শিশির_ভেজা_শিউলি #পর্ব_২৯ #ইবনাত_ইমরোজ_নোহা

0
676

#শিশির_ভেজা_শিউলি
#পর্ব_২৯
#ইবনাত_ইমরোজ_নোহা

(🚫দয়া করে কেউ কপি করবেন না।কপি করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ🚫)

নিষ্প্রাণ, নির্জীব হয়ে বসে আছে সূরা।দেখে মনে হচ্ছে জীবন্ত লাশ। বাবার আদরের রাজকন্যা কখনো কি ভেবেছিল নিজের সর্বাঙ্গে কলঙ্ক লেপ্টে যাবে। ভাবেনি তোহ্! কিছুক্ষণ আগে সে যখন মেঝেতে জ্ঞানহীন হয়ে পড়েছিল তখন অন্ত ছুটে আসে। অন্ত হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। ছোট ফুলটাকে কে এভাবে দুমড়ে মুচড়ে দিয়েছে বুঝতে সময় ব্যয় হয়না তার। নুহাশের সাথে বাইরে আড্ডা দিতে গিয়ে রাত হয়ে যায় অনেক। এখন বাড়ি ফিরে যে এমন ঘটনার সম্মুখীন হতে হবে সে কি ভেবেছিল? সূরাকে পাঁজাকোলে তুলতে গিয়ে দৃষ্টি যায় আধ ভেজানো দরজার দিকে। মুহুর্তেই চোয়াল শক্ত হয়ে ওঠে তার। এই অনাকাঙ্ক্ষিত দৃশ্যের সম্মুখীন না হলেই হয়তো ভালো হতো। সূরাকে আগে দেখা প্রয়োজন ভেবে কোলে তুলে নেয় সে। সূরাকে নিজের রুমে নিয়ে গিয়ে শুইয়ে দেয়। সূরার চোখে মুখে পানি ছিটিয়ে দিলেও জ্ঞান ফিরে আসেনা। অন্ত রিতুকে ডেকে আনে। সারারাত জ্বরে কাতরাতে থাকে সূরা। রিতু জলপট্টি দেয় আর অন্ত চেয়ে থাকে সূরার শুকনো মুখোস্রির দিকে।সূরার জ্বর কমে আসলে সকালের দিকে রিতু রওনা দেয় শহরে যাওয়ার জন্য। রিতু আর অন্ত শহরের একই ভার্সিটি তে কিন্তু আলাদা ডিপার্টমেন্টে পড়াশোনা করছে। অন্ত বাড়ি থেকে যাতায়াত করলেও রিতুর পক্ষে সম্ভব না প্রতিদিন দুই ঘন্টা জার্নি করা। কলেজের হোস্টেলে থাকে সে। কাল জরুরি কাজে বাড়ি আসলেও সকাল নয়টার আগে একটা ক্লাস এটেন্ট করা প্রয়োজন। রিতুর মন চায় না সূরাকে এই অবস্থায় রেখে যেতে। কিন্তু কিছু এসাইনমেন্ট আজকেই জমা দিতে হবে। অন্ত রিতুকে যেতে বলে। সূরার কিছুক্ষন পড়ে জ্ঞান ফিরলে অন্ত ব্যস্ত কন্ঠে বলে

“সূরা তুই ঠিক আছিস বোন?”

