#খোলা_জানালার_দক্ষিণে
#পর্ব_২৮
#লেখিকা_Fabiha_bushra_nimu
শীতল হাওয়া এসে মুনতাসিমের শরীর স্পর্শ করে যাচ্ছে। শরীরে শীতের কাপড় না থাকায় কেঁপে কেঁপে উঠছে মুনতাসিম। চারদিকে আঁধার ঘনিয়ে আসতে শুরু করেছে। বুকের মধ্যে অশান্ত নদীর মতো উথাল-পাতাল করছে। মাঠের পাশে নদীটা কেমন থম মেরে গিয়েছে। মুনতাসিমের অবস্থা দেখে তাইয়ানের ভিষণ খারাপ লাগছে। তবুও প্রকাশ করতে পারছে না। মুনতাসিমকে কোনো কথা বলা মানে, নিজের ক্ষতি নিজে করা৷ মুনতাসিম রেগে যদি তাকে দূর সরিয়ে দেয়। তখন সে কিভাবে মুনতাসিমকে আগলে রাখবে। মানুষ টা সামনে বড় ধরনের একটা ধাক্কা খাবে। কথা গুলো ভাবতেই তাইয়ানের বুকটা ভারি হয়ে আসতে শুরু করল। সে একটা দীর্ঘশ্বাস নিয়ে মুনতাসিমকে উদ্দেশ্য করে বলল,
–আপনার কি ম্যাডামের সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করছে স্যার? আপনি ম্যাডামকে ম্যাসেজ দিয়ে নিচে আসতে বলুন। আপনি মেসেজ করলে ম্যাডাম নিশ্চই আপনার কাছে আসবে।
–কথা বলতে ইচ্ছে করলে-ও মেসেজ দিতে ইচ্ছে করছে না। আত্মসম্মান বলেও একটা ব্যপার আছে।
–আপনি অনেক শক্ত মনের মানুষ স্যার। আমি হলে জীবনে ও পারতাম না।
–এই যে আমি নিজের সাথে যুদ্ধ করতে করতে বিলীন হয়ে যাচ্ছি। সে কথা আমি কাকে বলবো? মুনতাসিমের কথায় তাইয়ান বাকরুদ্ধ হয়ে গেল। মানুষটা কথা বলে না বলে না। আবার যখন বলতে শুরু করে। জবাব দেওয়ার এতটুকু জায়গা থাকে না। তাইয়ান নিস্তব্ধ হয়ে গেল। মুনতাসিম তা দেখে মুচকি হেসে বলল,
–এত অল্পতে ভেঙে পড়লে চলবে। তুমি যাকে ভালোবাসো সে তো আরো গভীর জলের মাছ। তোমার দুর্বলতার কথা জানলে, তোমাকে এক নিমিষেই চূর্ণবিচূর্ণ করে দিবে। এমন দুর্বল মানুষ আমার চাই না তাইয়ান। আমার মনে হয় আমার থেকে তোমার দূরে যাওয়া উচিৎ। তুমি না পারবে ভালোবাসাকে আঘাত করতে আর না পারবে আমাকে আঘাত করতে। তোমার এখন একটা নিরপেক্ষ স্থানে যাওয়া দরকার। মুনতাসিমের কথায় তাইয়ানের সমস্ত শরীর কেঁপে উঠল। সে বিস্ময় নয়নে মুনতাসিমের দিকে দৃষ্টিপাত করে আছে। তার মানে মুনতাসিম সবকিছুই জানে, আর সে ভেবেছে কিছুই জানে না। মুনতাসিম তাকে এমনি এমনি বোকা বলে না। সেই আসলেই বোকা। মুনতাসিম আসলেই অসাধারণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী। সেজন্যই মানুষ তাকে এতটা ভালোবাসে। সে মনকে পাথরের ন্যায় কঠিন করে নিল। কণ্ঠে কাঠিন্যতা বজায় রেখে বলল,
