**সিনিয়র গুন্ডি মেয়ের ভালবাসা**
writer : Akash khan
পার্ট : ১১
**তারপর অন্তরাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে চিকিৎসা করে আনা হয়,,আর আমাকে সহ অধরা আর অন্তরাকে প্রিন্সিপ্যাল স্যারের রুমে ডাকা হয়,,,।অন্যদিকে অন্তরার পরিবার খবর পেয়ে কলেজে চলে আসে,,,আর এদিকে প্রিন্সিপ্যাল স্যার নিজে অধরার আব্বুকে কল দিয়ে কলেজে আসতে বলে,,।অধরার আব্বু যেহেতু এখানকার বেশ সুনামধন্য চেয়ারম্যান তাই তার এখানে একটা আলাদা নাম ডাক আছে,,।যদি ছোর খাটো কোন বিষয় হতো তাহলে স্যার অধরার আব্বুকে কখনো ডাকতেন না,,।কিন্তু অধরা অন্তরাকে এমন ভাবে মারছে যে বলার মত না,,।তাই তাকে বাধ্য হয়ে ওনাকে আসতে বলতে হয়,,নাহলে অন্তরার পরিবার নাকি অধরার বিরুদ্ধে মালমা করবে,,,।আর কিছুখন পরেই অধরার আব্বু সহ সবাই গিয়ে প্রিন্সিপ্যাল স্যারের রুমে গিয়ে সবাই এক হয়,,,।তখন প্রিন্সিপ্যাল স্যার অধরাকে জিঙ্গাসা করে কেন অন্তরাকে মারছে।তখন অধরা বলল,,,
অধরা : আমি বার বার নিষেধ করার পরেও আমার কথা অমান্য করে ও শুভ্র কে প্রপোজ করছে তাই ওকে মারছি,,,,(গম্ভীর কন্ঠে বলল,,)
**অধরা এমন ভাবে কথা গুলো বলল যে ওকে দেখে মনেই হয় না,,,অধরা প্রিন্সিপ্যাল স্যার ও তার আব্বুর সামনে দাড়িয়ে কথা বলছে,,,।তখন প্রিন্সিপ্যাল স্যার বলল,,,
প্রিন্সিপ্যাল : আমি কখনো প্রেম ভালবাসাকে সার্পোট করি না,,,তবুও বলছি কাউকে লাগার বা ভালবাসার অধিকার সবার আছে,,,।যে কেউ তার ভালবাসার কথা অন্যকে বলতে পারে,,এটা কোন অন্যায় না,,।কিন্তু তুমি যেটা করছো সেটা অন্যায়,,, করছো,।সারাধণ একটা বিষয় নিয়ে তুমার এভাবে অন্তরাকে মারাটা একদম ঠিক কর নি,,,।তুমার কারণে আজকে তুমার আব্বু কলেজে আসতে হইছে,,।তুমার কাছ থেকে আমরা কেউ এমনটা আসা করি নি অধরা,,। এখন আমি চাচ্ছি তুমি সবার সামনে অন্তরা ও তার পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়ে নাও,,,,,,,
অধরা : স্যার আমি কেন ক্ষমা চাইবো,,,আমি তো কোন ভুল করি নি,,,(সরাসরি বলল)
**অধরার কথা শুনে সবাই অভাক হয়ে যায়,,,।একটা মানুষকে মারতে মারতে আদা মরা করেও কী করে বলে যে সে কোন ভুল করে নি,,,তখন প্রিন্সিপ্যাল স্যার বলল,,,
প্রিন্সিপ্যাল স্যার : অধরা,, তুমি একটা মেয়েকে সবার সামনে বিনা কারণে জখন্য ভাবে মারছো,,তার পরেও এখন তুমি বলছো যে তুমি কোন অন্যায় কর নি,,এটা কিন্তু তুমার সবার সামনে বেয়াদবি করা হচ্ছে,,।আমি চাই তুমি মাফ চেয়ে সমস্যাটা এখানেই সমধান কর নাহলে তুমার বিরুদ্ধে একশন নিতে আমি বাধ্য হবো,,,।কারণ কলেজে নিয়ম সবার জন্য সমান,,, (রাগী কন্ঠে বলল)
