#অনুভূতিরা_শব্দহীন
লেখনীতে: #ইসরাত_জাহান_তন্বী
একবিংশ পর্ব
ঢাকায় এসেছে আহনাফ-সারাহ্। বাসায় আসার পর থেকেই সামিহা সারাহ্-র সাথে গল্পে মজেছে। ক্লাসের এটা ওটা সেটা সবই সারাহ্-কে দেখাচ্ছে সে। কোন কোন জায়গায় ঘুরতে গিয়েছিল, কোথায় কি ছবি তুলেছে তাও দেখাচ্ছে।
সারাহ্ বালিশে মাথা রেখে শুয়ে বলে,
“এগুলো তো হোয়াটসঅ্যাপে বহুবার দেখিয়েছিস।”
“আরে এখন দেখো না, লাইভ।”
সারাহ্ ওর হাত থেকে ফোনটা নিয়ে পাশে রেখে বলল,
“এক্সাম কবে?”
“উহু, উহু, রুটিন দেয় নাই।”
“পড়াশোনা চা°ঙ্গে তুলে বসে থাকো।”
সামিহা হাসতে হাসতে সারাহ্-র পাশে শুয়ে বলে,
“পরীক্ষার আগে নামাই নিবো। (একটু থেমে) আপু চলো না ঘুরতে যাই।”
সারাহ্ উঠে খোঁপা করতে করতে বলল,
“কাল কিন্তু আমরা চলে যাবো। আজ কোথাও যেতে পারবো না।”
“সে তো জানা কথা। শুক্র, শনি বন্ধ আবার রবিবার কিলাস।”
ব্য°ঙ্গ করে কথাটা বলল সামিহা।
আহনাফ এসে দরজায় নক করে।
“আসবো?”
“জি ভাইয়া, আসেন।”
আহনাফ রুমে আসলে সামিহা বেরিয়ে গেল। সারাহ্ ফোনে ক্লাসের নতুন রুটিন দেখে বলল,
“ফার্স্ট ইয়ারে শুধু আপনার ক্লাস কেন? সেকেন্ড ইয়ার কি করছে?
আহনাফ হেসে উঠে বলল,
“ওখানের মেয়েগুলো কিউট হয়। কারো চোখ সুন্দর, কারো ঠোঁট সুন্দর, কারো হাসি সুন্দর, কারো চুল সুন্দর।”
সারাহ্ চশমার উপর দিয়ে আহনাফের দিকে তাকায়। আহনাফ বলে,
“বাট সমস্যা হলো কেমিস্ট্রির সারাহ্ ম্যাম অসম্ভব মায়াবী।”
সারাহ্-র কাছে এসে বলল,
“সরি, মায়ার খাজানা এখানে।”
সারাহ্ হেসে মুখ ঘুরায়। ওদের সম্পর্ক এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। আহনাফের এসব দুষ্টুমিতে সারাহ্ অভ্যস্ত হয়ে গেছে।
এদিকে, সামিহার ফোনে কল দেয় তানজিম। সামিহা রিসিভ করতেই তানজিম বলে,
“তাড়াতাড়ি নিচে আয়, আমি অপেক্ষা করছি।”
সামিহা নিচে নেমে গেল। বাসার সামনেই দাঁড়িয়ে আছে তানজিম। সামিহা গিয়ে বলল,
“কিরে, এখন এখানে?”
“দুইদিন ভার্সিটিতে যাইনি, তোকে দেখিনি, তাই চলে আসলাম।”
সামিহা ভ্রূ উঁচিয়ে তাকায়। তানজিম হাঁটা শুরু করে, সামিহাও ওর পাশাপাশি হাঁটছে।
তানজিম বলে,
“পরশুদিন মামার বাসায় গিয়েছিলাম।”
শাফিন সাহেবের অবস্থার কথা সামিহা জানে। প্রশ্ন করে,
“কেমন আছেন উনি?”
“আগের চেয়ে ভালো। (একটু থেমে) দুই একদিন পর পর ইমতিয়াজ ভাইয়া ওখানে যান। সেদিন সন্ধ্যাও গিয়েছিলেন।”
সামিহা চুপ করে আছে। তানজিমের এসব কথা সে কেবল শুনে। ভালোমন্দ যাচাই করতে এখনো শেখেনি সে।
“মামাকে না ভাইয়া মিউকোপুর সাথে দেখা করতে যায়।”
তানজিম হাঁটা থামিয়ে বলে,
“আমি আগেও তোকে বলেছি না ভাইয়া আপুকে অন্য নজরে দেখে। আমার বোন বেঁচে থাকলে কি হতো?”
