#ভালোবাসার_ফোড়ন_২
#মিমি_মুসকান
#পর্ব_৪৩ ( #লাভ_বাইট 🌸 )
কুশনের থেকে উঁকি দিয়ে পাশে তাকিয়ে দেখি আহিয়ান হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাওয়ার মতো অবস্থা! আমি ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছি উনার দিকে। উনি খানিকক্ষণ’র জন্য হাসি থামিয়ে আমাকে বলেন,
“কি হলো দেখছো না কেন? দেখো।
“আপনি জানতেন নাহ!
“হ্যাঁ জানতাম তাই তো মানা করেছিলাম। কিন্তু তুমি তো পাকনা ভূতনি নাহ, কথাই শুনতে চাও না। বড়দের কথা না শুনলে এমনি হয় বুঝলে।
“আপনি চ্যানেল চেঞ্জ করুন।
“না করবো না, দেখো তুমি!
“দেখুন আপনি কিন্তু এখন বেশি বেশি করেছেন।
“কবি বলেছেন কম কিছু করতে নেই, যা করবে বেশি করে করবে, সেটা ঝগড়া হোক কিংবা ভালোবাসা!
“কোন কবি বলেছে শুনি।
একটু হালকা কেশে বলে,
“আহিয়ান চৌধুরী!
“ওহ আচ্ছা!
অতঃপর তাকে কুশন দিয়ে মারতে শুরু করি। আজ খুব জ্বালিয়েছেন উনি আমাকে। উনি খাট থেকে নিচে নেমে যান। আমি উনার পিছনে পিছনে কুশন দিয়ে মারতে থাকি। উনিও খাট থেকে একটা কুশন। দুজনেই এবার কুশন দিয়ে মারতে থাকি। মারামারি করতে করতে কুশনের সব তোলা বের হয়ে আমাদের দুজনের শরীরে ছড়িয়ে যায়। উনি আমার চুল থেকে তুলো নিয়ে আবারো আমার মুখে ফু দিয়ে বলে,
“তোমার অস্ত্রের সমাপ্তি ঘটে গেছে।
আমি রেগে নিচ থেকে একগাদা তুলো নিয়ে উনার মুখে ছুঁড়ে মেরে দৌড়ে বেলকনিতে চলে যায়। উনি আসার আগেই বেলকনির দরজা লক করে দেই। দরজা টা কাচের ছিল। বাইরে থেকে কেউ দেখতে পারবে না কিন্তু ভেতর থেকে দেখা যাবে। সম্ভবত উনি কাচের সামনে এসে দাড়িয়ে বলেন,
“দরজা খোল।
“না খুলবো না।
“ভূতনি।
“গোমরামুখো!
“কি বললে..
“শেওড়া গাছের ভূত আপনি।
“তোমাকে যদি পাই না।
“পাবেন না নিশ্চিত থাকুন।
“ঠিক আছে সারারাত এখানেই থাকো।
বলেই উনি বেলকনির পর্দা টেনে দিলেন। আমি কাঁচের ভেতর থেকে দেখার চেষ্টা করলাম উনি কি করেন। উনি হাঁটাচলা করছেন, আমি উনার হাঁটাচলা দেখতে পাচ্ছি। অনেক কষ্ট করে দেখতে হয়েছে। হঠাৎ করেই উনি ঘরের আলো নিভিয়ে দিলেন। যাহ! এখন কি হবে, আমি উনার উপস্থিতি এবার কি করে পাবো। এর মাঝেই মশার কামড়ানি শুরু হতে লাগল। কি মশারে বাবা, ওদের কামড়ে আমি লাফিয়ে উঠছি।
কিছুক্ষণ পর ভাবলাম উনি হয়তো ঘুমিয়ে গেছেন। আমি নিঃশব্দে দরজা খুলে ঘরে ঢুকলাম। খুব সাহস নিয়েই ঢুকলাম। উনি কোথায় আছেন বোঝার চেষ্টা করছি। হঠাৎ করেই কেউ আমাকে টান দিল। আমি জানি এটা উনি ছাড়া কেউ না।
উনি আমাকে দেওয়ালের সাথে মিশিয়ে আমার সামনে দাঁড়িয়ে থাকলেন। সবটাই আমার ধারনা কারন অন্ধকারে আমরা কেউই কাউকে দেখতে পাচ্ছিলাম না। তবে নিঃশ্বাসের শব্দ ঠিক’ই পাচ্ছিলাম। উনি বলে উঠেন,
“এখন বাঁচবে কিভাবে?
