনি সত্যি আমাকে কিছু কিনে দিতে চান। তাহলে আমাকে শ্যামপ্লির বাজার ওখনে একটা মেলা বসেছে আমাকে বুলি সেদিন বললো ওখানে নিয়ে যান আমি ওখান থেকে কিছু কিনে নিবো। আর মেলা টাও ঘোরা হবে এমনিতেও তো কতোদিন আপনার সাথে কোথাও ঘোরা হয় না বলুন…😍

উজান:ঠিক আছে মেলাতেও যাবো আগে এখান থেকে কিছু কিনে তারপর..

হিয়া:আমি এখানে যাবো না…😏

উজান:আপনি না যান ওকে। আমার কিছু কেনার আছে আমি যাচ্ছি আপনি গেলে আসুন না হলে দাড়িয়ে থাকুন..

হিয়া:আরে আরে আরে…..আচ্ছা লোক তো…স্যার থামুন আমি কি করবো এখানে দাড়িয়ে দাড়িয়ে…উজান স্যার……..

…………উজান গিয়ে একটা শাড়ির দোকানে ঢোকে।হিয়া ওর পিছু পিছু ঔ দোকানে যায়…..

হিয়া:এই আপনি শাড়ির দোকানে কেনো এলেন..

উজান:কেনো আবার শাড়ি কিনতে

হিয়া:আপনি শাড়ি পড়বেন!(বুম বুম বুম)😂😂

উজান:হোয়াট আমি শাড়ি😡😡ইডিয়ট…আপনার জন্য শাড়ি কিনবো আমার জন্য না…(দাত খিচিয়ে)😣

হিয়া:আপনাকে আমি বাহিরে বললাম না আমি কিছু কিনবো না…

উজান:বেশি কথা না বলে শাড়ি দেখুন।কিছু কিনে না বের হলে লোকে হাসাহাসি করবে..

হিয়া:আরে আমি তো….

কাকু:স্যার আসুন না ভিতরে বসুন।ম্যাম এর জন্য শাড়ি দেখবেন।বসুন।কিসের মধ্যে দেখবেন কি রং কেমন ডিজাইন আমাদের বলুন আমাদের এখানে সব ধরনের কালেকশন আছে..

উজান:ঠিক আছে আমরা দেখছি….

……….হিয়া আর না করতে পারে না এবার নাহ করলে উজান না সবার সামনে রেগে উঠে….শাড়ি গুলোর দাম আকাশ ছোয়া কোনোটা১৫কোনোটা ২০ আবার কোনোটা ৩০ হাজার এমন দাম..

উজান:পছন্দ করুন😒

হিয়া:দেখছি তো এতো বিরক্ত কেনো হচ্ছেন

উজান:ঠিক আছে বিরক্ত হবো না দেখুন

হিয়া:এটা কেমন😊

উজান:সুন্দর…দাদা এটার প্রাইস টা

কাকু:স্যার its 20thousands only

হিয়া:মনে মনে চোখ বড়ো করে😱😱(কি এই শুধু পাড়ে লেস বসিয়ে দিয়ে কুড়ি হাজার টাকা চাচ্ছে।কসাই নাকি।সব তো লুট করে নেবে লোকের. এজন্যই ওনা কে বললাম এখানে না আসি……

কাকুদিবো প্যাক করে স্যার..

হিয়া:না না এটার কালার টা না কেমন ফ্যাকাশে আপনি রঙীন কিছু দেখান….

……..হিয়া শাড়ি কম শাড়ির পেছনের লোগো তে দাম টাই ওলট পালট করে দেখছে..উজান হিয়ার এসব কান্ড বুঝতে পারে কিন্তু কিছু বলে না জানে হিয়া কে বললেও ওহ শোনার মেয়ে না..

হিয়া:দাদা এই লাল টা কতো হবে..

কাকু:ম্যাম এটা ৮০০০ শুধু..

হিয়া:স্যার দেখুন লাল রঙ টা কি সুন্দর না।আমাকে খুব মানাবে বলুন…দাদা আপনি এটাই প্যাক করে দিন😍

উজান:মনেমনে(আপনি চেন্জ হবেন না হিয়া তাই না কবে বুঝবেন আমার এসব যা আমি অর্জন করেছি সবটাই এখন আপনার)😃

কাকু:স্যার নিন পেমেন্ট টা কাউন্টারে করে দিন..

