অন্যরকম_তুমিময়_হৃদয়াঙ্গণ #লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান) #পর্ব_২৭(ধামাকা স্পেশাল)

0
291

#অন্যরকম_তুমিময়_হৃদয়াঙ্গণ
#লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান)
#পর্ব_২৭(ধামাকা স্পেশাল)

“এই ব’দ’মাই’শ মাইয়া আমার জামাইজান এর সাথে চিপকে আছিস কেন হুম? হ্যান্ডসাম ছেলে দেখলেই গায়ে পড়তে মন চাই তাই না? এখনি চোখের সামনে থেকে দূর হও। নাহলে তোর চুল টেনে ছিঁড়ে তোর মুখের ভেতরে ঢুকিয়ে দেবো। আর আপনি কি হ্যা? এখনি হাত ছাড়েন নচেৎ আজ আপনার সাথে কেয়ামত হবে বলে দিলাম।”

বিবিজান এর অগ্নিশর্মা রূপ দেখে ঢোক গিলে হাতজোড়া ছেড়ে দিল আফরাজ। ধপাস করে মেয়েটা মাটির উপরে পড়ে যায়। ‘আহহহ’ করে চিল্লিয়ে তার বান্ধবীদের কাছে হাত ধরার জন্য সহায়তা চাইল। তারা সহায় হয়ে তুলল মেয়েটিকে। ধরে অন্যখানে নিয়ে গেল। তারা যেতেই আফরাজ আমতা আমতা করে কিছু বলতে নিল। নাজীবা স্বামীর চেহারার ধরণ বুঝতে পেরে মুখ ঝামটা মে’রে ক্লাসরুমের দিকে চলে যায়। আফরাজ কপাল চাপড়ে বলে,

“হয়েছে আজ তো মেরা কের নেহি। কে জানে কতক্ষণ ছোট একটা ব্যাপার নিয়ে বোকা ফুল রাগ করে থাকে। যাই হোক মহারাণী আন্দাজে ক্লাসে ঢুকে গেল। এর এডমিশন নতুনভাবে করিয়ে দিয়ে আসি।”

নিজের মত কথা শেষে আফরাজ সোজা হেড-অফিস রুমের দিকে গেলো। আফরাজ পূর্বপরিচিত হওয়ায় হেড-স্যার তার স্ত্রীর এডমিশন গ্রান্টেড করলেন। তিনি আশ্বাস দিয়ে বললেন,

“তুমি চিন্তে করো না। তোমার ওয়াইফের কোনো ক্ষতি হবে না। আমি সবাইকে এলার্ট করে দেবো। তুমি নিশ্চিন্তে অফিসে যেতে পারো।”

