এলোকেশী_সে #মাহমুদা_লিজা *গল্পের শেষপ্রান্তের প্রহর*

0
582

#এলোকেশী_সে

#মাহমুদা_লিজা

*গল্পের শেষপ্রান্তের প্রহর*

আজানের শব্দে ঘুমটা হালকা হলো অহনের। বিছানার বা’পাশটা হাতড়ে তোড়াকে না পেয়ে বিছানা ছাড়ল দ্রুত। ঘরের দরজাটা বন্ধ পেয়ে বারান্দার দিকে এগোতেই কাঙ্খিত মোহনীয় দৃশ্যাটা নজরে এলো। একপাশে হেলে ভেজা এলো চুল মুছতে ব্যস্ত তোড়া। ঠোঁটের কোণে হাসি টেনে ধীর কদমে এগিয়ে এসে একেবারে তার পেছনে এসে দাঁড়াল অহন। অনেকটা ছুঁইছুঁই অবস্থা। চুল মুছে তোড়া মাথা ঝাকিয়ে চুল পেছনে নিতেই ডানে মুখ সরাল অহন। তার এলোকেশীর চুলগুলো তার গাল ছুঁয়ে নেমে এলো। টাওয়েলটা মেলে দিয়ে পেছনে ঘুরতেই তোড়ার ছোট্ট দেহটার সংঘর্ষ হলো বলিষ্ঠ পুরুষটার বুকের সাথে। ভ্রু কুঁচকে চোখ ছোট করে বলল -“এভাবে দাঁড়িয়ে আছেন কেন? আমি ভয় পেয়েছি।”
অহন নিশ্চুপ। নিজের ইচ্ছে দমন করার নীরব যুদ্ধে মেতেছে নিজেই। এলোকেশীর স্নিগ্ধ আদলে ফোঁটা জলকণা ছুঁয়ে দেয়ার তীব্র বাসনা জেগেছে তার। বা’হাতের আঙ্গুল চালিয়ে এলোমেলো চুলগুলো পেছনে ঠেলে শীতল স্বরে বলল -“আমার জীবনের সেরা সকাল উপহার দিয়েছ কুইন৷ সূর্যোদয়ের দৃশ্য যদি সুন্দর হয়, তবে আজকের সকালটা আরো বেশি মুগ্ধকর।”
তোড়ার ঠোঁটের কোণে মায়াবী হাসি। সবে মুখ খুলেছে কিছু বলার জন্য তার আগেই তার গোলাপি চিকন ঠোঁটজোড়ার দখল নিয়েছে অহনের পুরুষালি উষ্ণ অধরযুগল। তোড়া মুহূর্তটাকে সর্বোচ্চ সঙ্গ দিলো। নিজের মানুষটাকে অনুভব করছে কাছ থেকে। তার হাতটা অহনের পিঠে রাখতেই সম্বিত ফিরল অহনের। স্ত্রীর কপালে উষ্ণ ছোঁয়া এঁকে বলল -“একেবারে কিলার লুকে আমার সামনে এসোনা কুইন। যখন তখন মাথায় চুমুর ভূত চেপে বসে। বিশ্বাস কর আমার কোন দোষ নেই। আমি নিতান্ত ভদ্রলোক।”
তোড়ার শীতল চাহনি। ঠোঁটজোড়া হালকা প্রশস্ত করে বলল -“তবে আজ থেকে দাদুর সাথে ঘুমোবো। তাহলে আর আমাকে দেখা লাগবে না।”
অহন আর্তনাদ করে উঠল -“একদম অত্যাচার করোনা কুইন। তুমি আমার কত সাধনার ফল, তুমি জানো না। এভাবে বলো না। এ্যাটাক হয়ে যাবে।”
তোড়া মুখ বেঁকিয়ে বলল -“সত্য বললেও দোষ। আচ্ছা বললাম না।”
অহনের গাঢ় চাহনি স্ত্রীর কাঁধের নিচে বিউটি বোনের ওপর।অপলক চাহনিতে অদ্ভুত ঘোর। খানিকক্ষণ চোখজোড়া বন্ধ করে বলল -“নিজেকে ঘোমটার আড়ালে ঢাকো কুইন। তোমার সৌন্দর্যে আমি শুধু ভস্মই হচ্ছি না বরং নজরের সংযম হারাচ্ছি।”
তোড়া এবার শব্দ করে হেসে দিল। হাসির তোড় এতটাই ছিল যে মেয়েটা মেঝেতে বসে পড়ল। অহন নিষ্পলক দেখছে সে অকৃত্রিম হাসি। কতমাস পর এই হাসিটা দেখল। নিজের বুকে হাত চেপে বলল -“আজ আমাকে পাগল না বানিয়ে ক্ষান্ত হবে না, তাইনা!”
তোড়া কোনমতে হাসি চেপে বলল -“ভদ্রলোক মাস্টার মশাই অভদ্র হয়ে গেছে বেশ। ঢ্যাঢড়া পিটিয়ে বলব।”
স্ত্রীর খিলখিল হাসিটা নয়ন ভরে দেখল অহন। মনে প্রাণে প্রার্থনা করল তার প্রতিটা প্রভাত যেন এমনই মোহনীয় হয়। ঐ ছোট্ট পরীটার ঠোঁটে হাসির কোন খামতি যেন থাকে, এমন মুহূর্তের আকুল আবেদন সৃষ্টিকর্তার নিকট। হাত বাড়িয়ে তোড়াকে টেনে তুলে বলল -“নিষ্ঠুর রমণী তুমি। কোথায় একটা চুমু খেয়ে আমাকে ভোরের স্নিগ্ধতা উপহার দিবে তা নয়, উল্টো আমাকে নিয়ে হেসে লুটোপুটি খাচ্ছে।”
তোড়া এগিয়ে এসে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল অহনকে। নিজের মাথাটা অহনের বুকে ঠেকিয়ে বলল -” আপনি বড্ড জ্বালাতন করছেন, মাস্টার মশাই। গণিত শিক্ষক থাকবে গম্ভীর, অথচ আপনি এত সুন্দর কেন? প্রতিদিন প্রেমে পড়ি। গণিত শিক্ষকের মগজে শুধু সূত্র কিলবিল করে কিন্তু আপনি মানুষটা এত ভালবাসা পাগল কেন, হুম?”
অহন হাসল। গলা নামিয়ে বলল -“একদম গণিত শিক্ষক বলে অপবাদ করবে না কুইন, গণিত শিক্ষকরা কি রোমান্স জানে না নাকি?”

