চন্দ্রকলা #লামিয়া_ইসলাম #পর্ব_৭

0
360

#চন্দ্রকলা
#লামিয়া_ইসলাম
#পর্ব_৭

বেশ কিছুক্ষণ পরেই সামিরা চন্দ্রকে নিয়ে নিচে নেমে এলো। শিরিন বেগম চন্দ্রকে বৌভাতে আসা সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিল। শিরিন বেগম তাদের সাথে পরিচয় শেষ করাতেই তাদের সামনে তার মা রাহেলা বানু এবং তার বোন রিমা এলো। রাহেলা বানু এসে মিথ্যা আন্তরিকতা দেখিয়ে বলল,

– বেয়াইন আমি আপনাগো উপর অনেক কৃতজ্ঞ যে আমার চন্দ্ররে আপনে আপনাগো বাড়ির বউ বানাইয়াছেন।

– আরে না না এতো আমাদের অনেক সৌভাগ্য যে আপনাদের ঘরের এই লক্ষ্মী মন্ত্র মেয়েটিকে আমরা আমাদের জমিদার পরিবারের বউ হিসেবে পেয়েছি।

– কি যে বলেন না। চন্দ্র অতো সুন্দরী হইলে হইবো কি।আমার তিন মাইয়ার মধ্যে লইয়াই আমি সবচাইতে বড় চিন্তায় ছিলাম। কারণ তিন বছর আগে ওর লগে যা ঘটছে হেইতেই তো আপনাগো বেয়াইর ঐরকম অবস্থা হইলো।

– মানে আপনি কি বলতে চাচ্ছেন?

-আর বিয়াইন কইয়া কি হইবো ওইসব তো পুরাইন্না কথা। ওই তিন বছর আগে এক রাতে ঘরে চন্দ্ররে খুইজ্জা পাইতাছিলাম না। তখনই তো আমার স্বামী অনেক খুঁজতে যাইয়াই তো হে ওই রকম কইরা অসুস্থ হইয়া পরলো। জানিনা কি দেখছিল। কিন্তু খুব খারাপ কিছুই দেখছিল। এখন শত হইলেও তো নিজের মাইয়া ওর চরিত্রের ব্যাপারে তো খারাপ কিছু কাউরে কইতে পারি না। তারপরও আপনারা এখন ওর আপন মানুষ তাই কথাটা কইলাম।আপনে আবার কিছু মনে কইরেন না।

– আরে না না কিছু মনে করিনি সত্যিই তো। এখন তো আমরাই চন্দ্রের আপনজন। আর ভালো হোক খারাপ হোক যাই হোক চন্দ্র এখন আমাদের বাড়ির বউ।

রাহেলা বেগম মনে করেছিল শিরিন বেগম তার কথা শুনে কোন ভয়ংকর ধরনের কথা চন্দ্রকে শোনাবে। কিন্তু শিরিন বেগমের এরকম ব্যবহার দেখে হতাশ হয়ে পড়ল। তবে রাহেলা বেগমের এসব কথা শুনে ওইখানে থাকা আশেপাশে মহিলারা অনেক ধরনের মন্তব্য করতে লাগলো চন্দ্রকে নিয়ে। আশেপাশের সবার এরকম কথা শুনে এবং তার ব্যাপারে তার মায়ের মুখে এমন জঘন্য কথা শুনে তার ইচ্ছা করছিল তখনই নিজের জীবন দিয়ে দিতে। তার এমন মনে হচ্ছিল যেন তার চোখ থেকে এখনই পানির ফোঁটা গড়িয়ে পড়বে। শিরিন বেগম চন্দ্রের অবস্থা বুঝতে পেরে চন্দ্রকে নিয়ে সেখান থেকে উপরে চলে গেল।

———————————

– মা বিশ্বাস করুন আমি এরকম ধরনের মেয়ে নই । আর সেদিন আমি ঘর থেকে এভাবে গায়েব হইনি। আমার বাবা সেদিন অনেক রাত হওয়ার পরেও বাড়ি ফিরেনি তাই আমি তাকেই খুঁজতে বের হয়েছিলাম। কিন্তু আমার মায়ের কথা অনুযায়ী আমার বাবা আমাকে খুঁজতে বেরিয়েছিল। কিন্তু মা বিশ্বাস করুন এগুলো সব মিথ্যা।

