প্রেম_প্রার্থনা #তামান্না_আঁখি #পর্ব-৩০

0
536

#প্রেম_প্রার্থনা
#তামান্না_আঁখি
#পর্ব-৩০

“আমায় বিয়ে করতে চাস?”

রবিনের নিপাট প্রশ্নে চারু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে চোখ তুলে তাকালো। দৃষ্টি মিললো রবিনের স্থির দৃষ্টির সাথে।সেই দৃষ্টিতে তাকিয়ে চারুর পেটের ভিতর পাঁকিয়ে উঠলো। চারু সহ্য করতে পারলো না দৃষ্টি সরিয়ে চোখ নামিয়ে নিলো। তার দৃষ্টি ঠেকলো রবিনের শার্টের বোতামে এসে। রবিন আরেকটু ঝুঁকলো। যার কারনে চারুর দৃষ্টি পড়লো রবিনের উন্মুক্ত বুকের উপর। শার্টের উপরের দুটো বোতাম খোলা রাখায় বুকের উপরিভাগ দেখতে অসুবিধা হচ্ছে না। রবিন কন্ঠ কিছুটা ফিসফিস করে বলল-

“এত তাড়া তোর বিয়ে করার? ”

চারু নিশ্চুপ রইলো। রবিন চারুর কপালে নিজের কপাল দিয়ে আলতো করে একটা টুকা দিয়ে একই রকম কন্ঠে বলল-

“আর কখনো কল কইরা এইসব কইবি না। তুই এখনো অনেক ছোট। আর আমি অনেক অভদ্র।”

চারু চোখ তুলে একবার রবিনকে দেখলো।রবিন একটা শ্বাস ফেলে কিছুটা সোজা হয়ে দাঁড়ালো। সেই শ্বাসের গরম বাতাস চারুর গাল ছুয়ে গেলো।চারু আরো শক্ত হয়ে গেলো। এই পরিস্থিতিতে কি বলবে ভেবে না পেয়ে হুট করে বলে বসলো –

“তুমি যে এইসব সিগারেট খাও আমি ফুপিরে বিচার দিবাম। ”

“বিচার দিবি? দে।”

চারু আমতাআমতা করে বলল-

“আমি আসলেই খালি তুমি এইসব সিগারেট ধরাও কেন?জানো না ছোট দের সামনে এইসব খাইতে নাই।”

রবিন ভ্রু কুচকে চারুর দিকে তাকালো। কন্ঠ গম্ভীর করে বলল-

“তুই আসলেই আমি সিগারেট ধরাই না,তুই ই আমার সিগারেট খাওয়ার সময় আসোস। দেখ তোর লাইগা আমার একটা সিগারেট নষ্ট হইলো।”

চারু রবিনের ইশারার করা ফেলে দেয়া সিগারেটের দিকে তাকালো। রবিন বললো –

“তোর লাইগা সিগারেট নষ্ট হইছে এখন তুই আমারে সিগারেট কিইন্না দিবি।”

চারু বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলো। চোখ বড় বড় করে বলল-

“আমি কিইন্না দিবাম মানে? আমি টাকা কই পাইবাম?”

“তোর সাজার জিনিসপত্র কিনার সময় টাকা কই পাস?”

“আমি টিফিনের টাকা জমায়া কিনি।”

“হা তেইলে ওই টাকা দিয়াই আমারে এক প্যাকেট সিগারেট কিইন্না দিবি। কালকের মধ্যেই।”

চারু মুখ শক্ত করে বলল-

“জীবনেও না। ওইটা আমার জমানো টাকা।”

রবিন চারুর দিকে তাকিয়ে ভ্রু উপরে তুলে বলল-

“তাইলে মামা মামীর কাছে তোর নামে বিচারটা দিয়াই দেই নাকি।”

চারু অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে তাকালো। রবিন তাকে ব্ল্যাকমেইল করছে। রবিন দেয়াল থেকে হাত নামিয়ে দূরত্ব রেখে সোজা হয়ে দাঁড়ালো। তারপর শাসানোর সুরে বললো-

“তুই এখনো ছোট। বিয়ের বয়স হোক, নিজের পছন্দমতো পাত্রের সাথে বিয়ে হইব। এখন মাথা থাইকা এসব বাদ দিবি। ঠিকাছে? যা নিচে যা। এক দৌড়ে যা।”