তোড়া ফের হাসিতে ফেটে পড়ল। এই মানুষটা তাকে হাসাতে জানে। কারণে অকারণে হাসাতে পারে। সময় অসময়ে আগলে নিতে জানে। মানুষটাকে আঁকড়ে সে বাঁচতে চায়। খুব করে বাঁচতে চায়।

****************

দেখতে দেখতে কখন যে ক্যালেন্ডারের পাতা দু’বার ঘুরে গেল টেরই পাওয়া গেলো না। রাত দিন এক করে আঠারটা শাড়ির অর্ডার হ্যান্ডওভার করতে পেরেছে তোড়া। অহনের উপস্থিতিতেই শাড়িগুলো দিতে পেরেছে। ঐ শাড়িগুলোর বাকি টাকা পেয়ে অহনের বুকে মাথা রেখেই মায়ের স্মৃতি হাতড়ে কেঁদেছিল মেয়েটা। হেঁচকি তুলে কেঁদেছিল। কালেভদ্রে কান্না করা মেয়েটাকে একদম কান্না থামাতে চায়না অহন। সে চায় মেয়েটা কাঁদুক। বুকের সব দুঃখ উজাড় করে কাঁদুক। তার প্রশস্ত বুকে, দু’হাতের শক্ত বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে কাঁদুক।

