তুই_শুধু_আমার💕 #Nusrat_Jahan_Bristy #Part_4

0
577

#তুই_শুধু_আমার💕
#Nusrat_Jahan_Bristy
#Part_4

প্রায় আট বছর আগের কথা যখন ইশার বাবা মা কার এক্সিডেন্টে মা’রা যায় আর তখনেই প্রথম ইশা‌ চৌধুরী বাড়িতে আসে।

ইশার পড়ানে ছিলো কালো একটা স্কার্ট আর একটা টিশার্ট দেখতে একেবারে নিতান্তই একটা পিচ্চি মেয়ে। মুখ দেখে বুঝাই যাচ্ছে দু দিন ধরে শুধু কেদেই গেছে। চোখ মুখ ফুলে গেছে কান্না করার কারণে চোখের নিচে কাল সেটে দাগ পড়ে গেছে। জিসান ইশাকে প্রথম দেখে এই অবস্থায়। ইশা গ্রামে থাকতো ওর বাবা মার সাথে আর জিসান থাকতো শহরে। জিসান শুধু এটাই জানতো যে ওর একটা খালতো বোন আছে কিন্তু কোনো দিন চোখের দেখা সেই খালাতো বোনকে দেখে নি। জিসানকে অনেক বার ওর মা বলতো গ্রামে খালার বাড়িতে যাওয়ার জন্য কিন্তু জিসান যেতে চাইতো না।

ইশার বাবা মা মা’রা যাওয়ার পর থেকেই ইশা জিসানের বাড়িতে থাকে। জিসান ইশার সব আবদার পুরন করতো। জিসান যখন পড়ালেখা শেষ করে নিজের বিজনেস সামলায় তখন জিসানের কোম্পানিতে একটা অফার আসে লন্ডনে যাওয়ার জন্য পাঁচ মাসের জন্য। কিন্তু জিসান যেতে রাজি ছিল না ইশাকে ছেড়ে। কিন্তু পরে ইশার কথাতেই জিসান যেতে বাধ্য হয় তবে ইশার উপর নজর রাখার জন্য গার্ড রেখে গেছে। জিসানের সবচেয়ে বড় ভুল ছিল লন্ডনে যাওয়া। জিসানের অবর্তমানে ইশার জীবনে আসে রাহুল আর সেই কথা জিসানকে জানায় গার্ডরা। (সরি আমি ভুল করে অতিতের কথা উল্লেখ করে ফেলেছি তার জন্য অতিতের কিছু কথা লিখলাম আর জিসান আর ইশার তেমন কোনো অতিত নেই)

এবার বর্তমানে আসি…

সকালে সূর্যের আলো পড়তেই ইশার ঘুম ভেঙ্গে নিজেকে আবিষ্কার করে জিসানের বুকে। ইশা জিসানের দিকে তাকিয়ে মনে মনে ভাবতে থাকে।

–কেন তুমি এটা করলে আমার সাথে কি দোষ করেছি আমি।

ইশা নঁড়ে উঠতেই জিসান ইশাকে আরো আষ্টেপৃষ্টে ধরে। এবার ইশার ইচ্ছা করছে জিসানকে এক লাথি মে’রে খাট থেকে ফেলে দিতে। কিন্তু ইশা তো একটা বাচ্চা মেয়ে জিসানকে কিভাবে লাথি মেরে সরাবে দেখে যাবে লাথি জিসানকে মা’রতে গিয়ে উল্টো ও খাটের নিচে পড়ে মাটিতে গড়াগড়ি খাবে। কিন্তু ইশা অনেক চেষ্টা করেও জিসানকে নিজের কাছ থেকে সরাতে পারছে না। ইশা মনে মনে বলল।

–উফফ! এই জলহস্তিকে কিভাবে সরাবো আমি? ইচ্ছে করছে গলা টিপে ধরতে। নাহ আর পারছি না শ্বাস নিতে ক’ষ্ট হচ্ছে আমার এবার জোরে চিৎকার দিতেই হবে তাহলে যদি উঠে।