সূরা কিছু বলেনা। ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে অন্তের দিকে। সূরা উঠতে চাইলে অন্ত উঠে বসতে সাহায্যে করে।সূরা হঠাৎ অন্তের বুকে মাথা রেখে ফুঁপিয়ে উঠে। এতোক্ষণ হয়তো আপন মানুষের সান্নিধ্য খুঁজে চলেছিল কিশোরী মন। তাইতো আপন মানুষের সান্নিধ্যে ভেঙে চুরমার হয়ে যায় শক্ত খোলস। অন্ত মাথায় হাত বুলিয়ে বলল

“কি হয়েছে বোন। আমাকে বল। আমি না তোর বড় ভাই‌। আমি সব ঠিক করে দিব। কে মেরেছে তোকে? পিয়াস মেরেছে? বল আমাকে।”

“ছিঃ! ছিঃ! এসব কি হচ্ছে তালুকদার বাড়িতে? ন*ষ্টা মেয়ে মানুষ। ছোট ছেলের মাথা খেয়ে মন ভরেনি তোর, বাড়ির বড় ছেলের মাথা খাচ্ছিস।”

সূরা কিছু বলবে তার আগেই দরজা দিয়ে ঢুকতে ঢুকতে আনজুমান বেগম বলে উঠে তিক্ত কথা গুলো। তার সাথে সাথে বাড়ির প্রত্যেকে আসে অন্তের ঘরে। সূরা ছিটকে সরে আসে অন্তের থেকে। ভাই বোনের সম্পর্কে আজ কি কলঙ্ক লেগে যাবে? সবার পেছনে দাঁড়িয়ে আছে পিয়াস। নিজের চোখকে বিশ্বাস হচ্ছে না তার। আনজুমান বেগম পল্লব তালুকদারকে উদ্দেশ্যে করে বলল

“দেখলেন তো ন*ষ্ট মেয়ে মানুষকে বাড়িতে জায়গা দিলে কি হয়? আমার ছেলের জীবনটা শেষ করে দিয়ে এখন বাড়ির বড় ছেলের পেছনে লেগেছে এই ন*ষ্টা মেয়ে।”

অন্ত শক্ত কন্ঠে বলে “মুখ সামলে কথা বলো বড়আম্মু। কাকে কি বলছো তুমি। না জেনে শুনে এসব বলছো কেন?”

লহমায় চোয়াল বরাবর কারো শক্ত হাতের ঘুষিতে কয়েক কদম পিছিয়ে যায় অন্ত। তাকিয়ে দেখে পিয়াস চোয়াল শক্ত করে হিংস্র দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তার দিকে। মুহুর্তেই পিয়াসের গালে থাপ্পড় মারে সূরা। কলার চেপে ধরে ভেজা কন্ঠে বলে

“চরিত্রহীন লম্পট। এই আমাকে ঠকালেন কেন আপনি? যদি ধোঁকা দেওয়ারই ছিল তাহলে ভালোবাসলেন কেন? ঘৃনা করি আমি আপনাকে।”

সূরা ডুকরে কেঁদে উঠল। বলল “আমাকে নাকি আপনার হৃদয়ের রানী করে রাখবেন। আপনি তো আমাকে আপনার পায়েও ঠাঁই দিলেন না পিয়াস ভাই।”

পিয়াস কলার থেকে সূরার হাত সরিয়ে দেয়। তাচ্ছিল্য হেসে বলে “চোরের মায়ের বড় গলা শুনেছিলাম আজ প্রথম দেখলাম। শা**লি তোকে কোন দিক দিয়ে অভাবে রেখেছিলাম আমি। আমার বড় ভাইয়ের সাথে ন*ষ্টামি করতে বাধলোনা তোর। তোর শরীরের এতো জ্বা*লা। আমাকে দিয়ে হয়না তোর?”

অন্ত এগিয়ে এসে কলার চেপে ধরে পিয়াসের। চোয়াল শক্ত করে বলে “খুব আদরের ছোট ভাই তুই আমার। নয়তো সূরাকে যা বললি তার জন্য এখানেই পুতে রেখে দিতাম তোকে।”

পিয়াস অন্তের হাত সরিয়ে দিয়ে বলে “তুই আর তোর সূরা আজ থেকে আমার কাছে মৃত। ঘৃনা করি আমি তোদের দুইজনকে।”