মাথা নেড়ে বেরিয়ে যায় আফরাজ। হেড-স্যার নিজের কথা যথারীতি পালন করলেন। নাজীবার ক্লাসে খুব অস্বস্তি হচ্ছে। পূর্বে ক্লাস করলেও মাঝে তার বিরাট গ্যাপ যায়। যার ফলে পরিচিত মুখগুলি পরের সেমিস্টারে পর্দাপণ করেছে। লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান)সে নতুন হওয়ায় সকলের দৃষ্টি তার দিকে। ঢোক গিলে নিজের দিকে ভালো করে পরখ করে নেয়। বোরকার সাথে হিজাব পিনআপ করা, মুখে মাস্ক লাগানো। খারাপের তো কিছু দেখছে না। একটা ছেলে তার পাশে এসে বসে পড়ল। শিউরে তৎক্ষণাৎ জানালার পাশ ঘেঁষে বসে নাজীবা। সে মুখ খুলতে নিলেই ক্লাসের মধ্যে ম্যাডাম চলে আসে। মিস ফারহানা ফিজিক্স নিয়ে পড়াবেন বলে বই খুললেন। নাজীবার একটা মাস গ্যাপ গেল। তাই সে এবারের পড়ায় নিজের দক্ষতা দেখিয়ে দিবে বলে ভেবে রেখেছে। লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান)অফিসের কাজ শেষ করে আফরাজ খেয়াল করল একটা ত্রিশ মিনিট পার হয়েছে। তড়িঘড়ি বিবিজান এর কথা মাথায় আসতেই সে ভার্সিটির দিকে চলে এলো। কলার ঠিকঠাক করে সামনে এগোতে নিলেই তার পা-জোড়া থেমে যায়। হাত মুঠোবদ্ধ করে সামনের দিকে চেয়ে রইল। হেসে হেসে নাজীবা তার ক্লাসমেট যে তার পাশে বসে ছিল তার সঙ্গেই কথা বলছে। ছেলেটা মন্দ নয়। নাম নিলয় চশমা এঁটে রাখা বোকা ছেলের মত দেখতে হওয়ায়। কেউ তার সঙ্গী হয় না। বিধেয় নাজীবা-কে পেয়ে সেও এক বান্ধবী পেলো ভেবে খুশি হলো। হঠাৎ নাকে ঘু’ষি লাগায় চিৎকার করে মাটির উপরে পড়ে যায় নিলয়। বেচারা হতভম্ব হয়ে গেল। তার সামনে অচেনা যুবক-কে দেখে ঘাবড়ে গেল। ভাবল সে কোনো ভুলভাল কিছু করেছে কিনা সেই চিন্তায়। কিন্তু নাজীবার আচরণে দ্বিগুণ চমকালো। সে যুবক-কে আকড়ে ধরে ফসুরফাসুর কি যেনো বলে তার কাছে এলো। নাজীবা-কে দেখে ভ্যা ভ্যা করে কান্না করা শুরু করে দিল। আফরাজ বোকা বনে গেল। তার বিবিজান এর সঙ্গে অন্য পুরুষ কে দেখে মাথা গরম হয়ে গিয়ে ছিল। তাইত দিকবেদিক ভুলে ঘু’ষি মা’রল। মাথা চুলকে নিলয়-কে টেনে দাঁড় করায়। তার পিঠে চা’প’ড় মে’রে বলে,

“ওহ আমার ওয়াইফ এর সঙ্গে ভালোই বন্ধুত্ব করছো দেখি। শোনো তোমাদের বন্ধুত্ব আজীবন অটুট রাখতে তোমাকে একটা কাজ দেবো পাশে আসো।”

নাজীবা অতীব আগ্রহ নিয়ে শোনচ্ছিল। শেষের কথায় মুখ বাঁকাল। এত কি পার্সোনাল কথা কে জানে? আফরাজ আড়চোখে বিবিজান-কে দেখে গম্ভীর কণ্ঠে বলে,

“শোন একদম ন্যাকামি করবি না। আমার বউয়ের সঙ্গে উল্টাপাল্টা কিছু করার চিন্তাও করলে না? ডাইরেক্ট পকেট থেকে গু’লি বের করে আখিরাতের টিকেট তোর হাতে ধরিয়ে দেবো। এবার থেকে তুই ওর গার্ড বুঝছিস। চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে যত ঘণ্টা নাজীবা ভার্সিটির মধ্যে কাটায়। তার সেফটির পুরো দায়িত্ব তোর উপর দিলাম। কোনো ভুল হলে??”

পকেটে হাত রেখে গু’লির দিকে ইশারা করে বোঝাল। নিলয় ভীতিকর মুখে বলে, ‘না না বস আপনি যা বলবেন তাই। ভাবী আমার বোন সমান। একদম উপরওয়ালার নামে কসম খেয়ে বললাম।’
আফরাজ মাথা নেড়ে বলে,’হয়ছে হাত নামা। প্রিটেন্ট বি নরমাল ইয়াংম্যান।’
‘নরমালের চেয়ে গু’লি দেখেই হিসি ধরে গেলো।’ মনেমন নিলয় বলল। ঢোক গিলে হাতের বেবি ফিঙ্গার দেখাল। আফরাজ যাওয়ার জন্য ইশারা করে। তাকে আর পাই কে? পালিয়ে যায় একেবারে। আফরাজ বাঁকা হেসে বিবিজান এর কাছে আসতে গেলে দেখল মহারাণী আগেই গাড়িতে বসে পড়েছে। সেও মুচকি হেসে গাড়িতে গিয়ে বসে।
অথচ তাদের গাড়ির দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে একজোড়া চোখের মালিক চেয়ে রইল। তার হাতের মধ্যে থাকা ফাইল চেপে ধরে মুচড়ে ফেলে দেয়। আফরাজ এর গাড়ির চলে যেতেই সেই চোখের মালিকও নিশ্চুপে চলে গেলো।