ইশা এবার জিসানকে ডাক দেয়।

–ভাইয়া…. না না ভাইয়া ডাকা যাবে না কিন্তু কি ডাকবো হুম পেয়েছি। এই‌ যে শুছেন……

ইশা যে এত জোরে চিৎকার করেছে তাতে জিসানের কোনো হেলদোল নেই। উল্টে ইশাকে আরও নিজের কাছে টেনে নেয়। ইশা দাঁতে দাঁত চেপে মনে মনে বলে।

–কি কুম্ভকর্ণ রে বাবা এত জোরে চিৎকার দিলাম তাও উঠলো না। ঠিক আছে তাহলে ভাইয়া বলেই চিৎকার দিবো।

অন্য জিসানও ঘুমের ভান ধরে পড়ে থাকে আর মনে মনে বলে।

–দেখি তুই আজকে কি কি করতে পারিস আমার কাছ থেকে নিজেকে ছাড়ানোর জন্য।

–ভাইইইইইইইইইইইইইইইইইইইয়ায়ায় ছাড়ো আমাকে আমি উঠবো।

ইশা যে এতো জোরে চিৎকার দিয়েছে তাতে জিসানের কোনো প্রতিক্রিয়াই নেই উল্টো বিরক্তিকর কন্ঠে বলে।

–এভাবে চিৎকার করছিস কেন? একটু শান্তিতে ঘুমাতে দে।

–আমার ঘুম হারাম করে শান্তিতে ঘুমাবে সেটা হবে না দাঁড়াও দেখাচ্ছি মজা।

ইশা কথা মনে মনে বলেই জিসানের ঘাড়ে জোরে দেয় এক কা’ম’ড়। জিসান ধরফড়িয়ে উঠে বসতেই ইশা তাড়াতাড়ি করে খাট থেকে নেমে যায়। জিসান রেগে ইশার দিকে তাকিয়ে‌ বলে।

–এটা তুই কি করলি ইশা?

ইশা শুকনো ঢোক গিলে মনে মনে বলে।

–এবার আমার কপালে শনি আছে হয়তো। যেভাবে ক্ষেপেছে আমার উপরে।

জিসান কা’ম’ড় দেওয়া জায়গাটাতে ম্যাসাজ করতে করতে বলে।

–কি হলো এভাবে কা’ম’ড় দিয়েছিস কেন?

ইশা একটু বেশি জোরেই কা’ম’ড় দিয়েছে জিসানের ঘাড়ে। একে বারে কালচে হয়ে র’ক্ত জমাট বেঁধে গেছে। ইশা ভয়ে তোতলিয়ে বলে।

–না মানে আমি…. আসলে আমি বুঝতে পারি নি।

জিসান খাট থেকে নেমে একটা বাকা হাসি দেয়। ইশা তো পুরাই বেক্কেল হয়ে যায় জিসানের হঠাৎ করে এমন হাসি দেখে। জিসান ইশার দিকে এগোনো‌ দেখে ইশা ভয়ে পিছুতে থাকে। জিসান ভ্রু নাচিয়ে বলে।

–তুই ভালোই করেছিস আমাকে কামড় দিয়ে। শুনেছি বউরা যদি বেশি ভালোবাসে স্বামীকে তাহলে নাকি স্বামীকে একটু আধটু কা’ম’ড় দেয়। আর সেটাকে জানিস কি বলে লাভ বাইট এই চিহ্নটা হলো আমার বউয়ের প্রথম ছোয়া।

ইশা আনমনেই বলে উঠে।

–হে…

–হে না হুম। তুই আমাকে কা’ম’ড় দিয়েছিস এবার আমি তোকে কা’ম’ড় দেব…. তাহলে শোধবোধ হয়ে যাবে। কি বলিস?

