স্বচ্ছ_প্রেমের_পদ্মপুকুর #লেখা_চাঁদনী_ইসলাম #পর্ব_২০

0
548

#স্বচ্ছ_প্রেমের_পদ্মপুকুর
#লেখা_চাঁদনী_ইসলাম
#পর্ব_২০

আসাদের একবার মনে হচ্ছে বিষয়টা নিয়ে মায়ের সঙ্গে কথা বলবে।মামা কি কোন সিদ্ধান্ত জানিয়েছে? ওই বিষয়ে কথা বলার জন্যই কি এতো যেতে বলছে।রোহান ভাইয়া পড়াশোনা শেষ করে ভালো চাকরি ও করছে।সিদ্ধান্ত জানানো অস্বাভাবিক কিছু না।আবার মনে হচ্ছে, নাহ মামা তো কিছুদিন আগেও সীতাকুণ্ড এসেছিলো তখন তো কথা বলে যেতে পারতো।আসাদ নিজেই নিজের মনকে শান্ত করল।

এর মধ্যেই বাঁধলো আরেক বিপত্তি নিরুর ফুফু, ফুপাতো বোন আয়েশা, দাদু, আর রুমন সীতাকুণ্ডে এলো।আজিজুল হকের সাথে ফোনে কথা বলে এসেছেন।আনাস মোল্লা আজিজুল হককে বলেছিলেন কিছু জরুরি কথা আছে।নিরুর বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চায়। আজিজুল হক বলেছিলেন সামনা সামনি বসে কথা বলবেন।তাই নিরুর দাদুরা আজিজুল হকের বাড়ি এসেছেন।আনাস মোল্লার বয়স বেড়েছে,বয়স বাড়ার সাথে সাথে নাতনিকে নিয়ে চিন্তাটাও বাড়ছে।নিরুর ফুফু খাদিজা গত সপ্তাহে আনাস মোল্লার কাছে একটা প্রস্তাব দেয়।রুমনের সঙ্গে নিরুর বিয়ের প্রস্তাব।আনাস মোল্লা প্রস্তাবটা পেয়ে অবশ্য খুশিই হন।আনাস মোল্লার চিন্তা ছিলো মা বাবা মরা মেয়েটাকে কার হাতে তুলে দিবে আদর যত্ন কেমন পাবে।নানারকম চিন্তা করতেন।কিন্তু এখন নিজেদের মধ্যেই নাতনিকে রাখার প্রস্তাব শুনে আনাস মোলা খুশিই হলেন বটে।আনাস মোল্লাও এমন কিছু ভাবেনি তা নয়,কিন্তু এতিম মেয়েদের নিয়ে যেচে গিয়ে কাউকে বলা যায় না মেয়েটা তোমার ঘরে নাও।নিজের মেয়েকেও আনাস মোল্লা বলেনি।কিন্তু আজ যখন খাদিজা নিজে থেকেই ভাইয়ের মেয়েকে ছেলের বউ করতে চাচ্ছে তাতে আনাস মোল্লা ভারি খুশি।নিরু আনাস মোল্লার নাতনি হলেও বড় হচ্ছে তার মামার কাছে তাই প্রস্তাবটা তার কাছেই আগে রাখতে হবে। তাই আজিজুল হকের কাছে আসা।

আসাদ এখনো বাড়িতেই আছে।আরো কিছুদিন থাকবে তারপর ঢাকায় ব্যাক করবে।আজ তানজিলার জন্মদিন, তানজিলা নিজে এসে নিরুকে সঙ্গে করে নিয়ে গেছে।আর আসাদের দাওয়াত তো আছেই।রাকিব প্রায় সব বন্ধুদেরই দাওয়াত করেছে।যারা এলাকায় ছিলো তারা সবাই-ই এসেছে।দিনটা দারুণ ভাবে উদযাপিত করছে।সবাই মিলে বেশ মজা করছে।বাড়িতে থাকাকালীন শুধু চোখের দেখাটাই হয়, মন খুলে কথা বলা হয় না।আজ আসাদ অনেক অনেক গল্প করছে।নিরুকে একটা সুন্দর দিন উপহার দিবে বলে ভেবেছে।
বিকেলে বাইকে করে লং ড্রাইভে গেল।নিরু বুকের মধ্যে অদ্ভুত সুন্দর একটা অনুভূতির আনাগোনা টের পাচ্ছে।আসাদের আশপাশে কি এমন আছে নিরু বোঝে না। আসাদ আশপাশে থাকলে প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নিতে পারে যেন।এতো স্বস্তি আর এতো শান্তি পায়।

” এই নিরু!”