“বাঁচব কিভাবে মানে, আমি কি করেছি?
“এতোক্ষণ কি করছিলে?
“কিছুই না।
“কিছু করো নি না। দাঁড়াও!
বলেই আমার চুল টানলেন। আমি আহ বলে চুলে হাত দিলাম কিন্তু উনাকে ধরতে পারলাম না। রাগে আলো জ্বালাতে সুইচবোর্ডের কাছে যেতে নিলাম। কিন্তু এর মাঝেই উনি আবারো আমার মাথার চুল টানলেন। আমি উনাকে ধরতে গিয়েই ফসকে গেলেন। অন্ধকারের মাঝে উনি খেলা খেলছেন আমার সাথে। আমি উনার উপস্থিতি টের না পেলেও উনি বেশ পাচ্ছিলেন। তাই বার বার আমাকে জ্বালাতন করছেন। একবার চিমটি দিচ্ছেন তো একবার আমাকে ঘুরাচ্ছেন। তবে প্রত্যেকবার’ই বেঁচে যাচ্ছিলেন। হাতের নাগালে পাচ্ছিলাম না তাকে।
এক পর্যায়ে আমি উনার শার্ট ধরতে সক্ষম হলাম। আমি খামছি দিয়ে উনার শার্ট ধরে আছি। উনি হাত ছাড়াতে এলে আমি অন্ধকারে’ই উনার হাতে কামড় বসিয়ে দেই। উনি লাফ দিয়ে পেছনে চলে যায়। আমি সাথে সাথে দৌড়ে গিয়ে আলো জ্বালিয়ে দেই। উনি আমাকে ধরার আগেই ঘর থেকে বের হয়ে দৌড় আমি।
দৌড়াতে দৌড়াতে আপুর রুমে চলে আসি। আপু নেই বলে ঘরটা এখন খালি। আমি দ্রুত ঘরের দরজা বন্ধ করে দেই। দরজার পাশে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকি। উনি দরজা নক করে বলে,
“বের হও
“কেন, আপনার মার খেতে।
“আজ তোমাকে পেলে না, ভূতনি আমার হাতে কামড় দিয়ে কি করেছো দেখো।
“যা করেছি বেশ করেছি।
“ভূতনি দরজা খোল, এরপর দেখাচ্ছি তুমি কি করেছ?
“সরি! আজ আর আমি দরজা খুলছি না। আপনি বরং যেভাবে হেঁটে এসেছেন সেইভাবেই হেঁটে চলে যান।
“কি বললে তুমি!
“যা শুনেছেন তাই’ই বলেছি, যান এখন আমি ঘুমাবো। গুড নাইট।
“ভাবছো আজ রাতে এখানে থাকলেই বেঁচে যাবে।
“কচু করবেন আপনি আমার!
বলেই লাইট বন্ধ করে বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম। উনি চলে গেছেন। ইশ বেচারার হাতে খুব জোরেই কামড় দিয়েছি। ব্যাথা পেয়েছে খুব। তো কি ! আমাকে যখন চিমটি মেরেছিলো তখন। আমি বুঝি ব্যাথা পেই নি। বেশ হয়েছে ব্যাথা পেয়েছে হুহ!
.
এই শীতের সকালে ঠান্ডা পানি আমার গায়ে ফেলে ঘুম থেকে জাগানোর ধান্দা করলেন উনি। সফল ও হয়েছেন এটাতে কোন সন্দেহ নেই। এই শীতের সকালে ঠান্ডা পানিতে আমি পুরোই জমে যাচ্ছি আর উনি হেসে যাচ্ছেন। কিন্তু কথা হলো উনি এখনে এলেন কিভাবে!