কি হতো তা সামিহা জানে না। কারো মনের খবর ও তো আর বলতে পারবে না। সামিহা এদিক ওদিক তাকিয়ে একটু বি°ব্রতভাবেই বলে,
“তানজিম, তাহমিনা আপু যেহেতু নেই তাই উনাদেরকে উনাদের মতো থাকতে দিলে হয় না? (একটু থেমে) আমরা অন্য বিষয়েও তো কথা বলতে পারি।”
তানজিম একটু গরম সুরে বলে,
“হ্যাঁ, আমার বোন থাকলে এখানে একটা পর°কি°য়ার গল্প রচিত হতো।”
তানজিম হনহনিয়ে চলে যায়। সামিহা একটু হতভ°ম্ব, নিজের মতো একটা কাহিনী রচনা করেছে তানজিম। সবটাই ওর কল্পনা। এতো বড় হয়েও কি বাস্তবতার জ্ঞান হয়নি তার?
আজকাল তানজিমের সাথে অন্য কোনো বিষয় নিয়ে ওর কথাই হয় না। সারাদিন সে তার বোনদের কথা আর মৃত্তিকা-ইমতিয়াজের বদনামে ব্যস্ত থাকে। সামিহা বি°র°ক্ত হয়ে যাচ্ছে ওর এসব আচরণে। তানজিমের এমন ব্যবহার ও আগে কখনোই দেখেনি।
______________________________________
সন্ধ্যা ৭ টা, শাফিন সাহেব নিজকক্ষে শুয়ে কারো সাথে ফোনে কথা বলছেন। সুরভি দরজায় নক করে।
“বাবা।”
শাফিন সাহেব ফোন রেখে উঠে বসে বলেন,
“হ্যাঁ মা, আসো।”
সুরভি রুমে গিয়ে বসে। বাবার হাতে-পায়ে হাত বুলিয়ে দিলো। শাফিন সাহেব হাসলেন। নিজের সেদিনের ছোট্ট মেয়েটা এখন মা হতে চলেছে।
“মিউকো ইতালি চলে যেতে চায়।”
“ইতালি? কেন?”
শাফিন সাহেব অবাক হয়ে প্রশ্ন করেন।
সুরভি সরাসরি বলে,
“ওর বাবার কারণে আর কেন। ওর নাকি মনে হয় এসবের জন্য ওর বাবা দায়ী।”
শাফিন সাহেবের হাসি উঠে। কিছুক্ষণ হেসে বলে,
“ওখানে একা একা কিভাবে থাকবে? ওর বাবা তো ওকে একাই করতে চায়।”
সুরভি কিছুক্ষণ বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলেন, যেন কিছু বলতে চায়। শাফিন সাহেব মেয়ের মাথায় হাত রেখে বলে,
“কি বলবে মা?”
সুরভি হাসে। বলে,
“মিউকো হয়তো কাউকে পছন্দ করে।”
“কাকে? ইতালিতে কেউ?”
“না এখানে। (একটু থেমে) ইমতিয়াজ ভাইয়া।”
শাফিন সাহেব চোখ বড় করে তাকালেন। সুরভি দরজার দিকে একবার তাকিয়ে বলে,
“কিছু মনে করবেন না বাবা, মিউকো আমাকে এসব বলেনি, তবে আমার এটা মনে হয়।”
দেলোয়ারা দরজা ঠেলে রুমে আসেন।
“কি কথা হচ্ছে বাপ-বেটির?”
শাফিন সাহেব উনাকে বসতে ইশারা করে আবারো সুরভিকে বলেন,
“ইমতিয়াজের সাথে কথা বলবো নাকি আগে লুৎফরকে জানাবো?”
“আগে ফুপার সাথে কথা বলেন। ভাইয়াকে উনারা ছেলের মতো ভালোবাসেন।”
দেলোয়ারা মাঝ থেকে প্রশ্ন করেন,
“কি হয়েছে?”
