‘ কথা দিলাম ‘ 🌸❤️
||পর্ব ~ ৩২||
@কোয়েল ব্যানার্জী আয়েশা
সিয়ারা জলের গ্লাস নেওয়ার জন্য একটু এগোতেই আধভিক ভিতরে ঢুকে, তাড়াতাড়ি করে জলের গ্লাসটা নিয়ে ওর হাতে দেয়।
আধভিক: সিয়ু আমি…
সিয়ারা: আমাকে এই নামে ডাকার অধিকার আপনার নেই মিস্টার রায় চৌধুরী। আমাকে কেউ “সিয়ু” নামে ডাকুক সেটা আমি চাই না।
আধভিক সিয়ারার কথা শুনে একটু চুপ করে যায়। ওর মনে পরে, ও নিজেও ঠিক এভাবেই সিয়ারাকে এক নিমিষে পর বলে দিয়েছিলো অফিসে। তাই খারাপ লাগলেও সেটাকে ধামা চাপা দিয়ে চোখ তুলতেই দেখে সিয়ারা নিজেও চাদরটাকে শক্ত করে মুঠি বদ্ধ করে আছে।
আধভিক: (মনে মনে — তোমার অভিমান করাটা স্বাভাবিক সিয়ু। আর আমি তোমার অভিমান ভাঙিয়েই দম নেবো।) ঠিক আছেন আপনি?
সিয়ারা বেশ ক্ষিপ্র চাহুনি নিয়ে আধভিকের দিকে তাকালো। আধভিক সেটা দেখে মনে মনে হাসলেও প্রকাশ করলো না। সিয়ারা মনে মনে গজগজ করতে লাগলো,
সিয়ারা: (মনে মনে — বললাম আর মেনে নিলো? কোনো প্রতিবাদও করলো না? আবার নিজের থেকে আপনি বলতেও শুরু করলো? এ কেমন ছেলেকে আমি ভালোবেসেছি ভগবান? ঠিক আছে। আমিও আর থাকবো না তোমার চোখের সামনে। কিছুতেই না।) হ্যাঁ! আমি একা থাকতে চাই।
আধভিক একবার ঘুরে দেবাংশুর দিকে তাকালো। তারপর হেঁটে ওর কাছে গিয়ে, এক ঝটকায় দেবাংশুর হাত ধরে টেনে সোজা করে বসালো।
দেবাংশু: কি..কি হয়েছে? আধভিক? তুই এখানে কি করছিস? সিয়া ঠিক আছে? (উঠে দাঁড়িয়ে সিয়ারার দিকে তাকিয়ে)
আধভিক: হ্যাঁ ঠিক আছে। বললেন যে, একা থাকতে চায়। তাই তোকে ডেকে উঠালাম। চল, আমরা বাইরে যাই।
দেবাংশুকে আর কথা বলার সুযোগ না দিয়ে আধভিক সিয়ারার দিকে দাঁত না বার করে প্রশস্ত হাসি দিয়ে ঘর থেকে চলে গেলে সিয়ারা নিজের পাশের বালিশটা দরজার দিকে ছুঁড়ে মারে।
সিয়ারা: ফালতু ছেলে একটা! কক্ষনো ফিরবো না তোমার কাছে আমি। কক্ষনো, কক্ষনো কক্ষনো না! একটাবার মানানোর চেষ্টা করলো না। পার্টির দিন থেকে আজে বাজে কথা শুনিয়ে যাচ্ছে বিনা দোষে তার জন্য একটা স্যরি অবধি বললো না। আ..আ..আ!
সিয়ারা নিজের মাথা নিজে দু হাত দিয়ে চেপে ধরলো রাগে। মৃদু চিৎকার করে উঠলো রাগে, ক্ষোভে। ওর মন চাইছে এক্ষুনি আধভিকের মাথাটা ফাটিয়ে দিতে কোনো কিছু দিয়ে। কিন্তু ওর হাত পা বাঁধা তাই নিজের পাশ থেকে আরেকটা বালিশ নিয়ে ধপ করে শুয়ে পরে ও।
বাইরে,
দেবাংশু: এইভাবে টেনে আনলি কেন আমাকে? সিয়ার কিছু দরকার পরলে?