–আমি পৃথিবীর সবকিছুর উর্ধ্বে গিয়ে আপনার পাশে থাকতে চাই স্যার। আমার ভালোবাসার থেকে আপনি আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আপনার পাশে থেকে আমার লা’শ বের হয়ে যাবে। তবুও আমি জীবিত থাকা অবস্থায় আপনার থেকে এক সেকেন্ডের জন্যও দূরত্ব তৈরি করব না। মুনতাসিমের অধরের কোণে আগের ন্যায় হাসি বিরাজ করছে। মুনতাসিম এভাবে হাসলে তাইয়ানের কেন জানি ভিষণ ভয় লাগে। সে খারাপ কিছুর আভাস উপলব্ধি করতে পারছে। কেউ যে হাসির মধ্যে দিয়েও কারো অন্তর আত্মা কাঁপিয়ে তুলতে পারে। সেটা মুনতাসিমকে না দেখলে সে জানতেই পারত না।
–আমার কক্ষটা পরিষ্কার করতে বলো তাইয়ান। আমি আজকে এখানেই থাকব। আর মেহেভীন যেন কোনো অবস্থাতেই আমার গৃহের সামনে আসতে না পারে। সে দিকে খেয়াল। সে আসতে চাইলে তাকে যেন দূরেই বিদায় করে দেওয়া হয়। একটু পুড়ে দেখুক পুড়তে কতটা আনন্দ লাগে। তাইয়ানের কথা বলার সাহস হলো না। সে কিছু গার্ডদের ডেকে বাড়িটা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে দিতে বলল।
চন্দ্র তার আলো ধরনীর বুকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিয়েছে। চারদিক করে তুলেছে মনোমুগ্ধকর। হিম শীতল হাওয়া বইছে। মেহেভীন জানালা লাগানোর জন্য, জানালার কাছে আসতেই কিছু সময়ের জন্য থমকে গেল। মানুষটা তবে ফিরল তার চেনা নীড়ে। কত গুলো দিন ধরে ফোন করেছে সে। তার কর্ণে একটি বাক্যই এসেছে। মেহেভীন কিছুক্ষণ নিষ্পলক চাহনিতে বাসার দিকে চেয়ে থাকলো। অনুভূতিরা আনন্দে মেতে উঠল। এবার সে মানুষটার রাগ ভাঙিয়েই ছাড়বে। মনের শহরে আনন্দের মিছিল শুরু হয়ে গিয়েছে। মেহেভীন জানালা লাগিয়ে শরীর চাদর মুড়িয়ে বাসার বাহিরে আসলো। তাইয়ান জানালার কাছে মেহেভীনকে দেখেছিল। সে দ্রুত কক্ষ থেকে বের হয়ে মেহেভীনের গৃহের সামনে আসলো। তাইয়ানকে দেখে মেহেভীন অবাক হলো! মেহেভীন কিছু বলার আগেই তাইয়ান বলল,
–আপনি এখন স্যারের কাছে যাবেন না ম্যাডাম। স্যার আপনার ওপরে ভিষণ ভাবে রেগে আছে। স্যারের রাগটা পড়ুক। তারপর না হয় স্যারের সাথে দেখা করবেন।
–আমি বেশি সময় নিব না। তার সাথে কিছু কথা বলেই চলে আসব।
–স্যরি ম্যাডাম বেয়াদবি মাফ করবেন। স্যারের কড়া নির্দেশ আছে। আপনাকে যেন স্যারের গৃহের দরজা
তেও আসতে দেওয়া না হয়। আমরা আপনাকে ওদিকে যেতে এলাও করব না। মেহেভীন কিছুক্ষণের জন্য স্তব্ধ হয়ে গেল। বুকটা ভারি হয়ে আসতে শুরু করল। ভেতরটা জ্বলতে শুরু করে দিয়েছে। মানুষ টাকে সে কতটা বাজে ভাবে পুড়িয়েছে। আজ যখন নিজের বেলা এসেছে। তখনই গভীর ভাবে যন্ত্রনাটা অনুভব করতে পারছে। অনুভূতি দিয়ে যন্ত্রনা গুলোকে খুব কাছ থেকে স্পর্শ করতে পারছে। কথা গুলো কণ্ঠলানিতে এসে আঁটকে গিয়েছে। তাইয়ানের সাহস হলো না মেহেভীনের দিকে দৃষ্টিপাত করার৷ দু’জন মানুষ দু’জনকে এতটা ভালোবাসার পরে-ও তাদের মাঝে এক আকাশ সমান দূরত্ব। ভালো নেই কেউ। তবুও যেন হার না মানার খেলায় মেতে উঠেছে। ভালোবাসার ভিত হচ্ছে বিশ্বাস। সেটা যদি দুর্বল থাকে সেটা শক্ত করার জন্য হলে-ও পুড়তে হবে। তাইয়ান বিলম্ব করল না। দ্রুত পায়ে স্থান ত্যাগ করল। মেহেভীন একবার দরজার দিকে দৃষ্টিপাত করল। বুক ভরা হাহাকার নিয়ে নিজের গৃহে ফিরে গেল।