–কিহ? [ইশা এবার কি করবি ও খোদা রক্ষা করো আমাকে]

–তুই রেডি তো জান।

ইশা চলে যেতে নিলে জিসান ইশার হাত খপ করে ধরে বলে।

–কোথায় পালাচ্ছিস? আজকে তুই আমার হাত থেকে এতো সহজে পালাতে পারবি না ইশু সোনা।

ইশা কাঁদো কাঁদো ফেইস নিয়ে বলে।

–আমার ভুল হয়ে গেছে। আমক‌আর কোনো এমন করবো না‌ প্রমিজ এবারের মতো ক্ষমা করে দাও।

–ভুল করেছিস যেহেতু এর মাশুল তো তোকেই দিতে হবে।

ইশা জিসানের কাছ থেকে নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে করতে বলে।

–প্লিজ এবারের মতো ক্ষমা করে দাও।

–উম হু। এটা তো হচ্ছে না।

ইশা নিজেকে জিসানের হাতের বন্ধন থেকে ছাড়ানো অনেক চেষ্টা করছে। কিন্তু বেচারি কিছুতেই পারছে না নিজেকে ছাড়াতে।

–বেশি নড়াচড়া করলে কিন্তু শাস্তির ডোজ বাড়িয়ে দিবো। তাই শান্ত হয়ে লক্ষী মেয়ের মতো থাক।

জিসান ইশাকে নিজের কাছে এনে ইশাকে ঘুড়িয়ে দেয়। ইশার‌ পিঠ গিয়ে ঠেকে জিসানের প্রশস্ত বুকে। ইশা ভয়ে ঝাপ্টে চোখ বন্ধ করে নেয়। জিসান মুচকি এসে ইশার ঘাড় থেকে চুল সরিয়ে দেয়। জিসানের ছোয়াতে ইশার সারা শরীর কেঁ’পে উঠছে এ যেন এক অন্য রকম ভালো লাগা কাজ করছে ইশার মাঝে। জিসান আরশির দিকে তাকিয়ে ইশার মুখ দেখে একটা মুচকি হাসি দেয়। ইশার তো যায় যায় অবস্থা দম আটকে আসছে। নিশ্বাস ভারি হয়ে আসছে। জিসান আস্তে আস্তে করে নিজের মুখটা ইশার ঘাড়ের কাছে নিয়ে গভীর ভাবে একটা কি’স করে। ইশা সাথে সাথে নিজের চোখ দুটো খুলে ফেলে। ইশা ভেবেছিল জিসান হয়তো কামড় দিবে কিন্তু না তার বদলে কি’স। জিসান ইশাকে নিজের দিকে ঘুড়িয়ে নিজের দু ভ্রু নাচিয়ে বলে।

–মনে হচ্ছে তুই এটা চাস নি তাই না। ঠিক আছে নো প্রবলেম। আমি তোর ইচ্ছাটা পুরন করে দিছি।

ইশা জিসানের দিকে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে মনে মনে ভাবে।

–এই রে এবার কি সত্যি সত্যি কামড় দিবে নাকি। তাহলে তো আমি শেষ হয়ে যাবো ও খোদা বাচাও আমাকে।

জিসান ইশার ঘাড়ের দিকে যেতেই দরজায়তে শব্দ হয়। ইশা স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়ে।

–এখন আবার কে আসলো?

জিসান বিরক্তিকর ভাব নিয়ে কথাটা বলে। দরজার ওপর প্রান্ত থেকে জিসা গলা ফাঁটিয়ে ডেকেই যাচ্ছে।

–ভাইয়া দরজাটা খুলো না একটু।

জিসান ইশাকে ছেড়ে দিয়ে রাগে গজগজ করতে করতে গিয়ে দরজাটা খুলে বলে।

–কি হয়েছ? এভাবে ষাড়ের মতো চিল্লাছিস কেন?

–না মানে ভাইয়া আমি ইশা আপুকে নিতে এসেছি।

–কেন ওকে তোর কি দরকার?

