#প্রিয়_অর্ধাঙ্গীনি
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী
#পর্ব_৪৩
,
মির্জা বাড়ির সামনে তখন অনেক লোকের সমাগম। নিউজ চ্যালেন এর লোকেরা অধীর অপেক্ষায় আছে। টিভিতে দেখানো হচ্ছে বিভিন্ন মশলা মাখানো খবর। যেটা ঘটেছে তার সাথে মনগড়া আরো কিছু লাগিয়ে দিয়ে বেশ রসিয়ে রসিয়ে ছড়াচ্ছে। সবার অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে মালবিকা মির্জা বাইরে বেরিয়ে আসলো। ওনি আসতেই সকলে যেনো আরো বেশি ওনার দিকে ঝাঁপিয়ে পড়তে লাগল। পুলিশ অনেক কষ্টে সেগুলো সামাল দিচ্ছে। ক্যামেরার সামনে এসে বেশ আরাম করে দাঁড়ালো মালবিকা। শাড়ির আঁচলটা কমরের নিচে থেকে ঘুরিয়ে সামনে এনে হালকা হাসি দিয়ে মিডিয়ার লোকের উদ্দেশ্য বলল।
“বলুন কি জানতে চান আপনারা।
“হিজলতলী গ্রামের চেয়ারম্যান মকবুল আলী অবৈধ অস্ত্রসহ আরো বেশ কিছু নেশা জাতীয় দ্রব সমেত ধরা পড়েছে। তদন্তে আপনার নাম ও উঠে এসেছে। আমরা জানতে চাই চেয়ারম্যান যা বলেছে সেটা কি সত্যি? নাকি এর পিছনে আরো কোনো কারণ আছে। আর তাছাড়া ওনি এতো মানুষ থাকতে আপনার নাম টাই কেনো নিলো? ওনি নিজেকে বাঁচাতে এমনটা করেছে। নাকি ঘটনা কিঞ্চিৎ হলেও সত্যি?
সবার এমন প্রশ্নে মালবিকা মোটেও বিরক্ত বোধ করলো নাহ। বরং আরো উল্টো মুচকি হাসি দিয়ে বলল।
“দেখুন বাংলায় না একটা প্রবাদ ব্যাক্য আছে। একজন বলল এই তোর কান চিলে নিয়ে গেছে। তো সে আগে কানে না হাত দিয়ে চিলের পিছে দৌড়ায়৷ আপনাদের অবস্থাও ঠিক সেই রকম। কে কী বলেছে আপনারা সেটা নিয়ে আরো রংচং মিশিয়ে প্রকাশ করছেন। আপনাদের কাছে না আছে কোনো প্রমাণ না আছে এই কথায় কোনো সত্যতা।
” আমাদের কাছে আরো একটা খবর এসেছে। ওই চেয়ারম্যান এর সাথে নাকি আপনারা গভীর কোনো সম্পর্ক আছে। মানে আমি বলতে চাইছি যে আপনারা নাকি লুকিয়ে বিয়েও করেছেন। এই কথাটার সত্যতা কতটুকু?