-চন্দ্র মা তোমাকে আমার কাছে কোনো কৈফিয়ত দেওয়ার দরকার নেই। তোমাকে এই বাড়ির বউ বানানোর আগে আমি সবকিছু জেনে নিয়েছি। আর আমি এটাও জানি সেদিন রাতে তুমি তোমার বাবাকে খুঁজতেই বের হয়েছিল। তুমি সেদিন তোমার বাবাকে খুঁজে পেয়ে তাকে নিয়ে হসপিটালে গিয়েছিলে।

– ধন্যবাদ মা আমাকে বিশ্বাস করার জন্য।

– তবে একটা বিষয় বুঝলাম না তোমার মা তোমার ব্যাপারে এগুলো কেনই বা বলল। আর বিয়ের সময় এত জীবনে ঝুকি থাকার পরেও টাকার বিনিময়ে তোমার মা বিয়ে দিতেও রাজি হয়ে গেল। বিষয়গুলো আমার কাছে খুবই জটিল লাগছে।

– মা কেন জানিনা আমি নিজে যে আমার জন্মের পর থেকে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে যাচ্ছি। তবে মা আমি আপনাকে একটা কথা বলব আপনি রাখবেন।

– কি কথা? বল মা।

– আপনি যে আমার মাকে ৩০ লক্ষ টাকা দিতে চেয়েছিলেন সেই টাকাটা আপনি ওনাকে দেবেন না। আমি এতদিন ওনার অন্যায় আবদারের শুনেও কিছু বলিনি। কিন্তু এখন আমি বুঝতে পেরেছি উনি আমার দেয়া সম্মানের যোগ্য না। তাই দয়া করে ওই টাকাটা দেবেন না। তাহলে আমার অসম্মান হবে।

– কিন্তু কথা দিয়ে কথা না রাখা তো আমাদের জমিদার বংশের নিয়ম না মা। আমি তো তোমার মাকে কথা দিয়েছিলাম যে তোমার সাথে আমার ছেলে বিয়ে দিলে তাকে ৩০ লক্ষ টাকা দিবো। টাকাটা আমি যোগাড় ও করে ফেলেছি।

– না মা দয়া করে ওনাকে টাকাটা দেবেন না। আপনার কাছে এতোটুকুই আমার দাবি।

শিরিন বেগম চন্দ্রের কথা শুনে খুব বেশি দ্বিধাদ্বন্ধের মধ্যে পড়ে গেল। সে ভেবেই পাচ্ছিল না যে সে কি করবে। একে তো একদিকে তার দেয়া কথা অন্যদিকে চন্দ্রের করা দাবি। বিয়ের পরে এই প্রথম চন্দ্র তার কাছে কিছু দাবি করেছে। এখন সে তো চন্দ্রের কথা ফেলতেও পারবেনা। আর রাহেলা বানুর ব্যবহারও খুব বেশি সুবিধা জনক তার মনে হয়নি। তা না হলে কেউ নিজের মেয়ের ব্যাপারে কিভাবে এসব কথা বলতে পারে। তাইতো অবশেষে সিদ্ধান্ত নিল রাহেলা বানুকে সে টাকাটা দিবে না।

বৌভাতের অনুষ্ঠান প্রায় শেষের দিকে। মেহমানরা আস্তে আস্তে তাদের বাড়িতে চলে যাচ্ছে। শিরিন বেগমের ভাইয়ের পরিবার এবং তার মা কাল সকালে যাবে। রাহেলা বানু অনিমা আর রিমা কে নিয়ে চলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তখনি সে শিরিন বেগমের কাছে গিয়ে বলল,

– বেয়াইন তয় ঐ লেনদেনের বিষয়টা।

– এখানে অনেক লোকজন।আমার সাথে ঘরের ভিতরে চলুন। যা কথা বলার ওইখানে কথা হবে।

শিরিন বেগম আমিনা বেগমকে নিয়ে তার ঘরে এলো। ঘরে এসে ইতস্তত করে বলতে লাগলো,

– দেখুন বেয়াইন টাকাটা আমি দিতে পারবো না।

– কেন বেয়াইন বিয়ের আগে তো আপনি কইছিলেন বৌভাতে দিনই টাকাগুলো দিয়া দিবেন।

– জি আমি বলেছিলাম।কিন্তু এখন একজন আপনাকে টাকা দিতে নিষেধ করেছে। আর আমি তাই আপনাকে টাকা দিতে পারব না।

