খোলা_জানালার_দক্ষিণে #পর্ব_২৭ #লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu

0
515

#খোলা_জানালার_দক্ষিণে
#পর্ব_২৭
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu

কাঁধে কারো কোমল হাতের স্পর্শ পেতেই মেহেভীনের দৃষ্টি তার দিকে দৃষ্টিপাত করল। রুপা মলিন মুখশ্রীতে মেহভীনের দিকে চেয়ে আছে। মেয়েটার চোখ দু’টি ভিষণ সুন্দর। যে কেউ তার মায়াবী চোখের প্রেম পড়তে বাধ্য হবে। এতটা নিখুঁত ভাবে মহান আল্লাহ তায়ালা রুপার আঁখিযুগল তৈরি করেছেন। রুপার মলিন মুখশ্রীর দিকে দৃষ্টিপাত করে মেহেভীনের ভিষণ মায়া হলো। মেয়েটা তার খারাপ সময়ে ছায়ার মতো পাশে থেকেছে। আর সে কি-না মেয়েটার সাথে জঘন্যতম ব্যবহার করল। মেহেভীন রুপার গালে আলতো ভাবে স্পর্শ করে বলল,

–আপার ওপরে রাগ করেছিস? মেহেভীনের কথায় রুপার আঁখিযুগল বেয়ে নোনাজল গড়িয়ে পড়লো। সে অশ্রুসিক্ত নয়নে মেহেভীনের দিকে দৃষ্টিপাত করে, দুই পাশে মাথা ঘুরিয়ে বোঝাল না। সে মেহেভীনের ওপরে রাগ করেনি। মেহেভীন আদুরে হাতে রুপার চোখের অশ্রুকণা গুলো মুছিয়ে দিল। রুপা দৃষ্টি নত করে দাঁড়িয়ে আছে। মেহেভীন রুপাকে উদ্দেশ্য করে কোমল কণ্ঠে বলল,

–তুই কাঁদিস না রুপা। তুই কাঁদলে আমি ভিষণ কষ্ট পাই। কতটা অসহায় অবস্থায় তোকে পেয়েছিলাম। এত গুলো দিন ধরে তোকে তিলে তিলে নিজের মন মতো গড়ে নিয়েছি। নিজের বোনের থেকে কম কিছু ভাবিনা তোকে। বোন হয়ে নিজের বোনাকে আঘাতপ্রাপ্ত করেছি। বল আমার কি শাস্তি হওয়া দরকার?

–আমি আপনার কথায় কষ্ট পাইনি আপা। আমি জানি আপনার মনের অবস্থা ভালো ছিল না। আপনার কোনো দোষ নেই। ভুলটা আমারই ছিল। আমি সবকিছু না জেনে শুনে আপনাকে আঘাত করেছি। আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন আপা। আপনি আমার সাথে কথা বলছেন না। আমার ভেতরটা রক্তাক্ত হয়ে যাচ্ছে আপা। আমি একটা কথাও বলব না। তবুও আপনি আমার সাথে আগের মতো কথা বলুন। রুপার কথায় মেহেভীনের বুকটা ভারি হয়ে আসতে লাগলো। সে একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে রুপায় মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,

–এসব নিয়ে ভাবিস না। আমার কাজে যেতে হবে। টেবিলে খাবার তৈরি কর। আমি আসছি। কথা গুলো বলেই কক্ষে এসে জামা বের করতে লাগলো। রুপা কোনো কথা না বলে কক্ষ থেকে বের হয়ে চলে গেল।

মুনতাসিম গভীর ভাবে কাগজ গুলোকে পর্যবেক্ষণ করছে। তাইয়ান উৎসুক দৃষ্টিতে মুনতাসিমের দিকে দৃষ্টিপাত করে আছে। তখনই মুনতাসিম তাইয়ানের দিকে কাগজ গুলো এগিয়ে দিল। তাইয়ান কাগজ গুলো হাতে নিতেই মুনতাসিম গম্ভীর কণ্ঠে বলল,

–ভালো করে দেখে বলবে সাইন টা কার? তাইয়ান নিখুঁত ভাবে কাগজ গুলো পর্যবেক্ষণ করে নিল। আঁখিযুগল আপনা-আপনি বড় হয়ে গেল। সে বিস্ময় নয়নে মুনতাসিমের দিকে দৃষ্টিপাত করে আছে। সে বিস্মিত কণ্ঠে বলল,

–স্যার আপনি বিয়ে করেছেন?