উজান:হুম।আসুন..

……..উজান পেমেন্ট করে দিয়ে একটা ওয়েস্টার্ন কালকেশন এর দোকানের দিকে যায়……

হিয়া:আবার এখানে কেনো..

উজান:আমার দুটো জিংকস কিনতে হবে এলাম যখন কিনে নিয়ে যাই একবারে…

হিয়া:ঠিক আছে চলুন…মনে মনে(হয়েছে আজ মেলা ঘোরা এখানেই অর্ধেক সময় পেড়িয়ে গেলো আমি সিউর একটু পর ঠিক মিরাদি ওনাকে ফোন করে টিউলিপে যেতে বলবে…)

……উজান দুটো জিংকস কিনে পেমেন্ট করতে যায়।এদিকে হিয়া দাড়িয়ে দাড়িয়ে বোর হচ্ছিলো তাই ওয় ও কিছু কালেকশন ঘুরে ঘুরে দেখে।একটা ডল এর গায়ে সর্ট টাইপ একটা গাউন পড়া ছিলো হিয়ার কেনো জানি গাউন টা ভীষন লাগে ওহ ওটা গিয়ে হাত দিয়ে দেখতে থাকে……

উজান:আসুন হয়ে গেছে আমার…..এটা পছন্দ হয়েছে?(হিয়াকে লক্ষ্য করে)

হিয়া:নাহ নাহ আমি তো দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বোর হচ্ছিলাম তাই ঘুরে দেখছিলাম

উজান:এটা ওডার দিতে বলি?

হিয়া:আপনাকে কি আমি বলেছি আমি এটা নিবো আমার এটা ভালো লেগেছে..

উজান:আপনার না লাগুক আমার তো মনে হচ্ছে আপনি এটা পড়লে আপনাকে বেশ লাগবে..

হিয়া:আপনার কি মাথা ঠিক আছে আমি এসব পড়বো।কোনোদিন দেখেছেন আমাকে এসব ড্রেস পড়া..

উজান:বাহিরে না পড়েন আমার সামনে পড়বেন..

হিয়া:এমন ভাবে বলছেন যেনো আমরা আলাদা থাকি আমাদের একটা আলাদা সংসার হয়েছে আমি আর আপনি একা একা যে আপনার সামনে পড়বো যতোসব..😒

উজান:আচ্ছা আলাদা সংসার করতে হবে নাকি একটা ড্রেস পড়ার জন্য।এই ধরুন আমরা কোথাও ঘুরতে গেলাম কোনো ওকেশন বা ধরুন আমি আর আপনি হানিমুনে তো যাই নাই এখনো…ওখানে গেলাম তখন পড়বেন 😄😄…(মুখে দুস্টুমির হাসি)

হিয়া:কি করছেন আস্তে বলুন।মুখে না সত্যি কিছু আটকায় না আপনার….

উজান:ভুল কি বললাম।আচ্ছা এগুলো ধরুন আমি কাউকে বলে এটা প্যাক করে দিতে বলছি…আর এটার দাম ও ওতো বেশি না দেখুন জাস্ট ৩৫০০

হিয়া:হয়েছে এতে এতো কথা শুনানোর কি আছে..

উজান:চলুন….
……………….

……সেদিন আর হিয়ার মেলায় যাওয়া হয়নি___হিয়া যা সন্দেহ করেছিলো তাই হলো মেট্রন উজান কে ঠিক সময় ফোন করে টিউলিপে ডেকে নিলো…এদিকে হিয়ায় থার্ড ইয়ায় এর ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হয়….উজান এবার খুব সিরিয়াস ভাবে হিয়ার প্রতেকটা পরীক্ষা ওবজারভ করে…হিয়া কাছে আসতে দুষ্টুমি করতে পড়া না পড়তে চাইলোও উজান আর এবার ওকে কোনো সুযোগ দেয়নি…পরীক্ষার মাঝে হিয়ার জন্মদিন পড়ে যায়…উজান শুধু ওকে ফোনে ছোট্ট একটা উইশ করে দেয়…অনেক কিছু করার থাকলেও উজান সব প্লান ক্যানসেল করে…..এদিকে হিয়ার আজ পরীক্ষা পুরোপুরিভাবে শেষ হওয়ায় আজ ঠাম্মি হিয়া বুলি সবাইকে চ্যাটার্জি মেনশনে আসতে বলেছে…..

