তুই_শুধু_আমার 💕 #Nusrat_Jahan_Bristy #Part_16

0
434

#তুই_শুধু_আমার 💕
#Nusrat_Jahan_Bristy
#Part_16

ছাদের রেলিং এর উপর বসে আছে সাঈদ আর জিসা একে ওপরের হাত শক্ত করে ধরে। জিসা সাঈদের কাধের উপর মাথা হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে আছে।

সাঈদ আলতো কন্ঠে বলে।

–জিসা?

-হুম…

–তুই কোনো‌ দিন আমাকে ছেড়ে যাবি না তো।

জিসা সাঈদের কাধ থেকে মাথা সরিয়ে সোজা হয়ে বসে বলে।

–হঠাৎ এই প্রশ্ন?

–এমনি জানতে ইচ্ছা হলো তুই কোনো দিন আমার হাত ছাড়বি না তো বল।

জিসা সাঈদের হাতের উপরে হাত রেখে নিজের দু হাত দিয়ে শক্ত করে ধরে।

–কোনো দিনও তোমাকে ছেড়ে যাবো প্রমিজ। আর যদি কোনো দিন এমন কোনো পরিস্থিত আসে তবে আমি তা সামলিয়ে নিবো। তবুও তোমার হাত আমি কখনো ছাড়বো না।

সাঈদ একটু মুচকি হাসি দিয়ে বলে।

–যদি জিসান‌ ভাইয়া আমাদের এই সর্ম্পকটা না মেনে নেয়।

–ভাইয়া আমাকে ভীষণ ভালোবাসে তাই আমার যাতে কষ্ট হবে তা ভাইয়া কোনৌ দিন ও করবে না ভাইয়ার উপর আমার সর্ম্পূন আস্তা আছে।

–হুম! আমারও ভাইয়ার উপর ভরসা আছে।

–আচ্ছা এবার ঘর যাই চলো।

–আর একটু থাক না আমার পাশে। জানি না এমন মুর্হূত আর কাটাতে পারবো কি না তোর সাথে।

জিসা ভ্রু কুচকে বলে।

–মানে…

–কিছু না….

–তুমি কিছু লুকাছো আমার কাছ থেকে তাই না। কি লুকাছো তাড়াতাড়ি বলো।

সাঈদ ইশার নাক টেনে বলে।

–ধুর বোকা মেয়ে আমি কিছুই লুকাছি না তোর কাছ থেকে।

–সত্যি তো…

–হে রে বাবা তিন সত্যি বললাম এবার বিশ্বাস হলো তো।

–হুম‌…

সাঈদ জিসার কপালে একটা কি’স করে। জিসা সাঈদের কাধে আবারো মাথা রাখে।

____

আর এদিকে ইশা সারা ঘর পায়চারি করছে আর জিসান ইশার এমন কান্ড বসে বসে দেখছে আর ফোন টিপছে। জিসানের খুব হাসি পাচ্ছে ইশার এমন অবস্থা দেখে অনেক কষ্টে হাসিটা দামিয়ে রাখছে। ইশা বিড়বিড়িয়ে উঠে।

–কি প্রমান দিবো আমি যাতে করে ভাইয়া বিশ্বাস করতে পারে যে আমি ভাইয়াকে ভালোবাসি। ধুর ছাই মাথাতে কিছুই তো আসছে না। আমার মাথায় সত্যি গোবর পোড়া।

হঠাৎ করেই ইশা চিৎকার করে বলে।

–উপায় পেয়েছি।

জিসান ইশার কথা শুনে ভয় পেয়ে যায়। হঠাৎ করেই ইশা জোরে কথা বলতে জিসান একটু ভয় পেয়ে যায়।

–কি উপায় পেয়েছিস?

–তোমার ফোনটা দাও তো।

–কেন???

–আরে দিতে বলছি দাও না। তোমার ফোনটা তো আর খেয়ে ফেলবো না আমি।

ইশা জিসানের হাত থেকে নিজেই ফোনটা নিয়ে নেয়।

–আরে এভাবে ফোন নিলি কেন?

–দরকার আছে তাই।

জিসান উঠে ইশার পাশে গিয়ে যা দেখে তাতে জিসানের আর হাসি দামিয়ে রাখতে পারলো না। ইশা জিসানের এমন হাসি দেখে কিছুটা অবাক হয় বলে।

–কি হলো এভাবে হাসচ্ছো কেন তুমি?

জিসান নিজের হাসি খুব কষ্টে থামিয়ে বলে।

–ইশা… তুই কি গুগুলে সার্চ দিয়ে জানবি নাকি যে কিভাবে ভালোবাসা প্রমান করা যায়।

ইশা বোকা বোকা চাওনি দিয়ে বলে।

–হুম কেন কোনো প্রবলেম আছে নাকি! গুগুলে তো সব কিছু জানা যায় তাই এটা জানলে সমস্যাটা কোথায়?

–বোকা মেয়ে ভালোবাসা কি করে প্রমান করতে হয় এটা নিজের অন্তর থেকে ভাব। নিজের চোখ বন্ধ করে অনুভব কর আর ভাব। গুগুলে সার্চ দেওয়ার কোনো দরকার নাই বুঝলি।

–তাই।

–হুম… ট্রাই করে দেখ তোর চোখের সামনে কি আসে?