এমন একটা কথা শোনার পরেও মালবিকার মুখে কোনো বিচলিত ভাব দেখা গেলো নাহ। বরং হালকা হেসে বলা শুরু করলো।
“আচ্ছা আপনারা এসব কথা কোথায় পান বলুন তো? মানে কারো সম্পর্কে একটু কিছু শুনলেই সেটাকে তিল থেকে তাল বানানোই আপনাদের কাজ। আচ্ছা আমায় একটা কথা বলুন তো শুনেছি চেয়ারম্যান কে হাতে নাতে ধরতে কেউ একজন সাহায্য করেছে। এখন আপনারা আমায় বলুন সে ওতোরাতে ওখানে কি করছিলো। আর আমার সাথে যে হিজলতলী গ্রামের চেয়ারম্যান এর বৈবাহিক সম্পর্ক আছে এটার প্রমাণ কি? শুনুন কখনো কখনো আমরা খালি চোখে যা দেখি সেটা সত্যি হয় নাহ। অদেখাও কিছু থেকে যায়। আমার জানামতে আমার কারো সাথে কোনো প্রকার শত্রুতা নেই। কেউ হয়ত আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। যাই হোক আশা করি আপনারা আপনাদের
সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছেন।
কথাগুলো বলো মালবিকা উঠে চলে গেলো। তবে যাওয়ার আগে ঠোঁটের কোণে বাঁকা হাসিটা কেউ খেয়াল করলো নাহ।
,,,,,,,,,
হাতের ভারী ট্রলি ব্যাগটা টেনে এয়ারপোর্টের বাইরে আসলো রোদ্র। আশে পাশটা দেখে নিয়ে সামনের দিকে হেঁটে গেলো। আপাতত ওখানের কাজ শেষ মাসখানেক পর একজনের সাথে দেখা করা লাগবে। যার হয়ে কাজ করবে সে এখন অন্য দেশে গিয়েছে। মাসখানেক পর ফিরবে। এই কয়দিন শুধু শুধু ওখানে বসে থাকার কোনো মানেই হয় নাহ৷ এই জন্য দেশে আসতে না মন চাইলেও আসতেই হলো। যদিও লিজা বলেছিলো এই কয়দিন ওর বাসায় থাকতে। কিন্তু রোদ্র থাকেনি, তাছাড়াও বাসা থেকে অনেকদিন দূরে আছে এই জন্য। এভাবে হুট করে চলে আসায় কাউকে জানানো হয়নি। এয়ারপোর্টের বাইরে এসে গাড়ি বুক করেছিলো। কিছুক্ষণ দাঁড়াতেই গাড়ি চলে আসলো। গাড়িতে উঠে সিটে শরীরটা এলিয়ে দিয়ে চোখটা বন্ধ করে বিরবির করে বলল।
“না চাইতেও আবার তোমার মুখটা দেখতে হবে। সারাক্ষণ তুমি আশেপাশে ঘুরে বেড়াবে। ইশ এই যন্ত্রণা আমি সইবো কি করে। এটা যে বড়ই পীড়াদায়ক।
,,,,,,,,,,
বিছানায় বসে চোখ ভর্তি পানি নিয়ে সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে আছে শশী। ওর সামনেই তৈরি হচ্ছে সমুদ্র। তৈরি হওয়ার ফাঁকে একবার শশীকে দেখে নিয়ে পুনরায় আয়নার দিকে তাকালো। সকাল থেকে মেয়েটাকে বোঝাতে বোঝাতে ক্লান্ত ও। এতো করে বোঝানোর পরেও এখনো বসে বসে কান্না করছে। সমুদ্র কে চুপ থাকতে দেখে শশী আবার বলা শুরু করল।
” আপনি মিথ্যুক। আমাকে মিথ্যা বলেছেন। যখন থাকবেনই নাহ তখন শুধু শুধু বলেছিলেন কেনো? এভাবে কাউকে মিথ্যা আশা দিতে হয় নাহ। আমি এমন জেনেও আপনি কীভাবে আমায় মিথ্যা আশা দিলেন। বলে কিনা এবার আর তোমাকে ছেড়ে যাবো নাহ। কথা দিচ্ছি বাবুর মুখটা দুজনে একসাথেই দেখবো। তাহলে এখন কি হলো এটা? কথা রাখতে না পারলে দেন কেনো?