–তাইয়ান আমি তোমাকে সাইনটা দেখতে বলেছি। কে বিয়ে করেছে সেটা দেখতে বলিনি। তুমি যদি দেখতে না পারো। তাহলে আরিয়ানকে পাঠিয়ে দাও। আমি আরিয়ানকে দিয়ে দেখিয়ে নিচ্ছি।

–স্যরি স্যার আর কোনোদিন আপনার অপছন্দের কাজ করব না। সাইনটা দেখেই বোঝা যাচ্ছে সাইনটা আপনার। কিন্তু আপনি আমাকে আপনার সাইন দেখাচ্ছেন কেন?

–সাইনটা ভালো করে দেখ সাইনের গভীরতার মাঝে ডুবে যাও। তবুও এই সাইনের রহস্য তুমি উন্মোচন করো।

–স্যার আপনি নিজের সাইন চিনেন না?

–এতদিন আমার সাথে থেকে আমার সাইনই চিনলে না! তাহলে আমাকে কি ভালোবাসলে তাইয়ান?

–আপনি আমাকে ভুল বুঝছেন স্যার। এটা আপনারই সাইন।

–তুমি শিওর?

–জি স্যার।

–এখন তুমি আসতে পারো। আমি তোমার সাথে পরে কথা বলব। তাইয়ান বিলম্ব করল না। দ্রুত পায়ে কক্ষ ত্যাগ করল। মুনতাসিমও যেন বিশ্বাস করতে পারছে না। এটা তার সাইন নয়। এতটা নির্ভুল ভাবে কে তার সাইন নকল করল। সেটাই মস্তিষ্কে আসছে না। মুনতাসিম একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে পার্টি অফিসে যাওয়ার জন্য বেড়িয়ে পড়লো।

মেহেভীন খাবার খাচ্ছিল। এমন সময় রুপা মাহতাব উদ্দিনের দিয়ে যাওয়া কাগজটা মেহেভীনের সামনে রাখল। মেহেভীন পানি মুখের সামনে ধরে বলল,

–এটা কিসের কাগজ রুপা?

–আপনি পড়ে দেখেন আপা। ঐ যে মাহতাব উদ্দিন আছে না। যার জমির মিমাংসা আপনি করে দিয়ে ছিলেন৷ সে সকালে এসেছিল। তার বোন স্ট্রোক করেছেন। সেজন্য উনি অপেক্ষা করতে পারেননি। আপনাকে দেখে শুনে সাইন করতে বলেছেন। উনি বিকালে এসে কাগজ গুলো নিয়ে যাবেন৷ রুপার কথায় মেহেভীন কাগজ গুলো পড়তে লাগলো। তিনটা পেজ দেখেই বুঝতে পারল৷ এটা কোন জমির কাগজ সে রুপাকে উদ্দেশ্য করে বলল,

–এটা দিঘির পাশের জমি টার কাগজ জমিটা ভিষণ সুন্দর। তোর অনেক পছন্দের জমি ছিল তাই না রুপা। আল্লাহ যদি আমাকে বাঁচিয়ে রাখে। আমি একদিন কোনো এক দিঘির পাশে তোকে বাড়ি করে দিব। মেহেভীনের কথায় রুপা মনোমুগ্ধকর করে হাসি হাসলো। মেহেভীন কাগজ গুলোতে সাইন করে দিয়ে চলে গেল।

প্রভাতের আলো নিভে গিয়ে চারদিক আঁধারে আচ্ছন্ন হয়ে গিয়েছে। এই কয়দিনে প্রানবন্ত চৌধুরী বাড়িটা নিস্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। আগের মতো আনন্দ করতে যেন সবাই ভুলে গিয়েছে। প্রতিটি মানুষের মধ্যে নিস্তব্ধতা রাজত্ব করছে। ঘড়ির কাঁটায় রাত বারোটা ছুঁই ছুঁই। তখনই মুনতাসিম বাসার মধ্যে প্রবেশ করে। ভেতরটা একদম চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গিয়েছে। ভেতরটা জানে কতটা অসহ্য যন্ত্রনা নিয়ে সে ঘুরে বেড়ায়। তার শত্রুরা যদি তার মনের খবর জানতো। তাহলে দূর থেকে আঘাত না করে কথার আঘাতে ধরণীরর বুক থেকে তাকে মুছে ফেলত। কাগজ গুলো তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে মুনতাসিম। আজ নিজের কক্ষে যেতে ইচ্ছে করল না। যখন সব দুঃখ কষ্ট সহ্য সমী পেরিয়ে যায়। তখনই সে বাবার কাছে চলে আসে। এই মানুষ টার মুখশ্রীর দিকে দৃষ্টিপাত করলেই জীবনের অর্ধেক দুঃখ কমে যায়। আরো কয়টা দিন বেশি বাঁচতে ইচ্ছে করে। মুনতাসিমকে নিজের কক্ষের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে, রিয়াদ চৌধুরী খবরের কাগজ রেখে ছেলের দিকে মনযোগ দিলেন। মুনতাসিম ক্লান্ত শরীরে বাবার পাশে এসে বসল। কোমল কণ্ঠে বলল,

–আজ রাতে আমি আপনার সাথে ঘুমোতে পারি?