আধভিক: এখন আবহাওয়া গরম আছে। তোর যদি প্রাণের ভয় না থাকে তাহলে তুই যেতে পারিস অসুবিধা নেই।
দেবাংশু: মজা করছি না আমি আধভিক। তুই হয়তো ওকে এই অবস্থায় প্রথম দেখছিস কিন্তু আমি আগেও দেখেছি। তোর হয়তো কোনো যায় আসছে না বিষয়টা ছোটো খাটো ভেবে কিন্তু আমার কাছে তেমনটা নয়। তাই ওকে এইভাবে দেখতে আমার মোটেই ভালো লাগছে না।
দেবাংশুকে সত্যি প্রচণ্ড পরিমাণ সিরিয়াস ও চিন্তিত দেখে আধভিকও চিন্তিত হয়ে পড়লো। জিজ্ঞেস করলো,
আধভিক: আগেও দেখেছিস মানে? কি হয়েছিলো ওর?
দেবাংশু: সিয়া তোকে কখনও এইসব বিষয় জানাবে না আর যাই জানাক। তাই আমি তোকে জানাচ্ছি কারণ তোর জানাটা দরকার।
আধভিক: কি বিষয়ে জানার দরকার আমার? (ঘাবড়ে গিয়ে)
আধভিকের মনে একটা ভয় সৃষ্টি হলো এইভেবে যে আর কি জানা বাকি? সেগুলো কি আরো ভয়াবহ?
দেবাংশু: দুই বছর আগে সিয়া যখন বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছিলো তখন পাপা ওকে পায় কারণ পাপা ওর বিয়েতেই যাচ্ছিলো। পাপা ওর কথায় ওকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসে, আমি ইন্ডিয়াতে ছিলাম না সে সময়। সব শোনার পর ওর কথা মতো পাপা কাওকে কিছু জানায় না। মুম্বাইয়ে চলে আসে সিয়াকে নিয়ে। আমিও কিছুদিনের মধ্যেই ব্যাক করি সব শুনে। এইখানে থাকার সিদ্ধান্ত নিই কারণ সিয়ার অবস্থা ভালো ছিলো না।
আধভিক: কি হয়েছিল ওর?
দেবাংশু: মেন্টাল স্ট্রেস। ও কাওকে কিছু বলতে চাইছিল না পাপার পর। এদিকে পাপাকে দিব্যি দিয়ে রেখেছিলো কাওকে কিছু জানাতে না তখনই। দ্যান পাপা একজন সাইকোলিস্টের সাথে কনসাল্ট করে এবং সে আমাদের বলে ওকে আনন্দে রাখতে হবে। আর ধীরে ধীরে সব কথা বার করতে হবে, সাইকো লজিস্ট সেই কাজটা করার চেষ্টা করছিল কিন্তু সিয়া সব বুঝে গিয়ে সেই তাঁর সাথে দেখাই করেনি।
আধভিক: তারপর?
দেবাংশু: নিজেকে ঘরে বন্ধ করে রেখেছিলো। হয়তো নিজেই নিজেকে ঠিক করার চেষ্টা করছিলো। খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দেওয়ায় ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পরছিলো। আমি ভয় পাচ্ছিলাম কোনো ভুল স্টেপ নিয়ে নিলে কি হবে। আর হয়তো সেটাই হয়েছিলো। আমি বাইরে থেকে জানলা দিয়ে সেটা দেখে চিৎকার করে উঠি।
হঠাৎ করেই আধভিকের চোখের সামনে নিজের ছোটবেলার দৃশ্য ভেসে উঠলো। নিজের মায়ের কথা মনে পরে গেলো। চোখটা তৎক্ষণাৎ খুলে কাঁপা কাঁপা গলায় জিজ্ঞেস করলো
আধভিক: ক..কি করতে গেছিলো?
