খোলা_জানালার_দক্ষিণে #পর্ব_০২ #লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu

0
1036

#খোলা_জানালার_দক্ষিণে
#পর্ব_০২
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu

সময় স্রোতের ন্যায় গড়িয়ে যায়। রজনীর আঁধার কেটে গিয়ে সূর্যের রশ্মি ধরনীর বুকে আচঁড়ে পড়েছে। দেখতে দেখতে দু’টি বছর কেটে গিয়েছে। বাবা-মাকে ছাড়া একটা মুহূর্ত যে মেয়েটা থাকতে পারতো না। আজ সেই মেয়েটা বাবা-মা, পরিবার, আত্নীয়-স্বজন সবকিছু ছেড়ে দূর চলে এসেছে। কতগুলো প্রহর বাবা-মাকে ছাড়া কাটিয়ে দিয়েছে। সেদিনের পরে বাবা-মায়ের সামনে যাওয়ার আর সাহস হয়ে উঠেনি। মাঝেমধ্যে দম বন্ধ হয়ে আসে তার। বাসার সব থেকে আদরের মেয়েটা আজ আদরহীনতায় ভুগছে। মেহেভীন এক কাপ কফি নিয়ে খোলা জানালার দিকে গেল। জানালার কাছে আসতেই প্রকৃতির মনোমুগ্ধকর রুপ সে দেখতে পেল। এই মন খারাপের সঙ্গী হলো প্রকৃতি। তার সুন্দর্য দিয়ে মেহেভীনের মন ভালো করে দেয়। মেহেভীনের গভীর আঁখিযুগল #খোলা_জানালার_দক্ষিণের বাসাটার দিকে স্থীর হয়ে আছে। দীর্ঘ দুই বছর ধরে দক্ষিণের বাসাটা বন্ধ পড়ে আছে। সে এই বাসাটাই নিতে চেয়েছিল। কিন্তু তাকে দেওয়া হয়নি। এই বাসাটা নাকি কোনো এক স্পেশাল মানুষের জন্য সে ছাড়া অন্য কারো প্রবেশ নিষিদ্ধ। মেহেভীন ভিষণ অবাক হয়েছিল বটে! কে সেই মানুষ যার জন্য তার এই বাসায় ঠাঁই হলো না। মানুষটার মুখশ্রী দেখার জন্য মেহেভীনের ভিষণ আগ্রহ। কবে যে মেহেভীনের অপেক্ষার অবসান ঘটবে। সব চিন্তা ভাবনা ফেলে রেখে মেহেভীন প্রাপ্তিকে ফোন দিল,

–আসসালামু আলাইকুম ম্যাজিস্ট্রেট ম্যাডাম। কেমন আছেন? অবশেষে এই অধমকে মনে হলো আপনার? ম্যাজিস্ট্রেট হয়ে আমাদের একদম ভুলেই গিয়েছেন। তা আজ কতদিন পরে ফোন দিলেন। সে খবর কি রাখেন। মেহেভীন সালামের উত্তর নিয়ে, মলিন কণ্ঠে বলল,

–আব্বু আম্মু কেমন আছে আপু? তাদের কি আমার কথা একবারও মনে পড়ে না। আমায় কি একটুও দেখতে ইচ্ছে করে না। তারা সত্যিই কি কখনো আমার মুখ দেখবে না। আমার তাদের জন্য ভীষণ মন পুড়ে আপু। তাদের কণ্ঠ স্বর শোনার জন্য আমি মরিয়া হয়ে আছি। তাদের ভালোবাসা পাবার জন্য আমি কাঙাল হয়ে গিয়েছি। আমি সবকিছু ছেড়ে তাদের কাছে চলে যাব আপু। তাদের বলো আমি আর চাকরি করব না। তারা যা বলবে যেখানে বলবে। আমি সেখানেই বিয়ে করব আপু। আমাকে শুধু তাদের বুকে আগলে নিতে বলো।

–এই মেহেভীন কি বলছিস এসব? তোমার মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে! তুই চাকরি ছেড়ে দিবি মানেটা কি? তুই চাকরি ছেড়ে দিলে চাচাকে কে দেখবে? আমাকে প্রতি মাসে টাকা দিবে কে? তুই না অনেক শক্ত মনের অধিকারীনি হয়ে গিয়েছিলি। তবে আজ হঠাৎ এমন পাগলামি কেন করছিস? তুই জানিস না চাচা অনেক অসুস্থ। চাচা আগের মতো কাজ করতে পারে না। তুই টাকা না দিলে চাচার অনেক কষ্ট হবে। মেয়ে হয়ে বাবার কষ্ট দেখবি।