____

চারমাস পর,
কুসুমা ভারী পেট নিয়ে বেলকনিতে বসে আছে‌। চেহারায় মলিনতা ভাব। বলা যায়, গর্ভবতী নারীদের সৌন্দর্য্যের আদল বাড়তে থাকে। কিন্তু যাবত কয়েক মাস চিন্তা চেতনায় তার শরীরটা ফ্যাকাসে হয়ে গিয়েছে। আজকাল স্বপ্নেও অদ্ভুত কিছু দৃশ্য দেখতে পায়। যা তার মন-কে খিটখিটে স্বভাবের করে দিয়েছে। নাজীবা রুমের বাহিরে এসে দরজা নাড়ল। কুসুমার ধ্যান ফিরল। তপ্তশ্বাস ফেলে বলে,

“আসো ভাবী।”

নাজীবা এসে কুসুমার মলিনতা দেখে কপাল চাপড়ে বলে,

“আহারে ভাবী জি ভাইয়া মাত্র একমাস এর জন্য ঢাকা গেছেন। এ নিয়ে মন খারাপ করে থাকলে হয় নাকি? চার মাস শেষ হতে চলেছে আপনার। যত জলদি সম্ভব আমাদের চাম্পকে আমাদের কোলের ঝুড়িতে দিয়ে দাও।”

“মাশাআল্লাহ নাজীবা তুমি পারোও বটে। তোমার মন খারাপ হয় না? আফরাজ ভাইয়া তো দুমাস অব্দি বাসায় ফিরছেন না। অফিসের নাম করে তিনি আগে গিয়েছেন। তারপর তো তোমার ভাইয়া। তিনি নাহয় কল দেন আমায়। আফরাজ ভাইয়া তো কল অব্দি দেন না। আপনি কেমনে সহ্য করছেন ভাবী?”

কুসুমার কথায় মুচকি হাসল। নম্র গলায় আওড়ায়।

“কে বলছে উনার সাথে কথা হয় না? হয়ত কথা স্বপ্নে আর মনে। তিনি আমার অপেক্ষার পরীক্ষা নিচ্ছেন। তিনিও আমায় তত ভালোবাসে যতটা আমি বাসি।
ভাবী আপনি তো জানেন না চার মাস আগের কাহিনী। এখন নাহয় বলি, ভার্সিটির অফ ডে-তে আফরাজ এর সাথে ঘোরার প্ল্যান করে ছিলাম। কিন্তু তার আজেন্ট কোথাও যেতে হচ্ছিল বলে তড়-জড় করে চলে যায়। কি এমন কাজ? আমার সন্দেহ হওয়ায় পিছু নিলাম। তখন যা দেখলাম। বিশ্বাস করুন ভাবী যেখানে দাহাব আমায় বন্দি রেখেছিল সেখানেই তাকে বন্দি বানিয়ে রেখেছিল আফরাজ। তাকে জানেপ্রাণে মা’র’ল না কেনো তা আমার মনে ঘুরপাক খাচ্ছিল। আফরাজ যতক্ষণ ছিল টর্চার করেছিল তবুও মা’রেনি। দাহাব এহসান এর শরীরে ক’ঙ্কাল ছাড়া কিছুই বোঝা যাচ্ছিল না। তখনি আমি খেয়াল করলাম আফরাজ চলে যায়। রুমের আশপাশে কোনো গার্ডসও নেই। আমার চোখে বাবা-মায়ের খু’নের দৃশ্য,আমায় শারীরিক-মানসিক অত্যাচার এর দৃশ্য ফুটে উঠায় কাউকে না বলে আমি নিজ হাতে খু’ন করে দেয়। না জানে পুলিশ কেমনে জেনে ছিল? পুলিশ অব্দি জেনে গিয়ে ছিল। তাইত পরিস্থিতি সামলাতে আফরাজ এর খুব কষ্ট হচ্ছিল। আমি আমার দোষও স্বীকার করেছি। কিন্তু তিনি যে রাগ করে দুমাস কথা বলবেন না আর দুমাস পরই ঢাকা চলে যাবেন কে জানত?”