কথাগুলো বলে নাক টেনে দুহাতে চোখের পানি মুছলো শশী। সমুদ্র রেডি হয়ে হতাশ চোখে শশীর দিকে তাকালো। মেয়েটা বাবু আশার পর থেকে যেনো একটু বেশিই অবুঝ হয়ে গেছে। এতো করে বোঝানোর পরেও বুঝতে চাইছে নাহ। তবে আমারও কেমন যেনো একটা খটকা লাগছে। এখন যে অবস্থা এই সময় বাড়িতে থাকা খুবি প্রয়োজন। চারিদিকের অবস্থা বেশ একটা ভালো নয়৷ ওই মহিলা অনেক বেশিই রেগে আছে। একটা সুযোগও হাত ছাড়া করবে নাহ। আমাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য আমার পরিবারের উপর হামলা করবে। সবতো ঠিকি ছিলো তাহলে হঠাৎ পাকিস্তান এর টেরোরিস্ট ওসমান বর্ডার এর এত গড়া সিকিউরিটি ভেদ করে বাংলাদেশে ঢুকলো কীভাবে? নাকি এর পিছনেও অন্যকোনো উপর মহলের হাত রয়েছে? কথাগুলো ভেবে একটা লম্বা শ্বাস নিলো সমুদ্র। শশীর কাছে গিয়ে ওর পায়ের কাছে হাঁটু মুড়ে বসল। শশীর হাতদুটো নিজের হাতের মুঠোয় পুড়ে সেখানে বেশ সময় নিয়ে চুমু খেলো। মাথাটা ওর কোলের মধ্যে রেখে ফুলে যাওয়া পেটটাতে চুমু দিয়ে বলল।
“তোমাকে রাতে কি বোঝালাম শশী। এখন ওখানে আমাকে দরকার। ওই টেরোরিস্ট খুবি বিপদজনক। অনেক এর প্রাণ সংশয় রয়েছে। কে জানি কোথায় কোথায় বোম ফিট করে রেখেছে। এটা আমার দায়িত্ব শশী। আর আমি একজন অফিসার হয়ে কীভাবে নিজের দায়িত্ব কে এভাবে অবহেলা করি।
” আর আমি? আমি কি? ওখানে তো আরো অনেকেই রয়েছে। তারপরেও আপনাকে দরকার। আর আমার কাছে তো কেউই নেই আপনি ছাড়া। আপনাকে যে আমার আরো বেশি দরকার সমুদ্র। আপনি তো ছুটিতে ছিলেন তাহলে কীভাবে আপনাকে এভাবে ডাকে ওনারা৷ এতোবড় টেরোরিস্ট, যদি আপনার কিছু হয়ে যায় তাহলে আমার কি হবে? আর যে আসছে তারই বা কি হবে বলুন? আপনি তো আমায় কথা দিয়েছিলেন যে আমরা একসাথে বাবুকে দেখবো তাহলে?
শশীর কথা শোনার পর সমুদ্র মুচকি হেসে শশীর কপালে চুমু দিলো। শশীর পাশে বসে ওর মাথাটা নিজের বুকের সাথে চেপে ধরে বলল।
“তুমিতো আমার শক্তি। আমার ভালোবাসা। কিন্তু আমার দায়িত্ব টাও পালন করতে হবে। এতোগুলো মানুষের জীবন হুমকিতে ফেলে আমি কীভাবে ছুটি কাটাতে পারি শশী। তুমিই তো আমাকে বুঝবে আমাকে উৎসাহ দিবে। সেই তুমিই যদি এভাবে কান্না করো তাহলে আমি ওদের সাথে লড়বে পারবো? একেতে মা অসুস্থ এখন যদি তুমিও এভাবে ভেঙ্গে পড়ো তাহলে ওদের সামলাবে কে? আমার অবর্তমানে তুমিই তো ওদের দেখবে শশী। কখনো ভেঙ্গে পড়বে নাহ৷ সবসময় একটা কথা মনে রাখবে তুমি একজন আর্মি অফিসার এর স্ত্রী। তোমার স্বামী দেশের জন্য লড়াই করে। তার অর্ধাঙ্গীনি হয়ে তোমার এতোটা দুর্বল হওয়া কী মানায়?