–টাকা দিয়ে সবকিছু কেনা গেলে-ও কখনো সুখ, শান্তি, ভালোবাসা, আদর কেনা যায় না আপু। আমি টাকা দিয়ে সবকিছু কিনতে পারছি। কিন্তু বাবা-মায়ের ভালোবাসা, আদর কিনতে পারছি না। আমি বাবা-মায়ের কাছে যেতে চাই আপু। এভাবে আর পালিয়ে থাকতে পারব না। আমার যা হয় হবে। আমি বাবা-মায়ের সামনে গিয়ে দাঁড়াবোই। আমি তো কোনো ভুল করিনি। তাহলে আমি কেনো এভাবে লুকিয়ে থাকব। আমি একটা কাপুরুষকে বিয়ে করতে পারিনি ঠিকি৷ কিন্তু আমি একটা ক্ষতি করে আরেকটা সফলতা অর্জন ঠিকি করেছি। আমি আমার সফলতা দিয়ে সবার মন জয় করে নিব।

–শোন মেহেভীন তুই এখন বাসায় আসিস না। আমি আগে চাচা চাঁচির মন নরম করে নেই। তারপরে তোকে বাসায় আসতে বলব। তোকে দেখে চাচা চাঁচি যদি অসুস্থ হয়ে যায়। তখন তুই কি করবি? নিজেকে ক্ষমা করতে পারবি তো মেহেভীন।

–আমার ভাগ্যে যা আছে। আমি মেনে নিয়েছি আপু৷ আমি যাব না আব্বু আম্মুর কাছে তুমি বলার পরেই যাব। কথা গুলো বলেই মেহেভীন নিরাশ হয়ে ফোন রেখে দিল। মানুষ একটা জায়গায় এসে ভিষণ অসহায় হয়ে পড়ে। আর সেই জায়গাটা হচ্ছে ভালোবাসা মানুষ পৃথিবীর সব জায়গায় পাথর হাতে পারলেও, ভালোবাসার জায়গায় এসে হেরে যায়। ভালোবাসা পেলে হয়ে যায় অবুঝ বাচ্চা। মেহেভীন ও তার ব্যতিক্রম নয়।

চারিদিকে বৃষ্টি পড়ছে। খোলা জানালা দিয়ে বাতাস বইছে। মেহেভীন খোলা জানালার পাশে গিয়ে দাঁড়াল। বৃষ্টির পানির ফোঁটা এসে মেহেভীনকে গভীর ভাবে আলিঙ্গন করে যাচ্ছে। মেহেভীন আঁখিযুগল বন্ধ করে আছে। তখনই এক জোড়া চোখ মেহেভীনের দিকে দৃষ্টিপাত করল। আঁখিযুগল যেন চোখের পলক ফেলতে ভুলে গিয়েছে। স্থীর নয়নে মেহেভীনকে পর্যবেক্ষণ করে যাচ্ছে। মেহেভীন আচমকা চোখ মেলতেই দু’জনের চোখাচোখি হয়ে যায়। মেহেভীন একজন সুদর্শন যুবককে দেখে বিস্ময় হয়ে পড়ে। দু’টো বছর পরে অবশেষে খোলা জানালার দক্ষিণের বাসাটায় কেউ আসলো। মুহুর্তের মধ্যে মেহেভীন আঁখিযুগল নামিয়ে নিল। দ্রুত হাতে জানালা লাগিয়ে দিল। তখনই কাজের মেয়েটা মেহেভীনকে উদ্দেশ্য করে বলল,

–আফা আপনি আপনার বোনের কথা শুনবেন না। আমার কেনো জানি আপনার বোনকে পছন্দ হয় না। মহিষের শিং যেমন মহিষের কাছে ভারি হয় না। ঠিক তেমনই বাবা-মায়ের কাছে সন্তান কোনোদিন বোঝা হয় না। আপনি সামনে গেলে আপনার বাবা-মায়ের সব রাগ পানি হয়ে যাবে। মেহেভীনের মুখশ্রী রক্তিম বর্ন ধারণ করল৷ সে রাগারাগি হয়ে বলল,

–রুপা তোমাকে কতবার বলেছি। আমার বোনের নামে বাজে কথা বলবে না। আমি যে এতদূর এসেছি। সেটা কার জন্য এসেছি। অবশ্যই প্রাপ্তি আপুর জন্য এসেছি। রুপা আর কিছু বলল না। মুখটা কালো করে রান্না ঘরের দিকে চলে গেল।

দীর্ঘদিন পরে নিজের চিরচেনা কক্ষে এসে শান্তির নিঃশ্বাস গ্রহণ করছে মুনতাসিম ফুয়াদ। মুখশ্রীতে তার একরাশ মুগ্ধতা। সে আরিয়ানকে দেখে শান্ত কণ্ঠে বলল,

–খোঁজ নাও মেয়েটা কে? কালকের মধ্যে আমার সবকিছুর খবর চাই।

–আপনি চিন্তা করবেন না স্যার। কালকের মধ্যে সব খবর আপনার সামনে চলে আসবে।

–তোমরা আমার সাথে থাকবে না। সব সময় আড়ালে থাকবে।

–স্যার এটা কিভাবে সম্ভব?

