#তুই_শুধু_আমার 💕
#Nusrat_Jahan_Bristy
#Part_21( গল্পের নতুন মোড়)
বাড়ির সবাই জিসানের দিকে অদ্ভুদ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। ইশা সিড়ির এক সাইডে দাঁড়িয়ে আছে। চোখ দুটো লাল হয়ে আছে দু’হাত কচলাচ্ছে কখন থেকে। ইশা জিসানের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে কিন্তু জিসান এক বার ও ইশার দিকে তাকায় নি। জিহান চৌধুরী রাগে বলতে শুরু করেন।
–এসব কি জিসান???
–কিসব??
–কিসব মানে তুই কি কিছু বুঝতে পারছিস না নাকি বুঝতে চাইছিস না কোনটা? হঠাৎ করে তুই রুহিকে এ বাড়িতে নিয়ে আসলি কেন? এক বারও কি ইশার কথাটা ভাবলি না। ওর মনে কি হতে পারে?
সালিহা বেগম বলার পরপরেই জিহান চৌধুরী বলেন।
–তুমি যা খুশি তাই করতে পারো না জিসান এটা কোনো সিনেমা না এটা বাস্তব। সবসময় নিজের ইচ্ছা মতো চলতে পারো না তুমি আমরা একটা সমাজে বাস করি। পাঁচ জনের সাথে চলাফেরা করি আর তুমি নিজের ইচ্ছাতে ইশাকে বিয়ে করেছো আমরা কেউ তোমাকে জোর করে নি। আর এখন তুমি হঠাৎ করেই রুহিকে এই বাড়িতে এনে বলো ও এই বাড়িতে থাকবে কেন ?
জিসান কিচ্ছু বলছে না দেখে সালিহা বেগম রেগে বলেন।
–কি হলো জিসান আমরা তোকে কিছু জিঙ্গেস করছি তো।
–ভাইয়া প্লিজ কিছু তো বলো।
জিসা অসহায় মুখ করে বলে।
–আমি তোমাদের কারো কাছে কোনো কৌফত দিতে বাধ্য নই। আমার যা করতে মন চেয়েছে তাই করেছি। তাই প্লিজ কেউ আমার কাছে কোনো কৌফত চাইবে না আমি এটাই আশা করবো।
ছেলের এমন কথা শুনে সালিহা বেগম বলেন।
–তার মানে তুই রুহিকে এই বাড়িতে রাখতে চাইছিস তাই তো।
–হে রুহি আজকে থেকে এই বাড়িতেই থাকবে।
–বাহ খুব ভালো বললি তুই জিসান তোকে আমার সন্তান ভাবতেও ঘৃণা হচ্ছে। যে মেয়েকে তুই রিজেক্ট করে ইশাকে বিয়ে করলি আজকে তাকে তুই এই বাড়িতে এনে রাখতে চাইছিস।
–প্লিজ মা আমি এই বিষয়ে একটা কথাও শুনতে চাই না।
–ঠিক আছে! আমরা তোকে কেউ কিছু বলবো না। তবে আমার ইশার যদি কোনো ক্ষতি হয় জিসান তবে আমার থেকে কেউ কিন্তু খারাপ হবে না বলে দিলাম।
সালিহা বেগম এই কথাটা বলেই চলে যান। জিসান ইশার দিকে তাকায়। ইশা জিসানের দিক থেকে চোখ সরিয়ে নেয় আর উপরে চলে যায় দৌঁড়ে। ইশার সারা পৃথিবী ঘুরছে জিসানের এই কথাটা শুনে। খুব কষ্টে ইশা ঘরে যায় পা দুটো অবশ হয়ে গেছে। ইশা ঘরে ঢুকেই ধপ করে ফ্লোরে বসে পড়ে ডুকরে ডুকরে কান্না করতে থাকে। ইশা ভাবতেও পারছে না জিসান তাকে এভাবে ঠকাবে। ইশার ইচ্ছে করছে চিৎকার করে কান্না করতে কিন্তু এটা যে ইশা করতে পারবে না। একটু পরেই জিসান আসে ঘরে।
জিসান ঘরে এসে ইশার এমন অবস্থা দেখে জিসানের বুকের ভেতরটা যেন জ্বলে পোড়ে যাচ্ছে। কিন্তু জিসান যে নিরুপায় তার হাত পা যে এই মুহূর্তে বাঁধা। জিসানের আসার শব্দ শুনতে পেয়ে ইশা উঠে দাঁড়ায়। জিসান বুঝতে পারছে ইশার মনের ভেতরে কি চলছে তাই কিছু না বলে চলে যেতে চাইলে ইশা জিসানের হাত ধরে বলে।
–এসবের মানে কি?