চারু নাক ফুলিয়ে রাগী রাগী চোখে তাকিয়ে রইলো।রবিন এবার ধমক দিলো –

“নিচে যা।”

চারু এক দৌড়ে দোতলায় চলে আসলো। এসে রবিনের ঘরের দিকে তাকালো। তার ইচ্ছে করলো রবিনের ঘরে গিয়ে ওর বিছানায় পানি ঢেলে দিতে। কিন্তু না আগে সে রানির ব্যবস্থা করবে। দুই ভাই বোন মিলে তাকে যথেষ্ট নাকানিচুবানি খাইয়েছে। চারু রানির ঘরে এলো। রানি বসে মোবাইল টিপছিলো। চারু ঘরে ঢুকেই বালিশ নিয়ে রানিকে মারতে লাগলো। মারের চোটে রানি বিছানায় শুয়ে পড়লো। চারু বালিশ ফেলে দিয়ে রানির চুল ধরে টানতে টানতে বলল-

“শয়তান ছেড়ি, ইচ্ছা কইরা আমারে ডাইকা আনছস তাই না?”

রানি মার খেয়েও পেট চেপে হাসতে লাগলো। হাসতে হাসতে বলল-

“তুই না ভাইয়ারে মনের কথা বইলা দিছস। তাই ভাবলাম তোদের দেখা করায়া দেই। এতে যদি তোদের বিয়ে টা তাড়াতাড়ি হয়। আমিও তাড়াতাড়ি ফুপি হইবাম।”

চারু রানির চুল ছেড়ে দিয়ে পাশে বসে হাঁপাতে হাঁপাতে বললো –

“তোর ভাই একটা খাটাশ, তুই আরেকটা খাটাশ।”

রানি হাসি থামিয়ে বসে বললো-

“কালকে স্কুল মাঠে পিকনিক করবাম। ফারহানা আপু আর রনিরেও নিয়া আসবি কাল।এইটা জানাইতে ডাকছি।”

“হঠাৎ পিকনিক কেন?”

“আর কয়েকদিন পর আমার জন্মদিন না? এইজন্য ভাইয়ারে বইলা আগে ভাগেই বাড়ি আনাইছি। আর ভাইয়া জন্মদিনের গিফট হিসেবে পিকনিকের দায়িত্ব টা নিছে। ”

চারু একটা মুখ ভেংচি দিলো। দুই ভাই বোনের ঢং দেখলে তার গা জ্বলে। দুইটাই খাটাশ। সারাটা বিকাল চারু রানির সাথেই কাটালো।মাঝ খানে রবিনের সাথে আর তার দেখা হলো না।সন্ধ্যার পর চারুর যাওয়ার সময় হলো। রুবিনা বেগম রবিনকে ডেকে বললেন চারুকে বাড়িতে দিয়ে আসতে। রবিন সায় জানিয়ে রেডি হতে ঘরে চলে গেলো।চারু সদর দরজায় এসে ঠায় দাঁড়িয়ে রইলো কিন্তু রবিনের বের হওয়ার নাম নেই। রানি বসার ঘরে বসে চারুকে দেখে শয়তানি শয়তানি হাসি দিচ্ছে। চাপা স্বরে জিজ্ঞেস করলো-

“অন্ধকারে মনের মানুষের সাথে বাড়িত যাইতে কেমন লাগতাছে?”

চারু গরম চোখে তাকালো। মনের মানুষ না ছাই! কখন থেকে দাড় করিয়ে রেখেছে। ছেলে মানুষের আবার এত রেডি হওয়ার কি হলো। আরো কিছুক্ষন পর রবিন বের হয়ে আসলো।সদর দরজার দিকে এগিয়ে চারুকে পাশ কাটানোর সময় বললো –

“আয়।”