–আমি বলেছি মানে সবকিছু সম্ভব। মুনতাসিমের কথায় আরিয়ান দমে গেল। কোনো কথা না বলে কক্ষ থেকে বের হয়ে গেল। মুনতাসিম ফ্রেশ হয়ে এসে হাতে একটা বাটি নিয়ে মেহেভীনের বাসার উদ্দেশ্য রওনা দিল। দরজায় কলিং বেল বেজে উঠতেই রুপা এসে দরজা খুলে দিল। রুপাকে দেখে কিছুটা নারাজ হলো মুনতাসিম। সে গা-ছাড়া ভাব নিয়ে বাসার মধ্যে প্রবেশ করল। রুপা রাগান্বিত হয়ে বলল,

–আপনার মাথায় কি কোনো সমস্যা আছে। ভেতরে ভদ্রতা বলতে কিছু নেই। একটা মানুষের বাসায় হুট করে ঢুকে পড়লেন।

–আমি আপনার কাছে আসি নাই। তাই আপনার কাছে কৈফিয়ত দেওয়ার প্রয়োজন মনে করছি না। আপনি আপনার বাসার মালকিনকে ডাকুন। তার সাথে আমার কথা আছে।

–যা বলার আমাকে বলুন। আপাকে বলা মানে আমাকে বলা। আমি আর আপা দুই দেহ এক আত্মা।

–আমি তোমার আপাকে চুমু খেতে এসেছি। গালটা এগিয়ে দাও। তোমাকে চুমু খেয়ে চলে যাই। তুমি তোমার আপাকে বলে দিও। একজন এসেছিল আপনাকে চুমু খেয়ে গিয়েছে। মুনতাসিমের কথায় রুপা আঁখিযুগল গোল গোল করে তাকালো। সে রাগান্বিত হয়ে বলল,

–অসভ্য লোক আপনি জানেন আপনি কার বাসায় এসেছেন। আমি চাইলে আপনার কি অবস্থা করতে পারি। সে সম্পর্কে আপনার কোনো ধারনা নেই। চিৎকার চেচামেচি শুনে মেহেভীন কক্ষ থেকে বের হয়ে আসলো। মেহেভীনকে দেখে মুনতাসিম সালাম দিয়ে কুশল বিনিময় করল। মুনতাসিমের গিরগিটির মতো রঙ বদলে যেতে দেখে, রুপা বিস্ময় নয়নে মুনতাসিমের দিকে তাকিয়ে আছে। মেহেভীন গম্ভীর কণ্ঠে বলল,

–কিছু বলবেন ভাইয়া? মেহেভীনের মুখে ভাইয়া ডাকটা পছন্দ হলো না মুনতাসিমের। সে মুখশ্রী গম্ভীর করে ফেলল। কিন্তুটা থমথমে মুখে বলল,

–আপনার পাশের বাসায় আজকেই আমি এসেছি। সবকিছু নিয়ে এসেছি৷ বাসায় এসে দেখি লবন নিয়ে আসতে ভুলে গিয়েছি। যদি আমাকে একটু লবন দিতেন। তাহলে আমার উপকার হতো। আমি কালকে সকালেই আবার দিয়ে যাব। তখনই রুপা হুংকার ছেড়ে বলল,

–মিথ্যা কথা আপা সে আপনাকে চুমু খেতে এসেছে। আমার অনুমতি না নিয়ে বাসার মধ্যে চলে আসছে। রুপার মিথ্যা কথা বলার স্বভাব আছে। সেটা মেহেভীন জানে, সেজন্য মেহেভীন রক্তিম চোখে রুপার দিকে তাকালো। রুপা থামলো না বলতেই থাকলো,

–শুধু তাই না আপা সে আমাকে বলেছে। গাল এগিয়ে দাও। আমি চুমু খেয়ে চলে যাই।

–রুপা আর একটা বাজে কথা বললে আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না।

–আপনি আপনার কাজের মেয়েকে সঠিক শিক্ষা দিতে পারেননি। কখন কোথায় কি বলতে সেটা জানে না। আমি বোধহয় ভুল জায়গায় ভুল করে চলে এসেছি। মেহেভীন ভদ্রতা বজায় রেখে বলল,

–বাচ্চা মেয়ে বুঝতে পারেনি। আপনি আমার সাথে আসুন। আমি আপনাকে লবন দিচ্ছি। মুনতাসিম রুপার দিকে তাকিয়ে বলল,