–অনুমতি নেওয়ার কি আছে! তুমি চাইলে আমার সাথে প্রতিদিন ঘুমোতে পারো।

–আপনার বউয়ের কোনো সমস্যা হবে না?

–সে তোমার মা হয়।

–আমার মা ম’রে গিয়েছে। যাকে তাকে আমার মায়ের সাথে তুলনা দিবেন না৷ রিয়াদ চৌধুরী দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন। ছেলেকে রাগানো উচিৎ হবে না। হঠাৎ কি এমন হলো যে ছেলেটার বুক এতটা ভারি হয়ে গেল। এত শক্ত একটা মানুষ যখন ভেঙে পড়ে। তখন রিয়াদ চৌধুরীর বুকটা হাহাকার করে উঠে। সে কোনো কথা না বলে, গম্ভীর হবার ভান ধরে চশমা খুলে শুয়ে পড়লেন। মুনতাসিম কোনো কথা না বলে বিছানায় উঠে বাবার এক হাতের ওপরে মাথা রেখে বাবাকে জড়িয়ে ধরে আঁখিযুগল বন্ধ করে রাখল। মুনতাসিম ঘন ঘন নিঃশ্বাস নিচ্ছে। দেখে বোঝা যাচ্ছে মানুষটার দম নিতে ভিষণ কষ্ট হচ্ছে। না চাইতেও রিয়াদ চৌধুরী আঁখিযুগলের কোণে অশ্রুকণা চলে আসলো। সে নরম কণ্ঠে বলল,

–তোমার কি হয়েছে? আমারে বলা যাবে?

–কিছু হয়নি আব্বু। বরাবরের মতোই হতাশ হলেন রিয়াদ চৌধুরী। ছেলের পেটে বো’মা মারলেও নিজের দুর্বলতার কথা কারো সাথে শেয়ার করবে না। ঠিক তার মায়ের মতো গুন পেয়েছে। তাকে ভেতর থেকে চূর্ণবিচূর্ণ করে ফেলা গেলে-ও তা বাহিরে প্রকাশ পায় না। সেজন্য লোকে ভাবে তার কোনো দুঃখ নেই। সে সর্বদা সুখী মানুষ। তার কখনো কষ্ট হয় না। লোকে কি জানে না। সে রোজ দুঃখ মেশানো হাসিতে মগ্ন থাকে। ভেতরটা রক্তাক্ত হয়ে আছে। ক্ষতটা শুকানোর বদলে দিন দিন তাজা হয়ে উঠছে। রিয়াদ চৌধুরী ছেলের চুল গুলোতে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। তিনি কিছুটা হাত বাড়িয়ে ছেলেকে বুকের মধ্যে টেনে নিয়ে আসলেন। পরম যত্ন সহকারে ছেলের ললাটে চুমু দিলেন। বাবা ছেলের এমন আদুরে দৃশ্য দেখে মনের অজান্তেই সাহেলা চৌধুরীর মুখশ্রীতে হাসি ফুটে উঠল। ঘুমানোর জন্য নিজের কক্ষে আসতেই মুনতাসিমকে দেখে দরজা কাছে দাঁড়িয়ে যায়। সে বাবা ছেলেকে বিরক্ত না করেই দরজা ভিড়িয়ে দিয়ে চলে গেল। সারাদিন এই ছেলেটার সাথে সে যুদ্ধ করে। ছেলেটা যখন শান্ত হয়ে যায়। তখন না চাইতেও মুনতাসিমের জন্য তার বুকের ভেতরটায় মোচড় দিয়ে উঠে।

শেহনাজ ফোন কথা বলছিল। তখন সাহেলা চৌধুরী আসে তার কক্ষে। মাকে দেখে মুখশ্রী কুঁচকে যায় তার। যখন সে শুনলো সাহেলা চৌধুরী তার সাথে ঘুমাবে। তখনই শেহনাজের মুখশ্রীতে আঁধার ঘনিয়ে এল। সে গম্ভীর মুখশ্রী করে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়ল।