চারু ভদ্র মেয়ের মতো পিছু পিছু চললো। পরিষ্কার আকাশে অনেক তারা। সন্ধ্যার আকাশে শুকতারা ও দেখা যাচ্ছে। ওই তো চাঁদমামাও দেখি উঁকি ঝুঁকি দিচ্ছে। চারু আকাশ থেকে চোখ নামিয়ে সামনের পুরুষটির দিকে তাকালো। দুই হাত পকেটে গুঁজে ঢিমেতালে হেঁটে যাচ্ছে। কিছুটা দূরত্ব রেখে চারুও সেই হাঁটায় তাল মিলাচ্ছে। নিশ্চুপ পরিবেশে তাদের দুজনের পায়ের শব্দ কেমন জানি শুনাচ্ছে। চারু রবিনের দিকে তাকিয়ে আনমনে হাঁটতে লাগলো। পরিবেশ টা সুন্দর কিন্তু তারপরেও ঠিক জমছে না ব্যাপারটা। এমন রোমান্টিক পরিবেশে হাতে হাত ধরে হাঁটলে তবেই না পরিবেশের মর্যাদা রক্ষা হত। ভাবতে ভাবতে চারু রাস্তার ইটের সাথে উষ্ঠা খেয়ে “আয়ায়া” শব্দ করে পড়তে নিলো। রবিন পিছনে তাকিয়ে হাত বাড়িয়ে চারুকে ধরে তার মাটিতে পড়া আটকালো।
চারু এক প্রকার ঝুলে রইলো রবিনের বাহুতে। সে দুই হাত দিয়ে আঁকড়ে ধরে আছে রবিনের একটা হাত। সেই অবস্থায় চারু চোখ তুলে রবিনের দিকে তাকালো। অন্ধকারে চাঁদের আলোতে রবিনের ধারালো চেহারার সাথে সাক্ষাৎ হলো। চোখ পড়লো স্থির দুটি চোখে। চারু হা করে সেদিকেই তাকিয়ে রইলো।

রবিন গমগমে কন্ঠে বললো-

“জীবনভর এমনেই ঝুইলা থাকবি? আর উঠবি না?”

চারু নিজের অবস্থান দেখে তাড়াতাড়ি উঠতে নিলো। রবিন এক টানে চারুকে ধরে সোজা করে দাঁড় করালো। তারপর সোজা হাঁটু গেড়ে বসে পড়লো নিচে চারুর পায়ের কাছে। মোবাইলের ফ্ল্যাশ জ্বালিয়ে পায়ের দিকে ধরলো। হালকা চামড়া উঠে গেছে। একটু ডেটল লাগিয়ে পরিষ্কার করে নিলেই হবে। রবিন উঠে দাঁড়িয়ে বলল-

“আমার সাথে সাথে হাঁট।”

চারু এগিয়ে এসে রবিনের সাথে সাথে হাঁটতে লাগলো। কিন্তু এইবার আর তার কোনো ফিল আসলো না। রবিন মোবাইলের ফ্ল্যাশ জ্বালিয়ে চারুর হাঁটার রাস্তার দিকে ধরে আছে। মোবাইল লাইটের কৃত্রিম আলোতে পরিবেশের দফারফা হয়ে গেছে। আস্তে আস্তে সৈয়দ বাড়ির গেটে এসে দাঁড়ালো ওরা। রবিন গেট দেখিয়ে বলল-

“ভিতরে যা।আর গিয়ে পা পরিষ্কার কইরা নিবি। মনে থাকব?”

চারু মাথা নাড়লো। বলল-

“তুমি ভিতরে আসতা না?”

“আজ না। বাজারে একটু দরকার আছে।”

বলেই রবিন হাঁটা ধরলো। চারু ঠোঁট উল্টালো। চারুকে গেটে ঢুকিয়ে দিয়ে গেলে কি এমন হতো। এমন ভাব যেন প্রেসিডেন্ট। কাজ আছে। হুহ!! চারু একটা মুখ ভেংচি দিয়ে পিছন ফিরে গেটের ভিতরে চলে গেলো। রবিন কিছুটা গিয়ে পিছন ফিরে চারুকে ঢুকতে দেখলো।চারু ভালোভাবে বাড়ির ভিতর গিয়েছে নিশ্চিত হয়ে রবিন বাজারের দিকে চলে গেলো।