অধরা : স্যার আপনি বললেন না,,সবার ভালবাসার অধিকার আছে,,,।তাহলে সবার যদি ভালবাসার অধিকার থাকে তাহলে সবার তার ভালবাসাকে রক্ষা করারও অধিকার আছে,,আর আমি সেটাই করছি,,।কেউ যদি আমার শুভ্রের দিকে চোখ তুলে তাকায় আমি তার চোখ তুলে নিবো,,,ভালবাসার কথা বলবে সেটা অনেক দুরের কথা,,,। আর এর জন্য আমি কারো কাছে মাফ চাইতে পারবো না,,এতে আপনি যা করার করতে পারেন,,,,(কিছুটা রাগী কন্ঠে বলল)
**অধরার কথা শুনে প্রিন্সিপ্যাল স্যার সহ সবাই অভাক হয়ে যায়,,।আর আমি মনে মনে বলতে থাকি আজ অধরার জন্য সারা কলেজ সহ বড় আব্বুর কাছেও ছোট হয়ে গেলাম,,।কারণ এখন অধরার আব্বু মনে করবে,,আমি মনে হয় অধরার সাথে প্রেম করছি,।তখন প্রিন্সিপ্যাল স্যার বলল,,,
প্রিন্সিপাল স্যার : চেয়ারম্যান সাহেব এবার আপনি আপনার মেয়েকে একটু বুঝান,,নাহলে সমস্যা টা আরো বড় হয়ে যাবে,,আর কলেজের নাম খারাপ হবে,,,(শান্ত ভাবে বলল)
**এতখন দরে অধরার আব্বু চুপচাপ সবার কথা শুনছিল,,,।এখন প্রিন্সিপাল স্যারের কথা শুনে অধরার আব্বু বলল,,,,
অধরার আব্বু : আসলে আমার মেয়ে আজ যে অন্যায়টা করছে,,, তার জন্য আমি আপনাদের কাছে খুবই লজ্জিত,,,।আমি আমার মেয়ের হয়ে আপনাদের কাছে ক্ষমা চাইছি,,।দয়া করে আপনারা মাফ করে দেন,,,(নরম ও শান্ত ভাবে কথাটা বলল)
**আসলে অধরার আব্বু চেয়ারম্যান ও ভালো মানুষ হিসাবে সবার কাছে বেশ পরিচিত,,। সবসময় মানুষের জন্য নিজেকে উজার করে দেয়,,।তার এমন ভাবে মাফ চাওয়া দেখে,, অন্তরার পরিবারও খুশি হয়ে সব ভুলে যায়,,,।তখন অধরার আব্বু অন্তরার কাছে গিয়ে বলল,,,
অধরার আব্বু : মামনি আমি তুমার বাবার বয়সী হয়ে তুমার কাছে মাফ চাইছি,,আমার মেয়েকে তুমি মাফ করে দাও,,সে আর কখনো এমন করবে না,,
**অধরার আব্বুর কথা শুনে অন্তরা মাথা নিচু করে চুপ করে থাকে,,।তখন তিনি আবার বললেন,,,,
অধরার আব্বু : শুভ্র আর তুমি কী দুজন দুজনে ভালবাসো,,,,,?(হেসে বলল)
অন্তরা : আমি শুভ্রকে ভালবাসি,,,শুভ্র আমাকে ভালবাসে কী না জানি না,,,,(আসতে করে বলল)
অধরার আব্বু : আচ্ছা,,,,,, তুমাদের বিষয়টা নিয়ে আমি তুমার পরিবারের সাথে কথা বলবো,,,(হেসে বললো)
**অধরার আব্বুর কথা শুনে অন্তরার মুখে যেন চাঁদের হাসি ফুটে ওঠে,,।অন্তরা তখন লজ্জা মিশ্রিত চোখে শুভ্রের দিকে তাকিয়ে,,,বলল,,,
অন্তরা : আক্কেল আপনারা যা ভালো মনে করেন,,,,,,(আস্তে করে বলল)