তাইয়ান চুপিসারে গৃহে প্রবেশ করল। মুনতাসিম যেন টের না সেজন্য সোজা নিজের কক্ষের দিকে অগ্রসর হলো। কথায় থাকে না। যেখানে বাঘের ভয় সেখানেই সন্ধ্যা হয়। মুনতাসিম তাইয়ানের বিছানায় বেশ আয়েশি ভঙ্গিতে বসে আছে। তাইয়ানকে দেখে গম্ভীর কণ্ঠে বলল,
–ঘরের কথা পরকে বলা আমি পছন্দ করি না। প্রথম বার ভুল করেছ। মাফ করে দিলাম। এমন ভুল যেন দ্বিতীয় বার না করা হয়। সমস্ত তথ্য প্রমাণ জোগাড় করেছ?
–জি স্যার।
–আর সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সমস্ত ভিডিও মুছে ফেলা হয়েছে তো? এক চুল পরিমাণ সেই ঘটনা নিয়ে কোনো বর্ণনা নেই তো।
–কোথাও নেই স্যার সব জায়গা থেকে মুছে ফেলা হয়েছে। এখন যদি কারো ফোনে সেভ থাকে। তবে সেটা থাকলে থাকতে পারে। কিন্তু সে-সব ভিডিও যদি কেউ প্রচার করার চেষ্টা করে। তাহলে তার জেল হয়ে যাবে। কারো ফোনে কোনো ভিডিও থাকলে, সেটা প্রশাসনের চোখে পড়লে কঠিন শাস্তি পেতে হবে তাকে। তাই কাজেই এসব নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কোনো কারণ নেই।
–তোমাকে কে বলল আমি দুশ্চিন্তা করছি?
–স্যরি স্যার।
–কালকে যেন টপ নিউজে থাকে সেদিনের অধিকাংশ ঘটনাই সব মিথ্যা। আশা করি আমাকে বেশি কিছু বলতে হবে না। সকাল সকাল যেন খবরটা দেখতে পারি। ঘরের লোককে আমি বাসায় গিয়ে দেখে নিব। মুনতাসিমের কথায় তাইয়ানের মুখশ্রীতে আঁধার ঘনিয়ে এল। সে মলিন মুখশ্রী করে মুনতাসিমকে সম্মতি জানালো। মুনতাসিমের মন মতো কাজ হয়ে যাবে। আজকে মুনতাসিমের নিজেকে বেশ হালকা লাগছে। বুকের মধ্যে বসে থাকা ভারি পাথরটা মুহুর্তের মধ্যে নেমে গেল। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে তাইয়ানের কক্ষ থেকে বের হয়ে গেল সে।
রজনীর আঁধার কেটে গিয়ে প্রভাতের আলো ধরনীকে করেছে আলোকিত। চারদিক কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে আছে। শীত কাল মেহেভীনের ভিষণ প্রিয়। যেখানে মানুষ শীতের ভয়ে কম্বলের নিচে থেকে বের হতে ভয় পায়। সেখানে মেহেভীন রোজ সকালে ঘাসের ডগায় জমে থাকার শিশির বিন্দু গুলো ছুঁয়ে দেখে। মাঝেমধ্যে জুতা খুলে ভিজিয়ে নেয় দু’টি চরণ। আজকেও বের হয়েছিল মেহেভীন। কিছুদূর যেতেই রাস্তার মাঝখানে কাউকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলো। মানুষটা দাঁড়িয়ে কারো সাথে কথা বলছে। মানুষটাকে চিনতে এতটুকুও সময় নিল না মেহেভীন। ধীর গতিতে মুনতাসিমের কাছে এগিয়ে গেল। কোমল কণ্ঠে বলল,
–কেমন আছেন?