– কেডায় নিষেধ করছে আপনারে। জমিদার মানুষ কথা দিয়ে কথা রাহেন না।

– আমি নিষেধ করেছি মা।

– কেন করছস। ওই সময় তোরে কইলাম কয়ডা গহনা দিতে তাতেও তুই রাজি হইলি না। এখন আবার তোর শাশুড়িরও নিষেধ করতাছস টাকা দিতে। ভালো ঘরে বিয়া কইরা তোর দেমাগ বাইরে গেছে। এই রাহেলা বানু না থাকলে জীবনে তো রানী হওয়া লাগতো না।

রাহেলা বানু রাগের গজরাতে গজরাতে শিরিন বেগমের রুম থেকে বের হয়ে গেল। তার ওরকম চটে যাওয়া দেখে শিরিন বেগম নিরুপায় চোখে চন্দ্রের দিকে তাকালো। তার মার এরকম ব্যবহারের জন্য চন্দ্র মনে মনে অনেক লজ্জিত যা তার চেহারা দেখেই বোঝা যাচ্ছে।

———————-

সন্ধ্যার আগেই বৌভাতে সকল ঝামেলা শেষ হয়ে গেছে। অনুষ্ঠানের লোকজন সবাই যে যার বাড়িতে চলে গেছে। সাহেদ ও সাহিল আজকে আবার গেছে হসপিটালে ড্রাইভারকে দেখতে। মাগরিবের নামাজ শেষে সাফওয়ান বাগানে বসেছিল। হঠাৎ করে তার নজর গেল তার রুমের বারান্দায়। সে দেখল চন্দ্র সেখানে দাঁড়িয়ে আছে। সেই ইশারায় চন্দ্রকে বাগানে ডাকলো। চন্দ্র তার ইশারা পেয়ে সেও বাগানের দিকে যেতে লাগলো। তবে উপর থেকে নামতেই তার সাথে দেখা হল এবারের কাজের লোক বুলু খাতুনের সাথে। সে দেখল বুলু খাতুন এর হাতে চায়ের ট্রে।

-আপনি কি বাগানে জমিদার সাহেব কে চা দিতে যাচ্ছেন?

– জি মালকিন। বড় জমিদার সাহেবের তো এই সময়ে চা খাওনের অভ্যাস বাড়ি থাকলে। তাই লইয়া যাইতাছি।

– এটা আমাকে দিয়ে দিন।আমি নিয়ে যাচ্ছি।

– আরে না না আপনের কষ্ট হইবো।

– পাগল নাকি। এইটুকু ভাড়ে কিছুই হবে না।

চন্দ্র এক প্রকার জোর করে হাত থেকে ট্রে টা নিয়ে বাগানের দিকে চলে গেল। বাগানে গিয়ে সে দেখতে পেলো সাফোয়ান তখন তার হাতের ফোন নিয়ে কিছু করছে। সে চায়ের কাপটা নিয়ে বাড়িয়ে দিয়ে বলল,

– জমিদার সাহেব, এই যে আপনার চা।

– বাহ তোমার সম্বোধন টা তো বেশ সুন্দর।

-কেন সবাইতো আপনাকে এভাবেই ডাকে।

– হ্যাঁ সবাই ডাকে তবে তোমার মত এত সুমধুর করে কেউ ডাকে না।

– ও আচ্ছা।

– তুমি চা বানাতে পারো?

– জি আমি সব রান্নাই করতে পারি।

– অন্য সব রান্না করা লাগবে না।তার জন্য অন্যরা আছে। এখন থেকে আমি বাড়িতে থাকলে সন্ধ্যাবেলার চা টা তুমি বানাবে ।

– ঠিক আছে।

– মনে পড়েছে। বিয়ে উপলক্ষে তুমি আমার কাছে কি চাও?

– না না আমার কিছুই লাগবে না। আপনার মা তোমাকে অনেক গয়না দিয়েছে। আর আপনিও তো দেনমোহরের সব টাকা দিয়েছেন।

– কিছু তো নিতেই হবে এটা আমাদের জমিদার বাড়ির নিয়ম। এই যে এই বাগানটা আমার মা নিজের হাতে করেছে। আমার বাবার কাছে বিয়ের পর উপহার হিসেবে সে এরকম একটা বাগান তৈরি করতে চেয়েছিল।

-উমম তাহলে আমি কি পাশের যে খোলা জমিটা আছে। ওইখানে ছোটখাটো একটা মুরগির ফার্ম করতে পারি। আর শাক সবজির বাগান।

– বাহ তুমিও তো দেখছি আমার মায়ের মতই।তার দেখানো পথেই চলছো। তোমার শাশুড়িকে কি নকল করার চেষ্টা করছো।