রজনীর মধ্য প্রহরে ছাদ থেকে কারো বাক্য কর্ণকুহরে আসতেই তাইয়ান সেদিকে মনোযোগ প্রদান করল। সে স্পষ্ট ভাবে অনুভব করতে পারছে কণ্ঠটা কার। সে খুব নিখুঁত ভাবে মুনতাসিমের সব খবর পাচার করছে। কিভাবে মুনতাসিমকে ধরনীর বুক থেকে মুছে ফেলা যায়। সেই পরিকল্পনা চলছে। পর মানুষ শত্রুতা করলে সেখানে সাহস সঞ্চয় করে তাদের সাথে যুদ্ধ করা যায়। কিন্তু ঘরের মানুষ যখন শত্রুতা শুরু করে দেয়। তখন অর্ধেক জীবন আগেই ম’রে যায়। যতটুকু বেঁচে থাকে কাছের মানুষের আসল রুপ সামনে আসার পর সেটুকু ও ম’রে যায়। তার শরীরে নিঃশ্বাস থাকা অবস্থায় মুনতাসিমের কোনো ক্ষতি সে করতে দিবে না। সে বড় বড় পা ফেলে ছাদে প্রবেশ করল। তাইয়ানকে দেখেই মানুষটা ভয়ার্ত দৃষ্টিতে তাইয়ানের দিকে দৃষ্টিপাত করে আছে। সে বিস্ময় কণ্ঠে বলল,

–তুমি এখানে কি করছ?

–একই প্রশ্ন আমিও তোমাকে করতে পারি।

–সামান্য একজন গার্ড হয়ে আমার মুখে মুখে কথা বলছ?

–যেখানে আমাকে স্যারকে রক্ষা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সেখানে স্যারের ক্ষতি দেখলে আমি কথা বলবই। তোমার কোনো অধিকার নেই। আমার সাথে এভাবে কথা বলার। তুমি নিজেও জানো না। আমি চাইলে তোমার কি কি করতে পারি। তাইয়ানের কথায় মানুষটা জ্বলে উঠল। সে বজ্রকণ্ঠে বলল,

–তোমাকে একদম জ্যা’ন্ত পু’তে ফেলবো। কেউ টের পাবে না। আমার সাথে লাগতে এসো না। ভালোবাসি বলেই তোমার বাড়াবাড়ি সহ্য করি। মানুষটার কথা শুনে তাইয়ান ভুবন ভুলানি হাসি হাসলো। তা দেখে মানুষটার মুখশ্রী বিরক্তিতে কুঁচকে এল। তাইয়ান মানুষটাকে ওয়ারনিং দিয়ে ছাদ থেকে চলে আসলো। সে মানুষটার সাথে কথা বলে দুর্বল হতে চায় না। পৃথিবীর সব মানুষ একদিকে আর মুনতাসিম তার কাছে একদিকে। মুনতাসিমের জন্য সে নিজের জীবন দিতেও প্রস্তুত।

প্রভাতের আলো ফুটতেই মুনতাসিমের ঘুম ভেঙে গেল। রিয়াদ চৌধুরীকে জড়িয়ে ধরে সারারাত ঘুমিয়ে ছিল। রিয়াদ চৌধুরী পরম যত্নে ছেলেকে বুকের মধ্যে জড়িয়ে রেখেছেন। কখন যে সে ঘুমিয়ে গিয়েছিল তা তার জানা নেই। মায়ের পর এই মানুষ টাই তাকে অসম্ভব রকমের ভালোবাসে। তার ভুল গুলো অন্যায় গুলো ক্ষমা করে দেয়। প্রচন্ড খারাপ ব্যবহার করার পরে-ও রিয়াদ চৌধুরী এসে ছেলের সাথে আগে কথা বলেন৷ বাবারা বুঝি এমনই হয়৷ সেজন্য বাবাকে বটগাছের ছায়া বলা বলা। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ নিরাপদ হচ্ছে বাবার বুক। তা মুনতাসিম যত দিন যাচ্ছে। ততই উপলব্ধি করতে পারছে। সময়ের সাথে বাবার নামে করা অভিযোগ গুলো মিথ্যা হয়ে যাচ্ছে। সে বদলে যাইনি পরিস্থিতি তাকে চুপ থাকতে শিখিয়ে দিয়েছে। সে তো আর একা তার সন্তান নয়। তার প্রতি যেমন রিয়াদ চৌধুরীর দায়িত্ব আছে। ঠিক তেমনই বাকি সন্তানদের প্রতিও তার দায়িত্ব আছে। মুনতাসিম কোনো কথা না বলে বিছানা ছাড়ল। তখনই রিয়াদ চৌধুরীর কিছু কথা কর্ণকুহরে এসে পৌঁছাল। মুনতাসিম বুঝল সে আগেই উঠেছে। মুনতাসিমের জন্য শুয়ে ছিল।