–মানুষ মনে আঘাত করে শরীরের খবর নেয়। এত সুন্দর অভিনয় মানুষের দ্বারাই সম্ভব।
–মুনতাসিম।
–ডোন্ট কল মি মুনতাসিম অ্যাট অল। জাস্ট কল মি স্যার। উইল রিমেম্বার। মুনতাসিমের কথায় স্তব্ধ হয়ে গেল মেহেভীন। বুকের মধ্যখানে ভিষণ যন্ত্রনা হচ্ছে। মেহেভীনকে উপেক্ষা করে মুনতাসিম গৃহের দিকে চলে গেল। মেহেভীন পাথরের ন্যায় দাঁড়িয়ে রইল। দম বন্ধ হয়ে আসতে চাইছে। মানুষটা যে তার সাথে কথাই বলতে চাইছে না। সে কিভাবে মানুষ টার রাগ ভাঙাতে সক্ষম হবে।
মুনতাসিমের মনটা মুহুর্তের মধ্যে বিষাদে পরিপূর্ণ হয়ে গেল। প্রিয় মানুষ গুলো কি জানে না। তাদের আঘাত করার পরে ওপর প্রান্তের মানুষ আঘাত করা মানুষটার থেকে বেশি পুড়ে। তাহলে জেনে শুনে কেন সামনে আসে? এই যে সে মেহেভীন কে আঘাত করল। মেহেভীনকে পোড়াতে চাইল। এখন সে মেহেভীনের থেকে দশগুণ পুড়ছে। সে মানুষ টাকে যতটা আঘাত করল। সেই কথা মনে হতেই ভেতরটা জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে যায়। মুনতাসিম গাছের কাছে থাকা বেঞ্চে বসলো।
“বুঝেছেন ম্যাডাম। আপনাকে ভালোবেসে আপনার কাছেই সস্তা হয়ে গেলাম। আপনাকে বেশি দাম দিতে গিয়ে নিজের দামই কমিয়ে ফেললাম। আমার মান অভিমান, রাগ কখনো আপনার হৃদয় স্পর্শ করেনি। তাই রাগ ভাঙাতে আসলেন না। আপনি হয়তো বুঝেই গিয়েছেন। আমি আপনাকে কোনোদিনই ছাড়ব না। আমি এতটা সস্তা আপনার কাছে হতে চাইনি। আমি চাইনি আপনার কাছে সহজলভ্য হয়ে যেতে। আমি আপনাকে একটু বেশিই ভালোবেসেছি। তাই এতটুকু শাস্তি আমার প্রাপ্য ছিল। আপনি তো আমায় কোনোদিনই ভালোবাসেননি। দোষ তো আমারই আমি আপনাকে ভালোবেসেছি। পুড়তে হলে আমি পুড়ব। জানেন ম্যাডাম বেশি ভালোবেসে ফেলার মতো বড়ো দোষ আর নেই। মুনতাসিমের ভাবনার মাঝেই তাইয়ান বলল,
–স্যার গাড়ি বের করেছি। আমাদের ফিরতে হবে। মুনতাসিম বিলম্ব করল না। দ্রুত পায়ে গাড়িতে উঠে বসলো। এখানে আর কিছুক্ষণ থাকলে বোধহয় নির্লজ্জ তার পরিচয় দিয়ে বসবে। ছুটে যাবে মেহেভীনের কাছে। নিজেকে এতটা সস্তা বানানো ঠিক হবে না। মেহেভীনের উপলব্ধি করা উচিৎ। সে মুনতাসিমকে কি ভাবে আর মুনতাসিম আসলে কি। কথা গুলো ভাবছিল মুনতাসিম। গাড়ি ছুটে চলেছে তার নিজ গন্তব্যে। শীতের সকাল হওয়ায় গাড়িঘোড়া তেমন নেই। সবাই নিদ্রা দেশে তলিয়ে আছে।