দেবাংশু: (তাচ্ছিল্য হেসে) ছুরি হাতে নিয়ে বসে ছিল। আমি ওকে ওভাবে দেখে দরজা ভাঙতে যাবো সেইসময় দেখি দরজা খোলা। ভিতরে যেতেই দেখলাম শুধু ছুরি না আপেল নিয়েও বসে ছিল। ভগবান জানে ওইভাবে কেন ছুরিটাকে দেখছিলো বসে। মাঝে মধ্যে আমার মনে হয় আমাকে বকা বানানোর জন্য ও আপেলটা নিয়ে দরজাটা খুলে দিয়েছিলো।
আধভিকের ধরে জানো প্রাণ ফিরে এলো। দেবাংশু আধভিকের দিকে তাকিয়ে একটা নিশ্বাস ফেলে ওকে বললো,
দেবাংশু: এরপর আমার সাথে ধীরে ধীরে ওর কথা বলা শুরু। কিন্তু কদিন পরেই ওর শরীর ভীষণ খারাপ হয়ে যাওয়ায় ওকে হসপিটালে অ্যাডমিট করতে হয়। অনেক কষ্ট করে ওকে পাপা ওকে বাঁচার স্বপ্ন দেখায়। তারপর থেকে ইচ্ছা করেই আমি ওর সাথে মিশতে শুরু করি আর সব জানার পরেও ওর থেকে আরেকবার সবটা জানতে চাই। যাতে ওর মনটা হালকা হয়। কিন্তু ওর মাথা বা মন কোথাও থেকেই চিন্তা গুলো দুর করতে পারিনি।
দেবাংশু চুপ করে আধভিকের দিকে তাকায়। লক্ষ্য করে সে নীচের দিকে তাকিয়ে আছে। হয়তো অপরাধ বোধে। দেবাংশু আধভিকের কাছে গিয়ে তাঁর কাঁধে হাত রেখে বলে,
দেবাংশু: আমি জানি তুইও এমন কিছুর মধ্যে দিয়েই গেছিস। তবে কি বল তো? তুই শুধু নিজের দিকটা দেখছিলি। ভাবছিলি সিয়ারা তো নিজের ইচ্ছায় গেছে তাহলে ও কেন কষ্ট পাবে? তোর উচিত ছিল যাচাই করে দেখা। ছেড়ে যাওয়ার যন্ত্রণার থেকে পেয়ে হারানোর যন্ত্রণাটা অনেক বেশি আধভিক। যেটা সিয়া সহ্য করেছে। আমি বলছি না তুই কষ্ট পাসনি, আমি বলছি তোরা দুজনেই কষ্ট পেয়েছিস কারণ তোরা দুজনই ভালোবেসেছিস। শুধু একে অপরের থেকে দূরে থাকায় ভেবেছিস, অপরজন কষ্ট পাচ্ছে না। তুই ভেবেছিস তুই একা কষ্ট পাচ্ছিস, আর ও ভেবেছে ও একা।
আধভিক: ও খোঁজ নিয়েছিল আমার?
দেবাংশু: হ্যাঁ। শুনেছিলো তুই নাকি বিয়ে করেছিস ওর বোনকে। ভালো আছিস তুই। তবে কার থেকে জেনেছিল জানি না। সেইদিনটার কথা আমি বা পাপা মনে করতেও চাই না। হয়তো প্রথম সিয়া চিৎকার করে কেঁদে ছিলো সেদিন।
আধভিক নিজের হাতের মুঠো শক্ত করে সিয়ারার দরজার দিকে তাকিয়ে থাকে। ছলছল চোখে খুব আস্তে বলে,
আধভিক: আমিও ঠিক এমনই একটা দিন পার করেছি। তারপর থেকে প্রত্যেক রাত এভাবেই কেটেছিল।
দেবাংশু অবাক হয়ে কিছু বলতে যাবে তার আগেই সিয়ারা নিজের ঘরের দরজা খোলে। সিয়ারাকে বেড়াতে দেখে দেবাংশু ওকে গিয়ে জিজ্ঞেস করে,
দেবাংশু: তুই বেরিয়ে এলি কেন? কোনো কিছু দরকার? আমাকে বলতিস আমি…
সিয়ারা: কেন? আমার মাথায় সামান্য চোট পেয়েছি, পেয়ে নয় যে হাঁটতে চলতে পারবো না। তাই রাস্তা ছেড়ে দাঁড়া, যেতে দে আমাকে।
সিয়ারা আধভিকের দিকে একবার তাঁকিয়ে একনাগাড়ে ঝাঁঝালো কণ্ঠে কথাটা বললে দেবাংশু আধভিকের দিকে তাকালে আধভিক ইশারা করে চুপ করে যেতে। দেবাংশু তাই কিছু না বলে সরে গেলে সিয়ারা হনহনিয়ে বেড়িয়ে যায় ঘর থেকে।
আধভিক: বললাম না? আবহাওয়া গরম হয়ে আছে।
দেবাংশু: আমার কি? সামলাতে তো তোকে হবে তাই না?
