#ফানাহ্ 🖤
#পর্বসংখ্যা_৪৮
#হুমাইরা_হাসান
| অংশ ১ |
পৃথকের বাড়ি থেকে বেরোতে বেরোতে প্রায় বিকেল গড়িয়ে আসলো। এসেছিল কিছুক্ষণের সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে, অথচ কীভাবে ঘন্টার কাটা একের পর এক পাল্লা দিয়ে পেরিয়ে গেলো বোঝাই গেলো না। সময়টা হয়তোবা তিনটে/সাড়ে তিনটের কাটা পেরিয়ে চারের ঘরে হেলেছে।
মোহর আর তাথই বেরিয়ে এসে গাড়িতে উঠে বসলো। দুপুরের দিকে মেহরাজ ও এসেছিলো, বলা বাহুল্য পৃথকের জোরাজুরিতে বাধ্য হয়ে।
এই প্রথম যখন ওরা এসেছে পৃথকের নতুন বাড়িতে তাই একসাথে মধ্যাহ্ন ভোজ করার সুযোগ টা ছাড়তে চাইনি। আর আজ সমস্ত রান্না টাও মোহর নিজেই করেছে সাথে তাথইয়ের সাহায্যে। তাথই অবশ্য রান্নাতে খুব একটা পাঁকা নয়, যেটুকু সম্ভব এগিয়ে দেওয়ার কাজটাই করেছে। এই সময় টুকু যেনো তাথইয়ের কাছে দম বন্ধকর ছিলো, একে তো অস্বস্তি তার সাথে চিন্তা। কোলের মেয়েটাকে রেখে এতটা সময় বাইরে তো থাকেনি। বারবার বাড়িতে ফেরার তাড়া দিচ্ছিলো। সবশেষে মেহরাজ আসলো পৃথকের সাথে গল্প করতে করতে৷
গাড়িতে উঠে বসে স্টার্ট দেওয়ার সময় একবার আড়চোখে তাকালো তাথই, বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটার বেহায়া চোখ জোড়া ওর দিকেই স্থির তাকিয়ে আছে। তাথই আড়চোখে দেখলেও চোখ ফেরালো না অথচ স্পষ্ট বুঝতে পারলো ঠিকই যে একজোড়া চোখ প্রবল আকুতি নিয়ে চেয়ে আছে ওর দিকে,ওর মুখের দিকে হয়তোবা একটা বার চোখ ফেরাবে স্নিগ্ধ মুখটা ঘুরিয়ে দেখবে ওকে। কিন্তু সেই বুকভরা আশাটুকুকে বেশ নিষ্ঠুরতার সহিত চ্যুত করে তাথই সামনেই তাকিয়ে রইলো। গাড়ি ছাড়ার সাথে সাথে এগিয়ে গেলো সম্মুখে, পেছনে ছেড়ে আসলো একটা জলজ্যান্ত তৃষ্ণাভরা মুখ আর বুক’টাকে। তাকালো না তাথই, বুকের ভেতরের ভোতা যন্ত্রণার তীক্ষ্ণতা মুখ বুজে সয়ে নিয়ে সামনেই তাকিয়ে রইলো। কেনোই বা তাকাবে! কোন অধিকার কোন সাহসে তাকাবে? মায়া যে বড্ড ভয়ংকর জিনিস, দুনিয়াবি নিয়ম বাঁধ-শৃঙ্খলের গণ্ডি চুরচুর করে দিয়ে বেহারা করে তোলে আত্মসত্তা’টাকে, বহু বছর পরেও জাগিয়ে তোলে বিতৃষ্ণার দহন
.