রুমের দরজা খোলা, দরজায় চাবি ঝুলে আছে। এর মানে এখানকার দরজা চাবি দিয়েও খোলা যায় আর উনিও সেটাই করেছেন। রাতে আসেন নি এসেছেন সকালবেলা আমার আরামের ঘুম হারাম করতে।
উনার হাসি দেখে রেগে গিয়ে আমার উনার মুখের দিকে বালিশ ছুঁড়ে মারি। কিন্তু কাজের কাজ কিছু্ই হয় না। উনি বালিশ টা ধরে ফেলে। আমি রেগে ঘরে এসে ওয়াশরুমে ঢুকে পরি শাওয়ার নেবার জন্য! রেগে চলে তো এলাম কিন্তু কাপড়’ই আনতে মনে ছিল না। আমি দরজা খুলে উঁকি দিয়ে দেখি ঘরে কেউই নেই। তবে ঘরের দরজাটা খোলা। আমি ভাবলাম উনি হয়তো বাইরে চলে গেছেন। তোয়ালে দিয়ে কোনমতে শরীর পেঁচিয়ে রুমে ঢুকেই সোজা ঘরের দরজা বন্ধ করলাম।
অতঃপর সামনে ঘুরতেই উনার গলার স্বর পেলাম। “ভূতনি বের হয়েছ” বলেই উনি এদিকে এলেন। উনাকে দেখা মাত্রই বিছানার কম্বল উঠিয়ে নিজের শরীর পেঁচিয়ে নিলাম। উনি এসেই আমাকে এভাবে দেখে উল্টো ঘুরে নিলেন। আমিও লজ্জায় চোখ বন্ধ করে দেওয়ালের সাথে মিশে গেলাম। উনি কঠিন স্বরেই বলেন,
“গাধার মতো কাজ করা কবে ছাড়বে বলো তো।
“আমি কি জানবো আপনি ঘরে আছেন। তাও তো ঘরে ছিলেন না বেলকনিতে ছিলেন।
“ডাকলেই তো পারতে। আমি তোমাকে আওয়াজ দিলেই তো বুঝতে ঘরে আছি কি নেই।
উনার কথা শুনে নিজের মাথায় নিজেই বাড়ি মারলাম। ইশ কেন যে এই কথাটা আমার মাথায় এলো না। আমি জিহবা কামড় দিয়ে বলি,
“আচ্ছা আপনি একটু এভাবে দাঁড়িয়ে থাকুন আমি কাপড় টা নিয়ে চলে যাচ্ছি।
“কেন পিছনে ঘুরলে কি হবে।
রেগে বলি,
“বেশি করছেন কিন্তু!
উনি হেসে বলেন,
“বাহ দোষ করলে তুমি আর রাগ দেখাচ্ছো আমার উপর।
আমি রেগে আবারো বালিশ ছুঁড়ে মারলাম। জানি না কি করে উনি বুঝতে পারলেন আর একটু সরি দাঁড়ালেন। বালিশ টা উনার গা ঘেসে পাশে পড়ল। উনার হাসির আওয়াজ পাচ্ছি। জয়ের হাসি হাসছেন। আমার তো ইচ্ছে করছিল উনার মাথা টাই ফাটিয়ে দিতে। হেসে হেসে বলেন,
“যাহ এবারও মিস হয়ে গেল।
“আপনি বুঝলেন কি করে!
“তোমাকে এতো দিনে এতো টুকু ঠিক’ই চিনেছি। তুমি কিছু থেকে কিছু হলেই জিনিস ছুড়ে মারো। কাল রাতেও একবার মেরেছ। সকালেও একবার তাই এখন ও মারতে। আর প্রথমবার তো পেয়ারা মেরেছিলে।
“আফসোস হচ্ছে পেয়ারার জায়গায় যদি একটা ডাব থাকতো ভালো হতো তাহলে এই মাথাটা আর আস্ত থাকতো না।
“ভূতনি!
আমি কাপড় নিয়ে ওয়াশরুম এ দৌড়!
.
চেঞ্জ করে এসে দেখি উনি কাপড় নিয়ে বিছানায় বসে আছেন। নিশ্চিত আমি বের হলেই ওয়াশরুম এ ঢুকবেন। আমি উনাকে দেখেই আবারো ওয়াশরুম এ ঢুকতে নিলাম এর আগেই উনি আমার হাতের বাহু ধরে বলেন,
“বোকার মতো কাজ করো না, বাড়িতে আরো ঘর আছে আমি তাদের রুমেও চলে যেতে পারি।
আমি উনার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকালাম। বুঝলো কিভাবে আমি এটাই ভাবছিলাম। হঠাৎ করেই উনি চোখ টিপ দিয়ে বলেন,
“এখানে একটা সমস্যা হতে পারে বুঝলে, ধরো এমন তুমি বাথরুমে ঠিক’ই ঢুকলে কিন্তু আর বের হতে পারলে না। আমি বাইরে থেকে আটকে দিলাম কেমন হবে!
