কথা দিলাম ‘ 🌸❤️ ||পর্ব ~ ২২|| @কোয়েল ব্যানার্জী আয়েশা

0
257

‘ কথা দিলাম ‘ 🌸❤️
||পর্ব ~ ২২||
@কোয়েল ব্যানার্জী আয়েশা

সকালে,

আধভিক: আমার কেবিনে ঢোকার আগে আপনাকে পারমিশন নিতে হবে মিসেস সিয়ারা। আপনি আমার কেউ হন না যে বিনা পারমিশনে, যখন তখন ঢুকে পরবেন।

সিয়ারা চুপ করে আধভিকের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই নিজের হাতে ব্রেকফাস্ট বানিয়ে আধভিকের জন্য নিয়ে এসেছিলো। অফিসে আসার পরে আধভিকের কেবিনে চলে আসে। সেদিনের মেয়েটা আজকে আর ওকে আটকায়নি। তবে আধভিক যে এমন ব্যবহার করবে সেটা সিয়ারা ভাবেনি। সিয়ারা এসবই ভাবছিল সেই সময়ে আধভিক হঠাৎ করেই চেঁচিয়ে ওঠে,

আধভিক: আমি কি বললাম আপনার কানে যাচ্ছে না? কেন এসেছেন এখানে? কি দরকার?

সিয়ারা: (কেঁপে উঠে) আ..আমি, আমি তোমার জন্য ব্রেকফাস্ট করে এনেছিলাম।

আধভিক: হু দ্যা হেল আর ইউ? কে আপনি? আপনাকে কে আমার জন্য এসব করতে বলেছে? আমি বলেছি?

সিয়ারা না বোধক মাথা নাড়ে নীচের দিকে তাঁকিয়ে।

আধভিক: তাহলে কেন করছেন এসব? প্লিজ, এইসব নাটক একদম করবেন না। আর একটা কথা, আপনাকে আমি নিজের কেউ মনে করি না তাই দয়া করে “তুমি” বলে সম্বোধন করা বন্ধ করুন। আমি এটা পছন্দ করি না।

__স্যার আমি আগের দিন ওনাকে অনেকবার বারণ করেছি উনি কিছুতেই আমার কথা শোনেননি।

আধভিক নিজের স্টাফের কথা শুনে তীক্ষ্ণ চোখে সিয়ারার দিকে তাকায়। নীচের দিকে তাকিয়ে একটু মনে করার চেষ্টা করে গতকালের ঘটনা। তবে মনে পরে না।

আধভিক: আজকে আটকাওনি কেন?

মেয়েটি: গতকাল উনি আপনার কাছে যাওয়ায় আপনি কিছু বলেননি তাই আমি…

আধভিক: গতকালের কথা গতকাল চলে গেছে। আমি অতীতের পুনরাবৃত্তি নিজের জীবনে করি না। যেটা পিছনে ফেলে এসেছি সেটা পিছনেই থাক। আমি সেটার দিকে ঘুরেও তাকাবো না। আমি আজকের কথা বলছি! এরপর থেকে জানো ওনাকে আমার কেবিনে আমার পারমিশন ছাড়া ঢুকতে না দেওয়া হয়। গট ইট?

__ইয়েস স্যার! আপনি আসুন আমার সাথে।

আধভিক সিয়ারার দিকে তাকালে দেখে সিয়ারা নীচের দিকে তাকিয়ে আছে। আধভিকের কথা শেষ হতেই সিয়ারা নিজের পাশে থাকা সেন্টার টেবিলটায় খাবারের ব্যাগটা রেখে দিয়ে দরজার দিকে এগিয়ে যায়।

আধভিক: নিজের জিনিস নিয়ে যান।

সিয়ারা: কারণ ছাড়া আমি কখনও কিছু করি না। আর ফিরিয়ে নেওয়ার স্বভাব আমারও নেই। আমার জীবনে যাঁর জন্য যা তৈরী হয়ে যায়, তা আমার পক্ষে ভুলে যাওয়া বা মুছে দেওয়া কখনও সম্ভব না। তাই আমার জিনিসটা বরং আপনার কাছেই থাক, আপনিই নাহয় ফেলে দেবেন।