“হুম!”

“চুপচাপ কেন?”

“আপনাকে অনুভব করছি।আপনার কাছে আমি এতো শান্তি পাই কেন?”

“এখনো ভালবাসি কথাটাই শুনতে পেলাম না।”

নিরু আসাদের কোমরটা দ্বিগুণ শক্ত করে চেপে ধরে আসাদের কাঁধে চিবুক রেখে বলল, “খুব ভালবাসি!”
আসাদের বুকের মধ্যে শীতল একটা বাতাস স্পর্শ করে গেল যেন।বাইক থামিয়ে নিরুর এক হাত সামনে নিয়ে গাঢ় করে একটা চুমু খেল।নিরু কেঁপে উঠল, আসাদকে পিছন থেকে শক্ত করে জড়িয়েই বসে রইল।আসাদের কাছে আজকের দিনটা গুলিয়াখালীর বিচের থেকেও স্পেশাল মনে হলো।সন্ধ্যা নেমে আসার আগেই আসাদ বাইক নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দিলো।
বাসায় ঢুকে নিরুকে নামিয়ে আসাদ বাইক পার্কিংয়ে রাখছিলো।নিরু সামনে এগিয়ে গিয়েছে।রুমন এসে নিরুর সামনে দাঁড়াল।তারপর বলল,

“কোথায় গেছিলে?”

“আমার টিচার তানজিলা আপুর বাড়িতে।”

“আমরা আসছি জানতে না?”

“হ্যাঁ জানতাম।”

“তারপরও বাইরে যেতে হলো? রাত দিন তোমার মামার ছেলে এই চামচার সাথেই থাকো নাকি?”

নিরু এতক্ষণ বিরক্তির সাথেই উত্তর দিয়ে যাচ্ছিলো।এখন নিজের রাগটা আর দমিয়ে রাখতে পারলো না।রাগ নিয়েই বলল, “কথাবার্তা ঠিক ভাবে বলুন।”

“কি ঠিকভাবে বলবো?দেখলাম তো কিভাবে লেপ্টে ছিলে।এইসবই করে বেড়াও নাকি?”

নিরুর খুব ভালো করে মনে আছে থানার রোড ধরার পর থেকে নিরু আসাদের কাঁধেও হাত রাখেনি।সেখানে রুমনের কাছ থেকে এমন বিশ্রী কথা নিরুর সহ্য হলো না।রাগের মাথায় বলে দিলো।

“সবাইকে নিজের চরিত্রের মতো মনে হয়?”

রুমন নিরুর হাতের কব্জি চেপে ধরে দাঁতে দাঁত চিবিয়ে বলল, “কালকেই আমাদের সাথে রাজশাহী ব্যাক করবা।অনেক বড় হয়েছো তাই না?দেখাচ্ছি রাতটুকু যাক।”
আসাদ বাইক পার্ক করে এসে দেখে রুমন নিরুর হাত ঝ্যাটকা দিয়ে ফেলে বাড়ির মধ্যে চলে গেল।নিরু দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে চোখের জল ফেলছে। আসাদ দ্রুত পায়ে এগিয়ে এসে বলল, “কি হয়েছে নিরু?”

নিরু হাতের কব্জি চেপে ধরে আছে।রুমন পুরো শক্তি দিয়ে হাত চেপে ধরায় নিরু হাত সোজা করতে পারছেনা।

“চুপ করে আছিস কেন?আজ ওই রুমনকে আমি দেখছি দাঁড়া ওর সাহস কিভাবে হয় তোর সাথে এমন ব্যবহার করার।”

নিরু আসাদকে থামালো, শান্ত হতে বলল।তখনই আজিজুল হকের গাড়ি গেটে ঢুকলো। নিরুকে আর আসাদকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে আজিজুল হক শুধালেন, “কি হয়েছে?নিরুর হাতে কি হয়েছে।কিসের সঙ্গে লাগলো মা?”