দিনটা শুক্রবার। রি-ইউনিয়ন উপলক্ষ্যে দলবেঁধে হাজির হচ্ছে সবাই। সবাই যার যার মত হাজির হলেও অন্তিদের আঠারজনের দলটা হাজির হয়েছে সেইম ডিজাইন, সেইম প্যাটার্নের শাড়িতে। প্রায় সাড়ে চার হাজার পুরাতন ছাত্র ছাত্রীর ভিড়ে অন্তিদের আঠার জনের ইউনিক লুক নজর কেড়েছে অনেকের। তাদের ম্যাচিং শাড়ি তাদের দলটাকে পুরো ভিড়ে আলাদা করে চেনা যাচ্ছে। তারা অপেক্ষা করছে কখন অহন আসবে তার দলটা নিয়ে। পুরো কলেজে তাদের পঁচিশ জনের দলটা ছিল সবার পরিচিত। আড্ডা দেওয়া থেকে শুরু করে কলেজের সর্বত্র ছিল বন্ধু মহলের সুনাম। এত বড় বন্ধু মহল পুরো কলেজে আর কারো ছিলো না।

মিথিলা তার ছোট্ট আদরকে নিয়ে এসেছে। কেউ সন্তান এনেছে, তো কেউ জীবনসঙ্গী নিয়ে এসেছে। অপেক্ষার প্রহর কাটিয়ে অহন সস্ত্রীক উপস্থিত হলো। বাইক স্ট্যান্ডে ভর দিয়ে পার্কিং জোন এ রাখল। তার পেছন পেছন আসল মিরানের বাইক। একে একে জোভান, নিহাল, মর্তুজা,দিহান, তৌসিফ, নিবিড় এর বাইকও ঢুকেছে পর পর। তাদের পুরো দলটাই মোটামুটি কর্মজীবনে সফল। গেটের ভেতরে আসতেই মিথিলার দিকে নজর ঘুরল তোড়ার। তার আঁকা শাড়িতে অপ্সরী লাগছিল প্রত্যেককে। পঁচিশ জনের দলটার প্রায় চার বছর পর পুনর্মিলনী ঘটল। একে অন্যের সাথে খোশ গল্পে মাতলেও অহন মত্ত ছিল তোড়াতে। মেয়েটা এক কদম হাঁটলেও আঠার মত লেগে ছিল সে। নাচ গানে মত্ত সকলে যখন চারদিক মুখরিত করে তুলেছে তখনই ঘটল অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। আকস্মিকভাবে কেউ একজন তোড়াকে বিশ্রী ইঙ্গিত করে বসে। দপ করে মেজাজ চড়ে বসে তার। তবুও নিজেকে শান্ত রেখে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে অহনের পাশে চুপটি মেরে দাঁড়িয়ে রইল। কিন্তু তাতেও কি থামে অপরপাশের বখাটেপনা। জোরেসোরে শিষ বাজিয়ে চিৎকার করে বলে -“ও হট গার্ল, কাম হেয়ার।”
কথাটুকু বলেই তার দিকে উড়ন্ত চুমুর ইশারা করল। তোড়া মুখ ঘুরিয়ে নিজের মেজাজ সংযত করে স্হান পরিত্যাগে উদ্যত হলেও অহন মানল না। লম্বা লম্বা পা ফেলে ছেলেটার মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়ে বলল -“ও আমার বউ। সরি বল৷ ওকে এক্ষণি সরি বল।”
অহনের কথা শুনেই ছেলেটা হো হো করে হেসে উঠল। ব্যাঙ্গাত্বক স্বরে বলল -“বিবাহিত মেয়ে, তাও সেই লেভেলের সুন্দরী। ভালোই বস, তুমি জিতছ। তোমার বউ হলে আমরা তাকাতে পারব না সেটা কোন কিতাবে পেয়েছ?”
