#প্রেম_প্রার্থনা
#তামান্না_আঁখি
#পর্ব-৩২
রবিন তাড়াতাড়ি চুলা অফ করলো। নুডুলস টা নিচের দিকে কিছুটা পুড়ে গেছে। কিন্তু তাও রান্না করা যাবে। সে আরেকটা প্যানে তেল গরম করতে দিয়ে ডিম নিয়ে আসলো। হালকা আঁচে ডিম ভেজে নিয়ে তাতে নুডুলস ছেড়ে দিলো।একে একে সবজি গুলোও দিয়ে দিলো। চারু আগের জায়গায় দাঁড়িয়ে থেকেই সব পর্যবেক্ষণ করলো। তার মাথায় এখন আর ক্ষুধা লাগার ব্যাপারটা নেই,তার মাথায় চলছে অন্য কিছু। রবিন এমন করছে কেন তার সাথে? রবিন ও কি তার প্রতি কোনো কিছু অনুভব করে নাকি? চারুর ধ্যান ভাংলো রবিনের গম্ভীর কন্ঠে।
“নে হা কর।”
রবিন চামচে নুডুলস নিয়ে ওর মুখের সামনে চামচ ধরে আছে। চারু রবিনের তুলনায় খাটো হওয়ায় রবিন কিছুটা ঝুঁকে আছে ওর দিকে। চারু রবিনের ধরে রাখা চামচ থেকে মুখ বাড়িয়ে নুডুলস খেয়ে নিলো। রবিন চুলার কাছে গিয়ে বাটিতে নুডুলস নিতে নিতে জিজ্ঞেস করল-
“রান্না কেমন হইছে?”
“ভালো।”
“আমার বউ এর পছন্দ হইব?”
চারু কি বলবে ভেবে পেলো না। সে চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলো।রবিন উত্তরের অপেক্ষা করলো না। দুটো বাটিতে নুডুলস নিয়ে একটা নুডুলসের বাটি চারুর হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল-
“আশা করি পছন্দ হইব।”
বলেই নিজের জন্য আরেকটা বাটি নিয়ে উপরে চলে গেলো। চারু কিছুক্ষন বাটি হাতে সেখানেই দাঁড়িয়ে রইলো। তার মাথা কিছুটা হ্যাং হয়ে আছে। রবিনের হাতে কত চুল টানা খেয়েছে, কত তাড়া খেয়েছে অথচ আজ রবিনের অন্যরকম ব্যবহার যেন তাকে আরো বড় দ্বিধায় ফেলে দিয়েছে। চারু বাটি হাতে রানির ঘরে আসলো। বিছানার এক কোণায় বসলো।আলো জ্বালাতে ইচ্ছে হলো না তার তাই অন্ধকারেই এক চামচ মুখে দিলো। সে না চাইতেও তার ঠোঁটে একটা লাজুক হাসি খেলে গেলো।তার মানে রবিন ভাইয়ের মনেও তার জন্য কিছু একটা আছে। এত দিন হয়তো বলে নি,এখন চারু নিজের মনের কথা বলায় রবিন ভাইয়ের অনুভূতি সব উপচে পড়ছে। চারু খেতে খেতে শব্দ করে হেসে ফেললো। চামচের টুংটাং শব্দ আর চারুর হাসির শব্দে রানির ঘুম ছুটে গেলো। সে অন্ধকারে চারুকে বসে থাকতে দেখে ঘুম ঘুম গলায় বলল-
“অন্ধকারে বইসা পাগলের মতো হাসোস কেন?”