“তেমন কিছু হয়নি মামা।আমি ঠিক আছি।”

আসাদ উচ্চস্বরেই রাগে কাপতে কাপতে বলল, “হ্যাঁ কিছু হয়নি ওর, হুটহাট লোকে ওর হাত ধরে ওর ভালো লাগে।প্রতিবাদ করতে পারে না।”

“কে হাত ধরেছে?”

নিরু আর চুপ করে থাকতে পারলো না। ঘটনাটা সংক্ষেপে আজিজুল হককে বলল।আসাদ আরও রেগে গেল। “রুমনের সাহস কিভাবে হয় ওর সাথে বাজে ব্যবহার করার।আত্নীয় না হলে আর নিরুর দাদু না এলে ওকে আজ দেখতাম।”

আজিজুল হক নিরুর মাথায় হাত রাখলেন।হাতটা একটু মালিশ করে দিয়ে হাত ধরে বাড়ির মধ্যে গেলেন।আসাদ বাড়ির মধ্যে গিয়ে নিজেকে সামলাতে পারবে না বলে আবার বাইরে চলে গেল।
আজিজুল হক আনাস মোল্লার সাথে কুশল বিনিময় করে নিজের ঘরে গেলেন।রাতের খাবারের পর আনাস মোল্লার কথা শুনবেন।খাদিজা নিরুকে জড়িয়ে ধরে মুখে চুমু খেলেন।আনাস মোল্লা নিরুকে পাশে বসিয়ে গল্প শুরু করে দিলেন।নিরুর জন্য আনা জিনিস গুলো নিরুর হাতে দিলেন।নিরু কিছুক্ষণ গল্প করে বাইরের জামাকাপড় ছেড়ে ড্রয়িংরুমে এসে বসল।আজিজুল হক ফ্রিজ থেকে বরফ বের করে নিরুর হাতে ধরতে বললেন।হাতে অনেকটা জায়গা জুড়ে লাল হয়ে আছে।আমিনা বেগম হাতটা দেখে চমকিয়ে উঠলেন। “ইশ রে কতখানি লেগেছে।কিসে লেগেছে নিরু?”
আনাস মোল্লাও এতক্ষণ খেয়াল করেনি।নিরুর হাতের দিকে তাকিয়ে সবাই-ই চমকে উঠল।আজিজুল হক বললেন, “বেকায়দায় পড়ে গেছিলো।ঠিক হয়ে যাবে সমস্যা নেই।”
আমিনা বেগম নিরুর হাতে বরফ ধরলেন।আর বিলাপ বকে গেলেন’ “আমি তোর শরীরে একটা আঁচ লাগতে দিইনি।আর তুই কীভাবে চলাফেরা করলি এতটা জায়গা জুড়ে আঘাত পেলি।”

“ঠিক হয়ে যাবে মামানি।”

“আসাদ কোথায়?”

“বাসায় আসেনি বাইরেই আছে মনে হয়।”

“সেই সকালে বের হয়েছে।ছেলেটার বাড়িতে মনে হয় জায়গা হয় না।এতো বাইরে যে কি কে জানে।”

“চলে আসবে চিন্তা করো না।”

রুমন ড্রয়িংরুমে এসে বসল।আজিজুল হক রুমনের দিকে একবার তাকিয়ে আনাস মোল্লার সাথে নানা বিষয়ে কথা বলে গেলেন।আমিনা বেগম নিরুকে নিয়ে রান্না ঘরে গেলেন।

“কি দিচ্ছো মামানি?”

“সারাদিনে কি খেয়েছিস ঠিক নেই।ডাইনিংয়ে খাবার দিচ্ছি আগে খেয়ে নিবি তারপর একটা ব্যাথার ঔষধ খাবি।”

“এইটুকুতে ব্যাথার ঔষধ খাবো?”

“তাহলে কি ব্যাথা বেশি হলে খাবি?”

“তেমন কিছু হয়নি মামানি।”

“যা বললাম তাই শোন।আগে খেয়ে নে।”

নিরু আর কোন কথা না বলে খেতে বসল।খাদিজা নিরুর পাশে এসে বসে রইলেন।খাদিজা নিরুর জন্য ছাঁচ পিঠা, নারকেলের নাড়ু বানিয়ে এনেছেন।ওই গুলোও আমিনা নিরুর সামনে দিলো।

“মামানি আজ কি আমাকে রাক্ষস ভাবছো?”