–কিসব??
–কিসব মানে তুমি আমার সাথে মজা করছো! কোন তুমি আমার সাথে এমন করলে কি দোষ করেছি আমি?
–তুই কোনো দোষ করিস নি যা দোষ করেছি সব আমি করেছি।
ইশা রাগে জিসানের কলার চেপে ধরে।
–কি বলতে চাইছো তুমি, আমাকে তুমি বিয়ে করে খুব বড় ভুল করেছো। তাহলে কেন তুমি আমাকে বিয়ে করলে? আমি তো তোমাকে বিয়ে করতে চাই নি তুমি আমাকে বাধ্য করেছো তোমাকে বিয়ে করতে।
–ইশু তুই প্লিজ শান্ত হ।
–কি শান্ত হবো আমি! প্রথমে নিজের বাবা মাকে হারালাম তার পর যাকে ভালোবাসলাম সে আমাকে ঠকালো। আর এখন যাকে আমি নিজের মন প্রান সবটুকু উজার করে ভালোবাসলাম সেও আমাকে ঠাকালো। কেন তুমি আমাকে এভাবে ঠাকালে কেন?
–ইশা আমার কলার ছাড় বলছি তুই ভুলে যাচ্ছিস তুই কার কলার ধরেছিস।
হঠাৎ করেই রেগে গিয়ে কথাটা বলে জিসান। ইশা একটা তাচ্ছিল্যপূর্ণ হাসি দেয়।
–সত্যি আমি ভুলে গেছি আমি কার কলার ধরেছি। কি বলতো আমি তোমাকে একটু বেশি ভালোবসে ফেলেছি যার প্রতিদান তুমি আমাকে আজকে এভাবে দিলে।
–ইশা আমি তোকে শেষ বারের মতো বলছি আমার কলার ছাড়।
জিসান ইশার হাত থেকে নিজের কলার ছাড়িয়ে নিয়ে ঘর থেকে চলে যায়। ইশা জিসানের যাওয়ার দিকে অসহায় ভাবে তাকিয়ে থাকে। ইশা আবারো হাটু ভেঙ্গে ফ্লোরে বসে পড়ে। ইশার খুব জোরে গলা ফাটিয়ে কান্না করতে ইচ্ছা করছে কিন্তু পারছে না যার কারণে ইশার বুকটা ফেটে যাচ্ছে।
অন্য দিকে কেউ ইশার এমন অবস্থা দেখে চোখে মুখে হাসির রেখা ফুটে। সেটা আর কেউ না সে হলো রুহি। রুহি এতক্ষণ দরজার আড়াল থেকে সব কিছু দেখছিল। জিসান রুহিকে দেখার সাথে সাথে ইশার সাথে এমন রুড বিহেভ করলো।
ইশা নিজে নিজেই বলতে শুরু করলো।
–আমার সাথেই কেন এমন করো তুমি খোদা কেন? মা বাবার সাথে কেন তুমি আমাকে ওপরে নিয়ে গেলে না কেন? আত্মহত্যা করা যে মহা পাপ না হলে আমি নিজেকে নিজেই শেষ করে দিতাম। খুব মনে পড়ছে মা বাবা তোমাদের আজকে খুব। তোমরা বেঁচে থাকলে হয়তো আমার জীবনটা এমন হতো না হয়তো আরও সুন্দর হতো।
ইশা কান্না করতে করতে এক পর্যায় ফ্লোরেই ঘুমিয়ে পড়ে।
_____
ছাদে বসে আছে জিসান একের পর এক সিগারেট খাচ্ছে। জিসানের বুকের ভেতরটা জ্বলে যাচ্ছে সেটা হয়তো সিগারেট খাওয়ার জন্য না ইশাকে এভাবে কষ্ট দেওয়ার জন্য।