বেদনাময় চোখের জল মুছে কুসুমার হাত ধরে বলে,

“বাদ দাও ঐসব কথা। দেখবে ভাইয়াও ফিরবেন উনিও ফিরবেন।”

তড়ফড়িয়ে রুমের মধ্যে চলে এলেন মিসেস ফেরদৌসী। দু’বউমা কে ঘাপটি মে’রে বসে থাকতে দেখে হা হয়ে গেলেন। কোমরে হাত রেখে নাজীবার কান মলে দেন। সে মৃদু চিৎকার করে বলে,’আরে আরে ডোন্ট বিহেইভ লাইক এ ট্রিপিক্যাল শ্বাশুড়ি- মম। ইউ আর মাই রিয়াল মম। উম্মআহহ।’
মিসেস ফেরদৌসীর‌ গালে চুমু দেয়। তিনি হেসে বলেন,

“পাকা বিচ্চু তুই একটা। যাহ রেডি হো আজ তোর বউভাতের অনুষ্ঠান। এমনিতে পড়ালেখার মাঝে অনুষ্ঠান রাখার সময় পাস না। এখন পেয়েও হাতছাড়া করছিস। এখনি রুমে যাহ্।”

নাজীবা শুনে মলিন হেসে বলে,

“কিই বা হবে এই অনুষ্ঠানে বলুন? আপনার ছেলের তো আমাকে একা ফেলে যাওয়ার বেশি শখ। কাছে আসতে না আসতেই দূরে চলে যান। এতটুকু ভাবে না আমার হৃদয়ের আঙ্গিনায় কি রকম অনুভুতি কাজ করছে? অত্যন্ত ক্ষমা করে হলেও কাছে আসতে পারতেন। একটুখানি বুকে জড়িয়ে ধরে বলতে পারতেন,ভালোবাসি বিশ্বাস করি তোমায়। তাও বললেন না।”

আর কিছুটি না বলে নীরবে রুম ত্যাগ করল। মিসেস ফেরদৌসী আর কুসুমা একে অপরের দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসল। কুসুমা একলা হাতে রেডি হতে পারবে না বলেই মিসেস ফেরদৌসী এসেছেন। রুমে এসে বিছানার উপর জর্জেট শাড়ি সেই সাথে মেচিং জুয়েলারি রাখা দেখে সেগুলো-তে হাত বুলাল নাজীবা। শাড়ির রংটা হলো সিলভার-ব্ল্যাক। তার ফেভারিট কালার বটে। ভেবে নিল তার শ্বাশুড়ি মা রেখেছেন এই সেট। সন্তপর্ণে গুনগুন করে মনের কষ্ট লুকাতে মুখের ফেসিয়াল করতে লেগে পড়ে।

রাত প্রায় নয়টা বাজছে,
জনাব ইসমাইল হেসে সকলের সাথে বউমা-র পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন। তার ছেলের অতীব উন্নতির গুঞ্জে তিনি গর্বিত। কুসুমাকে সাথে নিয়ে গোমড়া মুখে বসে আছে নাজীবা। তার কাছে মনে হচ্ছে সে একটা পুতুল। আর সবাই পুতুল কে দেখে কমপ্লিমেন্ট মে’রে টেরে চলে যাচ্ছে। বিরক্তি নিয়ে উঠতে গিয়েও পারল না। তার শ্বশুর শ্বাশুড়ির হাস্যজ্জ্বল মুখশ্রীতে গম্ভীরতা শোভা পাক তা সে মোটেও চাইছে না। আফরাজ এর ফুপি-ফুপার ছেলে-মেয়েরা এসে ভীড় জমাল। সবার চোখের দৃষ্টি দেখে ভয় পেয়ে যায়। কোনো ইনভেস্টিগেশন করবে ভেবে ভয়ে জমে গেল। কুসুমা মুচকি হেসে বলে,