আমিনা বেগম হেসে বললেন, “তা ভাববো কেন?”

“এতো খাবার দিচ্ছো কেন?”

“অল্প অল্প করে খেয়ে দেখবি তাই।”

নিরু ভাত খাচ্ছিলো পিছন থেকে আয়েশা এসে নিরুকে জড়িয়ে ধরল।আয়েশাকে দেখে নিরু ভীষণ খুশি হলো।নিরু জানতো না আয়েশাও আসবে।বিশাল একটা চমক পেল।নিরু ঘুরে আয়েশাকেও জড়িয়ে ধরল।আয়েশা বলল, “আগে খাওয়া শেষ কর।”

“এতক্ষণ কোথায় ছিলে তুমি?”

“অনেকটা রাস্তা জার্নি করে এসেছি ঘুমাচ্ছিলাম।পুরো এনার্জি পেয়ে গেছি সারারাত আড্ডা দেবো।”

আয়েশার কথায় নিরু হেসে উঠল। আয়েশাও সাথে তাল মেলালো।সবাই মিলে গল্প আড্ডায় রাতের খাবার শেষ করলো।নিরু সবার সাথে ড্রয়িংরুমেই বসে ছিলো আর বার বার ঘড়ি দেখছিলো।আসাদ এখনো বাড়ি আসেনি।নিরু মামানির ফোন থেকে আসাদকে মেসেজ দিয়ে বাড়ি আসতে বলল।আসাদ সাথে সাথে রিপ্লাই করলো, ‘আজ রাকিবের বাড়ি থাকবো।’
তারপর নিরু আবার মেসেজ পাঠালো, ‘আমি আপনাকে ভীষণ মিস করছি।আমার কিছু ভালো লাগছে না।আপনি তাড়াতাড়ি আসুন প্লিজ!’ নিরু পাঁচ মিনিট ফোনটা নিয়ে অপেক্ষা করল।কোন রিপ্লাই পেল না।নিরু জানে আসাদ এখনই চলে আসবে।তাই ফোনটা রেখে দিলো।

দশটা বাজতে দেখে আমিনা বেগম আসাদকে ফোন দিতে গেলে আজিজুল হক বললেন, ‘আসাদ একটু পরেই আসবে।’ তাই আমিনা বেগম আর দুশ্চিন্তা করলেন না।আড্ডার শেষে আনাস মোল্লা আজিজুল হকের কাছে প্রস্তাবটা রাখলেন।কথাটা শুনে নিরুর মনটা বিষন্নতায় ছেয়ে গেল।এক মুহূর্তের জন্য মনে হলো দম বন্ধ হয়ে আসছে।নিরুর পা দু’টো অস্বাভাবিক ভাবে কাঁপছে।বুকের ভিতরটা হাসফাস লাগছে।
কথা যখন মূল বিষয়ে তখনই আসাদ বাড়িতে ঢুকলো।আসাদকে দেখে নিরু আসাদের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইল।নিরুর অসহায় মুখটা দেখে আসাদ নিজের ঘরে না গিয়ে পুরো ব্যাপারটা বোঝার জন্য আজিজুল হকের পাশে বসল।আনাস মোল্লার কথার সারমর্ম শুনে নিরুর অসহায় চাহনির কারণ বুঝতে পারলো।আসাদ নিরুর দিকে তাকিয়ে শান্ত হতে বলল।

আনাস মোল্লার প্রস্তাবে আজিজুল হকের কি বলা উচিত আজিজুল হক এই মুহূর্তে বুঝতে পারছেন না।তারপরও বললেন, “আপনি কোন সিদ্ধান্ত নিলে তো ভেবে চিন্তেই নিবেন।ভালো বুঝেছেন বলেই সিদ্ধান্তটা নিয়েছেন।কিন্তু… ”
আজিজুল হক কিছুক্ষণ থম ধরে বসে রইলেন।

আসাদ আজিজুল হকের দিকে তাকিয়ে আনাস মোল্লাকে বলল, “দাদু আপনারা তো আছেন আব্বু ভেবে আপনাকে জানাবে।আব্বুকে একটু সময় দিন।”