বাড়িতে ঢুকেই তাথই ছুটে গেলো নিজের মেয়ের কাছে। সোফাতেই বসে ছিলো কাকলি, তাথইকে এলে ওর হাতে তোয়াকে ধরিয়ে দিয়ে বেরিয়ে গেলেন। দেখে মনে হলো ভীষণ তাড়ায় আছে। মোহর একবার সেদিকে তাকিয়ে সিড়ি বেয়ে উঠে গেলো। ফ্রেশ হয়ে পুনরায় বসার ঘরে এসে দেখে তাথই তখনও বসে তোয়াকে নিয়ে। মোহর আসলো অল্পবিস্তর, তাথইকে দেখে মাঝে মধ্যেই অবাক হয়। কিভাবে সবটা বিসর্জন দিয়ে নিজের ছোট্ট অংশ টাকে আঁকড়ে ধরে প্রতিনিয়ত বেঁচে যাচ্ছে। ধীর পায়ে এগিয়ে এসে তাথইয়ের পাশে বসে বলল
– আপা, তুমি এখনো ফ্রেশ হওনি তো! বাবুকে আমার কাছে দাও তো। গিয়ে চেঞ্জ করে আসো
বলে তোয়াকে নিজের কোলে নিলো। তাথই ও যেনো এটার অপেক্ষাতেই ছিলো। ওউ আর কথার খরচা না করে নিজের ঘরের দিকে গেলো।
মোহর একাই ছিলো বসার ঘরটাতে। আশপাশে তাকিয়ে হঠাৎই দেখলো স্টোর রুম থেকে চোরামুখে মালাকে বেরিতে আসতে। মেয়েটাকে কেমন অদ্ভুত চরিত্রের মনে হয় শুরু থেকেই। নাজমা আর মালা দুজন একই সাথে কাজ করলেও দু’মেরুর দুটো প্রাণীর মতো দূরত্ব বজায় রেখে চলে। বলা বাহুল্য নাজমা হলো শাহারা বেগম এবং আম্বি খাতুনের ছাপোষা। অন্যদিকে মালা মেয়েটা কাকলি খাতুনের ছাপোষা, মেয়েটার মুখেই কেমন কূটনৈতিক ছাপ।
– দাঁড়াও
মোহরের কথা শুনে মালা হতভম্ব হয়ে পা থামালো। ও নিজের ধ্যানে এতটাই বিভোর ছিল যে ড্রয়িং রুমে বসে থাকা মোহর কেও লক্ষ্য করেনি। খানিকটা অপ্রস্তুত হয়েই এগিয়ে এলে মোহর আগের মতোই বলল
– স্টোররুমে কি করছিলে তুমি?
মালা বেশ অপ্রস্তুত হলো, চোখে মুখে অহেতুক ভীতি নিয়েই জবাব দিলো
– পরিষ্কার করছিলাম
– বিকেল বেলা স্টোররুম পরিষ্কার করার যুক্তি টা একটু বেশিই অসঙ্গত নাহ? মিথ্যে বললে সেটা ভালো করে বলো যাতে বিশ্বাসযোগ্য হয়।
মালা বিস্ফারিত নয়নে তাকালো মোহরের দিকে। বার দুয়েক শুকনো ঢোক গিলে বিনয়ী গলায় বলল
– বিশ্বাস করুন আমি পরিষ্কার করতেই গেছিলাম। আমাকে সকাল বেলায়ই ছোট ম্যাডাম বলেছিলেন পরিষ্কার করার কথা। কাজের মাঝে ভুলে গেছিলাম তাই এখন করলাম।উনি যদি দেখেন কাজ হয়নি খুব বকবে, সেই ভয়ে। আর কিচ্ছু না
মোহর ভীষণ শাণিত চোখে তাকিয়ে রইলো মালার চঞ্চল চোখ, কচলানো হাত আর অস্থির পায়ের অবস্থানে। তবে মস্তিষ্কের ভাবনা টাকে আর খাটালো না। স্বাভাবিক ভাবে বলল
– মাথাটা ধরেছে, আদা চা করে আনো দুটো।
– আপনি তো একা! দুটো চা কি করবেন?