উনাকে কি জব্দ করবো তার আগে উনিই আমার সব প্ল্যানে জল ফেলে দিলেন। অতঃপর আমাকে হালকা ভাবে ধাক্কা দিয়ে বলে,
“সরো তো ভুতনি!
বলেই উনি ওয়াশরুমে ঢুকে গেলেন। আমি বাইরে থেকে কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম। কি এমন করা যায় সেটাই ভাবছিলাম! উনার সাজসজ্জার সামনে এসে দাড়িয়ে ভাবতে থাকি কি করা যায়। তার কোন কাজে জল ফেলা যায়। উনি আজ ব্যায়াম করতে যান নি। কারন আমাদের দুজনের’ই আজ ঘুম থেকে উঠতে উঠতে দেরি হয়ে গেছে।
হঠাৎ করেই আমার চোখ পড়ল উনার পারফিউম এর দিকে। এটা উনার খুব পছন্দের। এটার ঘ্রাণ টাও অনেক সুন্দর আমি সবসময় উনার থেকে এটার ঘ্রাণ পাই। এটা নিয়ে কি ছেড়ছার করবো। উনি কখনো এটা দিতে ভুলেন না তার মানে এটা নিয়ে তিনি খুব সিরিয়াস। আর সিরিয়াস ব্যাপার নিয়েই যা করার করবো। কিন্তু করবোটা কি!
বুদ্ধি করে পারফিউম সবটা ফেলে দিয়ে ঠিক জায়গায় রেখে দিলাম। অতঃপর বিছানার উপর বসে নিজের ফোন দেখতে লাগলাম। একবার মা কে কল করা উচিত। অতঃপর মা কে কল করে কিছুক্ষণ কথা বললাম। কথা শেষ করেই দেখি উনি বের হয়ে এসেছেন। এসেই আয়নার সামনে বসে মাথা মুছছেন। আমি হাঁটতে হাঁটতে আগেই এসে দরজার কাছে দাড়ালাম। দৌড়াতে সুবিধা হবে।
গোমরামুখো টাও আমাকে অনেকক্ষন দাড় করিয়ে লাগল। এতোক্ষণ কি লাগে তৈরি হতে নাকি। একে একে কতোকিছু দিল এতো কিছুর নাম তো আমি মনেও রাখতে পারবো না। অতঃপর পারফিউম’র সময় এলো। উনি এসে নিয়ে নিজের গায়ে দেওয়ার পর শুকতে লাগলেন। মজার ব্যাপার ছিল আমি এটার মাঝে ভিনেগার রেখেছিলাম। এটা ভিনেগার কি না উনি হয়তো এটা বুঝতে পারি নি। কিন্তু এটা বুঝতে পেরেছেন এটা উনার পারফিউম না। উনি এদিক ওদিক তাকিয়ে আমাকে খুঁজতে লাগলেন। আমি ওকে ডেকে বলি,
“আমি এখানে!
উনি ভূতনি বলে আমার দিকে এগিয়ে আসতেই আমি এক দৌড়! উনিও আসছেন আমার পিছু পিছু! সোফার এদিকে উনি ওদিকে আমি। কিছুক্ষণ এভাবে দৌড়াদৌড়ি করার পর বলে,
“কি ছিল এটাতে বলো।
আমি হাসতে হাসতে বলি,
“ভিনেগার!
“আর আমার পারফিউম!
“আপাতত ফুলের টবে আছে!
“ভূতনিই! তুমি জানো ওটা আমার ফ্রেভরিট পারফিউম ছিল।
আমি হাসতে হাসতে বলি,
“তো কি! আগে হয়তো পারফিউম এর ঘ্রাণে মেয়েরা আসতো এবার নাহলে মাছিই আসলো! এতে আর বেশি কি হবে!
উনি কিছু না বলে রেগে উপরে চলে গেলেন। আবারো গোসল করলেন। বেশ হয়েছে আমার এতো সুন্দর ঘুমটা নষ্ট করে দিয়েছে আমি ছেড়ে দেবো নাকি। দেখুক শীতের দিনে দুবার গোসল করতে কেমন লাগে। হি হি হি!
.