পরক্ষনে সূরার দিকে তাকিয়ে বলে “তোর মতো জঘন্য, কুৎসিত মেয়েকে আমি আর ভালবাসি না। তোর না আছে রুপ আর না আছে কোনো গুন। তোকে ঘৃনা করি আমি সূরা। তোর থেকে মুক্তি চাই আমি। আর আজ এই মুহূর্তে স্বজ্ঞানে আমি তোর থেকে মুক্তি চাইলাম। এক তালাক, দুই তালাক, তিন তালাক।”

সবাই হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে পিয়াসের দিকে। পিয়াস কি একবারও বুঝতে পারলো রাগের বশে কি বলে ফেললো সে? বুঝতে পারলে কি এতো কঠিন একটা শব্দ তার কন্ঠনালী ভেদ করে বেরিয়ে আসতো। সূরা নিষ্প্রান চোখে তাকিয়ে আছে। শরীরের ভার আর বইতে পারেনা কিশোরী। ধপ করে বসে পড়ে মেঝেতে। সে কি মরে যাচ্ছে? হয়তো মরে যাচ্ছে সে। নয়তো বুকে আকাশসম ভারি বস্তুর চাপ অনুভব হচ্ছে কেন? মাথা ফাঁকা ফাঁকা লাগছে কেন? তালাক এমন একটা শব্দ যা এক নিমিষেই শেষ করে দেয় সুমধুর সম্পর্ক, একটা প্রানোচ্ছ্বল মেয়েকে। মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে সূরা। অন্ত ছুটে আসে ছোট বোনটার কাছে। শুধু কি রক্তের সম্পর্ক থাকলেই আপন হয় মানুষ। আত্মার সম্পর্ক বলেও তো একটা সম্পর্ক আছে। এই মেয়েটার সাথে যে তার আত্মার সম্পর্ক। অন্তের চোখ ছলছল করে ওঠে। নিস্তেজ কন্ঠে আওরালো

“এই পিয়াস! ভাই আমার! এটা তুই কি করলি? শুধু কি আমার বোনটা বিনা দোষে শাস্তি পেল নাকি আমার ভাইটা না বুঝেই মরন যন্ত্রণাকে আহ্বান জানালো।”