–সরি জান আমি তলকে কষ্ট দিতে চাই নি কিন্তু আমার যে কিছু করার নেই। তোকে বাচানোর জন্য যে আমাকে এই কাজটা করতে হবেই। যখন তুই জানতে পারবি আমি কেন এসব করছি তখন তুই আমাকে আর ভুল বুঝবি না। খুব তাড়াতাড়ি তোকে এই কষ্ট থেকে আমি মুক্তি দিবো খুব তাড়াতাড়ি তার জন্য যে আমার কিছুটা সময় দরকার।
জিসান ছাদ থেকে ঘরে এসে দেখে ইশা গুটিসুটি হয়ে শুয়ে আছে ফ্লোরে। জিসান ইশাকে কোলে তুলে বিছানাতে শুয়েই দেয়। ইশার গায়ে চাদর টেনে দিয়ে ইশার কপালে একটা কিস করে বেলকনিতে চলে যায় আর সাঈদকে কল করে।
_______
সকালে ইশা ঘুম থেকে উঠে দেখে বিছানাতে শুয়ে আছে। নিজ মনে ইশা বলে উঠে।
–রাতে তো আমি ফ্লোরে শুয়ে ছিলাম বিছানাতে আনলো কে? ভাইয়া হবে নিশ্চয় কিন্তু ভাইয়া কোথায়?
ইশা ঘরের সব জায়গাতে খুজে কিন্তু জিসানকে পায় না। তাই ইশা ফ্রেশ হয়ে নিচে নেমে যা দেখে তাতে ইশার নিজের চোখেকে বিশ্বাস করতে পারছে না। রুহি আর জিসান একে ওপরের হাত ধরে নাস্তা করছে। রুহি জিসানকে খাইয়ে দিচ্ছে আর পাশে জিসা আর সালিহা বেগম দাঁড়িয়ে রাগী চোখে জিসান আর রুহির এসব কান্ড দেখছে। জিহান চৌধুরী রাগে ডাইনিং টেবিলে আসে নি নাস্তা করতে। রুহি ইশাকে দেখে বলতে থাকে।
-আরে ইশা তুমি দূরে দাঁড়িয়ে আছো কেন??
সবাই ইশার দিকে ফিরে তাকায়। জিসান ইশার দিকে এক নজর তাকিয়ে নিজের চোখ ফিরিয়ে নেয়। জিসান যে ইশার এমন ফ্যাকাশ চেহারাটা দেখতে পারছে না। বুকের ভেতরটা যে জিসানের মোচর দিয়ে উঠছে ইশার এমন চেহারা দেখে। সালিহা বেগম ইশাকে দেখে বলে।
–ইশা মা নাস্তা করতে আয় কালকে রাতেও ডিনার করিস নি আয় নাস্তা কর এসে।
–নাহ মামনি আমি ঠিক আছি। আমি একটু পরে নাস্তা করবো তোমারা সবাই নাস্তা করে নাও।
ইশা চলে যেতে নিলে চাইলে রুহির কথায় থেমে যায়।
–আরে ইশা কই যাও আমাদের সাথে নাস্তা করো এসে তাহলে খুব মজা…
–তোমরা মজা করে নাস্তা করো! তোমাদের কারো চিন্তা করতে হবে না আমার জন্য।
ইশার গলা আটকে আসছে কথা বলতে তারপরও খুব কষ্টে এই কথাটা বলে চলে যায় ঘরে। ইশা ঘরের এক কোনে বসে হাটু ভাজ করে কান্না করতে থাকে। এর একটু পরেই রুহি আসে ঘরে আর এসেই বলা শুরু করে।
–আরে ইশা তুমি এখানে বসে কান্না করছো কেন? আমাদের…. সাথে নাস্তা না করেই চলে আসলে এটা কিন্তু ঠিক না।
–তুমি এই ঘরে?
