প্রনয়ের_দহন #Nusrat_Jahan_Bristy #পর্ব_৪৫ (বিচ্ছেদের শুরু)

0
466

#প্রনয়ের_দহন
#Nusrat_Jahan_Bristy
#পর্ব_৪৫ (বিচ্ছেদের শুরু)

রাত এগারোটা বাজে। তীর বাড়ির সকলের নজর এড়িয়ে ছাদে আসে। ইশানকে দু বার কল দিয়েছে দু বারেই কল ধরে জাস্ট ব্যস্ত আছি বলেই কল কেটে দিয়েছে। তীরকে কোনো কথা বলার সুযোগেই দেই নি। তাই তীরও রে’গে ডিসিশন নিয়েছে ইশানের সাথে আজকে রাতের মধ্যেই কথা বলেই ছাড়বে ভেবেছিলো ফোনে কথা বলে সব কিছু জানাবে কিন্তু না এখন মনে হচ্ছে সামনাসামনি কথা বলা দরকার। একমাত্র রাত্রেই কথা বলার সুযোগ আছে ইশানের সাথে। এ ছাড়া তো ইশান তীরকে দেখাই দেয় না সকাল হতে না হতেই বাড়ি থেকে চলে যায় আর বাড়ি ফিরে রাত সাড়ে দশটা কিংবা এগারোটায় যাতে তীরের মুখোমুখি না হতে হয়। সবসময় তীরের থেকে নিজেকে আড়াল করে রাখছে ইশান। কি পেয়েছে ইশান তাকে হাতের পুতুল যেভাবে নাচাবে সে সেভাবে নাচবে। নাহ তা হবে না তাকে আজ সকল প্রশ্নের উত্তর দিতেই হবে কেন তার সাথে বারবার এমন আচরণ করছে?

তীর ধীর পায়ে ছাদে এসে ছাদের দরজাটা আস্তে করে খুলে ছাদে প্রবেশ করে দরজাটা ভিড়িয়ে দিয় ছাদের চারপাশটা ভালো করে নজর বুলিয়ে দেয়। চাঁদের আলোতে আলোকিত হয়ে আছে গোটা পৃথিবী। তীর চাঁদটার দিকে কয়েক পল তাকিয়ে রেলিং এর কাছে এগিয়ে গিয়ে ফোনটা রেলিং উপর রেখে ছাদের চারিপাশটা কিছু একটা খুজার চেষ্টা করে। কাঙ্ক্ষিত জিনিস পাওয়ার পরে তীর টুলটা এনে রেলিং এর পাশে রেখে তাতে উঠে নিজেদের ছাদের রেলিং পার হয়ে ইশানদের ছাদে চলে যায়। তীর এই সাহসিক কাজটা করে নিজেকে বাহবা দিছে। জীবনে যেই‌ কাজটা করার চিন্তা মাথায় আনে নি কোনো দিন আজকে কিনা সেই অসাধ্য কাজটা করে ফেললো প্রেমের কি পাওয়ার। এর জন্যই‌ মানুষ বলে “প্রেম পড়লে‌ মানুষ কি না করে, অসাধ্য কেও সাধন করে ফেলে”।

তীর ইশানদের ছাদে পা ফেলে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়ে। এবার ইশানকে ফোন দিয়ে এই খবরটা জানানোর পালা যে তীর তাদের ছাদে এসেছে। তীর ওদের ছাদে এসেছে এই খবরটা জানলে ইশান সুড়সুড় করে চলে আসবে এটা নিশ্চিত। তীর রেলিং থেকে ফোনটা হাতে নিয়ে ইশানকে কল দিতেই গিয়ে থেমে যায়। কল দিলে তো কোনো লাভ নেই ইশান তো তীরের কথা শুনার আগেই কল কেটে দেয়। তাই ভেবে চিন্তে তীর ঠিক করলো ইশানকে এমন একটা মেসেজ দিবে ইশান যেখানে থাকুক না পাগলের মতো এখানে ছুটে আসবে।

_____

ইশান ফ্লোরে বসে মাথাটা বেডের উপরে রেখে এলোমেলো অবস্থা বসে আছে। চোখ দুটো বন্ধ করে রেখেছে। চোখের সামনে ভেসে উঠছে তীরের হাস্যজ্জল চেহারাটা। তবে ভ্রুদ্বয়ের মাঝ বরাবরা ভাঁজ পড়ে আছে। মাথার দুই সাইডের শিরাগুলা অদ্ভুত এক যন্ত্রণায় ছিঁড়ে যাচ্ছে মনে হচ্ছে যেন। বুকের বা পাশের ব্যাথাটা ক্ষণে ক্ষণে তীব্র হয়ে আসছে। সারাটা জীবন এই ব্যাথা কি করে সইবে সে। এই তিনটে দিন যে তাকে একে বারে বিধ্বস্ত করে দিয়েছে ভেতর থেকে না জানি আগামী দিন গুলা তার জন্য আর কি কি অপেক্ষা করছে। পাশেই পড়ে আছে ফোনটা। এমন সময় ফোনে মেসেজ আসার শব্দ হয়। মেসেজ আসার শব্দ শুনেও ইশানের কোনো হেলদোল নেই একই অবস্থায় বসে আছে। তবে কিছু একটা মনে পড়তেই ইশান ফোনের লক খুলে মেসেজ অপশনে ডুকতেই চক্ষু চড়কগাছ। তীর মেসেজ দিয়েছে এতো রাত্রে তাও আবার এমন একটা মেসেজ,