–আপনি যেটা বলছেন সেটা আমার পক্ষে সম্ভব নয়৷ আমার সন্মানে যে কলঙ্ক লাগাতে চেয়েছে। আমি তার সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করব। কথা গুলো বলেই চলে গেল মুনতাসিম। রিয়াদ চৌধুরী ছেলের কথায় একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন।

আজ শুক্রবার মুনতাসিমের আজকে ভিষণ করে বাড়ি ছাড়তে ইচ্ছে করছে। যেতে চেয়েছিল না সেই চেনা নীড়ে। কিন্তু অবাধ্য মনটা নিজের হয়েও অন্যের জন্য সব সময় মরিয়া হয়ে থাকে। সে কোনো কথা না বলে তাইয়ানকে গাড়ি বের করতে বলল৷ দীর্ঘ সময় পথ পাড়ি দিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে এসে পৌঁছে গেল। মুনতাসিম বাসার দিকে না গিয়ে মাঠের দিকে যেতে লাগলো। তখনই তাইয়ান অস্থির হয়ে প্রশ্ন করল,

–আপনি ওদিকে কোথায় যাচ্ছেন স্যার?

–টয়লেটে যাচ্ছি যাবে। তোমরা সব সময় চিনি জোঁকের মতো আমার সাথে লেগে থাকো কেন? আমার প্রাইভেসি বলতে কিছু নেই! চলো গিয়ে দেখবে আমি টয়লেটের মধ্যে গিয়ে কি করি। তোমরাও আমার মতো সেই প্রসেস ব্যবহার করবে। কোন দুঃখে রাজনীতিতে এসেছিলাম আল্লাহ তায়ালা ভালো জানেন। জীবনে ঝামেলার কোনো শেষ নেই। বিরক্তিতে মুখশ্রী কুঁচকে ফেলল মুনতাসিম।

–আপনি হুকুম করলে আমরা আপনার সাথে টয়লেটে যেতেও রাজি স্যার। আমরা আমাদের দায়িত্ব অবহেলা করতে পারিনা। তাইয়ানের কথায় মুনতাসিম রক্তিম চোখে তাইয়ানের দিকে দৃষ্টিপাত করল। বজ্রকণ্ঠে তাইয়ান বলে গর্জন করে উঠল। তাইয়া মাথা নুইয়ে ধীর কণ্ঠে বলল, “স্যরি স্যার।

চলবে……

(সব রহস্য সামনে নিয়ে আসব বলেই সবাইকে সামনে নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। বেশি অধৈর্য হলে গল্প শেষ হলে পড়বেন। আর কিছু কথা বলি। আপনারা যে বলছেন। মেহেভীন এমন প্রফেশনে থেকেও মানুষ চিনতে ভুল করছে। কাকে চেনার কথা বলছেন? যে বাবা জন্ম দিয়েছে তাকে নাকি যে বোন তাকে সর্বদা বিপদ থেকে রক্ষা করেছে সেই প্রাপ্তিকে। নাকি যে মেয়েটা মেহেভীনের দুঃখ সময়ে তাকে সঙ্গ দিয়েছে তাকে। আপনারা নিজেরাই বলুন। আপনার বাবা মা বা বোন হঠাৎ করেই রুপ বদলে ফেলল। তখন আপনারা কি করবেন? বিশ্বাস করতে চাইবেন। যে তারা এমন বলতে পারে বা করতে পারে। বাহিরের লোকের সাথে কঠিন ভাবে লড়াই করা যায়। কিন্তু ঘরের লোকের সাথে লড়াই করা এত সহজ কাজ নয়৷ অন্যের মন্তব্যের সাথে তাল মিলাবেন না। নিজ মতামতে মন্তব্য করবেন। প্রাপ্তিও এমনি এমনি খারাপ হয়নি৷ প্রাপ্তিও কাহিনি আছে। সেগুলো সামনে ক্লিয়ার করব। আর একটা কথা আমাদের দেশে দেখবেন, বাসার মালিকরা প্রায় বেশি ভাগ মানুষ কাজের লোকদের একটু বেশিই বিশ্বাস করে। মেহেভীনও তার বাহিরে যাইনি। ধৈর্য ধরুন। ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। সবাই রেসপন্স করবেন।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here