সিয়ারা কথাটা শেষে এই প্রথম আধভিকের দিকে লাল, ভেজা দুচোখে তাকায়। এই চাহুনিতে আধভিকের হৃদয়স্পন্দন বন্ধ হয়ে যাওয়ার যোগান। ভীষণ অপরাধ বোধ হঠাৎ করেই জেগে ওঠে আধভিকের। সিয়ারার চোখ মোছা আর চলে যাওয়ায় বুকের বাম পাশটা চিনচিন করে ওঠে। আধভিক সাথে সাথে মেয়েটাকে বলে,

আধভিক: ওনাকে জানো কখনও কেউ আমার কেবিনে আসতে বাঁধা না দেয়। নাও আউট!

মেয়েটা অবাক হয়ে গেলেও কোনো কিছু না বলে হ্যাঁ বোধক মাথা নেড়ে চলে যায়। মেয়েটা চলে যেতেই আধভিক মনে মনে বলে,

আধভিক: আমি আর চাই না তোমার সাথে নিজেকে জড়াতে। কোনোমতেই চাই না। আজ সকালে ড্যাড আর সোহমের কথা শুনেই বুঝতে পেরেছি আমি গতকাল তোমার সব কথা শুনেছি, তুমি যা বলেছো মেনে নিয়েছি। আমি যে এখনও তোমাকে ভালোবাসি সেটা হয়তো তুমি বুঝে গেছো। তাই তো এখন খারাপ ব্যবহার করতে হবে তোমার সাথে কারণ, আমি তোমাকে ভালোবাসলেও ফিরে পেতে চাই না আর। যেই আঘাতটা তুমি আমাকে দিয়েছো সেই আঘাতটা আমি কখনও ভুলতে পারবো না, কখনও না!

আধভিক মাথা এলিয়ে দেয় চেয়ারে। তাঁর মাথা কাজ করছে না। সে চাইছে সিয়ারাকে নিজের থেকে দূরে রাখতে তবে পারছে না। পারলে হয়তো কিছুক্ষণ আগে মেয়েটিকে বলেও নিজের কথা ঘুরিয়ে নিত না। অনুমতি দিতো না সে সিয়ারাকে এই কেবিনে আসার। এদিকে যখনই তাঁর মন চাইছে সিয়ারাকে কাছে টেনে নেওয়ার তখনই ওর দেওয়া আঘাতের কথাটা মনে পরছে।

আধভিক আর না পেরে নিজের হিপ ফ্ল্যাস্কটা নিয়ে চুমুক দিতে যাওয়ার আগেই ওর সামনে থাকা সেন্টার টেবিলের দিকে চোখ গেল। সিয়ারার আনা ব্যাগটা সেখানে রয়েছে। আধভিক উঠে সেখানে গিয়ে সোফায় বসে ব্যাগটা খুলতেই দেখলো টিফিনবক্স। তাড়াতাড়ি সেটা খুলতেই দেখতে পেলো ওর পছন্দের খাবার তৈরী করে এনেছে সিয়ারা। মন মানলো না খাবারটা রেখে উঠে যেতে। ফেলে দেওয়ার তো প্রশ্নই আসে না, তবে খেতে গিয়ে সিয়ারার কথাগুলো কানে বাজছিল। একটু বেশিই কি বলে ফেললো? ভাবছে আধভিক।

অন্যদিকে,

সিয়ারা সোজা নিজের বাড়ি এসে ঘরে চলে যায়। বিছানায় বসে দুহাত দিয়ে মুখ ঢেকে কান্নায় ভেঙে পরে। বেশ কিছুক্ষণ পর হঠাৎই নিজের কাঁধে কাওর হাতের স্পর্শ পায়। মাথা তুলে পাশ ফিরে তাকাতেই দেখে দেবাংশু বসে আছে। দেবাংশুকে দেখতে পেয়ে সিয়ারা চোখের জল মুছে নেয়।

দেবাংশু: আমার কাছে লুকিয়ে কোনো লাভ নেই সিয়া। আমি ভালো ভাবেই বুঝতে পারছি আধভিকই সেই ব্যক্তি যার জন্য তুই এতদিন কষ্ট পেয়ে এসেছিস, ইভেন এখনও পাচ্ছিস।

