#প্রেমময়নেশা(The Story of a psycho lover)
#পর্ব-12
#Jannatul_ferdosi_rimi(লেখিকা)
পিনপিন নিরবতা কাজ করছে ড্রইং রুমে অয়ন কোনোরকম পায়েলকে নিজের থেকে ছাড়িয়ে নেয়।পায়েল এইরকম আচরন কারো কাছেই যে ভালোলাগেনি তা সবার মুখেই স্পষ্ট। অয়ন পায়েলকে যথাসম্ভব শান্ত করার চেস্টা করে যাচ্ছে কিন্তু পায়েল কেঁদেই যাচ্ছে।।অয়ন নিজের চোখের ইশারায় সানাকে পায়েলকে সামলাতে বলে। সানাও অয়নের ইশারা অনুযায়ী পায়েল এর পাশে বসে পায়েলকে শান্ত করার চেস্টা করে যাচ্ছে।। ভালোমা আমার পাশে এসে দাঁড়ায়। রুশনি নিজের হাত ভাজ করে বলে উঠে–
তা আপ্নারা এখানে কেন এসেছেন।।
মিঃ আহমেদ গলার কন্ঠস্বর মৃদু করে বলে উঠেন–আমি জানি ভাবি আমার মেয়ে যা করেছে তার কোনো মাফ হয়না। এবং তার শাস্তিও সে পেয়েছে তাই আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ আমার মেয়েটাকে আপ্নারা ক্ষমা করে দিন..মিসেস কলি কাঠকাঠ গলায় বলে উঠেন–পায়েল এক বড় দুর্যোগ এর মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এই অবস্হায় সে যত বড়ই গুনাগারি হোক না কেন তাকে ক্ষমা করায় শ্রেয়।। এইবার মিসেস কলি অয়নের নিকট দাঁড়িয়ে বলে–
তোমার কি মত?অয়ন সোজাসাপ্টা উত্তর–আমি ওকে ক্ষমা করেছি কিন্তু একজন মানুষ হয়ে।মানবতার খাতিরে। পায়েল এক হাত দিয়ে আরেক হাতের উপর ভর করে বসে বলে উঠে–শুধুই মানবতার খাতিরে?
অয়ন কিছুটা সোজা হয়ে গম্ভির গলায় বলে উঠে–তুমি কি এর থেকে বেশি কিছু আশা করো??
মিঃ আহমেহ অপরাধীর ন্যায় মাথাটা নিচু করে বলেন–তুমি যে আমার মেয়েকে ক্ষমা করেছে এটাই অনেক আর কি চায় আমাদের সত্যিই আপনাদের মন অনেক বড়। নাহলে
মিঃ আহমেদ কে আর কিছু বলতে না দিয়ে মিসেস কলি বলে উঠে–আম্রা সাধারন মানুষ
আজাদ সাহেব।।আর কিছুই নাহ
পায়েল এর চোখ এখন রিমির দিকে যায়।তার জ্ঞানঅনুসারে এখানে সবাইকে চিনলেও এই মেয়েকে সে চিনে না তাই কোনোরকম জড়োতা ছাড়াই বলে উঠে–আমিতো সবাইকেই চিনি কিন্তু ওকে(আমাকে উদ্দেশ্য করে)তো চিনলাম না।
অয়ন কিছু বলবে কিন্তু তার আগেই পায়েল আবারও বলে উঠে–ওহ বুঝতে পেরেছি ও বোধ হয় নতুন কাজের লোক তাইনা??
অজান্তেই আমার চোখ থেকে টুপটুপ পানি পড়তে থাকে। সবাই পায়েল এর কথা শুনে অবাক হয়ে যায়।।রাগে অয়নের চোখ লাল বর্ন ধারন করে।।মিসেস কলি কিছু বলবে
কিন্তু অয়ন গিয়ে রিমির হাত ধরে পায়েল এর কাছে নিয়ে আসে আমি অবাক হয়ে অয়নকে দেখছি রাগে অয়নের নাক একেবারে লাল হয়ে গেছে।তিনি যে অনেক রেগে আছে তা তার মুখ দেখেই যথেস্ট বুঝা যাচ্ছে অয়ন চোখমুখ শক্ত করে জবাবা দেয়–
মিট মাই ফিউচার ওয়াইফ রিমি।।অয়নের কথায় পায়েল বসা থেকে উঠে দাঁড়ায় সে যে অনেকটায় অবাক হয়েছে তার মুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে। মিঃ আহমেদ ও এইরকম উত্তর আশা করেননি। রুশনি সবার অগোচরে ভেংচি কাটে। সানা এবং মিসেস কলিযে অয়নের উত্তরে বেশ সন্তুস্ট তা তার মুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে।।পায়েল একটা ঢুক গিলে বলে–
হবু বউ মানে —
অয়ন হাত ভাজ করে বলে-
সহজ করেই বলছিতো রিমি আমার হবু বউ!!
মিসেস কলি এইবার মুখ খুলে–
কেন পায়েল তুমি কী ভেবেছিলে?অয়ন তোমার জন্য অপেক্ষা করে যাবে??