“আমি কিছুই জানি নাহ। আমি কি আমার স্বামী কি এই সবকিছু আমি জানতে চাই নাহ। আমি শুধু জানি আপনি আমার কাছে থাকবেন। খুব সাধারণ হয়ে কোনো দায়িত্ব কর্তব্য থাকবে নাহ। সবার চিন্তা আপনার মাথায় শুধু আমাদের বাদে। আমি এতোটা বুঝদার হতে চাই নাহ সমুদ্র। যতোটা বুঝদার হলে আপনার থেকে দূরে থাকতে হয়। আমার শুধু আপনাকে চাই।
এতোবার বোঝানোর পরেও যখন শশী বুঝলো নাহ। তখন সমুদ্র হাল ছেড়ে দিলো। এবার ওকে কঠিন হতেই হবে৷ এভাবে হবে নাহ। অনেকটা দেরি হয়ে গেছে এবার বেড়োতেই হবে। উঠে দাঁড়িয়ে গেলো সমুদ্র। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গুলো সব দেখে নিয়ে শশীর দিকে তাকিয়ে গম্ভীর স্বরে বলল।
” নিজের খেয়াল রেখো। যাওয়ার পর হয়ত যোগাযোগ করতে পারবো নাহ। এদিকে এসব নিয়ে চিন্তা করতে হবে নাহ। আমি ইমরান কে সবটা বুঝিয়ে দিয়েছি। অকারণে বাইরে যাওয়ার দরকার নেই। আর এই অবস্থায় বেশি হাঁটাহাটি করো নাহ। আসছি আমি।
কথাগুলো বলে সমুদ্র দরজার দিকে যেতে গেলে শশী পিছন থেকে ডেকে উঠল। ভারী পেট নিয়ে অনেক কষ্টে বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ালো। সমুদ্রের পিছনে দাঁড়িয়ে বলল।
“আপনি অনেক নিষ্ঠুর সমুুদ্র। আপনার সবার চিন্তা আছে শুধু নিজের ছাড়া। জানি আপনি শুনবেন নাহ। কারন আপনার কাছে সবার থেকে নিজের দায়িত্ব টাই আগে। শেষ বারের মতো একটা আবদার। যাওয়ার আগে আমাকে একটাবার শক্ত করে জড়িয়ে ধরবেন প্লিজ? অনেক কষ্ট হচ্ছে। জড়িয়ে ধরলে একটু শান্তি লাগতো।
শশীর কথায় সমুদ্র কিছু বলল নাহ। হাতের ব্যাগটা নামিয়ে রেখে পিছন ঘুরে তাকালো। শক্ত মুখেই শশীর দিকে এগিয়ে গিয়ে ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল। সমুদ্রের বুকে মুখ গুঁজে হাউমাউ করে কাঁদছে শশী। তবে সমুদ্র একবারের জন্যও ওকে থামালো নাহ। শশীর ঘাড়ে মুখ গুঁজে বেশ সময় নিয়ে চুমু খেলো। বেশ কিছুক্ষন পরে শশীকে ছেড়ে দিয়ে যেতে গেলে শশী সমুদ্রের হাত চেপে ধরে বলল।
” আমিও যাবো মানে নিচে অবধি। প্লিজ।
শশীর এই আবদারে সমুদ্র নিষেধ করলো নাহ। পিছন থেকে ওর কাঁধ জড়িয়ে ধরে আস্তে আস্তে ওকে নিচে নামিয়ে আনলো। সেখানে শাহানারা আর জয় বসে ছিলো। শাহানারাও বেশ অসুস্থ তিনি চেয়েও ছেলেকে বাঁধা দিতে পারছে নাহ। তিনি চান না শশীর জীবন টাও ওনার নতো একাকী কাটুক। এমনি এক মিশনে গিয়েছিলো ইকবাল। তারপর কত অপেক্ষা কিন্তু তিনি ফিরে আসেনি। এসেছিলো তার নিথর হয়ে যাওয়া প্রাণহীন দেহটা। তখনো শশীর মতো সেও সন্তান সম্ভাবা ছিলো। এ যেনো চোখের সামনে নিজের অতীতটা দেখছে শাহানারা। পুনরায় সেই একি ঘটনার পুনরাবৃত্ত। শাহানারা চোখের পানি ফেলে অসুস্থ গলায় বলে উঠল।
“এই মিশনটাতে তোর না গেলে হয় নাহ?