**এদিকে অধরার আব্বুর কথা শুনে আমার মাথা ৩৬০ ডিগ্রী এংগেলে ঘুরতে থাকে,,।সারাজীবন শুনে আসলাম বিয়ের কথা বাড়িতে হয়,,কিন্তু জীবনে প্রথম দেখলাম বিয়ের কথা কলেজেও হয়,,,তাও আবার নিজের বিয়ের কথা,,। আমি আর চোখে অধরার দিকে তাকিয়ে দেখি অধরার কী অবস্থা,,। আর অধরার দিকে তাকিয়ে আমার ভিতর ভয় লেগে যায়,, কারণ অধরা ওর আব্বুর কথা শুনে রাগে লাল হয়ে গেছে,,।চোখ গুলো আগুনের মত হয়ে গেছে মনে হচ্ছে এখনি চোখ দিয়ে আগুন বেরিয়ে আসবে,,।এখন যদি অধরার সামনে ওর আব্বু না থাকতো তাহলে যে অধরা এখন কী করতো তা সে নিজেও জানে না,,,।আর তাই নিজের রাগটা কন্ট্রোল করার জন্য নিজের ওড়নাকে শক্ত করে চেপে ধরে আছে,,আর বার বার আমার দিকে তাকিয়ে দেখছে,,হয়তো আমি কী করি সেটা দেখার জন্য,,,,।
**তারপর অধরার আব্বু প্রিন্সিপাল স্যারের সাথে আর অন্তরার পরিবারের সাথে আরও কিছুখন কথা বার্তা বলে বাহিরে চলে যান,,।আর যাওয়ার সময় আমাকে আর অন্তরাকে বলে যান,,যে আমাদের সাথে নাকি বাড়িতে কথা বলবে,,,।এখন আমার কেন জানি মনে হচ্ছে এই বার সত্যি আমি পৃথিবীতে একা হয়ে যাবো,,।কারণ এত বড় একটা ঘটনা হওয়ার পর আমাকে কী তাদের বাড়িতে থাকতে দিবে,,,।কখনোই দিবে না,,যদিও এখানে আমার কোন দোষ নাই,,।কিন্তু নিজের মেয়ের পক্ষ ছেড়ে কে আমার পক্ষে কথা বলবে,,।আমিও আর কিছু না বলে একা একা প্রিন্সিপাল স্যারের রুম থেকে বেরিয়ে পরি,,,।
অন্যদিকে,,,অধরা প্রিন্সিপাল স্যারের রুম থেকে বেরিয়ে নিজের বাপের ওপর রাগে ফুসতে থাকে,,।আর মনে মনে বলতে থাকেকে,,,( আমি থাকতে আমার ভালবাসা অন্য কারো হয়ে যাবে,,, সেটা আমি কখনো হতে দিবো না,,,।যে ভাবেই হোক আমার ভালবাসার মানুষকে আমার করে নিবোই,,)অধরা যখন আনমনে দাঁড়িয়ে রাগের মাথায় এসব চিন্তায় ব্যস্ত তখনি কোথায় থেকে যেন অন্তরা এসে পিছন থেকে বলল,,,
অন্তরা : অন্যকারো ভালবাসার মানুষকে,, কেড়ে নিয়ে নিজের করে নেওয়ার মাঝে এত মজা আগে জানতাম না,,।তাহলে কাজটা আরও অনেক আগেই করতাম,,।তুই যতই বদরাগী হোস না কেন তোর বাপটা অনেক ভালো,,নাহলে নিজের মেয়ের ভালবাসাকে আবার অন্যকারো হাতে দিতে রাজি হয় নাকি,,,।শুধু একবার শুভ্র কে নিজের করে নিয়ে নেই তারপর তোকে বুঝাবো আমাকে মারার মজা,,,(পৈশাসিক একটা হাসি দিয়ে বলল)
**অন্তরার কথা শুনে অধরার ইচ্ছে করছে অন্তরাকে এখনি খুন করে ফেলতে,,।কিন্তু অনেক কষ্টে নিজের রাগটা কন্ট্রোল করে অধরা বলল,,,,
অধরা : মুখ দিয়ে শুধু ভালবাসি কথাটি শুধু বলতে চাইছিলি,,,সেটাও বলতে পারিস নাই,,,তার আগেই তোর মুখ আমি ভেঙ্গে দিছি,,,।আর এখন যদি আবার বিয়ে করার চিন্তা করিস,,, তাহলে বুঝতেই পারছিস তোকে আমি কী করবো,,,।এখন আমার সামনে থেকে সরে যা নাহলে তোর এই ভাঙ্গা মুখ আমি আবার কখন ভেঙ্গে ফেলি তার কোন ঠিক ঠিকানা নাই,,।তারপর আমার শুভ্রকে বিয়ে করবি তো দুরের কথা তোকে রাস্তার রিক্সাওয়ালাও বিয়ে করবে না,,,,(বলেই একটা ভিলেন হাসি দিলো,,,)