ছেলেটার প্রত্যেকটা বাজে ইঙ্গিত বুঝতে পারল অহন। নিজের মেজাজের নিয়ন্ত্রণ আর নিলো না। ধড়াম করে ঘুষি বসিয়ে দিল নাক বরাবর। এলোপাতাড়ি কিল ঘুষিতে নাজেহাল করে তুলেছে ছেলেটাকে। তার সাঙ্গপাঙ্গরা এগিয়ে এসে অহনকে রুখতে চাইলে মিরানও হাজির হয়েছে। মর্তুজা, দিহানরাও এগিয়ে এসে শুরু করে দিল সমানে সমানে লড়াই। আচম্বিত মারামারিতে সবাই ভয় পেয়ে একপাশে সরে গেছে ততক্ষণে। তোড়া রক্তচক্ষু নিয়ে তখনও তাকিয়ে ছিল ছেলেটার দিকে। তার নাক-মুখ দিয়ে যখন উষ্ণ তরলটা গড়িয়ে এল তখন এগিয়ে এল সে। শীতল চাহনি নিয়ে যখন অহনের সামনে দাঁড়াল তখনই আগুনে জল ঢালার মত দমে গেল মানুষটা। গম্ভীর স্বরে বলল -“পুঁতে দিব ওকে, বিশ্বাস করো। আমার জিনিসে চোখ দিয়েছে, চোখ উপড়ে নেব।”
দু’পাশে মাথা দুলিয়ে শান্ত হওয়ার ইশারা করল মেয়েটা৷ ততক্ষণে পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য অনেকেই এগিয়ে এলো। আশেপাশের সবাই কানাঘুষো করছে -“ইস, এমন একটা বর আমরা কেন পাইনা? এভাবে হিরোর মত আমাদের জন্য কেউ মারামারি করেনা কেন?”
অহন ঘন ঘন শ্বাস টেনে বলল -“তোর সাথে বোঝাপড়া পরে করব। একদম ছাড় নেই তোর।”
অহনের অগ্নিমূর্তিতে এবার আড়ষ্ট হলো ছেলেটা। এগিয়ে এসে বলল -“সরি, আমি জাস্ট মজা করছিলাম।”
তোড়া মুখ ঘুরিয়ে অহনের হাত টেনে সরে এলো অন্য পাশে। আবার শুরু হলো গান। থমকানো পরিবেশটা শীতল হলো ক্রমে। আশপাশ থেকে কেউ কেউ মিথিলাকে শুধাচ্ছে তারা শাড়িটা কোথা থেকে খরিদ করেছে! সবার ইশারা তোড়ার দিকে। এগিয়ে এসে তারা ভাব জমাতে চাইল কিশোরী মেয়েটার সাথে। কেউ কেউ তো তার কন্টাক্ট নাম্বারটা চেয়ে বসল। তার স্বপ্নের দ্বারপ্রান্তে ধীরে ধীরে এগিয়ে এসেছে সে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা পুনর্মিলনীর ছবিতে বেশিরভাগ প্রশ্ন ছিল শাড়িটা কোথায় পাওয়া যায়? এমন শাড়ি কোন জায়গায় পাওয়া যাবে?
সবার প্রশ্নের জবাবে মিথিলাদের উত্তর ছিল -“এলোকেশী সেই কন্যা। মিষ্টি মেয়ে রেহনুমা মজুমদার তোড়া।”
ছোট্ট এই মেয়েটার স্বপ্ন পূরণের হাতে খড়ি হলো অহনের হাত ধরে। তার স্বপ্নের পথে ধাপে ধাপে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষণটা শুরু হলো তবে।