“জানি আপনি ফোন দিলেও ধরবেন না। তাই মেসেজ দিয়ে বলছি আমি আপনাদের ছাদে এসেছি। আর আমি চাই আপনি এই মুহূর্তে আমার সাথে দেখা করুন। তিন মিনিট সময় আছে আপনার হাতে এর মধ্যে যদি আপনি ছাদে না আসেন তো আমি ছাদ থেকে লাফ দিবো”।

ইশান মেসেজ পড়ার পর রা’গে দাঁতের চোয়াল শক্ত হয়ে আসে। মেয়েটার এতোটা সাহস বেড়েছে যে রাত বিরাতে ও রেলিং পার হয়ে তাদের ছাদে এসেছে। ইশান আর‌ কোনো দিক বেদিক না ভেবে ছুটে চলে ছাদের উদ্দেশ্য।

অন্য দিকে ইশানের আসতে লেইট হচ্ছে দেখে তীর আর ধৈর্য ধরে রাখতে পারছে না। মন চাইছে ইশানের মতো করে ও ইশানের ঘরে সোজা চলে যেতে। কিন্তু এতোটাও সাহস পাছে না এমনটা করতে। রা’গে বিড়বিড়িয়ে বলে উঠে।

–শা’লা তোর মতো‌ প্রেমিক যেন কারো কপালে না জুটে। শ’য়’তা’ন বেডা আমি তোরে অ’ভি’শা’প দিলাম তোর কপালে বিয়া নাই।

তীর কিছুক্ষণ ইশানকে ব’কা’ব’কি করে এখন সত্যি সত্যি মন চাইছে এই ছাদ থেকে লাফিয়ে নিচে পড়ে যেতে। যেই ভাবা সেই কাজ তীর এগিয়ে যায় রেলিং এর কাছে ফোনটা দোলনার উপরে রেখে। ইশানদের ছাদের রেলিং কিছুটা নিচু তাই রেলিং এর উপরে উঠতে খুব একটা অসুবিধা হয় নি। তীর রেলিং এর উপরে উঠে নিচে তাকাতেই ভ’য়ে শিউরে উঠে বলে।

–ওরে বাবারে কি ভ’য়া’ন’ক দৃশ্য মানুষ কি করে এতো উচু জায়গা থেকে লাফ দেয়। না বাবা পা পিচলে নিচে পড়ার আগেই এখানে নেমে যাই। হাত পা ভাঙ্গার ইচ্ছে আমার নাই।

তীর নিচে নামার জন্য ঘুড়তে নিবে এমন সময় ইশান হন্তদন্ত হয়ে ছাদে আসে। তীরকে রেলিং এর উপরে দেখে ইশান দৌঁড়ে এসে তীরের হাত ধরে নিচে নামিয়ে দিয়ে রা’গী কন্ঠে বলে।

–পাগল হয়ে গেছিস তুই তীর? এসবের মানে কি? মাথাটা কি পুরো খা’রা’প হয়ে গেছে তোর।

তীর ইশানকে দেখে রা’গে ফুসছে। নাক ফুলে উঠছে বার বার। দাঁতে দাঁত চেপে রেখেছে। তীরকে চুপ করে থাকতে দেখে ইশান তীরের দু বাহু ধরে বলে।

–কি হলো কথা বলছিস না কেন?

