#তুই_শুধু_আমার 💕
#Nusrat_Jahan_Bristy
#Part_29(পূর্ণ মিলন পর্ব)
ইশা তাড়াতাড়ি করে বাড়ি থেকে বের হয়ে গাড়ি করে বাগান বাড়িতে যায়। ইশা জানত জিসান আসলে এই বাগান বাড়িতেই আসবে। ইশা আস্তে আস্তে করে গাড়ি থেকে নেমে বাগান বাড়ির ভেতরে ঢুকে। ইশা সদর দরজা ধাক্কা দিতেই দরজা খুলে যায়। ইশা গুটিগুটি পায়ে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে একটা ঘরে ঢুকে। ইশা ঘরে ঢুকে দেখে জিসান বেলকনিতে দাঁড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছে।
–তুই এখানে কেন এসেছিস??
ইশা হঠাৎ জিসানের এমন কথা শুনে অবাক হয়ে বলে।
–তুমি বুঝলে কি করে আমি যে এখানে এসেছি? তুমি তো আমাকে দেখো নি।
–আমি বুঝতে পারি। তোর প্রতিটা নিঃশ্বাসের শব্দ আমি অনুভব করতে পারি। তুই যখন আমার আশেপাশে থাকিস তখন বুকের মাঝে একটা কম্পন কাজ করে। তোর প্রতিটি পায়ের ধ্বনি আমি শুনতে পাই। তোর উপস্থিত আমাকে তখন জানান দেয় তুই আমার আশেপাশে আছিস। তাই তোকে দেখার কোনো প্রয়োজন হয় না আমার। এবার বল এখানে কেন এসেছিস?
ইশা দৌঁড়ে গিয়ে জিসানকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে। এভাবে হঠাৎ করে জড়িয়ে ধরাতে জিসান দু কদম সামনের দিকে এগিয়ে যায়। জিসান স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ডান হাতে দু আঙ্গুলের মাঝে অর্ধেক জ্বলন্ত সিগারেট নিয়ে। ইশার চোখের পানি জিসান স্পষ্ট অনুভব করছে। কারণ জিসানের শার্টটা ভিজে গেছে ইশার চোখের পানি দিয়ে। ইশা ভাঙ্গা গলায় বলে।
–আই এম সরি জিসান। আই এম রিয়েলি সরি। আমি সত্যি বুঝতে পারি নি আমি তোমাকে এতটা কষ্ট দিয়ে ফেলবো প্লিজ আমাকে ক্ষমা করে দাও এবারের মতো। আমি যে আর পারছি না এতো কষ্ট সহ্য করতে।
জিসান ভীষণ অবাক হয় ইশার মুখে নিজের নামটা শুনে। জিসান নিজেকে অনেক শক্ত রাখার চেষ্টা করেছে ইশার সামনে কিন্তু জিসান যে ইশার সামনে নিজেকে শক্ত রাখতে পারে না। ইশার স্পর্শ পেয়ে যে জিসান নিজেকে হারিয়ে ফেলছে। এতোবছর পর ভালোবাসার মানুষের স্পর্শ পেয়েছে জিসান। তাই নিজেকে জিসানের কাছে সামলানোটা কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। জিসান হাত থেকে সিগারেটা ফেলে নিজের বুকে রাখা ইশার হাতটা শক্ত করে আঁকড়ে ধরে। ইশা আবারো বলা শুরু করে।
–আমার ভুল হয়ে গেছে। আমি আর কোনো দিন তোমাকে ছেড়ে যাবো না।
জিসান ইশার দিকে ঘুরে তাকায়। ইশা জিসানের দিকে না তাকিয়ে নিচের দিকথ তাকিয়ে আছে তা দেখে জিসান বলে।
–কি হলো? আমার দিকে তাকা??
ইশা জিসানের দিকে না তাকিয়ে নিচেই তাকিয়ে আছে। জিসান ইশার থুতনি ধরে মুখটা উচু করে। জিসান তাকিয়ে দেখে ইশা কান্না করে বন্যা বয়েই দিয়েছে চোখে। জিসান ইশার চোখের কোণে জমে থাকা পানিটা নিজের বুড়ো আঙ্গুল দ্বারা মুছে দিয়ে ঠোঁট ছুয়ে দেয় নিজের ইশার অশ্রুসিক্ত নয়নে। ইশা জিসানের এমন কান্ডে একদম প্রস্তুত ছিল না। ইশার বুকের ভেতরে মনে হচ্ছে যেন কেউ হাতুরি পিটাছে। জিসান সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বলে।
–একদম কান্না করবি না। তুই তো জানিস তোর চোখের পানি আমি একদম সহ্য করতে পারি না। তারপরেও তুই আমাকে জ্বালানোর জন্য এমনটা করিস। আচ্ছা আমাকে জ্বালিয়ে তুই কি শান্তি পাস বল তো একটু শুনি।
ইশা ধপ করে জিসানকে জড়িয়ে ধরে। জিসানের বুকে মাথা রেখে ইশা জোরে একটা নিঃশ্বাস ফেলে। এতো বছর পর যে ইশা জিসানের বুকে মাথা রেখেছে। ইশার খুব ইচ্ছা করছে জিসানের বুকে এমন ভাবেই সারা জীবনটা কাটিয়ে দিতে। ইশা দু চোখ বন্ধ করে জিসানের হৃদপিণ্ডের আওয়াজ শুনছে। জিসান মুচকি হেসে ইশাকে জড়িয়ে ধরে নিজের আরও কাছে টেনে নেয়।
কিন্তু জিসান হঠাৎ করেই ইশাকে কোলে তুলে নেয়। ইশা ভয় পেয়ে যায় হঠাৎ করে কোলে তুলে নেওয়ার জন্য।
–কি করছো কি তুমি? আমাকে নিচে নামাও?