আনাস মোল্লা বললেন,”হ্যাঁ অবশ্যই দাদু ভাই।আমাকে পরে জানালেও হবে।আমি ফোনেই আজিজুলকে বলতে পারতাম।আমার মনে হলো সামনা সামনি বলাটাই ভালো হবে।”

খাদিজা আজিজুল হকের দিকে তাকিয়ে বললেন,”ভাইজান নিরু আমার ভাইয়ের মেয়ে ওকে নিজেদের কাছে রাখতে চাই।আমরা জানি আপনিও সম্মতি দিবেন।নিরুকে আমরা বাইরে কোথাও বিয়ে দিতে চাই না।”

নিরু আসাদের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে।আয়েশা আসাদের দিকে তাকিয়ে হাসলো।আসাদ ও হাসি বিনিময় করলো।নিরুর দিকে তাকিয়ে নিরুর অসহায় মুখটা দেখলো তারপর নিজের ফোনটা কিছুক্ষণ টিপাটিপি করে পকেটে রেখে দিলো।আজিজুল হক আসাদের পাঠানো মেসেজটা দেখে আসাদের দিকে তাকালো।তারপর কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে থেকে সবার উদ্দেশ্য বলল, “আপনারা যেই প্রস্তাব নিয়ে আজ এসেছেন।এই একই প্রস্তাব আমরা অনেক আগেই নিজেদের মধ্যে থেকে আরও একটা পেয়েছি।আমিনার বড় ভাই প্রস্তাবটা রেখেছিলেন নিরু যখন ছোট, আমরা এখনো কোন সিদ্ধান্ত জানাইনি।আপনাদের না জানিয়ে কোন সিদ্ধান্ত জানাতেও পারতাম না। কিছুদিন আগেও বড় ভাই আমাকে বলেছিলো একটা সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য, কিন্তু আমার মনে হয়েছিলো আত্নীয় আছে আত্নীয় থাকুক।কোন আত্নীয়র মধ্যে নতুন করে সম্পর্কে জড়াবো না।সম্পর্ক আরও নষ্ট হয়।বড় ভাইয়াকে বলেছি আত্নীয়র সাথে আত্নীয় করবো না। এখন যদি রুমনের সাথে বিয়েটা দিই তাহলে কেমন দেখায় না চাচা বলুন?”

আনাস মোল্লা বললেন, “আমি তোমার বিষয়টা বুঝতে পারছি বাবা।কিন্তু নিরু তো আমাদের নিজের… ”

আজিজুল হক পুরো কথাটা শেষ করতে দিলেন না। নিজেই বললেন, “সেইটা তো অবশ্যই চাচা আমি শুধু আমার সিদ্ধান্তটা জানালাম।বাকিটা আপনাদের ইচ্ছে!”

আসাদ বুঝতে পারছে এখানে বাবার কিছু বলার নেই।তাই নিজেকেই কিছু করতে হবে।

আজিজুল হক আমিনাকে খাদিজাদের ঘরে নিয়ে যেতে বললেন।সবাই ঘরে চলে যাওয়ার পর আনাস মোল্লা, আজিজুল হক আর আসাদ ড্রয়িংরুমেই বসে রইলেন।

আসাদ আনাস মোল্লাকে বললেন, “দাদু আপনার সাথে আমি কি ফ্রী ভাবে একটু কথা বলতে পারি?”

“হ্যাঁ দাদু বলো!”

” দাদু আপনি নিরুর জন্য কেমন ছেলে চান? যেই ছেলে নিরুকে সম্মান করতে জানে না। হুটহাট কষ্ট দেয়,বাজে ব্যবহার করে এমন ছেলে চান?”

“কখনো না দাদু ভাই।আমার নিরুর জন্য এমন ছেলে কখনো চাইবো না।”

“কিন্তু দাদু আপনি তো সেই ছেলেকেই নিজে কোলে করে বয়ে এনেছেন।”

“মানে?”

আজিজুল হক আজকের পুরো ঘটনাটা আনাস মোল্লার সাথে বললেন।তারপর আসাদ আয়েশার হলুদের দিনের ঘটনাটা বলল।আনাস মোল্লা রীতিমতো ফুসে উঠলেন।

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here