সিয়ারা: না দেব। তুই ভুল বললি। আমি কোনো কষ্ট পাইনি আর পাচ্ছিও না। আমি কেন কষ্ট পাবো বল তো? আমি তো কখনও ভালোই বাসিনি ওকে। শুধু ওই আমাকে ভালোবেসেছে। আমি তো বিশ্বাসঘাতকতা করেছি, প্রতারণা করেছি। আমার মত বিশ্বাসঘাতক, প্রতারকের কোনো কষ্ট হয় না কখনও।

সিয়ারা নিজের কান্নাগুলো একপ্রকার গিলে নিয়ে কথাগুলো বললো। দেবাংশু হালকা ঠোঁট ভিজিয়ে নিয়ে বললো,

দেবাংশু: সিয়া, আধভিক জানে না তুই কি ফেস করেছিস এই দুবছর। ও জানে না তুই কিসের মধ্যে দিয়ে গেছিলিস সেইদিন। ও ভাবছে তুই হয়তো ইচ্ছা করে ওকে ছেড়ে চলে এসেছিস।

সিয়ারা: হ্যাঁ! তাই তো। আমি তো বিশ্বাসযোগ্য নই। তাই জন্যেই তো একবারও ভেবে দেখলো না আমি কেন ছেড়ে চলে এলাম। একটাবার খোঁজও নিয়ে দেখেনি।

দেবাংশু: এতো বড়ো শহরে খুঁজলেই যে পাবে তার তো কোনো নিশ্চয়তা নেই সিয়া। আর ও হয়তো খুঁজেছে কিন্তু তুই সেটা জানবি কীভাবে বল?

সিয়ারা: (তাচ্ছিল্য হেসে) কিন্তু যখন আমাকে খুঁজে পাওয়া প্রায় অসম্ভব ছিল তখন ঠিক খুঁজে বার করেছে। তবে এই আশা আমি করছি না। আমি শুধু বলছি, একটাবারও কি ওর মনে হয় না যে, আমি কেন করেছিলাম এমন সেটার উত্তর জানাটা ওর দরকার?

দেবাংশু: তুই জানা। ও হয়তো নিজের ওই অতীতের মুখোমুখি হতে চাইছে না। তুই তো আমাকে বলেছিলি যে তুই যাকে ভালোবাসিস সে নিজের কাছের মানুষকে হারিয়েছে। ও তোকে ভালোবাসে, তুইও ওকে ছেড়ে চলে এসেছিলি তাই হয়তো এই জিনিসটা ও মনে করতে চায় না।

সিয়ারা: (তাচ্ছিল্য হেসে) ও কখনও অনুভব করেছে দেব, যখন নিজের দুটো ভালোবাসার মানুষের মধ্যে একজনকে বেছে নিতে হয় তখন কেমন অনুভব হয়? করেনি। আমি করেছি। সেই মুহুর্তে দাঁড়িয়ে আমি নিজের মা কে চোখের সামনে মরতে দেখছিলাম। তবে তাঁকে যদি বেছেনি, তাহলে অন্যদিকে আমার ভালোবাসার মানুষটা শেষ হয়ে যাবে। কি করা উচিৎ ছিল বল তখন আমার? আমার তো ইচ্ছা করছিলো নিজেকেই শেষ করে দি। ইভেন এখনও আমার সেটাই মনে হচ্ছে।

দেবাংশু: সিয়া!! কি আজে বাজে কথা বলছিস? মাথাতেও আনবি না এসব চিন্তা তুই।

সিয়ারা: (উঠে দাঁড়িয়ে) কেন আনবো না দেব? কেন? আমার কি মরার অধিকারও নেই? বল? আমি কি নিজের ইচ্ছায় মরতেও পারবো না? আমি কি নিজের জন্য ভাবতে পারিনা? সবসময় কেন আমি লোকের কথা ভাববো? ছোটো থেকে যেই মা বোনের কথা ভাবলাম। যেই বোনকে নিজের সব জিনিস দিয়ে দিতাম সে প্রথমে আমার ভালোবাসা কে কেড়ে নিতে চাইলো। তারপর সে যখন নিজের ভুল বুঝলো তখন মা কেড়ে নিলো তাঁর নিজের মেয়ের জন্য। আমাকে অক্ষরে অক্ষরে বুঝিয়ে দিলো যে আমি তাঁর সৎ মেয়ে!! সৎ!!!