দেবাংশুর কথা শুনে আধভিকের মুখটা চুপসে গেলো। মাথা চুলকে সিয়ারার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
আধভিক: সামলাতে হবে না?
দেবাংশু: কি? (জোর দিয়ে)
আধভিক: হ্যাঁ মানে আমি বলতে চাইছিলাম যে আজকেই যেতে হবে কথা বলতে? কালকে সকালে কথা বললে…না না যাচ্ছি যাচ্ছি। রাগ করছিস কেন? হে হে!
আধভিক কথা না বাড়িয়ে চলে যায় দেবাংশু ওর দিকে রেগে তাকালে। আধভিক চলে যেতেই দেবাংশু গেছে ফেলে। তারপর নিজের রুমের দিকে চলে যায়।
অন্যদিকে, দিয়ারা নিজের ঘরে বসে আছে একমনে। মনে হচ্ছে কিছু নিয়ে গভীর চিন্তায় মগ্ন। বাম হাতের দুই আঙুলের মধ্যে রয়েছে একটা জ্বলন্ত সিগারেট। সিগারেটের ফিল্টারে মাঝে মাঝেই টান দিচ্ছে সে। কিছুক্ষণ পর দিয়ারা চোখ বন্ধ করে নিজের কপালে দু আঙুল চেপে ধরলো।
দিয়ারা: (মনে মনে — আমার মাথাতে আসছে না কি হচ্ছে এটা আমাদের সাথে। সবকিছু কেমন জানো ধোঁয়াশা হয়ে আছে। ভিকিদা কীভাবে এতটা ভুল বুঝতে পারে দি কে? দিও এদিকে রেগে গেলো। আজকে কি একটু বেশিই কথা শুনিয়েছে ভিকিদা? নাহলে তো ও নিজে বলত না? উফ! এদেরকে বোঝাতে হবে এসবের পিছনে কেউ আছে, যে চায় না ওরা ভালো থাকুক। নাহলে দিকে কেউ কেন ভিকিদার নাম করে ওই শাড়ি পাঠাবে? আচ্ছা, এমন কেউ এই কাজটা করেছে যে ভিকিদার কাছের নাহলে সে জানলো কি করে ভিকিদার পছন্দ অপছন্দের ব্যাপারে? আমাকে দিকে বিষয়টা…) দি তুই?
দিয়ারার ভাবার মাঝখানে কেউ হঠাৎ করে ওর হাত থেকে সিগারেটটা টেনে নিলে ও চোখ খুলে দেখে সিয়ারা দাঁড়িয়ে আছে। ও ঘাবড়ে গিয়ে দাঁড়িয়ে পরে। সিয়ারাকে দেখে মনে হচ্ছে বেশ রেগে আছে তাই দিয়ারা এক্সকিউজ দিতে যায়,
দিয়ারা: আসলে আমি একটু ফ্রাস্টেটেড… দি কি করছিস? তোর এসব অভ্যেস…
দিয়ারা নিজের কথা শেষ হওয়ার আগেই দেখে সিয়ারা ঘুরে সিগারেটে লম্বা টান দিয়েছে। সাথে সাথে দিয়ারা আটকানোর জন্য কথাটা বললে সিয়ারা অর্ধেক মুখ দিয়ারার দিকে ফিরিয়ে নাক দিয়ে ধোঁয়া বের করে এতটাই অ্যাটিটিউড নিয়ে এবং স্টাইলে যা দেখে দিয়ারা অবাক হয়ে যায়। সিয়ারাকে দেখে মনে হচ্ছে সে এসবে অভ্যস্ত।
সিয়ারা: তুই কি তোর দিদিকে “এসবে অভ্যস্ত না তোর কষ্ট হবে” এটা বলতে যাচ্ছিলি?
দিয়ারা: হ্যাঁ মানে…তুই আর এসব?