-আরেহ না না।অনেক আগে থেকে আমার ইচ্ছা ছিল যে আমার একটা শাকসবজি বাগান ও একটা মুরগির ফার্ম থাকবে। আর তার জন্য যা টাকা লাগবে তা না হয় দেনমোহরে টাকা থেকে দিয়ে দেবো।

– ঠিক আছে তোমার যা ইচ্ছা। আমাকে একটা লিস্ট করে দিও। কি কি দরকার। কালকে শহরে লোকজন পাঠিয়ে সেগুলো আনিয়ে দেবো।

– ঠিক আছে। আমি আজকে রাতেই লিস্ট বানিয়ে রাখবো।

———————–

মাঝরাতে হঠাৎ করে রিমার ঘুম ভেঙে গেল। হঠাৎ তার মনে হল কেউ তার জানালায় ঠকঠক আওয়াজ করছে। এ মনে করল হয়তো জানালার কাছে কোন পাখি বসে ওরকম করছে। বারবার এরকম শব্দ হওয়াতে তার ঘুমে ব্যাঘাত ঘটতে লাগলো। প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে তার বাইরে যাওয়া প্রয়োজন। তাই সে উঠে দরজা খুলে বাহিরে গেল। কিন্তু বাহিরে গিয়েই সে জানালার কাছে দেখল কিছুই নেই। তাই সে যখনই উল্টো দিকে ঘুরে বাথরুমে যেতে নিবে। হঠাৎ কেউ পিছন থেকে তার মুখ একটা কাপড় দিয়ে চেপে ধরল। সে তার নাকের কাছে একটা মিষ্টি মিষ্টি গন্ধ অনুভব করলো। সাথে সাথেই সে অজ্ঞান হয়ে গেল।

পরের দিন সকালে চন্দ্র ঘুমিয়ে ছিল। অন্যদিনের মতো আজো সে সাফোয়ানের বুকে গুটিসুটি মেরে শুয়ে আছে। হঠাৎ সে তাদের রুমের দরজায় খুব জোরে কড়াঘাত করার শব্দ পেল। তাই সে হুরমুড় করে ওঠে দরজা খুলল। দরজা খুলতে এসে দেখলশিরিন বেগম দাঁড়িয়ে আছে। শিরিন বেগম তাকে দেখে উৎকণ্ঠার সাথে বলল,

– বৌমা তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নাও আর সাফোয়ানকে ঘুম থেকে ওঠাও। তোমাদের একটু তোমার বাড়ির দিকে যেতে হবে ।

– কেন মা কি হয়েছে?আর আপনাকে অত অস্থির লাগছে কেন?

-তোমার মেজো বোনের সর্বনাশ হয়ে গেছে। কারা জানি ওকে কাল রাতে তুলে নিয়ে গিয়েছিলো। তারা নাকি ওর সাথে খারাপ কিছু করেছে। ওকে আজ সকালে চন্দ্রকলার তীরে অজ্ঞান অবস্থায় পাওয়া গেছে।ওর জামা কাপড়ের অবস্থাও নাকি খারাপ ছিল। ওকে এখন তোমাদের বাড়িতে নিয়ে গেছে।

এইরকম খবর শুনে চন্দ্রের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়লো। কিছুক্ষন পরেই চন্দ্র সাফোয়ানকে নিয়ে তাদেরকে বাড়িতে গেলো। গিয়ে তারা দেখলো রিমা বিছানায় সুয়ে আছে। আর রাহেলা বানু তার পাশে বসে বিলাপ করছে। আশেপাশের বাড়ির মহিলারা ও তাদের বাড়িতে এসেছে। কেউ কেউ বিভিন্ন কথা বলতে লাগলো। একজন রাহেলা বানুকে সহানুভূতি দেখিয়ে বলে উঠলো,

-আহারে আপনের মাইয়াডার এহন কি হইবো। আপনার মাইয়ার তো সব শেষ হইয়া গেলো। এখন কেডা করবো এমন মাইয়ারে বিয়ে।

মহিলার বলা কথাগুলো শুনেই রিমা অস্থির হয়ে উঠলো। সে চেঁচিয়ে বলতে লাগলো,

-সব শেষ হয়ে গেছে মানে। আমার সাথে কিছুই হয় নি। আমি সারা রাত অজ্ঞান ছিলাম।

-হুঁহ। তুমি কইলেই তো আর হইবোনা। একটা জোয়ান মাইয়ারে অজ্ঞান কইরা তো আর কেউ ঘুম পড়াইয়া রাখবো না। আর তোমারে দেইখাখাই বুঝা গেছে তোমার লগে খারাপ কিছুই হইছে।