তীর ও নাক ফুলিয়ে ইশানের দু হাত নিজের বাহু থেকে সরিয়ে দিয়ে বলে।

–হে আমি পাগল হয়ে গেছি হে আমার মাথা পুরো খা’রা’প হয়ে গেছে। কেন জানেন আপনার জন্য শুধু মাত্র আপনার জন্য। কি পেয়েছেন আপনি আমাকে আপনার হাতের পুতুল যখন যেভাবে নাচাবেন সেভাবে নাচবো আমি। আর আপনি আমাকে ই’উ’জ করে দুরে সরিয়ে দিবেন তা হবে না মিস্টার ইশান ফরাজী।

তীরের কথা শুনে যেন ইশানের রা’গ আরো দ্বিগুণ বেড়ে গেলো। তীরের কথা শেষ হওয়ার পরপরেই তীরের বা গালে চ’ড় মারে ইশান। আচমকা এমন হওয়াতে তীর হতবাক হয়ে যায়। গালে হাত রেখে হ’ত’ভ’ম্ব চোখে তাকাল ইশানের পানে। ইশান আরেকটা থা’প্প’ড় দিতে উদ্যত হতে নিলেও মাঝ পথে আটকে যায়। জোরে শ্বাস ফেলে অন্য দিকে ফিরে দু হাত কোমরে রাখে। অন্য দিকে তীরের চোখ থেকে গড়িয়ে পড়ে নোনা জল। থা’প্প’ড়’টা এতো’টাও জোরে দেয় নি ইশান কিন্তু তারপরও তীরের বুক ফেটে যাচ্ছে কষ্টে। ভালোবাসার মানুষটার কাছ থেকে এমনটা কোনো দিন প্রত্যাশা করে নি তীর। ইশান কিছুক্ষণ নিরব থেকে তীরের দিকে ফিরে গম্ভীর গলায়‌ বলে।

–ইচ্ছে করছে তোর ডান গালে আরেকটা থা’প্প’ড় মারতে। আর কি বললি তুই তোকে আমি ই’উ’জ করেছি। কবে কখন তোকে আমি বা’জে ভাবে স্পর্শ করেছি যে তুই এমন একটা অভিযোগ তুলেছিস আমার দিকে।

তীর গালে হাত রেখে ইশানের দিকে তাকিয়ে আছে এক ধ্যানে। তীরের দৃষ্টি ইশানের বড্ড অচেনা লাগছে। তীরের সাথে এমনটা করা ইশানের ঠিক হয় নি ও বুঝতে পারছে কিন্তু তীরেরও বুঝা উচিত ও ভুল করেছে। আবেগ দিয়ে জীবন চলে না বাস্তবতা যে বড়ই কঠিন তীরকে সেটা বুঝতে হবে। তীরের এমন মৌনতা দেখে ইশান পুনরায় বলে।

–কি হলো এবার মুখটা বন্ধ করে রেখেছিস কেন? একটু আগে তো খুব বড় বড় কথা বলছিলি তাহলে এখন চুপ করে আছিস‌ কেন? উত্তর দে।

ইশানের কথা শুনে তীরের মস্তিষ্ক জ্বলে উঠে। রা’গে দুঃখে বলে উঠে।

–আপনার সাহস কি করে হলো আমার গায়ে‌ হাত তুলার!

–সাহসের কি দেখেছিস তুই নেক্সট টাইম তোর মুখে এসব আজেবাজে কথা শুনলে আবারো তোর গালে একটা থা’প্প’ড় পড়বে।

তীর আর এই অভদ্র লোকটার সাথে এক মুহূর্তও থাকবে না। কত্ত বড় সাহস তাকে চ’ড় মারে ইচ্ছে করছে উল্টে ইশানের গালেও কষে একটা চ’ড় বসিয়ে দিতে তাহলে যদি গায়ের জ্বালাটা মিটে। তীর মুখ ফুলিয়ে ইশানের পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলে ইশানের কথা শুনে থেমে যায়।

–বিয়েটা করে নে তীর।

তীর ভ্রু কুচকে নেয়। বিয়েটা করে নে মানে কি বলতে চাইছে ইশান। কাকে বিয়ে করে নেওয়ার কথা বলছে? তীর হতবাক হয়ে বলে।

–কাকে বিয়ে করবো?

ইশান তীরের দিকে ফিরে শীতল চোখে তাকিয়ে বলে।

–যাকে তোর সাথে বিয়ে দেওয়ার জন্য তোর মা ঠিক করেছে তাকে।

তীরের মন চাইছে ইশানকে কি করতে সেটা নিজেও বুঝতে পারছে না। অভিমানি কন্ঠে বলে উঠে তীর।

–হে বিয়ে করে নিবো ওই ছেলেকে। আপনার মতো অভদ্র একটা ছেলেকে আমি কোনো দিন বিয়ে করবো না।

ইশান দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে ঠোঁটের কোণে মৃদু হাসির রেখা এনে বলে।

–সত্যি আমি একটা অভদ্র ছেলে। যে ছেলেটার সাথে কোনো মেয়ে থাকতেই পারে না।

তীরের মনে হচ্ছে ইশানের সাথে বেকার কথা বলে কোনো লাভ নেই। তবে এটা বুঝতে পারছে ইশানের নিশ্চয়ই কিছু তো একটা হয়েছে না হলে এভাবে এমন একটা কথা কি করে বলে দেয়। তীর দুর্বল হয়ে এসে ইশানের দু হাত আঁকড়ে ধরে কান্নামিশ্রিত কন্ঠে বলে।