সিয়ারা: হম? না জানার কি আছে? এই দুই বছরে অনেক কিছু শিখে গেছি আমি।
সিয়ারা বেশ লম্বা লম্বা টান দিয়ে সিগারেটটা শেষের দিকে এনে ফেলেছে। দিয়ারা কাচুমাচু করে দিদিকে বললো,
দিয়ারা: আমি সবসময় স্মোক করিনা দি। আজকে একটু ফ্রাস্টেটেড লাগছিলো তাই জন্য। নাহলে ভিকিদা এসব পছন্দ করে না।
দিয়ারার কথা শুনে সিয়ারা ব্যঙ্গাত্মক হাসি দিলো। তারপর আরেকবার টান দিতেই দিয়ারা জিজ্ঞেস করলো,
দিয়ারা: তুই কি কোনো কিছু নিয়ে চিন্তিত দি? নাকি রেগে আছিস ভিকিদার উপর?
সিয়ারা: আমার ইচ্ছা হয়েছে তাই আমি স্মোক করছি। আমার কোনো কারণের দরকার পরে না স্মোক করার জন্য। আর যে কি না নিজেই এসবে ডুবে থাকে, তাঁর মুখে এসব নিয়ে নিষেধাজ্ঞার কথা শোভা পায় না।
দিয়ারা কিছু বলতে যাবে তাঁর আগেই দেখে দরজায় আধভিক হাতের মুঠোয় এবং মুখের চোয়াল শক্ত করে দাঁড়িয়ে আছে। দিয়ারা ভয়ে একটা শুকনো ঢোঁক গিলে আধভিককে দেখে। এদিকে সিয়ারা দিয়ারার কোনো উত্তর না পেয়ে ওর দিকে তাকাতেই দেখে ও আতঙ্কিত মুখে দরজার দিকে তাকিয়ে আছে। তাই সিয়ারা দিয়ারার চাহুনি অনুসরণ করলো এবং দেখতে পেলো আধভিক দাঁড়িয়ে আছে। সোহম আধভিকের হাত ধরে রেখেছে। সিয়ারার কোনো ফারাক পরলো না এতে বরং ও আধভিকের চোখে চোখ রেখেই সিগারেটে টান দিল আবারও।
আধভিক: কি হচ্ছে এসব?
সিয়ারা কোনো উত্তর দিলো না। আধভিক আর নিজের রাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে সোহমের হাত ছাড়িয়ে সিয়ারার সামনে এসে দাঁড়ালো এবং দাঁতে দাঁত চেপে জিজ্ঞেস করলো,
আধভিক: আমি জিজ্ঞেস করছি কি হচ্ছে এসব? সিগারেটটা ফেলো সিয়ারা?
সিয়ারা আধভিকের দিকে তাকিয়ে একটু পিছিয়ে এসে এক টানে সিগারেটটা টেনে নাক দিয়ে ধোঁয়াটা ছাড়লো যা কিছুটা হলেও আধভিকের মুখে গেলো কারণ সিয়ারা পিছতেই সেও এগিয়ে যায় এক পা এবং অনেক কাছাকাছি পৌঁছে যায় সিয়ারার। সিয়ারা পিছিয়ে গিয়ে ডাস্টবিনে সিগারেটের ফিল্টারটা ফেলে দেয়। এদিকে আধভিক সিয়ারার কর্মকাণ্ডে আরও বেশি রেগে যাচ্ছে।
আধভিক: আমার কথার অবাধ্য হচ্ছো তুমি?
সিয়ারা: ও হেলো! আপনি কে? হু দ্যা হেল আর ইউ? আমি কেন আপনার কথার বাধ্য হতে যাবো মিস্টার আধভিক রায় চৌধুরী? আপনাকে মনে করিয়ে দি, আপনি আমাদের প্রোডাকশন হাউজ কিনেছেন আমাকে কিনে নেননি। সে যতো বড়ই প্রোডিউসার হোক না কেন, সিয়ারা কখনও নিজেকে বিক্রি করবে না কোনো কিছুর বিনিময়ে।
আধভিক: সিয়ারা!!
সিয়ারা: আওয়াজ নীচে!! আমার সাথে আওয়াজ উঁচু করে কথা বলার অধিকার আমি আপনাকে দিইনি মিস্টার রায় চৌধুরী।
[#ফিরে_আসবো_আগামী_পর্বে🥀]