অয়নঃ আর আমি আমার হবু বউকে অনেক অনেক ভালোবাসি
পায়েল আর কিছু বলেনা।।তার চোখ ছলছল করে উঠছে
এদিকে আমি অয়নকে দেখতে লাগলাম সত্যি মানুষটাকে বুঝা যায়না এই মনে হয় লোকটা আমাকে অবহেলা করছে এই মনে হয় নাহ এই লোকটা আমাকে সব থেকে বেশি ভালোবাসে। কেন জেনো আমার এখানে থাকতে বেশ লজ্জা লাগছে।।
পায়েল ঃ তাহলে বাপি চলো সবার থেকে ক্ষমা পাওয়া তো হয়েই গেলো।এবার মরেও শান্তি পাবো(কেঁদে)
অয়নঃ প্লিয পায়েল কেঁদো না আমি একজন ডক্টর। আমি নিজের বেস্ট থেকে বেস্ট ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডক্টরদের দিয়ে চেস্টা করবো তোমাকে সু্সহ করার আর তার জন্য যদি তোমাকে এই বাড়ি তে থাকতে হয় সেটাও তুমি থাকবে কি বলো মা আমি ঠিক বলছি তো(মিসেস কলিকে উদ্দেশ্য করে)
মিসেস পড়েছেন দ্বিধায় তার এখন কি করা উচিৎ তিনি বুঝতে পারছেন না আমি ভালোমার অবস্হা বুঝতে পেরে বলে উঠি–
আমার মনে হয় পায়েল আপুর এই বাড়িতে থাক উচিৎ। এতে উনি পায়েল আপুর টেক কেয়ার করতে পারবেন
অয়ন রিমির আচরনে মুগ্ধ হয়ে যায়।। মিসেস কলি আর কি বলবেন–
ঠিক আছে যা ভালো বুঝো তোমরা করো
পায়েল ছলছলে চোখে অয়নের দিকে তাঁকায়–
মিঃ আহমেদ কৃতজ্ঞতার দৃস্টি নিক্ষেপ করে অয়নকে বলে উঠে–
সত্যি বাবা তোমাকে কি যে বলে ধন্যবাদ জানাবো
পায়েল অয়নের কাছে এসে বলে উঠে–।
আমি জানতাম তুমি মুখে যাই বলো আজও তুমি আমাকে ভালোবাসো।
পায়েল এর কথা শুনে অয়ন ভ্রু কুচকে তাঁকায়–
আমার এইসব কিচ্ছু সহ্য হচ্ছেনা
তাই আমি গটগট করে নিজের ঘরে চলে এলাম
রিমিকে এইভাবে যেতে দেখে অয়ন পায়েলকে বলে উঠে–
।দেখো পায়েল তোমাকে আগেও বলেছি এখন বলছি আমি শুধু মানবতার খাতিরেই তোমার জন্য করছি।।
এই বলে অয়ন রিমির পিছনে পিছনে যায়–
এদিকে পায়েল নিজের হাত মুশঠি বদ্ধ করে নেয়–
আমি ঘরে পায়চারি করে যাচ্ছি কেন জানি আমার অইসব কথা সহ্য হচ্ছেনা।। তখনি ফিসফিস কন্ঠে–বলে উঠে-
কিছু জ্বলছে!!
।।।।।।।🌺🌺
ফারহান ফাইল নিয়ে ঘাটাঘাটি করছে আজ তার কাজের বেশ অনেক প্রশার। তখনি তার এসিস্টেন্ট সুমি প্রবেশ করে। হাল্কা কাঁশি দেয় সে।
ফারহান ফাইল চেক করতেই করতেই বলে উঠে–
কিছু বলবে?
সুমি খানিক্টা ন্যাকমির সুরে বলে–স্যার আপ্নাকে অনেক হ্যান্ডসাম লাগছে।
ফারহান গম্ভির হয়ে বলে-কাজের কথা থাকলে বলো-!
সুমি ফারহানের কথায় খানিক্টা না বেশ অনেকটায় হতাশ হয়।কেন ফারহান বুঝে না? বুঝেনা কেন? সুমি তাকে কতটা পছন্দ করে আচ্ছা ছেলেটা এতো আনরোমান্টিক কেন? জানেনা সুমি।।
সুমাইয়া নিজের বই গুছাচ্ছে তখনি তার মা কাধে হাত রাখে।
সুমাইয়া কিছু না বলে বই খাতা গুছাতে থাকে–
সুমাইয়ার মাঃ মেয়েটাকে বড্ড দেখতে ইচ্ছা হয়রে
সুমাইয়াঃ অনেক হয়েছে মা আমার মনে হয় কাল্কেই একবার অই বাড়ি যাওয়া উচিৎ।
মাঃ তোর বাবার মুখের দিকে তাঁকানো যাচ্ছেনা আমরা তো বাবা-মা আমাদেরো তো ইচ্ছা করে মেয়েটাকে দেখতে।।
সুমাইয়া ঃ তুমি চিন্তা করোনা
মাহ আমি কালকেই অই বাড়ি যাচ্ছি।।
সুমাইয়ার মা বোধহয় সুমাইয়ার কথায় অনেকটা শান্তি পায়।তার মনে হচ্ছে এইবার বোধহয় মেয়েটাকে সে দেখতে পাবে।।
।।।।
।।।
আমি তাঁকিয়ে দেখি উনি…
রিমিঃ আমি কেন জ্বলবো আমি কি আপনাকে ভালোবাসি??
অয়নঃ কি জানি
রিমির কথা শুনে অয়ন যেনো অনেকটায় হতাশ হলো আচ্ছা রিমি কি তার ভালোবাসা বুঝেনা?তার পাগলামুও শুধু দেখলো
অয়ন মৃদু হেঁসে বলে-আচ্ছা আমি তাহলে এখন যাই পায়েলকে নিয়ে ডক্টর এর কাছে যেতে হবে।
আমার জানি পায়েল আপু অসুস্থ তাই মানুষ হিসেবে উনার এরকম আচরন স্বাভাবিক কিন্তু সত্যিই কি এইটা মানবিকতা নাকি ভালোবাসা?
।
।
চলবে