জিসান ইশাকে নিয়ে বিছানাতে বসায় আর ইশার দিকে এক নজরে তাকিয়ে থাকে। ইশা জিসানের চাওনি দেখে বলে।
–কি হয়েছে? এভাবে তাকিয়ে আছো কেন?
জিসান ইশার গোলাপি ঠোঁটে উপরে তর্জনী রেখে বলে।
–শিসসসসস! একটাও কথা বলবিনা তোকে কত বছর ধরে একটু কাছে পায় নি বলত। আজকে তো আর আমাকে বাধা দিতে পারিস না তুই।
ইশা বুঝতে পেরে যায় জিসান কি চায়? ইশা জিসানের এমন নেশা ভরা চাওনি দেখে লজ্জায় লাল হয়ে যায়। জিসানের যে খুব ভালো লাগছে ইশার এমন লজ্জা মাখা মুখ দেখে। জিসান ইশার গালে হাত রেখে গাল স্লাইড করছে। জিসানের ছোঁয়াতে ইশা বার বার কেঁপে উঠছে। ইশার গাল ছেড়ে এবার জিসান ইশার ঠোঁটে নিজের বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে স্লাইড করে। ইশা নিজের চোখ বন্ধ করে জিসানের প্রত্যেকটা ছোঁয়া অনুভব করছে। জিসান ইশাকে বিছানাতে শুয়েই দেয় আর নিজেও ইশার উপরে শুয়ে পড়ে। জিসান ইশার কপালে একটা ডিপ কিস করে, ইশার গলায় আর মুখে চুমোতে চুমোতে ভরিয়ে দিছে জিসান। জিসান ইশার গোলাপি ঠোঁট জোড়া নিজের ঠোঁটের সাথে বিলিয়ে দেয়। ইশা চাদর কামছে ধরে। ইশার চোখ বেয়ে দু ফোটা নোনা জল গড়িয়ে পড়ে। এই দু ফোটা নোনা জল যে ইশার আনন্দের অশ্রু। জিসান ইশার গলায় একটা কামড় দিতে ইশা আর্তনাত করে উঠে।
–আহহহ!
–সরি সরি জান আর হবে আদর করে দিছি।
জিসান যে জায়গাতে কামড় দিয়েছে সেই জায়গা জিসান একটা কিস করে। জিসান আর ইশার মাঝে আস্তে আস্তে করে সব আবরণ সরে যায়। জিসান আবারো আজকে ইশাকে নিয়ে যাবে এক সুখের রাজ্যে।
_____
সাদা চাদরের নিচে দুটো নগ্ন দেহ একে ওপরকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে আছে। ইশা চোখ বন্ধ করে জিসানের উনমুক্ত বুকে শুয়ে আছে। জিসান নরম গলায় ইশাকে ডাক দেয়।
–জান।
–হুম।
–ঘুমিয়ে গেছিস?
–নাহ! আচ্ছা একটা কথা বলবো!
–কিহ?
–রুহি আপু আর রাহুল কোথায়?
–ওদের কথা জেনে তোর লাভ নেই।
ইশা অভিমানের স্বরে বলে।
–তুমি আমাকে বলতে চাইছো না তাই তো ঠিক আছে বলতে হবে না তোমাকে।
–আরে জান রাগ করিস কেন? বলছি তো আমি, রাহুল মা’রা গেছে আর রুহি জেলে।
–কি বলছো কি তুমি রাহুল মারা গেছে কিভাবে?
–যখন রুহি আমাদের বাড়ি থেকে চলে যায়। তখন চারদিন পর জানতে পারি রাহুল মা’রা গেছে আর রাহুলকে নাকি মে’রে’ছে রুহি।
–কি বলছো কি তুমি এসব?
–হে রাহুল মারা যাওয়ার আগে নিজে ও পুলিশের কাছে ফোন করে বলে ওকে নাকি রুহি মা’রা’র চেষ্টা করেছে।
–এত কিছু হয়ে গেলো।
–হে ম্যাডাম এত কিছু হয়ে গেছে। এবার উঠুম ফ্রেশ হয়ে বাড়ি যেতে হবে।
–কিন্তু এখানে তো আমার কাপড় নেই।
–সমস্যা নেই এখানে কাপড় আছে তোর।
জিসান আর ইশা একসাথে শাওয়ার নিয়ে বের হয়।
–রেডি জান তুই।
–হুম রেডি চলো।
–চল।
ইশা বের হতে যাবে জিসান সাথে সাথে ডাক দেয়।
–ইশু দাঁড়া।
–কি হলো যাবো না?
জিসান ইশার কাছে গিয়ে শাড়ির আঁচলটা টেনে এনে মাথায় ঘোমটা দিয়ে বলে।
–এবার ঠিক আছে চল।
#চলবে