সিয়ারা অঝোরে কাঁদতে থাকে কিন্তু দেবাংশু আটকায় না। সে এটাই চেয়ে এসেছিলো এতদিন ধরে যে, একটু মন খুলে কাঁদুক মেয়েটা। ওর নিজের চোখেও জল চলে আসে সিয়ারার অবস্থা দেখে, কথা শুনে। সিয়ারা নিজেকে একটু সামলে নিয়ে আবার বললো,

সিয়ারা: তারপর হঠাৎ করেই আধভিক এলো আমার জীবনে। নিজের ভালোবাসা দ্বারা বাধ্য করলো আমাকে ভালোবাসতে। নিজের সবটা দিয়ে তাঁকে ভালোবাসলাম আর তারপর যখন পরিস্থিতির শিকার হয়ে আমাকে সরে আসতে হলো তখন সে একবারও আমাকে ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করলো না। জানতে চাইলো না কেন করেছি আমি এমন, এতটা অবিশ্বাস? এতটা অবিশ্বাসের যোগ্য ছিলাম আমি? এখন যখন ওকে সবটা জানাতে গেলাম তখন আমাকে কি শুনতে হলো? “আমি আধভিকের কেউ হই না।” অবিশ্বাসই যখন করতো তাহলে কেন ভালোবাসলো বল? কেন ভালোবাসলো????

সিয়ারা চিৎকার করে মেঝেতে বসে পরলো কাঁদতে কাঁদতে। ও কাওকে বোঝাতে পারে না ওর ঠিক কতটা কষ্ট হয় প্রতি মুহুর্তে আধভিকের থেকে দূরে থেকে। পেয়েও হারানোর যন্ত্রনা ভোগ করতে ঠিক কতটা সহ্যশক্তি লাগে সেটা হয়তো সিয়ারা জানে। পরিবার আর ভালোবাসার মধ্যে মানুষ সবসময় বলে, “পরিবার সবার উপরে।” কিন্তু যখন সেটা কাজে করে প্রমাণ করতে হয় সেটা ঠিক কতটা কঠিন, কতটা যন্ত্রনাদায়ক এটা হয়তো সিয়ারা জানে। নিজের অনিচ্ছায় নিজের ভালোবাসার মানুষটাকে দূরে সরিয়ে দিয়ে, ছেড়ে এসে সিয়ারা যে অপরাধ বোধে ভুগেছে, যেই যন্ত্রণা সহ্য করেছে প্রতিটা মুহুর্তে তার ধারণা আধভিকের নেই।

[আজ সিয়ারার কষ্টটা আমি অনুভব করতে পারছি। একটা সময় আমিও পরিস্থিতির শিকার হয়ে, পরিবারের কথা ভেবে নিজের ভালোবাসার মানুষটাকে দূরে সরিয়ে দিয়েছিলাম। সেই কষ্টটা আজ আমি চার বছর হয়ে গেল ভোগ করছি তাই যাঁরা ভাবছেন শুধুমাত্র আধভিক কষ্ট পেয়েছে, বেশি কষ্ট পেয়েছে। তাঁরা একটু ভেবে দেখবেন বিষয়টা।]

দেবাংশু সিয়ারার কাছে বসে সিয়ারাকে বুকে টেনে নেয়। সিয়ারা দেবাংশুকে জড়িয়ে ধরেই কাঁদতে থাকে। এতদিন তো এইটুকু ভরসার কাঁধও ছিলো না ওর কাছে। দেবাংশু সিয়ারার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলে,

দেবাংশু: একটা কথা কি জানিস? মানুষ যতক্ষণ নিজে না পরিস্থিতির শিকার হচ্ছে, ততক্ষণ বুঝবে না অনুভূতিটা ঠিক কেমন। যে যেই পরিস্থিতিতে থাকে, যা সহ্য করে মনে করে সেটাই সব থেকে বেশি কষ্টের। মনে করে সে নিজে সব থেকে বেশি কষ্টে আছে। পরিস্থিতির শিকার না হলে মানুষ বুঝবে না ছেড়ে যাওয়ার যন্ত্রণার থেকে, পেয়ে হারানোর যন্ত্রণাটা দ্বিগুণ।