মালার প্রশ্নের পরমুহূর্তেই মোহর চোখ তুলে নির্লিপ্ত ভাবে চাইলো ওর দিকে। মালার বুকটা আচমকাই হুঁ-হুঁ করে উঠলো। কেমন একটা শীতলতার স্রোত বয়ে গেলো। নিজের মুখের অনুচিত ব্যবহারের মার্জনা চাওয়ার আগেই মোহর আলতো হেসে সুমিষ্ট সুরে বলল
– তোমরা যেমন তিনজন মানুষের মজলিশে চারটা কাপ নিয়ে যাও। অনেকটা সেরকমই ভাবতে পারো
চুলের গোড়া বয়ে সরু ঘামের রেখা তিরতির করে ঘাড় বেয়ে নামলো মালার। ওর হালকা পাতলা মুখটা টেনে খানিকটা হাসার প্রয়াস করলেও পুরোপুরি সফল হলো না অপ্রতিভ’তা ঢাকতে। পরপর বার দুয়েক বলল
– আমি এক্ষুণি করে আনছি চা
বলে সঙ্গে সঙ্গেই সেই স্থান ত্যাগ করে রান্নাঘরের দিকে হাঁটা ধরলো। মালা যেতেই গুটি গুটি পা ফেলে এগিয়ে এলো আম্বি খাতুন। ক্লান্ত শরীরে সোফাতে বসে হেলান দিলো। ক্ষীণ গলায় শব্দ তুলে ডাকলো
– নাজমা?
– আমি চা করতে বলেছি মা, এক্ষুণি আনবে।
আম্বি খাতুন চোখ খুলে তাকালেন। মোহর তখনও তাকিয়ে মাঝবয়সীর আনন পানে। চেহারায় অনেক বেশি ক্লান্তি আর দৌর্বল্যের ছাপ। চোখের নিচের কালো দাগের প্রলেপ টা নিঃশব্দে জানান দিচ্ছে রাতভর নির্ঘুমতার। তবে কারণ টা মোহরের অজানা, মানুষটাকে অনেক বেশিই ক্লান্ত আর বিধ্বস্ত মনে হলো মোহরের। ইদানীং ঘর থেকে খুব কম বের হন। চুপচাপ থাকা, আর কম কথা বলার স্বভাব টা একেবারে নিস্তব্ধ করে রেখেছে মানুষটাকে। মোহর এ বিষয়ে শাহারা বেগমের সাথে কথাও বলেছিলো একবার। তবে জবাবে একমুখ মলিনতা ছাড়া আর কিছুই পাইনি।
– শরীর টা কি খুব খারাপ মা?
আম্বি খাতুন ডায়ে বাঁয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে না বোধক জবাব দিলো। মোহর দ্বিতীয় বার প্রশ্ন করলো না। মালা ততক্ষণে চা এনেছে, এক কাপ মোহরের সামনে দিয়ে আরেক কাপ আম্বি খাতুনের হাতে দিতে দিতে আড়চোখে মোহরের দিকে তাকালো। তন্মধ্যে ডাক পড়লো মোহরের, ওপর থেকে মেয়েলী গলাটা খানিকটা উচ্চস্বরে বলল
– তোয়াকে নিয়ে উপরেই আসো তো মোহর। ওকে খাওয়াতে হবে।
মোহর চায়ের কাপটা আর ধরলো না। তোয়াকে বুকে করে উপরে উঠে গেলো তাথইয়ের ঘরের দিকে। নিচে একাকী বসে নিঃশব্দে চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছে আম্বি খাতুন। মিনিট দুয়েকের মাঝেই পাশে কারো উপস্থিতি টের পেলো। মোহর এসে একদম পাশটায় বসেছে, ওকে দেখে চায়ের কাপটা নামিয়ে রাখলো আম্বি খাতুন। মোহর নিঃশব্দে আম্বি খাতুনের হাতটা নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে স্ফীত কাফ এবং বাল্বটার ব্যবহারে হাতটা চেপে ধরলো। আম্বি খাতুন কোনো প্রতিক্রিয়া করলো না বরং চুপচাপ তাকিয়ে রইলো মোহরের মুখের দিকে৷ মিনিট কয়েক পরেই হাতটা ছেড়ে দিলো। কান থেকে স্টেথোস্কোপ টা নামিয়ে তার জাতীয় বস্তুটা পেঁচাতে পেঁচাতে বলল