“এই ফাজিল তোরা নতুন বউরে ভয় লাগাচ্ছিস কেন? যাহ্ ভাগ এখান থেকে।”

“এহ বললেই হলো নাকি? একদম যাবো না ভাবী তুমি জানো আমাদের নতুন ভাবীর জন্য অনেক শর্ত জমিয়ে রেখেছি। যদি না মানো তাহলে আফরাজ ভাইয়া কে বলে তোমাকে বিদায় করে দেবো।”

“আচ্ছা বাচ্চু? আগে আমাকে চিনে এসো তারপর কথার কথা বলিও।”

মেয়েটিকে চোখ টিপ দিল নাজীবা। কথাটি শুনে ঢোক গিলল মেয়েটি। তবুও আফরাজ এর কাজিনের দল তাকে ছাড়ল না। মুরব্বিগণ কে একসাথে রেখে নাজীবা-কে নিয়ে কাজিনপক্ষ ছাদে নিয়ে যায়। সেখানে ঠান্ডা হাওয়ার কারণে নাজীবা সমেত সকলেই জ্যাকেট পরে নেয়। যেনো ঠান্ডার কারণে অসুস্থ নাহয়। এর মাঝে হিটার অন করে দেয় আফরাজ এর কাজিন। নাজীবা-কে মাঝখানে বসিয়ে সকলে আবদার করে উঠল একটা গান শুনানোর জন্য।
নাজীবা আমতা আমতা করে বলে,

“আসলে আমি না গান পারি না। আমার গলার সুর ভালো না মোটেও।”

কথাটি বলে সে মাথানিচু করে নিল। এ কথায় কারো মাঝে প্রভাব ফেলল বলে মনে হলো না। বরং তারা একসাথে হেসে বলে,

“আপনি না পারলেও আপনার পার্টনার তো আছেই। তার সাথে ডান্স উইড সং দু’টোই দেখান।”

নাজীবা চমকে গেল। মুখ খুলতে নিলে কেউ তার হাত চেপে ধরে। গরম পুরুষালি হাতের স্পর্শে শিহরিত হলো সে। ছলছল চোখে হাতের মালিকের দিকে তাকায়। ঠোঁটের কোণায় মুচকি হাসি আফরাজ এর। সকলের দৃষ্টি অপেক্ষা করে বিবিজান এর কানের কাছে ওষ্ঠদ্বয় ছুঁয়ে বলে,’হেপ্পি বার্থডে মাই গার্ল। উইশিং ইউ অলওয়েজ উইড মি ইন শা আল্লাহ্।’ নাজীবা হতবাক আজ তার জন্মদিন অথচ তারই মনে নেই। সে প্রশ্নাতীত দৃষ্টিতে তাকায়। কুসুমা এসে বলে,

“ভাইয়া তোমার জন্মদিনের জন্য আগেভাগে কাজ সেরে ফেলতে দুমাসের জন্য ঢাকা চলে গিয়ে ছিল। তার পূর্বের দু’মাস তোমার উপর রাগে নয় বরং কাজের চাপে পড়ে কথা অব্দি বলার সময় সুযোগ পাননি তিনি। তাইত আজ তোমার জন্মদিনে স্বয়ং সামনে দাঁড়ানো। তিনি যে আসবেন এটা আমরা সবাই জানতাম শুধু তুমি ছাড়া।”