ইশা বসা থেকে উঠে দাঁড়ায়। রুহি সারা ঘর পায়চারি করতে করেত বলে।
–এই ঘরটা তো আমার হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভাগ্যক্রমে তোমার হয়ে গেল ঘরটা কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে এই ঘরটা আমার।
–মানে??
–মানেটা বুঝতে পারছো না তুমি তাই না ইশা। আসলে কি বলতো জিসান আমাকে ভালোবাসে বলেছি না আমি জিসানকে আমার করেই ছাড়বো। আর কি বলতো জিসান হলো গিয়ে বড়লোকের ছেলে তোমার মতো একটা থার্ড ক্লাসের মেয়েকে কি করে ও ভালোবাসবে ও আমাকে ভালোবাসে। আমার কি নেই বলো তো বাড়ি গাড়ি টাকা পয়সা রুপ সব কিছু আছে কিন্তু তোমার কাছে কি আছে বলো তো। আসলে তুমি ছিলে জিসানের কাছে সামান্য মোহ মাত্র এখন সেই মোহ কেটে গেছে জিসানের তাই তো ও আমার কাছে চলে এসেছে।
–আমি ভাইয়ার কাছে শুধু মাত্র মোহ ছিলাম।
আবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে কথাটা ইশা।
–হে তা নয় তো কি? দেখো আমার কাছে সব কিছু থাকতেও ও আমাকে প্রথমে রিজেক্ট করে দিয়ে তোমাকে বিয়ে করলো আর যখন বুঝতে পারলো ওর কাছে তুমি একটা মোহ ছিলে তখনেই ও আমার কাছে এসে নিজের ভুলটা স্বীকার করে নিলো। আর জিসান হলো বড়লোকের ছেলে এমন অনেক মেয়ের প্রতি হয়তো ওর মোহ জন্মাতে পারে কিংবা থাকতে পারে কিন্তু আমি হলাম গিয়ে ওর আসল ভালোবাসা।
–চুপ করো তুমি একদম চুপ করো আমি এসব কথা শুনতে চাই না তোমার কাছ থেকে।
-কি করবে বলো? যেটা সত্যি সেটাই বললাম তোমাকে। ঠিক আছে আমি এখন আসি সন্ধ্যায় আবার একটা পার্টি রেখেছে জিসান।
–পার্টি!! কিসের পার্টি?
–ও তুমি জানো না। আসলে আমি নতুন করে ওর জীবনে এসেছি তো তাই একটা ছোট্ট পার্টি রেখেছে। আচ্ছা আমি এখন আসি। তুমি কিন্তু আসবে পার্টিতে কেমন।
রুহি ঘর থেকে চলে যায়। ইশা নিজের চোখের পানি মুছে বলে।
–আমি নিশ্চয়ই যাবো আজকে ওই পার্টিতে খুব সুন্দর করে সেজে আর আজকের এই সাজটাই হবে আমার জীবনের শেষ সাজ। আমাকে তুমি কষ্ট দিতে চাইছো তাই তো ভাইয়া কিন্তু আমি আর কষ্ট পাবো না।
–ভাবি।
–জিসা তুমি এসো ভেতরে এসো।
–ভাবি তুমি জানো বাইরে কি হচ্ছে? সারা বাড়ি সুন্দর করে সাজানো হচ্ছে। ওই মেয়েটা এই বাড়িতে আসার কারনে।
–আমি জানি সব জিসা।
–তারপরও তুমি কিছু বলবে না ভাইয়াকে।
–নাহ!