________

পরদিন সকালের খাওয়া দাওয়ার পরে চারু সহ ফারহানা আর রনির যেন ঈদ লেগে গেলো। বাড়ির গৃহিণীরাও সেই ঈদে কিছুটা সামিল হলো। ছেলেমেয়েরা পিকনিক কর‍তে যাচ্ছে শুনে তারা হালকা পাতলা কিছু নাস্তা বানিয়ে দিলো যেন খিদে লাগলে খেতে পারে। ঝুড়িতে খাবার দাবার সব নিয়ে সবাই স্কুলের দিকে রওয়ানা দিলো। সাথে বাড়ির কাজের ছেলেটাকেও নিয়ে নিলো।স্কুলে পৌছে দেখলো রবিন আর রানি আগে এসেই বসে আছে। স্কুলের মাঠের পাশে অনেক গুলো বড় বড় গাছ। সেই গাছের ছায়াতেই মাদুর বিছানো হয়েছে। একটু দূরে রান্নার চুলা বসানো হয়েছে। রবিন সাথে করে রান্নাবান্নায় সাহায্য করার জন্য একজন মহিলাও নিয়ে এসেছে। সাথে তাদের বাড়ির কাজের ছেলেটাও আছে।

রবিন গাছপালার শিকড়ে বসে ছিলো।রনি লাফাতে লাফাতে গিয়ে রবিনকে জড়িয়ে ধরলো। তার আনন্দের সীমা নেই। রবিন কে তার দারুণ পছন্দ। রবিন সবসময়ই এরকম আনন্দময় পরিবেশের সৃষ্টি করে। ফারহানা রানি আর চারু কয়েকটা প্লেটে বাড়ি থেকে আনা নাস্তা সাজালো। সবাইকে প্লেটে করে নাস্তা দিল। মাদুরে গোল হয়ে বসে তারা হাতে হাতে কাজ কর‍তে গল্প করতে লাগলো। মেয়েদের কলকল হাসিতে চারদিক ঝনঝন করে উঠল।

রবিন কিছুক্ষণ হাস্যোজ্জ্বল চারুকে দেখলো। চারু নাকে মুখে কথা বলছে। কথা বলার সময় হাত পা নেড়ে অঙ্গভঙ্গি করেও দেখাচ্ছে। রবিনের হাসি পেলো। এই দুই আংগুলের মেয়ে তাকে ভিডিও কলে বিয়ে করবে বলেছে। রবিন বেশিক্ষন সেদিকে আর মনোযোগ দিতে পারলো না। সে স্কুলের গেটের দিকে তাকালো, কেউ তার নাম ধরে চিৎকার করছে। চোখে পড়লো একটা বাইক। সেই বাইকের চালক সজল। আর পিছনে তুহিন বাইকের সিটে না বসে দাঁড়িয়ে আছে। এভাবে দাঁড়িয়ে থেকেই সে চিৎকার করছে-

“ওই রবিন! আইসা পড়ছি রে। তোর জানে জিগার বন্ধু আইসা পড়ছে।”

চিৎকার শুনে চারু রানি আর ফারহানাও তাকালো।তুহিন কে এইভাবে “ধুমমাচালে” স্টাইলে এন্ট্রি নিতে দেখে তাদের মুখ হা হয়ে গেলো। তুহিন এখনো কোমড়ে হাত দিয়ে হাসি হাসি মুখ করে বাইকের পিছনের সিটের দুই দিকে দুই পা দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এই দৃশ্য অত্যন্ত বিরল। উপস্থিত কেউই এই দৃশ্য থেকে চোখ সরাতে পারলোনা। সজল বাইক এনে রবিনের কাছাকাছি থামালো। তুহিন একটা ভাব নিয়ে বাইক থেকে নামলো।রবিনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় রানির দিকেও এক পলক দেখলো। তারপর রবিনের কাছে গিয়ে গাছের শিকড়ে বসে পড়লো।

রবিন তুহিনের দিক থেকে চোখ সরিয়ে নিয়ে সামনে তাকালো। তুহিন হাসি হাসি মুখে বলল-

“,সঠিক সময়েই আইছি মনে হইতাছে। খানা-পিনার ব্যবস্থা হইতাছে। মেন্যু কি রে?”