শাফিন সাহেব চোখের ইশারায় শান্ত হতে বলেন। সুরভি উঠে নিজের রুমে চলে যায়। মৃত্তিকা সেখানে কোনো একটা বই পড়ায় ব্যস্ত। সুরভি গিয়ে পাশে দাঁড়ায়।
মৃত্তিকা ওর দিকে তাকিয়ে বলল,
“তুমি ঠিক বলেছিলে আপু, বাংলা সাহিত্য আসলেও অনেক আনন্দের।”
সুরভি হেসে বইটা নিয়ে শেলফে রেখে বলে,
“আমার প্রশ্নের উত্তর না দেয়া পর্যন্ত আর কোনো বই পাবা না।”
মৃত্তিকা একটু হকচকিয়ে যায়। তারপর হেসে উঠে বলে,
“বলো, কি প্রশ্ন?”
“ইমতিয়াজ ভাইয়াকে ভালোবাসো?”
কথাটা মৃত্তিকার কানে জোড়ে ধা°ক্কা খায়। কন্ঠনালি কেঁপে উঠলেও কথা বলা হয় না। সুরভি ওর সামনে এসে চেয়ার টেনে বসে বলল,
“বাবাকে বলবো বিয়ের কথা বলতে?”
মৃত্তিকা চমকে উঠে, কিছুই বলতে পারছে না। সব কথা ওর স্বরযন্ত্রের কাছে এসে গু°লিয়ে যাচ্ছে।
সুরভি ওর হাত ধরে বলে,
“অস্বস্তি হচ্ছে জানি, কিন্তু আমি সত্য বলতে বা শুনতে পিছুপা হইনা। এসব বোঝার ক্ষমতা আমার আছে।”
তানজিমের কথাগুলো মনে পড়ে মৃত্তিকার। একটা ঢোক গিলে বলল,
“যদি তাহমিনা আপু থাকতো, তবে?”
“তাহমিনা থাকলে কি হতো না হতো ওসব ভুলে যাও, তাহমিনা নেই। ইমতিয়াজ ভাইয়া একা, কোনো মানুষ একা বাঁচতে পারে না। (একটু থেমে) সঙ্গী হিসেবে তুমি খারাপ নও।”
মৃত্তিকার গাল টে°নে দেয় সুরভি। মৃত্তিকা মাথানিচু করে। সুরভি আলতো হেসে বলে,
“কি? বিয়ের কথা হবে নাকি? বউ সাজবে?”
মৃত্তিকা নিচুস্বরে বলল,
“ইমতিয়াজ যদি রাজি থাকে, তবে আমিও রাজি।”
সুরভি ওর গালে চুমো দেয়। বয়সে মৃত্তিকা ওর থেকে ২ বছরের ছোট। তাহমিনা, তাহসিনাও ওর থেকে ছোটই ছিল। বোন তো সবাই, আদরও সকলের জন্যই সমান। চলে যাওয়া মানুষদের স্মৃ°তি যেমন থাকবে, তেমনি যারা বেঁচে আছে তাদের সুখের কথাও চিন্তা করতে হবে। একপাক্ষিক হয়ে জীবন চলে না।
______________________________________
পরদিন অর্থাৎ শনিবার সকাল,
আব্বাস ফয়েজ, আহনাফের বাবা আজ ঢাকায় আসবেন। আহনাফ উনাকে রিসিভ করতে এয়ারপোর্টে এসেছে, সাথে সারাহ্ও আছে। উনাকে নিয়ে সরাসরি কুমিল্লা চলে যাবে ওরা।
দুজনে গাড়িতে বসে অপেক্ষা করছে। সারাহ্ আপন মনে ফোন দেখছে।
“ঐশী।”
সারাহ্ আহনাফের দিকে তাকায়। আহনাফ বলল,
“ভাবছি একটা কথা?”
“কি?”
“বাবা চলে আসলে আমাদের কি হবে?”
সারাহ্ ফোন রেখে ওর কাছাকাছি এসে বসে বলল,
“খুব ভালো হবে। আপনার মুখের যা অবস্থা হচ্ছে তাতে বাবা আসলেই ঠিক হবে।”
আহনাফ সারাহ্-কে একহাতে আগলে নিয়ে বলল,
“এটা নিয়ে আমিও চিন্তিত।”
“কেন?”
“তোমার সাথে জড়ানোর পরই আমার এ অবস্থা হইছে। (একটু থেমে) জাদু টো°না করছো নাকি?”