★★★★★★

জীবন বড়ই অদ্ভুত। এক জীবনে কত রাগ অভিমান আমাদের। রাগ জিনিস টা পৃথিবীকে ধ্বংস করতেও দুইবার ভাবে না। রাগের বশে যে মানুষ নিজেই নিজের ক্ষতি করে তা হয়তো তাদের কল্পনাতিত। আজ সপ্তাহ পেরিয়েছে সূরা নিজের মা বাবার কাছে আছে। পিয়াস সেদিন তালাক দেওয়ার পরে নিজেই মিজানুর সিকদারের কাছে খবর পাঠায় তারা যেনো নিজের মেয়েকে নিয়ে আসে। আদরের রাজকন্যার করুন অবস্থা, সারা শরীরে স্বামীর নির্যাতনের চিহ্ন, প্রানহীন মেয়ের মুখোস্রি দেখে ডুকরে কেঁদে উঠেন তিনি। নিয়ে আসেন নিজের রাজ্যে তার রাজকন্যাকে। কিন্তু রাজকন্যার শরীর আনতে পারলেও সেই শরীরে প্রান নেই। তালাক দেওয়ার দুইদিনের দিন পিয়াস ডিভোর্স পেপার পাঠায়। শিক্ষিত সূরাও বুঝি সেই দিন নিজের নামটা ভুলে যায়। একটা কাগজ আর তিনটা শব্দ মেরে ফেলে একটা প্রানোচ্ছ্বল, হাস্যোজ্জ্বল মেয়েকে, বাবা মায়ের রাজকন্যা কে, ভাইয়ের কলিজার টুকরা কে। সেদিন মৃত্যু ঘটে সূরার আত্মার। আমাদের দেশে অসংখ্য সূরা আছে। যারা মনে প্রানে নিজের সবটুকু দিয়ে আকড়ে ধরতে চাই স্বামীকে, স্বামীর সংসারকে। বিশ্বাস করে নিজের সবকিছু সেই মানুষটাকে সঁপে দেয়। কিন্তু নিষ্ঠুর পৃথিবীর মানুষ গুলো কেড়ে নেয় তাদের বেঁচে থাকার সম্বল। একটা মেয়ে কম স্বপ্ন নিয়ে যায়না শ্বশুড় বাড়ি। চোখে তার আকাশসম স্বপ্ন। একটা মেয়ে কি চাই? একটু স্বামী নামক ব্যক্তির ভালোবাসা, শ্বশুড় বাড়ির সবার ভালোবাসা। পৃথিবীতে সবচেয়ে দামী হয়তো ভালোবাসা। তাইতো বাড়ির বউদের ভালোবাসতে তাদের এতো কার্পন্যতা। একটা মেয়ে কি কখনো চাই তাকে কেউ ডিভোর্সি বলুক? বরং নিজের সবকিছু বিলিয়ে দিয়েও সে আঁকড়ে ধরতে চাই তার স্বামীকে। শত অন্যায়, শত নির্যাতন, শত অবহেলা মেনে নিয়েও সে পড়ে থাকে স্বামীর কাছে। একটু ভালোবাসা পাবার আশায়। কিন্তু সেই মেয়েই কোনো বাবার রাজকন্যা। বাবার রাজ্যের একমাত্র রাজরানী সে। কিন্তু সেই রাজকন্যায় স্বামীর কাছে পড়ে থাকে ভীখারিনী হয়ে।তাও বুঝি তার শূন্য আচল ভালোবাসা দিয়ে পূর্ণ হয়না। হায় রে মেয়ে! তোমার ভালো থাকা মন্দ থাকা তোমার শখের পুরুষের হাতে। কোনো মেয়ে চাইনা স্বামীর সংসার ছাড়তে। একবার বিশ্বাস ভাঙ্গলে কি আবার বিশ্বাস করা সম্ভব। ডিভোর্সি হওয়া পাপ বা অন্যায় না কিন্তু এই সমাজ, এই সমাজের মানুষ গুলোর কাছে হয়তো ডিভোর্সি মেয়েদের জায়গা হয়না। তাদের কটুক্তি, তিক্ত কথা, তাকে দেখার দৃষ্টি মেয়েটিকে ভাবতে বাধ্য করে সে ডিভোর্সি। আমাদের আশেপাশে অনেক ডিভোর্সি মেয়ে আছে। আমরা কি একবারও তার মনের খবর জানতে চেয়েছি কখনো? জেনে দেখো ভেতরে ভেতরে মরে গেছে সে। শুধু বেঁচে আছে তার অর্ধগলিত শরীর।

★★★★★★

গোধূলি লগ্ন। দিঘীর সিঁড়িতে বসে নিষ্প্রাণ চোখে তাকিয়ে আছে সূরা পশ্চিমাকাশে। পৃথিবী কতো নিষ্ঠুর। যে পৃথিবীকে নিজের আলোয় আলোকিত করে রাখে তাকেই দিন শেষে ফিরে যেতে হয়। এই নিষ্ঠুর পৃথিবী তাকে ঠাঁই দেয়না। স্বার্থপর পৃথিবীর মানুষগুলো কে নিজের সর্বস্ব দেওয়ার পরেও দিন শেষে একাকীত্ব বরন করে নিতেই হয়। তাচ্ছিল্য হাসে সূরা। সে হাসিতে প্রান নেই।

“সূরা তুই এখানে?”

