অনুভূতিরা_শব্দহীন লেখনীতে: #ইসরাত_জাহান_তন্বী ষট্ পঞ্চাশৎ পর্ব (৫৬ পর্ব)

0
346

#অনুভূতিরা_শব্দহীন
লেখনীতে: #ইসরাত_জাহান_তন্বী

ষট্ পঞ্চাশৎ পর্ব (৫৬ পর্ব)

পরপর দুইটা গু°লির শব্দ হলো। আহনাফ চমকে উঠে। একটা ধপ করে শব্দ হয়, হয়তো লোকটা পড়ে গেছে।

অনেকগুলো লাইট একসাথে ভিতরে আসে। গালিব আর আব্বাস সাহেব সামনে, পেছনে পুলিশের পোশাকে কিছু লোক।

আব্বাস সাহেব এসে সারাহ্-র অপরদিকে বসে আহনাফকে বলে,
“সারাহ্-র কি হয়েছে?”

আব্বাস সাহেব যেন ভ°য় পাচ্ছেন৷ গালিব আহনাফকে বলে,
“গাড়ি রাস্তায় আছে, উনাকে হসপিটালে নিয়ে চলুন।”

আহনাফ নিষ্প্রাণ চোখে তাকিয়ে বলল,
“ঐশী নিশ্বাস ফেলছে না।”

গালিব শান্ত গলায় জবাব দেয়,
“বেশি ক্রি°টিক্যাল অবস্থায় নিশ্বাস ধীরে পড়ে, বোঝা যায় না। গলার পাশে হাত দিয়ে দেখুন বা পার্লস চেইক করুন।”

চিন্তায় এতোক্ষণ আহনাফের মাথায় এসব আসেনি। পার্লস চেইক করে যখন বুঝতে পারে এ দেহে এখনো প্রাণ আছে, সঙ্গে সঙ্গেই ওকে কোলে তুলে নেয়।

গাড়ি রাস্তায় তৈরিই ছিল, উঁচু রাস্তায় সারাহ্-কে কোলে করে উঠাতেও একটু কষ্ট হয় আহনাফের। অবশেষে সারাহ্-কে সেখানে নিয়ে গাড়িতে তোলা হলো।

ঘরে থাকা সেই লা°শ কিংবা একটু আগের লোকটার চেহারা আহনাফের দেখা হয় না। গাড়ি বসে সারাহ্-র হাত ধরে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো সে, সারাহ্-র মাথা ওর কোলে নিয়ে রেখেছে।

আব্বাস সাহেব পাশেই বসেছেন। উনি পকেট থেকে টিস্যু বের করে সারাহ্-র নাকমুখের র°ক্ত মুছে দেন৷

আহনাফের চোখ থেকে পানি গড়িয়ে সারাহ্-র হাতের উপর পড়ে। আব্বাস সাহেব ছেলের দিকে তাকায়। তাহসিনার মৃ°ত্যুর পর ওর অবস্থা কতটা খারাপ হয়েছিল উনি দেখেছেন। আজ এতোদিন পর আবারো তার জীবনে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে।

“আল্লাহ্, সারাহ্-কে সুস্থ করে দাও, আমার ছেলেটার জীবনের জন্য হলেও সুস্থ করে দাও।”
একটা দোয়াই আছে আব্বাস সাহেবের মনে।

বাকিরাতটুকু ওরা হাসপাতালে কাটায়। ফজরের সময় ডাক্তার এসে সারাহ্-কে দেখে জানালো বেবি সুস্থ আছে, যদিও সাথে কতগুলো টেস্টের লিস্ট ধরিয়ে দিলো। তবুও আহনাফের জান ফিরে এসেছে।

নামাজ পড়ে এসে আহনাফ জানতে পারলো সারাহ্-র জ্ঞান ফিরেছে। নার্স ওকে বলে,
“আপনার স্ত্রী দেখা করতে চাচ্ছে। দেখা করেন, তবে উনার সাথে জোরে কোনো কথা বলবেন না। উনি এখনো একটু ট্র°মায় আছেন, আর শারিরীকভাবে পুরোপুরি ঠিক নেই।”

আহনাফ উনার কথা শুনেনি, তার শোনার প্রয়োজন নেই। তার ঐশীর সাথে সে যেভাবে ইচ্ছা কথা বলবে।

সারাহ্ আশেপাশে তাকিয়ে কোনো চেনা মুখ দেখেনা, একটা চেনা মুখ খুঁজতে খুঁজতে আহনাফ এসে হাজির। সোজা এসে ওকে জড়িয়ে ধরে। সারাহ্ও দুহাতে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে তাকে।

“জানেন ওরা..”