সারাহ্ ওর বুকে একটা থা°প্প°ড় দিয়ে বলে,
“ছি, না। আপনি আগে থেকেই এমন ছিলেন।”
“আরে না, তাহুর সাথে এমন কথা কখনোই বলি নাই।”
তাহু, মানে তাহসিনা, হঠাৎ সারাহ্-র সামনে এই নাম উচ্চারিত হওয়ায় সারাহ্ চমকে উঠে। আহনাফের থেকে একটু সরে যায়। আহনাফ অপ্রস্তুত, এ কি কথা বলে ফেলল?
গাড়ি থেকে বেরিয়ে একটু দূরে গিয়ে দাঁড়ালো আহনাফ। তাহসিনার কথা মনে পড়ার অর্থ সেই রিসোর্ট, সেই সাদা শাড়ি আর অসম্পূর্ণ সেই স্বপ্নগুলোর কথা মনে পড়া। অথচ এখন সে সারাহ্-র সাথে নতুন স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছে।
সারাহ্ জানলা দিয়ে আহনাফের দিকে তাকিয়ে আছে। এখন আর এই মানুষটাকে তার ভ°য় লাগে না, তবে এই মানুষটার মুখে তাহসিনার নাম শুনলেই ভ°য় পায় সে। এই বুঝি তাকে ছেড়ে চলে যাবে।
“হে আল্লাহ্, এই সম্পর্ককে জান্নাত পর্যন্ত পৌঁছে দিও।”
সারাহ্-র এই একটা দোয়া মহান রব্বুল আলামীন কবুল করুক। তাহাজ্জুদে চাওয়া স্বামীর ভালোবাসা সে পেতে শুরু করেছে, এখন তো কেবলই শুরু।
কিছুক্ষণ পর দুটো আইসক্রিম কিনে নিয়ে আহনাফ এসে আবারো গাড়িতে উঠে বসলো। নভেম্বরের শেষ সময়, মোটামুটি শীত আছে, এসময় আইসক্রিম দেখে সারাহ্-র একটু রাগ হলো।
“কেন খাবেন এসব? ঠান্ডা লাগবে, জ্ব°র আসবে, আমি কারো সেবাযত্ন করতে পারবো না।”
সারাহ্-র কথায় আহনাফ হেসে একটা আইসক্রিম ওর হাতে দিয়ে বলে,
“আমি অসুস্থ হলে তুমি করবা স্বামীসেবা আর তুমি অসুস্থ হলে আমি করবো বউসেবা। ডিল ফাইনাল? এখন খাও।”
সারাহ্ আহনাফের মুখের দিকে তাকায়। একটু আগে অস্বস্তিকে দূরে সরিয়ে সে স্বাভাবিক হতে চাইছে। মনের অজান্তেই হাসে সে।
“এভাবে হাসলে তোমাকে কাঠবিড়ালির মতো লাগে।”
“কি?”
সারাহ্ কপাল কুঁচকায়। আহনাফ জোড়ে শোরে হেসে উঠে।
সারাহ্ আইসক্রিম খেতে খেতে ঘড়িতে দেখে সকাল ১১ টা। তারপর আহনাফকে বলে,
“একটু বাইরে হাঁটি? বসে থেকে থেকে কোমড়ে ব্য°থা করছে।”
“হ্যাঁ, যাও। আমি যাবো না, বাবা কিন্তু চলে আসবে এখুনি।”
“আচ্ছা, আমি আশেপাশেই আছি।”
সারাহ্ গাড়ির বাইরে হাঁটতে লাগলো। একটা গাড়ির সামনে গিয়ে চেনা একটা নাম শুনলো।
“নাম সামিহা, ডাকনাম এশা।”
সারাহ্-র ছোটবোন সামিহা, তারও তো ডাকনাম এশা। গাড়ির পাশে দাঁড়িয়ে যায় সারাহ্।
এবারে অন্য কন্ঠ,
“এ আমাদের কোন কাজের?”