–কেন? চলো আমরা চলে যাই এই বাড়ি থেকে আমার এই বজ্জাত মেয়ের এসব ন্যাকামো ভালো লাগছে না।
–নাহ জিসা আমরা কোথাও যাবো আমরা এই পার্টিতে এটেন্ড করবো।
–কি বলছো কি তুমি? যা বলছো ভেবে বলছো তো।
–হে ভেবে বলছি! আমি যাবো আর আমার সাথে তুমিও যাবে।
–তুমি কি পাগল হয়ে গেছো ভাবি।
–প্লিজ জিসা আমার এই শেষ অনুরোধ টুকু রাখো প্লিজ।
–কিন্তু।
–প্লিজ জিসা।
–ঠিক আছে যাবো আমি।
______
সন্ধ্যায় চৌধুরী বাড়িতে আলোতে আলোতে সারা বাড়ি আলোকিত হয়ে আছে। চারিদিকে নানা রকমের ফুল। জিসান সারাটা দিন ইশাকে দেখে নাই। জিসানের খুব চিন্তা হচ্ছে ইশার জন্য। জিসান ইশাকে খুজতে যেতে চাইলে জিসানের হাতটা কেউ ধরে ফেলে। জিসান পিছনে তাকিয়ে দেখে রুহি।
–কোথায় যাচ্ছো তুমি? তুমি কিন্তু ভুলে যাচ্ছো আমাকে তুমি কি কথা দিয়েছিলে আর আজকে তুমি আমাদের বিয়ের কথা সবার সামনে বলবে সেটা তোমার মনে আছে তো। নিশ্চয়ই মনে আছে তোমার তাই চুপচাপ এখানে থাকো এক পাও এগোবে না তুমি।
–তুমি মস্ত বড়ো ভুল করছো রুহি। এটার মাশুল তোমাকে দিতে হবে কিন্তু আজকে না হয় কাল।
–সেটা নিয়ে না হয় তোমাকে চিন্তা করতে হবে না তুমি বরং এটা ভাবো কি করে তোমার ইশুকে নিজের কাছে ধরে রাখতে পারো।
জিসানের ইচ্ছা করছে এই মুহূর্তে রুহিকে মাটিতে পুতে ফেলতে।
জিসান চারিদিকে তাকিয়ে দেখে ইশা কোথাও নেই। মনে মনে বলে উঠে।
–কোথায় গেলি তুই ইশু প্লিজ একবার দেখা দে।
হঠাৎ করে জিসান একটা মেয়েকে দেখতে পায় যার পড়ানে একটা লাল শাড়ি চোখে গাঢ় কাজল ঠোঁটে লাল লিপস্টিক মুখে মেকাপ চুল গুলো কার্লি করে রেখেছে। কানের এক সাইডে কাচা লাল গোলাপ গুজে রেখেছে তাতে যেন মেয়েটার সৌন্দর্য বেড়ে গেছে। সবাই মেয়েটার দিকে ডেবডেব করে তাকিয়ে আছে যেটা জিসানের একদম সহ্য করতে পারছে না। জিসান সহ্য করবেই বা কি করে এই মেয়েটা আর কেউ তারেই ইশু। ইশা জিসানের দিকে তাকিয়ে দেখে রুহি জিসানের হাত ধরে আছে। ইশা জিসানের দিকে এক নজর তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নেয়। জিসানের রাগে মেজজটা গরম হয়ে যাচ্ছে। দাঁতে দাঁত চেপে মনেমনে বলে।
–খুব সাজু্ুগুজো করা হচ্ছে না এক বার তোকে হাতের কাছে পাই তারপর তোকে বুঝবো।
ইশা সবার সাথে হেসে কথা বলছে জিসানকে দেখিয়ে দেখিয়ে। জিসান ইশার কাছে যেতে চাইলেও যেতে পারছে না রুহির কারনে। রুহি ইশার এমন রুপ দেখে মনে মনে বলে।
–ব্যাপার কি ইশা এত স্বাভাবিক কি করে আছে কিছুই তো বুঝতে পারছি না।
হঠাৎকরেই রুহি স্টেজে উঠে মাইক নিয়ে বলতে থাকে।
–সবাইকে জানাই স্বাগতম আমাদের এই সুন্দর পার্টিতে।আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন না এই পার্টিটা কিসের জন্য রাখা হয়েছে। ধৈর্য ধরুন সব কিছু জেনে যাবেন তার আগে আপনাদের প্রিয় জিসান একটা গান গাইবে।
–গান আমি……
রুহি : হে জিসান প্লিজ খাও না আমার জন্য প্লিজ গাও।
–গাইবো কিন্তু তোমার জন্য আমার ইশুর জন্য শুধু মাত্র ওর জন্য।
রুহির কানের কাছে গিয়ে বলে কথাটা জিসান। রুহির তো মেজাজটা গরম হয়ে যায় এই কথাটা শুনে। তারপরও কিছু না বলে হাসি হাসি মুখ করে রাখে। জিসান মাইক হাতে নিয়ে স্টেজে উঠে ইশার দিকে তাকিয়ে গান গাইতে শুরু করে।
🎶🎶 Shayad kab hi na keh sakun main tumko…
Kahe bina samjh lo tum shayad…
Shayad mere khayaal mein tum ek din
Milo tum kahi pe gum shayad…
Jo tum na ho rehenge hum nahi…. Jo tum na ho rehenge hum nahi….