সারাহ্-র কথা আহনাফ শুনেনা, মাঝপথেই তা আটকে যায়। ওর গলায় গভীরভাবে স্পর্শ করে আহনাফ। অনেকক্ষণ পর মাথা তুলে সে, দুজন দুজনকে দেখছে।

সারাহ্ আহনাফের গালে হাত দিয়ে বলে,
“ওরা আমাকে স্পর্শ করতে পারেনি। মে°রে দিয়েছে।”
“রুমে পড়ে থাকা লোকটাকে তুমি মে°রেছো?”

সারাহ্ মাথা নেড়ে বলল,
“না, কেউ একজন গু°লি চালিয়েছিল, জ্ঞান হারানোর আগে একটা কন্ঠ আমি শুনেছিলাম। শাফিন আপনাকেও মে°রে ফেলতে চেয়েছিল, মাকেও।”

সারাহ্ কান্না করে দিলে আহনাফ একটু কড়া গলায় বলে,
“তোমার সামনে জীবিত, আস্ত আহনাফ আছি। তবে কাঁদছো কেন?”

সারাহ্ নাক টা°নলে আহনাফ ওর নাকে নাক ঘ°ষে দিয়ে বলে,
“ওরা নিজেরাই বেঁচে নেই। তবে শাফিনের বিষয়টা শিউর নই।”
“আহনাফ, আম্মুকে কিছু জানিয়েছেন?”
“না।”
“জানানোর দরকার নেই। জানালে এখানে আসতে চাইবে আর ওরা এটাই চেয়েছিল। শাফিন তো ওখান থেকে পালিয়েছিল, গু°লি চলার সাথে সাথেই সে বেরিয়ে গিয়েছিল।”

আহনাফ কপাল কুঁচকায়। গালিবকে কথাটা জানানো দরকার। আহনাফ উঠে বসে ফোন বের করে গালিবকে কল দেয়। গালিব ওর কথা শুনে জানায়, যাকে গু°লি করেছে বা যে রুমে পড়ে ছিল, তাদের কেউই শাফিন না। বোঝা যাচ্ছে শাফিনের অনেক লোকজন এখনো বাইরে ঘুরছে। কিন্তু সারাহ্-কে বাঁচালো কে? তার হদিস পাওয়া গেল না।

“চোখ ধুলা ছিটিয়ে এভাবে পালালো। আমাদেরকে একদিকে ব্যস্ত রেখে সে হাতছাড়া হলো।”
আহনাফ কথাটা বলে ফোন রাখে।

সারাহ্ আশেপাশে তাকিয়ে দেখে রুমে থাকা দুজন নার্স বেরিয়ে গেছে। আহনাফকে বলে,
“আপনার কৃতকর্মে নার্সরাও ছাইড়া দে মা কাইন্দা বাঁচি করে পালিয়েছে।”

আহনাফ আবারো ওর কাছে যায়। তর্জনী আঙুল দিয়ে ওর ঠোঁট ছুঁয়ে বলে,
“ওদেরকে ধরিই নাই, ছাড়ার তো প্রশ্নই উঠে না। যাকে ধরছি সেই..”

কথা শেষ না করেই দুজনের ওষ্টোধর একত্র করে আহনাফ। সারাহ্ চোখ বন্ধ করে আহনাফের শার্ট খা°মচে ধরে। সে আর নিজের ভিতরে নেই। আগের ভী°তি, সংশয় সব যেন দূর হয়ে গেছে।
______________________________________

এডভোকেট বিথীকেই শুধুমাত্র তুলে দিয়েছে মৃত্তিকা। অপরূপাকে সে আগেই সরিয়ে রেখেছে। বিথীকেও সে দিতে চায়নি, ইমতিয়াজের জোরাজুরিতে দিতে হয়েছে।

ফজরের পর ইমতিয়াজ বাসায় এসে আবারো শুয়ে পড়ে। মৃত্তিকা এসে পাশে বসে বলল,
“একটা প্রশ্ন করি?”
“হুম।”

চোখ বন্ধ করে জবাব দেয় ইমতিয়াজ। মৃত্তিকা ঢোক গিলে বলল,
“শাফিনকে আপনি আগে থেকে চেনেন?”

ইমতিয়াজ এবারে ওর দিকে ফিরে তাকায়। বলে,
“আগে থেকে বলতে?”
“তাহমিনার সাথে বিয়ের আগে থেকে।”

ইমতিয়াজ উঠে বসে খুব স্বাভাবিকভাবে বলে,
“হ্যাঁ, চিনতাম। ওর বাসায় ভাড়া থেকেছি।”
“আমার প্রেগন্যান্সির কথাও কি শাফিনই আপনাকে জানিয়েছে?”

ইমতিয়াজ উঠে বসে বলল,
“কিসব বলছো তুমি? শাফিনের সাথে আমার কোনো যোগাযোগ নেই।”
“সত্য বলুন ইমতিয়াজ। আমি সরাসরি জিজ্ঞাসা করছি।”
“সত্যই বলছি।”

মৃত্তিকা জোর গলায় বলল,
“মি°থ্যা, সেই পঞ্চম ব্যক্তি আপনি। তাহমিনার জন্য যত অনুভূতি দেখিয়েছেন সব আপনার নাটক। তাহমিনা যখন চিৎকার করেছে তখন আপনি তাহসিনাকে..”