–কেন এমন করছেন আমার সাথে? কি হয়েছে‌ আপনার? আমি একটু আগে যা বলেছি তার জন্য আমি আপনার কাছে ক্ষমা চাইছে। ওই‌ কথা গুলা আমি রা’গে’র মাথায় বলে ফেলছি বিশ্বাস করুন আমি এমনটা বলতে চাই নি।

ইশান শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তীরের কান্না ইশানের বুকে ধনুকের তীরের ন্যায় বিঁধছে কিন্তু সে নিরুপায় কিচ্ছু করার নেই তার হাত পা বাঁধা। সে যে অন্য কারোর কাছে ওয়াদা করে রেখেছে তীরের জীবন থেকে দুরে সরে যাবে সারা জীবনের জন্য। কিন্তু এই অবুঝ মেয়েটা কি সেটা বুঝতে চাইবে। তীরের কান্নার গতি বেড়ে আসছে ধীরে ধীরে। ইশান শুকনো ঢোক গিলে বলে।

–অবুঝ হোস না তীর। আমার সাথে তুই সুখী হবি না।

–কে বলেছে আমি আপনার সাথে সুখী হবো না আমি আপনার সাথেই সুখী হবো।

–তার নমুনা তুই দেখতে পারচ্ছিস তীর। যবে থেকে আমি তোর জীবনে এসেছি তবে থেকেই তোর কষ্ট পিছু ছাড়ছে না।

তীর ইশানের হাত ধরে নিচে বসে পড়ে বলে।

–কেন এমন করছেন আপনি আপনার সাথে? কি দোষ করেছি আমি?

ইশান ধরা গলায় বলে।

–তোর কোনো দোষ নিয়ে সব দোষ আমার। আমারেই উচিত হয় নি তোর জীবনে আসা।

–প্লিজ এমনটা করবেন না আমার সাথে আমার যে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে।

ইশান চোখের পাতা বন্ধ করে বলে।

–সয়ে যাবে সেই কষ্টটা ধীরে ধীরে। আর তোর ভালোর জন্যই বলছি।

তীর সটান দাঁড়িয়ে পড়ে চোখের জল মুছে কঠিন গলায় বলে।

–আমার ভালোটা আপনাকে বুঝতে হবে না মিস্টার ইশান ফরাজী। আমার ভালোটা আমার বাবা মাকেই বুঝতে দেন। আর আপনি চাইছেন তো আমি বিয়েটা করি ওকে‌ ফাইন আপনার চোখের সামনে আমি ওই ছেলে‌কে বিয়ে করবো। খুব শখ না আমার বিয়ে খাওয়া, আপনার সেই শখ আমি মিটাবো।

বলেই ছাদের রেলিং তাড়াতাড়ি করে পার হতে নিলে ব্যাথায় আর্তনাদ করে উঠে তীর। তীরের আর্তনাদ শুনে ইশান চমকে দু চোখের পাতা খুলে এগিয়ে গিয়ে রেলিং পার হতে নিয়ে অস্থির হয়ে বলে।

–কি হয়েছে তীর কোথায় ব্যাথা পেয়েছিস?

তীর হাত বাড়িয়ে ইশানকে থামিয়ে দিয়ে বলে।

–থাক জু’তো মে’রে গরু দান করতে হবে না আপনাকে আমি একদম ঠিক আছি। এতো দিন ঠিক ছিলাম না তবে এখন ঠিক আছি।

বলেই বসা থেকে উঠে খুঁড়ে খুঁড়ে হেটে চলে যায়। তীর চলে যেতেই ইশান থপ করে মেঝেতে বসে পড়ে। চোখ থেকে গড়িয়ে পড়ে দু তিন ফোঁটা জল। সব শেষ সব কিছু আজ ইশান নিজের হাতে শেষ করে দিয়েছে। তার জীবন থেকে তার সুখটা আজ সুখ পাখির মতো খাঁচা থেকে উঁড়ে গেলো। যে সুখটা পাওয়ার জন্য তাকে চার চারটে বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে সেই সুখ পাখি‌ আজ থেকে তার জীবন থেকে চলে গেলো। আবারও কি ইশানকে সেই আগের মতো #প্রনয়ের_দহনে পোড়তে হবে। কিন্তু এবার হয়তো তাকে একা #প্রনয়ের_দহনে পোড়তে হবে না তার সাথে তার সুখ পাখিটাও সেই দহনে পোড়বে। ভাগ্য তাদের দু’জনের সাথে এভাবে কেন বারবার খেলা করছে?

#চলবে______

সবাই একটু অপেক্ষা করুন সামনে অনেক দামাকা আসতে চলেছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here