– সিস্টোলিক চাপ স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি। এরকম হারে বাড়তে থাকলে নিয়ন্ত্রণের বাইরে গিয়ে অনেক বড়ো সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। ঠিক মতো ঘুম হচ্ছে নাহ, মাথাব্যথা ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে। ডাক্তার দেখাচ্ছেন না কেনো? হাই প্রেসার কতটা সাস্থ্যঝুঁকি সম্পন্ন জানেন না? স্ট্রোক আর হার্টের সমস্যার প্রাথমিক মাধ্যম হলো হাই প্রেসার। এটাকে সময়মত নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারলে অনেক ক্রিটিক্যাল সিচুয়েশন হবে। আপনার এসব ব্যাপারে লক্ষ্য রাখা উচিত।
আম্বি খাতুন বাধ্য রোগীর মতন সবগুলো কথা মনোযোগ সহকারে শুনলো। কিছুক্ষণ নিশ্চুপ থেকে অতঃপর বলল
– মায়েরা স্বাভাবিক ভাবেই তার সন্তানকে সবার চেয়ে বেশি ভালোবাসে। কিন্তু আমি মেহরাজকে অনেক বেশিই ভালোবাসি মোহর। আর আমার মেহরাজ তোমাকে ভালোবাসে৷ তাই আমারও উচিত ছিলো তোমাকে ভালোবাসা। কিন্তু আমি তা করিনি। এ বাড়িতে এসে থেকে একটা কথাও ঠিকঠাক ভাবে বলিনি তোমার সাথে। আজ বলছি, বলছি না অনুরোধ করছি। আমার ছেলেটা তোমাকে যতটা ভালোবাসে তার সমান না পারলে অর্ধেকটা হলেও ওকে ভালোবেসো। আমার ছেলেটাকে আমি তোমার জিম্মায় ছেড়ে দিলাম মোহর। মা হয়ে আমি সমস্তটা তোমার হাতে দিলাম। তুমি এ দ্বায়িত্বের অবহেলা কোরো না। যত যাই হয়ে যাক,তুমি ওর সাথে থেকো। পাশে থেকো। ওকে কখনো ছেড়ে যেও না,ভুল বুঝো না। আমার ছেলেটা ভীষণ বিলাসিতায় বড়ো হয়েছে, তাই খুব করে চাওয়ার মতো কিছু ওর ছিলো না কখনো। তবে এখন আছে, খুব এর চেয়েও অনেক বেশি চাওয়া আর বাসনার জিনিস আছে। আর তা হলো তুমি। তোমাকে নিজের ভালো থাকার মাধ্যম করে নিয়েছে ও, ওকে কখনো কষ্ট দিও না। আমার বাবু ভালো থাকলেই আমি ভালো থাকবো, আমার দুনিয়াটাই তো ওকে ঘিরে।
বলে আর এক মুহুর্ত ও দাঁড়ালো নাহ। দুরন্ত পায়ে ছুটে গেলো নিজের ঘরে। মোহর এখনো তব্দা খেয়ে বসে আছে। ওর কব্জিতে চেপে ধরা হাতটার স্পর্শ এখনো লেগে আছে যেনো। আম্বি খাতুনের কথায় আর রূঢ়তা ছিলো না, নাইবা ছিলো কাঠিন্য, গাম্ভীর্য। বরং ছিলো তীব্র আকুতি, অনুনয় বিনয়। একজন মায়ের সর্বশেষ অনুরোধ। তার আবদার তার ছেলেকে ভালো রাখার আবদার। একজন মায়ের কাছে তার সন্তানের চেয়ে প্রিয় তো কিছুই হয়না, সেই বুকে জড়ানো মানিকটাকে অন্য একটা মেয়ে যাকে কিনা একচুল ভরসা করেনা বলে তার জিম্মায় তুলে দিলো? কেনো! কেনোই বা মায়ের মুখ ভরা দুশ্চিন্তা, আতঙ্ক কেনোই বা তার কণ্ঠে অসহায়ত্ব!