আবারো পুরোনো কন্ঠটা বলে,
“ওকে দিয়েই কাজ আছে, সেদিন ওখানে এই মেয়েটাই ছিল। (একটু থেমে) হয় মানবে আর না হয় ম°রবে।”
সারাহ্ ভয় পেয়ে যায়। সামিহাকে কেউ মারার প্ল্যান করছে। এরমধ্যে আহনাফের ডাক,
“ঐশী, এদিকে আসো।”
লোক দুজনেই সারাহ্-কে দেখে। সারাহ্ দ্রুত সরে পড়ে। হার্টটা প্রচন্ড গতিতে লাফাচ্ছে তার। আহনাফকে বুঝিয়ে বলার মতো অবস্থায় নেই। এমনকি আব্বাস সাহেবকে সালাম দিতেও বেমালুম ভুলে গেছে সে। গাড়িতে বসে জানলা দিয়ে সেই কালো চকচকে মাইক্রোর দিকে তাকায় সারাহ্। হয়তো এখনো ভেতর থেকে দুজোড়া চোখ ওকে দেখছে।
সারাহ্ চলে গেলে গাড়ির ভেতরের একজন বলে,
“সব ঠিকঠাক, সারাহ্ আমাদের কথা শুনে গেছে।”
______________________________________
লুৎফর রহমানকে বাসায় ডেকেছেন শাফিন সাহেব, দুপুরের খাবারের দাওয়াত। ঘটনা মূলত ইমতিয়াজ আর মৃত্তিকাকে নিয়ে কথা বলা।
জুম্মার নামাজের আগে আগেই লুৎফর রহমান, মমতাজ বেগম আর তানজিম তিনজনই এসেছে। নামাজের পর দুপুরের খাবার খেয়ে তারপর উনারা কথা বলতে বসেছেন।
সুরভি ফল কে°টে এনে উনাদের সামনে রাখলো। শাফিন সাহেব সুরভির দিকে তাকিয়ে বলে,
“আমার মেয়ে ভাগ্যিস আমার মতো হয়নি, সব বুঝে সে।”
মমতাজ বেগম হাসলেন। সুরভিকে উনার পাশে বসিয়ে বলেন,
“ঠিকই বলছো।”
শাফিন সাহেব একটা বড় নিশ্বাস ফেলে বলেন,
“আসল কথায় আসি। আমি মিউকোর বিয়ে নিয়ে ভাবছিলাম।”
লুৎফর রহমান বলেন,
“একবার এতো ঘটনা হওয়ার পরও?”
শাফিন সাহেব মাথা নাড়িয়ে বললেন,
“হ্যাঁ, মিউকোর জন্য উপযুক্ত একজনকে পাওয়া গেছে।”
মমতাজ বেগম খুশি হয়ে বলেন,
“এ তো ভালো কথা।”
“ইমতিয়াজের জন্য আমাদের মিউকো কেমন হবে?”
মৃত্তিকা রুম থেকে উনাদের কথা শুনছেন। সুরভি উঠে ভিতরে যায়।
লুৎফর রহমান একবার মমতাজ বেগমের দিকে তাকিয়ে বলেন,
“ইমতিয়াজ রাজি হবে? আর মিউকো?”
“তোমরা রাজি কিনা তাই বলো।”
“রাজি না হওয়ার কারণ নেই।”
লুৎফর রহমানের কথায় সম্মত হলেন মমতাজ বেগম,
“ইমতিয়াজের অধিকার আছে নিজের জীবনকে সাজানোর। ওর কবরের কাছে ফাতিহা পড়ার মানুষও নেই। ওর পরিবারের দরকার, সন্তানের দরকার।”
শাফিন সাহেব লুৎফর রহমানকে বললেন,
“তুমি ইমতিয়াজের সাথে কথা বলো।”
“আর মিউকো?”
“সেটা আমি বুঝে নিবো।”
তানজিম সব শুনছে, রাগে তার ক°লজে ফেঁ°টে যাচ্ছে। এখন মৃত্তিকাকে খু°ন করতেও হয়তো সে পিছু হটবে না। কিন্তু বড়দের সামনে কিছু বলতেও পারছে না।
লুৎফর রহমান একটু জোর গলায় মৃত্তিকাকে ডাকেন।
“মিউকো?”
মৃত্তিকা বের হয়ে আসে।
“জি, আংকেল।”
মমতাজ বেগম বলেন,
“বসো, এখানে।”
মৃত্তিকা মমতাজ বেগমের পাশে বসে। মৃত্তিকার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকেন উনি। তানজিম রাগি চোখে তাকিয়ে আছে। মৃত্তিকা তানজিমকে দেখলেও তেমন একটা পাত্তা দেয়নি। যা হওয়ার হবে, তানজিম বাধা দিলেও হবে আর না দিলেও হবে।
চলবে……
(গতদিন দুই পর্ব দিবো বলেও দিতে পারিনি। অনেক অনেক দুঃখিত। আসলে জ্ব°র ও ঠান্ডার সমস্যার কারণে ফোনে বেশি সময় দিতে পারছিনা। সুস্থ হলে দুইপর্ব একদিনে পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ।)