দেবাংশুর চোখ দিয়ে জল গাল গড়িয়ে পরে। সে নিজে সাক্ষী এই ঘটনার। সে দেখেছে প্রতিটা মুহুর্তে সিয়ারাকে তিলে তিলে শেষ হয়ে যেতে। অনেক বার জোর করার পর ধীরে ধীরে একটু একটু করে পুরো বিষয়টা জানতে পারে দেবাংশু কিন্তু সিয়ারা কখনও ওর মনের মানুষের নাম নেয়নি। যেদিন থেকে আধভিককে দেখেছে, সেদিন থেকেই বিষয়টা লক্ষ্য করার ফলে অবশেষে সে বুঝেছে আধভিকই সিয়ারার মনের মানুষ।

দেবাংশু এসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ খেয়াল করে সিয়ারার কান্না থেমে গেছে। সিয়ারাকে একটু নাড়াতেই খেয়াল করে সিয়ারার হাতটা মেঝেতে লুটিয়ে পড়লো। সাথে সাথে সিয়ারাকে সামনে আনতে দেখে সিয়ারা জ্ঞান হারিয়েছে। কোলে তুলে নেয় দেবাংশু সিয়ারাকে, তারপর বিছানায় শুয়ে দিয়ে ডক্টরকে কল করলো। দেবাংশু জানে ডক্টর কি বলবে এসে, এ আর নতুন কিছু নয়। সিয়ারার নিশ্চিত ভাবে প্রেসার ফল করেছে।

পরেরদিন সকালে,

সিয়ারা চুপ করে নিজের ঘরে এক পাশ হয়ে শুয়ে আছে এমন সময় দেবাংশু ওর ঘরে এলো। সিয়ারাকে নিস্তেজ হয়ে শুয়ে থাকতে দেখে দেবাংশুর খারাপ লাগলেও সেটা প্রকাশ না করে হাসিমুখে বললো,

দেবাংশু: কি রে এখনও শুয়ে আছিস যে? রেডি হবি না?

সিয়ারা: (উঠে বসে) রেডি হবো কেন?

দেবাংশু: আরে আজকে থেকে আমাদের শুটিং স্টার্ট হচ্ছে তো। যেতে হবে না নাকি? চল, রেডি হয়েনে।

সিয়ারার মনে পরে সুধাংশু বাবুর আন্ডারে চলা সিরিয়াল যেটা বন্ধ ছিল সেটা শুরু হবে আধভিকদের প্রযোজনায়। কথাটা ভেবে চুপ করে থাকলে দেবাংশু সিয়ারাকে বলে,

দেবাংশু: এতো সহজে হার মানলে হবে বোন? তোকে চেষ্টা তো করতেই হবে তাই না? আমি জানি তোর মধ্যে এইসব সহ্য করার শক্তি নেই। কারণ তুইও কম কষ্ট পাসনি। উপরন্তু এইসব কিছুও তোকে কষ্ট দিচ্ছে। কিন্তু তাই বলে নিজের ভালোবাসাকে আবারও পেয়ে হারাবি? একবার তো পেয়ে হারানোর যন্ত্রণাটা ভোগ করেছিস, আবারও তাই করবি?

দেবাংশুর শেষ কথাটা সিয়ারার বুকে গিয়ে বিঁধল। ঠিকই তো, এখনই যদি হাল ছেড়ে দেয় তাহলে কি করে হবে? আধভিক যে এখনও সিয়ারাকে ভালোবাসে, কষ্ট পাচ্ছে সেটা তো আগের দিনই সিয়ারা বুঝেছে। আধভিককে জানাতে হবে সিয়ারাও ওকে ছাড়া, ওর ভালোবাসা ছাড়া ভালো নেই। সেইদিন না হয় সিয়ারার হাত পা বাঁধা ছিল, কিছু করার ছিলো না। তবে এখন তো তা নয়, তাহলে? তাহলে আর দেরী কিসের, চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।

[#ফিরে_আসবো_আগামী_পর্বে🥀]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here