শশীকে নিজের মায়ের পাশে বসালো সমুদ্র। মায়ের মুখ থেকে এমন কথা শোনার পর সমুদ্র নিজের মায়ের হাতটা ধরে গম্ভীর স্বরে বলল।
” একজন দায়িত্ববান অফিসার এর স্ত্রী হয়ে এমন কথা কীভাবে বলতে পারো মা? তুমি জানো আমি কোথায় যাচ্ছি কেনো যাচ্ছি তারপরেও একথা কীভাবে বলছো। শশী নাহয় অবুঝ কিন্তু তুমিতো অবুঝ নয় মা তাহলে কেনো এমন বুঝে না বোঝার মতো করছো।
“কি বলতো বাবা ঘড় পোড়া গরু তো সিঁদুরে মেঘ দেখলেও ভয় পাই। জীবনে এক ভয়াবহ অধ্যায় পাড় করেছি তো তাই অল্পতেই ভয় পেয়ে যাই। জীবনে অনেক কিছু হারিয়েছি আর হারাতে চাই নাহ।
” বিশ্বাস রাখো মা আমি ফিরে আসবো ।
সমুদ্রের কথাটা শুনতেই শাহানা ছেলেকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলো। সমুদ্র মাকে সান্ত্বনা দিয়ে শশীর দিকে তাকিয়ে দেখে মেয়েটা কান্না করতে করতে চোখমুখ ফুলিয়ে ফেলেছে। করুন চোখ ওর দিকেই তাকিয়ে আছে। সমুদ্র দুর্বল হলো নাহ। মাকে ছাড়িয়ে সবার থেকে বিদায় নিয়ে মেইন দরজা খুলতেই দেখলো ওপাশে রোদ্র দাঁড়িয়ে আছে। রোদ্র কেবলি কলিং বেল চাপ দিবে তখনি এভাবে আচমকা দরজা খুলে যাওয়াই বেশ অবাক হলো। সমুদ্রকে এভাবে ইউনিফর্ম এ দেখে অবাক হয়ে বলল।
“ভাইয়া?
,,,,,,,,,,,,
ডয়িং রুমে বেশ গুমোট ভাব। সমুদ্র এই পরিস্থিতি তে রোদ্রকে এখানে মোটেও আশা করেনি। মালবিকা নিজের কাজ হাসিল করতে ওকে না ব্যাবহার করে। তবে সমুদ্র জানে ওর ভাই এতোটাও বোকা নয় ঠিক সবটা সামলে নেবে। আর ওর অবর্তমানে এখানে কারো প্রয়োজন ছিলো। রোদ্র আশায় ভালোয় হয়েছে৷ এখন একটু নিশ্চিত থাকা যাবে। রোদ্রকে সবটা বলে ওর থেকে বিদায় নিয়ে দরজার দিকে পা বাড়াতে পিছন থেকে শশী বলে উঠল।
” আপনি কিন্তু আমায় কথা দিয়েছেন। আমরা একসাথে বাবুর মুখ দেখবো। আশা করি আপনার দেওয়া কথাটা রাখবেন। নয়ত কখনো আপনাকে ক্ষমা করবো নাহ সমুদ্র।
শশীর কথাটা শুনার পরেও সমুদ্র পিছন ফিরে তাকালো নাহ। একটু থেমে পুনরায় বেরিয়ে গেলো। বাইরে ইমরান গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো। সমুদ্র গাড়িতে বসে ইমরান কে বলল।
“চলো।
সমুদ্রের আদেশ পেতেই ইমরান গাড়ি স্টার্ট দিলো। রোদ্র করুন চোখে শশীর দিকে তাকিয়ে আছে। মেয়েটা কান্না করতে করতে কেমন নেতিয়ে পরেছে। শাহানারা নিজের ঘরে চলে গিয়েছে। রোদ্র শশীর দিকে এগিয়ে গিয়ে আস্তে করে বলল।
” চলো তোমাকে ঘরে দিয়ে আসি। এভাবে কান্না করো নাহ। শরীর খারাপ করবে।
শশী কিছু বলল নাহ৷ করুন চোখে রোদ্রের দিকে তাকালো। রোদ্র শশীর মাথায় হাত বুলিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে ওর হাতটা ধরে আস্তে আস্তে সিঁড়ি বেঁয়ে উপরে উঠে ওকে ওর রুমে দিয়ে আসলো। বিছানায় বসায়ে বলল।
“একটু ঘুমানোর চেষ্টা করো তাহলে ভালো লাগবে।
কথাটা বলে রোদ্র রুম থেকে বেরিয়ে আসতে গেলে শশী পিছন থেকে বলল।
” ওনি ফিরে আসবে তাইনা ভাইয়া? ওনিতো এক কথার মানুষ নিশ্চয়ই আমাকে দেওয়া কথাটা রাখবে।
শশীর এমন কথা শুনে রোদ্র কিছু বলতে পারলো নাহ। কোথাও বুকের বাঁম পাশটায় বেশ বেথ্যা করছে। বেথ্যাটা বেশ পুরানো। নতুন করে বেথ্যাটা জেগে উঠেছে। কোনো কথা না বলে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো রোদ্র।
#চলবে?