বছর তিনেক বাদে,
একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে মনোনীত হলো রেহনুমা মজুমদার তোড়া। নিজের উদ্যোগে দুস্থ মহিলাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করায় সেরা উদ্যোক্তার পুরস্কারটা ভিড়ল তার ঝুলিতে। শত শত মানুষের ভিড়ে অডিটোরিয়ামে প্রতিধ্বনিত হলো -“রেহনুমা মজুমদার তোড়া, আপনাকে অনুরোধ করা হচ্ছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাত হতে শ্রেষ্ঠ উদ্যোক্তার পুরষ্কার গ্রহণের জন্য।”
মাঝসারির চেয়ার ছেড়ে ছোট্ট শিশু পুত্রকে নিয়ে মঞ্চের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এলোকেশী তোড়া। মঞ্চে উপস্থিত হয়েই সর্বসমক্ষে ঘোষণা করল -“আমি পুরষ্কার গ্রহণের পূর্বে সেই মানুষটাকে আমার পাশে চাই, যার একনিষ্ঠ সমর্থনে আমি আজ এই মঞ্চে।”
অডিটোরিয়ামে ঘোষিত হলো -“আরিয়ান মজুমদার অহন, বেস্টফ্রেন্ড অফ রেহনুমা মজুমদার।”

টেলিভিশনের পর্দায় একযোগে সবাই দেখছে তোড়ার পুরষ্কার গ্রহণের মুহূর্তটি। শিশুপুত্র আহান মজুমদার কোলে নিয়ে অহনের পাশে দাঁড়ানো তোড়ার হাস্যোজ্বল ছবিটা দেখে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন প্যারালাইসিস আক্রান্ত হুইলচেয়ারে বসে থাকা নিজাম মজুমদার। মেয়ের নীরব প্রতিশোধের আঁচ সহ্য করতে না পেরে হার্ট অ্যাটাক করেছিলেন তিনি। বেশ কিছুদিন আইসিইউতে চিকিৎসাধীনও ছিলেন। সম্পূর্ণ সুস্থ হতে পারেননি। শরীরের ডান অংশ অবশ হয়ে প্রকৃতির প্রতিশোধের ষোলকলা পূর্ণ হলো যেন। এই অবস্থায় এসে তিনি অনুভব করেছেন- তিনি নিজের কৃতকর্মের ফল পাচ্ছেন।
তোড়াও নিজের কথা রেখেছে। নিজের লড়াইয়ে একচুল ছাড় দেয়নি। তার টুকরো টুকরো প্রতিশোধের আঁচ এখনো বহাল রেখেছে সে। মায়ের প্রতি কর অবহেলার প্রতিশোধ বলে কথা। ছাড় নেই বিন্দু পরিমাণ।

পুরষ্কার গ্রহণের পর্ব শেষ করে বাড়ি ফিরতেই ছোট্ট হিমেল এসে আঁকড়ে ধরল তোড়াকে। বড় মা, বড় মা বলে কোলে চড়ার বায়না ধরেছে বেশ। অনু এগিয়ে এসে ছেলেকে থামানোর যত চেষ্টাই করল, কাজের কাজ কিছুই হলোনা। ছোট থেকেই ছেলেটা তোড়ার ন্যাওটা হয়েছে। একে একে সবাই ঘিরে ধরেছে তোড়াকে। মেহের জান মোলায়েম স্বরে বললেন -“আমার রুবা দূর থেইকা দেখতাছে, দোয়াও করতাছে দাদু।”
চোখের জল লুকাতে নিজের ঘরে ছুটল তোড়া। সেখানে পৌঁছাতেই দেখল অহন দাঁড়িয়ে তার অপেক্ষায়। অভ্যাসবশত ঐ প্রশস্ত বুকটায় ঝাপিয়ে পড়ল তোড়া। সময় নিয়ে কাঁদল মায়ের স্মৃতি মনে করে।
কান্না থামিয়ে মুখ তুলতেই খোঁপার বাঁধন আলগা করে দিয়ে অহন বলল -“কুইন, তোমার বিন্যস্ত কেশের বাঁধন আলগা করো, তোমার মতই মুক্ত হতে দাও তাদের।”

সমাপ্ত।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here