**অধরার কথা শুনেই অন্তরার মুখটা চুপসে যায়,,।তখন অন্তরা বলল,,,
অন্তরা : তোর আব্বু যেহেতু কথা দিছে তাহলে তুই কিছুই করতে পারবি না,,।আর কালকেই আমি আমার পরিবার থেকে লোক পাঠাবো তোদের বাড়িতে,,,।তোর শুভ্রকে সারা জীবনের জন্য তোর কাছ থেকে আমার কাছে নিয়ে আসতে,,,,,(হাসির ভাব নিয়ে বলল)
অধরা : জেগে থেকে স্বপ্ন দেখা ভালো না,,আর তুই এখন তাই করছিস,,,।একটা কথা মনে রাখিস তুই শুভ্রর কাছে যাওয়ার আগে আমি ওকে আমার করে নিবো,,,,
অন্তরা : শুভ্র কে জামাই হিসাবে তোর বাবা কখনো মানবে না,,।আর এখন যেহেতু তোর আব্বু জেনে গেছে তুই শুভ্র কে ভালবাসিস,,তাই তোর বাবা চাইবে শুভ্র তোর জীবন থেকে চলে যাক,,।আর আমি সেই সুযোগটা নিয়েই শুভ্রকে সারাজীবনের জন্য আমার করে নিবো,,,,,,,
অধরা : তুই এ নিয়ে চিন্তা করে আবার রাতের ঘুম হারাম করিস না,,,।এতদিন আমি ভাবতাম কী ভাবে আব্বুকে বলবো যে আমি শুভ্র কে ভালবাসি,,,কিন্তু আজকে তোর কারণে সেটা জেনে গেছে,। এতে অবশ্য আমারী ভালো হইছে,,নিজে কষ্ট করে বলতে হয় নি,,।এখন তুই শুধু দেখ কী করে আমি আমার ভালবাসা,, আমার করে নেই,,।তুই তোর এই ভাঙ্গা মুখটা নিয়ে দাওয়াত খেতে আছিস,,, যা এখন সামনে থেকে,,(দমক দিয়ে বলল)
অন্তরা : দেখে নিবো তোকে,,(রাগী কন্ঠে বলল)
**কথাটা বলেই অন্তরা হন হন করে সেখান থেকে চলে যায়,,।আর অধরা তখন মনে মনে শুভ্রকে খোজতে থাকে,,।কিন্তু পুরা কলেজ খোজেও শুভ্র কে পাই নি অধরা,,।তখন মন খারাপ করে বাড়িতে চলে যায়,,।
**এদিকে আমি কলেজ থেকে সোজা বেরিয়ে নদীর পাড় চলে আসি,,।আর সেখানে সন্ধ্যা পর্যন্ত একা বসে থাকি,,।এর ভিতর অধরা বেশ কয়েক বার কল দিছে,, কিন্তু আমি কল রিসিভ করি নি,,।আজ নিজেকে সত্যি খুব একা মনে হচ্ছে,,।এতিম হয়েও এতদিন খুব একটা মা বাবার কথা মনে পড়ে নি। কিন্তু আজকে অনেক মনে হচ্ছে,,।জানিনা বাড়িতে গেলে আমার জন্য কী অপেক্ষা করছে,,।তারা হয়তো ভাববে এতদিন তাদের ঘরে খেয়ে পড়ে তাদের সাথে আমি বেঈমানি করছি,,।হয়তো আজকেই আমাকে তাদের বাসা থেকে বের করে দিবে,,।এরকম নানান চিন্তা করতে করতে প্রায় রাত হয়ে গেছে,,।তাই ভাবছি বাড়িতে যাই,,যা আছে কপালে তাই হবে,,,।আর আমি বাড়িতে এসে দেখি বাড়ির পরিবেশটা বেশ শান্ত লাগছে,,,।আমি তখন চুপচাপ আমার রুমে চলে যাই,,,।আর আমি আমার রুমে আসার একটু পরেই আয়ান মানে আমার ছোট নবাব এসে বলল,,,,,
আয়ান : ******চলবে*****
প্রিয় পাঠক পাঠিকা কি ভাবছেন ,,
শুভ্র, কার হবে,, অধরার? না কি, অন্তরার? 😇