মৃত্তিকার গালে একটা চ°ড় বসায় ইমতিয়াজ, মৃত্তিকা হঠাৎ থেমে যায়।

ইমতিয়াজ রাগ দেখিয়ে বলে,
“যা মুখে আসছে, বলে যাচ্ছো।”

মৃত্তিকা দাঁতে দাঁত ঘ°ষে বলল,
“অপরূপা আমাকে এসব জানিয়েছে।”

সত্যি সত্যিই অপরূপা ওকে এসব বলেছে। যখন অপরূপাকে সরিয়ে ছাদে নিয়ে গেছিলো, তখনই অপরূপাকে সে ইমতিয়াজের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করে। অপরূপা বলে দেয়, ইমতিয়াজ শাফিনের সাথে প্রতিক্ষেত্রেই যুক্ত আছে।

ইমতিয়াজ কপাল কুঁচকায়,
“অপরূপা?”
“হুম।”

ইমতিয়াজ বিছানায় বসে বলে,
“দেখো, অপরূপা মি°থ্যা বলেছে। তুমি আমাকে একটু বিশ্বাস করো।”

মৃত্তিকা আর কিছু না বলে রুম থেকে বেরিয়ে যায়। ওর বিশ্বাস আসছে না। ঘোরতর অবিশ্বাসে ডুবেছে সে। দুনিয়ায় সবাইকে সে বিশ্বাস করতে পারছে, কিন্তু ইমতিয়াজকে না।

ইমতিয়াজ পিছুপিছু বেরিয়ে আসে।
“মৃত্তিকা, এমন কেন করছো? একজন কিছু একটা বলে দিবে আর তুমি বিশ্বাস করবে?”

মৃত্তিকা ফিরে ইমতিয়াজকে একটা ধা°ক্কা দিয়ে বলে,
“খবরদার আমাকে মৃত্তিকা ডেকেছেন তো।”

ইমতিয়াজ ওকে জোর করে কাছে নিয়ে আসে। বলে,
“দেখো, মেজাজ দেখাবে না। বেবির কথাটা তানজিম আমাকে বলেছে। শাফিনের বাসায় আমি ভাড়া থাকতাম, এরচেয়ে বেশি কিছু না।”

মৃত্তিকা নিজেকে ওর থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে চলে গেল। বি°চ্ছি°রি একটা অনুভূতি নিয়ে সে ছাদের হলরুমে আসে।

অপরূপার মুখের কচটেপ খুলে বলে,
“ইমতিয়াজকে নিয়ে সত্য বলেছো নাকি মিথ্যা?”
“যাকে ভালোবাসো তাকে বিশ্বাস করো না?”

অপরূপা হো হো করে হেসে উঠে। তারপর বলে,
“বিশ্বাস না করলে আর কিসের ভালোবাসা? শেষ, তোমার আর ইমতিয়াজের সম্পর্ক শেষ। এই বাচ্চার কি হবে? তোমার মতো করে বড় হবে।”

অপরূপার হাসিতে মৃত্তিকার রাগ বাড়ে। মৃত্তিকা জিজ্ঞাসা করে,
“মি°থ্যা বলেছো?”

অপরূপা চোখ টি°পে দিয়ে বলে,
“সে তুমি বের করে নাও।”

মৃত্তিকা বের হয়ে যায়। নিজের প্রতি নিজের রাগ হচ্ছে। অপরূপার কথা শুনে কেন সে ইমতিয়াজকে ব্লেইম করলো। আবার মমতাজ বেগমের কথাগুলোর সাথে মিলালে ইমতিয়াজকে পুরোপুরি বিশ্বাসও করতে পারছে না।

বাসায় ঢুকতেই মৃত্তিকার শরীর খারাপ লাগা শুরু হলো। সোফায় বসে পড়ে। ইমতিয়াজ ডাইনিং এ বসে আছে, ওকে দেখেও কিছুই বলে না। শরীফ তো গতকাল থেকে বাসায় নেই।

“ইমতিয়াজ।”

মৃদু ডাকে ইমতিয়াজ তাকায়, কিন্তু জবাব দেয় না। মৃত্তিকা ঢোক গিলে বলে,
“ভ°য়া°নক একটা সময় যাচ্ছে আমাদের, সব কিছু সাজাতে চেয়েও এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে।”

“তুমি সাজাতে চাচ্ছো, মিউকো?”