হঠাৎ রানির কথায় চারু কিছুটা চমকে গেলো কিন্তু পরক্ষনেই রানির কন্ঠ চিনতে পেরে বলল-
“কিছুনা,তুই ঘুমা।”
রানি অপর পাশ হয়ে শুয়ে বলল-
“ভাইয়া ঠিক ই বলে তুই একটা মাথা পাগল।”
চারু বিড়বিড় করে বলল-
“তোর ভাই আরো অনেক কিছুই বলে যা খালি আমি জানি।”
পরদিন চারুকে অনেক সকাল সকাল উঠতে হলো। রুবিনা বেগম এক প্রকার টেনে তুললেন তাকে। এত সকালে ডেকে তুলায় চারুর খুব ই মেজাজ খারাপ হলো।কিন্তু যখন শুনলো বাড়ি থেকে গাড়ি পাঠানো হচ্ছে তাদেরকে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য তখন চারুর কিছুটা চিন্তা হলো।এত সকালে বাড়িতে যাওয়ার কি এমন দরকার পড়লো। রুবিনা বেগম তাড়াতাড়ি নাস্তা বানিয়ে চারু ফারহানা আর রনিকে খাইয়ে দিলেন।খানিক পড়েই গাড়ির হর্ন শোনা গেলো। ফারহানা আর রনি চারুকে তাড়া দিয়ে গাড়ির দিকে চলে গেলো। চারু বের হওয়ার আগে এক দৌড়ে দুতলায় চলে এলো। এসে রবিনের ঘরের ভেতর উঁকি দিলো। রবিন ঘরে নেই।ওয়াশরুম থেকে পানির শব্দ আসছে তার মানে সে গোসলে। চারু পা টিপে টিপে ঘরের ভেতর ঢুকে সোজা রবিনের পড়ার টেবিলের কাছে এলো। সাথে আনা মার্কার পেন দিয়ে টেবিলের উপর কিছুটা বড় করে লিখলো-
“চারু+রবিন=চারুবিন।”
শুধু টেবিলে লিখেই ক্ষান্ত হলো না, টেবিলের উপর রবিনের ল্যাপটপ পেয়ে সে ল্যাপটপের উপরেও একই কথা লিখলো।তবে ল্যাপটপের উপরে একটু ছোট করে লিখলো। তারপর ঠোঁট কামড়ে হাসলো। পা টিপে টিপে ঘর ছেড়ে বের হয়ে এক দৌড়ে গাড়িতে উঠে বসলো। গাড়িতে উঠেও তার মুখ থেকে হাসি সরলো না। সে মিটি মিটি হেসে গাড়ির জানালা দিয়ে প্রকৃতি দেখতে লাগলো।আজকের সব কিছুই যেন অনেক সুন্দর লাগছে তার কাছে। দুই বাড়ির দূরত্ব তেমন না হওয়ায় কিছুক্ষনের মধ্যেই বাড়িতে এসে গেলো। তিড়িং বিড়িং নাচতে নাচতে চারু সিড়ি পেরিয়ে নিজের ঘরে আসলো। দুই হাত দুই দিকে মেলে দিয়ে সে মনের আনন্দে শুয়ে রইলো।
রাজিয়া বেগম চারুর ঘরের দরজায় এসে দাঁড়িয়ে চারুকে ডাকলেন। মায়ের ডাক শুনে চারু উঠে বসলো। রাজিয়া বেগম ঘরে ঢুকেই এদিক ওদিক ছড়ানো চারুর কাপড় গুলো গুছাতে লাগলেন। চারুর দিকে তাকিয়ে আদেশ করলেন-
“যা গোসল কইরা আয়। ভালো কইরা করবি। চুল ধুইয়া গোসল কর।”
চারু অবাক হয়ে প্রশ্ন করলো-
“এখন কেন আম্মা? এখনো তো দুপুর হইছে না।”