–আপনি না তখন বললেন। আপনারা দুই দেহ এক আত্মা। তাহলে আপনার ব্যবহার এত বাজে কেন? আপনার আপার থেকে কিছু শিখতে পারেন না। কথা গুলো বলেই মেহেভীনের সাথে রান্না ঘরে চলে গেল। রুপা মনতাসিমের দিকে তাকিয়ে মুখ বাঁকাল। মানুষটাকে তার একদম পছন্দ হয়নি। মুনতাসিম ও যেন রুপাকে পছন্দ করেনি।

বহুদিন পরে প্রাপ্তি আসলো মেহেভীনদের বাসায়। প্রাপ্তিকে দেখেই রাইমা বেগম আর ফরিদ রহমান এগিয়ে আসলেন। রাইমা বেগম অসহায় কণ্ঠে বলল,

–কি রে মেহেভীনের কোনো খোঁজ পেয়েছিস? কতদিন হয়ে গেল মেয়েটাকে দেখি না। মাঝেমধ্যে মেয়েটার কথা ভাবলে দম বন্ধ হয়ে আসে। যে মেয়েটা একটা রাত আমাকে ছাড়া ঘুমোতে পারতো না। সেই মেয়েটা আজ কতগুলো দিন ধরে আমাকে রেখে দূরে আছে। তোর সাথে মেহেভীনের কথা হলে মেহেভীনকে বলে দিস। মেহেভীনকে আমরা মাফ করে দিয়েছি। সে যেন বাড়ি ফরি আসে। আমরা আমাদের মেয়েকে চাই। আমাদের আর কিছু চাই না। ফরিদ রহমান প্রাপ্তির হাত ধরে বলল,

–তোর সাথে মেহেভীনের গভীর সম্পর্ক। আমি জানি তোর আর মেহেভীনের যোগাযোগ আছে। মেহেভীন আমাদের সাথে কথা না বললেও তোর সাথে বলবেই। তুই মেহেভীনকে বাসায় চলে আসতে বল। কতদিন মেয়েটাকে দেখি না। না জানি কোথায় আছে মেয়েটা আমার। কি খায় কেমন আছে এসব কিছুই জানি না। প্রাপ্তি মলিন গলায় বলল,

–আমার মেহেভীনের সাথে কথা হয়েছে চাচা৷ মেহেভীনের সাথে কথা শেষ করেই তোমাদের বাসায় ছুটে এসেছি। আমাদের মেহেভীন অনেক ভালো আছে। সে তোমাদের মুখ দেখতে চায় না। আমাকে কি বলেছে জানো। বলেছে যে বাবা-মা তাদের সুখের জন্য আমাকে একটা কাপুরুষের হাতে তুলে দিতে পারে। সেই বাবা-মা তাদের স্বার্থের জন্য আমাকে খু’ন ও করতে পারবে। আমি আর তাদের কাছে ফিরে যাব না। আমি আমার পছন্দ করা ছেলেকে বিয়ে করে সুখী আছি। তোমার চাচা চাঁচিকে বলে দিও। তারা যেন আমাকে বৃথা খোঁজার চেষ্টা না করে। রাইমা বেগম উত্তেজিত হয়ে বললেন,

–মেহেভীন তো চাকরি করার জন্য পালিয়েছিল। সে বিয়ে কবে করল? সে যদি বিয়ে করেই থাকে। তাহলে তাকে বল ফিরে আসতে। আমরা ওর সবকিছু মেনে নিব। শুধু আমার মেয়েকে আমার বুকে দেখতে চাই মা৷

–চাঁচি তুমি তোমার মেয়েকে চাইলেই তো হবে না। তোমার মেয়েকেও তোমাদের চাইতে হবে। তোমার মেয়ে তোমাদের মুখ দেখতে চায় না। এসব কথা বলে আমাকে ব্লক লিস্টে ফেলে দিয়েছে। অন্য নাম্বার দিয়ে কল দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু সে সীম অফ করে রেখে দিয়েছে। এখন তুমি বলো আমি কি করব? মুনিয়া বেগমের শ্বাসকষ্ট আছে। মেয়ে তার মুখ দেখতে চায় না কথাটা কর্ণকুহর পর্যন্ত পৌঁছাতেই সমস্ত শরীর অস্থির হয়ে পড়ছে। যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে রাইমা বেগম মাটিতে বসে পড়লেন।

চলবে…..

পরের পর্বটি সবার আগে পড়তে পেইজটি ফলো করে সাথে থাকুন👉 গল্পের ভান্ডার

আরো সুন্দর সুন্দর গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন হতে ভুলবেন না👉 লেখক-লেখিকার গল্পের ভান্ডার�

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here