মৃত্তিকা উঠে গিয়ে ওর পাশে দাঁড়িয়ে বলে,
“আমি পাগল হয়ে যাবো, এমন ছিন্নভিন্ন পরিবার আগে কখনো দেখেছেন? এরা নিজেরাই নিজেদের শ°ত্রু।”

ইমতিয়াজ উঠে দাঁড়িয়ে বলল,
“তুমি কি করে ভাবতে পারলে তাহমিনাকে আমি ওই লোকগুলোর হাতে ছেড়ে দিয়েছি? কি করে ভাবলে তাহসিনাকে আমি নোংরা হাতে ছুঁয়েছি? তোমার চিন্তাভাবনায় পচন ধরেছে মিউকো।”

ইমতিয়াজ চলে যেতে নিলে মৃত্তিকা ওর হাত টে°নে ধরে। ওর বাহুতে মাথা রেখে বলল,
“একটা সত্যি বললে কি আমাকে ছেড়ে চলে যাবেন?”
“কি?”

ইমতিয়াজের সোজা প্রশ্নে মৃত্তিকা ওর দিকে তাকিয়ে দুহাতে বালা খুলে ওর হাতে দিয়ে বলল,
“এগুলো নেয়ার যোগ্যতা আমার নেই। মি°থ্যা বলেছি আমি, শাফিনকে ধরতে এই মি°থ্যা আমাকে সাজাতে হয়েছে।”

ইমতিয়াজ তাকায় ওর দিকে। চোখ ছোট করে তাকায় ওর দিকে। বালা দুটো ছুঁড়ে ফেলে ইমতিয়াজ বেরিয়ে যায়।
______________________________________

রাত আটটা, সব ধরনের চেকআপ শেষে সারাহ্-কে ভর্তি করানো হয়েছে। সম্পূর্ণভাবে শয্যাশায়ী থাকতে হবে তাকে, কমপক্ষে সপ্তাহখানেক ওকে আরাম করতে হবে। তার আগে দুইদিন ওকে ভর্তি থাকতে হবে।

উপুড় হয়ে পড়লেও ও নিজের শরীরের ব্যালেন্স ধরে রেখেছিল, তাইতো নাকমুখ আর পায়ে ব্য°থা পেলেও নিজের সন্তানকে সে ঠিকই ভালো রেখেছে।

আব্বাস সাহেব বাসায় চলে গেছে। আহনাফ ফোন মাধ্যমে ইমতিয়াজকে সব ঘটনা জানায় এবং অপরূপাকে যেকোনো মূল্যে আটকে রাখতে বলে। কারণ আহনাফ নিজেও এখন পিবিআইয়ের উপর ভরসা করছে না।

“সারাহ্-কে বাঁচিয়েছে যে ব্যক্তি সে হয়তো শাফিনের খোঁজ পেতে পারে।”

ইমতিয়াজের কথায় আহনাফ জবাব দেয়,
“হয়তো শাফিনও আহত। র°ক্তের দাগ দেখে অনুসরণ করা হয়েছিল, কিন্তু একটা দূরত্বে গিয়ে দাগ আর পাওয়া যায়নি।”

ইমতিয়াজ কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলে,
“শাফিন কি এখনো কুমিল্লাতে আছে? আমার তো মনে হয় না, সে অবশ্যই পালিয়েছে।”
“হতে পারে, কিন্তু সে পালিয়ে হলেও ঢাকায়ই যাবে।”

এদিকে মৃত্তিকা পাশে বসে ঠিকই ওদের কথোপকথন শুনছে। ইমতিয়াজ মৃত্তিকাকে হ্যাঁ বা না কিছুই বলেনি। বরং নিরবে এড়িয়ে যাচ্ছে ওকে।

কথা শেষে ফোন রাখে আহনাফ। তারপর খাবার নিয়ে কেবিনে এসে দেখে সারাহ্ বিছানায় শুয়ে ফোনে সামিহার সাথে কথা বলছে।

আহনাফ গিয়ে পাশে বসে একটু জোরে বলল,
“ওহো, শ্যালিকা যে, কি অবস্থা?”
“ভালো ভাইয়া।”
অপরপাশ থেকে জবাব দেয় সামিহা।

“দিনকাল যাচ্ছে ভালো?”
“মোটামুটি ভাইয়া, তানজিমের আম্মুকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই একটু আপসেট।”

আহনাফ কপাল কুঁচকায়, একটু আগে ইমতিয়াজের সাথে কথা হয়েছে। সে কিছু বলল না কেন?

আহনাফ কথা ঘুরাতে বলল,
“সামিহা, পরে কথা বলো, এখন তোমার আপু খাবে।”

সামিহা আফসোসের রেখা টে°নে বলে,
“আহ, এশা, আহ। আজ একটা জামাই থাকলে তোর কথাও এমনে কেউ ভাবতো। (একটু থেমে) আচ্ছা, ভাইয়া রাখছি।”

সারাহ্ উঠে বসে ওকে ধ°মক দিয়ে কল কেটে দেয়। আহনাফ ওকে খাইয়ে দিতে দিতে বলে,
“এখনো শরীর খারাপ লাগছে?”
“একটু।”

আহনাফ জানে এই একটুর অর্থ আসলে অনেক বেশি।

“কাল বাকি রিপোর্ট আসবে, আশা করি সব ঠিক থাকবে।”
“হুম।”
“ভ°য় পাচ্ছো নাকি?”