“যা কইছি তাই কর।অত কথা কইস না।”
রাজিয়া বেগমের কন্ঠ কিছুটা গরম শোনা গেলো। তার হাবভাব ও কেমন জানি রাগী রাগী। চারুকে বিছানায় ঠায় বসে থাকতে দেখে উনি ধমক লাগালেন-
“এখনো বইসা রইছস কেন? বিছানা থাইকা উঠ। নতুন চাদর বিছানো লাগব। উইঠা আলমারি থাইকা চাদর নামায়া দে।”
চারু ধমক খেয়ে আলমারি থেকে চাদর নিয়ে আসলো। সে বুঝলো কোনো একটা কারনে তার মা রেগে আছে। সে মায়ের মন ভালো করার জন্য নিজেই বালিশের পুরাতন কভার গুলো খুলে নতুন কভার লাগাতে বসলো। কন্ঠে আহ্লাদীপনা ফুটিয়ে প্রশ্ন করল-
“নতুন চাদর কেন আম্মা? আমার পুরান চাদরেই তো ভালো চলতাছে।”
“মেহমান আসব বাড়িতে তাই। তুই যা ভাল কইরা সাজগোছ কইরা থাক।”
মেহমান আসবে শুনে চারুর চিন্তা আরো বাড়লো। এর আগেও তো কত মেহমান এসেছে কই তার ঘরের তো কিছু বদলাতে হয় নি তবে আজ ই বা কেন। চারুকে বালিশ নিয়ে বসে থাকতে দেখে রাজিয়া বেগম আবারো ধমক দিলেন-
“বইসা রইছস কেন? যা গোসলে যা। তোর এইসব করন লাগতো না।”
ধমক খেয়ে চারুর আর আগ বাড়িয়ে কিছু করতে সাহসে কুলালো না। সে প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে গোসলে চলে গেল। গোসল থেকে বেরিয়ে চারু নিজের ঘরের এদিক ওদিক তাকালো। রাজিয়া বেগম সব কিছুই গুছিয়ে রেখে গেছেন। চারু চুল ঝেড়ে গামছা হাতে তার ঘরের পেছনের বারান্দায় আসলো। গামছা মেলতে গিয়ে তার চোখ পড়লো রাস্তায়। রবিন আসছে বাইক চালিয়ে। চারুর ঠোঁটে হাসি খেলে গেলো। সে গামছা হাতে নিয়েই তাকিয়ে থাকলো।রবিন বাইক স্ট্যান্ড করে গেটের ভেতর ঢুকতেই চারু গামছা এক পাশে রেখে দৌড়ে সামনের বারান্দায় এসে দাঁড়ালো। রবিন উঠোনে ঢুকে সোজা বসার ঘরের বারান্দার দিকে এগিয়ে আসছে। পথে আড় চোখে একবার দুতলার বারান্দায় তাকাতেই চারুর সাথে চোখাচোখি হলো। সাথে সাথেই রবিন চোখ সরিয়ে গম্ভীর একটা মুখভঙ্গি করে ভেতরে চলে গেলো। চারু রবিনের কান্ড দেখে ফিক করে হেসে দিলো। সে সিড়িতে এসে দাঁড়িয়ে নিচে উঁকি দিলো। রবিন এসে তার বাবার ঘরে ঢুকেছে। তার মানে নিশ্চয়ই কোনো দরকারি কাজে এসেছে বের হতে অনেক সময় লাগবে। এই সময়টা কাটানোর জন্য চারু ফারহানার ঘরে এলো। ফারহানাও ঘরের সব জিনিসপত্র গুছাচ্ছে। চারু বিছানায় বসে তাচ্ছিল্য করে বলল-
“কি এমন মেহমান আসতাছে যে আমরা সবাইরে ঘর গুছানো লাগতাছে?”