Na chahiye kuchh tum se jyaada tum se kam nahi….
JO tum na ho toh hum bhi hum nahi…. Jo tum na ho toh hum bhi hum nahi….
Na chahiya kuchh tum se jyaada tum se kam nahi….
Aakhon KO khaab deja khud hi sawaal karke….
Khud hi jawaab dens teri taraf se…
Bein kaam kaam karna jaana kahi ho chagrin…..
Had bar hi guzarna teri taraf se….
Yeh kasishein toh hangi kam nahi….Yeh kasisihein toh hangi kam nahi…..
Na chahiya kuchh tum se jyaada tum se kam nahi….
Jo tum na ho toh hum bhi hum nahi…. Jo tum na ho toh hum bhi hum nahi….
Na chahiya kuchh tum se jyaada tum se kam nahi….
Jo tum na ho-oooo…….. 🎶🎶
সবটা গান জিসান ইশার দিকে তাকিয়ে গেয়েছে। জিসান গান গেয়ে মাইকটা রেখে সামনে তাকিয়ে দেখে ইশা কোথাও নেই। জিসান তাড়াতাড়ি করে খুজা শুরু করে কিন্তু ইশাকে জিসান কোথাও পায় না। জিসান তাড়াতাড়ি করে ঘরে যায় কিন্তু ঘরেও ইশাকে পায় না। জিসান ঘর থেকে চলে আসতে নিলে টেবিলের উপরে একটা সাদা পেপার দেখে থেমে যায়। জিসান আস্তে আস্তে করে টেবিলের উপর থেকে পেপারটা হাতে নিয়ে দেখে একটা চিঠি যেটা ইশার লিখা চিঠি। জিসান পড়তে শুরু করে……
“প্রিয় জিসান……..
তোমাকে ভাইয়া ডাকলে অনেক রাগ করো তাই জিসান বলেই ডাকলাম। আমি জানি তুমি হয়তো আমাকে বিয়ে করে অনেক বড়ো ভুল করেছো। আমি শুধু তোমরা কাছে মোহ ছিলাম সেটা আমি বুঝতে পেরেছি। আমি চাই না তুমি আমার জন্য নিজের জীবন নষ্ট করো। তাই আমি চলে যাচ্ছি তোমার জীবন থেকে তুমি রুহি আপুকে নিয়ে সুখে থেকো। আমি কোনো দিন তোমাদের দুজনের মাঝে বাঁধা হয়ে দাঁড়াবো না। তোমরা সুখি হও আমি এটাই চাই আর একটা অনুরোধ আমাকে প্লিজ খুজার চেষ্টা করো না। ভালো থেকো গুড বাই।
ইতি তোমার ইশু”
জিসান হাটু ঘেড়ে মাটিতে বসে পড়ে চিৎকার করে বলে।
–ইশুশুশুশু। তুই আমার জীবন থেকে চলে যেতে পারিস না একবার ও ভাবলি না আমি তোকে ছাড়া কি নিয়ে বাচবো। প্লিজ ইশু ফিরে আয় তুই প্লিজ।
#চলবে
ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন…….