সূরা পেছনে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে মনি দাঁড়িয়ে আছে। সূরা কিছু বলেনা। সামনে তাকায়। মনি হাতের হাঁড়ি পাতিল গুলো শেষ সিঁড়িতে রেখে সূরার পাশে বসে। সূরার কাঁধে হাত রেখে বলে

“কি হয়েছে? মন খারাপ? ভর সন্ধ্যা বেলায় এখানে বসে আছিস কেন? অন্ধকার নামলো বলে।”

“কই? কিছু হয়নি তো। তুই কবে এসেছিস?”

“আজ দুপুরে। যা হয়েছে ভুলে যা সূরা। তুই আবার আগের মতো হয়ে যা। তোকে এমন মন মরা দেখতে আমার ভালো লাগে না সূরা। প্রিয়াটা থাকলে সে ঠিক তোকে হাসি খুশি রাখতো। প্রিয়া তার স্বপ্ন পূরন করতে পারলেও সে খুশি না। কেন জানিস? তুই চান্স পাসনি তাই। আর আমার তো জোর করে বিয়েই দিয়ে দিলো। তুই আবার পরীক্ষা দে। আমার বিশ্বাস তুই পারবি।”

“আর সম্ভব না মনি। তোদের সূরার সাথে সাথে স্বপ্নও মরে গেছে। এখন এই সূরার শরীর বেঁচে থাকলেও সে মৃত।”

মনি কিছু বলবে তার আগেই পেছন থেকে মনির মা মতিবানু বলে উঠলো “হায় হায় রে! মনি তোর কি কান্ডজ্ঞান হইবো না কুনুদিন। তালাক্যা মাইয়ার লগে বইয়া আছোস ক্যা? ওঠ, ওঠ কয়তাছি।”

সূরা আর মনি উঠে দাঁড়ায়। মতিবানু সিঁড়ি বেয়ে নিচে নেমে এসে সূরার এক হাত শক্ত করে ধরে বলে

“ওই ছেড়ি, ওর লগে কি কইতাছিলি তুই? আমার মাইয়্যা ডা নতুন বিয়াত্যা। ঘর কেমনে ভাঙ্গন লাগে হেডায় কইতাছিলি?”

সূরা মাথা নিচু করে বলে “তুমি ভুল বুঝছো মামি। আমি ওকে ওইসব বলবো কেন?”

মনি ক্ষীন স্বরে বলে “হ্যাঁ মা। সূরা তো,,,

“তুই চুপ থাক। তালাক্যা মাইয়ার লগে ঢলাঢলি করোস ক্যা? এইসব মাইয়্যা অলক্ষ্মী, অপয়া হয় জানোস না। ওই তোর মা কিছু শিখায় নাই। জানোস না তালাকের পর বাড়িতেই থাকন লাগে।যেমন মা তেমন মাইয়া‌।”

সূরার রাগান্বিত চোখে তাকায় মতিবানুর দিকে। শক্ত কন্ঠে বলে “আমাকে যা বলার বলো মামি। আমার মা কে কিছু বলবেনা।”

“ওই তুই কারে চোখ দেখাস। তালাক হওয়া মাইয়া তুই। মুখে কালি লাগাইছোস তাও তোর তেজ কমে নাই। নিজের ইচ্ছায় তো পলায়া গেছিলি। ভালো মাইয়া হইলে কি এসব করতি‌। ভাসুরের লগেও নাকি ন*ষ্টামি করছোস। ন*ষ্টা মেয়ে মানুষ। তোরে তো আমি,,

মতিবানু নিচে বসে সিঁড়িতে থাকা পাতিলের তলার কালি হাতে মেখে নেয়। দাঁড়িয়ে সূরার মুখে কালি লেপ্টে দেয়।মনি হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে। সূরা চকিতে তাকায়। সে ভাবেনি তিনি এমনটা করবেন। সূরা ফুঁপিয়ে উঠে। দৌড়ে চলে যায় বাড়ির দিকে। কলঙ্কিনী সে। এই মুখ আর দেখাবেনা কাউকে।