–আমার দরকার না মায়ের দরকার আছে।

ইশা তাড়াতাড়ি করে জিসানের সাইড দিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে জিসাকে বলে।

–জিসা! মামনি কেন ডেকেছে আমাকে? চল এখানে থেকে আমাদের লাভ নেই মামনির কাছে যাই।

ইশা তাড়াতাড়ি করে জিসানের সামনে থেকে চলে যায়। ইশা চলে যেতে জিসান বলে।

–খুব চালাক হয়ে গেছিস না তুই। ঠিক আছে তোর চালাকি গিরি আমি বার করছি।

____

জিসান ফ্রেস হয়ে নিচে আসে। সবাইকে দেখতে পেলেও শুধু ইশাকে দেখতে পায় না। নিজের ধৈর্য না ধরে রাখতে পেরে মাকে বলেই ফেলে।

–মা ইশু কোথায়?

–এখানেই আছে হয়তো।

–এখানে আছে কোথাও মানে? আমি তো দেখতে পারছি না।

–ভাইয়া

জিসার ডাকে জিসান পিছন ফিরে তাকিয়ে ইশাকে দেখে বড় ধরনের একটা শক খায়। চোখ ফেরাতেই পারছে না জিসান ইশার উপর থেকে। কালো শাড়িতে ইশাকে খুব মিষ্টি লাগছে। দু হাতে সোনার চুড়ি, গলায় চেইন, চুল গুলো কার্লিং করে সামনে এনে রেখেছ, হালকা মেকাপ, ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক তাতেই জিসান ফিদা হয়ে গেছে। ইশার একটু লজ্জাও লাগছে জিসানের এমন চাওনিতে। মায়ের ডাকে জিসানের ঘোর কাটে।

–কি রে কেমন লাগছে?

–জাস্ট বিউটিফুল।

পরক্ষনে জিসান রেগে বলে উঠে।

–কিন্তু মা শাড়ি পড়তে কে বলেছে ওকে?

–আমি বলেছি ও পড়তে চাই নি আমি জোর করেছি তাই পড়েছে।

–কিন্তু মা তুমি কি ভুলে গেছো যে এক বার ইশা শাড়ি পড়ার কারনে কি হয়ে ছিল।

ইশা মা ছেলের কথার মাঝখানে বলে উঠে।

–মা মনি তোমার ছেলেকে বলে দাও। আমি এখন অনেক বড় হয়ে গেছি। আমি সেই আগের ছোট ইশা না যে একটা শাড়ি সমলাতে পারবো না। আর আমি নিজের ইচ্ছাতে শাড়ি পড়েছি কেউ জোর করে নি।

–জাস্ট স্টেআপ। একটাও কথা বলবি না তুই আর। ইশা ভুলে গেছিস নাকি দিনের ঘটনাটা আমার মনে পড়লে এখনও শরীর কেঁ’পে ওঠে। আর তুই কি না আঁচল লম্বা রেখে শাড়ি পড়েছিস।

জিসানের বাবা বলেন।

–জিসান ইশা মামুনি এখন বড় হয়েছে। তাই প্লিজ এমন করো না।

–বাবা প্লিজ তুমি এর মাঝে ডুকো না। ইশা তুই শাড়িটা চেইন্জ করে আ।

–নাহ আমি করবো না আর আমি শাড়ি সামলাতে পারবো বললাম তো।

জিসান ধমকের স্বরে বলে।

–তোকে আমি শাড়ি চেইন্জ করতে বলছি ইশা।

–মামুনি তোমার ছেলেকে বলে দাও আমি শাড়ি চেইন্জ করবো না।

–জিসান থাক না। মেয়েটা যখন চাইছে না তাহলে।

জিসান দাঁতে দাঁত চেপে বলেে।

–ওকে তুই আমার কথা শুনবি না তো ঠিক আছে তুই চল আমার সাথে।

জিসান ইশার হাত ধরে জোর করে ঘরে নিয়ে যেতে চাইলে একজনের ডাকে জিসান থেমে যায়।

#চলবে

আজকের পার্ট তেমন ভালো হয় নি তাই কেউ কিছু মনে করবেন না

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here