দুজনেই একসাথে ব্রেকফাস্ট করতে বসেছি। বাবা খাওয়া শেষ করে উঠে গেছেন। আমরা দু’জনেও একসাথে উঠলাম। আমি উঠে রান্না ঘরে এসে হাত ধুয়ে পেছনে তাকিয়ে দেখি উনি আমার শাড়ির আঁচল দিয়ে গিঁটু দিচ্ছি। আমি এক টান দিয়ে শাড়ির আঁচলটা ধরে বলি,
“কি চাই!
“বাহ বুঝে গেছো, এক কাপ চা দাও!
“দিচ্ছি!
“চা তে যদি কিছু করেছ না তো দেখো কি করি।
“কি করবেন, হুম কি করবেন!
“সেই চা তোমার মাথায় ঢালবো, আবারো ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করবে বুঝতে পারবে।
বলেই উনি চলে গেছেন। আমি মুখ ভেংচি দিয়ে চা বানিয়ে উনাকে দিয়ে উপরে চলে এলাম। কিছুক্ষণ পর আমরা ভার্সিটির জন্য বের হবো। আমি ভেবেই রেখেছি উনাকে আজ নাজেহাল করে ছাড়বো। এখন নাজেহাল কিভাবে করা যাবে। হ্যাঁ উনার গাড়ির চাবি। গাড়ির চাবি লুকিয়ে ফেললে বেশ হবে। কিন্তু গাড়ির চাবি টা কোথায়?
পুরো ঘর খুঁজে ফেললাম গাড়ির চাবি টা পেলাম না। আমি দেখলাম ডেসিন টেবিলে উনার মানিব্যাগ পড়ে আছে। চাবি তো এখানেই থাকতে পারে। দ্রুত মানিব্যাগ টা নিয়ে খুঁজতে লাগলাম। আফসোসের বিষয় হলো মানিব্যাগ টাকা আর কার্ড ছাড়া কিছু ছিল না। উনার মানিব্যাগ আমার হাতে, একটা কথা মনে পড়ছে। একজন আর্দশ স্ত্রী! যে কি না স্বামীর মানিব্যাগ থেকে টাকা সরিয়ে রাখে। কিন্তু আমার মনে হয় আর আর্দশ স্ত্রী হওয়া হবে না। না কখনো উনার মানিব্যাগ থেকে টাকা সরাবো আর না কখনো এটার প্রয়োজন হবে।
কারো আসার শব্দ পেয়ে তাড়াতাড়ি করে মানিব্যাগ টা জায়গায় রেখে বিছানায় বসে পরলাম। উনি এসেছেন! এসেই আমার দিকে তাকিয়ে বলে,
“তৈরি হয়েছ, ভার্সিটি যাবে না।
“আমি তো তৈরিই, কিন্তু সময় তো আপনার লাগে।
“ভূতনি!
আমি মুখ ভেংচি দিয়ে মুখ সরিয়ে নিলাম। উনি তৈরি হচ্ছেন আমি দেখছি। চাবি টা কোথায় রাখে এটা দেখা জরুরি। কিন্তু উনি তৈরি হয়ে নিচে নেমে গেলেন তবুও উনাকে চাবি নিতে দেখলাম না। আমি ভাবছি চাবি টা কোথায় রেখেছে। ভাবতে ভাবতে গাড়ির কাছে এসে দুজনেই দাঁড়ালাম। চাবি তো উনি নিলেন না তাহলে ড্রাইভ করবে কিভাবে?
হুট করেই মনে হলো উনি আবারো আমার শাড়ির আঁচল ধরেছেন। তাকিয়ে দেখি উনি গিট্টু খুলছেন। মনেই তো ছিল না এটা গিট্টু দেওয়া ছিল। আমি খুব মনোযোগ দিয়ে দেখছি। ওমা! এটা কি হলো? উনি তো চাবি আঁচলে গিট্টু দিয়ে রেখেছিল! তার মানে চাবি আমার সাথেই ছিল আর এটা আমি সারাঘর তন্নতন্ন করে খুঁজছিলাম। কপালে হাত দিয়ে আফসোস করতে লাগলাম।
উনি চাবি তো আমার গালে খোঁচা দিয়ে বলেন,
“এভাবে এভাবে তোমাকে বোকা ভুতনি বলে ডাকি।
“আপনি ইচ্ছে করে করলেন।
উনি হাসতে হাসতে গাড়িতে গিয়ে বসলেন। আমি বেকুবের মতো উনার দিকে তাকিয়ে আছি।
#চলবে….