আশেপাশের মানুষের এইসব কথা শুনে রাহেলা বানু আর রিমার নিজেদের খুব অসহায় লাগতে লাগলো। চন্দ্র আজ এই বাড়িতে থেকে যেতে চাইলেও সাফোয়ান রাজি হলো না। তাই সে চন্দ্রকে নিয়েই বাড়ি ফিরলো। তবে চন্দ্রকে বাড়ি পৌঁছে দিয়েই সে আবার বেরিয়ে গেলো।

—————-

সাফোয়ান গাড়িটা এসেই দোতালা একটা বাড়ির সামনে থামলো। সে ভিতরে ঢুকেই দেখতে পেলো ৬ টা ছেলে আর ২ টা মেয়ে বসে গল্প করছে। সে তাদের কাছে হাসিমুখে এগিয়ে গিয়ে পকেট থেকে লাখ টাকার দুইটি বান্ডিল বের করে দিয়ে বলল,

– এইখানে ২ লাখ টাকা আছে। নিজেদের মধ্যে ২৫ হাজার করে ভাগ করে নাও। আর ধন্যবাদ কাজটা এত সুন্দর করে শেষ করার জন্য।

– আরে না না ভাই দরকার নেই এসবের। এই রিমা আমাদের কলেজে অনেক ছেলের সাথে প্রতারণা করেছে। এই রিমার জন্য আমাদের একজন বন্ধু মারাও গেছে।

– আরে না না নেও।এটা না হয় তোমাদের বড় ভাইয়ের পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে মনে করে রেখে দাও। আর আমি যেভাবে বলেছিলাম ওর সাথে সেরকম ভাবেই করেছ তো সব সবকিছু।

– জি ভাই। আমাদের সাথে স্বর্ণা আর অর্পি ও ছিল। রাতে ওই রিমা অর্পির সাথে ঘুমিয়ে ছিল। আর সকালে ওর জামা কাপড়ের ওই অবস্থা অর্পিই করেছে। আর আপনি চিন্তা করবেন না এইসব খবর বাহিরে কেউ জানবে না।

– ঠিক আছে সবাই ভালো থেকো আর কোন দরকার পরলে আমাকে জানিও।

সাফওয়ান বাড়ি থেকে বের হয়ে এলো। কাল যখন রিমা চন্দ্রকে ঐসব কথা বলছিল তখন সাফোয়ান দরজার আড়ালে দাঁড়িয়ে তাদের তার বলা সব কথা শুনেছিল। আর তারপরে সে সামিরার মাধ্যমে নিচে সবার সামনে বসে রাহেলা বানুর আচরণের কথাও জেনেছিল । তারপরেই সে রিমার ব্যাপারে খোঁজখবর নেয় এবং জানতে পারে তার কলেজের বেশ কিছু ছেলে মেয়ে তার উপর অনেক ক্ষিপ্ত। আর তাই সে তাদের সাথে যোগাযোগ করেই এই ঘটনাটা ঘটায়। কে শুধু চেয়েছিল রাহেলা বানু ও রিমা চন্দ্রকে যা বলেছিল তার জন্য তাদের উচিত শিক্ষা দিতে। এবং সে তাই করেছে এখন রাহেলা বানু বা রিমা সারা জীবনেও এই ঘটনা ভুলতে পারবেনা। সে হাঁটতে হাঁটতে চন্দ্রকলার পাড়ে এসে দাঁড়ালো আর নিজে মনে মনে বলতে লাগলো,

-আমি জমিদার সাফোয়ান চৌধুরী। চন্দ্রিমা আমার অর্ধাঙ্গিনী। যদি কেউ চন্দ্রিমার উপরে আঘাত আনতে চায় আমি তাকে এভাবেই ধ্বংস করব।এতে আমি কোনো নিয়ম – নীতি -আইন মানবো না।তার বিচার শুধু আমার আদালতে হবে।

এই বলেই সে পৈচাশিক হাসি হাসতে লাগলো।

চলবে……ধারাবাহিক মিস করতে না চাইলে পেইজে ফলো করে জয়েন থাকেন 👉 জুবেল আহমদ

এছাড়াও প্রতিটি গ্রুপে গল্পটি পাবে 👇

👉 রোমান্টিক গল্প ও কবিতা

👉 সাহিত্য কুটি ও পাঠাগার

👉 পেন্সিল

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here