মিনিট পাঁচেক ঝিম ধরে ওভাবেই বসে রইলো মোহর। তারপর নিজেকে স্বাভাবিক করে আস্তেধীরে উঠে এলো। নিজের ঘরে এসে স্ফিগমোম্যানোমিটার নামক যন্ত্রটা টেবিলের উপরে রেখে খাটে হেলান দিয়ে বসলো, নানবিধ চিন্তা আর ভাবনায় বুদ হয়ে এলো মন-মস্তিষ্ক। বিছানার হেডবোর্ডে ঠেস দিয়ে চোখ বুজে নিলো মোহর। নিষ্প্রভ, স্থবির অবস্থায়’ই বুকের উপর ভারী চাপ অনুভব করলো, তার সাথে শরীর টাকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরা দুটি হাত। মোহর চোখ খুলে কাঙ্ক্ষিত দৃশ্যটা দেখে চুপ করে বসে রইলো। হাতটা তুলে চুলের ভাঁজে গলিয়ে দিলে হাত দুটোর বেরিবাঁধ আরও ঝাপটে ধরলো ওকে। মোহর চুলগুলোর ভাঁজে হাতের স্পর্শ চালিয়ে দিতে দিতে বলল
– মায়ের শরীরটা খারাপ বেশ কয়েকদিন ধরে।
মেহরাজের জবাবের আগেই নিজ থেকে আবারও বলল
– প্রায় সপ্তাহ খানেকের বেশি হলো উনি ঘর থেকে খুব একটা বের হন না, প্রায়শই উনার মাথা ব্যথা থাকে। আজকে প্রেসার মেপে দেখলাম স্বাভাবিকের মাত্রা ছাড়িয়েছে, এভাবে চললে তো অনেক বেশি খারাপ হবে অবস্থা।
মেহরাজের পক্ষ হতে কোনো প্রত্যুত্তর এলো না। মোহর জবাবের অপেক্ষায় কয়েক মুহূর্ত চুপ করে থেকে বলল
– আপনার মা আপনাকে খুব ভালোবাসে রুদ্ধ। অথচ আপনার আচরণে উনার প্রতি টান দেখতে পাইনা আমি।
মেহরাজ বুক থেকে মাথা তুলে মোহরের দিকে তাকালো। নির্লিপ্ত দৃষ্টি স্থির রেখে বেশ স্বাভাবিক গলায় বলল
– আপনার এমন মনে হওয়ার কারণ?
– কারণ টা তো স্পষ্ট। আপনি কী সময় করে মায়ের খোঁজ নেন? উনার এতটা অসুস্থতার খবরটাও আপনার অজানা। মানুষটা আপনাকে যতটা ভালোবাসেন বিনিময়ে আপনার প্রতিক্রিয়া ততটাই শান্ত।
মেহরাজ নিজের প্রশান্ত স্বভাব টা বহাল রেখেই জিগ্যেস করলো
– ভালোবাসা তো বিনিময়ের সম্পর্ক নয় যে কেও ভালোবাসলে তা সমান অঙ্কে ফেরত পাবে! ভালোবাসা তো বিনিয়োগের সম্পর্ক, যেখানে লাভ বা লোকসানের ব্যাপক অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও আমরা আমাদের সবচেয়ে দামী সম্পদটা ইনভেস্ট করি।
মোহর বিব্রত মুখে চেয়ে রইলো। স্বাভাবিক একটা প্রশ্নের এহেন জড়ানো উত্তর নিতান্তই অপ্রত্যাশিত ছিলো। মেহরাজ মুচকি হাসলো, থুতনিটা বুক থেকে তুলে এগিয়ে নিয়ে মোহরের ঠোঁটে শব্দ করে একটা চুমু দিলো। উঠে দাঁড়িয়ে ফোনটা সেন্টার টেবিল থেকে পকেটের পুরে মোহরের দিকে তাকিয়ে বলল
– আগেই বলেছি. . ব্যবসায়ীক স্বামীর আপনার। লাভ লোকসানে হিসেবটা একটু বেশিই ভালো বোঝে
.
.
.
চলমান
©Humu_❤️
#হীডিংঃ লোডশেডিং জনিত কারণে পোস্ট করতে দেরী