সারাহ্ ওর কাঁধে মাথা রেখে বলল,
“আপনি যেহেতু আছেন, তাই ভ°য়ের কিছু নেই।”

আহনাফ ওর কপালে চুম্বন করে বলল,
“খেয়ে নাও।”
______________________________________

সারাদিন মৃত্তিকার শরীর খারাপ লাগছে। শাফিনের ওই ঘটনা শুনে সে স্থিরও থাকতে পারছে না, আবার শরীরে কোনো শক্তিও পাচ্ছে না।

রাতের খাবার টেবিলে সাজিয়ে রুমে এসে ইমতিয়াজকে ডাকে, কিন্তু ইমতিয়াজ সারা দেয় না। আলো নিভিয়ে মিউকোকে কোলে নিয়ে সে ফ্লোরে বসে আছে।

“ইমতিয়াজ, আপনি কি আছেন?”

ইমতিয়াজের শব্দ না পেলেও মিউকোর মিউ মিউ শব্দ মৃত্তিকা পায়। লাইট জ্বা°লিয়ে দেখে ইমতিয়াজ এক কোণায় বসে আছে। কেমন যেন হতাশায় সে ঘিরে গেছে।

মৃত্তিকা নিরবে গিয়ে ওর পাশে বসে। ইমতিয়াজ মুখ ফিরিয়ে নেয়। মৃত্তিকা ওর মুখটা নিজের দিকে ঘুরিয়ে বলল,
“খাওয়ার সাথে কি? চলুন না, খেয়ে নিবেন।”

ইমতিয়াজ উঠে দাঁড়িয়ে বলল,
“তাহমিনা আমাকে বলেছিল তোমাকে ভালোবাসার আরেকজন আসছে, সে আসেনি। যখন ওই কষ্টটুকু আমি কা°টাতে চাইলাম, তখনই তোমার একটা মি°থ্যা নাটক সাজাতে হলো?”

ইমতিয়াজ বেরিয়ে চলে যায়, একদম বাসা থেকে বেরিয়ে আসে। মৃত্তিকা চুপ থাকে। ওর কষ্টের কারণ নির্দিষ্ট নয়। সে এখনো ইমতিয়াজকে সন্দেহ করছে, ভ°য় পাচ্ছে সে ইমতিয়াজকে হারানোর। আবার নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে এসবে ইমতিয়াজ যুক্ত থাকলে নিজেই তাকে হ°ত্যা করবে।

ব্যস, ইমতিয়াজের সাথে ওর দূরত্ব বেড়ে যায়। একদিন, দুইদিন, তিনদিন করে সাতদিন পার হয়। ওরা নিজেদের বাসায় চলে এসেছে। হাতে গুণে দুই একটা কথা ছাড়া তাদের মধ্যে কোনো কথাই হয় না।

মমতাজ বেগমের সাথে দেখা করতে এসে মৃত্তিকা পল্লবীকে পুরো ঘটনা জানায়। পল্লবী সবকিছু শুনে বলে,
“ইমতিয়াজকে আমার কখনোই খারাপ মনে হয়নি। তুমি যখন অসুস্থ ছিলে, তখন আমি দেখেছিলাম।”

“অপরূপা যে বলল, সে শাফিনের কাছের লোক। আর ইমতিয়াজ নিজে বলেছে শাফিনকে ও আগে থেকে চিনে।”

পল্লবী একটু ভেবে বলল,
“একটা কথা বলি, একটু স্বাভাবিক হও। শাফিন ছাড়া আর কেউ এর উত্তর দিতে পারবে বলে মনে হয় না। তবে আগেই তুমি সংসার ভে°ঙে ফেলো না।”

হঠাৎ মৃত্তিকার শরীর খারাপ শুরু হলো। জ্ঞান হারিয়ে পল্লবীর উপর পড়ে গেল। পল্লবী ওকে বসিয়ে মুখে একটু পানি দেয়। পল্লবী ফ্যান ছেড়ে এসে মৃত্তিকার হিজাব খুলে ওকে একটু হালকা করে দেয়।

মৃত্তিকা একটু একটু করে চোখ খুলে। মৃদুস্বরে বলল,
“পানি খাবো।”

পল্লবী ওকে পানি দেয়। পানি পান করে মৃত্তিকা বলে,
“কয়েকদিন ধরেই শরীরের অবস্থা খারাপ।”
“প্রেশার লো হয় নাকি?”
“জানি না।”

মৃত্তিকা জানে আসলে কি, যে মি°থ্যা সে ছড়িয়েছিল তা এখন সত্য। ইমতিয়াজের সন্তান ওর গর্ভে একটু একটু করে বড় হচ্ছে।
______________________________________