গাড়িতেঃ

উজান:রিলাক্স হলেন তাহলে আজ থেকে..

হিয়া:শান্তি কি যে শান্তি আর কোনো পরীক্ষা নেই😍😍আর কেউ বলবে না হিয়া এটা পড়ো হিয়া ওটা পড়ো…হিয়া কতো মার্ক এটেন্ড করলে আজ কেনো এটা এ্যান্সার করো নি এটা তো আমি পড়িয়ে ছিলাম….উফফ কি যে শান্তি আমার…(হিয়া টেনে টেনে কথা গুলো বলে)

উজান:পাশ করে ফাইনাল ইয়ায় এ উঠুন এসব শান্তি বের হবে….

হিয়া:সে তো পরে দেখা যাবে।এই মাস টা তো আমি ফ্রি…ইসস আমার যে কি আনন্দ হচ্ছে আর সবচেয়ে বেশি আনন্দ হচ্ছে কি ভেবে জানেন আপনি এই দুটো মাস আমাকে যে টাইট একটা শিডিউল এ বেধে রেখেছিলেন ওটা আর নেই ভেবে…😍😍

উজান:বেধে রেখেছিলাম বলেই এতো ভালো পরীক্ষা দিয়েছেন আপনি..

হিয়া:তা অবশ্য ঠিক বলেছেন…😍😍

উজান:হয়েছে এবার এই দাতঁ গুলো বন্ধ করে হাসি টা থামান..

হিয়া:আমার তো আজ শুধু হেসেই যেতে ইচ্ছে করছে হেসেই যেতে ইচ্ছে করছে….😍😍

উজান:ইডিয়ট..

হিয়া:একটা গান ছেড়ে দেই

উজান:দিন আর কিসের জন্য মানা করবো পরীক্ষা তো শেষ..

হিয়া:হুম আপনি যে মানুষ আমাকে ড্রপ করতে দিতে গেলেও গাড়িতে বই ধরিয়ে দিতেন।ওগুলো দিন কি আমি ভুলবো….

……………..হিয়া গান ছাড়তে যাবে ওমনি উজানের একটা ড্রিংক এর বোতল টুক করে নিচে পড়ে যায়..হিয়া ওটা তুলে নিয়ে খেয়াল করতেই হাসি মাখা মুখ টা রাগে মিলিয়ে যায়…

উজান:মনে মনে😐😐(শিট…এতো বড়ো একটা মিসটেক আমি।এখন হিয়া কে কি বলে আমি…উনি তো আমাকে ঝেরে বসবেন….)

হিয়া:এটা এটা তো ইয়ের বোতল…আপনি আপনি ড্রিংক করেছিলেন এর মধ্যে…😑

উজান:আরে নাহ ওটা অনেক আগে থেকেই ছিলো আপনি হয়তো খেয়াল করেননি..

হিয়া:শুনুন উজান স্যার আমি ইডিয়ট হতে পারি বোকা না..আপনি পরশু দিন ও পরীক্ষা শেষে আমাকে ড্রপ করতে এসেছিলেন কই তখন তো আমি দেখিনি..তখন কেনো চোখে পড়লো না আমার..😡😡😡😡

উজান:ওটা ওখানেই ছিলো আপনি দেখেননি..দিন দিন তো আমাকে এটা..

হিয়া:না দিবো না…আপনি আমাকে সত্যি টা বলুন কাল আপনি ড্রিংক করেছিলেন..

উজান:নামুন এসে গেছি..

হিয়া:আগে আমার কথার উওর দিন তারপর নামবো😡😡

উজান:আরে আপনি……….হ্যা কালকে আমি একটু জাস্ট বেশি না অল্প একটু খেয়েছিলাম…আপনি দেখুন বোতল টা পুরো টাই ভরা এখনো..

হিয়া:এখানে তো বেশি খাওয়া বা কম খাওয়ায় প্রশ্ন আসছে না…আপনি খেয়েছেন এটাই আসল কথা

উজান:আমার মাথা টা কাল খুব ধরেছিলো হিয়া তাই আমি..

হিয়া:তাই আপনি ড্রিংক করবেন…😒

উজান:ড্রিংক করেছিলাম ব্যাথা টা থেকে একটু রিলাক্স পাওয়ায় জন্য

হিয়া:আপনার লজ্জা করে না।আপনি একজন ডক্টর হয়ে এসব বলছেন।আমি সত্যি আপনার কাছ থেকে এটা আশা করিনি।আপনার মাথায় যন্ত্রনা করছে আপনি আমার কাছে আসতেন আমি মলম লাগিয়ে মাথা টা টিপে দিতাম..