ফারহানা একবার চারুর দিকে তাকালো তারপর চোখ নামিয়ে নিয়ে নিজের কাজে মন দিলো। চারু একা একাই বকবক করতে লাগলো।ফারহানা তার বকবকে সাড়া না দিলেও তার কিছু যায় আসে না।তার মনে অফুরন্ত আনন্দ। সারাজীবন তার সাথে কেউ কথা না বললেও তার আপত্তি নেই।
নিচ থেকে দরজা খোলার শব্দ পেয়ে চারু লাফ দিয়ে বিছানা থেকে নেমে বারান্দায় আসলো। নিচে তাকিয়ে দেখলো বসার ঘর পেরিয়ে বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছে রবিন।তাকে অনেক চিন্তিত দেখাচ্ছে। একটা বড় শ্বাস ফেলে কপাল চুলকে উঠোনে নেমে দুতলার বারান্দায় চারু যেখানে দাঁড়িয়ে আছে সরাসরি সেখানে তাকালো। চোখাচোখি হলো তার চারুর সাথে। এবার আর চোখ নামিয়ে নিলো না স্থীর কিন্তু গভীর এক দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে থাকলো রবিন। চারু রবিনের এই দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে পারলো না সে হাঁসফাঁস করে এদিক ওদিক তাকালো। রবিন কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে উঠোন পেরিয়ে গেট দিয়ে বের হয়ে গেলো। চারু এক ছুটে তার ঘরের বারান্দায় আড়াল হয়ে রাস্তায় উঁকি দিয়ে দাঁড়ালো।
রবিন বাইকে উঠে কিছুক্ষণ সেভাবেই বসে থাকলো। তারপর একটা সিগারেট ধরিয়ে অস্থির হয়ে কয়েকটা টান দিয়ে ফেলে দিলো। বাইক স্টার্ট দিয়ে প্রচন্ড গতিতে ধুলো উড়িয়ে চলে গেলো। চারু আড়াল থেকে সবটা দেখলো। অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে রবিনের দেখা পেয়ে তার খুব ভালো লাগছে। সে ফোন নিয়ে রবিনের আইডিতে ঘুরাঘুরি করতে লাগলো।
দুপুরের কিছু আগে সাজেদা বেগম ফারহানাকে নিয়ে চারুর ঘরে আসলেন। তার হাতে একটা শাড়ি। চারু শাড়ি দেখে কিছুটা অবাক হলো। সাজেদা বেগম মলিন কন্ঠে বললেন-
“এইখানে আইসা দাঁড়া শাড়িটা পড়ায় দেই।”
চারু অবাক হয়ে প্রশ্ন করলো-
“এই ভর দুপুরে শাড়ি পইড়া কি করবাম?”
ফারহানা সোজা সাপ্টা উত্তর দিলো-
“তোরে পাত্রপক্ষ দেখতে আইতাছে। একটু আগে খবর দিছে তারা বাড়ির কাছাকাছি আইসা পড়ছে।”
চারু যেন আকাশ থেকে পড়লো। সে অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে সাজেদা বেগমের দিকে তাকালো।সাজেদা বেগম এগিয়ে এসে চারুকে শাড়ি পড়াতে উদ্ধত হলেন। চারু তার হাত ধরে আটকে বলল-
“চাচী, এইসব কি কথা? আমারে কেন দেখতে আসতাছে? আগে তো আপুর বিয়ে হইব তারপর ফারহানা আপুর তারপর আমি।তেইলে আমারে দেখতে আসতাছে কেন?”
সাজেদা বেগমের মুখটা বিষাদে ছেয়ে গেলো।তিনি উত্তর করলেন-
“তোর বাপ আমরারে যা করতে কইছে তাই করতাছি। তোর মা অনেক বুঝায়াও তোর বাপ রে আটকাইতে পারে নাই। আমরাও আজ সকালেই জানছি যে তোরে আজ দেখতে আসব। বাড়ির মান সম্মানের কথা চিন্তা কইরা তোর বাপের কথায় সায় দেয়া ছাড়া উপায় নাই।”
চারু অস্থির হয়ে জিজ্ঞেস করল-
“বড় বাবা কই? বড় বাবারে কও আটকাইতে। আমি পাত্র পক্ষের সামনে যাইতাম না।কোনোমতেই না।”
সাজেদা বেগম চারুর দুই বাহু ধরে বললেন-