সারাহ্ কলেজ থেকে ছুটি নিয়ে নিয়েছে। সারাদিন বাসায় থেকে থেকে সে বি°র°ক্ত হয়ে গেছে। তবুও বের হওয়া নিষেধ। কোনো প্রকারে ওর বাইরে যাওয়া হবে না।

সারাদিন টিভি দেখে, বই পড়ে, রান্না করে, কোরআন পড়েই সে কা°টিয়ে দিচ্ছে। রান্নায় গিয়েও মাঝে মাঝে আহনাফের ব°কা খেতে হয়।

বিকাল পাঁচটা, আরাম করে বসে বসে সে বই পড়ছে। এর মধ্যে ফোন বেজে উঠে। আননোন নাম্বার দেখেও সারাহ্ রিসিভ করে,
“আসসালামু আলাইকুম, কে বলছেন?”

অপরপাশ থেকে জবাব আসে,
“ওয়া আলাইকুমুস সালাম, আমি মৃত্তিকা। (একটু থেমে) আ, ওই মিউকো। তানজিমের কাজিন।”

সারাহ্ মাথা নেড়ে বলল,
“ওহ, আপনি। কেমন আছেন?”
“জি, আলহামদুলিল্লাহ। আপনার কি অবস্থা?”
“আলহামদুলিল্লাহ।”

মৃত্তিকা কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল,
“শাফিনকে আপনি দেখেছিলেন?”
“হুম, দেখেছিলাম।”
“আপনাকে কে বাঁচিয়েছিল সেদিন?”
“জানি না, সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল। অন্ধকার থাকায় চেহারা দেখিনি।”
“কন্ঠ শুনেছিলেন?”
“হুম।”
“একটা ভয়েস পাঠাচ্ছি, শুনে বলতে পারবেন উনি কিনা?”
“পারবো, ইনশাআল্লাহ।”

মৃত্তিকা কল কে°টে শরীফের একটা ভয়েস রেকর্ড পাঠায়। সারাহ্ কথা শুনে এক ঝ°ট°কায় চিনে ফেলে। কথার স্টাইল আর সুর একই।

সারাহ্ আবারো মৃত্তিকাকে কল দিয়ে বলল,
“আমার তো মনে হচ্ছে উনিই। কন্ঠ একদম সেম।”

মৃত্তিকা ঠোঁট বাঁকিয়ে হেসে বলে,
“আমি শিউর।”
“কে উনি?”
“আমার কাছের কেউ, যাকে আমি অনেক ভালোবাসি।”

এমনসময় মৃত্তিকার কাছে আসে ফাহাদ। বলে,
“এডভোকেট বিথীর স্বীকারোক্তি জানা গেছে। সে নিজের বিষয় ছাড়া, এখানে থাকা অপরূপার ব্যাপারে কিছুই বলেনি।”

মৃত্তিকা কল লাইনে রেখেই বলল,
“নিজের ব্যাপারে কি বলেছে?”
“বলেছে সে প্রাণের ভ°য়ে শাফিনের সাথে যুক্ত ছিল। এর আগেও নাকি একজন এডভোকেটকে শাফিন মে°রে ফেলেছিল, শুধুমাত্র তার বিরুদ্ধে কথা বলার অপ°রাধে। তাই বিথী এসব করেছে।”
“ওকে, তুমি যাও।”

ফোনের অপরপাশে থাকা সারাহ্ ওদের কথোপকথন সবই শুনে। বিথীকে সে চেনে না, তবে এটা তো বুঝেছে শাফিনকে যে এডভোকেট বারবার বাঁচিয়েছে সেও ধরা পড়েছে।
______________________________________

তিনমাস পেরিয়ে যায়, একে একে ফাঁ°সি হয়েছে রাব্বি, বিল্লাল, বিথীর। সম্পৃক্ততা থাকার প্রমাণে আরিফাসহ আরো চারপাঁচ জন অফিসারের যাবৎ জীবন কারাদন্ড হয়েছে। এমনকি শাফিনকে গোসল করানো সেই লোকদেরও বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়েছে। শাফিনের অনেক লোকজনই এখন জেলে আছে।

তবে শাফিনের খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি। পিবিআই না পেলেও মৃত্তিকা পেয়েছে।

মমতাজ বেগমের মাধ্যমে জেনে নিয়েছে শাফিনের অবস্থান, সে সালদা নদী পেরিয়ে ভারতে চলে গেছিলো। শাফিনকে ফোনযোগে অনেকদিন না পেলেও, হঠাৎ-ই পরশু সে মমতাজ বেগমকে ফোন দেয়।