উজান:আপনার পরীক্ষা ছিলো তাই..

…..হিয়া আর কিছু না শুনে বোতল টা গাড়ির ভেতর ঠাস করে ছুড়ে ফেলে দিয়ে গাড়ি থেকে গড়গড় নেমে পড়ে….

উজান:হিয়া হিয়া শুনুন হিয়া সরি…..হিয়া

……চ্যাটার্জি মেনশন…….

ঠাম্মি:ঔ তো বুলি হিয়া এসে গেছে…কি রে উজান আসেনি

হিয়া:উনি আসছে..

বু্লি:পরীক্ষা কেমন হলো দিদি সব লিখেছিস তো

হিয়া:হুমম পরীক্ষা খুব ভালো হয়েছে জানিস যা পড়ে ছিলাম সব টাই কমন ছিলো আজ…

ঠাম্মি:কমন পড়বে না বুলির কাছে তো শুনলাম উজান তোকে কি নিয়মে বেধে রেখেছিলো এই কদিন…

হিয়া:মনে মনে(হ্যা ঠাম্মি মানুষ টার উপর আমি যতোই রাগ করি আজ আমার এতো ভালো পরীক্ষার পিছনে উনিই তো ছিলো পুরোটা…..)❤❤

বুলি:ঔ তো উজান দা…

হিয়া:ঠাম্মি কাকিমা কোথায়

ঠাম্মি:কাকিমা তোর আজ সবার জন্য পায়েস রাধছে তুই এতো ভালো পরীক্ষা দিলি বল দেখি..

হিয়া:আচ্ছা আমি গিয়ে কাকিমার সাথে দেখা করে আসি….

………হিয়া যাওয়ায় আগে উজান চোখের ইশারায় কিছু বলতে চাইলে হিয়া উজান কে ভেংচি কেটে বাসবির কাছে চলে যায়……😏😏😏

…..ঠাম্মির রুম…..

বুলি:জিনিয়া তুমি এসে গেছো।সেই কখন থেকে তোমার জন্য বসে আছি..

জিনিয়া:আর বলো না আজ না বলেই এক্সটা ক্লাস নিলো তাই দেরি হলো…হিয়া দি কই এখনো আসেনি..

বুলি:এসেছে ওহ নিচে কাকিমার সাথে

ঠাম্মি:ঔ তো উজান আর পাবলো।কি রে দু ভাই এসেই দেখছি কথা বলে যাচ্ছিস দুজনে একা একা।এদিকে আয় বস…আমাদের সাথেও গল্প কর একটু…সেই কবে সবাই একটু এক সাথে বসেছিলাম এভাবে….

উজান:ঠাম্মি আমি বেশিক্ষণ থাকতে পারবো না এক ঘন্টা সময় আছে হাতে আর

জিনিয়া:দাদাভাই তুমি এলে কেনো হ্যা!আসলে খালি যাই যাই….

বাসবি:দেখি দেখি গরম গরম পায়েস….

পাবলো:তুমি আজ পায়েস রান্না করেছে বড়ো মা কই বললে না তো…তবে তোমার হাতের পায়েস টা খুব সুন্দর হয় জানো..

বাসবি:হুম এখন সবাই চটপট খেয়ে বল তো কেমন হয়েছে..বুলি সবাই কে বেড়ে বেড়ে দে দেখি..

জিনিয়া:হিয়া দি কোথায়

বাসবি:ওহ হাতমুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে আসছে…

…..বুলি পাবলো কে পায়েস দিতে গেলে ওদের চোখাচোখি হয়…আর জিনিয়া ওদের লেগপুল করতে শুরু করে দেয়….

বুলি:দিবো তোমাকে আর একটু?

জিনিয়া:দেও দেও তবে দেখো কিন্তু,আমাদের যেনো কম না পড়ে যায়….

……সবাই হেসে দেয়।বুলি আর পাবলো লজ্জা পেয়ে যায়…😂😂

বুলি:কাকিমা তুমি দেও বেড়ে..

ঠাম্মি:জিনি কেনো লাগছিস ওদের পেছনে তুই…

হিয়া:আমি এসে গেছি..