ঘড়ির কাঁটায় সাড়ে আটটা বাজে রুপা কাজ শেষ করে সিরিয়াল দেখতে বসেছিল। তার পছন্দের সিরিয়াল শুরু হতে দেরি আছে। তাই সে গানের চ্যানেল খু্ঁজছিল তখনই খবরের চ্যানেলে এসে আঁটকে যায়। খবর দেখে রুপার আঁখিযুগল আপনা-আপনি বড়ো বড়ো হয়ে গেল। সে দ্রুত মেহেভীনকে ডেকে নিয়ে আসলো। মেহেভীন খবর শুনে মলিন হাসলো। এমনটা হবার কথাই ছিল। সে আগেই বুঝেছিল জীবনের সবচেয়ে বড়ো ভুলটা সে করেছে।
–রুপা তোর ফোনটা একটু দে তো। রুপা নিজের কক্ষ থেকে ফোনটা নিয়ে এসে মেহেভীনের হাতে দিল। মেহেভীন রুপার ফোনটা নিয়ে নিজের কক্ষে চলে গেল। মুনতাসিমের নাম্বার বের করে ফোল দিল। দু’বার ফোন বেজে কেটে গেল। তৃতীয় বারের বেলায় মুনতাসিম বিরক্ত হয়ে ফোন তুলল।
–অনুগ্রহ করে ফোন কাটবেন না স্যার। আমি আপনার সাথে কয়টা কথা বলেই রেখে দিব। কথা দিচ্ছি এতটুকু বিরক্ত করব না। মুনতাসিমের মুখশ্রীতে তাচ্ছিল্য ফুটে উঠল। বুকের মধ্যে উথাল-পাতাল করেছে। এমন একটা মুহুর্তের জন্য কতই না ছটফট করেছে সে। অথচ আজ সে দিনটি চলে আসলো। কিন্তু মুনতাসিমের কথা বলার উপায় নেই। মুনতাসিম কঠিন গলায় বলল,
–আপনার মতো ভালো মেয়ের আমার মতো চরিত্রহীন পুরুষের সাথে কথা বলা মানায় না। তাছাড়া আমার এত সময় নেই অযথা সময় নষ্ট করার। আপনার কাছে নিজেকে বেশি সস্তা বানিয়ে ফেলছিলাম। সেজন্য এতদিন আমাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে গিয়েছেন। আজ থেকে প্রতিটি মুহুর্তে আপনাকে বোঝাব। আমি আসলে কি ছিলাম। আমাকে ভাঙার মতো সাধ্য সৃষ্টিকর্তা ছাড়া আর কারো নেই। যে আমাকে ভাঙবে। তার কাছে আমি স্বেচ্ছায় টুকরো হয়ে যাই। আমার মতো খারাপ মানুষ দূরত্ব যদি আপনায় ভালো রাখে, সুখে রাখে। তাহলে এই দূরত্ব আকাশ পাতাল সমান হোক। তবুও আমার আপনার সুখ হোক। এমনিতেই আপনার পেছনে অনেক সময় অপচয় করে ফেলছি। আমার সময় এত বেশি হয়নি। যে যার তার পেছনে অপচয় করব। কথা গুলো বলেই মুনতাসিম কল কেটে দিল। মেহেভীন আবার ফোন দেওয়ার চেষ্টা করল। তবে এবার ফোন বন্ধ দেখালো। মানসিক আঘাতের চিহ্ন থাকে না বলেই দুই প্রান্তের মানুষ আঘাত লুকিয়ে হাসছে। কিন্তু ভেতরটা যে পুড়ে কয়লা হয়ে গিয়েছে। মানুষ কি সে খবর রাখে?
চলবে…..
(আমি বুঝিনা ৯৯০ তে আসলেই ১০ টা রেসপন্স ঝড়ের গতিতে কোথায় থেকে চলে আসে। আজ ফাঁকি দিতে চাইছিলাম। কিন্তু আপনাদের কাছে হার মেনেছি। সবাই রেসপন্স করবেন। কিছু কিছু পাঠক এমন আচরন করে রাতে গল্প দিতে চাইলেন। এই তার নমুনা। রাত কি হয়নি। আচ্ছা রাত কি চলে গিয়েছে। রাত চলে গেলে বললে মেনে নেওয়া যেত। মানুষকে কথা শোনানোর সময় ভাববেন না। মানুষটা কিছু বলে না মানুষটা পাথর। একটা কথা সব সময় মনে রাখবেন। মন কিন্তু সবার আছে। বাকি কথা না বলি।)