মমতাজ বেগম খুব স্বাভাবিক কন্ঠে কথা বলে সবটা জেনে নেয়। উনি শাফিনের খোঁজ জানতে নিজে থেকেই মৃত্তিকাকে সাহায্য করেছে। যদিও কারণটা মৃত্তিকার কাছে খুবই সহজ। মমতাজ বেগম চাচ্ছে মৃত্তিকা ম°রে যাক, তাও শাফিনেরই হাতে।

ভারতের ত্রিপুরায় সে এতোদিন অবস্থান করেছিল, এখন সে আবারো বর্ডার পেরিয়ে দেশে এসেছে। বিবির বাজার এলাকায় কোনো এক বাড়িতে সে আছে। সারাহ্-কে যেদিন অপ°হ°রণ করেছিল, সেদিনই শরীফের তাড়া খেয়ে সে পালিয়েছিল আর পরশুদিন ফিরে এসেছে।

সব খোঁজখবর যোগাড় করে মৃত্তিকা হাসপাতালে আসে, শরীফের সাথে দেখা করতে। শরীফ নিজের চেম্বারেই ছিল। মৃত্তিকা এসে কোনো অনুমতি ছাড়াই ভিতরে ঢুকে যায়।

শরীফ ওর দিকে না তাকিয়েই বলল,
“পারমিশন ছাড়া ভিতরে আসলেন কেন?”
“বাবার চেম্বারে মেয়ের আসতে হলে পারমিশন লাগে না।”

শরীফ অবাক চোখে মৃত্তিকার দিকে তাকায়। উঠে ওর কাছে এসে বলে,
“মিউকো?”
“হুম, কথা আছে।”
“বসো।”

মৃত্তিকা এসে শরীফের চেয়ারেই বসে পড়ে। শরীফ হেসে পাশের সোফায় বসে। মৃত্তিকা বলে,
“আমি বিবির বাজার যাবো, শাফিন ওখানেই আছে।”

শরীফ ওর কাছে এসে বলে,
“একা?”
“একা হলে কি আর আপনার কাছে আসতাম? আপনিও যাবেন।”
“ইমতিয়াজ?”
“আপনি জানেন আমি ওকে সন্দেহ করছি, এখনো করি।”

শরীফ মাথা নেড়ে বলল,
“কবে যাবে?”
“আজই, বলা যায় না শাফিন কখন পালায়।”
“ঠিক আছে, বিকেলে রওনা দিবো। প্রস্তুতির প্রয়োজন।”

মৃত্তিকা তাতেই সম্মতি জানিয়ে বেরিয়ে আসার সময় বলে,
“শাফিনকে আমি জি°ন্দা ধরবো। অপরূপাকে আমি ওর সামনে মা°রতে চাই।”
______________________________________

সাড়ে সাতমাসের অন্তঃসত্ত্বা সারাহ্-র এখন সবকিছুতেই অস্বস্তি হচ্ছে। হাঁটা, বসা, শুয়ে থাকা, সবই যেন কষ্টের। কুরবানির ইদ গেল কয়েকদিন আগে, বেচারী তাতেও কোথাও বের হতে পারলো না।

ঢাকায় চলে এসেছে দুইমাস হলো। একদিন পর পর আহনাফ এসে দেখা করে। কিন্তু আহনাফকে দেখার তৃষ্ণা যে তাতে মেটে না, লজ্জায় তাকে বলতেও পারে না।

রুম থেকে বেরিয়ে ড্রইংরুমে এসে টিভি ছাড়ে। মাঝে মাঝে কোমড়ের পিছনে হাত দিয়ে হাঁটে, ব্য°থা হয় বলে এই পদ্ধতি। এখনো সে এমন করেই হাঁটছে, পিছন ফিরে দেখে, সামিহা ওকে অনুকরণ করছে। ও তাকাতেই দৌড়ে পালিয়ে যায়।

সারাহ্ এসে সোফায় বসলে সামিহা আবারো ওকে অনুকরণ করতে থাকে। সারাহ্ রেগেমেগে নার্গিস পারভিনকে ডেকে বলে,
“আম্মু, দেখো তোমার মেয়ে কি করে?”

সামিহা হেসে কু°টিকু°টি। নার্গিস পারভিন এসে সামিহাকে বলে,
“আমি দেখছি কিন্তু এশা। নিজের সময় বুঝবি, এমন ফাজলামি কেউ করে?”