ইশা নিজের চোখ বন্ধ করতেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে ওদের কিছু রোমান্টিক মুর্হূত। ইশা নিজের চোখ তাড়াতাড়ি করে মেলে তাকায়। জিসান নিজের দু ভ্রু নাচিয়ে বলে।

–তোর দ্বারা হবে না বুঝলি। যা গিয়ে শুয়ে পড় অনেক রাত হয়েছে।

জিসান ইশার কাছ থেকে নিজের ফোনটা নিয়ে নেয় আর ইশার সামনে থেকে চলে যেতে নিলে ইশা জিসানের হাত খপ করে ধরে ফেলে। জিসান ফিরে তাকাতেই ইশা জিসানের ঠোঁটে নিজের ঠোঁট বিলিয়ে দেয়। হঠাৎ করেই এমন একটা কান্ড হওয়াতে জিসান পুরাই শকড। ইশা লজ্জা মাখা মুখ নিয়ে জিসানের কাছ থেকে সরে আসে। জিসান তো‌ ভাবতেই পারে নি‌ ইশা তার সাথে এমন কিছু একটা করবে। জিসান হা করে ইশার দিকে তাকিয়ে আছে চোখের পালক না ফেলে। ইশা জিসানের পায়ের উপর দাঁড়িয়ে‌ উচু হয়ে জিসানের কানের কাছে নিজের মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বলে।

–l love you মিস্টার জিসান চৌধুরী l love you so much আর আমার দ্বারা হবে বুঝতে পারলে তুমি।

জিসান ইশার মুখে এই‌কথাটা শুনার সাথে সাথে নিজের দু চোখের পাতা বন্ধ করে ফেলে। ইশা জিসানের কাছ থেকে সরে আসতে চাইলে জিসান ইশাকে আসতে দেয় না। জিসান ইশাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। জিসানের দু চোখ বেয়ে দু ফোটা পানি গড়িয়ে পড়ে। সেটা হয়তো জিসানের খুশির কান্না। এতো দিন পর নিজের ভালোবাসার মানুষটার মুখে এই‌কথাটা শুনেছে তাতে যেন জিসান পৃথিবীর সব সুখ পেয়ে গেছে। ইশাও জিসানকে জড়িয়ে ধরে।

হঠাৎ করেই‌ জিসান ইশাকে কোলে তুলে নেয়। ইশা জিসানের গলা জড়িয়ে ধরে ভয়ে। জিসান ইশাকে নিয়ে খাটের উপর বসায়। ইশা তো লজ্জায় তাকতে পর্যন্ত পারছে না জিসানের দিকে। জিসান গভীর স্বরে বলে।

–একটা জিনিস চাইবো তোর কাছে দিবি আমাকে।

ইশা নিচের দিকে তাকিয়ে বলে।

–হুম…

–তোকে আজকে আমি নিজের করে পেতে চাই। তোর মাঝে আজকে আমি ডুবতে চাই ভালোবাসার সাগরে। সেই অধিকারটা কি দিবি তুই আমাকে। আমি যে আর পারছি তোর কাছ থেকে দুরে সরে থাকতে। নিজেকে এই‌ এত গুলো বছর অনেক কষ্টে কন্ট্রোল করছি। যদি তুই জানতিস আমি তোকে আপন করে পেতে চাই তাহলে তুই আমার কাছ থেকে একশ হাত দুরে থাকতি। কিন্তু আমি কখন নিজেকে দুর্বল করে নি। কিন্তু আমি আজকে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারছি না ইশু। তোর এই রুপ দেখে যে আমি পাগল হয়ে যাই।

জিসান ইশার দিকে তাকিয়ে দেখে ইশা লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে। জিসান ইশার কাছ থেকে উঠে চলে যেতে চাইলে ইশা জিসানের হাতটা ধরে ফেলে।

–কোথায় যাচ্ছো আমাকে ফেলে?

জিসান ইশার কপালে একটা কি’স করে। ইশার‌ নিজের দু চোখের পাতা বন্ধ করে ফেলে। ইশার‌ বুকের ভেতরে মনে হচ্ছে যেন কেউ‌ হাতুরি দিয়ে পিটাচ্ছে। জিসান আস্তে আস্তে ইশার গহনা গুলো খুলে ফেলে। জিসানের ছোঁয়াতে ইশার সারা শরীর কেপে উঠছে। জিসান ইশাকে শুয়েই দেয় বিছানাতে। ইশা লজ্জায় নিজের চোখ বন্ধ করে আছে। জিসান ইশার দুচোখের পাতায় কি’স করে। জিসানের চোখ যায় ইশার গোলপি ঠোঁটের দিকে জিসান ইশার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট বিলিয়ে দেয়। জিসান ইশার হাতের আঙ্গুলে মাঝে নিজের আঙ্গুল‌ ডুকিয়ে দেয়। একে একে করে সবে আবরণ সরে যাচ্ছে দুজনের মাঝ থেকে। রাত যতই‌ বাড়ছে তত একে ওপরকে নিজের করে নিচ্ছে। আজকে ইশা আর জিসানের ভালোবাসা পরিপূর্ণ হলো। ইশার‌ দুচোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে। এই‌ চোখের পানিটা হয়তো ইশার সুখের পানি। আজকে থেকে শুরু হলো জিসান আর ইশার নতুন অধ্যায়।

#চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here