“তোর বড় বাবা গতকাল শহরে গেছে।খবর দেয়া হইছে। তাড়াতাড়িই চইলা আসব। তুই অমত করিস না মা।দেখতে আসলেই তো বিয়ে হয় না। সৈয়দ বাড়ির সম্মান বাঁচানোর লাইগা হইলেও পাত্রপক্ষের সামনে তোর যাওন লাগব। তোর বাপ যে কথা দিছে।”
চারু অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে থাকলো।সাজেদা বেগম আর ফারহানা সুন্দর করে তাকে শাড়ি পড়িয়ে সাজিয়ে দিলেন।পুরোটা সময় চারু ছটফট করলো ।সাজানো শেষ হতেই সাজেদা বেগম বের হয়ে চলে গেলেন। ফারহানা চারুর পাশে বসে বললো-
“তোরে যে কি সুন্দর লাগতাছে চারু।তুই যদি জানতি!! মন খারাপ করিস না।আব্বা আসলে এই বিয়ে কোনোমতেই হইতে দিত না। চাচ্চুর মাথা গরম তাই উল্টাপাল্টা কাজ করতাছে।একটু সহ্য কর।”
ফারহানা বের হয়ে গেলে চারু উঠে দাঁড়ালো। গুটি গুটি পায়ে হেঁটে নিচে নামলো।রান্নাঘর থেকে শব্দ আসছে। তার মা চাচীরা রান্নাঘরে ব্যস্ত। যতই অমত থাকুক অতিথি আপ্যায়নে কোনো কমতি তারা রাখবে না। চারু ধীর পায়ে তার বাবার দরজার সামনে এসে দাঁড়ালো।সে জানে তার বাবা তার বোনের উপর কোনো কারনে রেগে আর সেজন্যেই চারুর জন্য এরকম এক সিদ্ধান্ত তিনি নিয়েছেন।চারুর বিশ্বাস সে যদি তার বাবার সাথে কথা বলে নিশ্চয়ই তার বাবা তার উপর এইভাবে কিছু চাপিয়ে দিবে না। চারু দরজা একটু ফাঁক করে উঁকি দিলো। ভিতরে কামরুজ্জামান পিছন ফিরে চেয়ারে বসে ফোনে কারো সাথে কথা বলছেন। টুকরো টুকরো কথা চারুর কানে এসে ঢুকলো। চারু চমকে গিয়ে পাথর হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলো। তার বাবা আজকেই তার বিয়ের ব্যবস্থা করে ফেলছেন। পাত্রপক্ষের তাকে পছন্দ হলেই কাজী ডেকে বিয়ে। চারু বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলো। সে দুইদিকে মাথা নাড়লো। কিছুক্ষণ নিচের দিকে তাকিয়ে রইলো। তারপর কাউকে কিছু না বলেই এক দৌড়ে উঠোন পেরিয়ে গেট খুলে বেরিয়ে গেলো।
রবিন একটা গাছের শিকড়ের উপর বসে আছে।তার মাথার শিরাগুলো দপদপ করছে।। বাম হাতের দুই আংগুল দিয়ে কপাল চেপে ধরে চোখ বন্ধ করে আছে। আরেক হাতে তার ফোন। বার বার ফোন করেও সে শাহজাহান আলীর নাগাল পাচ্ছে না। এইদিকে সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। এখনি ব্যবস্থা না নিলে আরো অনেক দেরি হয়ে যাবে।।
হঠাৎ মেয়েলি চিৎকার কানে এলো তার। চোখ খুলে সামনে তাকালো। শাড়ি পরিহিতা চারু দৌড়াচ্ছে। এদিকেই আসছে। তার ছেড়ে রাখা চুল উড়ছে, শাড়ির কুচি এলোমেলো হয়ে গেছে। দৌড়ানো অবস্থায় পায়ে শাড়ি জড়িয়ে পড়তে পড়তে সামলে নিচ্ছে নিজেকে। দেখেই বুঝা যাচ্ছে প্রথমবার শাড়ি পড়া কোনো কিশোরি এই অবস্থায় দৌড়াচ্ছে। দূর থেকেই রবিন তার চুড়ির আওয়াজ শুনতে পাচ্ছে। সে শক্ত হয়ে বসে তাকিয়ে থাকলো সেদিকে।তার ঠোঁট দুটো হালকা ফাঁক হয়ে গেলো। মুখে কাঠিন্য থাকলেও তার চোখে একরাশ মুগ্ধতা ছেয়ে আছে। শাড়ী পরিহিত কিশোরীর দৌড়ের তালে তালে তার পড়নের অলংকারেরা শব্দ করে আন্দোলনের ডাক তুলেছে। আর সেই আন্দোলনে সায় জানিয়ে রবিনকে ছুয়ে দিচ্ছে শীতল বাতাস।
চলবে