রবিন তুহিনের প্রশ্ন শুনে বিরক্ত চোখে তাকালো। কন্ঠ গম্ভীর করে যতটা সম্ভব অপমানের সুরে বললো-

“মেন্যু জাইনা তোর লাভ নাই। তুই ইনভাইটেড না।নিজের বাডিত গিয়া খা।”

তুহিন কষ্ট পাওয়ার একটা ভান করে বললো-

“এইটা তুই কইতে পারলি? তোর পিকনিকে আইতে আমার আলাদা ইনভাইটেশন লাগব? তুই এতটা পর কেমনে হইলি।”

বলেই তুহিন কান্নার মতো করে নাক টানলো। রবিন বিরক্তিতে “চ” জাতীয় শব্দ করলো। তুহিন গলা উঁচিয়ে চারুকে ডাকলো-

“চালের নাড়ু, তোমাদের পিকনিকে বিনা দাওয়াতে আইছি বইলা রবিন আমারে বাইর কইরা দিতাছে। তুমি কি কিছু বলবা না?”

চারু একবার রবিনের দিকে আরেকবার তুহিনের দিকে তাকালো। রবিন তার দিকে কঠিন চোখে তাকিয়ে আছে। চারুও তুহিনের সাথে গলা উঁচিয়ে বললো –

“তুহিন ভাই আমি তোমারে এখন দাওয়াত দিলাম আমাদের পিকনিকে। তাই তুমি এখন আমাদের স্পেশাল গেস্ট।”

চারু মনে মনে একটা শয়তানি হাসি দিলো। তুহিনকে তার পছন্দ না। কিন্তু রবিন তুহিন কে পিকনিকে রাখতে চাচ্ছে না জেনে রবিনকে জ্বালানোর জন্য চারু এটা করলো।।
তুহিন চারুর দাওয়াত পেয়ে দাঁত কেলিয়ে হেসে রবিনকে বললো –

“দেখলি তো।এখন আমি তোর স্পেশাল গেস্ট। আমারে স্পেশালি ট্রিট করবি। বুঝলি?”

রবিন কিছু না বলে স্থির চোখে চারুর দিকে তাকিয়ে রইলো।তুহিন সেটা খেয়াল করে বলল-

“এত দেখিস না।বেচারি বদনজরে পইড়া অসুস্থ হইব।তোর তো শকুনের চোখ।”

রবিন ঘাড় বাঁকিয়ে চোখ গরম করে তুহিনের দিকে তাকালো।তুহিন সেটা আমলে নিলো না। সে আরেকটু রবিনের কাছে এসে গলা নামিয়ে বললো –

“জংগলে গিয়া এমনি এমনি আইসা পড়ছিলি? কিছু মিছু করস নাই?”

“কি করবাম?”

“আরে বোকা বুঝে না! একটু মনের কথা আদান প্রদান আর কি। করস নাই?”

রবিনের ধৈর্যের বাঁধ ভেংগে গেলো।সে রাগী স্বরে বলল-

“তোর মতো এলিয়েন রাই গুলি খাওয়া অবস্থায় মনের কথা আদান প্রদান করব। আমি মানুষ।”

তুহিন একটা প্রাণখোলা হাসি দিলো। তারপর বলল-

“শোন মনের ভিতর যা যা আছে সব বইলা দে। চারু তো বড় ই হইছে। আবেগ আর কত আটকায় রাখবি। পরে তো সব শুকায় যাইব।”

রবিন একটা ধাক্কা দিয়ে তুহিনকে দূরে সরিয়ে দিলো।উঠে দাঁড়িয়ে বলল-

“আর একটা কথা কইলে তোর মুখ আমি ভাইংগা দিবাম।”

বলেই হন হন করে চলে গেলো। তুহিন ৩২ পাটি দাঁত বের করে হাসল। তার চোখ গেলো রানির দিকে।সে ঠোঁটে কামড় দিয়ে রানিকে একটা চোখ মারলো। রানি চোখ বড় বড় করে তাকালো।পরক্ষনেই চোখ সরিয়ে নলো।।তুহিনের হাসি আরো বিস্তৃত হলো।যাক, সকালে উঠে এত জার্নি করে এখানে আসাতে লস হচ্ছে না বরং লাভ ই হচ্ছে তার।কি সুন্দর সবাইকে জ্বালিয়ে মারছে সে।

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here