নাজীবা মুখ ফুলিয়ে রেলিং ধরে বুকের উপর হাত গুজে দাঁড়িয়ে যায়। তার অভিমান হলো এত কষ্ট না দিয়ে স্বাভাবিক ভাবে বললেও পারত মানুষটা। তা-না বলে নিজের মত কাজ-কাজ করে বেড়ালো।
হঠাৎ কোমরে হাতের স্পর্শে চোখ বুজে নিল নাজীবা। মৌন ভাবে বিবিজান-কে ধরে মুখোমুখি ঘুরিয়ে নিল। গানের টিউন বেজে উঠায় আফরাজ তার বিবিজান কে পুনরায় ঘুরিয়ে নেয়।

Samajh na aaye samjhaun ton,
Bas ch naa aaye kise hor ton ,
Dilawara aa,Mera Dil awara AA

নাজীবা-কে উল্টো পিঠ ঘুরিয়ে দুজন তাদের বিপরীত দিকে মুখ করে দাড় করিয়ে নেয় আফরাজ। লজ্জায় নাজীবা চোখ বুজে রইল।

Sangda ae challa nehde aaun ton,
Darda ae tainu billo khon ton,
Dilawara aa,Mera Dil awara AA

Dil Mera AA AAA AAA… aaaaa A. aA yeah!

আফরাজ নাজীবার কোমরে হাত রেখে একহাতে তার পিঠ চেপে ধরল। মুখটা ফিরিয়ে নেয় কপালে চুমু খেলো। সকলে দেখে মিটমিটে হেসে শিস বাজাতে লাগল।

গানের টিউন টেনে একসাইডে করা হলো।

Humm Chori Chori lukk lukk ke mein,
Dil naal la liyan,
Hauli hauli Ruk Ruk ke mein,
Massa no sambhaliyan.
Na Manda ae mere kehna,
tere Naina che hi rehna,
If I tell u , if I tell u,
Tabaah hi ho jaana.

নাজীবা-হাতজোড়া আবদ্ধ রেখে আফরাজ এর দিকে তাকিয়ে রইল। দু’জন মৃদু মৃদু হাঁপাচ্ছে। লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান) নাজীবার তো লজ্জায় কাতর অবস্থা। সে না পারছে পালাতে , না পারছে স্বামীকে থামাতে। কিন্তু বলতে গেলে তারও এই মুহূর্ত এমন সুন্দর দিনের অপেক্ষা ছিল। আজ নাহয় লজ্জা কে আটক করে নিল।

Samajh na aaye samjhaun ton,
Bas ch naa aaye kise hor ton ,
Dilawara aa,Mera Dil awara AA
Sangda ae challa nehde aaun ton,
Darda ae tainu billo khon ton,
Dilawara aa,Mera Dil awara AA

Dil Mera AA AAA AAA… aaaaa A. aA
Dil Mera ohhho ohho ohh AAA.

নাজীবার মাথা হালকা করে ঝুঁকে থাকায় তার ওষ্ঠজোড়া কাঁপছে। আফরাজ একপা ভাঁজ করে বিবিজান-কে ঝুঁকিয়েছে। সকলে তাদের কাপল পারফরম্যান্সের মুগ্ধতায় হাত তালি দিয়ে উঠে। দু’জনের ধ্যান ফিরল। নাজীবা লজ্জার রেশ পুরোপুরি আকড়ে ধরল। একছুটে ছাদ থেকে পালিয়ে যায়। আফরাজ সমেত সকলে হেসে দিল। তারাও নিচে চলে আসে। আফরাজ কেক অর্ডার করেছিল। তা পরিবেশন করা শেষ। নাজীবার পাশে গিয়ে দাঁড়ালো সে। দু’জনে একে অপরের দিকে মুগ্ধ দৃষ্টিতে চেয়ে রইল কয়েকপলক। পরক্ষণে মুচকি হেসে আফরাজ এর গালে মৃদু চা’প’ড় দিয়ে ছু’ড়ি হাতে নিল। কেক কাটতে নিলেই হঠাৎ করে বড়জড় ব্লাস্ট হয়।

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here