জিনিয়া:এতোক্ষন পড় এলে সবার খাওয়া প্রায় শেষ..

হিয়া:আরে ওটা ব্যাপার না…

বাসবি:থামো হিয়া দিচ্ছি তোমাকে….বাটি এমা এখানে যে আর বাটি নেই…বুলি মা যাহ না নিচ থেকে একটা বাটি নিয়ে আয়..

ঠাম্মি:বাটির কি দরকার…উজানের খাওয়া তো শেষ হয়ে গেছে হিয়া ঔ বাটি টায় নিয়ে খাক না….

হিয়া:এমা না না আমি কেনো ওনার বাটিতে খাবো উনি ঠিক মতো ব্রাশ করে কি করে না…(বুম বুম বুম)

উজান:হোয়াট😡😡😡😡হোয়াট আমি আমি ব্রাশ করি না।আপনাকে খেতে হবে না আমার বাটিতে যান গিয়ে অন্য কিছু নিয়ে আসুন

হিয়া:হুম যাচ্ছি যাচ্ছি আর আপনি ওসব কিসব গিলেছেন কালকে ওয়াক😡😡

উজান:আমি!আপনার না পরীক্ষা দিতে দিতে মাথা টা গেছে….😡😡

………..উজান হিয়ার এই ঝগড়া দেখে সবাই হাসতে শুরু করে…….

ঠাম্মি:এই তোরা থাম তো…কি রে উজান বিয়ের একবছর হতে চললো তুই হিয়াকে এখনো আপনি আপনি করছিস…বুলি আর পাবলো কে দেখ তো।ওরা কি সুন্দর এখন থেকে তুমি তুমি করে বলে….এই হিয়া শোন জিনির রুমে আমি একটা বই রেখেছি তোকে দিবো বলে নিয়ে আয় না একটু…

হিয়া:ঠিক আছে ঠাম্মি আমি আনছি……

………..হিয়া ঠাম্মির রুমে গেলে উজান ওকে গিয়ে আবার দেওয়ালের সাথে ঠাসে দিয়ে………

উজান:আপনি কি হ্যা..মাথায় কিচ্ছু নেই আপনার…😡

হিয়া:লাগছে তো ছাড়ুন না..

উজান:আপনি জানেন না আমি ব্রাশ করি কি করি না..

হিয়া:জানি তো

উজান:তোহ মানে…আর আপনি রুমের সবার সামনে কিভাবে বলেন আমি কিসব গিলি…কি ভাবলো সবাই..

হিয়া:কেউ কিছু বোঝেই নি…ছাড়ুন না গেট টা তো খোলা..

উজান:আমি লাগিয়ে দিয়েছি…আর এর পর কোথায় কি বলবেন ভেবে চিন্তে বলবেন..

হিয়া:বাহ রে আপনি ওসব খেলে সমস্যা নেই আমি বললেই সমস্যা

উজান:এর পর থেকে বেশি করে খাবো আর এখন আমার চকলেট খাবো অনেক দিন হলো তো খাই না…😊😊

হিয়া:না না জিনি চলে আসবে….স্যার

…..উজান হিয়ার ঠোঁটে ওর ঠোটঁ ডুবিয়ে দেয়….কিছুক্ষণ পর….

হিয়া:ছাড়ুন না..

………হিয়া যেতে গেলে উজান আবার ওকে হাত ধরে টান দেয়………

হিয়া:আবার কি হলো..

উজান:শুনুন না বলছি কি পরীক্ষার জন্য তো আপনার জন্মদিন টা ওভাবে সেলিবে্রট করতে পারি নাই তাই আমি ভেবেছিলাম সামনের উইক কিছুদিনের জন্য ছুটি নিয়ে কোথাও ঘুরতে যদি যায়…(হিয়ার চুলে হাত দিতে দিতে)

হিয়া:সত্যি!সত্যি আপনি ঘুরতে নিয়ে যাবেন….😍😍

উজান:হ্যা আগে শুনুন..