#চলবে ……..
কিছু কথা বলতে চাই দয়া করে কেউ এরিয়ে যাবেন না। গল্পের প্রথমেই বলেছি আমি নতুন লেখিকা। এর আগে গল্প লেখার অভিজ্ঞতা আমার নেই। বানান, লেখার শব্দচয়ন ভুল ত্রুটি হতেই পারে। আমি বলেছি ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখে ধরিয়ে দিবেন। আমি এতে খুশিই হবো। আপনাদের সকলের অনেক ভালোবাসা পাচ্ছি দেখে সত্যি আমার খুব ভালো লাগছে। এবার আসি গল্পে। এই গল্পে আমি কখনো নায়িকা কে ন্যাকার মতো করিনি। যদিও অনেকের মনে হচ্ছে নায়িকা ন্যাকা বেশি। আপনারা কেউ কেউ বলছেন কি লিখেছি এই গুলো। এই গুলো ২০২৪ এ চলে না। ডিভোর্সি হওয়া কি পাপ। ডিভোর্সি হওয়া নরমাল। যারা নরমাল বলছেন আর নায়িকার ব্যবহার ন্যাকা বলছেন তারা একটা কথা বলুন তো কখনো কি একটা ডিভোর্সি মেয়ের মনের অবস্থা জানার চেষ্টা করেছেন। তারা কতটা অসহায় শুধু তারাই জানে। সবার সাথে হয়তো হাসি খুশি পাবেন তাদের কিন্তু দিনশেষে তাদের চোখের পানিতে ভিজে যায় শোয়ার বালিশ। আমি এই গল্পে গ্ৰামের কিছু তিক্ততা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আমি কিন্তু গ্ৰামের মেয়ে। বলতেই পারেন একটা ডিভোর্সি মেয়ের কষ্ট আপনারা না বুঝলে আমি কিভাবে বুঝলাম। তাহলে বলে রাখি আমার অতি নিকটবর্তী কেউ সূরার মতো। তাকে দেখেই আজ গল্প লিখা। সূরার চরিত্র বাস্তব হলেও অন্য চরিত্র কাল্পনিক। আমি এই গল্পে কিছু বোঝাতে চেয়েছি
★কিশোরী বয়সের নেওয়া সিদ্ধান্ত কখনো সঠিক হয় না। মা বাবা কে কষ্ট দিলে কষ্ট পেতেই হবে।
★যার উপর বিশ্বাস ভরসা করে আমরা পরিবার ছেড়ে তাকে আঁকড়ে ধরি দিনশেষে কি আমরা তাকে পাই?
★ধোকা, বিশ্বাসে আঘাত আসলে কি আমরা আবার নতুন করে নতুন মানুষ কে আঁকড়ে ধরার সাহস পাই? বিশ্বাস এমন একটা জিনিস একবার তাতে আঘাত আসলে শত চেষ্টা করেও বিশ্বাস ফিরিয়ে আনা কষ্টকর।
★আত্মহত্যা, ডিপ্রেশন, নিজেকে সবার থেকে গুটিয়ে নেওয়ার প্রবনতা কখনো সমাধান না। বিশ্বাস রাখতে হবে আমাদের সৃষ্টিকর্তার উপর।
পরিশেষে বলবো আমি এই গল্পের মাধ্যমে একটা জিনিস বোঝাতে চাইছি কষ্টের পরে সুখ আসবেই। তাই ভেঙ্গে না পড়ে ভরসা রাখুন সৃষ্টি কর্তার উপর। যেমন গল্পে সূরার জীবনে সুখ হিসেবে আসবে মিসবাহ।
আমি গল্প লিখি আপনাদের জন্য। যদি আপনাদের ভালো না লাগে তাহলে আর লিখবো না । এখানে সমাপ্ত করবো।
দয়া করে কেউ আমাকে খারাপ ভাববেন না।

রাত ৮.৩০ মিনিটে আর একটা পর্ব দিবো।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here