সারাহ্ হেসে উঠে বলে,
“দোয়া করো যেন ওর একসাথে চারটা বেবি হয়। মায়ের দোয়া তাড়াতাড়ি কবুল হয়।”

নার্গিস পারভিন মুচকি হেসে “আমিন” বলে চলে গেলেন। সামিহার মুখের হাসি মিলিয়ে গেল। সারাহ্ এখনো হেসে যাচ্ছে।
______________________________________

বিকেল চারটায়, বিবির বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় মৃত্তিকা ও শরীফ, সাথে আর কাউকে আনেনি ওরা। ইমতিয়াজও জানে না মৃত্তিকা কোথায়। কল দিতে পারে ভেবে মৃত্তিকা ফোন সুইচ অফ করে দিয়েছে।

ঢাকা থেকে কুমিল্লা শহর, সেখান থেকে ব্রাহ্মণপাড়া থানা এবং সেখান থেকে প্রধান গন্তব্য বিবির বাজার চলে আসে। শরীফ নিজের গাড়ি নিয়ে এসেছে। জিপিএস ব্যবহার করে জায়গা খুঁজতে সমস্যা না হলেও সময়টা কম লাগেনি, সব মিলিয়ে পাঁচ ঘন্টা লেগেছে ওদের।

রাত নয়টা বেজে গেছে। দেশের সীমান্তবর্তী এলাকা, অবশ্যই এখানে প্রতি পদক্ষেপে বি°পদ। মৃত্তিকাকে একহাতে শক্ত করে ধরে রেখেছে শরীফ।

“শাফিন, খোলামেলা জায়গায় অবশ্যই থাকবে না।”

শরীফের কথায় মৃত্তিকা জবাব দেয়,
“থাকতেও পারে, এমনও তো হতে পারে যে সে এলাকার কোনো প্রভাবশালীর বাসায় আছে।”

শরীফ চিন্তাভাবনা করে বলে,
“সামনে একটা জায়গা আছে। ওখানে প্রচুর ব্ল্যা°ক মার্কেটিং হয়, শাফিন কি ওখানে থাকতে পারে?”

মৃত্তিকা মাথা নাড়ে। তারপর বলে,
“একসাথে দুজন যাওয়া কি ঠিক হবে?”
“আমি তোমাকে একা ছাড়বো না।”
ধ°মক দিয়ে কথাটা বলে শরীফ।

শরীফের কথা মেনে নেয় মৃত্তিকা। দুজনে যায় সীমান্তের সেই স্থানে। রাতের আঁধারেও সেখানে লোকজন আছে। টর্চলাইট জ্বালিয়ে কাঁ°টা°তারের বেড়া কে°টে ওপার থেকে এপারে আর এপার থেকে ওপারে জিনিসপত্র আনা নেওয়া হচ্ছে।

এরমধ্যে একটা চেনা মুখ চোখে পড়ে। হ্যাঁ, এটা শাফিন। সম্ভবত এখানে সে শ্রমিকের কাজ করছে। কাজ শেষে টাকা নিয়ে সে হাঁটা লাগায়, যেন একপ্রকার অন্ধকারে মিলিয়ে যায়।

মৃত্তিকা-শরীফ একটা নির্দিষ্ট দূরত্ব রেখে ওকে অনুসরণ করছে। শরীফ একটা লাঠি নিয়ে রাস্তা থেকে নেমে ঝোপের আড়ালে চলে যায়। মৃত্তিকা রাস্তার পাশ দিয়ে দ্রুত হেঁটে শাফিনের সামনে দিয়ে চলে যায়।

বোরকা-নেকাব থাকায় শাফিন ওকে চিনতে পারে না। একটু দূরে গিয়ে মৃত্তিকা বসে যায়। শাফিন ওর কাছে আসলে মৃত্তিকা বলে,
“আমার খুব শরীর খারাপ লাগছে, একটু সাহায্য করবেন। আমি প্রেগন্যান্ট।”

শাফিন যেন অদ্ভুত এক আনন্দ পায়, সে মৃত্তিকার বি°কৃত কন্ঠটা চিনে না। অনেকদিন হলো সেই চিৎকার সে শুনে না। নি°ষি°দ্ধ চাহিদা বেড়ে গেল তার, ঘোরে জড়িয়ে গেল সে।

শরীফ এখনো ঝোপের আড়ালে লুকানো। তার নজর শাফিনের পায়ের দিকে। এক আঘাতে ওকে কাবু করতে হবে।

মৃত্তিকা উঠে দাঁড়িয়ে নেকাব খুলে স্বাভাবিকভাবে বলল,
“বলেছিলাম না মামা, সিংহী শি°কার করবে। দেখো শি°কার করতে চলে এসেছে।”

ওর মুখের দিকে টর্চ দিয়ে চেহারা দেখে শাফিন বলে,
“মিউকো।”

“ইয়া আল্লাহ্।”
বলে পেছন থেকে শাফিনের পায়ে আ°ঘা°ত করে ওকে ফেলে দেয় শরীফ।

শাফিনের হাত থেকে টর্চ নিয়ে শাফিনের মাথায় জোরে আ°ঘা°ত করে মৃত্তিকা। মাটিতে গ°ড়াগ°ড়ি খাওয়ার মূহুর্তটাই সুযোগ। ওর হাতপা, মুখ বেঁধে দেয়।

“এখন ওকে গাড়ি পর্যন্ত নিয়ে যেতে হবে।”

মৃত্তিকা একটু হেসে বলে,
“আশা করি এটাও পারবো।”

চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here