হিয়া:পরে শুনবো…ঠাম্মি ঠাম্মি বুলি কাকিমা…

উজান:হিয়া শুনুন আরে…

আবার ঠাম্মির রুমঃ

হিয়া:ঠাম্মি ঠাম্মি ঠাম্মি😘😘😘

ঠাম্মি:ওমা কি হলো রে এর মধ্যে এমন লাফাচ্ছিস যে..
হিয়া:ঠাম্মি উজান স্যার বলেছে নেক্সট উইক আমাদের সবাই কে কোথাও ঘুরতে নিয়ে যাবে

বাসবি:সেকি রাজা সত্যি
জিনিয়া:নেক্সট উইক তো আমার ক্লাস ও শেষ…খুব ভালো হবে….কতোদিন হলো কেউ কোথাও যাই না..
উজান:মনে মনে(ডিসগাস্টিং আমি কি বলেছি সবাই কে নিয়ে যাবো এনাকে নিয়ে আমি আর জাস্ট পারি না…)ঠাম্মি আমি আসছি আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে টিউলিপে পেশেন্ট আজ অনেক…..

……নেক্সট উইক উজান ছুটি নেয় চারদিনের জন্য।কালকে সকালের বাস।ওর একটা বিচ এর কাছে কোথাও যাবে।হিয়া আজ বিকেলে এসে উজানের লাগেজ গোছাতে শুরু করে….কারন ওসব লাগেজ টাগেজ উজান গোছাতেঁ পারবে না আগেই বলে দিছে……

হিয়া:স্যার একটু দেখে নিন না আর কিছু কি নেওয়া বাকি আছে….

উজান:এখন কেনো আমাকে বলছেন যা নেবার নিন….

হিয়া:আপনি এতো রাগ কেনো করছেন.আচ্ছা বলুন তো চার দিন কি আমি শুধু আপনার মুখ দেখে কাটাবো।সবাই গেলে মজা হবে কতো বলুন তো….

উজান:হ্যা সেটাই আমি তো এতো টাই বোরিং যে আমার সাথে কারো থাকতে কি ভালো লাগে….

হিয়া:নিন আমি সব গুছেঁ দিয়েছি।আপনি রাতে একবার দেখে নিয়েন…..আচ্ছা স্যার শুনুন না বলছি কি আমি কি ঔ ড্রেস টা নিবো যেটা আপনি সেদিন কিনে দিলেন মল থেকে…

উজান:ওটা নিয়ে আর কি হবে আমরা কি একাই যাচ্ছি যে ওটা আপনি সবার সামনে পড়বেন….

হিয়া:কি মুশকিল বলুন তো।আমি আর আপনি যখন আলাদা থাকবো তখন পড়বো…

উজান:যা মন চায় করুন….

হিয়াঃস্যার মেট্র্রন কে আমাদের সাথে নিয়ে গেলে কেমন হয়।কতো করেছে বলুন তো উনি আমাদের জন্য

উজানঃআমার তো কোনো সমস্যা নেই। আপনি কথা বলে দেখুন

…….পরের দিন সবাই দুপুর এর আগে আগে রিসোর্ট এ গিয়ে পৌছায়।বিকাশবাবু গ্রামে গেছেন আর পাবলোর একটা পরীক্ষা থাকায় ওর দুজন আসেনি.তবে বুলি কে বলেছে সময় সুযোগ পেলে জয়েন করবে…উজান চারটে রুম বুক করে..

একটাতে বাসবি আর মেট্রন..একটাতে ঠাম্মি আর ঠাম্মির বন্ধু..একটায় বুলি আর জিনি আর একটায় উজান আর হিয়া…

উজান:রেডি হয়ে নিন খেয়ে দেয়ে সবাই বিচ এ যাবে বলেছে…কোথায় ভাবলাম এসে একটু রেস্ট নেবো তা না।রাতে ঘুরতে গেলেই তো হতো..

হিয়া:এই শুনুন এমনিতে হাতে মোট চার দিন…আমি চাই না একটা মুহুর্ত আর নষ্ট হোক…

____হিয়া গিয়ে ওদের রুমের বারান্দায় গিয়ে দাড়ায়____

হিয়া:স্যার এখানে আসুন…দেখুন কি সুন্দর বাতাস হচ্ছে…

উজান:হুম এখান থেকে মনে হচ্ছে বিচ টা খুব কাছে..

হিয়া:আর জানেন আমাকে না বুলি আসার সময় বললো এসময় অনেক অতিথি পাখি আসে নাকি এই বিচে….

উজান:হুম…এখন যান গিয়ে স্নান টা সেরে নিন….

…….ঠাম্মির রুমে সবাই দুপুরের লান্চ টা একসাথে করে……

জিনিয়া:এই বুলি আমি ড্রেস টা পড়ি কেমন বলো তো

বুলি:হুম এটা সুন্দর।আমিও ভেবেছি সেদিন দুজনে যে ড্রেস টা নিলাম ওটা আজ পড়বো..

জিনি:হুম তা হিয়াদি তুমি কি এই সালোয়ায় আর কামিজ পড়েই বিচে যাবে নাকি

হিয়া:হুম কেনো এতে সমস্যা কি..

বুলি:দিদি তুই না বিচে কেউ ওসব পড়ে…তোকে আমি আমাদের মতো জামা কাপড় পড়তে বলছি না থাম আমার কাছে একটা লং গাউন আছে ওটা তুই পড়ে নে..

হিয়া:আরে না না আমি ঠিক আছি

ঠাম্মি:চুপ কর তো তুই হিয়া বুলি তো ঠিকি বলছে…বুলি যা গিয়ে নিয়ে আয় তো দেখি জামা টা..

বুলি:এই যে নেও…

হিয়া:ঠিক আছে লং আছে কিন্তু এরকম সিলিভ লেস কেনো….

জিনি:ওটা এখন কোনো ব্যাপার হলো

বুলি:আর তোর এতো লজ্জা কিসের রে উজান দা তো তোর পিছন পিছন থাকবে ওলটাইম তাহলে…

……হিয়া উজানের দিকে তাকায় ওর সম্মতি নেওয়ায় জন্য….

বাসবি:ওর দিকে তাকাতে হবে না হিয়া…রাজা কিছু বলবে না…..

……………….

হিয়া:স্যার চলুন না ওখানে যাই সবাই ঔ দিক টায় গেছে..

উজান:কেনো আপনার আমার সাথে থাকতে ভালো লাগছে না..

হিয়া:আরে নাহ আমি কি তা বললাম..

উজান:এদিকে দাড়ান আমি আপনার কয়েকটা ছবি তুলে দেই..

হিয়া:দিবেন বলছেন…থামুন আমি রেডি হয়ে নেই..

উজান:হয়েছে আসুন….

হিয়া:স্যার দেখুন ও দিক টায়

উজান:কি দেখবো

হিয়া:আরে এদিকে পাখি দুটো কে দেখুন বা দিকে যেই পাখি টা ওটা আপনি আর ডান দিকের পাখি টা আমি…দেখুন ভালো করে বা দিকের পাখি টা কেমন ডান দিক্কের পাখিটার সাথে ঝগড়া করছে টুস টুস করে ঠোকা দিচ্ছে আমি সিউর ওটা আপনি…

উজান:তাই না….পাখি গুলোতো এসে আপনাকে কানে কানে বলে গেছে….

হিয়া:কানে কানে বলতে হয় না আমার না আপনার কার্বন কপি মানে আপনার মতো যেসব সেগুলো চিনতে কোনো ভুল হয় না….

উজান:তাই না চেনাচ্ছি আপনাকে…

………..হিয়া খিল খিল করে হাসতে হাসতে সামনের দিকে দৌড় দেয়….উজান মুগ্ধ হয়ে দেখতে থাকে হিয়া কে।কি আছে হিয়ার মাঝে যার নেশা উজান কাটাতে পারে না।যার নেশার টানে উজান বারবার হিয়ার কাছে ফিরে আসে….

হিয়া:(চিৎকার করে)স্যার উজান স্যার এদিকে আসুন..

উজান:কিহ

হিয়া:দেখুন কত্তোগুলো লাল কাকড়া…কি সুন্দর

উজান:হুমম আর কাকড়া গুলো আপনার মতো দেখুন কেমন ছোটাছুটি করছে যেমন আপনি সবসময় করেন…..

…….হিয়া এসে উজানের বুকে একটা কিল মেরে উজানকে জোরায় ধরে…..সমুদ্রের পানি এসে দুজনের পা ছুয়ে যায় বারবার….সন্ধ্যা নামতে শুরু করে…গোধুলির আলো….হিয়া উজান ব্যাস্ত ওদের কে ভালোবাসতে শক্ত করে বাধতে……

“””তু নাজাম নাজাম ছা মেরে””””
“”””হোটো পে ঠেসের যা”””
“””মে ইতরে ইতরে ছাড়া তেরি””””
“””বাহো মে আকে রুক যা”””””

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here